ভালোবাসি_প্রিয় Part: 29

2
5578

#ভালোবাসি_প্রিয়
Part: 29
Writer: Nur Nafisa
.
.
পরেরদিন সকালের দিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। নাফিসাকে বাসায় রেখে একটু লেট করেই অফিস গেছে।
বাসায় ফিরে সে নাফিসাকে মনমরা হয়ে বসে থাকতে দেখে! যেটা একদমই ভালো লাগে না মেহেদীর! সে যথেষ্ট হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করছে নাফিসাকে। আর বাচ্চার সুবিধার্থে সবসময় হাসিখুশি থাকতে পরামর্শ দিচ্ছে। নাফিসা চেষ্টাও করছে। কিছুদিন পরেই রাতে নামাজ পড়ে মেহেদী বাসায় এলে দেখলো নাফিসা খাটে বসে নিরবে কাদছে। কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই উঠে এসে হঠাৎ করেই মেহেদীকে জড়িয়ে ধরে হুহু করে কাদতে লাগলো নাফিসা! কিছুই বুঝতে পারছে না মেহেদী! হঠাৎ কি হয়েছে তার!
– এই কি হয়েছে তোমার? কাদছো কেন? নাফিসা চুপ করো। কান্না থামাও কি হয়েছে বলো আমাকে। ওফ্ফ! নাফিসা এভাবে কাদছো কেন! এসময় কান্না করলে দুজনেরই ক্ষতি হবে বুঝার চেষ্টা করো।
নাফিসা অনেক চেষ্টা করে কান্না থামালো। মেহেদীর শরীরেই হেলান দিয়ে জড়িয়ে ধরে দাড়িয়ে আছে সে। মেহেদী মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,
– খারাপ লাগছে তোমার?
– উহুম।
– ভয় লাগছে?
– উহুম।
– তাহলে এভাবে কান্না করলে কেন?
– আমি কান্না করিনি তো, বাবু মিস করছে তোমাকে। বাবু কান্না করছে।
– আচ্ছা! এখন তো আমি এসে গেছি, বাবু নিশ্চই আর কান্না করছে না।
নাফিসা একটু হেসে বললো,
– উহুম।
– বেশিক্ষণ হয়নি তো আমি বাইরে গিয়েছি। বাবুর মা কি একটু সাবধানে থাকতে পারে না! এসময় কি এতো স্ট্রেস নেওয়া যাবে! নেক্সট টাইম যেন কখনো না দেখি।
– আচ্ছা।
মেহেদী নাফিসার মুখ ধরে চোখের পানি মুছে দিলো। ঠোঁটে আলতো স্পর্শ দিলো। নাফিসা মুচকি হেসে সাবধানে মেহেদীর পায়ের উপর ভর দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে রইলো। মেহেদীও তাকে দু’হাতের বাধনে আগলে রেখেছে। নাফিসা কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
– ভালোবাসি প্রিয়।
মেহেদীর প্রতুত্তর শোনার জন্যও কান পেতে আছে। কিন্তু মেহেদী কিছু বললো না। তাই কানে কানে নাফিসা আবার বললো,
– ভালোবাসি প্রিয়। ও গো প্রিয়, তুমিও কিছু বলো।
– কি বলবো?
– তোমার যা ইচ্ছে।
– বাবু কিক মারে?
নাফিসা ভাবতেও পারেনি মেহেদী এমন কিছু বলবে! সে মাথা সোজা করে মেহেদীর মুখে তাকালো! মেহেদী মুচকি হেসে ব্রু নাচিয়ে ইশারায় আবার জিজ্ঞেস করলো। নাফিসা লজ্জা পেয়ে আবার মেহেদীর গলা জড়িয়ে গলায় মুখ লুকিয়ে রাখলো। মেহেদী আবার বললো,
– বাবু কিক মারে না?
নাফিসা এভাবে থেকেই জবাব দিলো,
– উহুম, সুড়সুড়ি দেয়!
– সুড়সুড়ি দেয়!
– হুম। বাবু তার বাবার মতো দুষ্ট তাই সুড়সুড়ি দেয়!
মেহেদী জোরে হেসে উঠলো! নাফিসা আরও লজ্জা পেলো।
– এভাবেই থাকবে নাকি এবার খেতে যাবো। ক্ষুধা লেগেছে বাবুর ও তার বাবামায়ের।
নাফিসা মেহেদীকে ছেড়ে দাড়ালো।
খাওয়ার সময় নাফিসা ইতস্তত বোধ করতে করতে বললো,
– বাসা থেকে এসেছি অনেক দিন হয়ে গেছে। মামি প্রতিদিনই বলে যাওয়ার জন্য। বেড়াতেও কি যাবো না?
– তোমাকে একা ছাড়তে ভয় হয়।
– একা যেতে চাচ্ছি না। তুমি সাথে যাবে।
– আমি যাবো না।
– এমন করো কেন! প্লিজ চলো না। দুদিন থেকে চলে আসবো, প্রমিজ। প্লিজ প্লিজ! মাত্র দুদিন থাকবো।
– ওকে, পরে দেখা যাবে।
– পরে না। কালই যাবো। যাবে?
– ওকে।
নাফিসা মুচকি হাসলো। অফিস যাওয়ার সময় নাফিসাকে নিয়ে তাদের বাসায় নামিয়ে অফিস যাবে। বাসার সামনে মাত্রই গাড়ি থেকে নেমেছে। মেহেদী ভাড়া দিয়ে সামনে তাকাতেই দুজনে দেখতে পেল রিসাদ রাস্তা দিয়ে হেটে এ পথে যাচ্ছিলো। তাদের একসাথে দেখে রিসাদ থমকে গেলো! তারউপর নাফিসার এ অবস্থা রিসাদের ভেতরটা ছারখার করে দিচ্ছে। সে তো নাফিসাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলো! নাফিসাকে ছাড়া আজও কাউকে নিয়ে ভাবতে পারেনি! আর আজ নাফিসার সাথে মেহেদী দাড়িয়ে এই অবস্থনে! কেউই কিছু বললো না। রিসাদ তাদের দিকেই তাকিয়ে আছে। আর নাফিসা ও মেহেদী একে অপরের দিকে তাকিয়েছে। নাফিসাই প্রথম বাড়ির দিকে পা বাড়ালো পিছু পিছু মেহেদীও প্রবেশ করলো। রিসাদ হতাশার নিশ্বাস ছেড়ে তার পথে অগ্রসর হলো।
অহনা ও মামি তাদের দেখে খুব খুশি! মামা নাকি একটু আগে বেরিয়ে গেছে। মেহেদীও তাদের সাথে দেখা করে অফিসের জন্য বেরিয়ে গেছে। অফিস টাইম শেষে আবার এখানে আসবে।
সারাদিন মামি ও অহনার সাথে সময় কাটালো। ভালোই লাগছে তার। মামা আগেই বাসায় ফিরেছে কাগজপত্র নিয়ে। কাগজপত্র রেডি করাই ছিলো। নাফিসা ফোনে মামাকে বলে দিয়েছে আজ নিয়ে আসতে। তার সব সম্পত্তি মেহেদীর নামে উইল করে দিবে সে। মেহেদীর অনুপস্থিতিতে সে দলিলে স্বাক্ষর করে দিলো। বাড়ির অর্ধেকটা অহনাকে দিয়েছে আর বাকি অর্ধেকসহ কোম্পানি মেহেদীর নামে করে দিয়েছে। তার কাজ শেষ। আপাতত সে এসব বিষয় নিয়ে চিন্তামুক্ত।
বিকেলে মেহেদী বাসায় ফিরলে তারা গল্পের আসর জমালো। নাফিসার খুব ভালো লাগছে। ইচ্ছে কিরছে সারাজীবন এভাবে আনন্দে কাটাতে! দুদিনের জায়গায় তিনদিন তারা এবাড়িতে কাটিয়েছে।
কয়েকদিন যেতে না যেতেই নাফিসা আবার মেহেদীকে জড়িয়ে ধরে ইচ্ছেমতো কেদেছে! বারবার বলছিলো,
– আমাকে ক্ষমা করবে মেহেদী? আমি যে তোমার কাছে অনেক অপরাধ করেছি। আমাকে ক্ষমা করবে, বলো?
মেহেদী বুঝতে পেরেছে তার মাকে নিয়ে নাফিসা এসব বলছে। আগের ঘটনাগুলো চিন্তা করে করে সে মন খারাপ করছে! এভাবে থাকা যাবে না। তার একাকিত্ব দূর করতে হবে। সে এইকটা দিন হাফটাইম অফিস করবে।
মেহেদী কতো বুঝিয়ে তাকে সান্ত্বনা দিলো। এমন করে কান্নার কারনই খুজে পায় না মেহেদী। মেয়েরা গর্ভবতী হলে তাদের মনমেজাজ অন্যরকম হয় এটা জানে সে। কিন্তু কান্নাটাও কি এরই মাঝে অন্যতম, এটা জানা নেই তার!
সাড়ে আটমাস চলে প্রেগ্ন্যাসির। নাফিসা রাতে মেহেদীর কাছে শুয়ে থেকে বললো,
– বাবুর জন্য একটা চিরকুট রেখেছি ওয়ারড্রবে বক্সের ভেতরে। বাবু যখন বুঝতে শিখবে তুমি নিজ হাতে চিরকুটটা দিবে।
– কিসের চিরকুট দেখি।
– এই না, দেখবে না তুমি। এটা বাবুর জন্য। বাবু এলে পরে দেখো।
– আচ্ছা, তুমি দিলে সমস্যা কি?
– কিছুই না। আমি চাই তুমি দিবে। বাবুর মা লিখেছে আর বাবুর বাবা দিবে। আমাদের একটা ছেলে বাবু এলে ভালো হবে তাই না?
– কেন?
– ছেলেরা বাবার কষ্ট বেশি বুঝে।
– আমার কোন কষ্ট নেই। আল্লাহ যা দেয় তাতেই খুশি।
– হুম।
– আচ্ছা, ঘুমাও এখন।
সকালে একটু একটু অস্থির লাগছে শরীর। নাফিসা তবুও কিচেনে এসে রান্না বসালো। মেহেদী খেয়ে অফিস যাবে। রান্না করছে আর সে ঘামছে প্রচুর। এতো অস্থির লাগছে কেন! ভাত আর একটা তারকারি রান্না করতে পেরেছে শুধু। ভালো লাগছে না তাই আর কিচেনে না থেকে রুমে এসে ফ্যান ছেড়ে বসলো। মেহেদী গোসল করে খাবার নিয়ে এলো। নাফিসার মুখে মাত্র দু লোকমা তুলে দিতে পেরেছে।
– তুমি খেয়ে নাও। আমার ভালো লাগছে না। পরে খেয়ে নিবো।
– কি হয়েছে? তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন!
– একটু অস্থির লাগছে। তুমি খাও।
মেহেদী খাবার শেষ করলো। অফিসের জন্য তৈরি হয়ে গেলো।
– নড়াচড়া কম করো। দুপুরে এসে তোমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো।
নাফিসার যে আরও বেশি খারাপ লাগছে। ফ্যানের নিচে বসেও প্রচুর ঘামছে! মুখ ফুটে বলেই ফেললো,
– মেহেদী আজ অফিস যেও না।
কন্ঠটা মেহেদীর কাছে অন্যরকম লেগেছে! এটা স্বাভাবিক না! পেছনে ফিরে দেখলো নাফিসার চোখে পানি! সে দ্রুত এসে তার পাশে বসলো।
– কি হয়েছে নাফিসা? এমন দেখাচ্ছে কেন তোমাকে?
– আমার ভালো লাগছে না। অস্থির লাগছে খুব। এখনই হসপিটালে নিয়ে যাও প্লিজ!
মেহেদী কি করবে বুঝতে পারছে না!
– তুমি বসো, নড়বে না এখান থেকে। আমি আসছি।
মেহেদী দৌড়ে বেরিয়ে গেলো। একটা সিএনজি নিয়ে বাসায় এলো। নাফিসা সেখানেই বসে আছে। তাকে আরও অস্থির দেখাচ্ছে। মেহেদী দেড়ি না করে হসপিটালে চলে এলো। ডাক্তার শাহনাজের কেবিনে আনলো। ডাক্তার তাকে চেকাপ করে ভয়ার্ত চোখে তাকালো। মেহেদীকে বললো,
– ওর অবস্থা বেশি ভালো না। ওর অপারেশন করা জরুরি। না হলে বাচ্চাকে বাচানো যাবে না।
মেহেদী নাফিসা দুজনেই ভয় পেয়ে গেছে! নাফিসা মেহেদীর দিকে তাকালো। মেহেদী বললো,
– অপারেশন করতে হলে করুন। আমি সব ব্যবস্থা করছি।
মেহেদী আবিদকে কল করে জানালো নাফিসার অপারেশন করা হবে। আবিদ মাত্রই অফিস যাচ্ছিলো, সেদিকে না গিয়ে সে হসপিটালের দিকে আসতে লাগলো। হসপিটাল কাছে হওয়াতে তারাতাড়িই এসে পৌছালো। নার্স এসে মেহেদীর কাছে একটা পেপার দিলো। পেপার দেখে মেহেদী থমকে গেলো! ভয়ার্ত কন্ঠে বললো,
– এটা কেন?
– রোগীর অবস্থা বেশি ভালো না। আমরা রিস্ক নিয়ে কাজ করতে পারবো না। আপনি স্বাক্ষর করলেই অপারেশন হবে।
মেহেদী ডাক্তারকে বললো,
– প্লিজ চেষ্টা করুন। মা বাচ্চা দুজনকেই আমি সুস্থ ভাবে চাই।
– আমরা ডাক্তার, রোগীকে সুস্থ করার জন্যই এ পথে এসেছি। সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো সবাইকে সুস্থভাবে ফিরিয়ে আনার। আপনিই সময় নষ্ট করছেন। পেপারে সিগনেচার না করলে আমরা অপারেশন শুরু করতে পারবো না।
আবিদ মেহেদীর কাধে হাত রেখে সাহস দেওয়ার চেষ্টা করলো। মেহেদী কাপাকাপা হাতে স্বাক্ষর করে দিলো। নাফিসাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাচ্ছে। নাফিসা মেহেদীর হাত ধরে বললো,
– আমার ভয় করছে।
মেহেদী কপালে চুমু দিয়ে বললো,
– ভয় পাবে না একদম। কিছু হবে না।
নাফিসাকে ওটিতে নিয়ে গেলো। এমনিতেই মেহেদীর খুব ভয় লাগছে। নাফিসার কথায় এখন আরও বেশি ভয় লাগছে। আবিদ তাকে শক্ত হতে বলেছে। আবিদ মামাকে কল করছে, মামার নম্বর ওয়েটিংয়ে আছে! বেশ কিছুক্ষণ পর আবার কল করে নাফিসার কথা জানিয়েছে। ওটির লাল বাতিটা নিভে গেছে। তারমানে অপারেশন শেষ! একজন নার্স বেরিয়ে এসেছে। মেহেদী কিছু বলার আগে নার্সই বললো,
– আপনার ছেলে বাবু হয়েছে। আপনার ওয়াইফ আপনার সাথে কথা বলতে চায়।
মেহেদী আর অপেক্ষা না করে থিয়েটারে ঢুকে পড়লো। আবিদও দরজা পর্যন্ত এসে থেমে গেলো। নাফিসার মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো। সে মেহেদীর দিকেই তাকিয়ে আছে। থিয়েটারে একজন নার্স আছে আর সাথে আছে ডাক্তার শাহনাজ। নাফিসা নিজ হাতে মাস্ক খুলে মুচকি হেসে বললো,
– ভালোবাসি।
মেহেদী প্রতুত্তরে মুচকি হেসে সামনে এগোতে লাগলো। আশেপাশে যে আরও কেউ আছে সেদিকে তার খেয়াল নেই। সোজা এসে নাফিসার ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়ে বললো,
– ভালোবাসি।
হয়তো মেহেদীর বলা কথাটা নাফিসা হজম করতে পারেনি! সাথে সাথে একটা খিচুনি দিয়ে নাক মুখ দিয়ে রক্ত এসে পড়েছে! এই অবস্থা দেখে মেহেদী সাথে সাথে দুকদম পিছিয়ে গেছে! এটা কি হলো তার চোখের সামনে! সে হাজার প্রশ্ন নিয়ে ডাক্তার শাহনাজের দিকে তাকালো! ডাক্তার শাহনাজ বললো,
– সি ইজ এটাক্টেড বাই ব্লাড ক্যান্সার।
মেহেদী আর আবিদ দুজনেই বড় বড় চোখ করে তাকালো ডাক্তারের দিকে! তারপর আবার নাফিসার দিকে তাকাতেই নাফিসা মুচকি হেসে বললো,
– ভালোবাসি প্রিয়।
কথাটা বলার পরপরই চোখের পাতা বন্ধ হয়ে গেলো। দুচোখের দুপাশ দিয়ে দুইফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো। রক্তাক্ত মুখে মুচকি হাসিটা এখনো লেগে আছে। পাশে থাকা মেশিনটা টুট টুট শব্দ করেই যাচ্ছে! মেহেদী স্তব্ধ হয়ে এক জায়গায়ই দাড়িয়ে আছে। ডাক্তার এগিয়ে এসে নাফিসার হাত ধরে পালস চেক করে বললো,
– সি ইজ নো মোর! প্রেগ্ন্যাসির ছয়মাসের দিকে ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়েছে। চেকাপের জন্য আপনি সাথেই এসেছিলেন। কিন্তু তার কনডিশন খারাপ থাকায় সে জানাতে দেয়নি আপনাকে! বারবার রিকোয়েস্ট করেছে আমাকে, যেন কোনোভাবেই আপনাকে না জানাই। একটা কথাই বলেছিলো, “আমি তো মরেই যাবো, ওকে জানালে শুধু শুধু কষ্ট পাবে। পাগল হয়ে যাবে সে! প্লিজ, কিছু বলবেন না!” থিয়েটারে আসার পরেও বলছিলো, “বাচ্চাটা বাচান যেকোনো ভাবে।” তার অবস্থা ভয়াবহ দেখেই ডেলিভারি ডেট কিছুদিন পর হওয়া সত্ত্বেও আজ অপারেশন করতে হয়েছে। না হলে বাচ্চাটাও বাচানো যেতো না। তার তো রক্ত বমিও হয়েছিলো আপনি লক্ষ্য করেননি কখনো?
মেহেদীর দুচোখ গড়িয়ে পানি পড়ছে। ডাক্তারের কথা শুনে সে ধপাস করে ফ্লোরে বসে পড়েছে। প্রেগ্ন্যাসির ছয়মাস থেকে নাফিসার ভিন্ন আচরণ এখন সব পরিষ্কার তার কাছে। সেদিন আলতা ছিলো না, তাহলে সেটা রক্ত বমি ছিলো! নাফিসা এজন্য প্রায়ই কান্না করে মেহেদীর বুক ভাসিয়ে দিতো! সবসময় তাকে কাছে রাখার বাহানা খুজতো!
মেহেদী ঝাপসা চোখে নাফিসাকে দেখছে। আবিদ দৌড়ে এসে মেহেদীকে ধরলো। মেহেদী নাফিসার দিকে তাকিয়েই বললো,
– ব্লাড ক্যান্সার কেনো হয় ডাক্তার? টর্চার করলে কি ব্লাড ক্যান্সার হয়? সিগারেটের ধোঁয়া মুখে ছাড়লে কি ব্লাড ক্যান্সার হয়? জলন্ত সিগারেট গায়ে চেপে ধরলে কি ব্লাড ক্যান্সার হয়? বেল্টের আঘাতে কি ব্লাড ক্যান্সার হয়?
ডাক্তার হতবাক হয়ে গেছে মেহেদীর কথায়! আবিদ মেহেদীকে ঝাকিয়ে বললো,
– মেহেদী কি বলছিস এসব? তুই কি পাগল হয়ে গেছিস! চুপ কর! নিজেকে শক্ত কর।
– ডাক্তার বলেন না কেন? আমার প্রশ্নের উত্তর দিন।
নার্স নাফিসার উপর সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে গেলে মেহেদী দৌড়ে এলো।
– না, এটা করবেন না। কিছু হয়নি ওর। সব নাটক! ও নাটক করছে।
নার্সকে সরিয়ে সে ডাক্তারের কাছে এসে বসে দুহাত জোর করে বলতে লাগলো,
– ডাক্তার, আপনি ওর চিকিৎসা করুন প্লিজ। ও বেচে আছে। ও এখন নাটক করছে। জানেন, ও খুব ভালো অভিনয় করতে পারে। কেউ ধরতেই পারে না তার নাটক! কি আবিদ, বল। আমার সাথেও তো নাটক করেছিলো না, বল। আমি তো ধরতেই পারিনি! ডাক্তার আপনি চিকিৎসা করুন।
ডাক্তার আবিদকে ইশারা করলো মেহেদীকে শান্ত করতে। অত:পর ডাক্তার চোখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেলো। আবিদ মেহেদীকে ধরতে এলে মেহেদী হাত সরিয়ে নাফিসার কাছে চলে এলো। দুহাতে নাফিসার নাকমুখের রক্ত মুছে মুখখানা ধরে বললো,
– এই উঠো না। এমন নাটক করলে তো আমার ভয় লাগে। অনেক হয়েছে উঠো।
নাফিসার সারামুখে চুমুতে ভরিয়ে দিলো। কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
– ভালোবাসি। ভালোবাসিতো। তুমি কিছু বলো। আমি কান পেতে আছি তো! আমার উপর রাগ করেছো না? বাবু আসবে শুনে তো আমি সিগারেট খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি! সেদিনের পর থেকে তো তোমার উপর একদিনও হাত তুলিনি। তুমি না ছেলে বাবুর কথা বলেছিলে, আমাদের ছেলে বাবু ই হয়েছে। তোমার ইচ্ছে ছিলো না, প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতে আমরা আবার বিয়ে করবো। তুমি লাল শাড়ি পড়বে, আমি শেরওয়ানী পড়বো। আমাদের সাথে বাবুও থাকবে! তোমার সব ইচ্ছে পূরণ করবো আমি। উঠো, আমি ভালোবাসি তো তোমাকে অনেক আগে থেকেই। শুনো আমার কথা, উঠো।
হঠাৎ করেই দিনা এসে চিৎকার করে দৌড়ে পড়লো। আবিদ একজনকেই সামলাতে পারছে না, এখন আরেকজন! মেহেদী চিৎকার করে বললো,
– দিনা, ওকে উঠতে বলো। আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি। এই উঠনা! কতবার ডাকছি তোকে! ওঠ!
মেহেদী গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে। হসপিটালের অনেক লোক এসে জমা হয়ে গেছে! মামামামী অহনাও এসে পড়েছে। ভীড় ঠেলে দৌড়ে এসে রিসাদও ঢুকে থমকে গেলো! খবর পেয়েছে হয়তো কারো কাছে! মেহেদী সবার কাছে বলছে নাফিসাকে ডেকে তুলার জন্য। কিন্তু সে তো আর কোনো সাড়া দিচ্ছে না! হসপিটালে কান্নার রোল পড়ে গেলো।
মেডিকেলের লোক এসে নাফিসাকে বাইরে নিয়ে গেলো। মেহেদী পাগলের মতো চিৎকার করে কান্না করছে! আবিদ তাকে ঝাপটে ধরে আছে। কোন ভাষা নেই তার কাছে তাকে শান্ত করানোর।
– মেহেদী চুপ কর, শান্ত হ! তুই এমন করলে কিভাবে হবে! তোর সন্তান আছে। ওর কথা ভাব!
– আমার সাথে কেন এমন হয় আবিদ! যাকে ভালোবাসি সে ই কেন দূরে চলে যায়! কাউকে লাগবে না আমার। সবাই স্বার্থপর! মরে যাবো আমি নিজেই!
মেহেদী দৌড়ে ট্রে থেকে কাচি নিতে গেলো। আবিদ তাকে খুব জোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে আনলো। আবিদ একা পারছে না, রিসাদও এসে ধরেছে মেহেদীকে।
– রিসাদ, আমার কাছে নাফিসা ভালো ছিলো না! তোর কাছে থাকলেই ভালো থাকতো সে! নিয়ে গেলি না কেন!
– শান্ত হ তুই। মানুষের হায়াত যতদিন আছে সে ততদিনই থাকবে পৃথিবীতে। ভাগ্য যার যেখানে লেখা সেখানেই যাবে সে!
দুজন মিলেই শান্ত করাতে চেষ্টা করলো। কিছুক্ষণ পর দিনা কোলে করে বাচ্চাটাকে নিয়ে এসেছে। আবিদ কোলে নিয়ে মেহেদীর দিকে এগিয়ে এলে মেহেদী উঠে দাড়ালো।
– তোর বাচ্চা।
মেহেদী বাচ্চাকে ঠিকমতো দেখতেও পারছে না! বারবার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। হাত বাড়িয়ে কোনোমতো কোলে নিলো। এতো ছোট বাচ্চা আবার টগবগ করে তাকিয়ে আছে! মেহেদী দেয়াল ঘেঁষে আবার বসে পড়লো বাচ্চাকে নিয়ে। আবিদও পাশে বসলো। আবিদ বললো,
– মেহেদী, বাবুটা একদম তোর মতো দেখতে।
– আবিদ, নাফিসার ইচ্ছে ছিলো ছেলে বাবু হবে! সেটাই হয়েছে! নাফিসার বলেছিলো বাবুটা যেন আমার মতো হয়! সেটাই হয়েছে! যা চেয়েছে তাই তো হয়েছে, তাহলে সে নেই কেন পাশে! তাকে ছাড়া আমি থাকবো কিভাবে! একা একা বাবুর যত্ন নিবো কিভাবে! এই হতভাগা, কার কপাল নিয়ে জন্মেছিস তুই? আমার? না তোর মায়ের? তোর মায়েরই। ও তো ছোট বেলা তার মাকে হারিয়েছে! তুইও তোর মায়ের ভাগ্য নিয়ে জন্মেছিস!
– মেহেদী কি বলছিস এসব! চুপ কর।
মেহেদী বাবুকে জড়িয়ে কেদে উঠলো। নাফিসার মামি এসে বাবুকে কোলে নিলো। হঠাৎ করে একটা দিন আসে আর মেহেদীর জীবনটা উল্টেপাল্টে দিয়ে যায়!
মামি বাবুকে বাসায় নিয়ে গেছে। দিনাও আছে সাথে। মেহেদী, আবিদ ও মামার সাথেই ছিলো সকল কার্য সম্পাদন পর্যন্ত। বাসায় ফিরবে এমন সময় আর মেহেদীকে খুজে পাচ্ছে না! কোথায় গেলো হঠাৎ! আবিদ, মামা, রিসাদ খোজা শুরু করলো তাকে! পাচ্ছে না! এই মাত্রই এখানে ছিলো, কোথায় গেছে! তারা এক একদিক খুঁজে বেড়াচ্ছে! পাচ্ছে না তাকে। সারাদিন চলে গেলো মেহেদীকে পাওয়া গেলো না! এমনসময় আবার ঝামেলায় ফেলে দিলো সবাইকে! সবাই এদিক সেদিক খুজছে আর মামি, দিনা বাবুর যত্ন নিচ্ছে। পরেরদিন দুপুরের দিকে রিসাদের কাছে পলাশ স্যার কল করে বললো,
– মেহেদীর কি হয়েছে? ভার্সিটিতে আসার পর থেকে দেখছি এখানে চুপচাপ বসে আছে। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে কাউকে কিছু বলছে না!
পলাশ স্যারের কথায় তারা সাথে সাথেই ভার্সিটিতে গেলো। মেহেদী গেইটের সামনে বসে আছে। আবিদ তাকে ঝাকিয়ে বললো,
– মেহেদী তুই এখানে কেন!
– আবিদ, মনে আছে নাফিসার সাথে এখানে আমার দেখা হয়েছিলো! সে আবার আসবে, দেখিস , আবার আসবে সে।
অতি শোকে যে তার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে সেটা আবিদ খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে। আবিদ আর রিসাদ জোর করেই তাকে মামার বাসায় নিয়ে এলো। বাচ্চাকে সামনে নিয়ে আবিদ বললো,
– তুই ভুলে যাচ্ছিস কেন! তোর উপর নির্ভর করে এই বাচ্চার জীবনটা আছে। তাকে ফেলে তুই এমন পাগলামি করছিস কেন! বাচতে হবে তোকে, এই বাচ্চাটার জন্য বাচতে হবে তোকে।
মেহেদী বাচ্চাকে কোলে নিয়ে সারামুখে চুমুতে ভরিয়ে দিয়ে বললো,
– তোর মা একটুও ভালো না, পুরো একরাত একদিন আমি অপেক্ষা করেছি ভার্সিটির গেইটে। একবারের জন্যও আসেনি দেখা করতে আমার সাথে!
মেহেদী বাবুকে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে তাই মামা বললো,
– মেহেদী, কোথায় যাও।
– মামা বাড়িতে নাফিসা একা আছে। আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা যাই।
মেহেদী বেরিয়ে গেলো, পিছু পিছু আবিদও। বাসায় এসে এদিক সেদিক নাফিসাকে খুজছে নাফিসা নেই! নাফিসার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত মনে পড়ছে আজ। বাবুর খবর পাওয়ার পর থেকে তো তাদের দিনগুলো সুখেই কাটছিলো! সুখ এতো অল্প সময়ের জন্য কেন আসে! মানুষ থাকে না, থেকে যায় কথা। নাফিসার বলা প্রত্যেকটা কথা তার কানে ভাসে! হঠাৎ চিরকুটের কথা মনে হতেই বাবুকে আবিদের কাছে দিয়ে সে ওয়ারড্রব খুলে ছোট বক্স থেকে চিরকুট হাতে নিলো। সে তো বলেছিলো একটা চিরকুট, এখানে তো দুইটা!
একটাতে লেখা, “প্রিয় বাবু”। আরেকটাতে “ভালোবাসি প্রিয়”।
ভালোবাসি প্রিয় চিরকুটটা আগে খুললো,
” পারলে ক্ষমা করে দিয়ো। তোমার কাছে লুকিয়েছি আমার অসুখের কথা। জানি তো, ঠিক থাকতে পারবে না তুমি তাই বলিনি। তোমাকে না জানিয়েই সম্পত্তি তোমার নামে উইল করে দিয়েছি। তা না হলে আমাদের সন্তান পাবে কিভাবে বলো? খবরদার, আমার অবর্তমানে কোন উল্টাপাল্টা কিছু করেছো তো। বাবুকে নিয়ে তোমার চারতলা বাড়িতে থাকবে। সুখে থাকবে সবসময়, ভালো কাজে লিপ্ত থাকবে। আর আমাকে ভালোবাসবে, আমিও ভালোবাসি প্রিয়! ”
অত:পর প্রিয় বাবু চিরকুট খুললো,
” বাবুরে খুব ভালোবাসি তোকে। তোর বাবা ছোট থেকেই অনেক কষ্টে আছে। আমার দ্বারাও কষ্ট পেয়েছে। আর কখনো কষ্ট দিস না তুই। খুব খেয়াল রাখবি বাবার। খুব ভালোবাসবি বাবাকে, এটা তোর মায়ের আদেশ। ”
মেহেদী বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বললো,
– মাফ করবো না তোমাকে নাফিসা। কিভাবে পারলে আমাদের ছেড়ে চলে যেতে! বাবুরে খুব খারাপ তোর মা, খুব খারাপ। আমাদের একা করে পালিয়ে গেছে।
অনেক্ক্ষণ এ বাড়িতে কাটিয়েছে। বাচ্চা যখন কান্না শুরু করলো তখন নাফিসার কথামতো তাদের চারতলা বাড়িতে চলে গেলো সাথে নাফিসার আসবাবপত্র নিয়ে।
এরপর তার দিন কাটছে ছেলেকে নিয়েই। মামামামী বলেছিলো বিয়ে করতে, করেনি সে। নাফিসার পরিবর্তে কেউ আসবে তার জীবনে, অসম্ভব! ঠিকমতো অফিসে যায়, বাবুর সব খেয়াল রাখে, নাফিসা যেভাবে চেয়েছিলো ঠিক সেভাবেই চলে সে! মামি অহনাও বাবুর যত্ন নেয়। নাফিসার দিয়ে যাওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার ও রেখে যাওয়া স্মৃতি নিয়েই কাটে মেহেদীর জীবন।
.
(সমাপ্ত)
.
.
জানি আমি। এমন সমাপ্তি কেউই প্রত্যাশা করেনি। কেউ হয়তো এর মর্মার্থ বুঝতে পেরেছে আর অনেকেই বুঝতে পারেনি। যারা বুঝতে পারেনি তাদের জন্য বলছি,
আমরা দাত থাকতে দাতের মর্যাদা দিতে জানি না। হারিয়ে গেলে খুজে বেড়াই। অবশ্য মেহেদীর ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। সে প্রথমে একটু বাজে আচরণ করলেও পরে ঠিকই মর্যাদা দিয়েছে। কিন্তু অল্প সময়ের বাজে আচরণটাই কাল হয়ে দাড়িয়েছে শেষ মুহূর্তে! সুস্থ সবল দেহ কঠিন অসুখে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে যা মুক্তি দেয়নি। আগে থেকে সবটা ঠিক থাকলে হয়তো এমন কিছু নাও ঘটতে পারতো!
সেড এন্ডিং হওয়ায় হয়তো কেউ প্রকাশে আবার কেউ মনে মনে আমাকে বকে যাচ্ছেন। তবুও বলবো, একটু ভেবে দেখুন। এটাই বাস্তবতা! আশেপাশে একটু চোখ বুলিয়ে দেখুন আশাকরি বাস্তব চিত্রই চোখের সামনে এসে পড়বে। লক্ষ্য করে দেখুন, আশেপাশে এমন অনেক জীবন আছে যারা প্রতিনিয়ত অত্যাচারীত হচ্ছে, এমন অনেক নারী আছে যারা বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে মারা যাচ্ছে, এমন অনেক লোক আছে যারা ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। ২০১৫ সালে আমারও এক ফ্রেন্ড এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বিয়ে হয়েছিলো নতুন কিন্তু স্বামীর ঘরেও যেতে পারেনি। শুধু বিয়ে পড়িয়ে রাখা হয়েছিলো।
সবাই গল্পের হেপি এন্ডিং চান। প্রকৃতপক্ষে কতজনের জীবনের শেষটা সুখী হয়? কয়জন সুখে সংসার করে বাচতে পারে? প্রতিটি মানুষেরই দুঃসময় আছে। আমারও আছে আপনারও আছে। জীবনে সুখের চেয়ে কষ্টটাই বেশি হানা দেয়! এটাই একটা পরীক্ষা!
এই পার্টটা লিখতে গিয়ে আমি কতটা কেদেছি আমি আর আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। গল্পের জন্য কাদিনি, কেদেছি এমন জীবনধারণকারী মানবের জন্য। পার্টটা লিখতে গিয়ে আমি কতটা সময় নিয়েছি তা আমার জানা নেই! কোনো একটা বিষয় লিখে লিখে বারবার বিরতি নিয়েছি। আপনারা একটানে পড়তে পারবেন কিন্তু আমি একটানে লিখতে পারিনি। প্রতিটি মুহুর্তে অশ্রু ঝরেছে আর আমি লেখার মাঝে বিরতি নিয়েছি। নিজেকে স্বাভাবিক করে আবার লিখতে বসেছি। বিষয়টা অনেকে হাস্যকরভাবে নিবেন আবার অনেকে হৃদয়দিয়ে অনুভব করতে পারবেন। তবে আমার অনুভব মিথ্যা ছিলো না!
.
আমার উক্তিতে অনেকে বলবেন, “এটা তো মাত্র একটা গল্প ছিলো!”
হ্যাঁ গল্প ছিলো ঠিকই, কিন্তু সবকিছু সাজানো না! গল্প বাস্তবজীবনকে নিয়েই লেখা হয়। লক্ষ্য করে দেখুন, গল্পে যেসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বাস্তবে কি সেগুলো নেই? আমরা যখন কোনো লেখা পড়ি তখন দৃশ্য গুলো আমাদের চোখের সামনে ভাসে! তাহলে এটা বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে কেন, গল্প বাস্তব জীবনেরই প্রতিচ্ছবি!
.
সবাই আমার উপর অসন্তুষ্ট। তবুও বলবো, আমাকে বকা দেয়ার আগে গল্পের মর্মার্থ বুঝতে চেষ্টা করুন। এবং গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা আপনার মূল্যবান মন্তব্যে পেশ করুন।
.
যারা এটা বলবেন, ” আমরা আর কি বলবো, আপনিই তো সব বলে দিয়েছেন।”
তাদের জন্য বলছি, জগতে অনেক কিছু আছে। খুঁজে খুঁজে ভিন্ন কিছুর উদঘাটন করুন। আপনার সকল শব্দের ভান্ডার নিশ্চয়ই আমি ব্যবহার করিনি।
ভাবুন এবং স্বেচ্ছায় মন্তব্য প্রকাশ করুন। ধৈর্য ধারণ করে সম্পূর্ণ গল্প পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ❤

2 COMMENTS

  1. Sad ending ? উপন্যাষ অনেক পড়েছি কিন্তু এই গল্প আমার চোখে পানি নিয়ে এলো
    শেষ‌ এমন না হলে ভালো লাগতো মিস রাইটার
    Very very nice ?????? story ☺️???

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here