মন শুধু মন ছুঁয়েছে,পর্ব_২
জান্নাতুল নাঈমা
বাইকের ওপর হেলান দিয়ে ফোনে গেমস খেলছিলো “স্নিগ্ধ”। শানের কথা কানে আসতেই দ্রুত ফোন প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে শানকে একটান দিয়ে পিছন নিয়ে নিজে পা বাড়ালো সামনে আসা দুটো মেয়ের দিকে। শার্টের হাতা গোটাতে গোটানে এগুচ্ছে স্নিগ্ধ। ভার্সিটির সকল মেয়ে যেনো তাঁকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। কারো চোখে পলক পড়ছে না আর।
ভার্সিটির প্রত্যেকটা মেয়ের একটাই দূর্বলতা আর তা হলো আভিয়ান খান স্নিগ্ধ। যাকে এক পলক দেখার জন্য যার একটু ভয়েস শোনার জন্য যার সামনে একটা বার যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য মেয়েরা কাঙাল হয়ে থাকে।
কোন দিক যেনো ত্রুটি নেই এই ছেলের কোটিপতি বাবার একমাএ ছেলে সে। নামযশ সবই আছে তাঁর।
বাবার পরিচয়ে সে পরিচিত নয় নিজের পরিচয় সে নিজেই তৈরী করেছে।অনার্স কমপ্লিট করে মাস্টার্সে পড়ছে। পড়াশোনার দিক দিয়ে যেমন নাম্বার ওয়ানে,
রাজনৈতিক ক্ষেএেও তাঁর স্থান নাম্বার ওয়ানে,
সবদিক দিয়ে টপার সে।
বাবার আদের একমাএ ছেলে,বোনের আদরের একমাএ ভাই, দুলাভাই এর একমাএ শ্যালক, ভার্সিটির প্রফেসর দের চোখের মনি, বন্ধু-বান্ধবদের কলিজার টুকরা, মেয়েদের হার্টবিট বেড়ে যাওয়ার একমাএ মন্ত্র হচ্ছে আভিয়ান খান স্নিগ্ধ।
সেই আভিয়ান খান স্নিগ্ধ কে ভুলবশত থাপ্পড় মেরে দিয়েছে ফার্স্ট ইয়ারের নিউ স্টুডেন্ট আসমা উল হুসনা আরোহী।
স্নিগ্ধ সামনে দাঁড়াতেই তুরিন ভীত চোখে চেয়ে আরোহীর হাতটা চেপে ধরলো।
আরোহী ভ্রু কুঁচকে স্নিগ্ধের দিকে তাকালো।
শান এসে একটা ভাব নিয়ে স্নিগ্ধর পিছনে দাঁড়ালো।
মেয়েরা হা করে সব দেখছে পুরো ভার্সিটির সবাই হা করে চেয়ে আছে। সবার ধারনা এবার হয়তো মেয়েটার গালে পরপর দশ বারোটা পড়বে।
তুরিনের গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।
এমন মারাত্মক লেভেলের সুদর্শন পুরুষকে দেখে এতো ভয় হচ্ছে এখন তাঁর যা বলার বাহিরে।
কোন রকমে আরোহীর হাত চেপে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,,,
“আরোহী আবারো সরি বল প্লিজ,, নয়তো আজ সম্মান নিয়ে ভার্সিটির বাইরে আর পা রাখা হবে না”
স্নিগ্ধ একধ্যানে আরোহীর মুখের দিকে চেয়ে আছে।
শান বুঝতে পারছে না স্নিগ্ধ মেয়েটা কে ঝাড়ছে না কেনো।
শান নিজে থেকেই কিছু বলতে যাবে তাঁর আগেই আরোহী বললো,,,
“হ্যালো মিস্টার বড় ভাই,,কি প্রবলেম এভাবে পথ আটকেছেন কেনো? দেখুন সেদিন যা হয়েছে তা আমি ভুলবশত করে ফেলেছি। তাঁর জন্য সরিও বলেছি তো আর কি চাই এখানে রিভেঞ্জ নেওয়ার কিছু দেখছিনা। আপনাকে আমি নাবিল ভেবেছিলাম আবারো সরি এবার পথ ছাড়ুন বলেই পাশ কাটাতে নিতেই শান সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
অগ্নি দৃষ্টি তে আরোহীর দিকে চেয়ে বললো,,,
” তোমার সাহস তো কম না জানো তুমি কার সাথে কথা বলছো”
আরোহীর মেজাজটা প্রচন্ড খারাপ হয়ে গেলো।
জোর পূর্বক হেসে বললো,,,
“আপনার সাথে নিশ্চয়ই কথা বলছিনা।
আমি ওনার সাথে কথা বলছি সো ইউ লিভ নাও”
কথাটা বলার সাথে সাথে স্নিগ্ধ শানকে একটানে সরিয়ে আরোহীর মুখোমুখি হয়ে ভূবন ভূলানো এক হাসি দিলো।
“কারেক্ট মিস.আরোহী আমাদের মাঝে ওর আসাটা একদমই উচিত হয়নি। ব্যপারটা যেহেতু আমাদের সো আমরাই মিটিয়ে নিবো এটা রাইট”
আরোহী প্রথমে ভ্রু কুঁচকালো,পরোক্ষনে মুখে হাসি টেনে নিয়ে বললো,,
“জ্বি ভাইয়া,,ছোট বোন ভুল করে ফেলেছে বড় ভাই কি তাঁর জন্য ছোট বোনের ওপর রেগে থাকতে পারে।থ্যাংকিউ সো মাচ ভাইয়া।
আমার ক্লাশ আছে আসছি ভালো থাকবেন। বলেই আরোহী পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।
স্নিগ্ধর চোখ দুটো কেমন লালচে হতে শুরু করলো।
ধবধবে ফর্সা কান টা লাল টকটক হয়ে গেলো।
শানেরও প্রচন্ড রাগ হচ্ছে রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে তাঁর এক ঝাঁক রাগ নিয়ে স্নিগ্ধর সামনে গিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো,,,
” তুই ঐ পেত্নী টা কে কিছু বললি না কেনো? যতোবড় মুখ নয় ততোবড় কথা, কি দেমাগ এতো দেমাগ কই থাকে,আর এতো দেমাগের কারনই বা কি, কি আছে ওর মাঝে দেমাগ দেখানোর এই মেয়ের দেমাগ যদি আমি না শেষ করেছি”
বলতে না বলতেই স্নিগ্ধ ঠাশ করে এক থাপ্পড় লাগিয়ে দিলো শানের গালে৷
পুরো ভার্সিটিতে থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেলো।
শানের ঠোঁট কেটে রক্ত পড়ছে। একজন পুরুষ কতোটা শক্তি খাটিয়ে থাপ্পড় লাগালে আরেকজন পুরুষের ঠোঁট কেটে রক্ত ঝড়তে পারে??
শান হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো চাপা আর্তনাদ করে ওঠলো স্নিগ্ধ,,,
স্নিগ্ধর চোখ দিয়ে যেনো রক্ত ঝড়ে পড়বে।
তাঁর চোখে মুখে তীব্র রাগ স্পষ্ট কিন্তু এই রাগের যৌক্তিক কোন কারন খুঁজে পেলো না শান।
স্নিগ্ধ তো কারন ছাড়া এমন রাগ কখনোই করে না।
এই প্রথম সে তাঁর বন্ধুর গায়ে হাত ওঠালো।
মেয়েটার রাগ আমার ওপর খাটালো স্নিগ্ধ??
মেয়েটাকে কিছু কেনো বললো না??
রাগ হলে রাগ না খাটানোর মানুষ তো স্নিগ্ধ নয়??
ভার্সিটির মেয়েরা ভয়ে ভয়ে দূর দিয়ে চলে যাচ্ছে, ছেলেরাও দূর দিয়ে সরে যাচ্ছে স্নিগ্ধর আশে পাশে এখন কারো থাকার সাহস নেই।
দশ মিনিট বাদে জারা,বাদল,তিয়াস,শ্রেয়া,শুভ, রাজিব এলো। গেট অবদি আসতেই তাঁদের কানে পৌঁছে গেছে স্নিগ্ধ শানের গায়ে হাত তুলেছে।
সকলে এসে দেখলো স্নিগ্ধ বাইকের ওপর চোখ বুজে শুয়ে আছে পাশের বাইকে শান মনটা ভাড় করে বসে আছে। সবাই ওদের কাছে গেলো জারা গিয়ে বললো,,,
“স্নিগ্ধ কি হয়েছে কি শুনছি আমি”
স্নিগ্ধ চোখ মেলে এক লাফে সোজা হয়ে বসলো।
সকলেই তাঁর দিকে চেয়ে আঁতকে ওঠলো।
তাঁর চোখ দুটো অসম্ভব পরিমানে লালচে বর্ন ধারন করেছে। জারা এক ঢোক গিলে নিয়ে বললো,,,
“দোস্ত এনি প্রবলেম “??
“বাদল বললো কি হয়েছে স্নিগ্ধ একবার বল শুধু”
তিয়াস আর শ্রেয়া বললো,,,
“শান কোন ভুল করেছে”??
স্নিগ্ধ দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,
” তোরা চুপ করবি। আমি কোন প্রকার কৈফিয়ত দিতে রাজি নই আমি শুধু কৈফিয়ত চাই”
জারা সহ সকলেই ভ্রু কুঁচকে চেয়ে একইসাথে বললো,,,
“কিসের কৈফিয়ত কার থেকে কৈফিয়ত”
স্নিগ্ধ রাগে ফুঁসে যাচ্ছে সামনে থাকা ইটের খন্ডটাকে এক শর্ট দিতেই ছিটকে দূরে পড়লো।
চুল গুলো ঠিক পিছন দিকে আঙুলের ফাঁকে দিয়ে সকলের দিকে চেয়ে হুংকার ছাড়লো,,,
“ওর সাহস কি করে হয় আমাকে ভাই বলার,ওর সাহস কি করে হয় নিজেকে আমার বোন ভাবার,
আমি ওকে দেখে নিবো দেখে নিবো আমি ওকে” বলেই চিৎকার করে ওঠলো।
সকলেই বিস্ময় চোখে চেয়ে আছে।
শ্রেয়া শানকে জিগ্যাস করলো “কিরে কে বলেছে ভাই”?
শান বিস্ময় চোখ নিয়েই শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,,
” ঐ মেয়েটা আরোহী ”
সকলেই একসাথে বলে ওঠলো” কিহ”
স্নিগ্ধ সকলকে রেখে চট করে পা বাড়ালো দোতালার উদ্দেশ্যে।
পিছন পিছন সকলে আসতে নিতেই স্নিগ্ধ থেমে আঙুলে তুড়ি বাজিয়ে বললো,,,
“আউট”
আর কারো সাহস হলো না আগানোর।
সব বন্ধুরা ক্যান্টিনে গিয়ে বসে ডিসকাস করতে লাগলো। মেইন সমস্যা টা কি,,,
“মেয়েটাকে কিছু বলবেও না আবার এতো রাগ স্নিগ্ধ চাইছে টা কি “??
শ্রেয়া বললো,,,
“এই জারা স্নিগ্ধ আবার প্রেমে টেমে পড়ে গেলো না তো মেয়েটার নয়তো ভাই বলাতে রাগবে কেনো?
মেয়েটা ভুল কি বলেছে ভার্সিটির বড় ভাইকে ভাই বলেছে এতে দোষের কি আছে অদ্ভুত ”
সকলেই একসাথে বলে ওঠলো,,,
“আর ইউ মেড শ্রেয়া”
জারা বললো,,,
“স্নিগ্ধ প্রেমে পড়বে ঐ মেয়েটা হাহাহা হাসালি,কি দেখে প্রেমে পড়বে একটা কারন বল কি আছে ওর মধ্যে ঐ তেজটা ছাড়া, কোথায় স্নিগ্ধ কোথায় ঐ হাটুর বয়সি আরোহী ”
জারার কথায় সকলেই হোহো করে হেসে ওঠলো।
শ্রেয়া এমন বোকা বোকা কথা বলে নিজেই লজ্জিত হয়ে চুপসে গেলো।
.
ক্লাস শেষে লাইব্রেরি তে বসে পড়ছে আরোহী।
তুরিন বললো,,,
“দোস্ত তুই পড় আমি একটু ঘুমিয়ে নেই।
আমি নিজে থেকে না ওঠলে ডাকবিনা প্লিজ ”
আরোহী সম্মতি দিয়ে পড়তে লাগলো।
যাদের ক্লাস আছে তাঁরা ক্লাসে চলে গেলো।
একে একে সবাই বেরিয়ে গেলো।
পুরো লাইব্রেরি তে তুরিন আর আরোহী একা।
পড়তে পড়তে ভীষণ বোরিং লাগছে আরোহীর।
তুরিনকেও ডাকতে পারছে না একা একা বাইরে যেতেও ইচ্ছে করছে না আবার তুরিনকে রেখেও যেতে ইচ্ছে করছে না।
তাই সেও ব্যাগের ওপর মাথাটা সবে রেখেছে ঠিক তখনি একটা মেয়ে বলে ওঠলো,,,
“এক্সকিউজ মি আপু তোমার নাম কি আরোহী”??
আরোহী মাথা তুলে পিছন ঘুরতেই মেয়েটার মুখটা ভজকে গেলো পুরাই।
” স্নিগ্ধ ভাইয়া এইরকম দেখতে একটা মেয়েকে এতো গোপনীয় ভাবে ডেকে পাঠিয়েছে কিন্তু কেনো”
মনে মনে ভেবে মৃদু হেসে বললো ২০৪নম্বর রুমে তোমায় একজন ডাকছে খুব বিপদে পড়েছে ওনি।
এখুনি যেতে হবে তোমায় প্লিজ।
আরোহী ভ্রু কুঁচকে চেয়ে কিছু বলতে যাবে তাঁর আগেই মেয়েটা বললো,,
“আমি আসি আমার খুব জরুরি কাজ আছে তুমি যাও হুম”
মেয়েটা কিছুতেই হজম করতে পারছে না স্নিগ্ধ এই মেয়েটার জন্য তাঁকে এমন করে বললো,,সে তো ভেবেছিলো নিশ্চয়ই কোন হুরপরীর মতো দেখতে মেয়ে হবে। কিন্তু এ তো একদমই বিপরীত।
নানারকম চিন্তা করতে করতে ভার্সিটি ত্যাগ করলো সে। স্নিগ্ধর কড়া আদেশ এ বিষয়ে একটা পিঁপড়াও যেনো না জানতে পারে।
স্নিগ্ধ তাঁকে নিজের সাহায্যের জন্য ডেকেছিলো এই তাঁর কাছে স্বপ্নের মতো। এই ভালোলাগা নিয়েই সে তৃপ্তির হাসি হাসলো।
.
আরোহী বুঝতে পারছে না তাকে কে ডাকবে।
কে বিপদে পড়েছে আর বিপদে পড়ে তাঁকেই কেনো ডাকছে। এই ভার্সিটিতে তাঁর তো তেমন পরিচিত কেউ নেই।
প্রথমে মন শায় দিলো না কিন্তু মনের দিক থেকে সে খুবই নরম এবং ভালো মনের একটা মেয়ে।
অতি সাধারণ ঘরের মেয়ে সে তাঁর দ্বারা কারো উপকার হলে সে মন থেকে ভীষণ খুশি হয়।
যেহেতু কেউ তাঁকে বিপদে পড়ে ডেকেছে সেহেতু অবিয়েসলি তাঁর যাওয়া উচিত।
আর এক মিনিটও অপেক্ষা করলো না আরো দ্রুত পায়ে এগিয়ে চললো ২০৪নম্বর ক্লাসের দিকে।
হঠাৎ সামনে এক ছেলে এসে পড়লো।
“আসসালামু আলাইকুম ভাবী”
আরোহী চমকে গেলো ভ্রু কুঁচকে সামনের ছেলেটার দিকে তাকালো।
হ্যাংলা পাতলা ফর্সা এক ছেলে দেখে বেশ বুঝলো ছেলেটা তাঁর থেকে বয়সে বড়ই হবে।
তাই বললো,,,
“সরি ভাইয়া আপনার ভুল হচ্ছে আমি আনম্যারিড সো দেবর থাকার প্রশ্নই ওঠেনা”
ছেলেটা আহাম্মকের মতো হাসতে লাগলো মাথা চুলকে বললো ভাবী আনম্যারডি তো কি হয়েছে আপনি চাইলে আজি ম্যারিড হয়ে যাবেন।
চলুন ভাবী,,,
আরোহী রেগে গেলো মনে মনে ছেলেটাকে আচ্ছা করে বেশ ধূলাই দিয়ে এগুতে লাগলো।
ছেলেটাও পিছন পিছন যেতে যেতে বললো,,,
“ভাবী এই রুম এই রুমেই ভাই আছে”
আরোহী থেমে গেলো রুমের দিকে এক নজর চেয়ে আবার ছেলেটার দিকে তাকালো বিস্ময় ভরা চোখ মুখে।
ছেলেটা বললো,,,
“আসি ভাবী আসসালামু আলাইকুম”
আরোহীর মেজাজ গরম হয়ে গেলো।
বলা নেই কওয়া নেই একজন এসে সমানে ভাবী বলে যাচ্ছে আবার পূন্যও করছে সালাম দিয়ে অদ্ভুত তো,,,
“এ ভাই শুনুন,,,উহম,,,
মুখ চেপে ধরে টেনে রুমের ভিতরে নিয়ে দরজা আটকে দিয়ে আরোহীকে একদম দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো স্নিগ্ধ।
একহাতে মুখটা এখনো চেপে ধরে আছে।
আরোহী সমানে হাত ছুঁড়াছুঁড়ি করছে পুরো রুমে কোথাও আলোর ছিটেফোঁটাও নেই অন্ধকারে সামনের মানুষ টাকে দেখতে পারছে না শুধু বুঝতে পারছে কোন খারাপ পুরুষের কবলে পড়েছে সে।
মুখ থেকে হাত সরাতেই আরোহী চিৎকার শুরু করলো। চার দেয়ালের ভিতরে করা চিৎকার বাইরে পৌঁছেছে কিনা বোঝা গেলো না।
স্নিগ্ধ আরোহীর ছটফট দেখে এক হাত মুড়িয়ে পিছন নিয়ে কোমড় চেপে কাছে টানে নিলো।
আরেক হাতে আরোহীর ঘাড়ে শক্ত করে চেপে কপালে কপাল ঠেকিয়ে ফিসফিস করে বললো,,,
“মাই ব্ল্যাক কুইন”
নিজের সর্বস্ব শক্তি দিয়ে আরোহী স্নিগ্ধ কে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে আর স্নিগ্ধ নিজের স্বল্প শক্তি ব্যায় করে নিজের অনেকটা কাছে চেপে নিয়েছে আরোহীকে। এই স্বল্প শক্তিতেই সে তাঁর মায়াবতী কে শাস্তি দিবে।
আরোহী সমানে চিৎকার করে যাচ্ছে,,,
“কে আপনি, আমার সাথে কেনো অসভ্যতামো করছেন কি ক্ষতি করেছি আমি আপনার।
প্লিজ ছাড়ুন আমায় প্লিজ।
স্নিগ্ধ তাঁর মায়াবতীর মুখটা হাতে চেপে ধরলো।
এভাবে আকুতি-মিনতি সে সহ্য করতে পারলো না।
ফিসফিস করে বলে ওঠলো,,,
” বউ ভুল করেছে অল্প শাস্তি দেওয়ার জন্য ডেকে এনেছি,, এমন ছটফট করার কোন মানে হয় না।
আমি পারতাম সকলের সামনে শাস্তি দিতে কিন্তু
ঐ যে আই এম এ ডিফারেন্ট পার্সন।
আমার সব কিছুই সবার থেকে আলাদা বউকে সকলের সামনে শাসন করা মানে বউকে ছোট করা।
এমনিতেই বউ আমার অনেক ছোট সকলের সামনে শাসন করে আর ছোট করতে চাই না।
তাই চুপি চুপি শাসন করতে এলাম।
কোন মুখ দিয়ে আমায় ভাই ডেকেছো “বলেই হাত আলগা করলো স্নিগ্ধ।
আরোহী চমকে গেলো তাঁর ছটফটানি কমে দ্বিগুণ ভয় করতে লাগলো।
” তাঁর মানে এটা স্নিগ্ধ আভিয়ান খান স্নিগ্ধ,, হায় আল্লাহ এতো খারাপ মানুষ হয়,, একটা মেয়ের সাথে এভাবে অসভ্যতামো করতে বিবেকে বাঁধছে না ছিঃ।
এখন কি করবো আমি কি করে বাঁচাবো নিজেকে।
ঐ মেয়েটার কথা বিলিভ করে কাউকে বিপদ থেকে বাঁচাতে এসে নিজেইতো বিপদের সম্মুখীন হলাম।
আল্লাহ রক্ষা করো আমায়।
নিজেকে শক্ত করে নিয়ে আরোহী জোর গলায় বললো,,,
“প্লিজ ভাইয়া ছাড়ুন আমায়, আমার কোন ক্ষতি করবেন না প্লিজ।
চলবে……