ভালোবাসি_যে_তোকে,পর্ব :১৯
লেখিকা মিমি
আমি আমার রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে চলে গেলাম।সাথে মেঘ ভাইয়াও।খাবার খাচ্ছি আর বার বার আর চোখে মেঘ ভাইয়াকে দেখছি।আর ভাবছি কিভাবে আমার ওপরে সব দোষ দিয়ে দিলো।কত বড় মিথ্যা কত বলল।কথা বলবো না লুচুর সাথে।আমার এই সব ভাব নার মাঝে মেঘ ভাইয়া বলল..
প্রিয়া খাবার খেয়ে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নেয়।আমাদের বাসায় চলে যাবো।(মেঘ)
কি আজকে চলে যাবো(প্রিয়া)
হে আজকে চলে যাবো(মেঘ)
কেনো আজকে যাবা কেনো। আজক। থেকে যাও(আম্মু)
হে আজকে থেকে যাও কালকে চলে যেও(আব্বু)
না কাকা আমার অফিসের কাজ আছে তাই থাকতে পারবো না।অন্য এসে থাকবো।(মেঘ)
আচ্ছা তুমি যেটা ভালো মনে করো(আব্বু)
আমি আর কিছু বললাম না।খাবার খেয়ে নিজের রুমে চলে গেলাম।বসে আছি ভালো লাগছে না মেঘ ভাইয়াদের বাসায় যেতে আগে কত ভালো ছিলো এক সাথে সবাই থাকতো।কিন্তু মেঘ ভাইয়া সব শেষ করে দিয়েছে।ওনি ইচ্ছা করে আলাদা হয়ে গেছে।সালা খচ্চর। ভাবছি গালে হাত দিয়ে এমন সময় মেঘ ভাইয়ার আম্মু আসলো রুমে…
কিরে কি এত ভাবছিস(কাকি)
কিছু তো না কাকি(প্রিয়া)
ওই তুমি আমাকে কাকি ডাকছিস কেনো মা ডাকবি বুঝেছি।(কাকি)
ওকে মা(প্রিয়া)
আচ্ছা তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নে।একটু পর চলে যাবো।(কাকি)
জি মা(প্রিয়া)
মেঘ ভাইয়ার আম্মু চলে গেলো।আর আমি তৈরি হতে শুরু করলাম।
একটু পর তৈরি হয়ে নিচে চলে গেলাম।আজকে একটা গোলাপি শাড়ি পড়েছি।আর মেঘ ভাইয়া নীল কালার শার্ট। কালো পেন্ট পরেছে।অনেক সুন্দর লাগছে আজকে ওনাকে।সবার কাছে বিদায় নিয়ে ৩০মিনিট পর মেঘ ভাইয়াদের বাসায় আসলাম।বাসাটা অনেক সুন্দর। এই প্রথম আসলাম।আমি যখন লন্ডন চলে যাই তারপর মেঘ ভাইয়ারা এই বাসাটা কিনেন।এখন তারা এই বাসায় থাকে।আমাদের বাড়ি থেকে মেঘ ভাইয়াদের বাসা অনেক বড়।আমার এই সব ভাবনার মাঝে কাকি আমার কাছে এসে বলল।
কিরে কি এত ভাবছিস(কাকি)
না কিছু না মা(প্রিয়া)
আচ্ছা চল তোকে মেঘের রুমে দিয়ে আসি।তুই তো মেঘের রুম চিনিস না।আর মেঘ এখনো গাড়ির কাছে আছে।তাই চল আমি তোকে নিয়ে যাই।(কাকি)
ওকে(প্রিয়া)
কাকি আমাকে মেঘ ভাইয়ার রুমে নিয়ে আসলেন।আমাকে বলল বসে থাকতে মেঘ ভাইয়া একটু পর চলে আসবে।আমি কিছু না বলে বসে পরলাম।আর কাকি চলে গেলেন।
একটু পর মেঘ ভাইয়া রুমে এসে আমার গালে থাপ্পড় দিয়ে দেয়।হঠাৎ কি হলো মেঘ ভাইয়ার বুঝার চেষ্টা করছি।কেনো থাপ্পড় দিলো।আমি কিছু বলতে যাবো।তার আগেই মেঘ ভাইয়া আমার চুলের মুঠি ধরে খাট থেকে নামিয়ে নিচে ফেলে দেয়। আর বলতে থাকে..
তোর সাহস কি করে হলো আমার খাটে বসে থাকিস।কার থেকে বলে আমার খাটে বসেছিস।(মেঘ)
মানে কি বলছো মেঘ ভাইয়া আমি খাটে বসলে কি হয়েছে।আর খাটে বসলে বলতে হবে কেনো।(প্রিয়া)
ওনি আমার কাছে এসে ওনার হাত দিয়ে আমার গাল অনেক জোরে চাপ দিয়ে ধরে বলল..
ওই তোর কি মনে হয় এত তাড়াতাড়ি আমি সব ভুলে গেয়েছি। আর তোকে মাফ করে দিয়েছি।তাহলে শুনে রাখ আমি তোকে মাফ করি নাই।আর আমি তোকে বিয়ে করিছি যাতে করে তোকে তিলে তিলে কষ্ট দিতে পারি।শাস্তি দেওয়ার জন্য তোকে আমি বিয়ে করেছি।ভালোবাসার জন্য বিয়ে করি নাই।বুঝেছিস।(মেঘ)
ওনার কথা শুনে অবাক না হয়ে পারলাম না।ওনি কিসের শাস্তির কথা বলছেন।আমি ওনাকে বললাম..
তুমি কিসের শাস্তির কথা বলছো।আর আমি কি এমন করেছি।যার জন্য আমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য বিয়ে করলে(প্রিয়া)
আমার কথা শুনে ওনি আরো জোরে মুখ চেপে ধরে বললেন..
এই একদম আমাকে তুমি বলবি না।বুঝেছিস।আপনি করে বলবি।আর সবার সামসে স্যার বলবি।তোর সাথে যে আমার বিয়ে হয়েছে সেটা যেনো বাড়ির মানুষ ছাড়া অন্য কেউ যাতে না জানতে পারে।(মেঘ)
ওনি আমা গাল ছেড়ে দিলে আমি সাথে সাথে বললাম।
তাহলে কি বলবো সবাইকে হ্যা।আর তুমি আমার সাথে এমন করতে পারো না।আমি তোমার বউ।আমি কি এমন করেছি যার কারণে এমন করছো।(প্রিয়া)
বলবি তুই আমাদের বাড়ির কাজের লোক।বুঝেছিস।আর আজ থেকে তো তুই সত্যি সত্যি কাজের লোক হয়ে যাবি।আর তুই কেনো শাস্তি পাবি সেটা পরে একদিন যানতে পারবি।এখন না যানলেও হবে।(মেঘ)
মানে কি কাজের লোক কেনো আমি হতে যাবো(প্রিয়া)
তোর শাস্তি যে তাই হতে হবে।(মেঘ)
আমি সব কাকি কে বলে দিবো।তুমি আমার সাথে কি কি করছো(প্রিয়া)
হাহা হাহাহা কাকি কে বলবি কাকি কে বলবি।পাগল কোথাকার কাকি থাকলে তো বলবি।(মেঘ)
মানে(প্রিয়া)
মানে হলো তোর কাকি এই বাসায় থাকে না এই বাসায় শুধু আমি এটা থাকি।তোর কাকি তোদের বাসায় তাকে।আর আজে থাকতে হলে বাট আমি তোর কাকি কে পাঠিয়ে দিয়েছি বুঝেছিস।(মেঘ)
তুমি কেনো এমন করছো হ্যা কেনো এমন করছো।(প্রিয়া)
ওই তোরে বলছি না আমাকে তুমি করে বলবি না।যা আমার জন্য রান্না করে নিয়ে আয়।তাড়াতাড়ি।(মেঘ)
আমি রান্না করবো মানে(প্রিয়া)
মেঘ ভাইয়া আমাকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলল..
কানে কি কম শুনিস নাকি (মেঘ)
আমি গালে হাত দিয়ে বললাম।
আমি রান্না করতে পারি না।(প্রিয়া)
কাজের লোক আছে ওনাকে বলবি তোকে দেখেয়ে দিতে আর তুই রান্না করবি যা।মুরগি রান্না করবি।আর হে ভুলেও বলবি না তুই আমার বউ।বলবি নতুন কাজের লোক।(মেঘ)
আমা ভয়ে কি মাথা নারিয়ে হ্যা বললাম আর ওনি ওয়াশ রুমে চলে গেলেন।আমিও আস্তে আস্তে নিচ থেকে ওঠে রান্না ঘরে চলে গেলাম।দেখলাম একটা মোহিলা রান্না ঘরে কি যেনো করছে।আমি কাছে গিয়ে বললাম।
আপনি কে (প্রিয়া)
আমি এই বাড়ির কাজের লোক।নাম জাহানা।আর আপনি মনে নতুন কাজের মেয়েটা।স্যার তাহলে আপনার কথা বলছে।কিন্তু আপনাকে দেখেতো মনে হয় না কাজের মেয়ে।(জাহানা)
ও আচ্ছা স্যার বলছে মুরগি রান্না করতে তাই আপনি আমাকে একটু দেখিয়ে দেন কিভাবে মুরগি রান্না করতে হয়।(প্রিয়া)
এরপর ওনি আমাকে দেখিয়ে যায় কিভাবে কি করতে হয়।সব বলে চলে যায়।আমিও দেরি না আন্টিটা যে ভাবে বলেছে সে ভাবে করতে লাগলাম।পেয়াজ কাটতে লাগলাম।পেয়াজ কাটতে ককাটতে হঠাৎ হাতে চাকু লেগে যায়।যার কারনে হাত কেটে রক্ত পড়া শুরু করছে। রক্ত থামানুর চেষ্টা করছি বাট পারছি না।
ফ্লোরে রক্ত পরে বরে গেছে।আমি তাড়াতাড়ি ফ্লোরে রক্ত টা পরিষ্কার করে ফেললাম।কারন রক্ত নিয়ে জায়গায় টা বরে গেছে এর জন্য মারতে পারে।হাতের রক্ত বন্ধ হচ্ছে না। আমিও আর বন্ধ করতে চেষ্টা করলাম না।বন্ধ করতে গেলে আর রান্না হবে না।তাই কোনো কিছু না ভেবে রান্না করা শুরু করলাম।আর এদিক দিয়ে হাত থেকে রক্ত ফ্লোরে পরে ভেশে গেছে।এই সব আমার কোনো খেয়াল নেই।আস্তে আস্তে রান্না করা শেষ করে ফেললাম।খাবার টেবিলে সাজিয়ে মেঘ ভাইয়াকে ডাক দিতে গেলাম।আর হাতটা লুকিয়ে রাখলাম যাতে ওনি না দেখে।
মেঘ ভা..সরি স্যার শুনছেন।আপনার জন্য খাবার তৈরি করেছি।খেতে আছেন।(প্রিয়া)
ওনি কিছু না বলে রুমে থেকে বের হয়ে আমার দিকে একবার তাকিয়ে চলে গেলেন খাবার খেতে।আমিও খাবার টেবিলে চলে গেলাম। আমি খাবার বেরে দিয়ে দাড়িয়ে রইলাম।আর ওনি খাবার খাচ্ছে। একটু পর ওনি আমাকে বললেন।
তুই খাবার খাবি না। দাড়িয়ে আছিস কেনো।খাবার খেয়ে নেয়(মেঘ)
আমি আর কিছু না বলে খাবার নিয়ে নিলাম।কারন অনেক ক্ষুধা লাগছে।খাবার নিয়ে নিচে বসে পরলাম।কারন কাজের লোক তো নিচে বসে খাবার খায়।মালিকদের সাথে টেবিলে বসে খাবার খায় না।আমিতো এখন ওনার কাজের লোক।আমাকে নিচে বসতে দেখে মেঘ ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে।ওনি হতো ভাবছে পারিনি আমি নিচে বসে খাবার খাবো…
চলবে…