মন_মহুয়ার_নেশা,৩২,৩৩

0
454

#মন_মহুয়ার_নেশা,৩২,৩৩
#তানজিলা_খাতুন_তানু

(পর্ব_৩২)

পরেরদিন….

মিতালীর অফিস যাওয়ার কথাটা সকালের খাবার টেবিলে বসে মহুয়া কথাটা তুললো। নিশান মহুয়ার সাথে সহমত হলেও নিশানের বাবা একটু অমত প্রকাশ করলেন।

– বাবা তুমি তো প্রতীককে দায়িত্ব দিয়েছিলে অন্য একটা কোম্পানি সামলানোর,আমি ওই কোম্পানিটার দায়িত্ব নিতে চাই।

নিশানের বাবা চমকে উঠলেন মেয়ের কথা শুনে।

– কি বলছিস তুই।
– বাবা মেয়ের স্বামীকে যখন এত দায়িত্ব দিয়েছিলে, এত বিশ্বাস করেছিলে তখন নিজের মেয়েকে বিশ্বাস করতে পারবে না।

নিশানের বাবা চুপ করে গেলেন। মেয়ের যুক্তি তর্কের সাথে পেরে উঠতে পারলেন না অগত্যা রাজি হয়ে গেলেন।

-ঠিকাছে তাহলে তাই হবে।

উনি খাবার টেবিল থেকে উঠে গেলেন। মহুয়া উঠে যেতে গেলেই মাথা ঘুরে পড়ে যেতে গেলে নিশান মহুয়া বলে চিৎকার করে মহুয়াকে ধরে নিলো।

– এই মহু তোমার কি হলো কথা বলো।
– বাবা ওকে নিয়ে ঘরে যা আর মিতা তুই একবার ডাক্তারকে ফোন কর।
– আচ্ছা মা।

মহুয়াকে কোলে তুলে নিয়ে নিশান ঘরে নিয়ে গেলো। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে মহুয়াকে দেখে বললেন….

– আপনাদের জন্য একটা নিউজ আছে।
– কি নিউজ ডক্টর।
– আপনি বাবা হতে চলেছেন।

ডাক্তারের কথা শুনে সকলেই খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। সবকিছু খারাপের মাঝে এই খবরটা সকলকে খুশি করে দিলো।

কিছুক্ষণ পর মহুয়ার জ্ঞান ফিরে আসলো। বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় নিজেকে দেখে বললো…
– কি হয়েছে, আমি এইখানে।
– আসতে আসতে এত তড়িঘড়ি করার কিছু নেয়।
– হ্যা ঠিক আছে বলো কি হয়েছে আমার।

নিশান একবার ওর মা, দিদির দিকে তাকালো। নিশানের চোখের ভাষা বুঝতে পেরে ওনারা ঘর ত্যাগ করলেন। নিশান মহুয়ার একটা হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বলে উঠলো..
– আজকে আমি কি খুশি তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না‌
– কি হয়েছে বলো।
– আমি বাবা আর তুমি মা হতে চলেছো।

মহুয়া খুশিতে কেঁদে দিলো, সকলেই খুব খুশি। নিশি,নিশির মা,অর্ক সকলেই দেখা করে গেছে মহুয়ার সাথে। মহুয়া নিশির মায়ের সাথে নিশি আর অর্কের বিয়ে নিয়ে কথা বলেছেন ওনার কোনো অসুবিধা নেয় বলে জানিয়েছেন।

২ বছর পর….

সারাঘর দৌড়ে বেড়াচ্ছে মিলন।

– মিলল বাবা দাঁড়া আর কত এই বুড়িটাকে দৌড় করাবি।
– ঠাম্মি আমাকে ধরতে পারে না পারে না।

নিশানের মা সোফাতে বসে হাঁপাতে লাগলেন। মিলন ওর ওনার সামনে এসে আদো আদো কন্ঠে বলল….
– ঠাম্মি তোমার কি হলো এইভাবে বসে পড়লে কেন কষ্ট হচ্ছে।

উনি মিলনকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন…
– তুই থাকতে আমার কি আর কোনো কষ্ট হতে পারে বাবা।

মিলন কিছু না বুঝে চুপ করে ঠাম্মির বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে থাকলো।

২ বছর কেটে গেছে, পরির্বতন হয়ে গেছে অনেককিছুই মহুয়া আর নিশানের ছেলে হয়েছে, নাম মিলন খুব দুষ্টু সারাদিন মাতিয়ে রাখে গোটা বাড়ি। নিশান আর মিতালী পারিবারিক বিজনেস টাকে আরো উন্নতি করিয়েছে, নিশান এখনো তার কাজ, তার মানুষ সেবার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। মহুয়া একজন বড়ো ডাক্তার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, শহরের সকলের মুখে একটা পরিচিত নাম ডক্টর মহুয়া আহমেদ।

নিশি আর অর্কের এনগেজমেন্ট হয়ে গেছে, নিশির মেডিকেল পড়াটা শেষ হলেই বিয়ের পিঁড়িতে বসবে দুইজন। ফুলের বিয়ে হয়ে গেছে অন্য একজনের সাথে, ফুল নিজেই পছন্দ করে অর্থাৎ ভালোবেসে বিয়ে করেছে। আর সাদিফ ওহ তার মায়ের পছন্দমতো মেয়ে করেছে বাধ্য হয়ে।

রাতে,, অফিস শেষ করে সকলেই ফিরে এসেছে, মিতালী চাইনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে তাই কেউ আর জোর করেনি থাকুক নিজের মতো।

মহুয়া হাসপাতাল থেকে আসতেই ছোট মিলন জড়িয়ে ধরতে গেলে।

– বাবাই ,, এখন না আগে আমি ফ্রেশ হয়ে নিই ।

মিলনের মুখটা ছোট হয়ে যায়। মহুয়া মুচকি হেসে ফ্রেশ হতে চলে যায়। হাসপাতালে থেকে ফেরার পর শরীরে অনেক জীবানু থাকে তাই মিলনকে কাছে আসতে দেয় না, নিজের ওহ তো ইচ্ছা করে সারাদিন পর ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরতে। গত ৬ মাস থেকে মহুয়া সম্পুর্ন ভাবে হাসপাতালে জয়েন হয়েছে, আগে এমার্জেন্সিতে আর সপ্তাহে ২ দিন হাসপাতালে থাকতো।

মহুয়া ফিরে এসে দেখলো নিশান মিলনকে কোলে নিয়ে বসে আছে। মহুয়া মিলনের দিকে হাত বাড়াতেই মিলন না এসে নিশানের বুকে মুখ গুজে দিলো, মহুয়া মুচকি হাসলো,ভালো করেই বুঝতে পারলো তার পিচ্চি ছেলেটা তার উপরে অভিমান করে আছে।

– আসবে না তো
– না।
– আচ্ছা ঠিকাছে তাহলে আমি আবার চলে যাচ্ছি।

মহুয়া উঠে যেতে গেলেই নিশানের কোল থেকে উঠে গিয়ে মিলন মহুয়াকে জড়িয়ে ধরলো। মহুয়া মুচকি হাসলো এইরকম করতে দেখে, মিলনের গোটা মুখে ভালোবাসার পরশ দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।

– আমাকে কেউ আদর করে না।( নিশান)
– কেন পাপা মাম্মাম তো তোমাকেও আদর করে অফিস যাবার আগে।

মিলনের এইরকম কথা শুনে নিশানের হেঁচকি উঠে যায়,মহুয়া চোখ বড়ো বড়ো করে মিলনের দিকে তাকিয়ে নিশানের দিকে রাগী চোখে তাকালো, মহুয়ার তাকানো দেখে নিশান শুকনো ঢোক গিললো।

-কি হচ্ছে এখানে।
– মামনি পাপা বলছে…

মিলনকে কিছু বলতে না দিয়ে মহুয়া বললো…
– বাবাই তূমি তোমার ঠাম্মির কাছে যাও তো। তোমার জন্য চকলেট এনেছি যাও।
– আচ্ছা।

মিলন চলে যেতেই মহুয়া দেখলো মিতালী সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে,নিশান আমতা আমতা করে কেটে পড়লো।

– কি হলো ব্যাপারটা।
– কিছু না।
– বলো বলছি।
– আসলে ….

মহুয়া মিতালীকে সবটা বললো, মিতালী তো হাসতে হাসতে শেষ সবটা শুনে। মহুয়া মুগ্ধ হয়ে মিতালীর হাসির দিকে তাকিয়ে থাকলো,এখন খুব একটা হাসতে দেখা যায় না মিতালী কে। অনকে দিন পর এইভাবে হাসলো। মহুয়াকে এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মিতালী হাসি থামিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো…

– কি দেখছো এইভাবে?
– তোমাকে।
– মানে? (ভ্রু কুঁচকে)
– কিছু না, বলো কেমন চলছে অফিস।
– ভালোই।

মিতালী মহুয়ার সাথে কথা বলতে লাগলো।

– ঠিকাছে আমি এবার উঠি।
– ওকে।

মিতালী চলে যেতেই মহুয়া উঠে গিয়ে একটা ঘরে প্রবেশ করলো..

– কি খবর এইদিকের।
– ম্যাম ওনার অবস্থা তো আরো খারাপ হচ্ছে।

মহুয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সামনে এগিয়ে গেলো।

#চলবে…

স্যাড না হ্যাপি এন্ডিং দেবো।

ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
হ্যাপি রিডিং

#মন_মহুয়ার_নেশা
#তানজিলা_খাতুন_তানু

(পর্ব_৩৩)

আমি ওনাকে দেখে নিচ্ছি যাও তুমি গিয়ে রেস্ট নাও।

মহুয়ার কথা শুনে নার্সটা চলে গেলো। মহুয়া দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিয়ে বিছানার পাশের একটা টুল নিয়ে বসে বললো…
– কি মিস্টার আহমেদ কেমন আছেন।

মহুয়ার কথা শুনে সে কিছু কথা বলতে চেষ্টা করলো।

– আহ এত কষ্ট করতে হবে না, ওয়েট আমি মাস্কটা খুলে দিই।

মহুয়া ওনার মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্কটা খুলে দিলো। খুলে দিতেই সে বলে উঠলো…
– এইভাবে কেন আমাকে তি’লে তি’লে শে’ষ করছো, আমাকে মু’ক্তি দাও। আমাকে মে’রে ফেলো।

মহুয়া বাঁকা হাসলো।

– আপনাকে মু’ক্তি দিলে আমার গায়ের জ্বালা যে মিটবে না, আপনাকে তিলে তিলে শে’ষ হতে দেখলেই যে আমার শা’ন্তি।
– আর কত কষ্ট দেবে আমাকে। ২ টো বছর তো কম হলো না।
– আর আমি যে গোটা ৫ বছর ধরে তিলে তিলে শে’ষ হয়ে গেছি। সাধারন মেয়ের জীবনটা আপনি আর আপনারা মিলে ন’রকে পরিণত করে দিয়েছেন। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আমি সহ হাজার হাজার মেয়ের জীবনটাকে শে’ষ করে দিয়েছেন।

মহুয়ার চোখটা ছলছল করে উঠলো। অতীতের পাতাতে ডুব দিলো….

আহমেদ ভিলাতে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। মহুয়ার শরীর খারাপ থাকাতে আজকে হাসপাতালে যায়নি,ভালোও লাগছে না তাই ছাদে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,একমনে কিছু একটা ভেবে চলেছে,তখনি ছাদে কারোর উপস্থিতি বুঝতে পেরে পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো নিশানের বাবা দাঁড়িয়ে আছেন।

– আপনি।
– হ্যা তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।
– আমারও আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।
– আমার সাথে কি কথা?

মহুয়া বাঁকা হেসে বলল…
– আচ্ছা বাদ দিন, আপনি বলুন কি বলবেন।
– ওকে, আমি চাই মৃন্ময় সিবিআই অফিসারের কাজটা ছেড়ে দিক।
– সেটা আপনি আপনার ছেলের সাথে কথা বলুন, আমাকে কেন বলছেন।
– মৃন্ময় তোমার কথা শুনবে,তুমিই পারবে ওকে মানাতে। আর একবার ভাবো এই পেশায় থাকা মানেই ওর লাইফ রি’স্ক আছে, কি হবে কখন কেউ জানে না আর আমি আমার ছেলের লাইফ নিয়ে কোনো প্রকারের রিস্ক নিতে চাই না।

মহুয়া নিশানের বাবার দিকে তাকিয়ে থাকলো,এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে উনি বলে উঠলেন…
– এইভাবে তাকিয়ে কি দেখছো।
– আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দিন তো।
– কি বলো।
– আপনি কিভাবে জানলেন নিশান একজন সিবিআই অফিসার। আমরা কয়েকজন ছাড়া এই কথাটা তো আর কারোর জানার কথা নয়।

মহুয়ার এইরকম প্রশ্ন শুনে উনি একটু ঘাবড়ে গেল।কি বলবে আমতা আমতা করতে লাগলো।

– আচ্ছা আপনাদের তো অর্থের অভাব ছিলো না তবুও কেন এই পেশা বেছে নিলেন?

মহুয়ার এইকথাটা শুনে উনি চমকে উঠলেন।

– কি বলছো তুমি এসব।
– আমার কাছে কিছু লুকিয়ে লাভ নেয় আমি সবটাই জানি। আপনি আজকে নিজে থেকে আমার কাছে ধরা না দিলে আমি কখনোই আপনার মুখোমুখি হতাম না কিন্তু আপনি যখন নিজে এসেছেন তখন আমি আপনাকে ছাড়ছি না।
– কি করবে তুমি।
– কিছু না আপনাকে আমি কিছু বলবো, আর না কাউকে কিছু বলবো। শুধু আমাকে কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিন তো।

উনি চুপ করে আছেন।

– (১) এই পেশায় কেন আসলেন,কেন এইভাবে মেয়েদের জীবনটাকে শে’ষ করে দিলেন।
(২) আমার মা বাবাকে কেন মা’র’লেন।
(৩) প্রতীককে কিভাবে এই পেশাতে আনলেন।

উনি হা হা করে হেসে উঠলেন।

– তুমি যখন আমার সবকিছু জেনেই গেছো তাহলে আর লুকিয়ে লাভ নেয় তাহলে শোনো হ্যা আমিই এই সবকিছুর লিডার। এই নারী পা’চা’র’কারী চ’ক্রে’র মাথা আমিই। আর কি বলছিলে তুমি কেন এই পেশাটাকে আমি বেছে নিলাম অর্থের লোভটা মারাত্মক, বিজনেস থেকে যেটা আসতো সেটা তো পরিবারের সদস্যদের মাঝে বন্টন হয়ে যেতো আমার নিজের বলতে কিছুই থাকতো না আমার অনেক টাকার প্রয়োজন ছিলো, আর এই কাজটা থেকে আমি অনেক অনেক টাকা পেয়েছি অনেক টাকা।

মহুয়া ঘৃনার দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকালেন। অর্থের লো’ভ মা’রা’ত্ম’ক। মানুষ অর্থের লোভে নিজের মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলে অমানুষে পরিনত হয়ে যায়।

– প্রতীক। প্রতীক তো আমার খেলার একটা ঘুঁটি মাত্র, নিজেকে সেভ রাখার জন্য একটা মানুষের প্রয়োজন ছিলো আমার, প্রতীককে আমি মিতালীর আছে বিয়ে দিয়েছি শুধুমাত্র নিজের স্বার্থে। প্রতীককে সামনে রেখে খেলেছি আমি। আর তোমার বাবা আমার সম্পর্কে সবকিছু প্রায় ধরেছিলো তাই ওনাকেও সরিয়ে দিতে হলো আর সাথে তোমার মাও এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলো। আজ পর্যন্ত যারা যারা আমার পথে বাঁধা হিসাবে এসেছে তাদের কাউকেই আমি বাঁ’চতে দিইনি, তুমিও বাঁ”চ’বে না…

উনি হেসে উঠে মহুয়াকে ধাক্কা দিতে এগিয়ে গেলো, মহুয়া ছাদের কিনারায় দাড়িয়ে আছে, মহুয়া উপর ওয়ালাকে স্মরন করতে লাগলো, ভাগ্য কি খেল দেখাবে কেউ জানে না।

বর্তমান…..

বিছানায় শুয়ে থাকা মানুষটা আর কেউ নয় নিশানের বাবা। গত ২ বছর ধরে এই বিছানায় ওনার জায়গা।

– সবকিছুর জন্য আমাকে কি মাফ করা যায় না।

– মাফ,, মাফ যাওয়ার কথা বলতে আপনার লজ্জা লাগছে না। এতকিছু অন্যায় করার পরেও আপনি কি করতে গেলেন আমাকে মা’রতে চাইছিলেন। আমার অনাগত সন্তানকে মা’রতে চেয়েছিলেন এইসব কিছুর পরেও কি আপনাকে মাফ করা যায়। আপনি তিলে তিলেই শে’ষ হবেন।

মহুয়া নিশানের বাবার মুখে মাস্কটা পরিয়ে দিয়ে, দরজা খুলে বের হয়ে যাবে বলে দরজা খুলে সামনে তাকিয়ে চমকে উঠলো….

– তুমি।
– কি করছিলে ওই ঘরে।
– বাবাকে দেখলাম।
– ওহ।
– আমি একবার মায়ের ঘরে যাবো।
– আচ্ছা যাও।

মহুয়া পাশ কাটিয়ে চলে যেতেই নিশান ওর বাবার ঘরে ঢুকলো। নিজের জন্মদাতা পিতাকে এইভাবে বিছানায় শুয়ে থেকে তিলে তিলে শে’ষ হতে দেখে কার না কষ্ট হয়। কিন্তু কিছুই যে করার নেয়। ছাদ থেকে প’ড়ে গিয়ে মাথায় চো’ট পেয়ে এইভাবে অসু’স্থ হয়ে পড়েছে। কখনো কিছুটা সুস্থ হয় আবার অসু’স্থ হয়ে পড়ে।

– বাবা কেমন আছো।

নিশানের বাবা কিছু বলতে পারলেন না। নিশান তার সারাদিনের ব্যস্ততার কথাগুলো বাবার কাছে বলতে লাগলো,নিশানের বাবার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।

মহুয়া নিশানের মায়ের ঘরে এসে দেখলেন উনি বই পড়তে ব্যস্ত আছেন।

– কি করছো মা।
– এই তো। তা কোথা থেকে আসলে।
– বাবার ঘর থেকে।
– ওহ।
– মা একটা কথা বলবো।
– আর যাই বলো ওই মানূষটাকে মাফ করার কথা বলো না।

মহুয়া চুপ করে গেলো। এই বাড়িতে নিশানের বাবার আসল সত্যি কথাটা কেউ না জানলেও নিশানের মা জানতেন।

– মহুয়া তুমি নিজেও তো মাফ করতে পারোনি, তাহলে কেন আমাকে বলো মাফ করতে।
– মা আমার বিষয়টা তো আলাদা।
– আলাদা হোক আর যাই হোক অ’পরা’ধী অপ’রা”ধীই হয়। আর উনি তো একটা অ’ন্যায় করেনি দিনের পর দিন একটার পর একটা অ’ন্যায় করেই চলেছিলেন‌ এমন কি তোমাকেও মা’রতে চেষ্টা করছেন।

মহুয়া মাথা নীচু করে নিলো প্রতিটা কথাই সত্যি। মানুষ একটা অপ’রাধ ডাকতে একটার পর একটা অপ’রাধ করেই চলেন আর শেষ প’রি’ণতিটা ওইটাই হয়।

#চলবে…

আশা করি সকলের কাছে সবকিছু পরিস্কার হয়ে গেছে। যদি আর কোনো কিছু কারোর কাছে অপরিস্কার থাকে তাহলে বলতে পারেন,পরর্বতী পর্বের সেটাও ক্লিয়ার করে দেবো।

ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
হ্যাপি রিডিং ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here