গল্পের নাম:মরভূমি,পার্ট:1
লেখক:আঃরব
সারা ঘরে রক্তে মাখামাখি হয়ে গিয়েছে। কারণ,একটু আগেই নিজের আম্মুকে নিজের হাতে খুন করলাম!
কি কথাটা শুনে খুব অবাক হচ্ছেন!? এখানে অবাক হওয়ায় তেমন কিছুই নেই।এটা একটা সাধারণ ব্যপার!
আর এই সব ফালতু ভাবনা করার মতো আমার হাতে সময়ও নেই!
হা হা হা!
খুন করে অনেক ক্লান্ত লাগছে। অনেকক্ষণ হাতাহাতি করেছি,তারপর গলাই প্যাচ বসিয়ে দিয়েছি।অনেক ছটফট করছিল।নলিটা কেটে যাওয়ার কারণে তেমন চিৎকারও করতে পারেনি।আর এমনিতেও চিৎকার করে তেমন একটা লাব হতো না।কারণ,আমি খুব জোরে বক্স বাজিয়ে দিয়েছি। এখন একটু বসে রেষ্ট নিই।
——————————————————-_—————-
আজ বিকেলে শহরের একটা দোকানে গিয়েছিলাম। দোকানে গিয়ে বললাম, “ভাই আপনার দোকানের সব থেকে দামি এবং ধারালো ছুরি টা দেন।
দোকানদার আমার দিকে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে বললো,” ভাই এত ধারালো আর দামি ছুরি দিয়ে কি করবেন?
আমি:একজন কে উপরওলার কাছে পাঠাবো।তিনি ডাক দিয়েছেন। তার ডাকে সারা না দিলে তিনি আবার রাগ করবে।তিনাকে কেউ হাজার বার ডাক দিলেও তিনি একবার সারা না দিলেও তাতে কোন সমস্যা নেই।কিন্তু তিনার ডাকে সারা না দিলে তিনি আবার রেগে যাবে।
কি আযব বিষয় তাই না?হা হা হা!
দোকানদার হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি:হা করে না দেখে ছুরিটা দেন।আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।
দোকানদার আমার কথায় তড়িঘড়ি করে একটা ধারালো ছুরি দিল।
আমি পকেট থেকে একটা ১০০০ টাকার নোট ধরিয়ে দিয়ে বাড়ির দিকে হাঁটা দিতে লাগলাম।
ছুরিটার দাম হবে হয়তো ১০০ টাকা মতো।
দোকানদার মনে মনে ভাবছে, লোকটা কি পাগল নাকি?মাথায় সমস্যা আছে নাকি?
সে যায় হোকনা কেন,তাতে আমার কি।এমন পাগল প্রত্যেকদিন জুটলে আমি কয়েকদিনের ভিতরে সব থেকে বড় লোকদের তালিকায় চলে আসবো!
ছুরিটা পকেটে।আর হাতে একটা সিগারেট নিয়ে হাঁটছি।সিগারেটে টান দিলে কত মজা সেটা সুধু সিগারেট খোর গুলোই জানে।
নিকোটিনের বিষাক্ত ধোঁয়া একবারে কলিজায় গিয়ে লাগে।শালার কলিজা!এখানে সুধু নির্মমতা রাখতে হয়,ভালোবাসা নয়।
হা হা হা!
আমি খুব কষ্ট পেলে কান্না করিনা।হাসি খুব হাসি।কারণ আমি অভিনয় করতে খুব ভালো পারি।
মিথ্যে অভিনয়।
হা হা হা!
সিগারেট টানতে টানতে চলছি গন্তব্যের উদ্দেশে।
শহরের পর একটা গ্রাম,তারপর আমাদের গ্রাম।
শহর থেকে প্রায় ১০কিঃমিঃ হবে।বাসে ১০টাকা ভাড়া নেই।
কিন্তু আমি পায়ে হেঁটেই চলেছি।বাসের প্রয়োজন নেই।পায়ে হেঁটে চলার মজাটাই আলাদা।আর সাথে যদি প্রিয় ব্যক্তিটা থাকে তাহলে আর কোন কথায় নেই।
আর আমার প্রিয় ব্যক্তিটা হলো সিগারেট!
আই লাব নিকোটিন।
কলিজাটা পুড়িয়ে কালো করে দে।কলিজার ভিতর কোন রকম ভালোবাসা রাখবি না।
শহর পার হয়ে একটা গ্রামে ঢুকলাম।গ্রামে ঢুকতেই ছোট একটা বাচ্চার সাথে আমার ধাক্কা লাগলো।বাচ্চাটার পিছনে তার মা-ও আছে।
বাচ্চাটার মায়ের হাতে খাবারের প্লেট।
বাচ্চাটা আমার পিছনে এসে লুকালো।
বচ্চাটার আম্মু আমাকে বললো,”দেখেছো বাবা ছেলেটা কত দুষ্ট। একদম আমার কথা শোনেনা।এই ভাত গুলো কখন থেকে খাওয়ানোর চেষ্টা করছি।কিন্তু একদম খেতে রাজি নয়।
আমি বাচ্চাটার সামনে বসে বললাম,”সব সময় আম্মুর কথা শুনতে হয়।আম্মুর কথার কখনো অবাধ্য হতে নেই।কারণ,সৃষ্টি কর্তা তিনার পায়ের নিচে জান্নাত রেখেছেন।
তারপর বাচ্চাটার হাতে একটা হাজার টাকার নোট ধরিয়ে দিয়ে চলে আসতে লাগলাম।
অবস্য বাচ্চাটার মা আমার এই কাজে অবাক হয়েছে হয়তো।আর অবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক।
তারপর হাঁটতে হাঁটতে বাড়ির সামনে এসে পৌঁছালাম।
কলিংবেল বাজাতেই আম্মু দরজাটা খুলে দিল।
আম্মু:আজ সারাদিন কোথায় ছিলি?
আমি:শহরে গিয়েছিলাম।
আম্মু:শহরে কেন?
আমি:একটা দরকার ছিল।
আচ্ছা তুই একটু ফ্রেস হয়ে নে।আমি চা দিচ্ছি।
আমি কিছু না বলেই ওয়াশরুমে চলে গেলাম।আম্মুও চা বানাতে চলে গেল। আমি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বক্সে গান চালু করে দিলাম।
তারপর সোফায় এসে বসলাম।
রান্না ঘর থেকে আম্মু চা নিয়ে আসলো।
আমি হাতে চা নিয়ে একটা চুমুক দিলাম।
চায়ের কাপটা ট্রি-টেবিলে রেখে আম্মুকে বললাম,”আচ্ছা আম্মু আপনার যদি কেউ কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করে তখন কি করবেন?
আম্মু:আমার ছেলে থাকতে আমার কে কি ক্ষতি করবে?
আমি:আর ক্ষতিটাই যদি আমিই করি?
আম্মু:তার মানে?
আমি পকেট থেকে ছুরিটা বের করে আম্মুর উপর আক্রমণ করে দিলাম।আম্মু নিজেকে বাচানোর অনেক চেষ্টা করলো।কিন্তু অবশেষে ব্যর্থ হলো।
ধারালো ছুরি টা দিয়ে আম্মুর গলা কেটে দিলাম।আম্মু ছটফট করছে।আমি আমার রুম থেকে একটা মদের বতল নিয়ে আসলাম।
মদ খাচ্ছি সাথে সিগারেটও খাচ্ছি।আম্মু ছটফট করে মৃত্যুর দুনিয়ায় পাড়ি জমালো।
আমার মদের বতল শেষ।
উপরওলাকে একটা প্রশ্ন আমার,
আমার ভাগ্য যখন লিখেছিলে তখন কি
তোমার কলমে সুখের কালি ছিল না?
তারপর আব্বুকে ফোন করলাম।কয়েকবার রিং হওয়ার পর আব্বু ফোন রিসিপ করলো।
আব্বু:হুম বল।
আমি:একটু আগে আপনার স্ত্রী কে উপরওলার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি!এরপর আপনাকেও পাঠাবো বিনা টিকিট বিনা ভিসা।চলে যাবেন একবারে উপর তলা।
হা হা হা!
আব্বু:এই তুই এইসব পাগলের মতো কি বকছিস?
আমি:বিশ্বাস হচ্ছে না?ওকে একটু ওয়েট করুন।
তারপর আমি ছবি তুলে আব্বুকে ইমুতে পাঠিয়ে দিলাম।
তারপর আবার আব্বুকে ফোন দিলাম।
আব্বু ফোন রিসিপ করে ভয়ে কাতর গলায় বললো,”এটা তুই কি করেছিস?
আমি:মুক্তি দিয়েছি।দুনিয়ার এইসব ফালতু ঝামেলা থেকে মুক্তি দিয়েছি!এবার আপনাকেও দেব!
হা হা হা!
চলবে?
বিশেষ দ্রব্যঃ গল্পটা একবারে ভিন্ন রকমের। গল্পটাই অনেক কষ্টের ফিলিংস লুকানো আছে।যেগুলো আস্তে আস্তে আপনাদের সামনে আসবে।
(আমার কোন গল্পেই আপনারা পূর্ণতা পাবেন না।কারণ,আমার জীবন গল্পে এখনো আমি অপূর্ণতা।যেই আমার জীবন গল্পে পূর্ণতা পাব।সেদিন আপনাদের খুব সুন্দর একটা পূর্ণতা গল্প দিব। দোয়া করেন আল্লাহর কাছে আমার ইচ্ছে টা যেন পূরণ হয়।)