ভূবন_বিলাসী part 6

0
2175

ভূবন_বিলাসী part 6
লেখিকাঃসীমা

আয়ানঃসুইটহার্ট কতদিন পর দেখা হলো?
আলিয়ার পায়ে ফোসকা পরেছে তবু আলিয়ার সেদিকে খেয়াল নেই।আয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।
আয়ানঃমিলি চলো বাবা তোমাকে দেখলে খুব খুশি হবে।
মিলিঃচলো যাই।রিমি চল
দুজনে ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়ে আছে।রায়হান চৌধুরী ওদের দেখে হাসিমুখে এগিয়ে যায়।
রিমি সবাইকে অবাক করে দিয়ে আলিয়াকে জরিয়ে ধরে।
রিমিঃআপু তোমাকে আমি কত খুজেছি জানো কিন্তু ঐদিনের পর তোমাকে আর খুজে পাইনি।
আলিয়াঃরিমি আপু কেমন আছো?
রিমিঃখুব ভালো মিষ্টি আপু।তুমি এখানে?
রহিমাঃআয়ান ভাইজানের বউ।
রিমিঃআয়ান ভাইয়া অনেক লাকি তোমাকে পেয়েছে।
আলিয়াঃআমার তো কপাল খারাপ যে আয়ানের মত বর আমার ভাগ্যে জুটেছে।(বিড়বিড় করে)
রিমিঃআলিয়া তোমার গায়ে এসব কিসের দাগ মনে হচ্ছে কেউ বাজেভাবে মেরেছে।হাতও পুড়ে গেছে।
আলিয়াঃকিছুনা ওসব রান্না করতে গিয়ে পুড়ে গিয়েছে।
মিলিঃরিমি তুই ওর সাথে কথা বলছিস কেনো?(রেগে)
রিমিঃআপু তোমাকে বলেছিলাম না একদিন আমাকে একটা মেয়ে তার বান্ধবীদের নিয়ে বাজে ছেলেদের হাত থেকে বাচিয়েছে এ হলো সেই পিচ্চি আলিয়া।
মিলিঃআলিয়া সেই মেয়ে তো কি হয়েছে আয়ান ওকে পছন্দ করে না।ওরা আমাদের ফুপির অবস্থার জন্য দায়ী।
আয়ানঃহা করে কি দেখছো যাও মেহমানদের জন্য রান্না করো।??
আলিয়া কিচেনে গিয়ে কাঁদতে থাকে।পুরো শরীর ব্যথার জন্য দাড়াতে পারছে না তবু আয়ানের জন্য রান্না করেছিলো এখন রান্না আবার করলে অনেক কষ্ট হবে।
রিমিঃআপু তুমি ঠিক করলে না।
আয়ানের বাবাঃযে যেরকম তার সাথে তেমন আচরন করা উচিত।
মিলি রিমি আয়ানের চাচাতো বোন।আয়ানের চাচা চাচী দুজনে মারা গিয়েছে। আয়ান বা ওর রায়হান চৌধুরী এদের ব্যাপারে কাউকে কোনোদিন বলে নি।রিমি অনেক কষ্ট পায়।
,
,
মিলি আর আয়ান একে অপরকে ভালোবাসে।তাই মিলি আয়ানের পাশে আলিয়াকে সহ্য করতে পারছে না।মিলি রুমে গেলে রিমি লুকিয়ে কিচেনে যায়।
আলিয়া কাধে হাত রাখে।
রিমিঃছি আলিয়া তুমি না সাহসী মেয়ে তুমি এভাবে ভেঙ্গে পড়লে হবে।তোমার সংসার তোমার স্বামীকে নিজের করো অন্যের হাতে তুলে দিও না।(চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে)
আলিয়াঃকি করবো আপু আমার কষ্ট যদি তোমাদের আয়ান ভাইকে সুখ দিতে পারে তো আমি হাসিমুখে সব কষ্ট মেনে নিবো।দোষ আমার পরিবার করেছে আয়ানের জায়গায় অন্য কেউ থাকলে হয়তো এ রকম করতো।আমার মন ভেঙ্গেছে আমি জানি মন ভাঙ্গার কষ্ট কতটা।(কাঁদতে কাঁদতে)তোমাদের জন্য কিছু বানিয়ে দিচ্ছি।
রিমিঃনা আমি বানিয়ে দিচ্ছি চুপচাপ বসে থাকো।
আলিয়াঃআপু….
রিমিঃআমাকে বড় আপু মানো না তাহলে চুপ করে থাকো।
রিমি সব রান্না করে।আলিয়ার পায়ে মেডিসিন লাগিয়ে দিয়ে ওকে রুমে নিয়ে যায়।আয়ান মিলির সাথে প্রেমলীলা করতে ব্যস্ত।আলিয়া অনেক কষ্ট করে শাওয়ার নিয়ে তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে রুমে আসে।আয়ান রুমে ঢুকে আলিয়াকে দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে।আলিয়া আয়ানকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে ভয় পায়।
আয়ান ধীরে ধীরে আলিয়ার দিকে এগিয়ে যায়।আলিয়া পিছাতে গিয়ে পায়ে ব্যথা পায়।আলিয়া মৃদু চিৎকার করে আয়ান দৌড়ে গিয়ে আলিয়াকে কোলে তোলে।আলিয়াকে বেডে শুয়ে দিয়ে আয়ান আলিয়ার পায়ে ওয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দেয়।আলিয়া অবাক হয়ে যায় আয়ানের আচরণ দেখে।আলিয়ার ঠোট কাঁপতে থাকে আয়ান আলিয়ার কপালে লেগে থাকা পানি ঠোট দিয়ে শুষে নেয়।আলিয়ার ঠোঁট আয়ানকে খুব কাছে টানছে আয়ান ধীরে ধীরে আলিয়ার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যায়।
আলিয়াঃশত্রুর মেয়েকে এভাবে যত্ন করছো কেনো তুমি তো প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিয়ে করেছো?
আয়ান এক মূহুর্তে জন্য সবকিছু ভুলে গিয়েছিলো।আলিয়ার কথা শুনে আয়ান রেগে গিয়ে আলিয়াকে বেডে ধাক্কা দিয়ে ফেলে আয়ান চলে যায়।
,
,
আলিয়া আয়ানের ফুপির রুমে যায়।একজন নার্স আয়ানের ফুপির দেখাশোনা করছে।ফুপির হাতে স্যালাইন লাগানো। নার্সটা আলিয়ার মায়াবী মুখ দেখে গলে পানি হয়ে যায়।
নার্সঃআলিয়া আমি লিপি।কিছু কি দরকার?
আলিয়াঃওহ আমি ফুপিকে দেখতে এলাম।
নার্সঃওনি কোমায় আছেন তবে তুমি যা বলবে শুনতে পাবে কিন্তু কথা বলতে পারবে না।আমি সব জানি তোমার ব্যাপারে।তুমি কথা বলো কেউ আসলে আমি তোমাকে বলবো।
আলিয়াঃধন্যবাদ আপনাকে।
আলিয়া ফুপির হাত ধরে বসে পড়ে।
আলিয়াঃফুপি তুমি বলো আমার বাবা কি তোমার এই অবস্থার জন্য দায়ী না অন্য কেউ।ফুপি তুমি সুস্থ হয়ে উঠো তাড়াতাড়ি নয়তো সত্যিটা জানতে পারবো না।প্লিজ???
নার্স এসে আলিয়ার মাথায় রাখে।
নার্সঃতুমি তোমাদের বাবাকে ফোন করে সব জেনে নাও।
আলিয়াঃআমার কাছে ফোন নেই।
নার্সঃআমারটা দিয়ে করো আমি দরজার দাড়িয়ে আছি।
নার্সের ফোন নিয়ে আলিয়া ওর মাকে ফোন করে।
আলিয়াঃহ্যালো মাম্মা
আলিয়ার মাঃকেমন আছিস মা?
আলিয়াঃভালো মাম্মা। সায়ান ভাইয়া কে?
আলিয়ার মাঃ(চমকে)ও তোর ভাই মামনি।
আলিয়াঃমাম্মা মিথ্যা বলো না আমি সব জেনে গেছি।
আলিয়ার মাঃশোন তবে তোর শিহাব চাচ্চুর আর আয়ানের ফুপি রুবিনার সন্তান সায়ান।শিহাব আর রুবিনা একে অপরকে ভালোবাসতো।একদিন শিহাব বাড়িতে আসলে তোর দাদি ওকে বিয়ে দেয় তোর চাচির সাথে।শিহাব তোর দাদির কথা ফেলতে পারেনি।তাই বিয়ে করে নেয়।এরপর একদিন রায়হান এসে বললো রুবিনা প্রেগন্যান্ট। তোর দাদির মন ভাঙ্গতে পারবে না বলে শিহাব রুবিনাকে মেনে নেয়নি।রায়হানও জানত না শিহাব সেই অনাগত সন্তানের বাবা মেহরাব নয় শিহাব।রুবিনা পরিষ্কার ভাবে কিছু বলেনি তাই রায়হান চৌধুরী তোর বাবাকে বলে রুবিনাকে বিয়ে করতে তখন তোর বাবা আর দাদি না বলে দেয়।কারণ তোর বাবা রুবিনাকে চিনতো না তাহলে কিভাবে ওর বাচ্চার বাবা হবে।পরে জানতে পারি শিহাব রুবিনার বাচ্চার বাবা।তোর বাবা অনেক বলে তোর চাচ্চুকে বিয়ে করতে কিন্তু করেনি।এজন্য তোর বাবা আর আমি মিলে রুবিনা সন্তান প্রসব করলে আমাদের পরিচয়ে বড় করে তুলি।এতদিন পর এখন এসব কথা কেনো জানতে চাইছো মামনি।
আলিয়াঃমাম্মা আয়ান আর ওর পরিবার মনে করে আমার বাবার অবৈধ সন্তান সায়ান ভাইয়া।আয়ানের ফুপি এখনো কোমায়।আর আয়ান…
আলিয়ার মাঃকিছু করেছে তোর সাথে?
আলিয়াঃনা মাম্মা
আলিয়া ফোনটা কেটে দেয়।আয়ানের বাবা আড়াল থেকে সব শোনে।
রায়হানঃআমি কি করেছি এসব একটা নিষ্পাপ জীবন শেষ করছি যেখানে আলিয়ার বাবার কোনো দোষ নেই।সায়ানের দায়িত্ব না নিলে হয়তো আজ সায়ান জারজ সন্তান হিসেবে পরিচয় পেত।

রাতে মিলি আয়ানকে অনেক ড্রিংক খাইয়ে দেয় যাতে নোংরা পিক তুলে আয়ানকে ব্লাকমেইল করে বিয়ে করতে পারে।
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here