মন_কেমনের_বৃষ্টি #পর্ব_২(সিজন ২)

0
1013

#মন_কেমনের_বৃষ্টি
#পর্ব_২(সিজন ২)
#পুষ্পিতা_প্রিমা

খান বাড়িতে ভরপুর পরীর বন্ধু-বান্ধবে। তার আলব্যাম বের হয়েছে সেই খুশিতে এত বড় আয়োজন। বন্ধুবান্ধবদের সাথে খাওয়া দাওয়া মজা মাস্তিতে ব্যস্ত পরী খেয়াল ও করল না ড্রয়িংরুমের এককোণায় গুটিসুটি মেরে সোফায় বসে থাকা মেয়েটিকে। পিহু দুচোখ ভরে দেখছে বোনের হাসি। কিন্তু বোন দেখল না একটিবার ও। খেয়েছে কিনা সেটা ও একটিবার জিজ্ঞেস করেনি। চোখ তুলে একটিবার তাকায়নি। নীরা এসেই পিহুকে নিয়ে যাওয়ার আগে তার উপর আকস্মিক আক্রমণ এলো। নীরা চেঁচিয়ে ডাকল,

‘ মাহিদ তুই কি পাগল হয়ে গেছিস??

মাহিদ হাত ধরে টানতে টানতে পিহুকে বাইরে নিয়ে আসে। মাথায় জোরে চাটি মেরে বলে, বলদের মতো ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন বলদের বলদ ? লজ্জা শরম নেই। ওখানে সবাই খাচ্ছে, হাসছে আর তুই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব দেখছিস? নির্লজ্জ।
পিহু পুরোটা সময় চুপ থাকার পর বলল,

‘ কথায় কথায় গায়ে হাত তুলো কেন? আমি কি তোমার বিয়ে করা বউ?

মাহিদ মাথায় চাটি দিয়ে দূরে ঠেলে দিল আবার ও। বলল, তোর ডাক্তার বাপ তো আসেনাই আজ। তোর কপালে আজ দুঃখ আছে। সারাক্ষণ মারব। তারপর বাড়িতে গিয়ে তোর জল্লাদ দাদিকে,আর ডাক্তার বাপকে নালিশ দিস। বলতে বলতে আবার হাত দিয়ে মাথায় মারল পিহুর। পিহু জোরে চেঁচিয়ে ডাকল,

‘ ছোট মামা। দেখ মাহিদ ভাই আমাকে আবার মারছে। মামা…

মাহিদ পিহুর মাথায় এবার আর ও জোরে চড় বসাল। পিহু পড়ে গেল। পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেল। সে উঠল না। ঠোঁট টেনে টেনে গালি দিল মাহিদকে,

‘ কুত্তা। হনুমান। তোমার জীবনে ও বউ জুটবে না। ভাল্লুক।

পিহুর কান্নার আওয়াজ শুনে পরীর বান্ধবী শান্তা আর রুনা দৌড়ে এল। তাদের পেছনে পরী। শান্তা এসেই তুলল পিহুকে। মাহিদ দাঁড়িয়ে কোমরে হাত দিয়ে অট্রহাসি হাসছে। পরী এসেই মাহিদের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,

‘ কি সমস্যা?

মাহিদ মুখ বাঁকা করে বলল, এই ছিঁচকাঁদুনে ভ্যা ভ্যা কান্না ছাড়া কিছুই পারে না। দেখোনা একটুখানি ধরেছি কি ধরিনি কেঁদেকেটে বন্যা বানিয়ে ফেলছে।
পরী চুপ। মাহিদ পিহুকে বলল তোর ডাক্তার বাপকে যদি দেখাইতে পারতাম তোরে আমি এভাবে মারছি তাহলে কত যে খুশি লাগত রে আরি।
পিহু উঠতে উঠতে বলে,

‘ আমার নাম আরিশা। আরি মানে কি। ডাকতে না জানলে শুধু পিহু ডাকবে। এসব উল্টাপাল্টা নামে ডাকবে না।

পরী বিরক্ত হলো। বলল,

‘ কোনো ঝগড়া হবে না। মাহিদ তোর কি সমস্যা? কথায় কথায় হাত নাড়িস কেন?

মাহিদ চুপসে গেল। আমতাআমতা করে বলল,

‘ আরেহ ও ওখানে দাঁড়িয়ে আছে একা একা। আমি নিয়ে আসলাম। আমার উপর রেগে গেল। তাই দুটো দিলাম।

পরী তাকাল পিহুর দিকে। পিহু এখনো কাঁদছে মাথায় হাত দিয়ে দিয়ে। বলছে, ছোট মামাকে আমি বলে দেব তুমি রোজ আমায় মারো। স্কুলে যাওয়ার পথে ও মারো। যেখানে দেখো সেখানে মারো। আমি বলে দেব।

পরী বিরক্তির শিষ দিয়ে বলল,

‘ আরিশা তোমার মা বাবা কোথায়? তুমি একা কেন?

পিহু সরাসরি চোখ তুলে তাকাল পরীর দিকে। চোখে চোখ পড়ায় আবার চোখ নিচে নামিয়ে আনল। ঠোঁট টেনে আবার ও কেঁদে দিল। কিভাবে তোমার মা বাবা বলছে দিদিয়া? মা বাবা তো তার ও হয়?

পরী উত্তরের বদলে পিহুর কান্না দেখে আর ও বেশি রেগে গেল। বলল,

‘ কান্নার কি বললাম আরিশা? যেটা বলছি সেটার উত্তর দাও। ওনারা কোথায়?

পিহু নিচের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিল।

‘ তুমি বারন করেছ তাই আসেনি দিদিয়া। আসতে চেয়েছিল।

পরী মাথায় রক্ত চড়ে বসল যেন। তার কথা রাখতে শুরু করেছে কখন থেকে মিসেস এন্ড মিস্টার চৌধুরী?
পরী চিৎকার করে ডাকল রিককে। কিছুক্ষণ পর রিক নেমে এল। মাহিদ লুকিয়ে পড়ল তাড়াতাড়ি। রিককে দেখার সাথে সাথে পিহু আর ও জোরে কেঁদে দিল। রিক এসে তাকে জড়িয়ে ধরল। বলল, মাহিদ আবার মেরেছে? আল্লাহ এই ছেলেটা কবে শোধরাবে?

পরী বিরক্তি হয়ে নাকমুখ কুঁচকে বলল,

‘ পাপা ছাড়ো। ওকে খাইয়ে দাইয়ে ওর বাড়িতে পাঠিয়ে দাও।

রিক অবাক হলো পরীর ব্যবহারে। ও থাকুক না কয়েকদিন। চলে যাবে।
পিহু নিজেই না করে উঠল। আমি বাসায় যাব এখানে থাকলে মাহিদ ভাই সারাক্ষণ আমায় মারে। দিদিয়া ও বকে।

পরী চলে গেল ভেতরে। শান্তা জিজ্ঞেস করল,

‘ ও তোর বোন না পরী?

পরী হুট করে পিছু ফিরে তাকাল শান্তার দিকে। চাপা স্বরে বলল,

‘ না। আমার শুধু একটা ভাই আছে মাহিদ। কোনো বোন টোন নেই।

শান্তা চুপটি মেরে গেল। সব জেনে ও প্রশ্নটা করেছিল পরীকে। এমন উত্তর পাবে আশা করেনি।

খাওয়া-দাওয়া, গান,পুরোটা ফাংশন শেষ হলো খুব ধুমধামে। পরী খুব খুশি। পিহু চলে যাওয়ার আগে তার টেডিবিয়ারটি দিল পরীকে। বলল,

‘ এটা আমার খুব প্রিয় টেডিবিয়ার। ওর নাম প্রিয়া। তোমার আলব্যাম বের হয়েছে তাই এটা তোমাকে দিলাম। তুমি রাখবে না দিদিয়া?

পরী কিছুক্ষণ চুপ হয়ে তাকিয়ে থাকল পিহুর দিকে। নিল টেডিবিয়ারটি। আবার পিহুর দিকে ছুড়ে মেরে বলল,

‘ কারো প্রিয় জিনিস কেন আমি নেব? আমার সেই অভ্যাস নেই। আমার অনেক টেডিবিয়ার আছে। পারলে তুমি নিয়ে যেও কয়েকটা। আর তোমার মা বাবাকে বলিও যে আমি দিয়েছি। পরী দিতে জানে,কেড়ে নিতে নয়। আমি তোমার মতো না আরিশা।

পিহুর মুখ মলিন হয়ে এলো। হাসিহাসি মুখটা অন্ধকারে ছেয়ে গেল। সে কি কেড়ে নিয়েছে? মা বাবার আদর কি কেড়ে নেওয়ার জিনিস? দিদিয়া বোঝেনা কেন?

পিহু মুখ কালো করে পরীর যাওয়া দেখল। পিহু চলে গেল চৌধুরী বাড়িতে । রিক তাকে নিয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পরে নীরা আর মুনা স্পষ্ট শুনতে পেল পরীর রুমে জিনিস ভাংচুরের আওয়াজ। বৃদ্ধা তালহা বেগম মাথা চাপড়ে বললেন, মেয়েটা বরবাদ হয়ে গেছে। এত রাগ রাখে কোথায় রাখে এই মেয়ে? মেয়ে মানুষের এত রাগ ভালো না।

নীরা আর মুনা ছুটে গিয়ে ও কোনো লাভ হয়না। দরজা ঠেলে ভেতরে ডুকে তাদের চক্ষুচড়ক। আজকের পাওয়া সব উপহার সামগ্রী ভেঙে তছনছ করেছে পরী। নীরা আর মুনা এগোতে পারল না। তার ভাংচুর কেউ আটকাতে পারল না। পুরো মুখ ঘেমে একাকার পরীর । রাগে গজগজ করছে। কার উপর এত রাগ?

সব ভাংচুরের পরে চোখ গেল ওয়ারড্রবের উপর রাখা কালো কুচকুচে গিটারটির উপর। সব রাগ গিয়ে পড়ল এবার গিটারটির উপর। সেটি হাতে নিয়ে তুলে আছাড় দেওয়ার আগে শক্তপোক্ত পুরুষালী হাত এসেই আটকাল। আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরল পরীকে। ডাকল, পরী মা এত রাগ কেন? মা বাবার দেওয়া গিটার কেউ ভাঙতে যায়?

পরী এবার ক্লান্ত হয়ে পড়ল। ঢলে পড়ল রিপের বুকে। কাঁদল না। তার সহজেই কান্না
না পায়না। পড়ে থাকল রিপের কাঁধে। বলল,

‘ ওরা আমার কেউ নয় ছোট পাপা। ওরা শুধু পিহুর মা বাবা। অন্যের মা বাবার জিনিস আমি কেন আমার কাছে রাখব? ভেঙে ফেলব? তছনছ করে ফেলব।

রিপ হেসে দিল আওয়াজ করে। বলল,

‘ হিংসে হচ্ছে? মা কি দিনদিন হিংসুটে হয়ে যাচ্ছে? পরী তো ভালো মেয়ে, আমি এটাই জেনে এসেছি। দেখে এসেছি। পরী মাকে সবাই ভালোবাসে এ কারণেই।

পরী মাথা দিয়ে মারল রিপের কাঁধে। রিপ আর ও জোরে হেসে উঠল। বলল, আমি কি করলাম আবার।
পরী বলল,
‘ আমি ভালো না। খুব খারাপ। ভালো হলে কেউ আমাকে দূরে ঠেলে দিত না। আমি কারো কাছে বোঝা হতাম না। কারো হাতের বানানো পায়েস ফেলে দিতাম না। কারো চোখের জলের কারণ হতাম না।

রিপ চুপটি মেরে গেল।

‘ আজ আবার ও খারাপ ব্যবহার করেছ? আজকের দিনে ও? ওরা কতটা কষ্ট পেয়েছে ভাবতে পারছ?

পরী রিপের কাঁধে মুখ মুছে নিল। বলল,
‘ না ভাবতে পারছিনা। আসে কেন আমার সামনে। এত দরদ কিসের আমার প্রতি। আমি তাদের কেউ হয়না। অন্যের মেয়ের প্রতি এত দরদ দেখানোর কি আছে? দিয়ে যখন ফেলেছে আবার মা ডাক শুনতে চায় কেন? বাবা ডাক শুনতে চায় কেন? তাদের তো একটা মেয়ে আছে। আমাকে কি দরকার? আমার সামনে না আসলে তো আমি খারাপ ব্যবহার করছিনা। আমার সামনে আসতে বারন করে দেবে। আমাকে মা ডাকতে বারন করে দেবে। আমি তাদের মা নই। আমি তাদের কেউ না।

পিহু এসেছে পর্যন্ত কয়বার ফোন দিয়েছে। যেন তাদের মেয়েকে কে খেয়ে ফেলছে। আর আমি? আমি তো তাদের কেউ না। আমি যে বছরের পর বছর এখানে থাকি। দিনে তো দূরে থাক, সপ্তাহে ও ফোন করে আমার খোঁজ নেই ওরা?
নেবে কেন? আমি তো কেউ নই। কিন্তু হঠাৎ দেখা হলে, কোনো ফাংশন হলে আমার প্রতি এত দরদ উতলে উঠে কেন তাদের? তখন আমায় মনে পড়ে কেন? সেই একটা দিনের জন্যই কি আমি তাদের মেয়ে হয়ে যাই? বাকি দিনগুলোতে কি পরের মেয়ে? আমার সাথে কেন অন্যায় হয়? পিহুর সাথে তো হয়না। পিহুকে তারা চোখে হারায়। আমাকে কেন নয়? আমি কেন তাদের কেউ নয়? কষ্ট কি শুধু তাদের হয়? আমার হয়না। মা ডাক কি শুধু তাদের শুনতে ইচ্ছে হয়? আমার ইচ্ছে হয়না মা ডাকতে, বাবা ডাকতে। আমার ও ইচ্ছা হয়। আমার ও সারাক্ষণ আমমা আববা জপতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমি তাদের কাছে পাইনা। পিহুকে বলতে হয় না মা আমি ব্যাথা পেয়েছি। তারা বুঝে যায়। কিন্তু আমার বেলায়। আমার বেলায় আমাকে চোখের পানি দিয়ে বুঝাতে হয় যে, আমার ও কষ্ট হয়। আমার ও ব্যাথা লাগে। আমার আমমা আর আববার বুকে ঘুমাতে ইচ্ছে হয় পিহুর মতো। তাদের হাতে খেতে ইচ্ছে হয়। আমমার হাতের পায়েস আজ আমি ফেলে দিয়েছি। তখন কষ্ট আমার ও হয়েছে। আমাকে নিজ হাতে খাইয়ে না দিয়ে বলেছে, ব্রেক ফেলে খেয়ে নিও। পিহু হলে কি এমনটা বলত?
ঘাম মুছে দিয়ে আদর করে চামচে তুলে খাইয়ে দিত। আর আমাকে? আমাকে কেন খাইয়ে দেবে? আমি তো পরের মেয়ে।
পিহু রাগ করলে জোর করে গিয়ে জড়িয়ে ধরে আদর করে। তার রাগ ভাঙায়। জোর করে খাইয়ে দেই। আর আমার বেলায়। সামান্য একটু কথা শুনিয়েছি বলে, আসেইনি।
এখানে আসেইনি। শুধু পিহুকে পাঠিয়েছে। আমার কষ্ট হচ্ছে ছোট পাপা। তাদের নীরব আর্তনাদ আমি শুনতে পাই কিন্তু তারা কেন পাইনা। তারা কেন আমার অন্যরূপটা দেখতে পাইনা তোমাদের মতো। তারা তো আমার মা বাবা। তারা কেন আমার রাগ ভাঙাতে আসেনা। কেন আমাকে আদর করতে আসেনা। আমি কেন পিহু নয়। কেন আমি পিহুর মতো আদর ভালোবাসা পাইনা?
ডাক্তার আদি চৌধুরী তার মেয়েকে সারাক্ষণ কেয়ার করে। একটা হাঁচি দিলে ও জান যায় যায় অবস্থা। কিন্তু আমি?
উনি কি বলতে পারবেন কোনদিন আমায় জিজ্ঞেস করেছে, কেমন আছ পরী?
তারা জিজ্ঞেস করেনা পাপা। কারণ আমার থাকা না থাকায় তাদের কিচ্ছু যায় আসেনা। আমি পরের মেয়ে। আমার ভালো থাকাই কি না থাকাই কি? আমি মরে গেলেই বা কি? তারা কেন আমায় ভালোবাসেনা পাপা? কেন ভালোবাসা দেখানোর চেষ্টা করে বেড়ায়? তাদের চোখে আমি আমার জন্য ভালোবাসাটা দেখতে পাইনা। আমার তখন রাগ হয়। কষ্ট হয়। তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে আমার কষ্ট হয়। আমি করতে চাইনা অমন ব্যবহার। কিন্তু বারবার উল্টোটা হয়ে যায়। আমি ভেবে রেখেছিলাম আমমার হাতে পায়েস খেয়ে আমি আমার এই দিনটা শুরু করব। কিন্তু তারা সকাল সকাল এখানে আসেনি। এসেছে তা ও অডিশনে। তা ও আবার দেরীতে। এসে খাইয়ে দেইনি পায়েস। খেয়ে নিতে বলেছে। আমার তখন খুব কাঁদতে ইচ্ছে হয়েছিল। কিন্তু আমার কান্না পাইনা। রাগ হয়। কান্নাগুলো রাগ হয়ে ঝড়ে। তারা সেটা ও দেখেনা। রাগের আড়ালে কান্নাগুলো তারা দেখেনা। আববা চেহারা খারাপ করে দূরে দাঁড়িয়েছিল। আমার কাছে জড়িয়ে ধরে আদর করে দিয়ে জিজ্ঞেস করেনি, কেন আমি এমন করছি? জানতে চাইনি আমার রাগের কারণ। তারা উল্টো রাগ করে চলে গিয়েছে। কারণ আমি তো তাদের কেউ নয়। তাদের এখন আমাকে মোটে ও দরকার নেই। এখন আর ও একজন চলে এসেছে। রেহান চৌধুরী। এখন আমার গান ও শুনবে না তারা। শুনবে রেহান চৌধুরীর। কারণ আমি রেহান চৌধুরীর মতো ভালো গান গাইনা। রেহান চৌধুরীকে দুহাত ভরে আশীর্বাদ দেয়। আর আমার দেওয়া কষ্টগুলো মনে রেখে দেয়। হয়ত অভিশাপ ও দেয়।

রিপ পুরোটা সময় চুপ থেকে শোনে পরীর অভিযোগ। বলে,

‘ মা বাবা কখনো সন্তানকে অভিশাপ দেয় না মা। তোমার বুঝতে ভুল হচ্ছে। আদি ইশা তোমাকে খুব ভালোবাসে। তুমি ও তাদের ভালোবাস।

পরী দুপাশে মাথা নেড়ে বলে, না ওরা আমাকে ভালোবাসেনা। তুমি মিথ্যে বলছ।

___________

টেবিলে সাজানো বাঙালি খাবার দেখে রেহান যেন খুশিতে আটকানা। কাউকে কিছু ছুঁতে না দিয়ে ইশাকে বলল,

‘ কাকিয়া আমি সব গুলো খাব। পাপাকে আর মাম্মাকে ও দেব না।

রাইনা ছেলের পেছনে গিয়ে দাঁড়ালো। ইলিশ মাছের বাটি নিয়ে ফেলল। বলল,

‘ না তুমি ইলিশ খাবেনা। বেশি কাটা। অন্যগুলো খাও।

রেহানের মন খারাপ হলো। আফি এসে বাটিটা রাইনার হাত থেকে কেড়ে নিল। বলল,

‘ এসব খেতে ও ট্যালেন্ট লাগে। তোমার বলদ ছেলে এসব খেতে পারবে না। তাই খেতে ও বলোনা।

রেহানের দ্বিগুণ মন খারাপ হলো। সে মুখ কালো করে তাকাল ইশার দিকে। ইশা খিক করে হেসে দিল। বলল,

‘ তুমি খেতে পারবে না। তাই মন খারাপ করার দরকার নেই। অন্যগুলো খাও। তোমার মাম্মা খেতে দেবে না তুমি চাইলে ও।

রেহান চুপচাপ খেল। পিহু দৌড়ে এল। পেছন পেছন আদি। পিহু রেহানের পাশের চেয়ার টেনে নিয়ে বলল, হেই হ্যান্ডসাম, আমাকে রেখে খেয়ে ফেলছ কেন?
রেহান বিনিময়ে হাসল। একটা প্লেট বাড়িয়ে দিল পিহুর দিকে। আদি এসে মেয়ের পাশে বসে বলল,
‘ হ্যান্ডসাম আবার কি? ভাই না?
পিহু প্লেটে ভাত নিতে নিতে বলল,
‘ এত হ্যান্ডসাম একটা ছেলেকে ভাই টাই ডাকতে ইচ্ছে করেনা ডাক্তার সাহেব। বউ আনলে তখন দেখা যাবে।
পিহুর কথায় সবাই হেসে উঠল। রাইনা তার গাল টেনে দিয়ে বলল, পাকনা বুড়ি একটা।

পিহু ভাতের প্লেট এগিয়ে দিল ইশার দিকে। বলল, মাম্মা খাইয়ে দাও।
ইশা কপাল কুঞ্চন করল। বলল, বদঅভ্যাস ছাড়ো পিহু। নিজ হাতে খাওয়া শেখো।

আদি বলল, ও কি খেতে জানেনা? শিখতে হবে কেন? খাইয়ে দিতে বলছে খাইয়ে দাও নয়ত আমি দেই।

ইশা বিরক্ত হয়ে তাকালো আদির দিকে। বলল,
‘ সব নষ্টের মূল আপনি।
শেষমেশ খাইয়ে দিতে হলো।
পিহু ইশার হাতে খেতে খেতে বলল,
‘ তুমি জানো মাম্মা। দিদিয়ার সব ফ্রেন্ড খেল একসাথে কিন্তু দিদিয়াকে খেতে দেখলাম না। আমি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম কিন্তু দিদিয়া খেল না।
ইশার হাত আর চলল না। সে প্লেট রেখে উপরে চলে গেল। হাতটা ও ধুয়ে নিল না। সবাই তার যাওয়া দেখল। রেহান জিজ্ঞেস করল,
‘ তোমার দিদিয়া এখানে আসেনা?
পিহু মাথা নাড়ল। বলল, দিদিয়া এ বাড়িতে আসেনা সেই ক্লাস সিক্স থেকে। অনেক বছর। যেই বছর দাদাভাই মারা গিয়েছে সেই বছর থেকে। মাম্মা আর পাপপার উপর রাগ করে আসেনা। দাদুর উপর ও রাগ। মোটকথা এ বাড়ির সবার উপর।
রেহান বলল,
‘ আমার উপর ও?
পিহু বলল,
‘ না। ও তো তোমাকে চেনেই না।
রেহান খাওয়া থামিয়ে দিল। বলল,
‘ আমাকে চেনে না?
পিহু বলল, না। কিভাবে চিনবে। ও তো তোমাকে অনেক ছোট বেলায় দেখেছিল মনে হয়।
আদি ভ্রু উঁচিয়ে রেহানকে জিজ্ঞেস করল, কি হয়েছে,খাওয়া থামালে কেন? খেয়ে পরে চিন্তা করিও। এখন খেয়ে নাও।
রেহান মাথা দুলাল।
‘ ইয়াহ, সিউর।

_________________

ফোন আসায় রিপ পকেট থেকে ফোন বের করে দেখার সাথে সাথে তার ভ্রু কুঞ্চন হলো। এই সময়ে ইশুর ফোন? রিপ তাড়াতাড়ি ফোন তুলল। বলল,

‘ কি হয়েছে ইশু? তুই ভালো আছিস? সবাই ভালো আছে।

ইশা বলল, হ্যা,হ্যা সবাই ভালো আছে।

‘ কিন্তু তোর গলার স্বর অমন শোনাচ্ছে কেন? কোনো সমস্যা?

ইশা নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে বলল, পরী কোথায় রিপদা? খেয়েছে?

রিপ এদিকওদিক তাকাতেই চোখে পড়ল টেবিলে বসা রিক আর পরীর দিকে। সে হেসে বলল, খাচ্ছে। আর বড়দার মাথা খাচ্ছে। এটা খাবে না, ওটা খাবে না। তুই কি এটা জানার জন্য ফোন করেছিস ইশু?

ইশা বলল, হু। আচ্ছা রাখি।

রিপ ফোন রাখতে গেল। ইশার মনে হলো সে ভুলে গিয়েছে একটি প্রশ্ন করতে। তাই বলে উঠল,
‘ তুমি ভালো আছ রিপদা? আজকে অডিশনে আসোনি যে?
রিপ কিছুক্ষণ চুপ থাকল। তার খানিকক্ষণ পর বলল,

‘আমাকে ভালো থাকতে হয় রোজ। তোদেরকে সবাইকে ভালো রাখার জন্য। আমি ভালো আছি।

আজ একটু কাজের চাপ বেশি ছিল তাই যেতে পারিনি। কিন্তু তা ও আবার পরীকে বলে রেখেছি । তোর যা মেয়ে। রেগে না আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়। পায়েসটা খেতে না বলে,,, খাইয়ে দিলেই পারতি। মেয়ের হাসিমুখটা কি দেখতে ইচ্ছে হয়না তোদের? আর একটু সকাল সকাল এখানে চলে আসলে কি হতো? সকালে আসিসনি, বিকাল বেলা আসার কথা ছিল। তা ও তো আসিসনি। তোদের কারণেই তো মেয়েটা এমন হয়ে যাচ্ছে। আমমা আববাকে কষ্ট দিয়ে সে ও তো কষ্টে আছে। কাঁদছে। কিন্তু আমমা আববা তো সেই কান্না দেখতে পাইনা।

ইশার দুচোখ জলে টলমল করে উঠল। বলল,
‘ ওকে একবার এখানে আসতে বলো না রিপদা। ও আমার সাথে একদিন থাকবে, ঘুমোবে,খাবে আমার হাতে। আমি ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোবো। একদিন আসতে বলো না?
রিপ বিরক্ত হয়ে বলল, তুই কথা বলা কোনদিন শিখবি? পরী শুনলে কি বলতো?

ইশা জিজ্ঞেস করল, কি বলতো?

রিপ বলল,

‘ পরী বলত একদিন কেন বলে? একেবারে চলে আসতে কেন বলেনা? আমি কি তাদের মেয়ে নই?

ইশা মন খারাপ করে ফেলল। বলল, ও এমনটা কেন ভাববে রিপদা? ও কি ওর পাপা আর মাম্মাকে রেখে আমার কাছে আসবে? পাপা আর মামমার হাতের ছোঁয়া মাথায় না পেলে তো ওর ঘুম আসেনা। আমরা তো ওর কেউ না।
রিপ এবার বেশ বিরক্ত হলো। এদের এসব মান অভিমান কবে শেষ হবে কে জানে?

রিপ বলল, ফোন রাখ। খেয়ে ঘুমিয়ে পড়।

ইশা ফোন রেখে দিল। পেছনে আদিকে দেখল। ঝটপট চোখের জল মুছে নিল। বলল, খাওয়া শেষ??
আদি জিজ্ঞেস করল, তুমি কাঁদছ?
‘ না। কাঁদব কেন?
‘ আমি কি ভুল দেখলাম?
ইশা আদির দিকে সরাসরি তাকাল। বলল,
‘ আমাদের উল্টো রাগ দেখানো ঠিক হয়নি। ও বাচ্চা মেয়ে।
আদি তাকালো দেয়ালে টানানো পরীর ছোট্ট বেলার সেই ছবিটার দিকে। হাতটা উপরে পেছনে দিকে করে রাখা অবস্থায়। পরী সেভাবে হাত তুলে ঠোঁট টেনে বলতো, আববা মাববো।
আদির হাসি পেলে ও সে হাসল না। এখনকার পরী আববার দিকে ভালোভাবে তাকায় ও না। সব তো আববার দোষ। আববার কারণেই সে আজ এত দূরে মায়ের থেকে।

______________

মাহিদকে ব্যাগ, ছাতা দিয়ে বাসার দিকে পাঠিয়ে দিল পরী। তাকে যেতে হবে আজ প্রডিউসারের অফিসে। তীব্র খড়খড়ে রোদে হাঁটতে বেজায় বিরক্ত লাগছে তার। রিকশা ও নিল না সে। হেঁটে হেঁটে পৌছে গেল সে কামাল উদ্দীনের অফিসে। তার দুই তিনজন কম্পিটিটর পরীকে ঘেমে টুইটুম্বুর হতে দেখে জিজ্ঞেস করল,
‘ কিরে মাটি কেটে এসেছিস?
পরী তিনার হাত থেকে পানির বোতল ছোঁ মেরে নিয়ে বলল,
‘ মাথা খারাপ করিস না। মনে হচ্ছে আজ প্র্যাকটিস ভালো হবে না আমার। এই গরমে বেহাল দশা। বৃষ্টি নামলে কি হয়? অসহ্য?
জুলি এসে বলল, না গাইলে, গাইবি না। আজ আমরা আবরার রেহান চৌধুরীর গান শুনব। তার পাশে গান গাওয়ার সাধ্যি আমাদের কারো এখনো হয়নি।
পরী কপালের ঘাম মুছতে মুছতে উঠে দাঁড়াল। আবরার রেহান? এখানে? কিন্তু কেন?
কামাল উদ্দিন এসে পরীকে বলল,

‘ তোমার সিরিয়াল নাম্বার টু পরী। আর ইউ রেডি? রেহান কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসবে মেবি। তোমার আর ও আগে আসা উচিত ছিল। এখন একটু রেস্ট নাও।

পরী আচমকা রেগে গেল। আমার সিরিয়াল নাম্বার ওয়ান। আমি ফার্স্ট। কালকে অডিশনে সেটা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু আজ আবার সেকেন্ড কেন? ফার্স্ট কে?
কামাল শান্তস্বরে বলল,
‘ ফার্স্ট রেহান। কালকেই সিরিয়াল চেন্জ করা হয়েছে। রেহানের স্কিল তোমার চাইতে ও বেশি। ও আর ও ভালো কিছু ডিজার্ভ করে। আশা রাখছি নেক্সট অ্যাওয়ার্ড টা ও পাবে। তোমার জন্য ও শুভকামনা। আই উইশ তুমি ও তার পরের অ্যাওয়ার্ডটা পাবে।

পরী দূরে ছুড়ে মারল বোতল। সবাই ভড়কে গেল। পরী চেঁচিয়ে বলল, আমি গান গাইব না। যেই স্টেজে রেহান চৌধুরী গান গাই সেই স্টেজে আমি গান গাইব না। পরীর সাথে কম্পিট? হাউ ডেয়ার হি?

পরীর বন্ধু-বান্ধব ছুটে আসল। তাকে শান্ত হতে বলল। বলল, মাথা গরম করে কিচ্ছু হবেনা। ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখ। রেহান চৌধুরীর চাইতে ও যদি তুই ভালো গান গেয়ে থাকিস তাহলে অ্যাওয়ার্ডটা তুই পাবি। কেন রেহান পাবে?

তিনা ওপাশ থেকে হো হো করে হেসে উঠল। সাথে জুলি ও। দুই দলের হাসি দেখে পরীর গা জ্বালা করে উঠল।
তিনা বলল,
‘ রেহান চৌধুরীর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার সাহস নেই যার সে আবার কম্পিট করার চেষ্টা করে। সাহস আছে?
পরী ভ্রু কুঞ্চন করল।
‘ কি বলতে চাইছিস? আমি রেহান চৌধুরীর সামনে দাঁড়াতে পারিনা? পারব না? সে কে এমন?
তিনা জোরে আওয়াজ করে হাসল। সাথে জুলি ও। বলল,
‘ আগে পটিয়ে দেখা তারপর না হয়। কম্পিটিশনে হারানোর কথা ভাববি। আই মিন, প্রেমে পড়ে কিনা দেখ। তোর যাহ রাগ,আর দেমাক?
পরী ক্ষেপে গেল।
‘ পরী? প্রেম ভালোবাসা? আই হেইট দিস? পরীর লাইফে এসবের কোনো ভ্যালু নেই। পরী এসব কেয়ার করেনা। তার কাছে তার ক্যারিয়ার আর ফ্যামিলিটাই ইমপোর্টেন্ট। নাথিং এলস।
অট্রহাসি হাসল তিনা। বলল, তোর দ্বারা এসব পসিবল ও না। তুই রেহান চৌধুরীর পায়ের ও যোগ্য নস। সেই তুই কি করে তার সাথে কম্পিটিশন করার কথা ভাবিস? রিডিকিউলেস ইয়ার?
পরী তেড়ে গেল তিনার দিকে। পরীর বন্ধুরা তাকে ধরে ফেলল। পরী চেঁচিয়ে বলল,

‘ আমি পায়ের যোগ্য নই। তাহলে কি তুই যোগ্য?

তিনা বাঁকা হাসল। ” আমি কি চ্যালেঞ্জ করছি নাকি? তুই করছিস তাই তোকে বলছি। আগে আমার চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করে দেখা,তারপর না হয় রেহান চৌধুরীকে চ্যালেঞ্জ করবি।
পরী একদৃষ্টে চেয়ে রইল তিনার দিকে। পরীর বন্ধুরা বলল, একসেপ্টেড পরী। তুই পারবি।

পরী ঘৃণিত চোখে চেয়ে রইল তিনার দিকে। বাইরে আওয়াজ শোনা গেল হৈ হুল্লোড়,চেঁচামেচি। সবাই ছুটে গেল। পরী গেল সবার পেছন পেছন। কালো হেলমেট মাথায় থাকায় ছেলেটির চেহারা দেখা গেল না। পরী আরেকটু এগোলো। তার কিছুটা সামনে তিনা পরীকে পিঞ্চ করে বলল,
‘ বামন হয়ে চাঁদে যাওয়ার শখ কত?
পরী দাতেঁ দাতঁ চেপে সহ্য করে নিল তিনার অপমান। তাকাল না তিনার দিকে। এসব সম্ভব নয়। নয়ত এইরকম দু নম্বরি চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করতে পরী দুইবার ভাবে না।

অনেক্ষণ পর ছেলেটি হেলমেট খুলে ফেলে। তারপাশের ছেলেটিকে কিছু একটা বলে এদিকওদিক তাকায়। হেলমেটটা উপরে ছুড়ে মেরে আবার ক্যাচ ধরে। তার আশেপাশে দাঁড়ানো কয়েকজন ভয়ে কিছুটা সরে দাঁড়ায়। কখন কার মাথায় পড়ে। রেহান তাদের ভয় পাওয়া দেখে মনে মনে হাসল। কিন্তু উপরে তার রেশটুকু নেই। সে হাত দিয়ে ইশারা করল জুলিকে। জুলি ইশারা বুঝতে না পেরে দাঁড়িয়ে থাকল।

রেহান আঙুল দিয়ে ইশারা করে বলল, সরে যেতে। জুলি বুঝতে তৎক্ষণাৎ সরে পড়ল। রেহানের সামনে এবার দৃশ্যমান গোলাপি রঙের ড্রেস পড়া মেয়েটি। চেহারায় রাগের কিঞ্চিৎ আভাস। চোয়াল শক্ত। নিঃস্পৃহ দৃষ্টি প্রয়োগ করেছে রেহানের উপর। কপালটা কুঞ্চিত। রেহান ছুড়ে মারল হেলমেটটি পরীর দিকে। সবাই এক মুহূর্তের জন্য চোখ বন্ধ করে নিল পরীর আর্তনাদ শোনার জন্য। যখন কিছুই শুনতে পেল না সবাই চোখ খুলে দেখল হেলমেটটি পরীর হাতে। ঠোঁটে তার হাসি ঝুলানো। তিনা ভ্রু উঁচিয়ে তাকাল পরীর দিকে। পরী তাকে হাসি উপহার দিল। রেহান হাত নেড়ে বলল, হাই রাগিনী!!!
পরীর সেদিকে মনোযোগ নেই। সে তিনার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল , হাই।
তিনা চোখ বড় বড় করে তাকাল। পরী চোখে চোখে ইশারায় ইশারায় বলে দিল, চ্যালেঞ্জ একসেপ্টেড। অ্যাওয়ার্ড আমিই পাব। চ্যালেঞ্জে আমিই জিতব।
রেহান তুড়ি বাজাল পরীর সামনে। বলল, ক্যান হিয়া’ ( র) মি??
পরী চমকে উঠল। আনমনে বলে উঠল, ইয়াহ, একসেপ্ট। চ্যালেঞ্জ একসেপ্টেড।
সবাই কপাল কুঞ্চন করে তাকিয়ে থাকল পরীর দিকে। পরী চেয়ে রইল তিনার দিকে। আর তার দিকে নিবদ্ধ অন্য একজনের মুগ্ধ করা দৃষ্টি।

চলবে,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here