#মন_মহুয়ার_নেশা-০৬,০৭
#তানজিলা_খাতুন_তানু
(পর্ব_৬)
সমস্ত রেডি শুধুমাত্র মহুয়াকে নিয়ে যাওয়াটা বাকি। লোকগুলো মহুয়ার দিকে তাকিয়ে আফসোসের স্বরে বললো…
– মা**লটা মিস হয়ে গেলো।
– আমার ওহ না ইচ্ছা করছে না এটাকে ছাড়তে কিন্তু এটাকে না ছাড়লে আমাদের লস হয়ে যাবে।
– হুম।
– ওই বে
সমস্ত কিছুশি চিন্তা করিস না এমনিতেই তোরা অনেক ভো**গ করেছিস আর কাউকে নিয়ে টানিস না ( তৃতীয় ব্যক্তি তীক্ষ্ণ স্বরে বললো)
– কেন রে তুই কি সাধু পুরুষ নাকি। এমন ভাব করছিস জানো কিছুই করিস না
– হ্যা আমি করি,মেয়েদের বি*ক্রি করি কিন্তু কোন মেয়েকে ন*ষ্ট করি নি,না কাউকে খু**না করেছি কখনো।
তিনজনের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়ে যায়। তখনি একজন কোর্ট পড়া লোক এসে ওদের ধমক দেয়।
– তোমার কি একটু চুপ করবে। আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে, ঝামেলা করলে চলবে না।
– ওকে স্যার।
– এই মেয়েকে নিয়ে আমাদের এখুনি এই জায়গা ছাড়তে হবে। এই গ্রামে আপাতত কোনো কাজ হবে না ,আমাদের টার্গেট এইবার অন্য কিছু হবে।
– ওকে স্যার।
মহুয়াকে নিয়ে ওরা সকলেই বের হয়ে যায়। মহুয়া সবটাই শুনেছিলো ওর বুঝতে অসুবিধা হলোনা চর্তুথ ব্যক্তিটি ওদের লিডার।
মহুয়াকে একটা লরির মাঝে রাখা হয়েছে,আশা পাশে অনেকগুলো মেয়েই আছে। মহুয়া একটা বাঁকা হাসি দিয়ে নিজের চোখটা বন্ধ করে নিলো।
মহুয়া যখন নিজের চোখ খুললো দেখলো সে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। প্রথমে কিছুই বুঝতে না পারলেও পরে বুঝলে সে নিরাপদ আছে। তখনি কেবিনে প্রবেশ করলো অর্ক।
– এখন কেমন লাগছে তোর।
– আমি হাসপাতালে কেন কি হয়েছিলো আমার।
– তোকে অজ্ঞান করা হয়েছিল ডার্গস দিয়ে সেটার প্রভাবেই আবারো জ্ঞান হারিয়েছিলি। এখন কেমন লাগছে।
– আমি ঠিক আছি। এবার বল সবাই কী ধরা পরেছে। আর মেয়েগুলো ঠিক আছে তো।
– হ্যা মহু সবাই একদম ঠিক আছে। তবে দলের অন্য সদস্যদের ধরা গেলেও মেন লিডারকে ধরা যায় নি।
– হোয়াট?
– ইয়েস আমরা অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু মেন লিডারকে ধরতে পারলাম না,যথেষ্ট চতুরতার সাথে সে বেড়িয়ে গেছে আর বাকিরাও কিছু বলছে না।
– আমি কী সবার সাথে একবার দেখা করতে পারি।
– তুই।
– হুম একবার।
– আচ্ছা ঠিকাছে তবে এখন নয় কালকে সকালে এখন রেস্ট নে তুই।
– ওকে।
মহুয়া শুয়ে শুয়ে নিজের হিসাব মেলাতে লাগলো আর অর্ক আগের ঘটনা থেকে ঘুরে আসলো।
ফ্ল্যাশব্যাক…
মহুয়া ডার্গসের প্রভাবে জ্ঞান হারানোর কিছুক্ষন পরেই ট্রাকের সামনে কয়েকটা গাড়ি দাঁড়ায়,অর্ক তার গোটা টিম নিয়ে উপস্থিত হয়ে গেছে,সাথে নিশান ওহ ছিলো। মহুয়া আন্দাজ করেছিলো এইরকম কিছু একটা হবে তাই নিজের সাথে একটা গোপন ক্যামেরা আর ট্রান্সমিটার লাগিয়ে নিয়েছিলো। প্ল্যান মতোই অর্ক সবটা রেডি করেছিলো, তবে সবটা একার পক্ষে করা সম্ভব ছিলো না তাই মহুয়া বলেছিলো..
– অর্ক তোর যদি মনে হয় তুই একা পারবি না একজনকে দরকার বিশ্বস্ত একজনকে দরকার তাহলে নিশান কে জানাবি।
– কিন্তু মহু আমার দলের লোক থাকতে নিশান কে কেন?
– অর্ক তুই বুঝতে পারছিস না এই দলটা কোনো ছোট দল নয়, অনেক বড়ো পা*চার কারী দল তাই এদের আইনের অনেক লোকের সাথেই যোগাযোগ থাকবে এটাই কিন্তু স্বাভাবিক। তাই এই ভুলটা করিস না একদম শেষ মুহূর্তে গিয়ে তবেই সবাইকে বলবি।
– কিন্তু নিশান কি বিশ্বাসযোগ্য।
– তুই আমাকে বিশ্বাস করিস তো।
– হুম।
– তাহলে আমার কথাটা শোন।
– ওকে।
অর্ক কিছু বিষয় সামলাতে পারলেও একজনের পক্ষে সবটা করা সম্ভব ছিলো না তাই বাধ্য হয়েই নিশান কে সবটা জানায় নিশান খুব অবাক হয়েছিলো কথাগুলো,মহুয়া ওকে বিশ্বাস করে কাজটার দায়িত্ব দিয়েছে এটা শুনে খুব খুশি হয়েছিলো। ।
অর্ক আর নিশান মহুয়াকে ট্র্যাক করে দল নিয়ে চলে যায়। আচমকা শেষ মুহূর্তে এইভাবে সবটা শেষ হয়ে যাবে পাচারকারী দল ভাবতে পারেনি সকলেই ধরা পরে কিন্তু লিডার কে ধরা যায়নি, চেয়ারম্যান সাহেবের শ্যালককেও আটক করা হয়েছে। মেয়েগুলো এখন সম্পূর্ণ নিরাপদ তবে কাউকেই এখনো বাড়ি পাঠানো হয়নি অর্কের আন্ডারেই মেয়েগুলো আছে।
বর্তমান…
অর্ক নিজের ভাবনা থেকে বের হয়ে বাইরে চলে যায়। তারপরেই গুটি গুটি পায়ে নিশান মহুয়ার বেডের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ঘুমন্ত মহুয়াকে নিস্পাপ লাগছে, অপরূপ সুন্দর লাগছে। নিশান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে যেতে গেলেই মহুয়া ওর হাতটা টেনে ধরলো… নিশান চমকে মহুয়ার ধরা হাতটার দিকে তাকালো…
– চলে যাচ্ছো কেন।
– আপনি ঘুমাচ্ছিলেন তাই।
মহুয়া হাতটা ছেড়ে দিয়ে উঠে বসলো,তারপরে গাল ফুলিয়ে বললো…
– এখনো আপনি বলবে আর আমাকে দ্যাখো আমি তোমাকে তুমি বলছি।
– আপনি একজন শিক্ষিত মেয়ে আমি কিভাবে আপনাকে তুমি বলো।
– আমরা কি বন্ধু হতে পারি না।
– বন্ধু। (অবাক হয়ে)
– হুম বন্ধু, তোমার মতো একজন আমার বন্ধু হলে আমি খুব খুশি হতাম।
– তাই।
– হুম।
– আচ্ছা হবো।
– থ্যাঙ্কু
মহুয়া হেসে দিলো, নিশান ওহ মহুয়ার হাসি দেখে হেসে দিলো।
পরেরদিন…
মহুয়া অর্কের সাথে পা**চা**রকারী দলের সাথে দেখা করতে এসেছে। তিনজন লোক বসে আছে,আর একপাশে জিসান মাথা নিচু করে বসে আছে।
– আপনাদের সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।
সকলেই মাথা তুলে মহুয়ার দিকে তাকালো। মহুয়াকে দেখে জিসান একটু অবাক হলো.
– আপনি।
– আমি আপনাদের কিছু কথা বলবো।
– কি কথা (জিসান)
– আপনাদের লিডার কে?
কথাটা শুনে বাকি তিনজন একে অপরের মুখ চাওয়া- চাওয়ি করতে লাগলো। জিসান মাথা নীচু করে ফেললো।
– কি হলো চুপ করে আছেন কেন?
– আমরা তোমাকে এসব কিছুই বলবো না তুমি যেতে পারো। নিজের প্রা**ন ফিরে পেয়েছো এটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকো আর এই গ্রাম থেকে অনেক দূরে চলে যাও।( প্রথম ব্যক্তি)
কথাটা শুনে মহুয়া মুচকি হেসে বললো..
– মহুয়ার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেউ কখনোই তাকে দিয়ে কিছু করাতে পারেনি,এখনো পর্যন্ত যা হয়েছে সবটাই আমার ইচ্ছাতে আমার প্ল্যান মতো।
মহুয়ার কথাটা শুনে কৌতুহলী চোখে সকলেই তাকালো এমনকি অর্ক ওহ।
– অবাক লাগছে আমি কি বলছি তাই তো। সব বলবো কিন্তু আগে আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর দিন সবাই।
কেউই আর কিছুই বলছে না। মহুয়া সবার দিকে একপলক তাকিয়ে বললো…
– আপনারা এই দলের সাথে যুক্ত হলেন কিভাবে?
প্রশ্নটা শুনে সকলেই চমকে উঠলো। মহুয়া জিসানের সামনে দাঁড়িয়ে বললো..
– জিসান আপনি তো ভালো পরিবারের ছেলে,আপনি কিভাবে এই দলের সাথে যুক্ত হলেন।
জিসান চুপ করে আছে।
– বলুন জিসান বলুন।
কিছুক্ষণ পর জিসান বললো…
জিসানের কথা শুনে সকলেই বিশেষত মহুয়া চমকে উঠলো।
#চলবে…
#মন_মহুয়ার_নেশা
#তানজিলা_খাতুন_তানু
(পর্ব_৭)
-অনেকসময় নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে হয় মহুয়া। যেটার কারন, অপরাধবোধ সবকিছুই তাকে ঘিরে ধরে,না পারে ম*র*তে আর না পারে মাঅনেকসময়*র*তে।( জিসান)
– মানে? (মহুয়া)
– বললাম না ইচ্ছার বিরুদ্ধে।
– কারনটা কি আমি জানতে চাই জিসান। আপনি কেন বুঝতে পারছেন না আপনি আর আপনারা মুখ না খুললে সব শাস্তি আপনারা একা পাবেন আর আসল কালপ্রিট মুক্ত হয়ে থাকবে।
– সবার বিষয়টা জানি না তবে আমি কখনোই নিজের মুখ খুলতে পারবো না মহুয়া,আমাকে ফাঁ**সি দিয়ে দাও তাও ভালো কিন্তু তবুও আমি কিছু বলবো না মাফ করো আমাকে।
মহুয়া আর অর্ক একে অপরের দিকে তাকালো। মহুয়া বুঝলো এইভাবে সবার সামনে নয় আলাদা ভাবে সবাইকে ট্রিট করতে হবে তবেই হবে তাই অর্ককে ইশারা করলো জিসানকে বাদে সবাইকে আলাদা রুমে নিয়ে যাবার জন্য। অর্ক কথামতো সবটাই করে।
– জিসান আপনি কী এইভাবে চুপ করে থাকবেন। আপনার পরিবারের মানুষদের কি হবে ভেবে দেখছেন।
– জীবনটা এতটাও সহজ নয় মহুয়া। আর আমাদের মতো পা*চা*রকারীদের জীবনেও অনেক রহস্য লুকিয়ে থাকে যা কখনোই উদঘাটন করা সম্ভব হয় না।
– আমি জানতে চাই কি কারন আপনি একটা ভালো পরিবারের ছেলে হয়ে এইভাবে এই দলের সাথে যুক্ত হয়ে পড়লেন উত্তর দিন।
জিসান ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারলো মহুয়া তার উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত যাবে না। তাই মাথা নিচু করেই বললো…
– খুব ইচ্ছা ছিলো আইনের রক্ষক হবো কিন্তু কখনোই ভাবিনি আইনের রক্ষক হতে গিয়ে আইনের ভ*ক্ষ*ক হয়ে উঠবো।
– মানে?
– আইন নিয়ে পড়াশোনা করছিলাম, সেই সূত্রে অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়। কখন কীভাবে নিজের অজান্তেই এই সব কাজের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছিলাম তখন উপলব্ধি করিনি। কিন্তু যখন করলাম তখন সব শেষ..
একদিন হুট করেই দিদি আর দুলাভাই আমাকে ফোন করে গ্রামে আস্তে বললো,,আমি খুব অবাক হয়েছিলাম সেইদিন ওদের কন্ঠে ভয় দেখেছিলাম খুব। বাড়িতে এসে যেটা দেখলাম সেটা আমার ধারনার বাইরে ছিলো..
– কি হয়েছিলো সেই দিন
– রিয়া রে*প*ড হয়েছিলো।
– রিয়া কে?
– গ্রামের চেয়ারম্যান সাহেবের একমাত্র মেয়ে মানে আমার ভাগ্নি। রিয়া আমার বড্ড আদরের ছিলো বয়সের ডিফারেন্সটা খুব বেশি না হওয়াতে আমাদের মাঝে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিলো রিয়াকে এই অবস্থাতে দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। আইনের আশ্রয় নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি।
– কেন?
– তার জন্য দায়ী আমার দিদি।
– মানে?
জিসান মাথা নীচু করে বললো..
– দিদির অ*বৈ**ধ সম্পর্ক ছিলো একজনের সাথে,আর তার সাথে কিছু অ*শ্লী*ল ভি*ডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে রিয়ার ঘটনাটা ধামা চাপা দেওয়া হয়।
বিষয়টা একটু যেন কিরকম লাগলো মহুয়ার কাছে। রিয়ার মায়ের ভিডিও ওই লোকের কাছে গেলো কিভাবে আর ভিডিও দিয়ে রিয়ার ঘটনা ধামা চাপা দেওয়ার মানে কী? তাহলে কি সবটাই প্ল্যান মাফিক।
– একটা প্রশ্ন ছিলো আমার, আপনার দিদির ভিডিও এর সাথে রিয়ার ঘটনাটার কি সম্পর্ক।
– এটা তো আমিও বুঝে উঠতে পারিনি।আমার মনে হয় এইসব টাই একজনের কাজ।
– কিন্তু সেটা কে? আর আপনার দিদির সম্পর্ক কার সাথে ছিলো এটা কি জানতে পেরেছেন।
– না ।। দিদি এইসব আঘাত সহ্য করতে না পেরে আ*ত্ম_হ*ত্যা করেন।
মহুয়া ভ্রু কুঁচকে বললো…
– তাহলে সমস্যা আংশিক মিটেই গেলো।
জিসান তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল..
– সবকিছু যদি এতই সহজ হতো তাহলে কখনোই এই খানে আমি থাকতাম না।
– হেঁয়ালি না করে বলুন।
– দিদি মা**রা যাবার পর দিনেই রিয়াকে কিডন্যাপ করা হয়, ওই অসুস্থ শরীরে মেয়েটা এখনো কোথায় আছে সেটাও আমরা জানি না।
– এখনো জানেন না !( অবাক হয়ে)
– না সেইদিন…
ফ্ল্যাশব্যাক…
– জিসান আমাদের তো সবকিছুই গেলো, আমি ভাবছি রিয়ার ঘটনাটা নিয়ে ত*দ*ন্ত করতে।
– হ্যা দুলাভাই আমিও চাই অ*ন্যায়*কারী শা*স্তি পাক। আর আমি ওকে নিয়ে শহরে চলে যাবে, চিকিৎসা করাবো দেখবে একদম ঠিক হয়ে যাবে।
– সত্যি কি ঠিক হবে।
– হ্যা হবে।
দুজনের আলোচনার মাঝে রিয়ার ফুপি দৌড়ে আসলেন।
– কি হয়েছে তুই এইভাবে দৌড়ে আসলি কেন?
– দাদা সর্বনাশ হয়ে গেছে, রিয়া কে কি*ড*ন্যাপ করা হয়েছে আর এই দ্যাখো একটা চিঠি।
চেয়ারম্যান সাহেব তাড়াতাড়ি করে চিঠিটা খুলে পরতে লাগলেন…
রেহানা ম**রে গেছে বলে ভেবো না তোমরা সকলেই নি*রা*পদে আছে। তোমাদের জীবনটা আরো অনি*রা*পত্তা হীন হয়ে গেলো। রেহানার ছবি বাদেও আমার কাছে কিন্তু রিয়ার ওহ ভিডিও,ছবি আছে। আর তোমাদের মা*র*না*স্ত্র রিয়া এখন আমার কব্জায়। যতদিন না আমার কাজ শেষ হচ্ছে ততদিন নিজেদের মুখ রাখবে আর নাহলে মেয়ে আর রাজত্ব সবটাই হা*রাবেন চেয়ারম্যান সাহেব। আমার কাজ শেষ হলে আমি নিজেই রিয়াকে দিয়ে দেবো ততদিন আমার কাজ ই থাকবে, কোনো চালাকি করার চেষ্টা করবেন না নাহলে সব শেষ।
আর জিসান তুমি নিজের অজান্তেই এই চক্রের সাথে জড়িয়ে গেছো তাই এই চক্রের বাইরে যাবার চেষ্টা করো না বের হতে পারবে না উল্টে আরো জড়িয়ে যাবে যেটা তোমাদের জন্য ভালো হবে না। যদি নিজের ভাগনি কে জী*বিত দেখতে চাও তাহলে আমার কথামতো কাজ করবে। আর না যদি করো তোমার ক্যারিয়ার, রিয়ার জীবন এমনকি তোমাকেও শে**ষ করে দেবো মাইন্ড ইট।
বর্তমান…
– তার পরে আমি বাধ্য হয়েই ওদের সাহায্য করতে থাকি এইভাবেই আসতে আসতে আরো জড়িয়ে পরলাম।
– মানে কী?
– গ্রামের কিছু মেয়েকে নিজের প্রেমের ফাঁদে ফেলে আমি ওদের হাতে তাদের তুলে দিতাম। এইভাবেই চলছিলো। নিশিকেও এইভাবেই করেছিলাম।
জিসান মাথা নিচু করে আছে। মহুয়া চমকালো না জানো জানতো এইরকমই কিছু হবে।
মহুয়া ঘর থেকে বের হয়ে যায়। অর্ক মহুয়াকে আসতে দেখে বললো..
– কি বুঝলি।
– এটা অনেক বড়ো একটা ফাঁদ। জিসানকে আর পুরো পরিবারকে খুব ভালো ভাবে ফাঁসানো হয়েছে,যাতে কেউ বের হতে না পারে।
– নেক্সট প্ল্যান কী?
– রিয়াকে উদ্ধার করা।
– রিয়া কে?
– চেয়ারম্যান সাহেবের একমাত্র মেয়ে।
– কিন্তু কি করবো,আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
– অপেক্ষা কর,সব জানতে পারবি। আগে চল বাকিদের সাথে কথা বলি একটু।
– চল
বাকি তিনজন একসাথে আছে।
– আপনারা এই দলের সাথে যুক্ত হলেন কেন, আর কীভাবে। দেখুন আপনারা না বললে কিন্তু আপনাদেরই ক্ষতি তাই ভালো হবে সত্যি টা বলা।
কিছুক্ষণ সবকিছুই চুপচাপ। তৃতীয় ব্যক্তি বলতে শুরু করলেন।
– মানুষের সবথেকে প্রয়োজনীয় জিনিস হলো টাকা। আর টাকার প্রয়োজনেই ছাত্রসমাজ এই নোংরা জিনিসের সাথে জড়িয়ে পড়ে।( তৃতীয় ব্যক্তি)
– টাকাই কি মানুষের জীবনে সবকিছু?(মহুয়া)
– একজন দরিদ্র পরিবারের সন্তানের জন্য টাকাটা অনেক দামী। টাকা না থাকার কারণে তারা ভালোভাবে জীবন যাপন করতে পারে না,ভালো খাবার খেতে পারে না নিজেদের ইচ্ছা মেটাতে পারে না তারা যখন তাদের ইচ্ছাগুলো মেটানোর সুযোগ পাই তখন সঠিকটা উপলব্ধি করতে পারে না। মাথায় শুধুমাত্র একটাই কথা ঘুরে বেড়ায় আমাকে এই কাজটা করতে হবে,টাকা আনতে হবে। এইভাবেই জড়িয়ে যায় সমাজের বিভিন্ন খারাপ কাজের সাথে।
কথার পরিপ্রেক্ষিতে আর কিছুই বলে উঠতে পারলো না কেউ। সবটাই রেকর্ড করা হয়েছে বয়ান হিসাবে। বাকি দুজন ওহ টাকার প্রয়োজনে এই দলে এসেছে। তবে তাদের মাঝে নারীদের নিয়ে খে*লাটা একটা নেশায় পরিনত হয়েছিলো কিন্তু তৃতীয় ব্যক্তিটি খারাপ কাজের সাথে যুক্ত থাকলেও মেয়েদের নিয়ে খে*লেনি। কিছুটা হলেও নিজের বিবেক বোধটাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলো।
সবকিছু শেষে মহুয়া অর্কের সাথে কথা বলে বাকি মেয়েদের নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করেছে।
৩ দিন পর…
#চলবে…
বিঃ দ্রঃ…
সমাজের একটি দিক তুলে ধরা হলো সংক্ষেপে। অর্থের অভাব থেকে শুরু হয় অর্থের নেশা আর সেই নেশায় মানুষকে অ*মানুষে পরিনত করে।
কয়েক পর্ব পর থেকে গল্পের মোড় অন্যদিকে নেবে। সামাজিকতা পাশাপাশি গল্পে যোগ হবে রোমান্টিকতা। আশা করি পাঠকদের কাছে ভালো লাগবে। সকলে বেশি বেশি কমেন্ট করুন।আর গল্পপ্রেমীদের কাছে পৌঁছে দিন?
হ্যাপি রিডিং ?