ভুবন_বিলাসী part 1
#লেখিকাঃসীমা
আলিয়া এবার ভার্সিটিতে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ে।বাবা মায়ের ছোট সন্তান অনেক আদরের।হোস্টেল থেকে পড়াশুনা করে।আলিয়ার গায়ের রং ফর্সা,মায়াবী চোখ,লম্বা চুল যে কেউ দেখলে প্রেমে পড়তে বাধ্য।আলিয়ার চাচাতো বোন সাদিয়ার বিয়ে তাই বাড়িতে যাওয়ার জন্য সব প্যাকিং করছে।
কাজলঃআলিয়া তোর হলো?(পিছন থেকে)
আলিয়াঃহুম এইতো আর একটু।
পিয়াঃমাত্র কয়েকদিনের জন্য যাচ্ছিস আর এত কাপড় নেওয়ার কি দরকার?
আলিয়াঃতোদের কি শেষ?
কাজলঃহুম শেষ তাড়াতাড়ি চল নয়তো ট্রেন মিস হয়ে যাবে।
আলিয়াঃচল।
,
,
আলিয়া,কাজল ও পিয়া বেষ্ট বান্ধবী একে অপরের জান।কেউ কাউকে ছাড়া কোথাও যায় না।সাদিয়ার বিয়েতে সবাই যাচ্ছে।
সবাই ট্রেনে চড়ে নিজের সিট খুজে নেয়।কাজল আর পিয়ার সিট এক জায়গায় বসলেও আলিয়ার সিট একটা ছেলের পাশে পড়ে,আলিয়ার সিটে ছেলেটা একটা ব্যাগ রেখেছে।আলিয়া ছেলেটাকে বলে,
আলিয়াঃভাইয়া আমার সিট জানালার পাশে আপনার ব্যাগটা উঠিয়ে নিন।
ছেলেঃসরি বসুন।
,
ছেলেটা ব্যাগ উঠিয়ে নেয়।আলিয়া বসে পড়ে সিটে।ছেলেটাকে আলিয়া লক্ষ করে ছেলেটার গায়ের রং ফর্সা,উচ্চতা ছয় ফিট হবে,সিল্কি চুল,চোখে একটা চশমা যার কারণে বেশি কিউট লাগছে।
আলিয়া চোখ সরিয়ে নিয়ে জানালা দিয়ে বাইরের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে।আলিয়া আদির কথা চিন্তা করছে।আদির সাথে আলিয়ার রিলেশন পাঁচ বছরের কয়েকদিন থেকে আলিয়াকে ইগনোর করছে।আজ থেকে আবার ফোন বন্ধ আলিয়া আদির বদলে যাওয়ার কারণ খুজে পায় না।
হঠাৎ একটা কিছু আলিয়ার পায়ে পড়লে ভাবনার ছেদ ঘটে।আলিয়া দেখে ছেলেটার হাত থেকে ফোন তার পায়ের নিচে পড়েছে।ছেলেটা পরে পরে ঘুমাচ্ছে।আলিয়া ফোনটা উঠিয়ে নেয় ছেলেটাকে ঘুম থেকে জাগাতে গিয়ে জাগাল না।যদি রেগে যায় তাছাড়া ঘুমন্ত মুখটা অনেক মায়াবী লাগছে।আলিয়া ভাবল পরে দিয়ে দিবে। আলিয়া ব্যাগে ভরে নিল ফোনটা এরপর ঘুমিয়ে যায়।কাজল ধাক্কা দিলে আলিয়ার ঘুম ভাঙ্গে।
,
কাজলঃওঠ আলিয়া আমরা এসে গেছি।
আলিয়া চোখ কচলে দেখে পাশে ছেলেটা নেই।
আলিয়াঃছেলেটা কই?
পিয়াঃকোন ছেলে???
আলিয়াঃআমার পাশে বসেছিলো।
কাজলঃও তো চলে গেছে কি ব্যাপার তুই ওর খোজ কেন করছিস????
আলিয়াঃবেশি বকিস না চল ভাইয়া হয়তো ওয়েট করছে।??
পিয়াঃআদি কি ফোন করেছিলো?
আলিয়াঃনা চল আবার ট্রেন নয়তো ছেড়ে দিবে।
,
সবাই ট্রেন থেকে নেমে পড়ে।আলিয়া সায়ানকে দেখে নেমে জরিয়ে ধরে।সায়ান আলিয়ার বড় ভাই খুব ভালবাসে আলিয়াকে।
আলিয়াঃভাইয়াআআআআ???
সায়ানঃআমার কলিজারে কতদিন পর দেখলাম?☺☺☺?
আবিরঃআমাকে তো আলিয়া দেখবে না????(আবির আলিয়া চাচাতো ভাই।আলিয়াকে নিজের বোনের চেয়ে বেশি ভালবাসে।)
আলিয়াঃওহ ভাইয়া তোমাকে মিস করেছিলাম??
আবিরঃহয়েছে এবার চল বাড়ির সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে।
সবাই বাড়িতে চলে যায় গাড়িতে করে।আলিয়ার বাবা একজন বিজনেসম্যান বিজনেসের জন্য বেশির ভাগ দেশের বাইরে থাকে।আলিয়া আর সায়ান দুভাইবোন।আলিয়ার বাবা মেহরাব ইসলাম আর চাচা শিহাব ইসলাম দুভাই।আলিয়ার চাচা গ্রামে থেকে জমির দেখাশোনা করে।আলিয়ার ওদাদির ইচ্ছে অনুযায়ী সবাই এক বাড়িতে থাকে।শিহাব ইসলামের দুটি সন্তান আবির আর সাদিয়া।দুজনে জমজ আলিয়া বাড়ির ছোট সন্তান।সায়ান আর আবির দুজনে লন্ডন থেকে পড়াশোনা করেছে বর্তমানে দুজনে মিলে নতুন বিজনেস শুরু করার কথা ভাবছে।বাড়িতে আলিয়ার দাদির কথামত সবাই চলে।খুব রাগী তবে আলিয়াকে খুব ভালবাসে।
,
আলিয়াঃদাদিইইইই মাই জান কেমন আছো?
দাদিঃভালো তুই কেমন আছিস?
আলিয়াঃতোমাকে অনেক মিস করছিলাম ভালো লাগে না তুমি ছাড়া??
দাদিঃগ্রামে তো ভালো কলেজ বা ভার্সিটি নেই যে এখানে থেকে পড়বি।
পিয়া আর কাজলঃআসসালামু অলাইকুম দাদি কেমন আছেন?
দাদিঃঅলাইকুম আসসালাম তোরাও এসেছিস ভালো আছিস?
পিয়া আর কাজলঃভালো দাদি।
আলিয়াঃদাদি তোমার জন্য আমি লেহেঙ্গা এনেছি বিয়ের দিনে আমরা দুজনে লেহেঙ্গা পড়ব???
দাদিঃওরে দুষ্টু তুই আমার কথা এত মনে রাখিস☺☺
আলিয়ার মাঃআলিয়া কেমন আছিস মামনি?
আলিয়াঃভালো মাম্মা চাচি কেমন আছো?
চাচিঃতোকে দেখার পর আরও ভালো লাগছে।
দাদিঃযা এবার ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়।তোর জন্য আমি পিঠা বানিয়েছি।ি
আলিয়াঃও সুইট দাদি তুমি ছাড়া কেউ আমাকে ভালোবাসে না।
সবাইঃ?????
দাদিঃবড় বউমা যাও টেবিলে খাবার দাও আর ছোট বউমা তুমি আলিয়ার মাকে সাহায্য করো।
,
আলিয়া রুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে।
কাজলঃতোদের পরিবারের সবাই খুব ভালোরে।
আলিয়াঃহুম চাচ্চু এখনো সম্ভবত বাইরে আছে।ু
সখিনাঃ(কাজের বুয়া)আফা আপনারে দাদিজান খাইতে ডাকতাছে।
আলিয়াঃসখিনা সাদিয়া আপু কইরে?
সখিনাঃহেয় হের হবু স্বামীরে লইয়া ঘুরতে গেছে আইয়া পড়ব।
,
,
আলিয়া,কাজল,আর পিয়া নিচে যায়।সেখানে তার চাচ্চুকে দেখতে পেয়ে জরিয়ে ধরে।
চাচ্চুঃকেমন আছিস মামনি আসতে প্রবলেম হয়নি?
আলিয়াঃনা চাচ্চু তুমি কেমন আছো?
চাচ্চুঃভালো মা।
চাচীঃপরে কথা বলিয়ে আলিয়া খেতে আয় একে…..
আলিয়াঃশহরে থেকে আমাদের মেয়ে শুকিয়ে গেছে।একথা বলতে না???
চাচিঃচাচি আমি ঠিকি আছি তুমি আমাকে বেশি ভালবাসোতো তাই।এ কথা তুমিও বলতে না???
আলিয়াঃমাম্মা, চাচি খেতে দাও ক্ষুধা লাগছে??
সাদিয়াঃকাকে এত ক্ষুধা লাগছে?(পিছন থেকে)
আলিয়াঃআপুউউউ(জরিয়ে ধরে)কেমন আছিস?☺☺
সাদিয়াঃভালো এই দেখ তোর জিজু।
আলিয়া সাদিয়ার হবু বরকে দেখে অবাক হয়ে যায়।কাজল আর পিয়াও অবাক হয়ে যায়।
আলিয়ার সামনে দাড়ানো মানুষটিকে দেখে বিশ্বাস করতে পারছে না।
,
আলিয়াঃঅাদি??
চলবে