#ভালোবাসি_বুঝে_নাও??
#পর্ব_২৩,২৪
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
২৩
,,বিকালে,,,
মেঘলা আপু জলদি আসো দেখে যাও নিচে কি হচ্ছে,, বাহ কিয়া সিন হে (মেঘলা কে ডাকতে ডাকতে বলল মাহি)
মাহির ডাক শুনে মেঘলা তড়িঘড়ি করে মাহির কাছে এসে বলল।
কিরে কি হয়েছে?? ওভাবে ডাকলি কেনো(মেঘলা)
আরে, আমার দিকে না তাকিয়ে নিচে তাকাও তাহলেই বুঝতে পারবে।
মাহির কথা শুনে মেঘলাও নিচে তাকিয়ে ওর মুখটা পুরাই হা হয়ে গেলো।কেননা নিচে নেহাল মীরার কমর জরিয়ে ধরে আছে, আর মীরা নেহাল এর গলা জরিয়ে আছে। আর তারপাশে মনির একটা ব্যাগ হাতে নিয়ে হা করে নেহাল আর মীরার দিকে তাকিয়ে আছে।
আসোলে হয়েছে কি,,, মনির মাহির সব জামা একটা ব্যাগে করে নিয়ে মেহরাব দের বাড়ি আসছিলো,
(গল্পের লেখিকা ,,সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী)
তারপর রাস্তায় আইসক্রিম দেখে আবার বাড়ি ফিরে গিয়ে টাকা এনে একটা আইসক্রিম কিনে খেতে খেতে মেহরাবদের বাড়িতে আসলো,, তারপর ডয়িং রুমে ঢুকে সিঁড়ি কাছে আসতে কিছু একটার সাথে ধাক্কা লেগে অল্প একটু আইসক্রিম নিচে পড়ে গেলো,, এমনিতেই যে গরম আর বাইরেও অনেক রোদ পরেছে তাই অনেক তারাতাড়িই আইসক্রিম টা গলে যাচ্ছে।
তো মনির ব্যাগটা নিচে রেখে পরে যাওয়া আইসক্রিম টা যেই উঠাতে যাবে তখনি নেহাল বাইক এর চাবিটা হাতে ঘুরাতে ঘুরাতে ভিতরে আসতে লাগলো।
হে পিচ্চি তুমি মাহির ভাই নাহ?? বিয়েতে দেখেছি তোমায়(কথাগুলো বলে নেহাল মনির এর কাছে এসে দাঁড়ালো আর মনিরও পিছে ঘুরে নেহাল এর দিকে তাকালো,, আর তখনি সিঁড়ি বেয়ে মীরা নিচে নামছিলো আর ভুলবসত নিচে পড়া আইসক্রিম টার উপর পা পরতেই স্লিপ কেটে গিয়ে সোজা নেহাল এর গায়ের উপর পড়ল,, আর নেহাল ও মীরাকে নিচে পরা থেকে আটকাতে মীরা কমর চেপে ধরল, আর মীরা ভয় পেয়ে নেহাল গলা জরিয়ে ধরলো,, আর বেচারা মনির হা করে সেই দৃশ্য দেখতে গিয়ে তার হাতের আইসক্রিম টার কথা বেমালুম ভুলে গেলো,, আর আইসক্রিম টা গলে পুরোটা নিচে পড়ে গেছে এখন মনির শুধু কাঠিটাই ধরে আছে)
আমার এমন কেনো লাগছে?? বুকের ভিতরটা কেমন যেনো ঢিপঢিপ করছে,, সারা শরীলে কেমন শীতল বাতাস বইছে,, এমন কেনো হচ্ছে?? যেনো মনে হচ্ছে এ চোখে চোখ রেখে বাকিটা জীবন চেয়ে থাকি(মীরা নেহাল এর দিকে তাকিয়ে মনে মনে কথা গুলো বলল)
আরে কি করছেন ছাড়ুন আমায়,, অসভ্য মেয়ে মানুষ ছেলে দেখলেই গায়ে পড়তে মন চাই??(মীরাকে ছেড়ে দিয়ে বলল নেহাল)
কিন্তু প্রতি উত্তরে মীরা কিছুই বললো না শুধু ড্যাবড্যাব করে নেহাল এর দিকে তাকিয়ে থাকলো,, কেনো যেনো কিছু বলতে মন চাইছে না, শুধু মন চাইছে এভাবেই ওনার দিকে তাকিয়ে থাকি।
এরি মাঝে মেঘলা আর মাহি নিচে নেমে আসলো।
এখানে কি হচ্ছে?? (মেঘলা)
আপনি মীরা আপুর সাথে কি করছিলেন??(মন খারাপ এর অভিনয় করে বলল মাহি)
আরে তেমন কিছুই না,, ওনি পড়ে যাচ্ছিলো আর আমি শুধু ওনাকে ধরেছি এই আরকি,, এর বেশি কিছুই না তুমি আবার ভুল ভেবো না (নেহাল)
হুম?? আমি তো দেখেছি আপনি ওনার কমর জরিয়ে ছিলেন। (মাহি)
আহ মাহি তুই কিন্তু বেশি বেশি করছিস,, ওভার একটিং করা অফ কর হিতে বিপরীপ হয়ে যাবে কিন্তু (ফিসফিস করে মাহির কানে বলল মেঘলা)
আহ তুমি দাখোই না কি হয় মেঘলা আপু (মাহি)
না না মাহি তেমন কিছুই না তুমি ভুল ভাবছো আমি তো,,,, নেহাল কে আর কিছু বলতে না দিয়ে মেঘলা বলল।
আরে এখন এসব ছাড়ো তো,, নেহাল তুমি ভিতরে যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো,,
আচ্ছা ঠিক আছে ভাবি (এই বলে নেহাল মাহির দিকে এক পলক তাকিয়ে চলে গেলো)
আর ওদিকে মীরা তো এখনো নেহাল এর দিকেই তাকিয়ে আছে,,, তাই দেখে মাহি মীরার সামনে তুরি বাজিয়ে বলল।
চলে গেছে (মাহি)
হ্যাঁ???(আনমনে বলল মীরা)
নেহাল ভাইয়া চলে গেছে।
ওহ আচ্ছা। এই বলে মীরা উপরে চলে গেলো।
,,,,রাতে,,,
মেহরাব অফিস থেকে এসে সোজা সোহান এর রুমে চলে গেলো গিয়ে দেখল যে মাহি আর সোহান পরছে,,,, কি হলো বেপ্যার টা মাহি পরছে?? এটাও সম্ভব?? (মনে মনে এটা বলে মেহরাব চলে গেলো)
দেখলি তো কীভাবে তোর ভাইকে বোকা বানালাম হিহিহি কিছুই বুঝে নাই (মাহি)
তুই নিজেকে যতটা চালাক ভাবিস আসোলে তুই অতটাই বোকা,,, ভাইয়া যদি জানতে পারে যে তুই না পরে এতোক্ষণ ফোনে গেম খেলছিলি আর ভাইয়ার আসা দেখেই বই নিয়ে পড়তে বসলি,, তাহলে তোর খবর আছে (সোহান)
আ্যা বললেই হলো খবর আছে,এতো জ্ঞান দেওয়া বন্ধ করতো,, কি খবর করবে হা ক,,কি,,ক,,,,,,(আর বলতে পারলো না মাহি কেননা দরজার সামনে মেহরাব ভ্রু কুচকে মাহির দিকে তাকিয়ে আছে)
নে এবার সামলা আগেই বলেছিলা (ফিসফিস করে বলল সোহান)
মেহরাব এর আগেই সন্দেহ হয়েছিলো কেননা মাহি চুপচাপ পরড়ে বসার মেয়েই নয়,, তাই তখন মেহরাব রুম থেকে বার হয়ে দরজার সামনে দাড়িয়ে ছিলো।আর মাহির বলা সব কথা শুনেছে।
বই খাতা সব নিয়ে আমার রুমে আয় (এই বলে মেহরাব চলে গেলো)
কপাল রে কপাল সবি কপাল,,,, এটা বলতে বলতে মাহি বই খাতা সব গুছিয়ে মেহরাব এর রুমে চলে গেলো,আর তা দেখে সোহান তো হেসে কুটিকুটি,, মাহি সোহানের মাথায় একটা গাট্টা মেরে বেরিয়ে গেলো,,,,, গিয়ে দেখলো জুতোটা ফ্লোরে রেখে বিছানার উপর টাই টা ছরিয়ে রেখে ফাইল গুলো সারা বিছানায় ছড়িয়ে সিটিয়ে রেখে মহাসয় ওয়াশরুমে গিয়ে বসে আছে।
এত বর একটা ছেলে হয়ে গেছে তবুও কোনো কিছু ঠিক মতো করতে পারে না,, পুরো রুমটাই একদম জঙ্গল বানিয়ে দিয়েছে কয়েক মিনিটে (সব কিছু গোছাতে গোছাতে বলল মাহি, ঠিক তখনি ওয়াশরুম থেকে চুল ঝাড়তে ঝাড়তে বার হলো মেহরাব,,, পরনে একটা টাওজার আর গায়ে একটা কালো টির্শাট মুখে ফোঁটা ফোঁটা পানি লেগে আছে,, বড় বড় চুল থেকে টপটপ করে পানি পরছে আর ওনি হাত দিয়ে তা ঝাড়ছে,, সুঠাম দেহে টির্শাটটা একদম টাইট হয়ে লেগে আছে,,, শরীলের গঠনটা শার্টের উপর থেকেই বোঝা যাচ্ছে ,, আর আমি ড্যাব ড্যাব করে চোখ দিয়ে ওনাকে গিলে খাচ্ছি, কি সুন্দর, আচ্ছা ছেলে মানুষ ও বুঝি এতো সুন্দর হয়??
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে হাত দিয়ে চুল গুলো ঝাড়তে ঝাড়তে সামনে তাকিয়ে দেখি মাহি আমার দিকে ড্যাব করে তাকিয়ে আছে, তাই দেখে শয়তানি করে বললাম।
নিজেই যদি নিজের জিনিসে এভাবে নজর দিস তাহলে তো নজর লেগে যাবে,, তখন আবার তোকেই সেই নজর কাটাতে হবে কিন্তু।
ওনার কথায় হুশ ফিরলো আর এতোক্ষণ নিলর্জ্জর মতো ওনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম এটা ভাবতেই নিজের কাছে নিজেকে কেমন বেহায়া মনে হলো,, ছি ওনি কি ভাবলো নিশ্চয়ই আমাকে হ্যাংলা ভেবেছে। ভাবুক তাতে আমার কি ওনি তো আমারি আমি যতক্ষন ইচ্ছে ওনার দিকে তাকিয়ে থাকবো,, নজর দিয়ে একদম ডুবিয়ে ফেলবো তাতে ওনার কি হম মানুষ টা তো আমারি (মনে মনে কথাগুলো ভেবে লজ্জায় কুকড়ে উঠলাম)
মাহির এমন লজ্জা পাওয়া দেখে মেহরাব আস্তে আস্তে মাহির কাছে এসে,, কপালে পড়া চুলগুলো কানের পিছে গুজে দিতে দিতে বলল,,
আমার সামনে এভাবে লজ্জা পেয়ো না তাহলে কিন্তু আমি তোমায় টুপ করে খেয়ে ফেলবো,, কেননা লজ্জা পেলে তোমার গালদুটো পুরাই লাল টমেটো লাগে,৷ আর ইউ নো না?? আই লাভ রেড টমেটো।
মেহরাব কথা শুনে মাহি আরো বেশি লজ্জা পেলো,, আর মাথাটা নিচু করে রাখলো,, তা দেখে মেহরাব মুচকি হাসি দিয়ে মাহির হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বলল।
শোনো না তোমায় কিছু বলার আছে (অনেকটা রোমান্টিক ভাবে)
মাহি মাথাটা তুলে মেহরাব এর চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো। যেনো চোখ দিয়েই জিগাস করছে বলুন না বলুন যা খুশি বলুন আমি সব শুনতে রাজি,,,,, তবে মুখে কিছু বললো না।
বলছি কি যে বলছি কি (মেহরাব)
মাহি এবার নিজের মুখ খুলে ফিসফিস করে বলল।বলুন না কি বলবেন।
বলছি কি যে এখন পড়তে বসেন কাল বাদে পরশো থেকে পরিক্ষা,, পড়াশোনা বাদ দিয়ে রোমাঞ্চ করতে এসেছে,, এই এতোটুকু বাচ্চা মেয়ে আবার রোমাঞ্চ এর কি বুঝিস রে যা পড়তে বস। (মেহরাব)
মেহরাব এর কথা শুনে মর্হুতেই মাহির লজ্জা রাঙা মুখটা রাগে পরিনত হলো,, আর ভ্রু কুচকে মেহরাব এর সামনে থেকে সরে টেবিলে বসতে বসতে বিরবির করে বলতে লাগল।
খরুচ একটা,, শালা আনরোমান্টিক এর বস্তা,, এভাবে পড়া পড়া করলে জীবনে বাবা ডাক শুনতে হবে না (বিরবির করে বলল)
মাহির এমন রাগ করা দেখে মেহরাব হু হা করে হেসে উঠল। কিন্তু যখনি মাহি রেগে ওর দিকে তাকালো তখনি আবার হাসি অফ করে ঠোঁটের উপর আঙুল রেখে চুপ করে বসে থাকলো,, তবে মিটমিট করে হাসতেই লাগল।
চলবে,,,,,?
#ভালোবাসি_বুঝে_নাও??
#পর্ব_২৪
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
কি হলো ওমন চোরের মতো মিটমিট করে হাসতেছেন কেনো??(মাহি)
কই না তো আমি তো ওই এমনি (এই বলে মেহরাব বিছানার উপর সটান হয়ে শুয়ে পড়ল,, সারাদিন অনেক ধকল গেছে অফিসে অনেক কাজের চাপ,,, কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থেকে তারপর চোখ খুলে মাহিকে বলল)
তা মেড্যাম আপনার রাতে খাওয়া হয়েছে??(মেহরাব)
মাহি কিছু না বলে,, মুখ বাকিয়ে বলল জানি না,, (আমি যে এতো রাত অবধি ওনার জন্য না খেয়ে অপেক্ষা করছি,, আর এখন ওনি জিগাস করছে আমি খেয়েছি কি না,,, বলবো না পারলে বুঝে নেন,, মনে মনে বলল মাহি)
মাহির জানি না শুনেই মেহরাব যা বোঝার বুঝে গেছে,,, শুয়া থেকে উঠে দাড়িয়ে মাহিকে বলল।
আচ্ছা তাহলে তুই পড় আমি নিচে থেকে খেয়ে আসছি ওকে।(এই বলে মেহরাব বেরিয়ে গেলো)
ইইইই ওনি একটুও বুঝেন না আমায় আমি যে ওনার জন্য না খেয়ে বসে আসি আর ওনি ড্যাং ড্যাং করে খেতে চলে গেলো,, উফ মনচাই একটা বাড়ি দিয়ে মাথাটাই ফাটাই দিই (নিজে নিজেই একা একা বকবক করছিলো মাহি)
প্রায় অনেকক্ষণ পর হাতে খাবারের থালা নিয়ে রুমে আসলো মেহরাব,, একদম মাহির টেবিলের পাশে গিয়ে একটা টুলের উপর বসে ভাত মাখিয়ে মাহির মুখের সামনে ধরে বলল।
নেন মুখটা খোলেন দেখি।
মাহি মেহরাব এর দিকে তাকিয়ে দেখে,, চোখ গুলো হালকা লাল মুখে ক্লান্তির ছাপ,, সারাদিন অফিসে এতো কাজ করেও এছেলেটা ক্লান্ত হয় না?? এখন আবার নিজে না থেকে আমাকে খাওয়াতে এসেছে,, এখন তো ওনার পেট ভরে খেয়ে লম্বা একটা ঘুম দরকার নইলে তো অসুস্থ হয়ে পড়বে, কিন্তু না তা না করে ওনি এখন আমার সেবা করতে এসেছে,,, ওনার আচার আচরণেই বোঝা যায় যে ওনি আমায় কতটা ভালোবাসেন কিন্তু ওই যে বদ পোলা মুখে বলবে না।
কি হলো এতো কি ভাবছিস?? নে হা কর।
মাহি টেবিলের উপর থেকে গ্লাসটা নিয়ে হাতটা ধুয়ে প্লেট থেকে এক লুকমা ভাত নিয়ে মেহরাব এর মুখের সামনে ধরে বলল।
নেন হা করুন।
মাহির এমন কাজে মেহরাব এর ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠল। তারপর দুজন দুজন কে খাইয়ে দিলো,,
,,,,,সকালে,,,,
নেহাল বাইক এর চাবি ঘুরাতে ঘুরাতে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলো তখনি মেঘ ওকে ডেকে বলল।
কিরে আমি যে তোকে অ্যাপলাই করতে বলেছিলাম সেটা করেছিস??(মেঘ)
হ্যাঁ ভাইয়া করেছি, (নেহাল)
তা এখন কোথায় যাচ্ছিস??
কেনো ভার্সিটীতে,,
ওহ আচ্ছা।
মেঘ আর নেহাল এর কথা বলার মাঝেই মীরা হুরমুর করে সেখানে আসলো এসে নেহাল কে বলল।
আমিও ভার্সিটীতে যাচ্ছি আমায় একটু ড্রপ করে দিবেন?? (মীরা)
পাগল নাকি আমি ওসব পারবো না,, ভাইয়া আমি গেলাম(নেহাল)
প্লিজ দিন না,, এমন করেন কেনো(মীরা)
হ্যাঁ নেহাল, মেয়েটা যখন এতো করে বলছে তখন নিয়ে যা, আর তুই ও তো ওদিক দিয়েই যাবি যা ওকে নিয়ে যা (মেঘ)
কিন্তু ভাইয়া?
নেহাল(মেঘ চোখ গরম করে বলল)
আচ্ছা ঠিক আছে যাচ্ছি,, এই যে আসেন (এই বলে নেহাল আগে আগে চলে গেলো ধুত কোথায় ভাবলাম মাহিকে নিয়ে যাবো তা না এখন এই ময়দা সুন্দরী কে নিয়ে যেতে হচ্ছে, যত্তসব ঝামেলা)
আর মীরাও খুশি হয়ে নাচতে নাচতে নেহাল এর পিছন পিছন গেলো।
কি মনে হচ্ছে মাহির প্লান কাজে দিবে??(পিছন থেকে মেঘলা বলল)
জানিনা,, আমার মনে হয় না নেহাল এতো সহজে মানবে, আমি চিনি তো ওকে ও কেমন , (মেঘ)
হুম হিতে বিপরীত হয়ে না যাই আবার (মেঘলা)
কি জানি সেটা পরে ভাবা যাবে এখন চলো আমরা শুরু করি,, এবাড়ি আসার পর থেকে তো তোমার ভাইয়ের জন্য কিছুই করতেই পারছি না(মেঘ)
মানে?? কি করবেন??
কেনো রোমাঞ্চ,, আরে আমার বাবা হওয়া লাগবে না?? চলো চলো।
এই না একদম না,, বাবা মা আছে কিন্তু পাশের রুমে।
তাতে কি তুমি চলো তো।
মোটেও না (এই বলে মেঘলা দৌড়ে উপরে চলে গেলো আর মেঘ ও মেঘলার পিছন পিছন গেলো)
??৷সময় চলমান সত্যি সময় যে কীভাবে কোন দিক দিয়ে চলে যায় সেটা বোঝাই যায় না,, কেটে গেছে অনেক গুলোদিন,, এরি মাঝে মাহি মেহরাব আর মেঘ মেঘলা খুব ভালোভাবেই বুঝে গেছে যে মাহির প্লান সম্পুর্ন হয়নি।(গল্পের লেখিকা;,,,,সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী)
মীরা নেহাল কে ভালোবাসলেও নেহাল মীরাকে ভালোবাসিনী ও মাহিতেই আটকে আছে।
মাহি এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়ে দেছে অনেক ভালো রেজাল্ট হয়েছে আজকে মেহরাব ওকে নিয়ে ভার্সিটীতে ভর্তি করাতে যাবে ,, কেননা আর মাসখানেক পরেই মাহি আর মেহরাব এর বিয়ে।
যেহেতু নেহাল এখন নেই তাই মেঘও বলছিলো যে এই সুযোকেই বিয়েটা হয়ে যাক। নেহাল ট্রেনিং এ ওর পুলিশের পোস্টে জব হয়ে গেছে তাই এখন বর্তমানে ট্রেনিং এ আছে।
কিরে মাহি তোর হলো জলদি কর তোকে ওখানে ভর্তি করায়ে আমার তো আবার অফিসে যেতে হবে নাকি (মেহরাব)
আসছি তো, , আচ্ছা শোনেন না, বলছি কি আমাকে মেঘলা আপুর বাসায় দিয়ে আসবেন, তারপর আপনি অফিস থেকে ফিরার পথে না হয় নিয়ে আসবেন(মাহি ওদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়ির কাছে গিয়ে বলল)
আরে আর কয়দিন পর তো মেঘলাকে এখানে নিয়েই আসবো, তাহলে এখন তোর যাওয়ার কি দরকার?
না না আমি তবুও যাবো আর এই সময় আপুর কাছে কারো থাকা খুবি দরকার,, প্লিজ যায়(কিউট ফেস করে বলল)
হুম এমন কিউট করে বললে আর না মেনে থাকা যায়?? ঠিক আছে নিয়ে যাবো, এখন তো গাড়িতে উঠেন দেরি হয়ে যাচ্ছে।
তারপর ওরা দুজনে গাড়িতে উঠে ভার্সিটীর উদ্দেশ্য রওনা দিলো,,,, আর হ্যাঁ মেঘলা ৬ মাসের পেগনেন্ট।
ওদিকে,,,,,,
আর তো মাএ কটা মাস তার পরই আমি আসছি, এসেই বাড়িতে তোমার কথা বলবো, আর এখন তো কেউ আমায় বেকার ও বলতে পারবে না,, ১ বছর তো হয়েই গেছে আর কয়মাস গেলেই ট্রেনিং শেষ তারপর তোমাকে নিজের করে নেবো (শুয়ে মাহির একটা ছবির দিকে তাকিয়ে কথা গুলো বলল নেহাল, আর নেহাল যেহেতু জানেনা যে মাহি আর মেহরাব এর বিয়ে ঠিক হয়ে আছে তাই ও নিজে মাহিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে,,, এখন ব্রেক টাইম তাই নেহাল শুয়ে আছে,, তখনি ওর ফোনটা বেজে উঠল অনেক বিরক্তি নিয়ে ফোনটা ধরল)
হ্যালো, আপনি এমন কেনো বলেন তো, আমি এতো ফোন দেই তবুও আমার ফোনটা ধরেন না কেনো?? আমার খারাপ লাগে না বুঝি (মীরা)
প্রথমত, আমি এখানে বেড়াতে আসিনি আমার ট্রেনিং চলছে,, দ্বিতীয়ত, ফোন নিয়ে সবসময় বসে থাকি না আমি।আর আপনি কে এমন যে আপনার ফোন আমায় ধরতেই হবে,, কে আপনি??(রেগে বলল নেহাল)
আমি কে কেনো ফোন দিই সেটা তো গত ১ বছর ধরে বলেই আসছি,,, এখন আবারো বলছি আমি আপনার কাছে এতো ফোন দিই কারন আমি আপনাকে ভালোবাসি তাই,, প্লিজ নেহাল একটিবার বুঝার চেষ্টা করুন,, অনেক ভালোবাসি আপনাকে (মীরা)
ওহ তাই বুঝি,, আচ্ছা আপনি না মেহরাব কে ভালোবাসতেন তাহলে হঠাৎ আমার ঘাড়ে ভর করলেন কেনো?? যে মেয়ে এভাবে ঘন্টায় ঘন্টায় প্রেমিক চেঞ্জ করে সে কাউকে ভালোবাসাতে পারে না (নেহাল)
আমি আর কতবার বলবো আপনাকে, সেটা আমার মহো ছিলো,, আমি মেহরাব কে ভালোবাসিনি আমার ওকে ভালোলাগতো আর আমি মাহিকে হারাতে চেয়েছিলাম,, ,, আমি চাইনি ও মেহরাবকে পাক আর আমি ওর কাছে হেরে যাই,, কিন্তু আমি এখন বুঝি কোনটা ভালোবাসা আর কোনটা ভালোলাগা,, প্লিজ নেহাল একটু বুঝুন ভালোবাসি আপনাকে। (মীরা)
এই শোনেন আপনার এমন বকবক শোনার টাইম নেই আমার আমি রাখছি। (এই বলে নেহাল ফোনটা রেখে দিলো,, আর মীরাও ফোনটা বুকের সাথে জরিয়ে ধরে কাদতে লাগল।এখন ও বুঝে সেদিন মাহির বলা প্রতিটা কথার মানে,, এখন হারে হারে ঠিক পাই,, সত্যি কাউকে ভালোবাসলে এমনি হয়)
চলবে,,,,,??