#মন_গোপনের_কথা
#পর্ব_৩৯
লেখনীতে, পুষ্পিতা প্রিমা
ছিকু ফোন কানের সাথে লাগিয়ে রাখলো। মাহিদ বলল, ফোন রাখ। কাজ আছে আমার।
না রাখবু কেন? কথা বলতে মন চাই কেন?
মাহিদ বলল
বল কি বলবি ?
ছিকু চুপ করে থাকলো। কিছু পরেই বলল
মিহি ইখানে আচেনা কেন? মন পুড়িচে কেন?
মাহিদ ধমকে বলল
ধুরর বাপ তুই এগুলা বলার জন্য ফোন দিছোস? যাহ আমার মুড ভালা না। তোর লাগি আর কথা বলতে পারতাম না। রাখ বাপ। পরে ফোন দিস।
ছিকু ভীষণ রেগে গেল। ফোনটাকে মেঝেতে ফেলে হাত দিয়ে আছাড় দিতে দিতে বলল
মারি ফিলবো। মিহিকে কামুড় দিবো। মারি ফিলবো।
মাহিদ ফোনের ওপাশে হাসতে হাসতে বলল
শালা ভাঙ ফোন আর ও জোরে মার।
পিহু এসে ছিকুকে ফোন আছাড় দিতে দেখে চেঁচিয়ে বলল
ছিকু কি করছ? এসব কি হচ্ছে?
মিহি ফুন রাখি দিচে কেন? কথা বুলেনা কেন?
পিহু ফোন কেড়ে নিয়ে ছিকুকে কোলে তুলে নিয়ে দেখলো ফোন এখনো লাইনে আছে। ছিকুর গালে আদর দিয়ে বলল
যারা কথা বলেনা তাদের সাথে কথা বলা তো দূর ফিরে ও তাকাবে না। ঠিক আছে।
কেন ঠিক আচে কেন? মিহি এখুনো কথা বুলেনা কেন?
পিহু তার দিকে নাক ফুলিয়ে তাকালো। ছিকু চোখ নামিয়ে মিনমিন করে বলল
পিহুচুন্নি ও পুঁচা কেন?
মাহিদ ফোনের ওপাশ গলা খাঁকারি দিল। ছিকু লাফ দিয়ে বলল
মিহি এখুনো ফুনে আচে কেন?
পিহু ফোন কেটে দিল। ছিকুর গালে আলতোকরে চড় মেরে বলল
আমার আদর খাও সারাক্ষণ আর গান গাও ওই মিহির? তোমাকে আর জীবনে ও আদর করব না আমি। নামো কোল থেকে।
ছিকু পিহুকে ঝাপটে ধরে রাখলো। পিহু তাকে কোলে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে করতে একসময় ধপাস করে বিছানায় ফেলে দিল। পিঠে ধুপধাপ মেরে বলল
পঁচা ছেলে আর জীবনে ও আমাকে পিহু ডাকবে না। যাও৷
পিহু চলে গেল। ছিকু ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে কেঁদে পিহুর পিছু পিছু ছুটলো। পিহু দৌড়াতে দৌড়াতে বলল
একদম না আসবে না আমার কাছে। একদম না।
ইশা,রাইনা পরী ছিকুর কান্নার আওয়াজ শুনে বলল
কি হলো পিহু?
পিহু লুকিয়ে পড়লো যাতে ছিকু না দেখে। পিহুকে আর না দেখতে পেয়ে মেঝেতে হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসলো সে।
মেঝেতে মাথা ঠুকাতে ঠুকাতে কেঁদে কেঁদে বলল
পিহু দুক্কু দেয় কেন? লুকি গিচে কেন?
রাইনা এসে কোলে তুলে নিয়ে বলল
পিহুনি তোকে এক্ষুনি তোর শ্বশুর বাড়ি পাঠাই দিবো। আমার নাতিকে কাঁদাস কেন?
ছিকু আর ও জোরে কেঁদে বলল
পিহু চুচুরবাড়ি চলি যাবে কেন?
ইশা বলল
পিহু বেরিয়ে এসো। ও কাঁদছে। কি শুরু করেছ?
পিহু বেরিয়ে এল। ছিকুকে মুখ মোচড়ে দিয়ে বলল
হুহ এখন কাঁদো কেন? ঢং।
ছিকু ঠোঁট উল্টে কেঁদে দিতেই পিহু এসে তাকে কোলে নিয়ে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে আদর করতে করতে বলল
ঠিক আছে ঠিক আছে। আর লুকি যাবো না।
চলে গেল খালা ভাগিনা। পরী বলল
কেমনে যে পারে এসব? এই ভালো এই খারাপ। আম্মা নিকিতা আন্টিকে কি ফোন দিয়েছ আর?
রাতে দিয়েছিলাম, এখন আবার দেব। এনেই ছাড়বো।
রাইনা বলল
উনি আসবেন বলে মনে হয় না আমার। কষ্ট পেয়েছেন। পাওয়ারই কথা।
ইশা চুপ করে রইলো।
___________
বাড়ি সাজানো আর বাড়ির বাইরে স্টেজ আর গেইট সাজানোর জন্য খান বাড়িতে অনেক লোকজন এসেছে। মাহিদ তাদের দেখে চোখ তুলো একবার দেখে আবার মাথা নামিয়ে ফোনো মনোযোগ দিল। রিপ এসে বলল
আপনারা কাজ শুরু করে দেন।
ওইটাই কি আপনার ছেলে?
মাহিদকে দেখিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো। রিপ বলল
হ্যা।
ওহহ।
কেন?
ওই মানে আপনার ছেলেকে তো আমি চিনি। বেশিরভাগ সময় রাস্তাঘাটে দেখা যায়। আপনার ছেলে সেটা জানতাম না।
রিপ ঠোঁট গোল করে বলল
ওহহ। আচ্ছা কাজ শুরু করে দেন।
লোকগুলো যেতেই নীরা এসে মাহিদের কান চেপে ধরে বলল
দেখ কি বলে গেল? তোকে দেখলে মনে হয় তুই ব্যারিস্টারের বাচ্চা? বেয়াদব ছেলে, রাস্তাঘাটের মানুষের সাথে ও ওইভাবে কথা বলিস?
মাহিদ রিপের দিকে তাকালো। মাথা নামিয়ে ফোনে মনোযোগ দিয়ে বলল
গেম খেলছি। এত প্রশ্ন করোনা তো।
রিপ বলল
নীরা আমি একটু বাইরে যাচ্ছি। ওনাদের খেতে দিয়ো। মাহি তোর মাকে হেল্প করবি। ওনাদের সামনে যেতে পারবেনা। ঠিক আছে?
মাহিদ সোজা হয়ে বসলো। বলল
ঠিক আছে আব্বা৷
রিপ চলে গেল মার্কেটে। পিহুর গায়ে হলুদের ঢালায় মেহেদীটা পড়েনি। সেটাসহ সব পাঠিয়ে দিতে হবে কিছুক্ষণের মধ্যে । তাই সে মেহেদী কিনতে এসেছে। মার্কেটে এসে পিহুকে ফোন দিল সে। পিহু তার ফোন পেয়ে তাড়াতাড়ি তুললো। সালাম দিতেই রিপ সালামের জবাব দিয়ে বলল
কোন মেহেদীটা নেব মামা? ওহ সরি এখন তো আর মামা ডাকা যাবেনা। আমি শ্বশুর আব্বা হচ্ছি কিন্তু।
পিহু মৃদু হাসলো। রিপ যদিও তা বুঝলো না। পিহুকে চুপ দেখে বলল
এখনো মন খারাপ? আমি কিন্তু বলেছি মন খারাপ হলেও আমার এখানে আসতেই হবে। আমার পুত্রবধূ হিসেবে তোমাকেই চাই।
আচ্ছা তোমার যেটা মন চায় সেটা কিনে ফেলো।
এখানে অনেক ধরনের আছে। কোনটা নেব?
যেটা মামির জন্য কিনতে সেটাই নাও। মামি বলে তোমার পছন্দ অলওয়েজ বেস্ট।
রিপ বলল
তোমার মামী এসব ও বলেছে।
পিহু খিক করে হেসে বলল
হ্যা। মামি তো আমার খুব প্রিয় একজন। আমাকে এত ভালোবাসে। সব বলে।
রিপ বলল
আচ্ছা তাইলে এখন রাখি। ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়া করো। হ্যা? রাখি। আচ্ছা আরেকটা ফোন দিয়েছিল তোমাকে?
কে?
মাহি।
পিহু চুপ করে থাকলো।
দেয়নি নাহ?
পিহু বলল
আমাকে আম্মা ডাকছে মামা। এখন রাখো। দরকার পড়লে আবার ফোন দিও। কেমন? আসসালামু আলাইকুম।
রিপ সালামের জবাব দিয়ে ফোন রেখে দিল। মেহেদী কিনে শপ থেকে বের হয়ে নীরাকে ফোন দিল। বলল
ওদিকে কাজ হচ্ছে ঠিকঠাক।
হ্যা একদম। আপনি কোথায়?
ফিরছি। তোমার ছেলে কোথায়?
কেন ও কি করেছে আবার?
আশ্চর্য! আমি ওকে বলে বলে পিহুকে ফোন দিতে কতক্ষণ বলব নীরা? তোমার ছেলে কি আমার কথা শুনেছে? আর এতবড় একটা ছেলেকে কি সারাক্ষণ আমি এসব বলে যাব? পিহুর ভাবনায় কি আসবে? ও কেন তোমার বাড়িতে বউ হয়ে আসবে বলতে পারো? তোমার ছেলেকে সময় থাকতে জিজ্ঞেস করো এই বিয়েটা আদৌ হচ্ছে কিনা।
রাগ করছেন কেন? ওকে একটু বুঝিয়ে বলতে হবে। রাগারাগি করলে তো হবেনা। তাছাড়া ওদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়েছে ওটা তো এত তাড়াতাড়ি সলভ হবেনা। কি কথা বলবে ওরা? পিহু না বললে মাহি কি বলবে? দুজনকে তো বলতে হবে।
আগে কথা কে বলবে? দোষ কার বেশি?
মাহির।
তাহলে? তোমার ছেলের কাছে আদৌ সম্পর্ক জিনিসটার প্রতি কোনো মায়া আছে।
এভাবে বলছেন কেন? মায়া না থাকলে পিহু ওর মায়ায় পড়লো কেমনে? সব ঠিক হয়ে যাবে। আপনি ওদের আর প্রেশার দিয়েন না। নিজে ও এত চাপ নিয়েন না।
আমি ওদের প্রেশার দিচ্ছি? তাই? আগে বলোনি কেন?
ফোন কেটে দিল রিপ। নীরা ফোনটার দিকে তাকিয়ে বলল
যাহব্বাবা কেটে দিল? এত রাগ কেন এই ব্যারিস্টারের?
মাহিদ এসে বলল
কি হয়েছে মেরিমা?
ধুর তোর বাপের আর কি কাজ? সারাক্ষণ রাগারাগি, খ্যাঁকখ্যাঁক করা ছাড়া কি আর কিছু পারে? তুই পিহুকে কেন ফোন দিসনি সেটার দোষ আমার। রাগ ঝাড়তেছে আমার উপর। কেন দিসনাই?
ফোন ধরবে না।
সেটা তোর বাপকে কি করে বুঝাই আমি?
_____________
চৌধুরী বাড়িটা ও সাজানো হয়েছে। সন্ধ্যা হতে না হতেই মেহমান আসতে শুরু করেছে। রাইনার বাপের বাড়ির মানুষরা এসেছে। ভাইপো ভাইঝি গুলো ছিকুকে নিয়ে ব্যস্ত। ছিকু এই কোল থেকে ওই কোলে চড়ছে। পাকা পাকা কথা বলে সবাইকে হাসাচেছ। মুনার বাপের বাড়ি থেকে আসা কয়েকজন মেয়েছেলে পিহুর সাজগোছের জিনিসগুলো নিয়ে হাজির হলো চৌধুরী বাড়িতে। ইশার ভীষণ মন খারাপ। রিপকে ফোন দিয়ে বলল
তোমরা আসবে না কেউ?
রিপ বলল
এটা আবার কেমন কথা ইশু? এখানে অনেক কাজ আমাদের।
আপার বাপের বাড়ির সবাই এল। আমার তো বাপের বাড়িই নেই। তাই কেউ এল না। ভেবেছিলাম তোমরা আসবে…
ইশা গলা বুঁজে আসলো। রিপ বলল
এসব কি বলছিস ইশু? আচ্ছা বড়দা যাবে। তুই মনে এসব পুষে রেখেছিস? কি একটা অবস্থা। আচ্ছা মন খারাপ করিস না।
নাহ। সবাইকে আসতে হবে। সবাই মানে সবাই।
এটা কোনো কথা হলো?
হ্যা। এটাই কথা। আসলে সবাই আসো না আসলে নাই।
কিন্তু?
কোনো কিন্তু না। ওখানে অনুষ্ঠান শেষ করে এখানে চলে আসো। মাহিকে এখানে মেহেদী পড়াবো।
বাচ্চাদের মতো আবদার করা তোর এখনো গেল না।
আমার আবদার কে পূরণ করে সেটা আমি জানি। তাই তে আবদার করি। আমি ডক্টরকে বলছি তোমরা আসছ। আসছ মানে আসছ।
রিপকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ইশা ফোন রেখে আদির কাছে ছুটলো।
_______
নীরা মাহিদের কাছে খবর নিয়ে এল যে চৌধুরী বাড়ি যেতে হবে সবাইকে নিয়ে। সেখানে তার মেহেদী পড়ানো হবে। মাহিদ বলে দিল সে যাবেনা। তার ভালো লাগছেনা। নীরা বলল
ওমা কেন? তোর বন্ধুরা সহ যাবি।
বন্ধু?
বন্ধু মানে বন্ধু আর কি?
কোথায় বন্ধু? তোমার মনে হচ্ছে আমার কোনো বন্ধুটন্ধু আছে? থাকলে এতক্ষণে চলে আসতো।
মন খারাপ করছিস কেন? আসবে হয়ত। নিনিত না হয় আসবে না, লাবীবদের কি হলো? সবাই কি একজোট নাকি? এটা কোনো কথা ? তোরা না কত ভালো বন্ধু!
মাহিদ কোনো জবাব না দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। তাদেরকে অবাক করে দিয়ে একটি হাস্যজ্জ্বল চেহারার রমণী বিশাল সাইজের একটি গিফটবক্স নিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়লো। গিফটটা নিয়ো ছুটতে ছুটতে সোফার কাছে গিয়ে থামলো। সেটি রেখে তাকালো নীরাদের দেখে। নীরা তাকে দেখে খুশিতো আত্মহারা হয়ে গেল। মাইশা ও এসে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে বলল
কেমন আছ আন্টি? আমি কিন্তু অন্নেক তাড়াতাড়ি আসলাম।
নীরা তার গালে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল
ছেলের বিয়ে বলে কথা ভালো তো থাকতেই হবে। মাশাল্লাহ কি সুন্দর লাগতেছে তোমাকে।
থ্যাংকস আন্টি। মিঃ মাহিদ মুখ গোমড়া করে রেখেছেন কেন? সকালই তো বললেন সব ঠিকঠাক আছে। তাহলে আবার কি হলো?
তেমন কিছু না। খেয়েদেয়ে উপরে চলে যান। ওখানে বড়মার ভাইঝিরা এসেছে।
ওকে ফাইন। কিন্তু আমরা কি পিহুকে দেখতে যাব না? আমাকে তো যেতেই হবে, নইলে পিহু ভীষণ রেগে যাবে।
নীরা বলল
ওকে সেটাই বলছিলাম। ইশু নাকি আবদার করেছে ব্যারিস্টারের কাছে। সবাইকে যেতেই হবে।
মাইশা বলল
আর কেউ না যাক। আমাকে যেতে হবে। ওখানে নিশিতা আর জালিশা আসবে।
মাহিদ নীরার দিকে তাকালো। নীরা বলল
ওরা ওখানে যাবে বলছে?
হ্যা। কেন?
না নিনিত ও কি যাবে?
সেটা তো জানিনা আন্টি।
আচ্ছা, তোমার আম্মা আব্বা কখন আসবে।
এসে পড়বে আমার এক কাজিনের সাথে। আচ্ছা আমি বড় আন্টির সাথে দেখা করে আসি।
মাইশা যেতেই নীরা বলল
আচ্ছা নিনিতের ফোনে আমি কল করে দেখি।
নাহ।
কেন?
থাক। জোর করার দরকার নেই।
এশারের আগে মাহিদকে চমকে দিয়ে নিনিত এল তার পরিবার নিয়ে। আইমি, জাবির আর জালিশাকে দেখে ভীষণ অবাক হলো নীরা। সাথে খুশি ও হলো। জালিশাকে দেখে নীরা বলল
ওমা এটা কি? আমার যদি আরেকটা ছেলে থাকতো আমি এটাকে বউ বানিয়ে নিতাম। হুহ।
জালিশা লজ্জা পেয়ে কাঁচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে বলল
হুহ, যার বউ হতে চাই সে ফিরেই তাকায়না।
নিশিতা বলল
আন্টি আমরা কিন্তু বেশিক্ষণ বসতে পারব না। ভাইয়া বলেছে তাই আসতে হয়েছে আমাকে। পিহুদের ওখানে যেতে হবে। নীরা বলল
ধুর সেখানে আমাদের সাথে যাবে। সবাইকে নিয়ে নীরা চলে গেল। নিকিতা বেগম যাওয়ার সময় নিনিতকে বলল
বিয়ে বাড়িতে কোনো অশান্তি যাতে না হয় নিনিত।
নিনিত মাথা নেড়ে সায় দিল। মাহিদের দিকে তাকাতেই দুজন চোখাচোখি হয়ে গেল। মাহিদ অন্যদিকে ফিরে মাথা চুলকে আবার ও নিনিতের দিকে তাকালো। নিনিত এগিয়ে এল। মাহিদ এমন অস্বস্তিতে যেন জীবনে ও পড়েনি। অথচ এই বন্ধু তার কত কাছের। নিনিত হাস্যজ্জ্বল চেহারায় বলল
লাবীবরা ওদের ফ্যামিলি নিয়ে গাড়িতে আছে। এসে পড়বে।
মাহিদ মাথা দুলালো। অনেকক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকার পরে মাহিদ চলে যেতেই নিনিত বলল
একটু জড়িয়ে ধরবিনা?
মাহিদ ঘাড় ঘুরালো। বিস্ময় কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই জড়িয়ে ধরলো ঝাপটে। বন্ধুত্ব কখনো হারানোর জিনিস না। যে বন্ধুত্ব হারিয়ে যায় সেটা কখনোই বন্ধুত্বই ছিল না। নিনিত তার পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলল
এইবার সম্পর্ক আর নিজের ভালো থাকার ব্যাপারে সিরিয়াস হ একটু। দায়িত্ব নিতে যাচ্ছিস। প্রেমিক মানুষ ছন্নছাড়া হতেই পারে কিন্তু স্বামী নয়।
একে অপরকে ছেড়ে সামনাসামনি দাঁড়ালো তারা। মাহিদ বলল
আমি সরি দোস্ত ওইদিনের জন্য। রাগের মাথায় কি না কি বলে ফেলেছি।
আমি তোকে চিনি দোস্ত। আর তোর রোগটা ও জানি। শোন বিয়ে করছিস, এখন হুটহাট বউয়ের উপর রাগা যাবেনা, তাই তোকে একটা টিপস দেই। সেটা হচ্ছে যখনই রাগ উঠবে, ঘর থেকে বের হয়ে যাবি। তারপর বাড়ির বাইরে খালি জায়গায় গিয়ে বসে থাকবি। কিছুক্ষণ পর দেখবি মাথা অটোমেটিক ঠান্ডা। বুঝছোস?
মাহিদ হাসলো। বলল
বুঝছি। এবার কহ লাল সুন্দরীরে কবে বিয়া করবি?
নিনিতের কপালে ভাঁজ।
লাল সুন্দরী কে?
জাল ফাল লাল সুন্দরী জালিশা।
নিনিত উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। মাহিদের পিঠে কিল বসিয়ে বলল
শালা তুই আর ভালা হলি না।
বল বিয়া কবে করবি? বল বল।
ধুর না।
কি না?
ওসব নিয়ে ভাবছিনা।
কইলেই হলো? তুই শালারে বিয়া না দিয়া আমি হানিমুনে যাইতাম না।
নিনিত বলল
ওসব কথা রাখ। লাবীবরা কোথায় দেখি।
মাহিদ তার হাত ধরে আটকালো। বলল
আরেহ দাঁড়া। আমার প্রশ্নের উত্তর দে।
নিনিত হতাশ হলো। বলল
আমার কাছে উত্তর নাই দোস্ত। আমি সত্যি ওসব নিয়ে ভাবতে চাইছিনা।
চলবে,
রিচেক করা হয়নি