ভূবন_বিলাসী part 9
#লেখিকাঃসীমা
আলিয়াঃআমাকে এমন কিছু করতে হবে যাতে আয়ানের সত্যিটা সবার সামনে আসে।(মনে মনে)
আয়ানঃআলিয়া তুমি কি ভাবছো আমি জানি ওখানে শুধু তোমার চাচ্চুর মুখোশ খুলে দিতে যাচ্ছি(মনে মনে)
আয়ান নিজে ড্রাইভ করে আলিয়াদের বাড়িতে আসে।
আয়ানঃআলিয়া আমরা এসে…..
আয়ান কথা শেষ করার আগে আলিয়া গাড়ি থেকে নেমে দৌড় মারে।আয়ান মুচকি হেসে আলিয়ার পিছন পিছন যায়।আলিয়া গিয়ে ওর দাদি আর চাচিকে জড়িয়ে ধরে।
আলিয়াঃদাদিইইইই মাই লাভ কেমন আছো???
দাদিঃভালো ছাড় একটু নাতজামাই কই?
আলিয়ার চাচিঃআয়ানকে সাথে নিয়ে আসিস নি আর এমন শুকিয়ে কেনো গিয়েছিস….
আলিয়াঃব্লা ব্লা ব্লা আচ্ছা তোমরা সবাই আয়ানকে নিয়ে এত চিন্তা করার কি আছে?
দাদিঃআয়ান আমাদের বাড়ির জামাই আজ প্রথম এলো আর তুই কিনা?
আয়ানঃদাদি কেমন আছেন?
দাদিঃভালো আছি আলিয়া কি তোমাকে খুব জ্বালিয়েছে?
আলিয়াঃ???আয়ান তো আমাকে…..
আয়ানঃঅনেক আদর করেছে।???
আলিয়াঃ???
আয়ানঃ???
আলিয়ার মাঃআয়ান ফ্রেশ হয়ে এসো খাবে।
আলিয়াঃসবাই ওকে নিয়ে পড়ে আছে আমার দিকে কেউ তাকাচ্ছে না???
সায়ানঃরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়েনে (মাথায় হালকা বারি মেরে)
আলিয়াঃযাচ্ছি সবাই এই আয়ানের বাচ্চাকে নিয়ে থাকো।
আলিয়ার চাচিঃতুমি কি প্রেগন্যান্ট আলিয়া বললে যে আয়ানের বাচ্চা।
আলিয়া এবার মনে অজ্ঞান হয়ে পড়বে।আলিয়া রুমে এসে নিজের রুমের প্রত্যেকটা জিনিস দেখে সবকিছু আগের মতো আছে।ওদিকে সায়ান আয়ানের দিকে হাত বারিয়ে দেয়।
সায়ানঃকেমন আছো আয়ান?
আয়ানঃভালো ভাইয়া আপনি?
সায়ানঃভালো ফ্রেশ হয়ে এসো আলিয়া ওর রুমে আছে।যাও
আয়ানঃশিহাব আংকেল সাদিয়া আদি কই?
সায়ানঃতোমরা আসবে শুনে তিনজনে তোমাদের জন্য বাজার করতে গেছে।
আয়ানঃসাদিয়া আপুও???
সায়ানঃআমরা বারন করেছিলাম কিন্তু ও বলল তোমরা ফরমালিন দেওয়া সব কিনে আনবে তা হবে না তাই নিজে গেছে। আমি পাপা মাম্মার সাথে তোমার বাড়িতে যেতাম কিন্তু দাদির শরীর হঠাৎ খারাপ হওয়ায় যেতে পারিনি এজন্য আলিয়া হয়তো আমার উপর রেগে আছে।
আয়ানঃও আলিয়া দশ মিনিট ওর রাগ চলে যাবে।
,
,
আয়ান আলিয়ার রুমে গেলে দেখে আলিয়া বেডে বসে আছে গালে হাত দিয়ে চিন্তা করছে।
আয়ানঃকি ভাবছো?
আলিয়াঃতুমি কেনো এ রুমে????
আয়ানঃআমি আমার বউয়ের রুমে থাকব নাতো কোথায় থাকবো???
আলিয়াঃজানিনা বের হয়ে যাও
আয়ানঃরোমান্স কি শুরু করবো??
আলিয়াঃলুচু।???
আলিয়া শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে গেলে আয়ানও যায়।
আলিয়াঃআবার কি?
আয়ানঃএকসাথে ফ্রেশ হবো।
আলিয়াঃদেখো….
আয়ানঃজানি তুমি শাড়ি পরতে পারো না তাই হেল্প করতে আসলাম এতদিন তো রহিমা পরিয়ে দিত আজ কে দিবে?
আলিয়াঃমাম্মাকে ডাকতাম।
আয়ানঃতুমি এতো অবুঝ কেনো? নব দম্পতির রুমে কেউ আসবেনা বুঝেছো।
আলিয়াঃআমি নিজে পরবো।
আয়ান আলিয়ার ঠোটে কামড় বসিয়ে দেয়।
আয়ানঃচুপ করে থাকো নয়তো এর বেশি কিছু হয়ে যাবে।
আলিয়া রাগে ফুসতে থাকে আয়ান শাড়ি পরিয়ে দিয়ে চলে যায়। আলিয়া চুল ঠিক করে নিচে যায়।সাদিয়ারা চলে এসেছে।
সাদিয়াঃআলিয়া কেমন আছো?
আলিয়াঃভালো আবির ভাইয়া কই?
সাদিয়াঃকিসের একটা মিটিং আছে অফিসে তাই আমাদের ঐ বাড়িটাতে গেছে দাদি তো গ্রাম থেকে কোথাও যেতে দেয়না।শহরে এত বাড়ি রেখে কি করবে বলো?
আলিয়াঃশুনলাম তোমরাও নাকি সেখানে থাকবে?
সাদিয়াঃতাহলে ভালো হবে তাই না বল তোর বাড়ির কাছে হবে।
আলিয়াঃহুম চাচ্চু ভালো আছো?
আলিয়ার চাচ্চুঃহুম তুমি কেমন আছো আরে আয়ান কেমন আছো?
আয়ানঃভালো(রাগ কন্ট্রোল করে)
সাদিয়াঃদেখ আমাদের কথা ভুলে গিয়ে সবাই জামাইদের নিয়ে ব্যস্ত।
আলিয়ার মাঃসবাই খেতে আসো।
সবাই একসাথে খেতে বসে।আদি সাদিয়ার পাশে বসে আয়ান আলিয়ার দাদির পাশে বসে।
আলিয়াঃমাম্মা নতুন জামাইদের বেশি করে খেতে দাও বদনাম যেন না হয়।
আলিয়ার চাচিঃঠিক বলেছো।
আলিয়ার চাচি আয়ানের আর আদির প্লেটে বেশি করে দেয়।আয়ান করুণ চোখে আলিয়ার দিকে তাকালে আলিয়া চোখ টিপে দেয়।???
আয়ানঃপরে তোমাকে দেখে নিবো।
আলিয়াঃদাদি তোমার শরীর নাকি খারাপ?
দাদিঃতোদের দেখে ভালো লাগছে।
আলিয়াঃভাইয়া আয়ানের প্লেটে বেশি করে দাও তো।
সায়ানঃওকে ছোট আপুনি।
সায়ান আয়ানের প্লেটে আবার দেয়।আলিয়া মুচকি হেসে উঠে যায়।
,
,
আলিয়া ওর ফোন আলমারি থেকে বের করে।বিয়ের দিন আলমারিতে ফোনটা রেখে গিয়েছিল।
আলিয়া ফোন অন করে কাজল আর পিয়াকে ফোন দেয়।
কাজলঃআলিয়া এতোদিন পর?কেমন আছিস?
আলিয়াঃআর ভালো। ভালো থাকাটা আমার কপালে নেই।কেমন আছিস তোরা?
কাজলঃভালো কি হয়েছে তোর বল?
আলিয়াঃকিছুনা পিয়া কই?
কাজলঃআমার পাশে স্পিকার অন করছি কথা বল।
পিয়াঃকেমন আছিস আলিয়া আয়ান ভাই তোকে খুব ভালবাসে তাইনা?
আলিয়াঃএমন ভালবাসা যে বাসররাতে আমাকে মেরেছে
আলিয়া সব খুলে বলল।
পিয়াঃমাই গড এতকিছু হয়ে গেলো তুই আমাদের জানাসনি?
আলিয়াঃকারো সাথে আয়ান যোগাযোগ করতে দেয়নি এমনকি মাম্মা পাপার সাথেও না।
কাজলঃএখন কি তুই গ্রামে?
আলিয়াঃহুম আয়ানও আছে আদিকে তো আমার সহ্য হচ্ছে না ইচ্ছে করছে ওর গালে সবার সামনে থাপ্পর মারি।কিন্তু সাদিয়া আপুর জন্য আমি চুপ করে আছি।আমাকে তোদের সাথে নিয়ে চল আয়ান আমার জীবনটাকে নরক বানিয়ে দিয়েছে।
পিয়াঃতোর পরিবারকে সব বলে দে।
আলিয়াঃনা বাড়িতে বললে ওকে পাপা আর ভাইয়া মেরে ফেলবে।
কাজলঃতুই কি ওকে
আলিয়াঃজানি নারে তবে ওর জন্য মায়া জন্মে গেছে যা আমি বাড়াতে চাইনা।
পিয়াঃকাদিস না শোন তুই যেভাবে পারিস হোস্টেলে চলে আয় আন্টি আর আংকেলকে আমরা বুঝাবো।
আলিয়াঃওকে বাই।
কাজল আর পিয়াঃবাই
,
,
আলিয়া ফোনটা টেবিলে উপর রেখে বেডে শুয়ে পড়ে।আয়ান রুমে এসে আলিয়াকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে।
আলিয়াঃআয়ান তুমি অন্য রুমে যাও।
আয়ানঃনা আমি তোমার সাথে ঘুমাবো প্লিজ ঘুমাতে দাও।
আলিয়াঃতাহলে আমি অন্য রুমে যাচ্ছি।
আয়ানঃপিচ্চি সবাই কি ভাববে?চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ো।
আয়ান আলিয়ার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে ঘুম যায়।আলিয়া নিজের অজান্তে আয়ানের চুলে হাত দিয়ে বিলি কেটে দেয়।
,
,
আলিয়া শুধু সুযোগ খুজছে পালিয়ে যাওয়ার কিন্তু আয়ান সারাক্ষন আঠার মত পিছনে লেগে থাকে।আয়ানের ফুপিও সুস্থ হয়ে গেছে আয়ান সেটা কাউকে বলেনি।
আলিয়া রুমে পায়চারী করছে আর ভাবছে কি করে পালানো যায়।আদি আলিয়া রুমে ঢুকে দরজা লক করে দেয়।
আলিয়াঃতুমি এখানে?
আদিঃআসলে আমি এখানে এসেছি তোমাকে একটা কথা বলতে তুমি আয়ানকে কেনো বিয়ে করলে?আলিয়াঃআমার ইচ্ছে হয়েছে তাই করেছি।
আয়ান দরজায় নক করে।আলিয়া দরজা খুলতে গেলে আদি আলিয়ার হাত চেপে ধরে।
আলিয়াঃআদি আমার হাত ছাড়ো।??
আদি হাত ছেড়ে দিলে আলিয়া দরজা খুলতে আয়ান রুমে আসে।
আয়ান আলিয়ার গালে থাপ্পর বসিয়ে দেয়।
আয়ানঃএটাই ছিলো মনে বিয়ের পরও তুমি প্রেমিকের সাথে ছি আলিয়া ছি।
আলিয়াঃআয়ান তুমি ভুল ভাবছো।
আয়ানঃকি ভুল ভাবছি দরজা লক করা ছিলো আর তোমরা….সাদিয়া আপু আমাকে না বললে তোমাদের এভাবে ধরতে পারতাম না।
আলিয়া সাদিয়ার দিকে তাকাতে সাদিয়া মাথা নিচু করে।
আয়ানঃওর দিকে তাকিয়ে লাভ নেই।
দাদিঃআলিয়া তুই এত নিচে নেমে গেছিস যে দুলাভাইয়ের সাথে।
আদি মুচকি মুচকি হাসছে।
চলবে