#ভালোবাসি_বুঝে_নাও??
#পর্ব_৭,০৮
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
০৭
মাহির চিৎকার শুনে মাঠে কাজ করা মানুষগুলো ওর দিকে এলো,, আসোলে দুপুর তো তাই সবাই গাছের ছায়ায় বসে দম নিচ্ছিল তখনি ওমন চিৎকার শুনে তারা উঠে কে চিৎকার করছে তা দেখতে গেলো,,,,গ্রামে এমনি হয় কারো কিছু হলে সবাই ছুটে আসে শহরে এমন হয় না,,,
কে তুমি আর এভাবে চিৎকার করে দৌড়াচ্ছো কেনো??(১ম লোকটি জিগাস করলো)
হ্যাঁ আর তোমাকে তো কখনো এ গ্রামে দেখিনি তুমি কাদের বাড়ি এসেছো?? (২য় লোক)
মাহিতো ভয়ে কোনো কথাই বলতে পারছে না তাও হাফাতে হাফাতে বলল।
আ,,,আমি ওই যে ও,,বাড়িতে এ,সেছি,,আমার নানু বাড়ি নানুর নাম,, ওয়াজেদ আলী আর ম,,মামার নাম ইসহাক (ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল)
ওহ তুমি তাহলে ওয়াজেদ কাকার নাতনি?? তা মা তুমি এখন মাঠে তাও আবার একা এভাবে দৌড়াচ্ছো কেনো??
আসোলে ওখানে স,,সাপ আর আমার পায়ে (এই টুকু বলে আর বলতে পারলো না)
সাবাই মাহির পায়ের দিকে তাকিয়ে দাখে পায়ে রক্তের দাগ,,
একি তোমাকে তো মনে হয় সাপে কেটেছে এই তোর গামছাটা দে তো (পাশের জনকে উদ্দেশ্য করে বলল,, তারপর তার থেকে গামছাটা নিয়ে কাটার একটু উপরে শক্ত করে গামছাটা বেধে দিলো)
বাড়িতে,,,
সবাই মাহিকে খুঁজতে শুরু করে দিয়েছে। মেহরাব ঘুম থেকে উঠে মাহিকে ডাকে কিন্তু কোথাও পাই না তারপর মেঘলা আর ইশিতার কাছে জিগাস করলে বলে যে মাহি ওদের সাথেই ঘুমিয়েছিলো তারপর ও কোথায় গেছে ওরা জানে না,, তারপর বাগানে বাড়ির বাইরে সবখানে খোঁজে কিন্তু কোথায় পাইনা তারপর সবাইকে ডেকে জিগাস করলে কেউ বলতে পারে না যে ও কোথায় এদিকে তো মেহরাব এর পাগল পাগল অবস্থা মাহির মা তো কান্না শুরু করেদিয়েছে,, কেননা মাহি কেবল হাতে পায়েই বড় হয়েছে বুদ্ধি এখনো হাঁটুর নিচে,, বড্ড অবুঝ আর একটু বোকাও যে যা বলে তাই বিশ্বাস করে,, কে যানে মেয়েটা কোথায় গেলো৷
তারপর মেহরাব বাগানের সেই চরাট পাতা ওখানে গেলো দেখলো একজন মহিলা ওখানে পাতা ঝাড়ু দিচ্ছে ওনাকে মাহির কথা জিগাস করলো।
আচ্ছা আপনি এখান দিয়ে কোনো মেয়েকে যেতে দেখেছেন?? গায়ে নীল রঙের সালোয়ার কামিজ পরাছিলো,, বেশি লম্বা না আবার খাটোও না গায়ের রঙ অনেক ফর্সা,,আর অনেক পাতলা (মেহরাব)
হ দেখছি ওই যে মাঠের দিকে গেছে অনেকক্ষণ আগে আমি (মহিলা আরো কিছু বলছিলো কিন্তু মেহরাব না শুনেই মাঠের দিকে দৌড় দিলো)
আমি বাড়ি যাবো (কেঁদে বলল মাহি)
তোমাকে তো ওঝার কাছে নিতে হবে, বিষ নামাতে হবে,, কি জানি কোনো বিষাক্ত সাপ কামড়াইলো কিনা(লোকটি)
মাহি কাউকেই চিনতে পারছে না তার উপর সবাই বলছে সাপে কামড় দিসে অনেক ভয় লাগছে তাই কাদতে লাগলো,, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে তখনি দেখলো সামনে মেহরাব আসছে মাহি মেহরাবকে দেখেই বসা থেকে উঠে খোড়াতে খোড়াতে গিয়ে মেহরাবকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো।
এদিকে মেহরাব প্রায় অনেকটা দূর এসে দেখলো সামনে ৪,,,৫ লোক মিলে কিছু দেখছে আর কি যেনো বলাবলি করছে,, ওটা দেখেই মেহরাব এর প্রাণ পাখি প্রায় উড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা মন বলছে মাহির কিছু হলো না তো?? তখনি মাহি এসে ওকে জরিয়ে ধরলো।
তুমি কে?? (ওখানকার লোক মেহরাবকে জিগাস করলো)
আমি ওর বাড়ির লোক কি হয়েছে ওর??(মেহরাব)
ওর তো সাপে কেটেছে জলদি করে ওঝার কাছে নিয়ে যাও নইলে বিষ মাথায় ওঠে মইরা যাইবো।
এই কথাশুনে মেহরাব এর তো অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্হা যলদি করে মাহির পায়ের দিকে তাকালো দেখলো সত্যি রক্তের দাগ,,, তারপর মাহিকে কোলে তুলে নিয়ে যেতে লাগল।
আরে কই যাও ওঝার বাড়ি তো ওই দিকে।
ওঝা নয় আমি ওকে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাচ্ছি।
তারপর মেহরাব মাহিকে বাড়িতে নিয়ে গেলো আর মেহরাব এর গাড়ি করে গ্রামের উপজেলা সদর হসপিটাল এ নিয়ে গেলো। ডাক্তার মাহিকে দেখে অনেক পরিক্ষা নিরীক্ষা করে বললো যে ওকে কোনো সাপে কামড়ায়নি,, পায়ে একটা কাটা বেঁধেছিলো আর কাটাটা বেশি গভীর এ চলে যাওয়াই রক্ত বার হয়ছে,, তবে কাটা বার করে ফেলেছে এখন আর কিছু হবে না,, তবে পা একটু বেথ্যা হবে এই আর কি।
বাড়িতে,,,
মাহি বিছানায় শুয়ে আছে আর মেঘলা ইশিতা ওর পাশে বসে আছে,,, মাহি তো অনেক ভয়ে আছে কেননা কেউ কিছু না বললেও মেহরাব ভাই ওকে ছাড়বে না,, ইস কেনো যে ওমন করলাম এখন ভাবলেই নিজেই নিজের মাথায় গাট্টা মারতে মন চাচ্ছে (মাহি শুয়ে শুয়ে এসব ভাবছে তখনি মেহরাব রুমে আসলো)
মেঘলা ইশিতা তোরা বাইরে যা আমার মাহির সাথে কথা আছে(অনেকটা গম্ভীর সুরে)
মেহরাব এর কথা শুনেই মাহির হালুয়া টাইট,, নির্ঘাত ওকে এখন ধুমধারাক্কা মারবে ওরি বাবা,,
মেহরাব এর কথা মতো মেঘলা আর ইশিতা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো তখনি মেহরাব এসে মাহির হাত ধরে টেনে বলল চল।
নাম এখনি যেতে হবে চল চল(মেহরাব)
ক,,,কোথায় যাবো??(ভয়ে ভয়ে বলল মাহি)
কেনো কোথায় যাবি জানিস না?? ওই যে ওই ডোবার কাছে তোর তো ওই ফুলগুলো অনেক পছন্দ হয়েছে তাইনা?? তো এখন চল তোকে ওখানে দিয়ে আসি(এই বলে মেহরাব রেগে মাহির হাত ধরে টান দিলো আর মাহি সোয়া থেকে উঠে খাট থেকে প্রায় পরেই যাচ্ছিলো,, পায়ে বেথ্যা লাগাই বলল)
আহ ভাইয়া আমার লাগছে।
লাগছে?? আরে ওটুকু বেথ্যায় কিচ্ছু হবে না, তোরতো এখন ফুলগুলো লাগবে তাই না?? চল চল,, ভাবছি তোকে ওখানেই রেখে আসবো তারপর সারাদিন ওই ডোবার পাড়ে বসে থাকবি আর মাঝে মাঝে সাপের কামড় খাবি অনেক ভালো হবে তাই না?? আরে দেরি করছিস কেনো চল(দাতে দাত চেপে রেগে বলল মেহরাব)
মাহি মেহরাব এর এমন করা দেখে কেঁদে ফেললো,, ও নাই একটু ভুল করেছে তাই বলে এমন করতে হবে।আরে আমি কি জানতাম যে ওখানে সত্যি সাপ আছে (মনে মনে বলল মাহি)
এখন কেঁদে কোনো লাভ নেই তোকে তো ওখানে যেতেই হবে চল আমার সাথে(মাহির হাত ধরে টেনে, তখনি মেঘলা আর ইশিতা রুমে আসলো)
কি করছিস ভাইয়া ওর লাগছে তো বাচ্চা মানুষ বুঝতে পারিনি (মাহিকে মেহরাব এর কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বিছানায় বসায়ে বললো মেঘলা)
হ্যাঁ ও হয়তো বুঝতে পারিনী,, ও ভেবেছে ফুলটা নিয়েই চলে আসবে এতো কিছু হবে ও ভাবতে পারিনি(ইশিতা)
কেনো ভাববে না ও,, ও কি এখনো ছোট আছে নাকি?? চেনা নাই জানা নাই একটা জায়গায় এসে এমন করবে আর ওর জন্য বাড়ির বাকি সব লোক সাফার করবে কেনো?? ও বোঝে না ওর কিছু হলে আর সবার কি হবে,, এখন যদি ওর সত্যি কোনো বিষাক্ত কিছু কামড়ে দিতো তাহলে কি হতো?? এটা কি শহর নাকি যে ভালো কোথাও নিয়ে যাবো,, এটা গ্রাম এখানে সব কিছু নরমাল,, এখানে সব সময় সাবধানে থাকতে হয়,, সেটা ওর মাথায় ঢোকে না?? অবুঝ হওয়া ভালো তবে এতোটাও অবুঝ নয়,,, ওকে বুঝতে হবে ওর এসব কাজে আর সবার কি হয় (কথাগুলো বলে মেহরাব সবার আড়ালে চোখটা মুছে বাইরে চলে গেলো)
আর মাহিতো মেঘলাকে জরিয়ে ধরে কাঁদছে সত্যি আজকে অনেক বড় ভুল হয়েগেছে এর জন্য সবাই অনেক কষ্ট পেয়েছে,, আমি কি করে পারলাম সবাইকে কষ্ট দিতে,,, মেহরাব ভাই ও অনেক কষ্ট পেয়েছে আমি দেখেছি এখানে কথাগুলো বলে ওনি নিজের চোখ মুছছিলেন,,, আচ্ছা আমি কি কোনোভাবে ভাইয়াকে অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে ফেললাম?? (মনে মনে এসব ভেবে মাহি আরো কাঁদতে লাগল)
সত্যি মাহি তুই আজকে কাজটা একদম ঠিক করিস নি,, সবাই কত টেনশনে ছিলো জানিস?? আর ভাইয়ার তো প্রায় পাগল পাগল অবস্থা হয়ে গিছিলো (মেঘলা)
হুম এখন থেকে আর এমন করবি না, আজকে মেহরাব ভাই অনেক রেগে গেছে ওনার রাগ তোরই ভাঙাতে হবে। ভুল তুই করেছিস তোকেই এর সমাধান করতে হবে (ইশিতা)
ভাইয়া কোথায়?? আমি ভাইয়াকে সরি বলবো আর ওনাকে প্রমিসও করবো আর কখনো এমন কাজ না করার (মাহি)
এখন নয় পরে,,এখন ভাইয়া অনেক রেগে আছে,, তুই পরে সরি বলিস,,, এখন তুই ঘুমা তো একটু।(মেঘলা)
আচ্ছা ঠিক আছে (ভাইয়ার রাগ তো আমি ভাঙিয়েই ছাড়বো,, মনে মনে বলল মাহি)
,,,রাতে,,
চলবে,,,,,,?
#ভালোবাসি_বুঝে_নাও??
#পর্ব_৮
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
,,,রাতে,,,
সারা বাড়ি খুজেও কোথাও মেহরাব ভাইয়াকে পাচ্ছি না,, কোথায় গেলো মানুষ টা একেবারে উধাও হয়ে গেলো নাকি,,,পায়ের বেথ্যাটা একটু কমেছে তাই হাঁটতে পারছি নয়তো হাটতেই পারতাম না,,বাগানে যেখানে চরাট পাতা সেখানে গেলাম কিন্তু সেখানেও পেলাম না,, আমি আমার নিজের উপর ভীষণ অবাক হচ্ছি যে আমি কয়দিন আগেও ভূতের ভয়ে ঘর থেকে বেরোচ্ছিলাম না সেই আমিই এখন এই রাতে একা একা বাগানে চলে গেলাম?? কোথাও না পেয়ে বারান্দায় বসে আকাশের দিকে তাকাতেই দেখলাম ছাদের উপর কারো আবছা ছায়া দেখা যাচ্ছে আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে ওটাই ভাইয়া,,, ছাদটা একদম খোলামেলা তাই এখান থেকে দেখা যাচ্ছে ,, ছাদের সিঁড়ি টা বাইরে হওয়াই আমি আস্তে আস্তে সিড়ি বেয়ে উপরে চলে গেলাম,, ছাঁদে জালিয়ে রাখা ছোট বাল্ব এর আলোই দেখলাম মেহরাব ভাই পকেটে হাত রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছাদের একদম কিনায় দাড়িয়ে আছে,,, আমি আস্তে করে ভাইয়া পাশে দাড়ালাম কিন্তু ভাইয়ার মতো ছাদের ওতো কিনায় না।
এতো কিনারায় দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?? পড়ে যাবেন তো।
ভাইয়া কিছু বললো না একি ভঙ্গিতে দাড়িতে থাকলো৷ তাই আমিই বলতে শুরু করলাম।
জানেন তো মাহি খুব খারাপ সবসময় শুধু বোকামি করে,, ভুলভাল কাজ করে সবাইকে টেনশনে ফেলায়,,কিছু বুঝতে চাই না বড্ড বেশি অবুঝ,, কাউকে কষ্ট দিবে না বলতে বলতে নিজের অজান্তেই সবাইকে কষ্ট দিয়ে ফেলে। আসোলো কি বলেন তো বোকা তো তাই, কিন্তু আমি আজীবন এমন বোকা আর এমন অবুঝই থাকতে চাই,, যদি এমন বোকা আর অবুঝ হয়ে সবার কাছ থেকে এতো ভালবাসা পাওয়া যায় তো আমি এমনি থাকতে চাই,,, কখনো বড় হতে চাই না,,, কিন্তু আজকে অনেক বেশিই দুষ্টামি আর বোকামি করে ফেলেছি এর জন্য সবাই অনেক কষ্ট পেয়েছে তার জন্য আমি সত্যি অনেকগুলো সরি,, এই শেষ বারের মতো কি আমায় ক্ষমা করে দেওয়া যায় না??? আই প্রমিস আর কখনো এমন করবো না ৩ সত্যি (মাহি একা একা কথাগুলো বলে মেহরাব এর দিকে তাকিয়ে দেখলো মেহরাব চলে যাচ্ছে তাই পিছন থেকে মেহরাব এর একটা হত ধরে বলল)
সরি আর কখনো এমন করবো না এবারের মতো মাফ করে দেন,,,এখন থেকে যা করবো যেখানে যাবো সব কিছু আপনাকে বলে করবো প্লিজ এই শেষ বারের মতো মাফ করে দেন প্লিজ(কাঁদো ফেস করে ঠোঁট উল্টে বলল মাহি)
মেহরাব পিছনে তাকিয়ে দেখলো মাহি ওর একহাত ধরে আরেক হাত দিয়ে নিজের এক কান ধরে রেখেছে আর মুখটা কাঁদো কাঁদো ফেস করে ঠোঁট টা উল্টে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। দেখতে একদম ছোট কিউট বাচ্চা লাগছে,, এমন করে বললে কি আর রাগ করে থাকা যায়?? তাই বললাম
ঠিক আছে যা এবারের মতো তোকে মাফ করে দিলাম কিন্তু এর পর থেকে আর করবো না মনে থাকে যেনো,, এখন আয় এখানে বস পায়ে তো বেথ্যা।
মেহরাব এর কথা শুনে মাহি খুশি হয়ে মেহরাব এর হাত ধরে ঝুলে পড়লো আর বলল। ইয়ে আমি আপনার রাগ ভাঙ্গাতে পেরেছি।
আরে কি করছিস পড়ে যাবো তো,,,, ধিঙ্গি মেয়ে এভাবে কেউ হাত ধরে ঝোলে যদি পড়ে যেতাম,,, (তারপর দুজন নিচে বসে পড়ল)
ভাইয়া আমি আপনার কাছে একটা জিনিস চাবো দিবেন??
তুই চাইলে আমি চাঁদ তারা ছাড়া পৃথীবির সব কিছু তোর সামনে হাজির করতে পারবো ইনশাআল্লাহ (বিরবির করে বলল মেহরাব)
হুম বল কি?.
বলছি কি মেঘলা আপুর বিয়েটা যদি এখানে করা হয় তাহলে কেমন হয়?? দাখেন এই গ্রামে অনেক গরীব মানুষ আছে যারা শহরের ভালো ভালো খাবার খেতে পারে না,, আবার আমরা তো কখনো গ্রামের বিয়ে কেমন হয় তা দেখিনি তাই বলছিলাম যদি আপুর বিয়ে এখানে হয় তাহলে এককাজে সব কাজ হয়ে যাবে কি বলেন??(কথাগুলো বলে মাহি মেহরাব এর দিকে তাকালো মেহরাব কি বলে তা দেখার জন্য)
হুম কথাগুলো তুই ঠিকি বলছিস কিন্তু,, শহর থেকে এখানে আসতে তো অনেক সময় লাগবে, আর মেঘরা বরযাত্রী নিয়ে আসতে গেলেও তো সম্যাসা হবে অনেক ভোরে বেরোতে হবে আবার যে জ্যাম,, তাতে আজকে বেরোলে পরদিন সকালে বরযাত্রী আসবে। আর এখানে তো কোনো কমিউনিটি সেন্টার ও নেই যে ওরা সেখানে থাকবে।
কেনো এমন করলে কেমন হয়?? মেঘ ভাইয়ারা বিয়ের ১সপ্তাহ আগেই এখানে আসলো আর এই বাড়িটাও অনেক বড় একপাশে বরপক্ষ আর আরেক পাশে কনেপক্ষ থাকলো,, তারপর বিয়ে হয়ে গেলে রাতটা এখানে থেকে পরদিন সকালে সবাই একসাথে রওনা দিবো বলেন বলন আইডিয়াটা কেমন??
হুম তোর আইডিয়া টা মন্দ নয় দেখি আমি আব্বু আর মামাকে বলে দেখি ওনারা কি বলে,, এখন যা অনেক রাত হয়ে গেছে।
আচ্ছা ঠিক আছে। তারপর আমি আর ভাইয়া ছাদ থেকে নেমে যার যার রুমে চলে গেলাম।
,,,সকালে,,,
মিষ্টি একটা সুবাসে আমার ঘুম ভেঙে গেলো আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে সামনে টেবিলের দিকে তাকাতেই আমার চোখমুখ চকচক করে উঠলো।
একি শাপলা ফুল?? এগুলো এখানে?? কে এনেছে?? আর কার জন্য??(আমি বিছানা থেকে নেমে ফুলগুলো হাতে নিয়ে বললাম)
ফুলগুলো আপনারই আর আপনার মেহরাব ভাই আনছে বাবা কি ভালুপাশা(মেঘলা)
সত্যি বলছো আপু?? এগুলো আমার?? আমি সবগুলো ফুল বোতোলের মধো পানি দিয়ে তার মধো ডুবিয়ে রাখবো যাতে এগুলো শুকিয়ে না যায় ইয়ে কি সুন্দর।
হুমম আপনি খুশিতো?? বাবা ফুলগুলোর জন্য কি কান্ডটাই না করলি।।।
হিহিহি সবি ফুলগুলোর জন্য?? আচ্ছা আপু সবাই কোথায়?? আর বাড়িটা এতো চুপচাপ কেনো?? ইশিতা আপু কোথায়??
বসার ঘরে আমার বিয়ে নিয়ে বড়রা সব আলোচনা করছে,, আর ইশিতা লুকিয়ে শুনছে কি বলছে ওখানে৷ তারপর আমাকে এসে বলবে।।
ওহ আচ্ছা,, (মনে হয় ভাইয়া আমার বলা কথাগুলো সবাইকে বলছে বাবা গো আমার তো ভয় লাগছে কি যে হবে,, মনে মনে বললাম)
আব্বু আমি তো আমার মনে যা ছিলো সব তোমাদের বললাম এখন দাখো তোমরা কি করবে, আর তাছাড়া নানুও এখন অসুস্থ এই শরীর নিয়ে এতোটা পথ পাড়ি দিলে ওনার শরীল নিতে পারবে?? (মেহরাব)
হ্যাঁ বড় ভাইজান মেহরাব কথাগুলো ঠিকি বলছে,, আমারও এখন কাজের সময় এতো কাজ ফেলে আগে আগে যেতে পারবো না সেই বিয়ের দিন গিয়ে আর পরদিনই চলে আসতে হবে, তাই বলছিলাম বিয়ের অনুষ্ঠান এখানে করলই ভালো হয়(ছোটমামা)
কথাটা তো ঠিকি কিন্তু সম্যসা তো অন্য জয়গায়(মেহরাব এর বাবা)
কোথায় সম্যাসা দুলাভাই??(মাহির বাবা)
আরে মেঘরা কি মানবে?? এতোদূর কি ওরা আসতে রাজি হবে??
আরে আগে তো বলে দাখেন তারপর দাখেন ওনারা কি বলে (মাহির বাবা)
হ্যাঁ ভাইয়া তুমি এখনি ফোন করো মেঘের বাবাকে দাখো ওনারা কি বলান(ছোট মামা)
তারপর মেহরাব এর বাবা মেঘ এর বাবাকে ফোন করলো তারপর সবাই মিলে ওনাদের বিষয় টা ভালো মতো বুঝিয়ে দিলো,, ওনারও খুশি কেননা ওনারা কখনো গ্রামের বিয়ে দাখেননি এতোদিন এই দমবন্ধ কর শহরের সব কিছু দেখতে দেখতে কেমন একঘেয়েমি হয়ে গেছে তাই ওনারও চাই গ্রামে খোলা আকাশের নিচে বিশুদ্ধ বাতাসে বিয়েটা হোক,, তাই ওনারা আগামি সপ্তাহে সব তলপি তলপা গুছিয়ে গ্রামে আসছে।
যাক তাহলে সব সম্যসা মিটে গেলো বিয়েটা এখানেই হচ্ছে (ছোটমামা)
আমার মাহিটা বোকা হলেও মাথায় একটু হলেও ঘিলু আছে,, কেমন বড়দের মতো আমায় সুন্দর করে বুঝিয়ে বলল কথাটা,, নইলে আমরা তো কেউ এভাবে ভাবিইনি,, এই জন্যই তো তোকে এতো ভালোবাসি আমার অবুঝ রাজকন্যা(মনে মনে বলল মেহরাব)
এদিকে আড়াল থেকে ইশিতা কথাগুলো শুনে সেই খুশি হয়েছে, তাই খুশিতে চেঁচাতে চেঁচাতে মাহিদের রুমে গেলো। রুমে গিয়ে দেখলো মাহি আর মেঘলা বসে বসে নখ কামড়াচ্ছে।
এই ছুড়ি তোর বিয়া,, লাল শাড়ি দিয়া (ইশিতা কথাগুলো বলে নাচতে নাচতে মেঘলাদের কাছে আসলো)
ইশিতা কি হয়েছে?? কি সিদ্ধান্ত হলো নিচে বল (মেঘলা)
হ্যাঁ ইশিতা আপু যলদি বলো নইলে নক কামড়াতে কামড়াতে আঙুলই খেয়ে ফেলবো (মাহি)
বলছি মাহি তোর আর আঙুল খেতে হবে না,মেঘলা আপুর বিয়ে এখানেই হচ্ছে আর সমনের সপ্তাহে মেঘ ভাইয়ারা আসছে ইয়ে অনেক মজা হবে।
সত্যি বলছো ইশিতা আপু??(মাহি)
হুম সত্যি সত্যি ৩ সত্যি (এই বলে মাহিকে নিয়ে ঘুরতে লাগলো। আর ওদিকে মেঘলা তো লজ্জাতে মুখ তুলতেই পারছে না তাই দেখে ইশিতা বলল)
লাজে রাঙা হলো কণে বউগো মালা বদল হবে এরাতে আহা মালা বদল হবে এরাতে (বলে ইশিতা আর মাহি হাসতে লাগল)
আপু তোমরা থাকো আমি আসছি,, এই বলে মাহি ছুটে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো তারপর মেহরাব কে খুঁজতে লাগল।দেখলো দূরে মেহরাব ফোনে কার সাথে যেনো কথা বলছে তাই মাহি খুশিতে দৌড়ে মেহরাব এর কাছে গিয়ে মেহরাব এর সামনে পা উচু করে দাড়িয়ে মেহরাব এর দু চয়াল ধরে টেনে বলল।
ওলে ওলে আমার কুচুপুচু ভাইয়ে থ্যাংকু থ্যাংকু গাড়ি গাড়ি থ্যাংকু এই বলে মেহরাব এর চুল গুলো এলোমেলো করে দিয়ে আবার দৌড়ে চলে গেলো।
এরূপ ঘটনায় মেহরাব তো পুরাই বোকা বনে গেলো,, কি হলো কেনো হলো কিছুই বুঝলো না তাই ওখানেই ফোন হাতে নিয়ে ভ্যাবলার মতো দাড়িয়ে থাকল।
চলবে,,,,,,
(একটা কথা গল্পের মধ্যে আমি যেই জায়গা গুলোর নাম বলছি ওগুলো সত্যি,, আমাদের গ্রামে আছে আর রাজার গল্পটা আমি আমার দাদি না কার কাছে যেনো শুনেছিলাম,,,, আপনার আসবেন কিন্তু বিয়েতে দাওয়াত রইলো সবার☺☺☺☺)