#মরভূমি,পার্ট:2
লেখক:আঃরব
তারপর আবার আব্বুকে ফোন দিলাম।
আব্বু ফোন রিসিপ করে ভয়ে কাতর গলায় বললো,”এটা তুই কি করেছিস?
আমি:মুক্তি দিয়েছি।দুনিয়ার এইসব ফালতু ঝামেলা থেকে মুক্তি দিয়েছি!এবার আপনাকেও দেব!
হা হা হা!
মদ খাওয়ার ফলে মাথাটা প্রচন্ড ঘুরছে।আসলে আগে কখনো মদ খাইনিতো।
কিছুক্ষণ পর দরজায় বেল বাঝলো।আমি দরজা খুলতেই অনেক গুলো পুলিশকে দেখলাম।তাদের সামনে আবার বাবা আছে।
দরজা খুলতেই আব্বু আমার গালে সজোরে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল।
আব্বু:আমার ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে যে,এমন কুলাঙ্গার ছেলে আমি জন্ম দিয়েছি যে নিজের মা কেই নিজের হাতে খুন করে।
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি।মদের ঘোরটা এখনো কাটেনি।
আব্বু:স্যার এই হলো সেই শয়তান যে নিজের মাকে হত্যা করেছে।(পুলিশ গুলোকে উদ্দেশ্য করে)
পুলিশ অফিসার:কনস্টেবল ওকে এরেস্ট করো।
একটা পুলিশ আমার হাতে হ্যানকাপ লাগালো।
তারপর আমাকে নিয়ে যেতে লাগলো।
পুলিশের গাড়ী টা কিছু দূর যাওয়ার পর ই থেমে গেল।
গাড়ি থামানোর কারণটা কি তা বোঝার জন্য আমি সামনের দিকে একটু উঁকি দিয়ে দেখলাম।
গাড়ির সামনে অনেক গুলো বুড়োলোক আর ছোট ছোট বাচ্চা।
আসলে আমার একটা এতিমখানা আছে।তার সাথে একটা বৃদ্ধাশ্রম। সাধারণ ভাষায় এতিম খানা আর বৃদ্ধাশ্রম বললেও এটা হলো আমার নিজস্ব গড়া।এখানে সরকারের কোন অনুদান আসে না।আমার নিজের থেকে সব খরচ করতে হয়।
আমি পথে কোন বাচ্চা বা বুড়ো মানুষ কে একা দেখলে বা ভিক্ষা করতে দেখলে তাদের কে আমার এখানে নিয়ে আসি।
আচ্ছা আপনারাই বলুনতো,
যেই বাচ্চাটার বয়স ৫বছর বা ৮বছর তাকে কেমন করে তার মা বাবা রাস্তায় একা ফেলে চলে যেতে পারে?
আবার কিছু বাচ্চা দেখি যাদের কে এই ছোট বয়সে অভাবের তাড়োনায় ভিক্ষা করতে হয়।
আর কিছু ছেলে আছে,
যারা তার বৃদ্ধ মা-বাপ কে রাস্তায় ছেড়ে দেই।
আমার জানা নেই এরা কোন শ্রেণির মানুষ?
আর আমি এইসব বাচ্চা আর বৃদ্ধদের কে আমার আশ্রয় স্থলে আশ্রয় দিয়।
ওরা আমাকে খুব ভালোবাসে আর আমিও।
ওরা হয়তো খবর পেয়েছে যে আমাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
তাই হয়তো দেখতে এসেছে।
ওসি স্যার গাড়ি থেকে নেমে গেল।ওদের সাথে কথা বলার জন্য।
ওসি সাহেব:এই তোমরা সবাই গাড়ির সামনে এভাবে ভিড় জমিয়েছো কেন?
ওসি সাহেবের কথাতে একজন বৃদ্ধ ব্যাক্তি বলে উঠলো, “স্যার আমরা আঃরব কে একবার দেখতে চাই।
ওসি সাহেব:এখানে দেখা হবে না আপনারা থানায় আসবেন।
বৃদ্ধালোক:স্যার একবার দেখবো প্লিজ।
সবার জোড়াজুড়িতে ওসি সাহেব আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে আসলো।
আমি সবার সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি।
একজন বৃদ্ধা মহিলা বললেন, ” আমরা কেউ বিশ্বাস করতে পারছি না যে তুমি তোমার মা কে খুন করেছো।যেই ছেলেটা অন্যের বাবা মা কে অন্যের বাচ্চা কে রাস্তায় থেকে তুলে এনে নিজের আশ্রয় স্থলে আশ্রয় দেয়।আর সে কিনা নিজের মাকে খুন করবে!
আচ্ছা তুমি এমনটা কেন করলে?
আমার উত্তর দেওয়ার মতো কোন ভাষা জানা নেই।
একটা ছোট ৬ বছরের বাচ্চা এসে ওসি সাহেবের পা চেপে ধরলো।
বাচ্চা :স্যার ভাইয়া কে ছেড়ে দিন।ভাইয়া কিছু করেনি।
ওসি সাহেব:এই পা ছেড়ে দে।
বাচ্চা:স্যার ছেড়ে দেন না ভাইয়াকে।
ওসি সাহেব বাচ্চাটা কে একটা লাথি। বাচ্চাটা মাটিতে ছিটকিয়ে পড়ে কান্না করতে লাগলো।
এটা দেখে আমার মাথায় রক্ত চড়ে গেল।ওসি সাহেবের নাক বরাবর দিলাম একটা ঘুসি।নাক ফেটে রক্ত বের হচ্ছে।
অন্যসব পুলিশ গুলো আমাকে চেপে ধরে গাড়িতে তুললো।
তারপর গাড়ি চলতে লাগলো থানার উদ্দেশ্যে।
একটু আগে যেই ছেলেটাকে ওসি সাহেব লাথি মারলো,
ওর নাম আরিয়ান।
অবস্য নামটা আমার ই দেওয়া।কারণ আমি জানিনা ওর বাবা কে?
একদিন রাতে নির্জন এক রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম।তখন ছোট আরিয়ান কে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখি।তখন ওর বয়স ছিল ১ বছর মতো হবে।জানিনা কি কারণে ওকে একা নির্জন এই রাস্তায় ওর বাবা মা ফেলে গিয়েছে।
তারপর আমি ওকে আমার ওই ছোট বাড়িটায় নিয়ে আসি।ওখানেই ওকে খুব যত্নে আস্তে আস্তে বড়ও করে তুলি।
ও আমাকে ওর আপন বড় ভাই মনে করতো।অবস্য আমিই ওকে বলেছিলাম যে আমিই ওর বড় ভাই।
ও যখন বললো,”ভাইয়া আমার আব্বু আম্মু কোথায়?
আমি তখন বলতাম,”আসলে আব্বু আম্মু তোমার জন্য ওই দূর দেশ থেকে বড় বড় চকলেট আনতে গিয়োছে।
গাড়িটা থানার সামনে এসে দাঁড়ালো।
তারপর আমাকে লকাপে নিয়ে গেল।
ওসি সাহেব:তোর সাহস কত বড়?তুই আমার গায়ে হাত তুলিস?আজ তোকে এমন শিক্ষা দেব জীবনেও ভুলবি না।
তারপর আমার হাত পা বেধে উল্টো করে ঝুলানো হলো।
অনেকক্ষণ ধরে পিটালো ওসি সাহেব। বড্ড ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে।
আমারও জ্ঞান নেই। অজ্ঞান হয়ে গিয়েছি।
যখন আমার জ্ঞান ফিরলো তখন দেখলাম আমি চেয়ারে বাঁধা আছি।অন্ধকার একটা রুম।কিন্তু এটাতো জেল খানা নয় এটা কোন জায়গা?
কেমন লাগলো আমার প্লানটা?খি!হা হা হা!
একটা কন্ঠে এই কথা শুনতে পেলাম। কন্ঠাটা আমার খুব চেনা।কারন,এই কন্ঠটা হলো,,,,,,,
চলবে?