#মন_গোপনের_কথা
#পর্ব_২৪
লেখনীতে, পুষ্পিতা প্রিমা
পিহু ছিকুর দিকে তাকালো। এখনো কোমরে হাত দিয়ে কপাল ভাঁজ করে গাল ফুলিয়ে তাকিয়ে রয়েছে ছিকু। সে রেগে আছে ভীষণ। রাগার কারণ হচ্ছে মিহি তাকে আদর না করে চলে গেল কেন? সব রাগ এখন পিহুর উপর গিয়ে পড়েছে।
ইশা কানের দুলটি দেখতে দেখতে বলল
‘ মাহি এটা দিতে এসেছে? তো বাসায় আসবে না? উঠোন থেকে কেউ চলে যায়? কেমন ছেলে ও?
পিহু চুপচাপ। রাইনা বলল
‘ তোর কি হলো রে পিহু?
পিহু রাইনার দিকে তাকালো। বলল
‘ কই কিছু হয়নি তো। আমি ঘরে যাই।
পিহু চলে গেল। ছিকু চেঁচিয়ে বলল
‘ পিহু চলি গিচে কেন?
রাইনা তাকে কোলে তুলে নিল। বুকে জড়িয়ে ধরে কপালে আদর দিয়ে বলল
‘ আপনি এত রেগে আছেন কেন?
‘ দাদু কেন কেন বলে কেন?
রাইনা হাসলো।
_______
পিহু ঘরে এসে বিছানায় শুলো বই নিয়ে। ফোন দিল মাহিদকে। মাহিদ ফোন তুললো না। কয়েকবার রিং হয়ে গেল। পিহু আর দিল না। ঘন্টাখানেক পরে কি মনে করে আবার ফোন দিল। মাহিদ ফোন তুলে গর্জে বলল
‘ তোর সমস্যা কি বাপ? আমারে কি আমার বউয়ের লগে সময় টময় কাটাইতে দিবিনা? যাহ ফোন রাখ। আমি আমার বউয়ের লগে আছি। রাখ। খবরদার আর ফোন দিবিনা।
পিহু ফোনটা না কেটে ছুঁড়ে মারলো খাটের এককোনায়। বালিশটা ফেলে দিল মেঝেতে। ইশা এসে এমন কারবার দেখে বিস্ময় নিয়ে পিহুর দিকে তাকালো। পিহু তখন বিছানায় মুখ চেপে শুয়ে আছে উপুড় হয়ে। ইশা চুপিসারে বালিশটা তুলে পিহুর পাশে বসলো। পিহু তার উপস্থিতি টের পেয়ে নড়েচড়ে মুখ মুছলো বিছানার চাদরে। ইশা তার দিকে চেয়ে রইলো একদৃষ্টে। পিহু উঠে বসলো। মুখ অন্যদিকে করে রাখলো। ইশা বলল
‘ কি হয়েছে?
‘ কোথায় কি হয়েছে আম্মা ?
‘ বালিশ ছুঁড়ে মেরেছ কেন?
‘ ভুলে পড়ে গেছে।
ইশা তার পাশ ঘেঁষে বসলো। বলল
‘ আমার দিকে তাকাও।
পিহু তাকালো না। ইশা তার সামনে গিয়ে বসলো । পিহু অন্যদিকে ফিরে যেতেই ইশা আটকালো। তার দিকে ফিরিয়ে সামনাসামনি বসে জিজ্ঞেস করলো
‘ কি হয়েছে মাহির সাথে?
পিহু মাথা নিচু করে নিল।
‘ কিছু হয়নি আম্মা।
‘ তাহলে রাগ, চোখে পানি এসব আপনাআপনি?
‘ ওসব আমার আর মাহিদ ভাইয়ের ব্যাপার। তোমাকে অত চিন্তা করতে হবে না। তেমন সিরিয়াস কিছু নয় আম্মা।
ইশা অদ্ভুত এক চাহনি ফেলে চেয়ে থাকলো পিহুকে। শেষমেশ বলল
‘ সিরিয়াস কিছুই হয়েছে। আর সেটা আমি বুঝতে পারছি। আমি তোমার মা পিহু। কি লুকচ্ছ আমার কাছ থেকে?
পিহু উঠে দাঁড়ালো।
‘ কি লুকোবো আম্মা? আমি কি ছোট বাচ্চা যে জেরা করছ?
‘ কত বড় হয়েছ সেটা দেখতেই পাচ্ছি।
পিহু আবারও ইশার দিকে ফিরে তাকালো।
‘ আমার সত্যি কিছু হয়নি আম্মা। কতবার বলব আর? তোমার কিছু জানার থাকলে মাহিদ ভাইকে জিজ্ঞেস করো।
বলেই পিহু রুম থেকে বেরিয়ে গেল। ইশা মাহিদকে ফোন দিবে দিবে করে আর দিল না। বিষয়টা আর ও খুঁটিয়ে দেখা দরকার।
__________
মেডিক্যালে মাত্রই পা রেখেছে পিহু। নিশিতা কোথা থেকে এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো পিহুকে। বলল
‘ বান্ধবী আরেকটু আগে আসলে কি হতো?
পিহু উত্তর দিল না। নিজেকে ছাড়িয়ে নিল। নিশিতা তার গাল টেনে দিয়ে বলল
‘ কথা বলছিস না কেন?
পিহু এবার ও জবাব দিল না। পিহু এগোতেই নিশিতা পথ আটকে দাঁড়ালো। বলল
‘ রাগ করেছিস? কিন্তু কেন?
‘ তোর উপর রাগ কেন করব? তুই কে আমার?
নিশিতার কপালে ভাঁজ পড়লো।
‘ কে মানে? আমি তোর,,
‘ আমার আগের বান্ধবীটা হারিয়ে গেছে। আমি তোকে চিনিনা। আমি আগের নিশুকে খুঁজে পাচ্ছিনা ইদানীং।
নিশিতা হেসে ফেলল। পিহুকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে বলল
‘ কেন রাগ করিস রে? কি হয়েছে তোর?
পিহু এবার চুপ করে থাকলো। নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে গেল।
নিশিতার মন খারাপ হয়ে গেল ভীষণ। পিহুর হঠাৎ কি হলো?
__________
হসপিটাল থেকে আদি মাত্রই বেরিয়েছে। ইশার দেওয়া লম্বা একটা লিস্ট পড়ে আছে। এগুলো বাজার করে নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। মার্কেটের দিকে রওনা দিল সে। কয়েকটা বাজার করে অন্য দোকানের ঢুকে পড়লো। পরিচিত কয়েকজনের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হলো। ইতোমধ্যে হাতের ব্যাগ ভারী হয়ে এসেছে।
হঠাৎ একটি মেয়েকে চোখে পড়লো। যাকে সে আসলেই খুঁজছিলো। মেয়েটি ও তাকে দেখে ভুরু কুঁচকালো। হাতের ভ্যানিটি ব্যাগ দুলাতে দুলাতে এগিয়ে এল। হাস্যজ্জ্বল চেহারা।
‘ আসসালামু আলাইকুম স্যার।
‘ ওয়ালাইকুমুস সালাম।
‘ আপনাকে না হসপিটালে দেখেছিলাম।
‘ হ্যা। নাম কি তোমার?
‘ জালিশা মেহফুজ।
দুজনে হাঁটতে হাঁটতে অনেক কথা বললো। আদি জিজ্ঞেস করলো।
‘ বাড়ি কোথায় তোমার?
‘ আমাদের বাড়ি? আমাদের বাড়ি তো সিলেটে। কিন্তু নিজ বাড়িতে থাকিনা আমরা। কানাডা থেকে ফিরেছি। এখন মামার বাসায় আছি ।
‘ ওহ আচ্ছা। আচ্ছা।
‘ নিনিত কে হয় তোমার?
‘ ডক্টর?
‘ হ্যা।
‘ কাজিন প্লাস মাই ফিউচার।
বলেই হাসলো জালিশা।
‘ সিউর?
কপাল কুঁচকালো জালিশা।
‘ সিউর হতে হবে কেন?
আদি হেসে ফেলল। বলল
‘ নাহ। তুমি কি আইসক্রিম খেতে পছন্দ করো?
‘ ইয়েস।
‘ তাহলে আইসক্রিম কিনে দিলে খাবে?
জালিশা মাথা নাড়লো।
‘ কেন?
আদি আইসক্রিম কিনে দিল। বলল
‘ নাও। তুমি তো আমার মেয়ের বয়সী। স্যার না ডেকে আঙ্কেল ডাকতে পারো। কেউ কিছু দিলে নিতে হয়।
জালিশা আইসক্রিম নিল। খেতে খেতে বলল
‘ ডক্টর খুব ভালো না?
‘ খুবব।
‘ ডক্টর ডাকটা সুন্দর নাহ আঙ্কেল?
‘ একদম।
‘ আপনি আমার পাপার মতো। পাপার সাথে ও আমি সব শেয়ার করতে পারি। পাপা আমার বন্ধু।
‘ বাহ, খুব ভালো। বিয়ে কখন তোমার আর ডক্টরের?
‘ খুব তাড়াতাড়ি। আপনাকে দাওয়াত করব আমি। আপনি আসবেন তো?
‘ কেন নয়?
‘ কিন্তু একটা সমস্যা আছে আঙ্কেল।
‘ কি সমস্যা?
জালিশার মুখ অন্ধকার হয়ে গেল সঙ্গে সঙ্গে। আদি বলল
‘ আমাকে ও বন্ধু মনে করো৷ বলো কি সমস্যা? আমি তোমাকে হেল্প করতে পারি।
‘ ডক্টরের সাথে অন্য কারো বিয়ে বিয়ে গুঞ্জন আছে। খুব শীঘ্রই হয়ত বিয়ে ও ঠিক হয়ে যেতে পারে। আমি খুব ভয়ে আছি। ডক্টরের সাথে কাউকে দেখলে মাথা খারাপ হয়ে যায় আমার। ভালো লাগেনা। ওই মেয়েটাকে দেখলে প্রচুর রাগ হয়। ইচ্ছা করে,,
‘ থামলে কেন? কি ইচ্ছে করে?
জালিশা জিভে কামড় দিল।
‘ আমি আপনাকে সব কেন বলছি?
আদি হাসলো। বলল
‘ চিন্তা নেই। আমি কাউকে বলব না। বরঞ্চ তোমাকে সাহায্য করতে পারি৷ নিনিত আমার স্টুডেন্ট।
‘ সত্যি?
‘ হুহ।
জালিশার বুক ভার কিছুটা কমে এল। মনের কথা কাউকে বলতে পেরে। আম্মি যে কেন বলে বেশি কথা বলতে নেই। কথা না বললে তো শান্তি লাগেনা তার। কথা বলে হালকা লাগলো তার। আদিকে খুব মনে ধরলো তার। তাই বলল
‘ আপনি আমার সাথে আসুন না। সবাই খুব খুশি হবে।
আদি বলল
‘ না না। অন্য একদিন।
‘ তাহলে আমি আসি।
আদি সায় দিল।
চলে গেল জালিশা৷ আদি বাড়ি ফিরে এল। তার কিছু পরেই পিহু বাড়ি ফিরলো। চেহারা অন্ধকার তার। নিশিতার সাথে একদম কথা বলেনি আজ। নিশিতা ও আর কথা বলতে আসেনি। এককোণায় বসেছিল।
পিহু গোসল করে নিয়েছে। খেতে ডাকছে তাকে। তার যেতে দেরী হওয়ায় আদি নিজেই আসলো। বলল
‘ খেতে আসো।
‘ যাচ্ছিলাম পাপা। কিছু বলবে?
আদি তার মুখের দিকে চেয়ে থাকলো। পরক্ষণে জড়িয়ে ধরে কপালে স্নেহের পরশ দিল। পিহু তাকে বুকে গুটিসুটি মেরে বলল
‘ কি হয়েছে? এনিথিং রং?
খানিকটা মুখ তুললো পিহু। আদি বলল
‘ তুমি তাকে ভালোবাসো?
পিহু ভড়কে গেল। পাপা এমন প্রশ্ন কখনো করেনা তাকে। হঠাৎ আজ কেন?
‘ বাবাকে বন্ধুর মতো সব শেয়ার করা যায় পিহু। ভালোবাসো?
‘ কাকে?
‘ নিনিত।
পিহু কি বলবে? ভালোবাসেনা কথাটা বলা যায় না। খারাপ শোনায়।
তবে সে এটুকু জানে নিনিতকে সে রেসপেক্ট করে। ছাত্রী শিক্ষকের সম্পর্কটাকে সে শ্রদ্ধা করে। সম্পর্কটা ও সুন্দর।
এর বাইরে কখনো কিছু ভাবেনি। ভাবা বারণ তার জন্য।
আদি বলল
‘ পিহু?
পিহু চমকে উঠলো৷ সরে পড়ে বলল
‘ আম্মা ডাকছে। বকাবকি শুরু করবে আমায়। আসো।
আদি বলল
‘ কিছু একটা জিজ্ঞেস করেছি পিহু।
পিহু ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
________
রাত সাড়ে দশটা।
খাবার টেবিলে বসে ঝিমুচ্ছে মাহিদ। ঢুলছে। রিক এসে তার কান টেনে দিয়ে চেয়ার টেনে বসলো। মাহিদ আশেপাশে কারো দিকে না তাকিয়ে বন্ধ চোখে কান চেপে ধরে বলল
‘ ধুর শালা। কান ধরোস কিল্লাই বাপ? ঘুমাইতাছি চোখে কি মালা দিছোস শালা?
রিক হেসে উঠলো উচ্চস্বরে। রিপ দাঁড়িয়ে চেয়ে থাকলো মাহিদকে। এই ছেলেটা কি? কোথা থেকে এসব আজব আজব কথা শিখেছে? এগুলো কোনো ভাষার মধ্যে পড়ে?
মাহিদ রিকের হাসির আওয়াজ শুনে চমকে তাকালো। বড় বড় চোখ করল রিপের দিকে তাকিয়ে। ঢোক গিলে মাথা নিচে নামালো। বিড়বিড় করে বলল
‘ বাপের বড় ভাই তুমি মজা নিতাছো কিল্লাই বাপ?
রিপ চেয়ার টেনে বসলো। নীরা মাহিদের চুল টেনে দিয়ে বলল
‘ বলি দুপুরে একটু ঘুমা। নাহ বাঁদরের মতো দৌড়া ছাড়া তোর তো আর কোনো কাজ নাই। এখনো ঘুমের জন্য চোখ খুলতে পারতেছেনা। নাহ আমাকে বউ নিয়ে আসতে হবে। বউয়ের মাইর খাইলে তুই সোজা হবি।
মাহিদ চেয়ারে মাথা এলিয়ে দিয়ে খিক করে হেসে উঠে আবার হাসি চেপে গেল।
শালার বউ নাকি তারে মারবো? কত্তবড় বুকের পাটা মাহিদ খান ও দেইখা নিবো। পিটাইয়া বাপের বাড়ি পাঠাই দিবো একদম। হুহ।
ঝিমুতে ঝিমুতে ভাত খেতে পারছেনা সে। না খেয়ে পালাতে ও পারছেনা৷ শালার বাপ বইসা আছে। মা তো নাছোড়বান্দা। নীরা এসে খাইয়ে দিতে দিতে বলল
‘ বাবুসোনা বউ তোমারে খাওয়াই দিবো না আমি না থাকলে। না খাওয়ায় উপোস রাখবো। বলবো খাইলে খা, না খাইলে না খা। আমার বাপের কি?
রিক হেসে উঠে বলল
‘ দারুণ বলেছিস নীরু।
রিপ বলল
‘ তুমি থামবে নীরা ? এত কথা কেন বলো? ওকে খাইয়ে দাও চুপচাপ। কাল থেকে দুপুরে ওর বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ।
মাহিদ বিড়বিড় করে বলল
‘ শালার বাপ। জারি করছে মার্শাল ল।
খেয়েদেয়ে রিপ ঘরে চলে এল। ল্যাপটপ অন করলো। দু তিন মিনিটের কিছু কাজ আছে। সেগুলো করার এক ফাঁকে দেখলো হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ এসেছে। রিপ মেসেজটি ওপেন করলো। চাপা হাসলো সে। নীরাকে ডেকে বলল
‘ মাইশা কি বলেছে দেখো।
নীরা দেখলো। হাসলো সে। মাইশা তখন অনলাইনে ছিল। নীরা তাকে ভিডিও কল দিতেই মাইশার হাস্যোজ্জ্বল চেহারা ভেসে উঠলো স্ক্রিনে। নীরা বলল
‘ আল্লাহ বাঁচায় রাখুক আম্মা। অনেক বড় উপকার করলে। একজন ভালো জীবনসঙ্গী আসুক তোমার জীবনে।
মাইশা হাসলো। বলল
‘ আপনাদের জন্য কিছু করতে পেরে আমি ধন্য আন্টি। এই যে আমাকে আম্মা ডাকেন। কি যে ভালো লাগে আমার। এই ডাকটা আমার কাছে অনেক মূল্যবান। আমি এই ডাকটা সবসময় শুনতে চাই। এটি ডাকা বন্ধ করবেন না আন্টি।
নীরা হাসলো। বলল
‘ ঠিক আছে। ঠিক আছে। বন্ধ করতাম না বাপ।
রিপ গরম চোখে তাকালো। মাইশা খিক করে হেসে বলল
‘ আপনার ছেলে নিশ্চয়ই আপনার কাছ থেকে এসব বলা শিখেছে? আমার কাছে দারুন লাগে। ভীষণ হাসি পায়।
‘ একদম না আম্মাজান। আমি আমার বাচ্চার কাছ থেকে এগুলা শিখছি। এগুলো যদি আমি বলতাম আগো থেইকা, তাইলে এই ব্যারিস্টার তো আমারে বিয়া করতো না। তিনি তো সভ্য ভদ্র মানুষ।
মাইশা হেসে ফেলল। হাসতে হাসতে বলল
‘ আপনি খুব মজার মানুষ আন্টি।
‘ তাই? কিন্তু ব্যারিস্টার তো বলে,,,
রিপ তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল
‘ আমার দোষ গুন বলার জন্য মেয়েটাকে বসিয়ে রেখেছ তুমি?
নীরা বলল
‘ তাইতো তাইতো। ঘুমায় পড়ো আম্মাজান। অনেক রাত হয়ছে। টা টা।
মাইশা সালাম দিয়ে চলে গেল। ফোন বিচ্ছিন্ন করলো।
___________
কিছুক্ষণ পরেই ভোররাত। মাহিদের আর ঘুম আসছেনা। শুধু গড়াগড়ি করছে বিছানায়। ফোন টিপে পিহুকে ফোন দিল। পিহুর ফোন তোলার নামগন্ধ নেই। শুয়ে শুয়ে চোখ বন্ধ রেখে পিহুর ফোনে কয়বার ফোন দিল ঠিক হিসেব নেই।
একটা সময় ফোন রিসিভ হলো। পিহু ঘুমের ঘোরে আছে। গলা লেগে যাচ্ছে। ঘুম জড়ানো গলায় বলল
‘ কে?
‘ তোর জামাই বাপ। ফোন ধরোস না কিল্লাই?
‘ মাহিদ ভাই?
‘ চুপ বেডি। আমি তোর ভাই লাগি এইডা তোরো ঢোল পিডাইয়া সবাইরে জানাইতে হইবো ক্যান?
‘ মুখ সামলাও। মাঝরাতে ফোন দিয়ে তুইতোকারি করছো অন্যের বউয়ের সাথে। লজ্জা নেই?
‘ লজ্জা বাপেরে বস্তাবন্দি করছি। লজ্জা বাপ বহুত ক্ষতি করছে আমার। শুধু লজ্জা পাইতে থাকলে তো হইবো না। পেরেম পিরিতি ও করা লাগবো। লজ্জা রাখলে তো ওসব ইয়ামপসিবল। তাই ওগুলারে লাত্তি মারছি বাপ।
‘ ইশশ কি কথার ছিঁড়ি।
‘ চুপ থাক শালী। দেখি গান শোনা। আমার ঘুম আইতাছে না।
‘ পারব না। তোমার বউকে বলো না। সে গান শোনায় না তোমাকে? এত বড় একটা বুইজ্জা বেডারে নাকি গান শুনাইয়া ঘুম পাড়ানো লাগবে। যত্তসব।
মাহিদ সেইরকম রেগে গেল। বসে পড়ে বলল
‘ শালীরে শালী তুই বুইজ্জা বেডা ডাকছোস কারে? আমারে দেখতে কি বুইড়ার মতো লাগে? আমি এহনো জোয়ান পোলা। বিয়া করিনাই এহনো। তুই আমারে বুইজ্জা বেডা ডাকছোস কিল্লাই?
‘ একশবার ডাকব। তুমি কি বাচ্চা যে তোমাকে গান শুনিয়ে ঘুম পাড়াতে হবে? হুহ ঢং।
মাহিদের বসা থেকে আবার ও ধপাস করে শুয়ে পড়লো। বলল
‘ আমি তোর বাচ্চার বাপ শালী। আগে,,,,,,
পিহু আর শুনলো না। ফোনটা দূরে ছিটকে ফেলে কান চেপে ধরলো বালিশে। ছিঃ ছিঃ কি লজ্জার কথা। নাউজুবিল্লাহ।
বিড়বিড়িয়ে বলল
‘ তুমি বেয়াদব মাহিদ ভাই।
চলবে,
?????