#ভালোবাসি_বুঝে_নাও??
#পর্ব_১৭,১৮
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
১৭
দুপুরের কড়া রোদ চোখে এসে পড়ায় ঘুম ভেঙে গেলো আমার,,সকালে মেহরাব ভাইদের বাসা থেকে এসে রুমে দরজা বন্ধ করে কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমায় গেছি নিজেই জানি না,,, মায়ের ডাকে হুস ফিরল।
মাহি এই মাহি দরজা খোল সেই যে সকালে ওবাড়ি থেকে এসে দরজা আটকে রেখেছিস খোলার নাম গন্ধ ও নেই,, যোহোরের আযান সে কখন দিয়েছে নামায কালাম কি একে বারেই ছেড়ে দিয়েছিস?? (মা আরো কিছুক্ষন বক বক করে আমাকে আরো কিছু কথা বলে চলে গেলো আমি ও মায়ের কথা শুনে বিছানা থেকে উঠে বসে গোসল এ চলে গেলাম)
গোসল সেরে এসে চুলগুলো মুছে যোহোরের নামাজ টা পড়ে নিলাম,, মাথাটা ভিষণ বেথ্যা করছে হয়ত অনেকক্ষণ কান্না করার কারনে,, কান্না করার কথায় মনে পড়ল আজকে মেহরাব ভাই এর আমার সাথে করা ব্যবহার এর কথা,, আর কখনো কথা বলবো না,, সামনেও যাবো না আর,,,, উফফ ভীষণ মাথ্যা ধরেছে তাই রুম থেকে বেরিয়ে রান্না ঘরে গেলাম দেখলাম আম্মু রান্না করছে।
সেকি আম্মু তুমি এই দুপুর বেলা আবার রান্না করছো কেনো??তাও এই গরমে।
এমনি আমার ইচ্ছে করছে তাই।
বুঝলাম মা ভিষণ রেগে আছে, একেতে গরম তারপর আবার দুপুর বেলা এসময় সবারি কম বেশি মেজাজ খারাপ থাকে,, তাই আমি আর মা কে চা বানানোর কথা বললাম না,, নিজেই অন্য চুলায় কোনো রকমে পানি গরম করে চা টা বানিয়ে কাপে ঢেলে নিয়ে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বসলাম।
উফফ কি গরম বাবা মনে হচ্ছে যেনো আমার হাতই পুরে যাবে (ফু দিতে দিতে বললাম,, তখনি সামনে থেকে কেউ একজন বলে উঠল)
যখন গরম তা খেতেই পারিস না তখন খেতে যাস কেনো?? আর খালি পেটে চা খেতে হয় না,, পেট বেথ্যা করবে (মেহরাব খেতে খেতে বলল)
কথা শুনে আমি সামনে তাকিয়ে দেখি আমার সামনের চেয়ারে বসে মেহরাব ভাই ইলিশ মাছ দিয়ে খুব মজা করেই ভাত খাচ্ছে,, আজব আমি তো এখান দিয়েই রান্না ঘরে গেলাম তবুও ওনাকে দেখলাম না?? আবার চা নিয়ে এখানে এসে বসলাম তবুও ওনাকে দেখলাম না,, আর দেখবোই বা কীভাবে আমার পুরো নজর তো ছিলো চায়ের উপর,,,কিন্তু ওনি যানলো কীভাবে যে আমি কিছু খাইনি?? (মনে মনে বললাম)
আমার দিকে এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকিস না আমার পেট খারাপ করবে,, (খেতে খেতে বলল মেহরাব)
কি এত বড় অপমান,, ওনাকে তো,, না আমি কিছু বলবো না,, আরে আমি তো ওনার সাথে কথাই বলবো না আর,,, তাই আমি আমার চায়ের দিকে নজর দিলাম আস্তে আস্তে ফু দিতে লাগলাম।
আমি বললাম তো খালি পেটে চা খেতে হয় না,, তবুও খাচ্ছিস কেনো??
ওনি আমায় নিষেধ করার কে?? ওনি যখন আমায় নিষেধ করেছে তখন আরো বেশি করে খাবো (মনে মনে বলে) ওই গরম চায়েই চুমুক দিলাম আর তারপর যা হওয়ার তাই হলো গেলো ঠোঁট আর জিব্বাহ গেলো পুরে,, ওনার উপর এতোটাই রাগ করেছি যে আমি ভুলেই গিছিলাম চা টা গরম,,,
আআআআআআআ পানি (চেচিয়ে বললাম)
আমার কথা না শুনলে এমনি হয় আগেই বলেছিলাম (পানি দিতে দিতে বলল মেহরাব)
নিবো না পানি ওনার থেকে আমি,,, আমি পানি না নিয়ে ওখান থেকে উঠে এসে নিজের রুমে চলে গেলাম তারপর ফ্যান টা ছেড়ে দিয়ে তারনিচে হা করে বসে থাকলাম,,, ইস কত জালা করছে,,, আমি তো চা খেতেই পারি না গরম বলে,, আজকে মাথা বেথ্যা করছে বলে তাই একটু খেতে গেলাম,, সেখানেও ওনি এসে ঝামেলা পাকাই দিলো,, ওরে আমার ঠোঁট আর জিব্বা সব পুরে গেছে (কাঁদছি আর কথাগুলো ভাবছি তখনি রুমে মেহরাব ভাই আসলো)
পানিটা খেয়ে নিলে এখন এখানে এসে এভাবে হা করে বসে থাকতে হতো না (বিছানায় বসে বলল)
আমি ওনার আসা দেখে ঠিকঠাক হয়ে বিছানায় বসে পড়লাম,,, দেখছেও যে আমি ওনার সাথে কথা বলছি না তবুও গায়ে পড়ে কথা বলতে এসেছে যত্তসব,, বকা দেওয়ার সময় মনে ছিলো না??(কথাগুলো মনে মনে বলে আমি বিছানায় পা ঝুলিয়ে দিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে তাকলাম)
অনেক্ক্ষণ হয়ে গেছে মেহরাব ভাই এর কোনো সাড়া শব্দ নেই তাই আমি আস্তে করে ওনি যেখানে বসে ছিলো সেদিকে তাকালাম,, এমা ওনি তো নেই হঠাৎ করে কোথায় উধাও হয়ে গেলো,, তখনি কোলের উপরে কারো ছোঁয়া পেলাম দেখলাম ওনি নিচে বসে বিছানার দুপাশে হাত রেখে আমার কোলের উপরে মাথা দিয়ে বসে আছে।
সরিরে সকালে ওভাবে বলার জন্য,, আমি জানি আমি ভুল করেছি তখনি ওভাবে তোকে কথাগুলো বলা ঠিক হয়নি,, কি করবো বল গ্রাম থেকে আসার পর এতো কাজের চাপ যে ঠিক মতো ঘুমাতেও পারিনি,,, অফিসের টেবিলে ফাইল এর উপর ফাইল জমা হয়ে ছিলো
,(লেখিকা;সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী)
,, সারাদিন তো অফিসে কাজ করতে হতোই আবার রাত জেগে ফাইল গুলো দেখতে হতো,,,এর মাঝে আমি একবার এখানে এসেছিলাম তোকে দেখতে কিন্তু তখন তুই কলেজে ছিলি তাই দেখা হয়নি,,, আজকে শুক্রবার ছিলো তাই সারারাত কাজ করে ভোরের দিকেই ঘুমিয়ে ছিলাম,, কেবলি ঘুমিয়েছি আর তখনি তুই গিয়ে ওমন করে চিৎকার করে ডেকে উঠলি আমি তো প্রথমে ভয়ই পেয়ে গিছিলাম তাই ওমন ধরফর করে উঠে বসলাম,, তারপর একে তো কাঁচা ঘুম তারপর তুই ওভাবে ডাকায় ভয় পেয়ে গিছিলাম তাই ওভাবে বলে ফেলেছি,,,,তাই জুম্মার নামাযটা পড়েই ওমনি চলে এসেছি খাইওনি তারপর এখানে এসে খালাম, জানি তুই অনেক রেগে আছিস আমার উপর সেই জন্যই আগে খেয়ে শক্তি বানিয়ে তারপর আসলাম,,,, সরি প্লিজ আমায় মাফ করে দে(এটা বলে ওনি আমার কোলের মধ্যে মুখ ডুবালেন)
সত্যি ওনাকে দেখে কেমন আগোছালো লাগছে চুলগুলো এলোমেলো দাড়িও একটু বড় বড় হয়েছে,, তবে দাড়ি বড় হওয়াই আরো বেশি সুন্দর লাগছে,, ওনি সব সময় দাড়ি ছোট ছোট করে কেটে রাখেন কখনো ক্লিন সেভ করেন না,,,
(আপনাদের লেখিকারও দাড়ি অনেক ভালোলাগে???)
আমার ও বোঝা উচিত ছিলো ওনাকে,, ওনি হয়ত কোনো কাজের মধো আছে নয়ত ওনি তো কখনো আমার সাথে ওমন করে না, তাই আমি বললাম,,
আচ্ছা ঠিক আছে,, আর শুনেন আমিও সরি (মুখ ফুলায়ে বললাম)
ওনি আমার কোল থেকে মুখ উঠায়ে আমার গাল দুটো টেনে দিয়ে বলল।
ওলে আমাল অবুঝ পরিটা লে গুলুমুলো।
এই চেহারায় হাত দেবেন না,, আপনার হাতে জীবাণু থাকতে পারে (ভাব নিয়ে বললাম)
তাই না?? ফুপি তো বললো আপনি কিছু খাননি,, এখানে চুপটি করে বসেন আমি খাবার আনছি (এই বলে ওনি চলে গেলো)
আমি আমার হাত দিয়ে আমার গাল দুটো মুছে নিলাম,,, ওনি শুধু আমার গাল ধরে টানাটানি করে যদি ছিড়ে যায় তখন?? আর গাল না থাকলে আমায় কেমন দেখাবে এসব ভাবতে ভাবতেই ওনি খাবার নিয়ে চলে আসলো।
তারপর ওনি নিজের হাতে ভাত মাখায়ে মাছ থেকে কাটা বেছে আমায় খাইয়ে দিলেন।
আআআআ ঝাল লাগছে পানি দেন (আমি চেঁচিয়ে বললাম)
কই খাবারে তো ওতোটাও ঝাল হয়নি তাহলে তোর ঝাল লাগছে কেনো?? ও বুঝলাম আপনি তো আবার জিব্বা পুরায়ে বসে আছেন তাহলে ঝাল তো লাগবেই(ওনি পানি দিতে দিতে কথাগুলো বলল)
আমি পানিটা খেয়ে বললাম,, এতো বেশি কথা না বলে খাইয়ে দিনতো অনেক ক্ষিধা লেগেছে আমার,
তারপর ওনি আমায় সুন্দর করে ভাতগুলো মেখে খাইয়ে দিতে লাগলেন,,, আর আমি এক গাল করে ভাত আর একটু করে পানি খাচ্ছিলাম,, এমন করেই পুরো ভাতগুলো ওনি আমায় খাইয়ে দিলেন তারপর মুখটা মুছে দিয়ে নিজের হাতটা ধুয়ে আবারো নিচে বসে বললেন।
শোন তোকে কিছু বলার ছিলো।
হুম বলেন।
আমাকে আজকে বিকালে অফিসের কিছু কাজের জন্য চট্টগ্রাম যেতে হবে।
কদিনের জন্য???
এই সপ্তাহ খানিকের জন্য।
যেতেই হবে(মুখ ফুলিয়ে বললাম)
ওনি মুচকি হেসে বললো,, হুম যেতেই হবে,, তবে ওখান থেকে এসে আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
সত্যি?? কি সারপ্রাইজ বলেন বলেন (আমি খুশিতে গদগদ হয়ে বললাম)
উমম না বলে দিলে কি আর সারপ্রাইজ থাকে??
আপনি কেনো যাবেন?? আপনি না গিয়ে অন্য কাউকে পাঠিয়ে দিলে হয় না?? আবার ১ সপ্তাহ আপনাকে দেখতে পাবো না।
ওনি আমার কথাশুনে মুচকি হেসে মেঝে থেকে উঠে আমার সামনে দাড়িয়ে দুহাতে আমার মুখটা ধরে কপালে চুমো খেয়ে বললেন।
“””অপেক্ষা হলো শুদ্ধতম ভালোবাসার একটি চিন্হ।সবাই ভালোবাসি বলতে পারে কিন্ত সবাই অপেক্ষা করে সেই ভালোবাসা প্রমাণ করতে পারে না”” “”
চলবে,,,??
#ভালোবাসি_বুঝে_নাও??
#পর্ব_১৮
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
বারান্দার পাশের গাছটাই সেই কখন থেকে কাক টা এক ধারে কর্কশ গলায় কা কা করে ডেকেই চলেছে, ধুর ভালোলাগে না,, এখানে কাকটা না ডেকে যদি ককিল ডাকতো তবুও মনটা ভালো হয়ে যেতো।
মেহরাব ভাই চলে যাওয়ার আজ চার দিন হয়ে গেছে,, ওনি যাওয়ার পর কোনো কিছুই ভালো লাগে না সব কিছু কেমন যেনো বিষাদময় লাগে,, (বারান্দায় দাড়িয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো ভাবছিলাম তখনি মা ডাক দিলো)
কিরে কলেজে কি যাবি না,, বেলা কয়টা বাজে সে খেয়াল আছে??,, কলেজ টা কি তোর বাপের?? যে যখন ইচ্ছে তখন যাবি (ডাইনিং টেবিল থেকে বলল)
কি আজব কথা বলো মা,, কলেজটা আমার বাপের হলে তো আমি আর কলেজেই যেতাম না,, সারাদিন শুধু শুয়ে বসে থাকতাম৷ কেননা কলেজটা আমার বাপের তাই (টেবিলে বসতে বসতে বলল মাহি)
আপু শুধু কলেজ কেনো স্কুল টাও যদি আমার বাপের হতো তাহলে আমি স্কুলে তো যেতামই না আর যাও যেতাম সেখানে গিয়ে সবার উপর ছড়ি ঘুরাতাম কেননা স্কুলটা আমার বাপের (খেতে খেতে বলল মনির)
ওদিকে মাহি আর মনির এর কথা শুনে মাহির বাবার যেনো গলায় খাবার আটকে যাওয়ার উপক্রম যেমন মা তার তেমন ছেলে মেয়ে,,, তাই একটু গম্ভীর গলায় বলল।
এতো কথা না বলে তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও,,, ১০ টা বাজতে চলল। যেতে হবে তো।
বাবার তাড়াতে দুজন চুপ করে যলদি যলদি খাবার শেষ করে বেড়িয়ে পড়ল।
কলেজে,,,,,
কিরে আমাদের চটপটে মাহি রানির কি হয়েছে?? কদিন ধরেই দেখছি কেমন চুপচাপ (শিলা)
আরে মনে হয় ওর প্রান প্রিয় মেহরাব ভাইয়ের সাথে কিছু হয়েচে তাই না(সাথী)
হুট তোরা চুপ থাক তো,, ওনার সাথে আমার আবার কী হবে?? আর ওনিতো আজ চারদিন বাড়িতেই নেই কাজের জন্য বাইরে গেছে (মুখ গুমড়া করে বলল মাহি)
মাহির কথা শুনে শিলা আর সাথী দুজনে একসাথে বলল।
অ! এই জন্যই বুঝি মেডামের মন খারাপ তাই তো??
না তেমন কিছু না, এখন চল ক্লাসে যায়।
তারপর সবাই ক্লাসে চলে গেলো।
দুপুরে ক্লাস ছুটির পর মাহি কলেজ এর গেট দিয়ে বাইরে বেরিয়ে রিকশার জন্য দাঁড়াতেই রাস্তার উপারে দেখলো দুজন ছেলে মেয়ে সমানে ঝগড়া করছে তাও আবার এই রোদের মধ্যে।
কিরে ওনারা কি পাগল নাকি রাস্তার মধ্যে দাড়িয়ে এভাবে ঝগড়া করছে কেনো??(শিলা)
পাগল ছাড়া আর কি নয়ত কেউ এভাবে এতো গরমে আর রোদের মধ্যে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ঝগড়া করে??(সাথী)
আরে আমি তো ওনাদের চিনি,,, (মাহি পাশ থেকে বলল)
তুই চিনিস?? কে ওনারা??
আরে ওই মেয়েটা তো মেহরাব ভাই এর খালাত বোন মীরা আর ওই যে ছেলেটা আমার মেঘলা আপুর দেবর,,, কিন্তু ওনারা এভাবে এখানে দাড়িয়ে ঝগড়া করছে কেনো।
ওদিকে,,,,,
আপনি ইচ্ছে করে এমন করেছেন যাতে আমি পড়ে যায়,,, এই আপনি এতো খারাপ কেনো বলেন তো?? সেই গ্রাম থেকে আমার পিছন লেগেছেন আবার এখন শহরে আসার পরও আপনি,, (মীরা)
হুম?? আমার খেয়েদেয়ে কাজ নেই আমি আপনার মতো ময়দা সুন্দরীর পিছু নেবো,, শুনুন আমি না ইচ্ছে করে করিনি ওকে?? সামনে থেকে গাড়ি আসছিলো তাই আমি গাড়িটা সাইট করতে যাচ্ছিলাম আর তখনি আপনি নাচতে নাচতে আমার গাড়ির সামনে চলে আসলেন যত্তসব (নেহাল)
আসোলে কথাটা হলো,, মীরার ভার্সিটী ছুটির পর ও গাড়ি পাচ্ছিলো না তাই রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলো আর তখনি নেহাল তার বাইক নিয়ে একদম মীরার সামনে এসে থামালো একটুর জন্য এক্সিডেন্ট হয়নি,, আর তারপর থেকেই ঝগড়া শুরু।
এই চলতো দেখি ওখানে কি হচ্ছে(এই বলে মাহি আর ওর বান্ধবীরা মিলে নেহালদের কাছে গেলো।
আমার কি মনে হয় জানেন?? আপনি মনে হয় সব কিছুর সাথেই ঝগড়া করেন, যেমন মাটি,, পানি,, বাতাস,, আর একটু ঝগড়া না করলেই আপনার গলা চুলকায় তার জন্যই এভাবে আমার সাথে ঝগড়া করেন (নেহাল)
মীরা রেগে কিছু বলতে যাবে তার আগেই মাহি বলল,,
আরে মিরা আপু আপনি,, আর এখানে কি হয়েছে??
এই যে চলে আসলো আরেকজন নেকামো করতে যত্তসব (মীরা মনে মনে বলল)
আরে মাহি যে তুমি এখানে??(নেহাল)
আমি তো কলেজে এসেছিলাম ভাইয়া।
আমি বুঝি না এই মেয়ের মধ্যে কি আছে,, মেহরাব ও এই মেয়ের জন্য পাগল আর এখন এই নেহাল না বেহাল,ও,,,, ওকে দেখলেই মুখ দিয়ে যেনো মধু ঝড়ে আর আমার বেলায় তিতা করলা (মনে মনে বলল মীরা)
মাহি তোমাকে ভাবি যেতে বলেছে,,, যাবে কিন্তু,, ভাবি তো সব সময় তোমার কথা বলে।
জি ভাইয়া যাবো,, এখন বলেন তো কি হয়েছে?? আপনারা এখানে দাড়িয়ে কি করছেন??
আর বলো না তোমার এই ময়দা সুন্দরী আপু গায়ে পড়ে আমার সাথে ঝগড়া করতে আসে শুধু। (নেহাল)
দেখুন মিস্টার বেহাল আমি মোটেও আপনার সাথে গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসি না, আমার রুচি ওতোটাও খারাপ নয় (মীরা)
হুম?? জানি জানি কার রুচি কেমন।
ঘোড়ার ডিম জানেন এখন সরুন তো আমার সামনে থেকে,, এমন সংয়ের মতো দাড়িয়ে না থেকে (তারপর মীরা ওখান থেকে চলে গেলো)
তা মাহি তুমি তো এখন বাড়ি যাবে চলো তোমাকে পৌঁছে দিই??(নেহাল)
না ভাইয়া আমি একাই চলে যেতে পারবো,,, আচ্ছা ভাইয়া আমরা আসি ওকে,, এই চল।
তারপর মাহীরাও ওখান থেকে চলে গেলো।
তিনদিন পর,,,,,
আজকে আমি অনেক খুশি কেননা আজকে মেহরাব ভাই আসবে,,, উফফ কত্ত দিন পর ওনাকে দেখবো,,, এটা ভাবতেই মনের ভিতর কেমন খুশি খুশি লাগছে।
মাহি আমি তোর মামাদের বাসায় যাবো তুই যদি যাস তাহলে তৈরি হয়ে নে (বাইরে থেকে বলল মাহির মা)
সেকি মা তুমি হঠাৎ মামাদের বাসায় যাবে কেনো?? কিছু কি হয়েছে??
হুম তোর মামির শরীল নাকি খারাপ পেশার টা বেড়েছে,, তাই যাবো দেখতে, আবার আজকে নাকি মেহরাব ও আসবে তাই যাই ছেলেটাকে দেখে আসবো,, তুই যাবি নাকি?? যদি যাস তাহলে জামাটা পালটে নে,, আমি হাতের কাজটা সেরেই যাবো।
হ্যাঁ মা আমি যাবো তুমি দাড়াও আমি এখনি তৈরি হয়ে আসছি।
আমাকে তো যেতেই হতো,, ওমমম কি পরে যে যাই আইডিয়া এই জামাটা পড়ে যাবো ওনার তো এই জামাটা অনেক পছন্দ, আর ওনার দেওয়া চুড়ি গুলোও পরবো,, আমার অনেক সখ কানে বড় বড় ঝুমকো ঝুলাবো কিন্তু ওনার কড়া আদেশ,, কানে ওতো বড় বড় দুল পরার কোনো দরকার নেই শেষে দেখা যাবে কান কেটে পরে গেছে তখন??
তাই দুলটা বাদে সব কিছু পড়ে নিয়ে আম্মুর সাথে বেরিয়ে গেলাম,, আম্মু ঘরে দরজা দিয়ে আমায় নিয়ে যেতে লাগলো, বাড়ি এখন কেউ নেই আব্বু অফিসে আর মনির তার রুমে ঘুমায়। তাই ওকে রেখেই আসলাম।
হাটতে হাটতে পৌঁছে গেলাম আমার গন্তব্যে মেন দরজা খোলায় ছিলো,, তাই আর কলিং বেল বাজানোর দরকার পরল না,,, ভিতরে যেতেই দেখলাম ডয়িং রুমে একটা সোফায় মামি বসে আছে আর তার পাশের সোফায় মেহরাব ভাই আর মামির পাশের সোফায় একটা মেয়ে বসে আছে,,, শাড়ি পড়া, কেমন যেনো লাজুক দৃষ্টিতে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে,,
আমরা ভিতরে যেতেই আমি শুনতে পেলাম,, মেহরাব ভাই বলল,, হ্যাঁ বিয়ে করে ফেলেছি,, এটা বলেই ওই মেয়েটার দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগল।
কথাটা কানে যেতেই মহুর্তেই যেনো আমার সব কিছু থমকে গেলো তাহলে কি মেহরাব ভাই বিয়ে করে ফেলেছে?? ওই মেয়েটা কি তাহলে ওনার বউ?? তাহলে কি ওনি আমায় এই সারপ্রাইজই দিতে চেয়েছিলো??(মনে মনে কথা গুলো ভেবেই আমার চোখের কোনে জল চলে এলো)
চলবে,,,,?