ভালোবাসি_প্রিয়তম,বোনাস_পার্ট

0
1530

ভালোবাসি_প্রিয়তম,বোনাস_পার্ট
তাসনিম_তামান্না

???

তুষার আর তুষারের ফেন্ডরা বসে আছে কুয়াশাদের ড্রাইংরুমে। কাউকে এখনো দেখেনি ওরা শুধু মেড বলেছে বসতে। ওরা বসে বাসার ভিতরে স্কেন করতে ব্যাস্ত তখন উপর থেকে কাচ ভাঙার শব্দ হলো ওরা একে ওপরের দিকে তাকাতাকি করতে লাগলো একটা মেড ছুটে ওপরে গেলো। কুশান তখন বাসায় ডুকলো এতোক্ষণ কুশান বাড়ির পিছনের গার্ডেনে ছিলো আজ তুষার আসবে বলে অফিসে যায় নি।ওদের সাথে কথা বলে অফিসে যাবে বলে। ওদেরকে দেখে ওদের দিকে এগিয়ে গিয়ে দাড়ালো ওরাও কুশানকে দেখে দাড়িয়ে গিয়ে সালাম দিলো। কুশান মিষ্টি হেসে সালামের জবাব দিলো।

-আরে দাড়ালে কেনো বসো তোমরা (কুশান)

ওরা কুশানের কথায় বসে পড়লো কুশানও সিংগেল সোফায় বসে বলল

-চা নাকি কফি খাবে তোমরা (কুশান)

সবাই কুশানের ব্যবহারে অবাক। কুশান এতো শান্ত আর সুন্দর ভাবে কথা বলায়। মুন ফিসফিস করে তন্নিকে বলল

-দোস্ত আমি তো ভাবছিলাম মুভির মতো তুষারকে পিটাইবো কিন্তু এই হ্যান্সাম তো তেমন কিছুই করলো না (মনু)

তন্নিও ফিসফিস করে বলল

-এরা সব ভাইবোন গুলা এতো কিউট কেন আমি তো ক্রাস খাইতে খাইতে কবে জানি মারা যায় (তন্নি)

-চা দিন ভাইয়া বাঙালি মানুষ তো চা ই ঠিক আছে (রিদ)

কুশান হেসে মেডকে ডেকে চা নাস্তা দিতে বলল।

-তোমারা……. (কুশান)

কুশান কিছু বলতে যাবে তার আগে পাখির চিৎকার ভেসে আসলো

-তোরা দুইটা ফাইজলামি পাইছোস ঘরের জিনিসপত্র ভাঙছিস কেনো? হাত ভেঙে রেখে দিবো দুইটারে বিয়াদ্দপ সবসময় এতো জেদ ভালো না এতোটুকু বয়সে তোমরা জেদ দেখাছো চাচার মতো হচ্ছো তাই না আর একটা জিনিস ভাঙছে তো তোদের দুইটার সাথে তোদের চাচারও বাসা থেকে বের করে দিবো বিয়াদ্দপ (পাখি)

কুশ আর শান বেডের ওপরে দাড়িয়ে ঠোঁট ফুলিয়ে নিঃশব্দে কান্না করছে।

-যা বাবা ভাবিপু এর মধ্যে আমাকে টানছো কেনো আমি আবার কি করলাম (মেঘ)

-তোর কাছ থেকেই তো শিখছে (পাখি)

মেঘ আর কিছু বললো না এখন কিছু বলেই পর কপালে শনি, রবি, সোম সব আছে ওর সেটা জানা।

-আর তোরা দুইটা ওদের দুইটারে আটকাইতে পারলি না (পাখি)

কুয়াশা সকাল থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক ব্যবহার করছে। কুয়াশা ফাইজলামি করে বলল

-লাইভ হচ্ছিল তাই ওটাতে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় জনগন ক্ষেপে যেতো (কুয়াশা)

-সব ক’টা বাদর (পাখি)

-ভাবিপু বাদ দাও তো ক’টাই ভাঙছে কিনলে হয়ে যাবে (মেঘ)

-টাকার ফুটানি মারছিস আবার (পাখি)

-আরে দূর বাবা আমি তো জাস্ট বললাম কখন ফুটানি মারলাম (মেঘ)

-বললি কেনো এই ঝাড়ুটা কই রে দে তো (পাখি)

মেঘের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। পাখি ওদেরকে কোনো কিছু নিয়ে অহংকার করতে বারণ করে আর এটা ও সহ্য করতে পারে না।

মেঘা পাখির কাছে ঝাড়ু এগিয়ে দিলো। মেঘ ‘মেঘার বাচ্চা’ বলে নিজের রুমে গিয়ে দরজা দিলো। পাখি বকতে বকতে কাচের টুকরো গুলো পরিষ্কার করতে লাগলো মেড পরিষ্কার করতে চাইলে দিলো না নিজে ভালো করে এক জায়গায় বার বার পরিষ্কার করতে লাগলো। যেনো কারোর পায়ে কাচের টুকরো না লাগে।

মেড নিচে আসতে কুশান প্রশ্ন করলো

-ওপরে কি হইছে (কুশান)

-আসলে স্যার কুশ আর শান সপিস ভাঙছে কয়েকটা তাই আসলে মেডাম রেগে গিয়ে ওদেরকে পানিশমেন্ট দিচ্ছে (মেড)

-কারোর লাগেনি তো (কুশান)

-না স্যার (মেড)

-আচ্ছা যাও (কুশান)

এর মধ্যে খাবার চলে আসলো।

-না-ও খাও (কুশান)

ওরা কিছু না কিছু খেতে লাগলো। তখন কুশান বলল

-তুষার আমি তোমাকে কিসের জন্য ডাকছি তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো (কুশান)

-জী ভাইয়া (তুষার)

-তো তোমার কি মত (কুশান)

তুষার কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। তুষারকে কোনা কথা না বেলতে দেখে কুশান আবার বলল

-তুষার আমি সরাসরি বলছি তুমি কি এ বিয়েটা মেনে নিয়েছো নাকি তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসো দেখো আমি আমার ফ্যামেলির প্রতিটা মানুষকে খুব ভালোবাসি তেমনি আমার বোন দেরও ওদের এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার কথা আমি কখনো মাথাতে ও আনে নি। আমি সময় নিয়ে আমার বোনদের জন্য বেষ্ট লাইফ পাটনার এনে দিতে চেয়েছি। কিন্তু এর মধ্যে তোমাদের বিয়েটা হয়ে গেলো তো তোমার কি মত বলো (কুশান)

-না ভাইয়া আমার লাইফে এমন কেউ নাই (তুষার)

-তো তুমি কি এ বিয়েটা মানছো (কুশান)

-জী (তুষারের এমন কথায় ওর ফেন্ডদের চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম)

-ভালোবাসো কুয়াশাকে? (কুশান)

তুষার কিছু না বলে শুধু মুচকি হাসলো। তা দেখে কুশান বুঝতে পেরে ওর মুখেও হাসি ফুটলো।

-তোমার বাবা-মাকে জানিয়েছো? (কুশান)

তুষার কাটকাট জবাব দিলো

-না (তুষার)

-তাহলে আমি জানাবো কি? (কুশান)

তুষার কিছু বললো না। দেখে কুশান হাসলো

-বাবা-মায়ের ওপর রাগ করে থাকা ভালো না বুঝলে সব ঠিক না করে তুমি উল্টো রাগ করে বসে আছো আজব ছেলে তো তুমি, ছোটবেলার বুদ্ধি খেয়ে ফেলছো (কুশান)

কুশানের কথা শুনে তুষার চমকালো। কুশান মুচকি হেসে বলল

-চাপ নিও না মাথায় আমি তোমার বাবাকে চিনি তোমাকেও ছোট থাকতে দেখছি তাই বললাম (কুশান)

-কি ভাবে? (তুষার)

-তোমার বাবা আর আমার বাবা কলেজ লাইফের ফেন্ড সেভাবেই (কুশান)

-ওহ (তুষার)

কাল রাতেই তুষারের সব ইনফরমেশন কালেক্ট করছে মেঘ। কুশান সেগুলা দেখে খুশিই হইছিলো তুষারে বাবা যেহেতু ভালো মানুষ তুষারও ভালো হবে ভেবে নিয়েছিল। আর সেটা সামনাসামনি কথা বলে একে বারে ক্লিয়ার হয়ে গেলো কুশানের।

তখন কুশ আর শান গুটিগুটি পায়ে শিড়ি ধরে নিচে নামছে আর কান্না করছে সে কান্নায় কোনো শব্দ নাই। সবার দৃষ্টি সে দিকে গেলো ওরা নিচে নেমে এতো মানুষ দেখে ঘাবড়ে গেলো। আস্তে আস্তে কুশানের কাছে গেলো কুশান ওদের দুজনকে কোলে নিলো ওরা দুজন কান্না বন্ধ করে সবার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।

-এই বাবু এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? আমাকে আজ সুন্দর লাগছে বুঝি (রিদ)

রিদের কথায় সবাই মুখ টিপে হাসলো। এর মধ্যে কুয়াশা আর মেঘা ও নিচে নেমে এলো। তুষার আর তুষারের ফেন্ড দের দেখে কুয়াশা অসস্তি লাগতে লাগলো। কুয়াশা জানতো না ওরা আসবে সেটা।

-আরে তোমরা দু’জন কেমন আছো? (রুকাইয়া)

-ভালো আপনারা কেমন আছেন আপু (মেঘা)

-হ্যাঁ আমরাও ভালো আছি কলেজে আসছো না যে? (মুন)

-হ্যাঁ যাবো কিছুদিন পর (মেঘা)

-কুয়াশা তোমার কি শরীর খারাপ (তন্নি)

-আব না আপু (কুয়াশা)

-আচ্ছা তাহলে তোমরা কথা বলো আমাকে যেতে হবে (কুশান)

-আচ্ছা ভাইয়া একটা রিকুয়েষ্ট ছিলো (রুকাইয়া)

-হ্যাঁ বলো (কুশান)

-কলেজে আর কইদিন পর পিকনিক যদি ওরাও যদি যেত (রুকাইয়া)

-সরি বোন রাখতে পারলাম না (কুশান)

-ইট’স ওকে ভাইয়া (রুকাইয়া)

-তোমারা দুপুরের খাবার খেয়ে যেও না করবে না (কুশান)

কুশান আর কিছু না বলে কুশ আর শানকে নিয়ে রুমে চলে গেলো।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here