ভূবন_বিলাসী part 4
#লেখিকাঃসীমা
আলিয়া এতিমখানার বাচ্চাদের সাথে খেলতে থাকে।লুকোচুরি খেলতে খেলতে আলিয়া এতিমখানার পিছনে চলে আসে।এমন সময় আলিয়াকে কেউ গুলি করে বাইকে করে পালায়।আলিয়ার পেটে গুলি লেগে রক্ত ঝরতে থাকে।আলিয়া জোরে চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে যায়।
একটা ছোট বাচ্চা আলিয়াকে দেখে আলিয়ার বাবা মাকে ডেকে আনে।সায়ান আলিয়াকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ডক্টর ওটিতে অপারেশনের জন্য আলিয়াকে নিয়ে যায়।
এক ঘন্টা পর ডক্টর ওটি থেকে বের হয়।
আলিয়ার বাবাঃআমার মেয়ে?
ডক্টরঃও ঠিক আছে ভাগ্য ভালো গুলি মাংস ছিড়ে বের হয়ে গেছে।আমরা কেবিনে ট্রান্সফার করলে দেখা করতে পারবেন।
আলিয়ার মাঃআমার মেয়েটাকে কে গুলি করল?
সায়ানঃমাম্মা তুমি শান্ত হও আলিয়া ঠিক হয়ে যাবে।
দাদিঃমেহরাব তুই বউমাকে নিয়ে বাড়ি যা আমি এখানে আছি।
আলিয়ার মাঃনা মা আমি এখানে থাকব আলিয়ার কাছে।
,
,
আলিয়ার কেবিনে সবাই অপেক্ষা করে আলিয়ার জ্ঞান ফেরার জন্য।মেহরাব সবাইকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় শুধু আলিয়ার মা থাকে।
আলিয়ার বাবা ঔষধ আনতে গেলে আলিয়ার মা আলিয়ার পাশে ঘুমিয়ে পড়ে।একজন কেউ মুখোশ পড়ে আলিয়ার কেবিনে আসে।সে গিয়ে আলিয়ার গলা চেপে ধরে।সায়ান আর মেহরাব ঐ সময় আলিয়ার কেবিনে এসে লোকটাকে দেখে লোকটাকে মারতে থাকে।লোকটা ওদের হাত থেকে ছুটে পালিয়ে যায়।
আলিয়ার বাবাঃআলিয়া মামনি ঠিক আছো আলিয়া?ডক্টর
আলিয়ার মাঃকি হয়েছে?
সায়ানঃমাম্মা তোমার যদি ঘুম ধরে তো বলতে পারতে আলিয়ার যদি কিছু হতো?আমরা ঠিক সময় না আসলে ঐ লোকটা আলিয়াকে মেরে ফেলত।
আলিয়ার বাবাঃনিতু তুমি বাড়ি যাও।আলিয়া আর হাসপাতালে থাকবে না বাড়িতে ওর চিকিৎসা করবো।দেশের বড় বড় ডক্টর চিকিৎসা করবে।
সায়ানঃঠিক আছে পাপা আমি সব ব্যবস্থা করছি।
,
,
আলিয়া কিছুদিন পর একটু সুস্থ হয়।আয়ান সারাক্ষন আলিয়ার পাশে ছিলো।সাদিয়ার আর আদির বিয়ে আলিয়ার অসুস্থ থাকার জন্য পিছিয়ে যায়।একদিন রাতে সবাই আলিয়ার রুমে আসে।
দাদিঃআলিয়া দাদুভাই শোন আমরা সাদিয়ার বিয়ের দিন তোর বিয়ে ঠিক করেছি আয়ানের সাথে।তোর মতামত জানতে চাই?
আলিয়া আদির দিকে ছলছল চোখে তাকায়।
আলিয়াঃআদি তুমি কি জানি না আমাকে তো খুব ভালবাসতে তাহলে আজ এমন কেনো হচ্ছে(মনে মনে)
আলিয়ার বাবাঃআলিয়া তুমি যদি কাউকে পছন্দ করো বলো তাহলে আমরা তার সাথে বিয়ে দিবো।তুমি না আমাকে ফোনে বলতে তুমি কাউকে ভালোনাসো কে সে?
আলিয়াঃপাপা ও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে তোমাদের যা ভালো মনে হয় করো।(কাঁদতে কাঁদতে)
সায়ানঃএকবার শুধু বল কে ও ওকে তুলে নিয়ে আসবো।
আলিয়াঃভাইয়া থাক লাগবে না।মাম্মা দাদি আমাকে ক্ষমা করে দাও তোমাদের এ কথা আগে আমি বলিনি শুধু পাপা জানত???
দাদিঃমাফ চাইতে হবে না দাদুভাই তুমি বিয়েতে রাজি হয়েছো এটাই অনেক।
সাদিয়াঃওয়াও আমরা দুজনে বউ সাজবো।???
কাজলঃইয়াহু আমরা দুটো বিয়ের দাওয়াত খেতে পারব।???
চাচিঃকাল থেকে আমরা শপিং করতে শুরু করবো☺☺☺
আবিরঃআয়ান বেচারা ???এবার বুজবে আলিয়া কি?আয়ানের জীবন তেজপাতা হয়ে যাবে???
আলিয়াঃআবিররররর ভাইয়া।
আলিয়া বেড থেকে বালিশ উঠিয়ে ছুড়ে মারে আবিরের দিকে।আবির হাসতে হাসতে চলে যায়।
,
,
আদি লুকিয়ে আলিয়ার রুমে আসে।
আলিয়াঃতুমি এখানে? ???
আদিঃআমি জানি তুমি আমার উপর রেগে আছো।আলিয়া আমি আগে থেকে সাদিয়াকে ভালবাসতাম তোমার সাথে ভালবাসার অভিনয় করতে আমাকে বলা হয়েছিলো।
আলিয়াঃতুমি বললে কি আমি বিশ্বাস করবো তোমার কথা?
আদিঃসেটা তোমার ব্যাপার আমি তোমার মন ভাঙতে চাইনি আলিয়া।আমাকে বলা হয়েছিল সাদিয়াকে পেতে হলে তোমার মন ভাঙতে হবে।আমি সাদিয়াকে পাওয়ার জন্য সেটাই করি।আমি জানতাম না সাদিয়া আর তুমি বোন। তুমি অনেক ভালো মেয়ে তুমি আয়ানকে বিয়ে করো না।তোমার কাছের কেউ তোমার ভালো চায় না।আজ তোমাকে এসব কথা বললাম এজন্যই যে তুমি আমার কথা বলে দিতে পারতে তোমার পরিবারকে আর হয়তো তোমার পরিবার আমার সাথে সাদিয়ার বিয়েটা ভেঙ্গে দিতো।কিন্তু তুমি বলো নি এজন্য বললাম।ভালো থেকো।
,
আদি রুম থেকে বের হয়ে যায়।
আলিয়াঃতুই বললে আমি শুনব নাকি আয়ানকে আমি বিয়ে করবো।
পরদিন থেকে শপিং করা শুরু হয়।মেহরাব ইসলাম বাড়িতে অর্ডার দিয়ে সবকিছু নিয়ে আসে।আয়ানও খুব খুশি তার এতদিনের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে।
গায়ে হলুদের দিনের আলিয়া একটা হলুদ লেহেঙ্গা পড়ে।আদির আপনজন বলতে কেউ না থাকায় আদির গায়ে হলুদ আলিয়াদের বাড়িতে হয়।সাদিয়া আর আলিয়া একসাথে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসে।সাদিয়ার থেকে আলিয়াকে বেশি সুন্দর লাগছে।আদিও হা করে আলিয়াকে দেখছে।
দুজনকে আলাদা স্টেজে বসানো হয়।আলিয়া আদির দিকল তাকিয়ে শুধু নিরবে চোখের পানি ফেলছে।
পিয়াঃকাঁদছিস কেনো?
আলিয়াঃকিছু না চোখে কি যেন পড়ছে।
কাজলঃজানি কেনো কাঁদছিস ভুলে যা সব।
আলিয়াঃচাইলেও কি ভুলতে পারব????
কাজলঃসবাই আছে প্লিজ আলিয়া নিজেকে শক্ত কর।
আলিয়ার মা আলিয়ার গালে হলুদ দিতে আসলে আলিয়া কেঁদে দেয়।
আলিয়াঃমাম্মা আমি তোমাদের ছেড়ে যাবো না।???
আলিয়ার মাঃমামনি তোর জীবন ঝুকির দিকে আছে তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আলিয়া কাঁদতে থাকে।আলিয়ার কান্না দেখে সবাই কেঁদে দেয়।
,
,
পরদিনে আলিয়ার সাথে আয়ানের আর সাদিয়ার সাথে আদির বিয়ে হয়ে যায়।আলিয়াকে গাড়িতে তুলে দিতে গেলে আলিয়া ওর দাদির গলা জড়িয়ে ধরে। আয়ান জোর করে আলিয়াকে গাড়িতে বসায়।আলিয়া আয়ানের বুকে কিল বসায়।আয়ান আলিয়াকে নিয়ে বাড়িতে আসে।রায়হান চৌধুরী বিয়ের কথা শুনে দেশে আসে।
,
,
আলিয়াকে বাসরঘরে বসিয়ে দিয়ে আয়ানের দূর সম্পর্কের ভাবিরা চলে যায়।রাত বারোটা বাজলেও আয়ান রুমে আসে না।আলিয়ার ভয়ে জান বেরিয়ে যাবার অবস্থা।রাত দুটোর সময় আয়ান রুমে আসে।শেরওয়ানী খুলে ফেলে আলিয়ার দিকে এগিয়ে আসে।আলিয়া পিছাতে পিছাতে বেড থেকে পড়ে যায়।
আয়ানঃমেহরাব ইসলামের একমাত্র মেয়ে আলিয়া তোমাকে আজ থেকে শাস্তি দিবো যতটা শাস্তি তোমার বাবা আমার ফুপিকে দিয়েছিলো তার থেকে বেশি দিবো।???
আলিয়াঃআয়ান কি বলছো এসব?দেখো তুমি আমার সাথে ফান করবে না।
আয়ানঃআমি ফান করছি না আলিয়া।
আয়ান বেল্ট নিয়ে এগিয়ে আসে।
আয়ানঃতোমার শরীরে ফুলের টোকাও লাগতে দেয়নি তোমার পরিবার না কিন্তু এখন তোমার ঐ শরীরকে আমি রক্তাক্ত করবো???
আলিয়া ভয়ে চিৎকার করে।
আয়ানঃসরি জান এটা সাউন্ট প্রুফ রুম তাই তোমার চিৎকার বাইরে যাবে না।আমিতো প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তোমাকে বিয়ে করেছি।
আলিয়াকে চেয়ারের সাথে বেঁধে আয়ান বেল্ট দিয়ে মারতে থাকে।আলিয়া সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারায়।
আয়ানঃএখন তোমাকে প্রতিদিন টর্চার করবো???
চলবে