#ভালোবেসে_থাকবো_পাশে?
#পর্ব_০৩,০৪
#লেখিকা_ইসরাত_জাহান_ইমা
পর্ব_০৩
কিছুক্ষণ পর, আরিয়া লক্ষ করলো একটা ছেলে দৌড়ে আরিয়ার দিকে এগিয়ে আসছে।
ছেলেটা মুখ দেখার আগেই….
”আরিয়াাাা এই আরিয়াাাা!
সাথে সাথেই ঘুম বাদ দিয়ে আরিয়া লাফ দিয়ে উঠে বসলো।
(পাঠকগন আপনারা কী ভাবছিলেন আরিয়া মারা গেছে। আমার বোন তো ভাবছিলো আরিয়া অজ্ঞান হয়ে গেছে!)?
আমি জানি আমার নাম আরিয়া সেটা এত চিৎকার করে বলার কী আছে আম্মু?(আরিয়া)
চিৎকার কী আর আনন্দে করছি? আর এটা বল তুই এত ঘামছিস কেন?
আসলে আম্মু একটা খুব বাজে স্বপ্ন দেখছিলাম তাই এই অবস্থা হয়ছে। এখন বলো চিৎকার কেন করছিলা?(আরিয়া)
”ভার্সিটি যাবি সেটা নিশ্চয় ভুলে গেছিস!”
হ্যাঁ আম্মু। তুমি যাও আমি এক্ষুনি রেডি হয়ে আসছি।(আরিয়া)
“ওকে” বলেই আরিয়ার আম্মু রুম থেকে বেরিয়ে গেলো৷ আরিয়া বিছানায় বসে ভাবতে লাগলো,,
‘‘আবার সেই বিশ্বাসঘাতকদের সাথে দেখা টা হবে। আমি খুব করে চাই রাতুল যেন চর কখনোই আমার সামনে না আসে আল্লাহ।”
“আরিয়া তাড়াতাড়ি আয়।”
“আসতেছি আম্মু বলেই আরিয়া ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো।
রেডি হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। ব্রেকফাস্ট করে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলো আরিয়া।
” ভার্সিটির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে আরিয়া প্রায় পঁচিশ মিনিট ধরে। তার তো মনে হচ্ছে পঁচিশ বছর ধরেই দাড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর সেই কাঙ্ক্ষিত মুখ দেখতে পেয়ে আরিয়ার ঠোঁটে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো। এতক্ষণ যার জন্য অপেক্ষা করছিল সে আর কেউ না সে হলো আরিয়ার বেস্ট ফ্রেন্ড অন্তু। কাছে আসতেই আরিয়া অন্তুকে উদ্দেশ্য করে বলল,, ❝কিরে শাঁকচুন্নি এত লেট কেন করলি? তুই কী কখনোই শুধরাবি না লেট লতিফের বউ? ডেইলি লেট করিস কেন? রাস্তায় কী খেতে বসেছিলি নাকি ভিক্ষা করছিলি? পঁচিশ মিনিট ধরে রাস্তায় আছিস বলেই যাচ্ছিলি! বাই এনি চান্স,, রাস্তায় ঝাড়ু দিচ্ছিলি না তো আবার? ?
আরিয়ার কথাই আজ অন্তু হাসলো না বরং সে খুব অবাক হয়ে দেখছে আরিয়াকে। একদিনে মেয়েটার চেহেরার কী অবস্থা হয়েছে। অথচ সে মজাই করে যাচ্ছে।
কি দেখছিস এমন করে? (আরিয়া)
দেখছি আমার কিউট বান্ধন্নী টারে। শুন কুত্তি আমি রাস্তায় খাইতে বসি নি, ভিক্ষা করতেও বসি নি। আর ঝাড়ুও দিচ্ছিলাম না। আসলে ঘুম থেকে উঠতে একটু লেট হয়ে গেছে। সরি দোস্ত আর হবে না! কানে ধরে একটু অনুনয়ের সুরে অন্তু আরিয়াকে বলল।
এটা তো তুই ডেইলি বলিস। বিগত পাঁচ বছর ধরে এমন টাই হয়ে আসছে। এখন ভার্সিটির ভিতরে চল। (আরিয়া)
এমন না করলে তোর কিউট বকা গুলাও তো শুনতে পারমু না। (অন্তু)
হইছে শাঁকচুন্নি দিব কানের নিচে একটা। এখন ভিতরে চল।
হুম!
আরিয়া হাঁটছে আর ভাবছে,, সারাদিন যতই মন খারাপ থাকুক এই অন্তুটার মুখ দেখলেই সব উদাও হয়ে যায়৷ আর আমি ওর সামনে চাইলেও মন খারাপ করে থাকতে পারবো না। আমার কষ্ট দেখে মেয়েটা সহ্য করতে পারবে না। রাতুল আর ফারিয়ার সাথে ঝামেলা করবে।
হঠাৎ আরিয়া আর অন্তুর সামনে ফারিয়া ও তার কিছু ফ্রেন্ড রাস্তা আটকিয়ে দাঁড়ালো।
কিরে কিছু বলবি?(আরিয়া)
হ্যাঁ! কালকে তোর সাথে এত বড় এত ঘটনা ঘটলো আর তুই স্বাভাবিক কীভাবে? তোর কষ্ট হচ্ছে না তোর রাতুল এখন আমার হয়ে গেছে?(ফারিয়া)
আরিয়া কিছু টা শান্ত গলায় উত্তর দিলো,, ‘‘কেন ফারিয়া তুই কী ভাবছিলি রাতুলের শোকে আমি পাগল হয়ে যাবো? ওর জন্য আমি নিজেকে অন্ধকার রুমে আবদ্ধ করে নিব? তুই কী ভাবছিলি আমি আত্মহত্যা করবো?
কার জন্য আত্মহত্যা করবো আমি বলতো! যে আমার ভালোবাসার বিনিময়ে শুধু ছলনা করে গেছে! একটা বিশ্বাসঘাতকের আত্মহত্যা করে আমি আমার মা-বাবা, ভাইকে কষ্ট দিতে পারবো না। যেখানে রাতুল আমার কষ্টের কথা না ভেবে আমাকে নিজের স্বার্থে ছেড়ে চলে গেছে, যে সৌন্দর্যের মোহে পড়ে ছেড়ে চলে গেছে! সেখানে আমার মা-বাবা আমার একটু বাসায় ফিরতে দেরি হলেই প্রচন্ড চিন্তা করে, খোঁজ নিতে শুরু করে। একটু অসুস্থ হলে পাগলের মতো আচরণ করে তাদেরকে ভুলে গিয়ে বিশ্বাসঘাতকদের জন্য মরবো আমি ভাবলি কেমনে? আর শোন আমাকে ওইসব মেয়েদের মতো ভাবিস না যারা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেয়।
সবথেকে বড় কথা হলো কোনো বিশ্বাসঘাতকের জন্য নিজেকে কষ্ট দিতে চায় না। তোদের জন্য মা-বাবার বুক খালি করতে চায় না।
আর ছোট থেকেই তো আমার সব পছন্দের জিনিসে নজর দেওয়া আর কেড়ে নেওয়ায় তো তোর স্বভাব ছিলো। আর আমিও তা হাসি মুখেই তোকে দিয়ে দিতাম। মনে কর, রাতুলকে দান করলাম। আমার এই পছন্দের মানুষটাও হাসি মুখেই তোরে দিয়ে দিলাম।
একনাগাড়ে কথা গুলা বলে থামলো আরিয়া। সামনে তাকিয়ে দেখে রাতুল দাঁড়িয়ে আছে। রাতুল কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরিয়া অন্তুকে বলল চল এখান থেকে। বলেই অন্তুর হাত ধরে ক্লাসের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো।
ফারিয়া আরিয়াকে অপমান করতে গিয়ে নিজেই যেন অপমানিত হয়ে গেলো। তখন রাতুল এসে ফারিয়ার কাদে হাত রেখে বলল, কী ভাবছো! ওর কথাই কষ্ট পেয়ো না। চল আজ ক্লাস করতে হবে না। আমরা আজ শপিং করব কেমন।
ওকে চলো।
ফারিয়া তার বান্ধবীদের বলে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে গেলো। মনে মনে ভাবছে, আরু তুই আজ আমায় যেভাবে অপমান করলি একদিন প্রতিশোধ টা নিবই।
আড়াল থেকে একজন মানুষ হাসি মুখে সরে গেলো। তার প্রেয়সী আজ যোগ্য জবাব দিয়েছে। যদিও সে জানে তার প্রেয়সী এখনো রাতুল কে মন থেকে ভুলতে পারছে না তবুও সে খুব খুশি। কেননা, তার প্রেয়সী নিজের ক্ষতি করবে না।
তবে সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করল যারা তার প্রেয়সীকে কষ্ট দিছে তাদের শাস্তি দিবেই আর সবসময় সে তার প্রেয়সীকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করবে।
অন্যদিকে আরিয়া আর অন্তু ক্লাসে আসার পর জিজ্ঞেস করলো আরিয়া তুই তখন কী বলছিলি তোর সব পছন্দের জিনিস ও কেড়ে নিতো। কেমনে কী দোস্ত?
#চলবে..!!
#ভালোবেসে_থাকবো_পাশে?
#পর্ব_০৪
#লেখিকা_ইসরাত_জাহান_ইমা
আরিয়া আর অন্তু ক্লাসে আসার পর অন্তু জিজ্ঞেস করলো আরিয়া তুই তখন কী বলছিলি তোর সব পছন্দের জিনিস ও কেড়ে নিতো। কেমনে কী দোস্ত?
”জানিস ছোট থেকেই ও এমন। আব্বু যখন আমার জন্য কোন কিছু আনতো তখন ওর এটাই লাগবে। আমাদের বাড়িতে আসার পর আমার সব প্রিয় জিনিস ও কেড়ে নিত। আমিও ওরে হাসি মুখে সব দিয়ে দিতাম। কে জানতো আজও ফারিয়া এমন থেকে যাবে। আমার প্রিয় মানুষটাকেও কেড়ে নিল। বল আমি ওর কী ক্ষতি করছিলাম। আর রাতুল সে কী করলো সৌন্দর্যের মোহে পড়ে এতদিনের সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটালো। বলেই কান্না করতে লাগলো আরিয়া।
আরিয়ার কান্না দেখে অন্তু স্তব্ধ হয়ে গেলো।
দোস্ত প্লিজ কান্না করিস না। কিছুক্ষণ আগেও তো তুই ঠিক ছিলি। আসলে তুই তো তোর থেকে সব দিক থেকে এগিয়ে তাই ও তোর দুর্বল জায়গাটাতেই আঘাত করছে। (অন্তু)
কে বলল আমি ফারিয়ার থেকে সব দিক দিয়ে এগিয়ে। দেখনা ও তো আমার থেকে সৌন্দর্যের দিক থেকে অনেক এগিয়ে তাই তো রাতুল আমাকে ছেড়ে দিল।(আরিয়া)
প্লিজ দোস্ত বিশ্বাসঘাতকদের জন্য একদম কাঁদবি না। আর এসব কথা একদম বলবি না। আমরা সবসময়ই তোর পাশে আছি। (অন্তু)
হ্যাঁ আরু আমরা সবাই তোর পাশে আছি। ওই ফারিয়া শাঁকচুন্নির হালুয়া টাইট করমু সময় হলে।
আরিয়া আর অন্তু সামনে তাকিয়ে দেখে আহিল আর ছোঁয়া দাঁড়িয়ে আছে।
(আরিয়া, অন্তু, ছোঁয়া আর আহিল চারটা কলিজার ফ্রেন্ড। সবাই অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের স্টুডেন্ট। ওরা ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে এক সাথে পড়া লেখা করে। যে কারণে ওদের মধ্যে আত্মার সম্পর্ক)
ওদের দেখেই চোখে পানি নিয়েই আরিয়া মুচকি হাসলো। ছোঁয়া আর আহিল দৌড়ে ওদের জড়িয়ে ধরলো৷ আরিয়ার চোখের পানি মুছে দিয়ে ছোঁয়া বলতে শুরু করলো,,
‘‘দোস্ত বিশ্বাস ঘাতকদের জন্য একদম কাঁদবি না। ওদের শাস্তি ওরা পাবে। হয় আমরা দিব না হয় প্রকৃতি দিবে। রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার বলে একটা কথা আছে মনে রাখিস।
হুম আরু ওরা শাস্তি পাবেই। আর তোর জীবনে এমন কেউ আসবে যে তোকে তোর থেকেও বেশি ভালোবাসবে। আর সেই দিন টা আসতে খুব বেশি দেরি নাই।(আহিল)
আরিয়া কান্না থামিয়ে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,, মানে?
আহিল চোখ টিপ দিয়ে বলল,, আগে আগে দেখতাহে হো তা হে কিয়া! ?
ক্লাস শেষ করে সবাই ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে আসলো। গেটের কাছেই ফুচকার দোকান দেখে সবাই জেদ ধরলো ফুচকা খাবে। আর বিল দিবে আহিল।
ওকে গাইস আজ আমিই বিল দিবো।
সবাই অবাক হয়ে আহিলের দিকে তাকিয়ে আছে।
তখনি ছোঁয়া বললো, আমায় একটা চিমটি দে তো আমি স্বপ্ন দেখছি না কি এটা সত্যিই শুনলাম।
বলতে দেরি হলো কিন্তু দিতে দেড়ি হলো না।
আঁউচ! আহু হারামী তুই আমারে এত জোরে চিমটি দিলি কেন?
তুই এই তো বললি!
তাই বলে এত জোরে।
হুম! বুঝিয়ে দিলাম তুই সত্যিই শুনছিস।
তোরা থাম এইবার। আহু বল তো আজ কী হয়ছে তোর? শরীল ঠিক আছে তো? জ্বর-টর আসে নি তো আবার!(আরিয়া)
ধ্যাত জ্বর আসতে যাবে কেন? আমি একদম ঠিক আছি। এখন বল তুই এইসব জিজ্ঞেস করছিস কেন?(আহিল)
না মানে তুই যেই কিপ্টুস আর তুই কি না আমাদের ফুচকা খাওয়ার বিল দিবি। ভাবা যায়! (অন্তু)
কী আমি কিপ্টা? এত বড় কথা। যা খাওয়াবো না তোদের। গেলাম আমি। বাই!
আহারে আমাদের কিউট গুলোমুলো কুত্তা টা না সরি দোস্ত টা রাগ করেছে? (কিছুটা মজার স্বরে বলল আরিয়া)
আহিল গাল ফুলিয়ে বলল, নাহ্।
আর কিছু কমু না দোস্ত তোর কসম। এখন খাওয়া। (ছোঁয়া)
হু চল।
সবাই দুষ্টুমি করতে করতে ফুচকা খাওয়া শেষ করল।
খাওয়া শেষে ছোঁয়া বলল,, আহু এখন তো বল কেন খাওয়ালি৷ আসলে ব্যাপার টা না ঠিক হজম হচ্ছে না।
আসলে আজ আমি অনেক হ্যাপি তাই খাওয়াইলাম।
কেন? আজ কী আরো কোন মেয়েরে পটাইলি না কি?(আরিয়া)
আমারে কী তোর বারোভাতার মনে হয় নাকি রে শাকঁচুন্নি?
না সেটা মনে হওয়ার কী আছে? এটা তো নিজের চোখেই দেখতে পাই আমরা। হুহ্!(ছোঁয়া)
এসব শুইনা আহিল আরিয়াদের দিকে খাইয়া ফালামু লুক নিয়া তাকিয়ে আছে।?
আহু বলনা কী জন্য খাওয়ালি?(অন্তু)
সেটা সময় হলেই জানতে পারবি এখন সব বাসায় চল। কাল ঠিক টাইমে ভার্সিটি থাকবি।
___________________?
আরিয়া বাসায় এসে দেখে ড্রয়িং রুমে সবাই বসে আছে। তার ফুপি আসছে। আরিয়া এগিয়ে গিয়ে সালাম দিয়ে কুশলাদি বিনিময় করে রুমে চলে আসছে।
ফ্রেশ হয়ে খাওয়ার জন্য গেলো। খাওয়ার মাঝেই আরিয়ার ফুপি আরিয়ার বাবার উদ্দেশ্যে বলল,, ভাইয়া ফারিয়ার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছি আসছে মাসের ১২ তারিখ। ছেলে দেখতে-শুনতে ভালো। আর্থিক অবস্থাও ভালো, আর ছেলে ভালো পজিশনে আছে। খুব তারাতাড়িই সব হয়ে গেছে তাই তোমাদের আর জানানোর সময় হয় নি। প্লিজ তোমরা কিছু মনে করো না।
তখন আরিয়ার বাবা জবাব দিলো,, এটাতো ভালো খবর। রাগ করবো কেন!
__সবাই থাকবা প্লিজ বিয়েতে। আর আরু মা তুই ২ দিন আগেই চলে যাস।
এটা শুনেই আরিয়ার গলায় খাবার আঁটকে গেলো। অনেক কষ্টে চোখের পানি লুকিয়ে তার ফুপি কে জবাব দিলো ঠিক আছে ফুপি। বলেই খাবার না খেয়েই উঠে গেলো আরিয়া।
একি মা তুই না খেয়েই উঠে গেলি কেন? খেয়ে নে।
আসলে আম্মু ফারু আমাদের ছেড়ে চলে যাবে তো তাই কষ্ট হচ্ছে। আর আমি আসার সময় ফুচকা খেয়ে আসছি। তোমরা খেয়ে নাও প্লিজ। আমি রুমে গেলাম। বলেই এক মুহুর্ত দেরি না করে আরিয়ার চলে আসলো। রুমে এসেই দরজা বন্ধ করে কান্নায় ভেঙে পড়লো। সবার সামনে যতই নিজেকে শক্ত প্রমাণ করুক না কেন সে তো ভেতরে দুমড়ে মুচড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। কী করে মেনে নিবে সে। কান্না করছে আর ভাবছে বিয়ের দিনে নিজেকে ঠিক রাখতে পারবো তো আমি!
কান্না করতে করতেই ঘুমিয়ে গেলো আরিয়া। সন্ধ্যায় উঠে নামাজ আদায় করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। আরিয়া ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখে তার আব্বু আর ভাই টিভি দেখছে। রৌদ্রা কার্টুন চলছে। যেটা আরিয়ার ফেবারিট কার্টুন তাই সেও গিয়ে বসে পড়লো৷ কিছুক্ষণ পড়ে আরিয়ার আম্মু চা আর নাস্তা নিয়ে আসলো। সবাই মিলে নাস্তা করে নিল। আরিয়া আর সাঁদ পড়তে চলে গেলো।
কিছুক্ষণ পড়ে রাতের খাবার খেয়ে রুমে চলে আসলো আরিয়া। ঘুমানোর জন্য শুয়ে পড়লো! আবার রাতুলের কথা ভেবে মন খারাপ হয়ে গেলো। সারাদিন নিজের সাথে যুদ্ধ করে ঠিক থাকলেও রাতে একাকিত্বরা হানা দিবেই।
সকালে ফজরের নামাজ আদায় করে একটু বাগানে ঘুরতে গেলো আরিয়া।
রুমে এসে কিছুক্ষণ পড়তে বসলো। নয়টার দিকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে, খেয়ে বেরিয়ে গেলো ভার্সিটির উদ্দেশ্যে।
__________________________
গেটের সামনে এসে দেখে ছোঁয়া, অন্তু, আহিল দাঁড়িয়ে আছে।
ওদের দেখেই আরিয়া বলে উঠলো,, কী রে আজ সূর্য কোন দিক দিয়ে উদয় হয়ছে?
কেন? ডেইলি যেদিক দিয়া উঠে।(ছোঁয়া)
আসলে আজ লেট লতিফের বউ আগে চলে আসছে তো তাই কইলাম।
ওই শাঁকচুন্নি একদম এডা কইবি না। নেক্সটে যদি কইছিস তাইলে কিন্তু খুব খারাপ হইবো।
ঝগড়া থামা শাঁকচুন্নির দল। আজ ভাবছিলাম একটু লাইব্রেরিতে যামু কিন্তু যা শুরু করলি!(আহিল)
আমি আগে কিছু কইছি ক? ওই আবুলের বউয়েই তো শুরু করছে। আর আমি কিছু কইলেই দোষ। আর যদি আমারে ও লেট লতিফের বউ কয় তাইলে আমি ওরে দেইক্কা নিমু।
হইছে মেরি মা চুপ কর। আর কমু না।(আরিয়া)
হুহ্ চল।
কিছুক্ষণ পরে লাইব্রেরিতে রাতুল, ফারিয়া আর তাদের বন্ধু-বান্ধব এসে হাজির। মূলত ওরা আসছে আরিয়াকে অপমান করতে।
আরু শোন একটু!
কিন্তু আরিয়া আজ ভেবে রেখেছে তাকে যতক্ষণ না পুরা নাম ধরে ডাকবে ততক্ষণ সে কারো ডাকে পাত্তা দিবে না।
আরু শুনতে পাচ্ছিস?
আরিয়া ছোঁয়ার সাথে গল্প করতে ব্যস্ত। এমন ভাব করছে আশেপাশে কে কী বলছে সে শুনতেই পারছে না।
আরিয়ার এমন গা ছাড়া ভাব দেখে ফারিয়া রেগে গেলো। আরিয়ার সামনের টেবিলে জোরে হাত দিয়ে বারি মেরে জিজ্ঞেস করলো,, এই আরু কখন থেকে ডাকছি শুনতে পাচ্ছিস না?
হেই লিসেন! ডোন্ট কল মি আরু! এনলি আরিয়া। ওকে!
আরিয়ার কথা শুনে সবাই রীতিমতো অবাক।
কী বলছিস আরু? তোকে আরু বলে ডাকবো না?
না। যারা আমাকে ভালোবাসে শুধু তারাই আরু বলে ডাকবে। কোন বিশ্বাস ঘাতকদের মুখে এই নাম শুনতে চাই না।
আচ্ছা আপনারা এখন আমাদের সামনে সঙ সেজে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?(ছোঁয়া)
ভার্সিটি আর লাইব্রেরি কী তোর বাপের? আমরা কোথা দাঁড়াবো সেটা কী তুই ঠিক করবি?
#চলবে.!!