ভূবন_বিলাসী part 5

0
2118

ভূবন_বিলাসী part 5
#লেখিকাঃসীমা

আলিয়াকে চেয়ারের সাথে বেঁধে আয়ান বেল্ট দিয়ে মারতে থাকে।আলিয়া সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারায়।
আয়ানঃএখন তোমাকে প্রতিদিন টর্চার করবো।???
আলিয়াকে অজ্ঞান অবস্থায় রেখে চলে যায় আয়ান।আয়ানের বাবার কাছে আয়ান চলে যায়।
আয়ানঃবাবা আলিয়াকে ঔষধ দাও অজ্ঞান হয়ে গেছে ও।
আয়ানের বাবাঃআলিয়ার তো কোনো দোষ নেই ওকে কেনো মারছো?
আয়ানঃওকে ক্ষত বিক্ষত করলে ওর পরিবার কষ্ট পাবে।আমি ফুপির কাছে যাচ্ছি।
আয়ান ওর ফুপির রুমে যায়।ওর ফুপি আজও কোমায় আছে।আয়ান ওর ফুপির পাশে বসে।
আয়ানঃফুপি তোমার এ অবস্থার জন্য দায়ী তাদের কলিজার টুকরোকে আমি কষ্ট দিবো প্রতিদিন।তুমি চোখ খুলে দেখো ফুপি।
আয়ান ওর ফুপির কাছে বসে কাঁদতে থাকে।
সকালে…
আয়ান আলিয়ার গায়ে পানি ঢেলে দিলে আলিয়ার জ্ঞান ফেরে।
আয়ানঃযাও কিচেনে গিয়ে রান্না করো।
আলিয়া উঠতে পারে না।পুরো শরীরে রক্ত জমাট বেধে নীল হয়ে আছে।আয়ানের বাবা কাজের বুয়াকে অয়েন্টমেন্ট দিয়েছিলো আলিয়ার শরীরে লাগিয়ে দিতে।কিন্তু কাজের বুয়া দেয়নি।আয়ান আলিয়ার হাত ধরে দাড় করিয়ে দেয়।
আয়ানঃদশ মিনিট সময় দিলাম রান্না করো যাও।(আলিয়ার চুলের মুঠি ধরে)
আলিয়াঃআয়ান..
আয়ানঃএকটাও কথা না যাও।(আলিয়াকে ধাক্কা দিলে আলিয়া ফ্লোরে পড়ে যায়)
আয়ানঃতোমার পরিবারকে চাইলেও তুমি তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না।আমি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তোমাকে অন্য বাড়িতে এনেছি যাও রান্না করো।
আলিয়াঃকেনো এমন করছো?
আয়ানঃতোমার বাবা মেহরাব আমার ফুপির সাথে প্রেম করে ধোকা দেয়।ফুপি প্রেগন্যান্ট ছিলো ঐ সময়।কিন্তু তোমার বাবা আর দাদি মেনে নেয়নি তোমার মায়ের সাথে বিয়ে দিয়েছে তোমার দাদি।আমার ফুপি সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে।আমরা সঠিক সময়ে জানতে পেরে ফুপিকে বাচাই।আমার বাবা তোমার দাদির পা পর্যন্ত ধরেছিলো যাতে ফুপিকে তোমার বাবা বিয়ে করে অনাগত সন্তানকে স্বীকৃতি দেয়।কিন্তু তোমার বাবা আর দাদি শুধু বাচ্চাকে নিয়েছিলো যেটা তোমার ভাইয়া সায়ান। আমার ফুপি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে আত্মহত্যা করার আবার চেষ্টা করে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মাথায় আঘাত লাগার কারণে ফুপি কোমায় চলে যায়।আমার বাবা তোমার বাবার সাথে বন্ধুত্ব করে শুধু তোমাকে পুত্রবধূ করে আনার জন্য।আমি আদিকে পাঠিয়েছিলাম তোমাকে বিয়ের আগে প্রেগন্যান্ট করতে।আর ও কি করলো?তোমার হাত পর্যন্ত ধরে নি।এরপর ঐ যে নৌকায় আমি আদিকে বলেছিলাম নৌকা দোলাতে যাতে তুমি পানিতে পড়লে তোমাকে বাচিয়ে হিরো সাজতে পারি।ট্রেনে আমি ইচ্ছে করে তোমার পাশে সিটে বসেছিলাম আর ফোনটা ইচ্ছে করে ফেলেছি।তোমাকে আমার লোকেরাই গুলি করেছে এরপরও তুমি বেচে গেলে এরপর হাসপাতালে মারতে গেলাম কিন্তু সায়ান এসে বাচিয়ে নিলো।
আলিয়াঃআমি বিশ্বাস করি না আমার বাবা এমন না।
আয়ানঃওর মতো নিকৃষ্ট মানুষ আর পৃথিবীতে নেই।
আলিয়া ফ্লোর থেকে উঠে আয়ানের গালে থাপ্পর মারে।
আয়ানঃএত বড় সাহস তোর আজ তোর হাতকে আমি….
,
,
আয়ান আয়রন মেশিন এনে আলিয়ার হাতে উপর রাখে।
আলিয়াঃমাম্মাআআআআ
,
আলিয়ার মা ঘুম থেকে চিৎকার করে উঠে।
আলিয়ার বাবাঃনিতু কি হয়েছে?
আলিয়ার মাঃআমার আলিয়াকে কেউ মারছে তুমি ওকে বাচাও???
আলিয়ার বাবাঃতুমি স্বপ্ন দেখেছো আমি আয়ানকে ফোন করছি।
আলিয়ার বাবা আয়ানকে ফোন করে।আয়ানের ফোন বাজতে আলিয়াকে রুমে ফেলে ফোন নিয়ে রুমের বাইরে আসে।
আয়ানঃআসসালামু অলাইকুম আংকেল কেমন আছেন?
আলিয়ার বাবাঃঅলাইকুম আসসালাম ভালো আছি তোমরা কেমন আছো?
আয়ানঃভালো আছি।
আলিয়ার বাবাঃআয়ান বাবা আলিয়া কই?
আয়ানঃওয়াশরুমে ফ্রেশ হচ্ছে।
আলিয়ার বাবাঃওহ আলিয়াকে কিচেনে যেতে দিও না বাবা ও কিচেনে কখনোও যায়নি।
আয়ানঃঠিক আছে এখন রাখছি বাই।
আয়ান ফোন কেটে দিলে আলিয়ার দিকে কটমট করে তাকায়।আলিয়া হাত ধরে তখনোও কাঁদছে।আয়ান রুমে গিয়ে আলিয়াকে বলে,
আয়ানঃকিচেনে যাও নয়তো আরেকটা হাতে ঐ রকম দাগ পড়বে।চালাকি করার চেষ্টাও করবে না তোমার সাদিয়া আপুর ক্ষতি হবে।
আলিয়া উঠে কিচেনে যায়।ওখানে রহিমা (কাজের বুয়া)আলিয়াকে দেখে চমকে উঠে।
আলিয়াঃখালা রান্না করার জন্য কোথায় কি আছে দেখিয়ে দাও?
আলিয়াকে দেখে রহিমার মন গলে যায়।অথচ রাতে এ রহিমাই আলিয়ার বিরুদ্ধে ছিলো।
রহিমাঃতুমি আমারে খালা ডাকছো আইজ থেইকা আমার মাইয়ার মত তুমি।তুমি বসো আমি রান্না করে দিতাছি।
আলিয়াঃনা খালা এ বাড়িতে কাউকে তো আপনজন পেলাম।(দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে)
রহিমাঃহেরা কি মানুষ কিভাবে মারছে তুমি বসো আমি ব্যাথার ঔষধ আনতাছি।
রহিমা ঔষধ এনে আলিয়াকে জোর করে খাইয়ে দেয়।ক্ষত স্থানেও মেডিসিন লাগিয়ে দেয়।
রহিমাঃতুমি পালাইয়া যাও আয়ান হেয় তোমারে বাঁচতে দিবো না।
আলিয়াঃআয়ান সারাক্ষন নজরে রাখছে পালিয়ে যেতে পারব না।আমার তো ভাগ্যই খারাপ না পেলাম ভালবাসাকে না পেলাম স্বামীকে।
রহিমাঃআয়ানরে আমি ছোট থেইকা মানুষ করছি হেয় হের ফুপির লাইগা পাগল তাই…
আলিয়াঃখালা আমি রান্না টুকটাক পারি হোস্টেলে থাকতে শখের বশে রান্না করতাম আপনি একটু দেখিয়ে দিবেন।
রহিমাঃঠিক আছে মা।
আলিয়া আয়ানের পছন্দের খাবার সব রান্না করে রহিমার সাহায্য নিয়ে।
টেবিলে সব দিয়ে আলিয়া আয়ানকে ডাকার জন্য ওর রুমে যায়।প্রতিটা সিড়ির ধাপ বেয়ে উঠতে আলিয়ার খুব কষ্ট হয়।আয়ান ফোনে কারো সাথে কথা বলছে।
আয়ানঃআরে জান তুমি ছাড়া আমার কে আছে বলো?
অপরপাশঃ……
আয়ানঃচিন্তা করো না আলিয়াকে আমি ডিভোর্স দিয়ে দিবো এর আগে ওর উপর এমন অত্যাচার করবো যেন ওর পরিবারের কেউ কোনো অন্যায় করার আগে দশবার ভাবে।
অপরপাশঃ……..
আয়ানঃওকে জান আমি দেখা করবো তোমার সাথে লাভ ইউ।
,
আয়ান ফোন কেটে পিছন ফিরে দেখে আলিয়া।
আলিয়াঃখেতে এসো।
আলিয়া কথাটা বলে চলে যায়।আয়ান কিছুক্ষণ পর নিচে আসে।রায়হান চৌধুরী আগে থেকে বসে পড়েছে।
আয়ানঃবাবা ফুপির জন্য নার্স লাগবে না আলিয়া দেখবে।
আয়ানের বাবাঃতুমি বলতে চাইছো আমি ওর ঘাড়ে দায়িত্ব দিয়ে চুপ করে থাকি?
আয়ানঃও কিছু করলে আমি আছি না।
আয়ান মুরগির মাংস মুখে দিয়ে সব ফেলে দেয়।
আয়ানঃওয়াক থু এসব রান্না কেউ খায়?
রান্না ভালোই হয়েছে কিন্তু আলিয়াকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আয়ান এমন করে।আলিয়ার ভয়ে প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার অবস্থা। আয়ান আলিয়ার পায়ে গরম খাবার ফেলে দেয়।
,
,
আলিয়া ফ্লোরে বসে পড়ে পা ধরে কাঁদতে থাকে।
আয়ানঃঢং করার লাগবে না। রান্না করতে পারো না আজ পর্যন্ত?
কলিং বেল বাজলে আয়ান দরজা খুলে দেয়।দুটো মেয়ে বাড়িতে ঢুকে লাগেজ নিয়ে।একটা মেয়ে আয়ানকে জড়িয়ে ধরে।
আয়ানঃসুইটহার্ট কতদিন পর দেখা হলো?
আলিয়ার পায়ে ফোসকা পরেছে তবু আলিয়ার সেদিকে খেয়াল নেই।আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here