#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2??,৪৯,৫০
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#৪৯_পর্ব
.
দেখতে দেখতে অনেকগুলো মাস পেরিয়ে গেলো,,মাহি মেহরাব এর বিয়ের পাঁচ মাস হয়ে গেছে,, মেঘলার এখন ছয় মাস চলছে নেহাল ভার্সিটি শেষ করে একটা জব করছে আজকে শুভ আর ইপ্সার মেয়ের মুখে ভাত দেখতে দেখতে পিচ্চি টার বয়স পাঁচ মাস হয়ে গেলো, মাহি মেহরাব সহ বাড়ির সবাই ওদের বাড়ি যাচ্ছে,,
কি হলো মাহি তোমার হয়েছে?? আর কতক্ষণ লাগবে??
আর একটু এই তো হয়ে গেছে,
বিয়ের পাঁচ মাস হয়ে গেলো তবুও শাড়ি পড়া শিখলে না,,
আমি কি করবো আমি কি শাড়ি পড়ি নাকি?? যখন পড়ি তখন তো মেঘলা আপু নয়ত আম্মু পরিয়ে দেয় কিন্তু আজকে দুজনের একজন ও নেই মেঘলা আপু শশুর বাড়ি আর আম্মু আব্বু তো আগেই শুভ ভাইয়াদের বাড়ি চলে গেছে।
আচ্ছা ঠিক আছে,, দাও আজকে আমিই তোমাকে শাড়ি পরিয়ে দিচ্ছি,,
আপনি পারেন??
পারি না তবে চেষ্টা করতে দোষ কোথায়,, এই বলে মাহির হাত থেকে শাড়িটা নিয়ে অনেকক্ষণ ভেবে চিন্তে এদিক ওদিক করে অবশেষে মাহিকে শাড়িটা পরিয়ে দিলো।
ইয়াহ একদম পারফেক্ট,,, এই বলে মাহির মাথায় একটা চুমো দিলো,, এখন চলো,।
তারপর দুজনে শুভদের বাড়ি চলে গেলো,,
,,,,নেহাল অনেকদিন পর আজকে ভার্সিটিতে এসেছে, এখান থেকে যাওয়ার পর মীরার সাথে আর তেমন দেখাই হয় না তাই আজকে তার কাঁদা সুন্দরীর কে দেখতে এসেছে এরপর শুভদের ওখানে যেতে হবে ,এই জন্য অফিস থেকে একদিনের ছুটি নিয়েছে, ভার্সিটিতে এসে মাঠে দাঁড়িয়ে একজনের সাথে কথা বলছিলো তখনি পিছন থেকে সাথী বলে উঠলো।
আরে নেহাল ভাইয়া আপনি?? (সাথী)
কিরে পড়াশোনা কেমন চলছে হুম?? আর আমার কাঁদা সুন্দরী কে দেখে রেখেছিস তো??
সে আর বলতে, তবে মীরা আপু আর আগের মতো তেমন হাসে না শুধু মন খারাপ করে থাকে আর আমাকে আর আপনাকে নিয়ে সন্দেহ করে।
হুম আমাকে অনেক জ্বালিয়েছিলো সেই জন্যই তো এই প্লানটা করা,, পাগলি টা তো জানেই না, আমি সেই প্রথম থেকেই ওর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি,, ভালোবাসি সেটা বুঝেই না।
আপনি কি কখনো বলেছেন নাকি আপুকে, অনেক হয়েছে আর কষ্ট দিয়েন না, বেচারি অনেক কষ্ট পাচ্ছে।
হুমম ভাবছি এখন বলেই দেবো এতোদিন চাকরির জন্য অপেক্ষা করছিলাম এখন তো হয়ে গেছে তাই ভাবছি বলে দেবো।
ভ,,,ভাইয়া পিছনে তাকাও।
কেনো কি হয়েছে পিছনে কি?? এই বলে নেহাল পিছনে তাকিয়ে দেখলো মীরা রেগে লাল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে।
ওরে বাবা আমি গেলাম এই বলে সাথী দৌড়ে চলে গেলো,, নেহাল একটা শুকনো ঢোক গিলে মীরার কাছে যেতে গেলো, কিন্তু তার আগেই মীরা ওখান থেকে চলে গেছে।
,,,,,,,,,,,,,,,,
মাহি মেহরাব ওখানে গিয়ে সবার সাথে হাসি খুশি ভাবে দিনটা কেটে গেলো রাতে মেহরাব এর বাবা মা চলে আসলেও মাহি আর মেহরাব কে যেতে দিলো না শুভ, বললো কাল সকালে যেতে,, অনেক রাত অবধি মেহরাব,, মেঘ, শুভ, নেহালসহ সবাই মিলে ছাদে আড্ডা দিলো তারপর ডয়িং রুমে মাদুর বিছিয়ে তার উপর কাথা পেরে বিছানা করা হলো,, বলা হলো সব ছেলেরা এখানে ঘুমাবে আর মেয়েরা আর বাড়ির আত্মীয়রা রুমে ঘুমাবে, মেহরাব করুন চোখে মাহির দিকে তাকালো মাহি মুখ টিপে হাসছে।
কিচ্ছু করার নেই ভাই আজকের রাতটা বউ ছাড়াই কাটাতে হবে,, মেঘ ফিসফিস করে মেহরাব এর কানে বলল।
মেহরাব তো মাহিকে জরিয়ে না ধরে ঘুমাতেই পারে না, আজকে রাতে আর ঘুম হবে না,, তারপর সবাই ঘুমিয়ে পড়ল,, প্রথমে মেহরাব তারপরে মেঘ,, তারপর নেহাল আর শেষে শুভ,, শুভর পাশে একটা কোলবালিশ আর তারপরে শুভ কাকা সহ বাড়ির গুরজনেরা শুয়ে আছে।
একটা রুমে মাহি আর মেঘলাকে থাকতে দেওয়া হয়েছে আর ইপ্সা বেবি নিয়ে অন্য রুমে আছে।
,,,একবার এপাশ তো আরেকবার উপাশ করছে কিছুতেই মাহির ঘুম আসছে না কেননা মেহরাব এর বুকে মাথা না রাখলে ঘুম আসে না,, যখন আর কিছুতেই ঘুম আসলো না তখন শোয়া থেকে উঠে বসে পড়ল মাহি
হুট কিছুতেই ঘুম আসছে না, কি যে করি,, তারপর কিছু একটা ভেবে একটা মুচকি হেসে আস্তে আস্তে খাট থেকে নেমে গুটি গুটি পায়ে দরজার কাছে গেলো তারপর আস্তে করে দরজাটা খুলে বেরিয়ে গেলো। তারপর ডয়িং রুমে গিয়ে মেহরাব কে খুঁজতে লাগল।
এতো জনের মধ্যে আমি ওনাকে খুঁজে পাবো কিভাবে,, একে তো অন্ধকার তারপর এতো ঠাসাঠাসি করে শুয়েছে,, একটার উপর আরেকটা রুমের হালকা আলো এসে ডয়িং রুমে পড়ায় মাহি সেটা দিয়েই মেহরাব কে খুঁজতে লাগল,, অনেকক্ষণ পর দেখলো মেহরাব একপাশে শটান হয়ে শুয়ে চোখের উপর হাত দিয়ে শুয়ে আছে আর পাশেই মেঘ মেহরাব এর গায়ে পা তুলে ওকে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে আর মেহরাব বার বার বিরক্ত হয়ে মেঘকে সরিয়ে দিচ্ছে,, মাহি মুচকি হেসে মেহরাব এর পায়ের কাছে বসে পড়ল তারপর আস্তে করে মেঘ এর পা ধরে মেহরাব এর উপর থেকে সরিয়ে দিলো, মেঘও ঘুমের ঘোরে ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়ল,, মাহি সেই ফাঁকে ফটাত করে মেহেরাব এর পেটের উপর উঠে বসে পড়ল।
মাহিকে ছাড়া কিছুতেই ঘুম আসছিলো না তার উপর আবার মেঘ গায়ের উপর পা তুলে দিচ্ছে বিরক্ত হয়ে কেবলি একটু ঘুমের ঝুল এসেছে তখনি পেটের উপর ভারি ভারি লাগায় মুখের উপর থেকে হাত সরিয়ে সামনে তাকালাম।
একি তুমি এখানে??
হুম আমি,, দাঁত কেলিয়ে বলল মাহি,,
তুমি এতোরাতে এখানে কেউ দেখে ফেললে মান ইজ্জত সব যাবে,,, তখনি উপরের রুম খুলে কেউ বাইরে বের হলো,, মেহরাব যলদি করে মাহিকে নিজের উপর থেকে নামিয়ে ওর অপরপাশে শুইয়ে দিয়ে নিজে ওর উপর ওঠে ওকে আড়াল করে রাখল। ইপ্সা রুম থেকে বেরিয়ে ডাইনিং টেবিলের উপর থেকে পানি নিয়ে আবার রুমে চলে গেলো,, মেহরাব কেবলি মাহির উপর থেকে উঠতে যাবে তখনি পিছন থেকে মেঘ আবারো মেহরাব কে জরিয়ে ধরলো।
ওফ কি করছেন মেহরাব উঠোন আমি তো এবার চিরে চেপ্টা হয়ে যাবো,, মেহরাব কে ঠেলতে ঠেলতে বলল মাহি।
আরে আমি কি করবো দেখছো না পিছন থেকে মেঘ কীভাবে জরিয়ে ধরে আছে।
তারাতারি উঠোন আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তো।
মেহেরাব আস্তে করে মেঘ কে সরিয়ে মাহির উপর থেকে উঠে নিচে হয়ে মাহিকে কোলে তুলে নিলো তারপর হাঁটতে শুরু করলো,, মাহি মেহরাব এর গলা জরিয়ে ধরে বলল।
কোথায় যাচ্ছি আমরা??
ছাঁদে,, মাহিকে কোলে নিয়েই বলল মেহরাব।
কিন্তু কেনো??
বাসর করতে।।
কিহ?? এই নাহ আমি যাবো না নামিয়ে দেন আমায়,, হাত পা ছুঁড়তে ছুঁড়তে বলল মাহি।
সে কথা এখানে আসার আগে ভাবা উচিত ছিলো,, এখন নো ছাড়াছাড়ি।
কিন্তু সকালে,, সবাই আমার চুল ভিজা দেখলে ক্ষেপাবে তো।
তাতে কি,, বরের জন্য না হয় একটু সহ্য করলে,, এখন নো কথা,,তারপর মাহিকে নিয়ে সোজা ছাঁদে চলে গেলো মেহরাব আর ছাঁদের দরজা বন্ধ করে দিলো।
,,সকালে,,,
চেঁচামেচিতে মাহির ঘুম ভেঙ্গে গেলো,, পিটপিট করে চোখ খুলে দেখলো ও মেহরাব এর খালি বুকে শুয়ে আছে,, মেহরাব শার্ট পাশেই খুলে রেখেছে শেষ রাতে ঠান্ডা লাগছিলো তাই মাহি ওর শাড়ি দিয়ে চাদর বানিয়ে গায়ে দিয়েছে,, শাড়িতো রাতেই মেহের খুলে দিয়েছিলো।। কি হলো নিচে হঠাৎ এতো চেঁচামেচি হচ্ছে কেনো,, এটা ভেবে মাহি মেহরাব কে ডাকতে লাগল।
এই শুনছেন উঠুন উঠুন দেখুন নিচে কি যেনো হচ্ছে।
মেহরাব চোখখুলে হাতদুটো প্রসারিত করে একটা হাই তুলে বলল,, কি হলো এভাবে ডাকছো কেনো??
আরে যলদি উঠুন দেখুন নিচে চেঁচামিচি হচ্ছে,, চলুন গিয়ে দেখি কি হলো আবার,, মাহি উঠে বসে পড়ল। মেহেরাব শুয়া থেকে উঠে দাঁড়িয়ে কমরটা নাড়িয়ে বলল,,,ওফ এতো শক্ত এভাবে ঘুম হয় নাকি কমরটা বেথ্যা হয়ে গেছে।
কমর পরে ঠিক করবেন এখন চলেন যলদি,,
হুম চলো তাহলে। পাশ থেকে জামা নিয়ে পরতে পরতে বলল মেহরাব
আরে যাবো কীভাবে,, শাড়িটা তো খুলে দিয়েছেন না পরিয়ে দিলে যাবো কীভাবে।
ওহ তাইতো,, এই বলে মেহরাব মাহিকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে চলে গেলো,, নিচে গিয়ে তো দুজনেই অবাক।
চলবে,,,,,,,,,??
#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2??
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#৫০_পর্ব
.
ওহ তাইতো,, এই বলে মেহরাব মাহিকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে চলে গেলো,, নিচে গিয়ে তো দুজনেই অবাক। ডয়িং রুমে সবাই বসে আছে সবার মুখে চিন্তার ছাপ,
কি বেপার কি হয়েছে???সাবাই এভাবে বসে আছে কেনো? মেহরাব বলল।
মেহরাব এর কথা শুনে সবাই পিছন ঘুরে গেলো,, দেখলো মেহরাব দাঁড়িয়ে আছে আর ওর পিছে মাহি গুটিশুটি হয়ে মাথায় কাপড় দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,, কিরে তোরা দুজনে কোথায় ছিলি?? সকালে উঠে তোদের কে না পেয়ে তো আমাদের সকলের টেনশন হচ্ছিল। (মেঘ)
হ্যাঁ মেহরাব কাউকে কিছু না বলে এভাবে কোথায় চলে গিছিলি,, যাবি যখন একবার বলে যাবি না??(শুভ)
আরে আমরা সকালের দিকে একটু হাঁটতে গিছিলাম,, সবাই ঘুমিয়ে ছিলো তাই কাউকে জাগায়নি, আর ইপ্সা মাহিকে ওয়াশরুম টা দেখিয়ে দাও তো ও ফ্রেশ হবে।
ঠিক আছে, মাহি তুমি আমার সাথে এসো,,, এই বলে ইপ্সা মাহিকে নিয়ে চলে গেলো,, আর বাকিরাও যে যার কাজে চলে গেলো।
যাই বলিস না কেনো আমার কিন্তু কেমন সন্দেহ হচ্ছে,, মেঘ মেহরাব এর কানে ফিসফিস করে বলল।
কিসের সন্দেহ কি বলতে চাইছিস তুই??
বউকে ছাড়া একটা রাত ও থাকতে পারলি না, আমি রাতেই দেখেছি তুই আমার পাশে নেই আর মাহিকে এতো সকাল সকাল ফ্রেশ হতে বললি কি ভেবেছিস আমরা কচি খোকা কিছু বুঝি না।
একটু বেশিই বুঝিস, আর আমি কিন্তু তোর বউয়ের বড় ভাই ওকে সো সম্মান দিয়ে কথা বল।
হুম তা তো দিবোই,,চলুন স্যার আপনাকেও ওয়াশরুম টা দেখিয়ে দিই ফ্রেশ হতে হবে তো নাকি সারারাত কি ধবল টাই না গেলো।
সেটাপ মেঘ,, এই বলে মেহরাব ও চলে গেলো মেঘ আর শুভ হাসতে লাগল নেহাল ভোরেই চলে গেছে বলছে যে ওর অফিস আছে,মেঘ আর মেহরাব এখন যাবে ,,,
আরো কয়েকটা দিন পাড় হয়ে গেলো সবাই নিজেদের কাজে ব্যাস্ত এতদিনে নেহাল অনেকবার চেষ্টা করেছে মীরার সাথে কথা বলার কিন্তু মীরা ওকে পাত্তাই দিই নাই, এমনি হয় এজন্যই তো কথায় বলে ভালোবাসা হলো এমন একটা জিনিস যখন ছেলেটা বোঝে তখন মেয়েটা বোঝে না আর যখন মেয়েটা বোঝে তখন ছেলেটা বোঝে না আর যখন দুজনেই বুঝতে পারে তখন পৃথিবী বুঝতে চাই না, নেহালের হয়েছে তেমন অবস্থা একটু মজা করতে গিয়ে এখন বেহাল অবস্থা,, আজকে শুক্রবার নেহাল বাড়িতে দশটার দিকে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পরেছে উদ্দেশ্য মীরার সাথে কথা বলে ওর রাগ ভাঙানো, মীরার আজকে ভার্সিটি নেই তাই বাড়িতেই বসে তখনি ওর মা বলল যে পাশের দোকান থেকে ডিম আনতে ফ্রিজের ডিম শেষ হয়ে গেছে বিছানা থেকে উড়না টা নিয়ে মাথায় দিয়ে মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়ল,, ডিম কিনে ফিরার পথে নেহাল ওর পথ আটকে দাঁড়ালো,,, ও যেদিকে যায় নেহাল ও সেদিকেই যাই।
কি হচ্ছে কি রাস্তার মাঝে এমন করছেন কেনো??
আমিও তো সেটাই বলছি কাঁদা সুন্দরী তুমি এমন করছো কেনো?? তুমি তো আমায় অনেক জ্বালিয়েছো সেই প্রথম থেকে, তো আমি তো তোমাকে বলেছিলাম এর শোধ নেবো তাই একটু মজা করেছি, প্লিজ মাফ করে দাও সরি,,
আপনার সরি বড়ি বানিয়ে পানি দিয়ে গিলে খান, আমার সামনে থেকে সরুন আমি বাড়ি যাবো,, (এতো সহজে আমি আপনাকে মাফ করবো না চান্দু আপনি আমায় কাঁদিয়েছেন, একটু তো ঘুরতেই হবে আমার পিছে মনে মনে বলল মীরা)
না আগে তুমি সরি একসেপ্ট করবে তার পর আমি তোমায় যেতে দেবো।
ধ্যাত এই বলে মীরা নেহালকে ঠেলে যেতে গেলো আর নেহাল ও মীরাকে যেতে দেবে না বলে ওর হাত ধরে জোরে টান দিলো, ফল স্বরূপ মীরার হাতে থাকা চারটে ডিম ধপাস করে রাস্তায় পরে ঠপাস করে ভেঙ্গে গেলো। মীরা চোখ বড় বড় করে একবার নেহাল তো একবার ডিমের দিকে তাকাচ্ছে। নেহাল একটা শুকনো ঢোক গিলে মীরার হাত ছেড়ে দিয়ে একটু সরে দাঁড়ালো।
ব,,বলছি কি, নেহাল কে কিছু বলতে না দিয়ে মীরা একটা জোরে চিৎকার দিলো।
আআআআআআআআআ কি করলেন এটা ডিমগুলো সব ভেঙ্গে দিলেন কেনো এখন আমি কি নিয়ে বাড়ি যাবো, বুঝেছি সব আপনার চাল আমাকে আম্মুর কাছে বকা শোনানোর ,,, রেগে লাল হয়ে বলল মীরা।
নেহাল কানে হাত দিয়ে ও জোরে বলল,, সরি আমি দেখতে পাইনি ভুল হয়ে গেছে আমি এক্ষুনি তোমার ডিম এনে দিচ্ছি,, এই বলে নেহাল কানে হাত রেখেই দোকানে চলে গেলো।
,,,,,,,,,,,
কি হচ্ছে কি মাহি ছাড়ো নয়তো পুড়ে যাবে তো।
যাক আমি তবুও আপনাকে ছাড়বো না, আমার বরকে আমি ধরেছি তাতে আপনার কি,, মেহরাব কে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বলল মাহি,,
আজকে শুক্রবার তাই মাহি ঠিক করেছে যে আজ ভুনা খিচুড়ি আর গরুর মাংস রান্না হবে আর সেটা রান্না করবে মেহরাব,, তারপর রান্না শেষে নামাজ পড়ে এসে সবাই একসাথে খেতে বসবে,, তো মেহরাব রান্না করছিলো তখনি মাহি পিছন থেকে এসে মেহরাব কে জরিয়ে ধরলো,,, মেহরাব এর মা আর বাবা তাদের রুমে আছে,,।
মাহি আমার গা ঘেমে গেছে ছাড়ো আমায় গন্ধ লাগছে গা থেকে।
তাতে কি আপনার কাছে গন্ধ লাগলেও আমার কাছে লাগছে না,,,, এই বলে মাহি মেহরাব শক্ত করে জরিয়ে ধরলো তখনি মেহরাব এর মা রান্নাঘরে আসলো। মাকে দেখে মাহি তড়িঘড়ি করে মেহরাব কে ছেড়ে মেহরাব এর হাত থেকে চামচটা নিয়ে নিলো।
দেখেছো আম্মু তোমার ছেলেকে আজকে একটু রান্না করতে বলেছি বলে আমাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছে।
সেকি কি রে মেহরাব তুই তো নিজে থেকেই রান্না করতে এসেছিস তাহলে এখন মেয়েটাকে দিয়ে এভাবে কাজ করাচ্ছিস কেনো.?
আরে আমি তো,,,
থাক আর অযুহাত দিতে হবে না, আমিই করে দিচ্ছি।
না মাহি তোকে কাজ করতে হবে না তুই বরং আমার সাথে চল, মাথায় তেল দিয়ে দেবো।
এবার বুঝবে মজা আমাকে ফাঁসাতে এসে এখন নিজেই ফেঁসে গেলে (মনে মনে বলল মেহরাব)
মাহি করুণ চোখে মেহরাব এর দিকে তাকালো,, আরে এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে আম্মুই তো তুই যাহ তোকে এখানে কেনো কাজ করতে হবে না আম্মু যাও ওকে নিয়ে গিয়ে আচ্ছা মতো মাথায় তেল দিয়ে কাজের মেয়ে জবেদা বানাই দাও,, কথাগুলো দাঁত কেলিয়ে বলল মেহরাব।
ধুর কোথায় ভাবলাম ওনাকে জ্বালাবো তা আর হলো কই এখন তো উল্টো আমিই ফেঁসে গেলাম এখন নাকি মাথায় তেল নিতে হবে।
তারপর মেহরাব এর মা মাহির হাত ধরে নিয়ে চলে গেলো,,, মেহরাব এর রান্না শেষ করতে করতে প্রায় সাড়ে এগারো টা বেজে গেলো রান্না শেষ করে সবকিছু ঠিক করে রেখে রুমে চলে গেলো,, তারপর গোসল করে এসে দেখলো মাহি দাঁত কেলিয়ে খাটের ওপর বসে আছে।
এতো যলদি হয়ে গেলো?? কই তোমার মাথায় তো তেলের ছিটে ফোঁটাও নেই।
বুঝতে হয়,, আমি তেল নিলে তো থাকবে উল্টো আম্মুর মাথায় তেল দিয়ে আসছি,, তো আপনি তখন রান্নাঘরে আমায় কি বলছিলেন?? (মেহরাব এর দিকে আগাতে আগাতে বলল মাহি)
কই কি বলবো আমার মনে নেই।,, আয়নার সামনে চুল ঝাড়তে ঝাড়তে বলল মেহরাব
আমি কাজের মেয়ে জবেদা???
ও এই কথা, তুমি তো নিজেই শিকার করছো তুমি জবেদা তাহলে আবার আমায় জিগাস করার কি আছে।
তবে রে দাঁড়ান দেখাচ্ছি মজা,, এই বলে মাহি মেহরাব এর টাওয়াল ধরে টান দিতে গেলো।
আরে আরে কি করছো খুলে যাবে তো,,,, মাহির থেকে টাওয়াল ছাড়াতে ছাড়াতে বলল মেহরাব।
খুলার জন্যই তো টানছি আজকে আপনার টাওয়াল হরণ করবো আমি,, এই বলে মাহি আবারো টানতে লাগলো,, মেহরাব ও মাহিকে ধরে টাওয়াল ছাড়াতে লাগল এভাবে টানাটানি করতে করতে দুজনি খাটের ওপর পড়ে গেলো মাহি নিচে মেহরাব উপরে।
এবার কি হবে, এখন যদি আমি তোমার অন্য কিছু হরণ করি তাহলে কি করবে হুমম,,মাহির মুখের থেকে চুল সরিয়ে বলল মেহরাব।
চলবে,,,,,??