ভালোবেসে_থাকবো_পাশে? #পর্ব_১০,১১

0
1444

#ভালোবেসে_থাকবো_পাশে?
#পর্ব_১০,১১
#লেখিকা_ইসরাত_জাহান_ইমা
পর্ব_১০

এই নিয়ে আরিয়া বহুবার পড়েছে চিঠিটা।

ফ্ল্যাশব্যাক____

রেস্টুরেন্টে খাবার অর্ডার দিয়ে বসে আছে সবাই।

শালার একটা ভালা ছেলে যদি চোখে পড়তো সাথে সাথে বাপেরে কল দিয়া কইতাম বিয়ার ব্যবস্থা করতে। এই পড়ালেহা আর ভাল্লাগে না। (অন্তু)

এসব কোন ধরনের কথা বার্তা? (শিশির)

এমনে কথা কস কে?(আরু)

কেন তোদের লগে আবার কিয়ের ফর্মালিটি?(অন্তু)

তাই বলে সব জায়গায় এই ভাষায় কথা বলবি?(আহিল)

আরে বেডা তুই চুপ থাক। এখনো খাবার দিচ্ছে না কেনো?(অন্তু)

পেটুক আবার শুরু করলো!

কিছুক্ষণ পরে ওয়েটার খাবার দিয়ে গেলো।

খেতে খেতে অন্তু বলল,, দোস্ত একটা প্রেম করা লাগবো! একা একা আর ভালো লাগে না রে। একটা বফ থাকলে তো তারে নিয়া ঘুরতে পারতাম! সময় টাও সুন্দর যাইতো।

আহিল বিরবির করে বলল,, আমি থাকতে আবার বফ খোঁজা লাগে?

কিছু কইলি আহু?

কী আর কমু! তোর এই সব ক্ষ্যাত মার্কা কথা শুইনা ছেলেরা আগেই পালাবে। আর কিছু বলা লাগবো না এখন চুপচাপ খা।

____________________?

বাসায় আসার পর ফ্রেশ হয়ে আরিয়া ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছে তখনি কলিং বেল বেজে উঠলো।

আম্মু দেখো তো কে আসছে!

আরিয়ার আম্মু চেঁচিয়ে বললো,, বসেই তো আছিস তাও দরজা টা খুলতে পারছিস না? একা হাতে কত দিকে সামলাবো আমি? বাপ-বেটি সারাদিন তো বসে বসেই খাস!

আরিয়া মনে মনে বলল,, এইযে ডায়ালগ শুরু।

তোমার ছেলে বুঝি সারাদিন কাজ করে?কিছুটা চেচিয়ে বলল আরিয়া।

একদম আমার ছেলের নামে বাজে কথা কইবি না। তোর থেকে আমার ছেলে অনেক বেশি কাজ করে। এখন আমারে একটু শান্তি তে কাজ করতে দে। আর দেখ কে আসছে।

সুযোগ ফেলেই ছেলের প্রশংসা করা লাগে।

বিরক্ত নিয়ে দরজা খুলে দিলো আরিয়া। কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলো না। দরজা আটকাতে যাবে তখনি নিচে চোখ গেলো, একটা মাঝারি সাইজের বক্স রাখা। হাতে নিয়ে দেখলো উপরে আরুপাখি লেখা। এটা নিশ্চয় অচেনা লোকটা যে চিঠি গুলা দিচ্ছে তার পাঠানো! এই বক্স কোথা থেকে এল। কোথায় সে? যদি সে না এসে থাকে তো কেই বা রেখে গেলো!

কে আসছে আরু?

কেউ নাই তো আম্মু।

তাহলে বেল কে বাজালো?

হয়তো পাশের বাসার পিচ্চি টা হবে।

আচ্ছা দরজা আটকিয়ে দে।

আচ্ছা বলেই আরিয়া বক্স টা নিয়ে রুমে চলে গেলো।

আরিয়া খাটের উপর বক্স খুলে দেখে ভিতরে অনেক চিপস্ আর চকলেট। আর একটা চিঠি। চিপস্ আর চকলেট দেখে খুশি হলেও চিঠি পড়ে আরিয়ার মন খারাপ হয়ে যায়।

বর্তমানে___

আরু এই আরু..

সাড়ে দশটা বাজে এখনো ঘুমাস নি কেন?

এই তো ঘুমাবো।

আচ্ছা শুন!

হ্যাঁ আম্মু বল!

দুদিন পর যে ফারিয়ার গায়ে হলুদ ভুলে গেছিস?

ভুলিনি তো। কিন্তু হঠাৎ এই কথা জিজ্ঞেস কেন করছো?

তুই যাবি না কাল ওদের বাসায়?

আমি কেন যাব? গায়ে হলুদ, বিয়ে ফারিয়ার আমি গিয়ে কী করব?

এই আরু তোর শরীল ঠিক আছে তো? এসব কী বলছিস?

আম্মু আমার কিচ্ছু হয়নি আমি একদম ঠিক আছি।

সত্যি করে বল কী হয়ছে তোর আরু? ফারুর বিয়েটা নিয়ে সব থেকে বেশি এক্সাইটেড তো তুই ছিলি। তুই ফারুর সাথে শপিংও করতে যাস নি।বললি অসুস্থ। সেটা মানলাম। এখন আবার বলছিস ওর গায়ে হলুদেও যাবি না।

আম্মু হলুদ তো রাতে হবে। তাই আমি, ছোঁয়া, অন্তু আর আহু বিকালের দিকে যাবো।

তোর তো একদিন আগেই যাবার কথা ছিল!

আম্মু আমি এটা নিয়ে আর কথা বলতে চায় না। একা থাকতে দাও প্লিজ।

জানি না মা তোর কী হয়ছে। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি বিয়েতে তুই খুশি না।

আম্মু আমি অনেক খুশি। কিন্তু আমি ওদের ছাড়া যেতে পারবো না তাই বিকেলে একসাথে যাব৷

ঠিক আছে।

আরিয়ার আম্মু যেতেই দরজা বন্ধ করে দেয়।
বিছানায় শুয়েই বালিশে মুখ গুছে কান্নায় ভেঙে পড়ে আরিয়া । সারাদিন যতই ভালো থাকার অভিনয় করে যায়! মাঝরাতে সবাই অভিনয়ের কাছে হেরে যায়।

__সে আমায় কখনোই ভালোবাসে নি। তার নিখুত অভিনয় গুলা কখনোই আমি বুঝতে পারিনি। তার মিথ্যে হাসির আড়ালে লুকিয়ে থাকা চেহারা টা আমি কখনোই চিনতে পারি নি। হ্যাঁ সে আমায় কখনোই ভালোবাসে নি৷ তার কোনো ইচ্ছাই আমি আমার সাধ্যের ভেতরে অপূর্ণ রাখিনি! বিনিময়ে তার কাছ থেকে বেশি কিছু চাই নি শুধু ভালোবাসাটুকু চেয়েছিলাম। কিন্তু তার কাছ থেকে শুধই কষ্ট আর অবহেলা পেয়েছিলাম। সে ভুল করলে তাকে ক্ষমা করে দিতাম। কারণ আমি তাকে সবসময় হারানোর ভয় করতাম। আর এই সুযোগ টা নিয়েই সে আমাকে বারবার কষ্ট দিতো। আর এই কষ্টটা তার সামনে প্রকাশ না করে আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে অঝোরে দু-চোখ থেকে কান্না ঝরাতাম। বিনিময়ে শুধু তার ওই মুখের হাসিটাই দেখতে চাইতাম। কিন্তু এত কিছু করার পরও দিনশেষে সেই মানুষটা আমার হয়নি। আর দুদিন পর সে সম্পূর্ণ ভাবে অন্যের হয়ে যাবে। কারণ সে আমায় কখনো ভালোইবাসেনি। আমি তাকে ভালোবেসে বিশ্বাস করতাম আর সে আমাকে বোকা ভাবতো। আর বোকা ভেবেই সে আমার বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে আমাকে ধোঁকা দিলো। কিন্তু সেও হয়তো জানে না যে ধোঁকা দেয় সেও একদিন ধোঁকা খায়। জাস্ট পার্থক্য শুধু মানুষের আর অপেক্ষা টা শুধু সময়ের। ভেবেই আরিয়া চোখের জল টা মুছে নেই৷

আরিয়া আইডিটা এক্টিভ করল। দেখলো রাতুল অনলাইনেই আছে!

__রাতুল আমি তোমায় সত্যিই ভালোবেসে ছিলাম। কিন্তু তুমি আমাকে কখনোই ভালোবাসতে না। আমাদের রিলেশন টা কখনোই তুমি সিরিয়াস ভাবে নাও নি। আমাদের রিলেশন টা নেহাতই তোমার কাছে পুতুল পুতুল খেলা ছিল। তাই তো এমন টা করলা। জানো রাতুল, ছোটবেলায় অন্ধকারকে অনেক বেশিই ভয় পেতাম কিন্তু তুমি ধোঁকা দেওয়ার পর অন্ধকার টাই এখন বেশি ভালো লাগে। মনে রেখো, আমার শূন্যতাও একদিন তোমায় প্রচুর কাঁদাবে৷ তখন আর শত চেষ্টা করলেও আগের আমিটাকে খুজে পাবা না। সত্যি বলতে, কাউকে কাঁদিয়ে সুখী হওয়া যায় না। দোষ না করেও সবসময় তোমাকে Sorry বলতাম। তাও তুমি আমাকে কখনোই আগলে রাখতে চাওনি। শুনেছি অযোগ্যকে যোগ্য বানানো যায়। কিন্তু বিশ্বাস ঘাতককে বিশ্বস্ত বানানো অসম্ভব। আজ তোমার কারণে এই কথা টাও বড্ড বেশি বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়।

মেসেজ টা সেন্ড করার দুই মিনিট পর রিপ্লাই আসলো,, আরু প্লিজ শুনো!

হেই কতবার বলব, ডোন্ট কল মি আরু! অনলি আরিয়া ওকে।

আচ্ছা আরিয়া আমার কথাটা দয়া করে শুনো!

জিজু আর কোনো কথা শুনতে চায় না। ভালো থাকুন।

আরিয়ার মেসেজ দেখে রাতুল ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়। একটু আগেও তো রাতুল বলল। এখন আবার জিজু!

জিজু মানে? আর আপনি করে কেন বলছো?

দুইদিন পর ফারিয়া কে বিয়ে করবেন। আফটার অল বেইমান হলেও বোন তো। সেই কারণেই জিজু বললাম। আর বোনের বর কে তো আর তুমি করে বলা যায় না। বাই জিজু!?

মেসেজটা দিয়েই আরিয়া রাতুলের কোনো রিপ্লাই না দেখেই ডাটা অফ করে ঘুমিয়ে যায়।

আরু এতটা বদলে গেছে ভেবেই একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে রাতুল।

_________________________

সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিতেই দেখে আননোন নাম্বার থেকে মেসেজ আসছে!
মেসেজ টা ওপেন করে পড়া শুরু করলো করল আরিয়া।

সুপ্রভাত আরুপাখি?

আমি কে সেটা নিয়ে তুমি আর ভেবো না। তোমার ছোট্ট মাথায় এসব উত্তর আসবে না। সময় হলেই আমি তোমার সামনে আসবো। ততদিন একটু ধৈর্য ধরো। আর হ্যাঁ রাতুলকে ভুলে যাও। আমাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করো। সবসময় যদি ওই রাতুলকে নিয়ে ভাবতে থাকো তো আমাদের ফিউচার বাচ্চা-কাচ্চাকে নিয়ে কে ভাববে হু!? আর শুনো, রাতুল আর ফারিয়ার বিয়েতে গিয়ে একদম মন খারাপ করো না। কষ্ট হলেও ওদের বুঝতে দিয়ো না। বুঝে গেলে ওরা তোমাকে কষ্ট দিতেই থাকবে।

ভেবো না তুমি একা, আমি আছি তোমার পাশে। ভালোবাসি তোমাকে।

অচেনা কেউ..!!

কে এই লোক! বাই দ্যা রাস্তা, লোকটা আবার পাগল নয়তো। এ নিশ্চয় পাবনা থেকে পালিয়ে আসছে। এখন আমাকেও পাগল বানিয়ে ছাড়বে। আমার নাম্বার টাই বা কই পাইলো।

সব ভাবনা সাইডে রেখে আরিয়া নাম্বার টাই কল দিলো।

#চলবে….!!

#ভালোবেসে_থাকবো_পাশে?
#পর্ব_১১
#লেখিকা_ইসরাত_জাহান_ইমা

কে এই লোক! বাই দ্যা রাস্তা, লোকটা আবার পাগল নয়তো। এ নিশ্চয় পাবনা থেকে পালিয়ে আসছে। এখন আমাকেও পাগল বানিয়ে ছাড়বে। আমার নাম্বার টাই বা কই পাইলো।

সব ভাবনা সাইডে রেখে আরিয়া নাম্বার টাই কল দিলো।

তিন থেকে চার বার ডায়াল করার পরও একটা কথায় আসছে আপনার ডায়াল করা নম্বর টিতে এই মুহূর্তে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আরিয়ার রাগটা চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। শালা খবিশ, ইতর, বজ্জাত বেটা ফোন টাও অফ করে রাখছে। ধ্যাত ভাল্লাগে না।

মনে মনে কিছুক্ষণ গালি দিয়ে আরিয়া ফ্রেশ হতে চলে গেল।
___________________

আরু কাল তো ফারিয়ার গায়ে হলুদ। আমরা কখন যাব!(ছোঁয়া)

বিকালে!

তুই পারবি ঠিক থাকতে?

হুম অবশ্যই পারবো। পারতে তো হবেই। তাছাড়া বল কোনো বেইমানের জন্য নিজেকে কেন কষ্ট দিবো।

হুম দোস্ত। ভেঙে পড়লে চলবে না চিরদিন কেউ পাশে তাকে না।(অন্তু)

আচ্ছা তাহলে কাল আমরা তিনজন এক ড্রেস পড়বো ওকে!

হুম কিন্তু কী পড়ব।

হুলুদ আর বাসন্তী পাড়ের শাড়ি।

কিন্তু আরু তো শাড়ি সামলাতে হিমশিম খায়!

কিচ্ছু হবে না৷ আমিও তোদের সাথে শাড়িই পড়বো। আর আহু তুই কিন্তু হলুদ আর বাসন্তী মিশ্রণে পাঞ্জাবি পড়ে আসবি।

ঠিক আছে।

এখন চল শপিং করে বাসায় চলে যাই।

দাঁড়া ভাইয়াকে ফোন দিয়ে বলি আসতে।

ওয়েট! তোর ভাইকে কেন ডাকবি? আমরা কী হারিয়ে যাব নাকি?

আরে না ভাইয়াও তো যাবে কাল বিয়েতে।

তুর ভাইকে আবার কে ইনভাইট করলো?

আরু ভুলে গেলি নাকি তোর ফুফা আই মিন ফারিয়ার আব্বু আর আমার আব্বু বেস্টফ্রেন্ড।

ওহ্ হুম মনে ছিলো না।

হু সেই সুবাদেই আমাদের পুরো ফ্যামিলি কে ইনভাইট করেছে।

হইছে এখন তোর ভাইকে ফোন দে।

মার্কেটের সামনে শিশিরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অন্তু জিজ্ঞেস করলো, কিরে আহু তোর ভাই তো দেখি আমাগোর থেকে ফার্স্ট। এত তাড়াতাড়ি কেম্নে আইলো?

আহিল বিরবির করে বলল,, সেটা কী আর তুই বুঝবি। ভাইয়া তো অনেক আগে থেকেই তার ভালোবাসার মানুষকে দেখবে বলে দাঁড়িয়ে আছে!

এএএএএএ কী বিরবির করস তুই। ভালা কইরা বল আমরাও শুনি।(অন্তু)

এই যে ক্ষ্যাত মার্কা কথা শুরু।

কী কইলি তুই!

এই গাধা তো সবসময় বিরবির করেই৷(আরিয়া)

হ ঠিক গাধা বলেই সবসময় বিরবির করে আর ঝগড়া করে।(ছোঁয়া)

কী এত বড় কথা। আমি গাধা! আরু বললি তুই আমাকে গাধা। এক্ষনি চা আমার কাছ থেকে ক্ষমা।(আহিল)

আমি তোর কাছ থেকে ক্ষমা কেন চাইবো? আমার তো ওই গাধা গুলোর কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়া উচিত।

কেন?

বেচারা গাধা গুলোর না জানি কত কষ্ট হয়েছে যে আমি তোকে গাধা বলছি।

আরু একদম ঠিক কইছস।?

আহিল কিছু বলতে যাবে তার আগেই শিশির ওদের কাছে চলে এসলো। এই তোরা ঝগড়া ছাড়া কী এক মুহুর্ত থাকতে পারিস না? এই মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে কী শুরু করলি! একটাও ভদ্রতা জানিস না নাকি!

এই যে মিস্টার শিশুর ভাষণ শুরু!(আরিয়া)

কি বললা তুমি? আমি শিশু? এই মেয়ে আমারে তোমার কোন দিক দিয়া শিশু মনে হলো? সময় মতো বিয়া করলে এত দিনে দু-চারটা বাচ্চার বাবা হয়ে যেতাম এতদিনে।

তো করেন নি কেন বিয়ে? আর একটু আগে আমাদের ভদ্রতা শিখাচ্ছিলেন আর এখন আপনি নিজেই ঝগড়া শুরু করলেন!(আরিয়া)

শিশির কিছুটা আহত সুরে উত্তর দিলো, বিয়ে টা তো কবেই করতে চাইছিলাম। কিন্তু সে তো আর আমায় ভালোবাসে না। আমায় বুঝে না। ভালোবাসার প্রতি যে তার একরাশ তীব্র ঘৃণা তৈরী হয়ছে। তবুও চেষ্টা করবো তার মন জয় করে নেওয়ার। আমার ভালোবাসায় তাকে রাঙিয়ে দেওয়ার।

আহিল তার ভাইয়ের অবস্থা বুঝতে পেরে ভাইয়ের কাঁধে হাত রেখে বলল চিন্তা করিস না ভাইয়া সব ঠিক হয়ে যাবে।

ছোঁয়া ,আরিয়া, অন্তু দুই ভাইয়ের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

আহিল পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বলল,, সবাই কী রাস্তায়েই টাইম ওয়েষ্ট করবা নাকি?

না চল।
_____________________?

আহু তোর ভাইয়ার চয়েস তো ফাটাফাটি।

হু বুঝতে হবে ভাইটা কার।?

হইছে ভাব কম নে।

এখন আমাদের দুই ভাইয়ের জন্য তোরা পাঞ্জাবি চয়েস করবি।

হুম ওকে।

শিশির আরিয়া আর ছোঁয়ার পছন্দ মতো পাঞ্জাবি নিল। আর আহিলের জন্য অন্তু শাড়ি চয়েস করল।

শপিং শেষে সবাই বেরিয়ে আসবে তখনি সায়ান আর তার ফ্রেন্ড জেসিয়া আসলো।

হেই গায়েস তোমাদের শপিং করা কমপ্লিট?

হুম ভাইয়া! তুমি এখন আসলা কেন?

আমাদের শপিং কমপ্লিট কিন্তু জেসি ছিল না সেদিন তাই আজ ওরে নিয়ে আসছি।

জেসিয়া সায়ানের হাত ধরে আছে দেখে ছোঁয়া রাগে ফুঁসছে। আরিয়ার কানে কানে বলল, দোস্ত এই মেয়েটা দিন দিন লুচি হয়ে যাচ্ছে।

কেন?

দেখ সায়ানের সাথে কীভাবে চিপকাইয়া দাঁড়াইয়া আছে!

তাতে তোর কী? তুই তো আর ভাইয়াকে ভালোবাসিস না!

ব্যাপার টা আহিল আর সায়ান খুব ভালো করে বুঝতে পারছে। সায়ান তো ছোঁয়ার অবস্থা দেখে মুখ টিপে হাসছে।

তখনি আহিল বলে উঠলো,, কোথাও যেন পোড়া পোড়া গন্ধ পাচ্ছি।

এই কোথায় আবার আগুন লাগলো?(অন্তু)

ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে আহিল উত্তর দিলো,, কোথায় আবার! কারো হৃদয় পুড়ছে বুঝলি! ?

তোর মাথা পুড়ছে, বলেই ছোঁয়া বেরিয়ে আসলো।

বুঝলে ভাইয়া তাহার জেলাস ফিল হচ্ছে। কথায় আছে না মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না।(আহিল)

একদম মেয়েদের নামে বাজে কথা বলবি না। এখন চল না হয় ছোঁয়া একা একাই চলে যাবে।

_______________?
পরেরদিন,,
সন্ধ্যার পর ফারিয়ার আর রাতুলের হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হলো। রাতুলের ইচ্ছে দুজনের একসাথেই হলুদের অনুষ্ঠান হবে। ফারিয়াদের বাড়ির সামনের বাগানেই হলুদের স্টেজ সাজানো হয়েছে।

দুজনকেই একসাথে বসানো হয়েছে। প্রথমে ফারিয়ার আর রাতুলের মা বাবা দুজনকে হলুদ ছোঁয়ালো।

এই আরু তোরা স্টেজে যাচ্ছিস না কেন? ফারিয়া বসে আছে তো তুই হলুদ ছোঁয়াবি বলে।

হ্যাঁ আম্মু যাচ্ছি।

ফারিয়া মনে ভাবছে,, ফারু তুই কী ভাবছিস আমি রাতুলকে হারানোর কষ্টে এতটাই বিভোর থাকবো যে তোদের কাছে যাবো না। তুই যে আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগছিস সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি।

শিশির, আহিল আর সায়ান বসে আড্ডা দিচ্ছিল। হঠাৎ শিশিরের চোখ গেলো আরিয়ার দিকে এক প্রকার থমকে গেছে সে। আরিয়াকে দেখে শিশির টাশকি খাইছে দেখেই বুঝা যাচ্ছে।

হলুদ শাড়ি পড়া, কোমর ছাড়িয়ে যাওয়া চুল গুলা ছেরে দেওয়া। দুই হাত ভর্তি কাচের চুড়ি। হাল্কা মেকআপ। সব চেয়ে আর্কষণীয় জিনিস টি হলো আরিয়ার টানা টানা মায়াবী দুটো চোখ। সব মিলিয়ে হলুদ পরি লাগছে।

অন্তু আর ছোঁয়াও সেইম ভাবেই সেজেছে। তাদের দু’জনকেও খুব সুন্দর লাগছে। শিশির, আহিল, আর সায়ান হলুদ আর বাসন্তী মিশ্রণে পাঞ্জাবি পাজামা পড়েছে।

শিশিরের দৃষ্টি অনুসারে সায়ান আর আহিল তাকিয়ে দুজনেও টাশকি খাইছে৷ সায়ান তো বুকে হাত দিয়ে আহিলের উদ্দেশ্যে বলল,, আহু তোমার শাঁকচুন্নি বান্ধবীকে তো খুব তাড়াতাড়িই বিয়ে করতে হবে।

হুম করো। আমরাও একটা বিয়ে খাইতে পারমু৷

ভাই এমনে তাকাইস না। আমার বেস্টুর নজর লাগবে।

শিশির আহিলের কথায় কিছুটা লজ্জা পেল। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কতগুলো ছেলে আরিয়াকে চোখ দিকে গিলে খাচ্ছে। মুহুর্তেই রাগ উঠে গেলো। ব্যাপার টা তার হজম হচ্ছে না। কে বলেছিল এতো সুন্দর করে সাজতে।
আরিয়ারা শিশিরদের কাছে গেলো। শিশিরের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো। মুহুর্তেই শিশিরের রাগ গলে পানি হয়ে গেলো।

আহু আমাদের কেমন লাগছে?

সব গুলারেই শাঁকচুন্নির মতো লাগছে।

ধ্যাত তুই জীবনেও মানুষ হইবি না। সায়ান ভাইয়া তুমিই বলো আমাদের কেমন লাগছে?

খুব সুন্দর লাগছে। আরু আমার ইচ্ছে করছে এখনি তোর বান্ধবীকে বিয়ে করে ফেলি।

শালা লুচু কয়ডা লাগে আপনার? ওই জেসিরে যায়া বিয়া করেন। তখন তো জেসির হাত ধরে শপিং এ গেছিলেন। এখন আবার আমারে কেন বিয়ে করবেন লুচু কোথাকার। এই আরু এদিকে আয় বলেই ছোঁয়া চলে গেলো।

আরিয়াকে স্টেজের দিকে আসতে দেখে ফারিয়া আর রাতুল খুব অবাক হলো। ওরা কেউ ভাবতেও পারেনি আরিয়া হলুদের অনুষ্ঠানে আসবে।

আরিয়া দুজনের কাছে গিয়ে বললো,, ফারু এন্ড জিজু দু’জনকেই কংগ্রেস। ছোঁয়া তোরাও আয় ফারু আর জিজুকে হলুদ লাগাবি।

#চলবে…!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here