#মন_মহুয়ার_নেশা,১৮,১৯
#তানজিলা_খাতুন_তানু
(পর্ব_১৮)
-এই আপনাকে কে সিক্রেট অফিসার করেছে বলুন তো।
নিশি রাগ দেখিয়ে কথাটা অর্ককে বললো। অর্ক ভ্রু কুঁচকে বললো…
– কেন কি হয়েছে।
– দিভাইকে দেখেই ভূত ভূত বলে চেঁচিয়ে উঠলেন। আপনি কিভাবে অপরাধীদেরকে ধরেন বলুন তো।
– এই একদম আমার কাজ নিয়ে কিছু বলবে না। আমি মানছি আমার ভুল হয়েছে আর তোমরা ও তো ভূত ভূত বলে চেঁচিয়ে উঠে ছিলে।
– আপনার জন্যই তো এইসব কিছু হয়েছে।
– সব দোষ আমার একার নাকি।
– হ্যা আপনারই।
নিশি আর অর্ক নিজেদের মাঝে ঝামেলা শুরু করে দেয়। ফুল কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না উপায় না পেয়ে অর্ক আর নিশির মাঝে দাঁড়িয়ে পড়লো।
– ঝামেলা বন্ধ করো দুজনে।
– ফুল ওকে বারন করে দে আমার সাথে ঝামেলা করতে।( অর্ক)
– আমার বয়েই গেছে আপনার সাথে ঝামেলা করতে।
নিশি রাগ দেখিয়ে চলে যায়। ফুল রাগী চোখে অর্কের দিকে তাকালো। অর্ক একটা ঢোক গিলে ওইখান থেকে চলে যায়। ফুল একটা মুচকি হাসি হাসলো, নিশানের পর মহুয়া আর তারপরে অর্ক আর নিশি ফুলকে বড্ড আপন করে নিয়েছে। ফুলের সবকিছু জানার পরেও এরা কখনোই বুঝতে দিচ্ছে না ফুল এইবাড়ির কাজের মেয়ে।
সবাই ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো,মহুয়া খাবার সাজাচ্ছে।
– ভাবি তুমি আবার রান্নাঘরে গেলে কেন। আমিই তো করতাম।
– না ফুল এমনিতেই তুমি রাত জেগেছো শরীরের উপর চাপ গেছে তার উপরে আবার আগুনের কাছে গেলে শরীর খারাপ করবে।
কথাটা শুনে ফুল নিজের মনেই মহুয়ার বলা কথাটা বিরবির করলো। পরক্ষনেই মনে একটা প্রশ্নের সূচনা ঘটলো…
– কালকে তো দাদাভাইয়ের বাসর রাত ছিলো,ওরাও তো রাত জেগেছে। তাহলে?
প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে, ফুল এইসব চিন্তা মাথা থেকে বের করে দিয়ে মহুয়াকে টুকটাক হেল্প করতে লাগলো।
বিকালের দিকে নিশি চলে যায় অর্কের সাথে। যদিও অর্ক সকালে নাস্তা করার পরই চলে গিয়েছিলো আবার এসে নিশিকে নিয়ে গেছে গ্রামে।
– নিশি একটা কথা বলবো।
– হুম বলুন।
– আমার মনে হচ্ছে মহু আর নিশানের সম্পর্ক টা স্বাভাবিক না।
– কেন এইরকম মনে হচ্ছে আপনার।
– আমি মহুকে ছোট বেলা থেকেই চিনি। প্রচন্ড পরিমানে একগুঁয়ে মেয়ে, নিজের জেদটাকে প্রায় সময়েই প্রাধান্য দিয়ে এসেছে। তবে তার ফলটা ভালো হয়েছে, কিন্তু এইবার কি হবে আমার জানা নেয়।
– বুঝলাম না ঠিক।
– মহু নিশানকে ৩ বছর আগে থেকেই ভালোবাসে, নিশানের হুট করেই গায়েব হয়ে যাওয়াটা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। অপেক্ষা করে গ্রামে পড়ে ছিলো, শহরে আসার পরে নিশান পাত্র হিসাবে দেখতে যেতে মহুয়া সরাসরি না বলে দিয়েছিলো এই বিয়েতে সেটা কিন্তু এই জেদের বশেই। তারপরে ওর বাবা মায়ের মৃ”ত্যু”টার জন্য মহু কোথাও না কোথাও নিশানকে ই দায়ি করছে। তাই এই বিয়েটা এতটা স্বাভাবিকভাবে মানবে না ওহ।
– কিন্তু আঙ্কেল আন্টি তো।
– আমি জানি কিন্তু মহুয়ার মনে একটা প্রশ্ন মিলছে ওহ ওইখানে উপস্থিত থাকলে বাবা মাকে বাঁচিয়ে নিতো,নিশানের জন্য সেটা হয়নি।।
– অদ্ভুত তো।
– হুম।
নিশি আর অর্ক অনেক ভেবেও মহুয়াকে সঠিক ভাবনা ভাবানোর উপায় খুঁজে পেলো না। নিশিকে পৌঁছে দিয়ে অর্ক পুনরায় শহরে ফিরে আসলো। কয়েকদিন পর নিশি পুরোপুরি ভাবে শহরে চলে আসবে। বাড়ি দেখাও হয়ে গেছে,যদিও সবকিছুর আয়োজন নিশান নিজেই হয়েছে।
অন্যদিকে…
নিশান ল্যাপটপে কাজ করছে। মহুয়া ওর সামনে দাঁড়িয়ে বললো…
– আমার কিছু কথা বলার ছিলো।
– কি কথা?
– আমি আবারো হাসপাতালে জয়েন করতে চাই। এই বন্ধজীবন আমার ভালো লাগছে না।
– কিন্তু মহু এখন।
– আমি কিছু জানি না,ডাক্তারি আমার পেশা ,এটা আমাকে করতেই হবে।
নিশান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো, মহুয়া কে কিছুতেই কিছু বোঝানো যাবে না এটা জানে তাই মেনে নেওয়াটাই শ্রেয়।
– ঠিক আছে, তবে এই শহরেই কোথাও কাজ নাও গ্রামে যেতে হবে না।
– আমি গ্রামেই করবো।
– মহুয়া জেদ করো না, আমি তোমাকে একাকে কোথাও ছাড়তে পারবো না আর না আমার পক্ষে গ্রামে থাকাটা সম্ভব। আর নিশি আর মা তো কয়েকদিনের মধ্যেই শহরে চলে আসবে তাহলে অসুবিধা কোথায়।
মহুয়া চুপ কর থাকলো। নিশান আর প্রশ্ন করলো না, মহুয়া ভাবুক,ভেবে সিদ্ধান্ত নিক কি করবে।
অন্যদিকে…
– আমাকে যে করেই হোক ওই অফিসারের সিক্রেট ফাইলটা খুঁজে পেতেই হবে, নাহলে যে আমার সব খেলা শেষ।
– কিন্তু স্যার উনি তো মা’রা গেছেন।
– মা”রা গেলেও কু'”””র বা””চ্চাটা নিশ্চয় ওই সিক্রেট ফাইলটা নিজের কাছে রাখেনি,গোটা ঘর খুঁজেও যে কিছুই পেলাম না অনেক চেষ্টা করলাম। এটা হতে পারে না আমি এইভাবে শেষ হয়ে যেতে পারি না।
– স্যার একটা খবর আছে।
– কি।
– আপনার কেসটা অন্য একজন সিক্রেট সিবিআই অফিসার নিয়েছে,গোপন সূত্র খবর অনুযায়ী।
– নাম কি অফিসারের।
– পুরো নাম জানি না তবে M.A.N বলেই ডাকে সবাই।।
– তাই নাকি, ইন্টারেস্টিং ব্যাপার তো। ওনার ব্যাপারে বাকি সব তথ্য বের করো।
২ দিন পর…
মহুয়া শহরের একটা হাসপাতালে চাকরির জন্য আবেদন করেছে,এখনো কোনো মেইল আসেনি তাদের পক্ষ থেকে। নিশান বাড়ির বাইরে বের হয়েছে, ফুলের ভার্সিটির ভর্তির জন্য।
কলিংবেলের আওয়াজ পেয়ে মহুয়া দরজা খুলে দেখলো কেউ নেয়,আর দরজার সামনে একটা ফুলের বুকে,তাতে একটা চিঠি। মহুয়ার ভ্রু কুঁচকে গেলো কৌতুহল বশত বুকেটা তুলে নিয়ে চিরকুটটা খুলে দেখলো ভেতরে বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা আছে…
– ভালোবাসি।
মহুয়ার ভ্রু কুঁচকে গেলো। চিরকুট পড়ে। কোথাও খুঁজে কোনো নাম পেলো না। ফুলের বুকে টা দরজার বাইরে রেখেই ঘরে চলে গেলো। এইভাবে দিন গড়াতে লাগলো, প্রতিদিনই ওইরকম লাভ লেটার আসতে লাগলো এইসবের জ্বালাতে অতিষ্ঠ মহুয়া। নিশানকেও কিছু বলে উঠতে পারছে না,তাই ঠিক করলো চোর ধরবে,তাই দরজা বন্ধ করে বাইরে বেরিয়ে আড়ালে লুকিয়ে থাকলো, কিছুক্ষণ পর মহুয়া দেখলো একজন লোক আসলো, কলিংবেলটা টিপলো তারপরে নীচে বুকেটা রেখে দিয়ে স্থান ত্যাগ করলো।
– দাঁড়াও আজকে তোমাকে আমি হাতে নাতে ধরবো। আমাকে জ্বালাতন করা তো,বোঝাচ্ছি মজা।
মহুয়া তড়িঘড়ি লোকটার সামনে দাঁড়ালো। হুট করেই কাউকে সামনে দাঁড়াতে দেখে লোকটা চমকে উঠলো। ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো..
– কে আপনি এইভাবে পথ আটকে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?
– আমি কে সেটা আসল কথা নয় আসল কথা হলো আপনি কে? আর এইভাবে আমার বাড়ির সামনে প্রতিদিন ফুলের বুকে রেখে দেবার মানে কী?
মহুয়ার কথা শুনে লোকটা একটু অবাক হলো মনে হয়। ভ্রু কুঁচকে আবারো বললো…
– আপনার বাড়ি মানে?
– মানে আমার কী! এই বাড়িতে আমিই থাকি এইভাবে প্রতিদিন চিরকুট দেবার মানে কী? কে আপনাকে পাঠিয়েছে সত্যি করে বলুন।
লোকটা একটু আমতা করে করে বললো…
#চলবে…
মহুয়ার নতুন প্রেমিক ??
বিঃ দ্রঃ ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
হ্যাপি রিডিং ?
#মন_মহুয়ার_নেশা
#তানজিলা_খাতুন_তানু
(পর্ব_১৯)
– আসলে আমি জানতাম না আপনি এই বাড়িতে থাকেন।
– আমি থাকি জানতেন না মানে।( মহুয়া ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো)
লোকটা আমতা আমতা করতে লাগলো। মহুয়ার সন্দেহটা আরো তীব্রতর হয়ে উঠছে।
– এই আপনি এইভাবে আমতা আমতা করবেন না বলুন সরাসরি কি বলতে চান।
– আসলে আমি ফুল কে এই বুকেগুলো দিয়ে যেতাম,আমি জানতাম না আপনি এইগুলো নেন।
মহুয়ার চোখগুলো বড়ো বড়ো হয়ে গেলো। ফুলের জন্য পাঠানো জিনিসগুলো এতদিন নিজের বলে ভেবে ভুলে করে ডিপ্রেশনে চলে গেছে ভাবতেই হাত পা ছড়িয়ে কাঁদতে মন চাইছে। লোকটার প্রতি মহুয়ার খুব রাগ হলো, রাগী গলায় বলে উঠলো…
– এই আপনি লাভ লেটার দিয়েছেন ভালো কথা তার নীচে ছোট করে নামটা লিখে দিতে হয় এটা জানেন না।
– আসলে আমি
– কি আসলে নকলে করছেন তখন থেকে।
– আমি জানতাম এই বাড়িতে ফুল আর ওর দাদা থাকে আর কোনো মেয়ে থাকে এটা জানতাম না আমি।
– ওহ।
মহুয়া ঠোঁট উল্টে কথাটা বললো। মুহুর্তের মধ্যেই মাথায় দুষ্টুমি বুদ্ধি খেলে গেলো মহুয়ার। সামনের ছেলেটাকে একবার ভালো করে দেখে নিয়ে বললো…
– ভালোবাসি
মহুয়ার এমন কথাতে ছেলেটার চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। মহুয়া এইরকম কথা বলবে এটা কখনোই আশা করেনি,শক খেয়েছে খুব জোরে।
– মানে?
– আমি না আপনাকে পছন্দ করে ফেলেছি,প্রতিদিন চিরকুট দেখে ফিলিংস জন্মে গেছে আপনার প্রতি।
মহুয়ার কথাতে ছেলেটা বিচলিত হয়ে পড়লো, ঠোঁটটাকে ভিজিয়ে নিয়ে বললো…
– দেখুন একটা মিস হয়ে গেছে,সরি মাফ করে দিন।
– মাফ-টাফ কিছু হবে না আপনাকে যেতেই হবে।
– কোথায়।
– ভেতরে।
– আসলে।
– চুপচাপ চলুন, নাহলে আপনার নামে কেস করবো আমি।
ছেলেটা ঘাবড়ে গেলো পুনরায়। উপায় না পেয়ে মহুয়ার পেছন পেছন বাড়ির ভেতরে ঢুকলো, মহুয়া ছেলেটাকে বসিয়ে রেখে পানি এনে টেবিলের উপর রেখে ছেলেটার দিকে প্রশ্ন করলো…
– নাম কি আপনার।
– সাদিফ।
– কি করো।
– একটা প্রাইভেট কোম্পানি কাজ করি।
– ভালো। তা আমাকে তোমার কেমন লাগে।
সাদিফের অবস্থা খুবই খারাপ ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি টাইপ অবস্থা। মহুয়ার বেশ মজা লাগছে সাদিফের অবস্থা দেখে। তখনি কলিং বেল বেজে উঠলো,মহুয়া উঠে গিয়ে দরজা খুলতে যেতেই সাদিফ ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিলো।
ফুল মহুয়ার সাথে বসার ঘরে আসতেই দেখলো সাদিফ বসে আছে। ফুল সাদিফকে দেখে চমকে উঠলো, কলেজের সিনিয়র ছিলো সাদিফ,, কয়েকবার কথাও হয়েছে ওর সাথে।
ফুল মহুয়ার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে ইশারায় জিজ্ঞেস করলো এ এখানে কেন। মহুয়া কোন উত্তর না দিয়ে সাদিফের দিকে তাকিয়ে বললো…
– ফুল এই সাদিফ না আমাকে পছন্দ করে প্রতিদিন আমার জন্য ফুলের বুকে পাঠায়,আর ভালোবাসি বলে একটা চিরকুট। ( ন্যাকা স্বরে বললো)
মহুয়ার এমন কথা শুনে ফুলের চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম,,চোখ বড়ো বড়ো করে একবার মহুয়া আর একবার সাদিফের দিকে তাকাতে লাগলো। সাদিফের অবস্থা খুবই খারাপ,, ভালোবাসার মানুষটির সামনে অন্য একজন তাকে ভালোবাসি কথাটা বলছে।
– কি বলছো তুমি এসব।
মহুয়া আর চুপ করে থাকতে পারলো না হাসতে শুরু করলো। ফুল ভ্রু কুঁচকে সবটা বোঝার চেষ্টা করছে,কি হয়েছে। সাদিফ ওহ বুঝে উঠতে পারলো না মহুয়ার হাসির কান্ড।
– ভাই।
ডাকটা শুনে সাদিফ চমকে উঠলো। ফুল ওহ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকলো।
– এই ফুল কিছু নাস্তার ব্যবস্থা করো প্লিজ।
– আচ্ছা।
ফুল রান্নাঘরের দিকে চলে যেতেই মহুয়া গম্ভীর হয়ে বসলো। সিরিয়াস হয়ে বললো…
– ফুলের সম্পর্কে কি জানো তুমি।
সাদিফ একটু ঘাবড়ে গেলো মহুয়ার পাল্টি খাওয়াতে।
– তেমন কিছুই না।
– সবটা না জেনে ভালোবেসেছেন। পরিবারে প্রবলেম হবে না তো।
– মানে?
ফুলের জীবন কাহিনীটা সংক্ষেপে বললো মহুয়া। সাদিফ অবাক হলো অনেকটাই ওহ ভেবেছিলো ফুল এই বাড়ির মেয়ে।
– দ্যাখো সাদিফ তোমার এই ভাবাটাই স্বাভাবিক কারন নিশান ফুলকে আদরেই রেখেছো আমি আর নিশান দুজনেই চাই ফুল ভালো থাকুক কিন্তু আমি কখনোই ওকে অনিশ্চিত কিছুর দিকে ঠেলে দেবো না। ফুল ভালো থাকুক এটাই আমাদের চাওয়া, পরবর্তী কালে ফুলের বিষয়টা জানাজানি হলে সমস্যা হতে পারে তাই আগেই বললাম বাকিটা তুমি ভেবে সিদ্ধান্ত নাও আর একটা কথা ফুলের ইচ্ছা না থাকলে আমরা কিছুই করবো না।
সাদিফকে একটু চিন্তিত দেখাচ্ছে মনে হলো। মহুয়া বললো…
– বাড়ি যাও ভালোভাবে সিদ্ধান্ত নাও পরিবারকে সবটা খুলে বলো তারা যদি রাজি থাকে তাহলেই এই কথা আগাও নাহলে এইখানেই সবটা বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।
সাদিফ মাথা নিচু করে আছে, সমাজের অনেক পরিবারই গরীব,অনাথ মেয়েকে বাড়ির বউ করে নিতে চাই না। তখনি ফুল খাবার প্লেট নিয়ে ভেতরে আসলো। মহুয়া সাদিফকে খাবার নিতে বললো,সাদিফ ভদ্রতার খাতিরে একটু খেলো।
সাদিফ মহুয়াকে বিদায় জানিয়ে চলে যেতেই যাবে তখনি নিশানের আগমন ঘটলো। নিশানকে দেখে সাদিফ সালাম দিয়ে বললো…
– আসসালামু আলাইকুম স্যার আপনি এইখানে।
– ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আমার ওহ তো একই প্রশ্ন তুমি এইখানে।
– আসলে স্যার।
মহুয়া বুঝলো নিশান আর সাদিফ একে অপরের পরিচিত। তাই আবারো ফাজলামি করার ভূত চাপলো মাথার মধ্যে, চট করেই বলে উঠলো…
– আমার প্রেমিক
মহুয়ার এইরকম কথা শুনে নিশানের ভ্রু কুঁচকে গেলো। সাদিফ ওহ হতভম্ব হয়ে গেছে মহুয়ার পাল্টি খাওয়ার কারন কিছুই মাথাতে আসছে না।
– মানে কি বলছো এসব।
– হ্যা ঠিকই বলছি।
– দ্যাখো ফাজলামি করো না।
– হু। সাদিফ তুমি এখন আসতে পারো আর যেটা বললাম সেটা ভেবে দেখো।
সাদিফ নিঃশব্দে স্থান ত্যাগ করলো। মহুয়ার মুখের দুষ্টুমির হাসি খেলা করছে। নিশান একবার ফুলের দিকে তাকিয়ে মহুয়ার হাতটা ধরে সোজা ঘরে নিয়ে গিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো..
– কি বলছিলে তুমি (দাঁতে দাঁত চেপে)
– সত্যি বললাম।
– কি সত্যি।
– কিছু না। ছাড়ো আমাকে।
– ছাড়বো না।
– তাহলে কি করবে শুনি এইভাবে ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে।
– না ।
– তাহলে।
– আদর করবো।(নেশাকাতুর কন্ঠে)
– সরো।
মহুয়া নিশানকে ধাক্কা দিতেই নিশান আরো শক্ত করে চেপে ধরলো মহুয়াকে। মহুয়ার সামনে থাকা চুলগুলোকে কানের পাশে গুঁজে দিয়ে কপালে ভালোবাসার পরশ দিলো। মহুয়া নিশানের ভালোবাসার পরশে কেঁপে উঠলো,পরম আবেশে চোখটা বন্ধ করে নিলো,মহুয়ার ঠোঁট হালকা কাঁপছে, নিশান আলতো করে নিজের ঠোঁটের পরশ মহুয়ার ঠোঁটে দিলো। মহুয়া কেঁপে উঠলো, নিজের জামাটা শক্ত করে চেপে ধরলো। নিশান মুচকি হেসে মহুয়াকে ছেড়ে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করার শব্দ শুনে মহুয়া চোখ তুলে তাকালো নিজের হাতটা নিজের অজান্তেই নিজের ঠোঁটে পরশ করলো। অজান্তেই ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসি খেলে গেলো।
#চলবে…
বিঃ দ্রঃ…. গল্পে “মহুয়া” চরিত্রটাকে ১৭ পর্ব ওহ আজকের পর্বে অর্থাৎ ১৯পর্বে একটু অন্যরকম দেখানো হয়েছে গল্পের মাঝে আলাদা পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য তা এই অন্যরকম মহুয়াকে কেমন লাগলো সবার।
কথাগুলো বলার একটাই কারন,, মহুয়া চরিত্রটাকে আমি কি কোনোভাবে ন্যাকা বানিয়ে ফেললাম, কারোর এই দুই পর্বে (১৭ আর ১৯) মহুয়া চরিত্রটা খারাপ লাগলেও বলতে পারেন?
ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
হ্যাপি রিডিং ?