ভোরের ছোয়া ৮ম পর্ব

0
2015

ভোরের ছোয়া
৮ম পর্ব
নিলাঞ্জনা রহমান
৭ দিন পরঃ
এই কয়েকদিনে প্রহর এর কোম্পানির সাথে শুভদের ৪বার মিটিং হয়েছে।আর প্রতিবার তিথি কোনো না কোনো ভাবে নিজেকে প্রহর থেকে লুকিয়েছে। তা অসুখ এর কথা হোক অথবা অন্যভাবে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে।
তিথি রুমে বসে বই পড়ছিলো আর মনকে শান্ত করছে।এই কয়দিন ওর মন এ কালো মেঘ জমেছে যা বই দিয়ে একটু সরানোর প্রচেষ্টা করছে।
নক নক
শুভঃ আসতে পারি??
তিথিঃ আরে শুভ তুই। আয় এতো পারমিশন নেয়ার,কি আছে?
শুভঃ এমনেই আর কি. আচ্ছা বল কি করস??
তিথিঃ তেমন কিছু না হুমায়ূন আহমেদ এর হিমু রিমান্ডে পরতাসি।তুই এ টাইম এ কিছু বলবি??
শুভঃ হুমম আসলে আমাদের নিউ ইনভেস্টর মি.জুনায়েদ তার বাসায় তার এনগেজমেন্ট এর পার্টি দিচ্ছে।
তিথিঃ এনগেজমেন্ট???? (অবাক হয়ে)
শুভঃ হুমমম ইরা আর ওনার
তিথির মাথা প্রচন্ডভাবে ঘুরছে।মনে হচ্ছে সুচ দিয়ে কেউ তার মাথার মগজে বার বার ফুটাচ্ছে।
নিজেকে সামলে নিয়ে,হুমম ভালো তুই যা তারাকে ও নিয়ে যা।
শুভঃ শুধু আমি আর তারা না তুই ও যাবি।
তিথিঃ না আমি যাব না,তোরা যা
শুভঃ আমি কোনো কথা শুনছিনা তুই ও যাবি। তিথিঃশুন আমি……..
শুভঃ আমি বলেছি তুই যাবি মানে যাবি।এটা ফাইনাল তোকে আমার কসম।বলে তিথির কথা না শুনেই শুভ চলে গেলো।
তিথিঃ না আমি যাব না কিন্তু শুভ তো কসম দ দিলো। আমি কি করব আল্লাহ আমাকে রাস্তা দেখাও।??তিথি ওয়াসরুমে গিয়ে ঝরনা ছেড়ে নিচে বসে পড়লো।তিথি ভিজছে।
তিথিঃ কেনো আবার কেনো আমি আর পারছিনা নিতে।আমি যতই দূরে থাকার চেষ্টা করছি আবার ফিরে আসছে আমি কি করব।কান্না করতে থাকলো ১
ঘন্টার পর তিথি বের হল আয়নার সামনে গিয়ে দারায়।
নিজেকে একবার দেখে আয়নাতে।
তিথিঃ আমি যাব। নিজেকে আর কত লুকাবি?
না আমি আর লুকাবো না ওর সামনে যাব আমি। ও বিয়ে করুক আমি ওর সামনে থাকবনা কিন্তু ওর পিছন থেকে দেখব প্রতারক রা কেমন হয়।আমি এনগেজমেন্ট এ যাব। অবশ্যই যাব।
পরেরদিন…..
তিথি আয়নার সামনে দাড়িয়ে রেডি হচ্ছে। আজকে ও নীল শাড়ি, কানে দুল চোখে গাঢ় কাজল,ঠোটে খয়রি লিপস্টিক, চুল খোলা।
আয়নাতে নিজেকে একবার দেখে নিচে নেমে গেলো।
শুভঃ তুই রেডি??
তিথিঃ হুমমম
শুভঃ তারা কোথায়?
তারাঃআমি এখানে।
শুভ তারাকে দেখে জাস্ট হা??
কারন তারাকে আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে।তারা সাদা রং এর গাউন, লাল লিপস্টিক, চোখে কাজল,চুল কার্ল করা। দেখতে বার্বির মতো লাগছে।
শুভ ও কম না সাদা সুট স্পাইক চুল হাতে সিলভার ঘড়ি।যাস্ট ওয়াও।
তিথি শুভর সামনে তুড়ি বাজালে ওর ধ্যান ভাঙে।
তিথিঃচল
শুভঃ হুমম?
ওরা রওনা দিল যতোই প্রহর এর বাড়ির কাছে আসছে ততই তিথির বুক কাপছে।
ওরা পৌছালো।
তিথি বাড়ি দেখে অবাক এই ১মাসে কিছু,বদলাইনি।আগের মতোই শুধু মানুষগুলা পরিবর্তন ওরা বাড়িতে ঢুকলো।তিথি শুধু দোয়া করছিলো যাতে প্রহর এর সাথে এখন দেখা না হয় এনগেজমেন্ট এর পর ও নিজেই দেখা করবে।
তিথির ইচ্ছা পূরন হলো প্রহর ছিলো না ও রেডী হতে বিজি।
তিথি গিয়ে কোণায় গিয়ে দাড়িয়ে রইলো।
কিছুক্ষন পর….
প্রহর সিড়ি দিয়ে নিচে নামছে।তার পাশে আসছে ইরা।
তিথি দূরে দারিয়ে দেখছে…….
তার প্রিয় মানুষটার হাত অন্যের হাতে।চোখ থেকে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো।
নিজেকে সামলিয়ে অন্য দিকে চলে গেলো।
প্রহরঃহ্যালো লেডিস এন্ড জেনট্যালম্যান।আজ আমার এনগেজমেন্ট ইরা নামের এই সুন্দরী নারীর সাথে৷ আপনাদের অনুমতি নিয়ে আমি ওর সাথে একটা কাপল ডান্স করতে চাই।
সবাই চিল্লিয়ে সমর্থন জানায়।
প্রহর ইরার দিকে ওর হাত বারায় ইরা হাত ধরে।গান চলতে শুরু করে…..

he tu safar mera
He tu hi meri khawaish
Tere bina gujara
Ei dil he mushkil

Eye rooh he meri
Eye jism he mera
Utna mera nehi jitna huya tera……..
এই গানে নাচছিল আর তিথি উপর থেকে এক পলকে দেখছিল।।
নাচ শেষ হলে সবাই করতালি দিলো।
প্রহরঃ ওকে গাইস অনুষ্ঠানের আগে আমার কিছু কথা আছে।তার আগে একজন স্পেশিয়াল মানুষকে ডেকে নি।
প্রহর মাইক উচু করে বললো-
তিথি,
নামটা প্রহর এর মুখে শোনার সাথে সাথে তিথি অবাক এর চূড়ান্ত সীমায়।
প্রহর আবার বললো-তিথি আমি জানি তুমি এখানে আছো। জলদি নিচে আসো।নইলে আমি তোমাকে খোজা শুরু করব যা তোমার জন্য ভালো হবে না।
তিথি কান্না মুছে নিচে নামতে শুরু করলো সিড়ির এক একটা ধাপ ওর কাছে পাহাড় এর মতো লাগছে।বুকে চিন চিন ব্যাথা হচ্ছে । জল গাল বেয়ে পড়ছে……..
তিথি প্রহর এর সামনে এলো
অনেকদিন পর মানুষটা সামনে কিন্তু অন্য কারোর হয়ে।এতো কাছে থেকে ও দূরে………………….
চলবে………………..
[ গল্প টা আপনাদের কেমন লাগছে তা জানি না তবে আশা রাখতে পারি আমি আমার যথা সম্ভব দিয়ে,আপনাদের গল্প দিচ্ছি। কমেন্ট করবেন।]
নীল গগনের নিলাঞ্জনা???

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here