মরভূমি,পার্ট:3 (শেষ)

0
1548

মরভূমি,পার্ট:3 (শেষ)
লেখক:আঃরব।

যখন আমার জ্ঞান ফিরলো তখন দেখলাম আমি চেয়ারে বাঁধা আছি।অন্ধকার একটা রুম।কিন্তু এটাতো জেল খানা নয় এটা কোন জায়গা?

কেমন লাগলো আমার প্লানটা?খি!হা হা হা!

একটা কন্ঠে এই কথা শুনতে পেলাম। কন্ঠাটা আমার খুব চেনা।কারন,এই কন্ঠটা হলো আব্বুর।

আব্বু আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।

আমি প্রচন্ড পরিমাণ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি আব্বুর দিকে!
আমি:আপনি আম্মুকে কেন আমার হাত দিয়ে খুন করালেন?আপনি কি করে পারলেন নিজের ছেলের হাত দিয়ে নিজের স্ত্রী কে খুন করাতে?
আব্বু:হা হা হা! নিজের ছেলে?তুই আমার নিজের ছেলে নস।তুই আমার সৎ ছেলে।
আমি:তার মানে?
আব্বু:তার মানেটা হলো এই যে,তোর আব্বুর নাম হলো আসলাম সিকদার।আমি তোর আব্বুর বন্ধু ছিলাম।তোর আব্বুর সম্পত্তির উপর আমার নজর ছিল।তাই আমি প্লান করে তোর আব্বুকে গাড়ি চাপা দিয়ে খুন করি।আর সেটা রোড এক্সিডেন্ট বলে চালিয়ে দিই।তারপর তোর আম্মুকে আমি আস্তে আস্তে প্রেমের জালা জড়ায়।তারপর বিয়ে করি।আমি প্রথমে ভেবেছিলাম সম্পত্তি তোর মায়ের নামে আছে।তাই আমি তোর হাত দিয়ে তোর আম্মুকে খুন করায়।কিন্তু সম্পত্তি তোর আম্মুর নামে নয়,তোর নামে আছে।তাই তোকে এখন মরতে হবে।
আমি:তুই এতো নিচ মনের মানুষ। ছি ছি ছি!
আব্বু:টাকার কাছে কোন উচু নিচু নেই।টাকাই হলো পৃথিবীর সব কিছু।

আচ্ছা আমি কেন আমার আম্মুকে খুন করলাম তার কারণ টা জেনে নেওয়া যাক।

আমার ফোনে একটা sms এলো।যেখানে একটা ভিডিও পাঠানো হয়েছে। ভিডিও তে এটা দেখলাম যে,আমার এতিম খানা ও বিদ্ধাশ্রমের চারদিকে বম লাগানো আছে।ওখানে লেখা আছে,নিজের আম্মুকে খুন করে দাও।নয়তো এতোগুলো নিষ্পাপ ফুলের মতো প্রাণ ঝরে যাবে।

আমি ম্যাছেজটা দেখে আতকে উঠি।অনেক চিন্তার ভিতরে পড়ে যায়।আমার কি করা উচিৎ আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

আমি যদি আম্মুকে না মারি তাহলে ওই বাচ্চা আর বুড়ো মানুষ গুলোকে ওরা মেরে ফেলবে।ওরাও তো কারো না কারোর সন্তান কারোর বাবা মা।কারোর কলিজার টুকরা।কারোর ভালোবাসার মানুষ।

অনেক ভেবে নিজের হাতে নিজের আম্মুকেই মারার সিদ্ধান্ত নিই।

আমি:আরে তোর মতো লোকেরতো জাহান্নামেও ঠাই হবে না।
আব্বু:হা হা হা!মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হো।

আমাকে যখন ই গুলি মারতে যাবে ঠিক তখন ই কোথায় থেকে আরিয়ান যেন চলে আসলো।আর আরিয়ান এসেই আব্বুর মাথার পিছনে ইট দিয়ে সজোরে আঘাত করলো।আব্বু মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।

আব্বুর যখন জ্ঞান ফিরলো তখন আব্বুর সামনে আমি পিস্তল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
আমি:নরকে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হো।
আব্বু:আমাকে মারার আগে একটা কথা শোন।আমি তোর ওই এতিমখানা তে একটা বম রেখে দিয়েছি।যেটা আর মাত্র ১ঘন্টা পর ব্লাষ্ট হবে।আর হ্যা ওই বমটা ডিএকটিপ করা যাবে না।যদি ডিএকটিপ করার চেষ্টা করিস তাহলে বম তখন ই ফেটে যাবে।হা হা হা!

আমার মাথায়তো আগুন ধরো গেল।ঠাই ঠাই ঠাই করে আব্বুর বুকে ৩টা গুলি পুরে দিলাম।আব্বু মারা গেল।

আমি তাড়াতাড়ি করে এতিম খানায় পৌছালাম।এতিম খানায় গিয়ে অনেক খোঁজা খুঁজির পর বমটা পেয়ে গেলাম।বম ফাটতে আর মাত্র ২০মিনিট সময় আছে।এতিম খানার পাশেই একটা নদী আছে।আমি বম নিয়ে দৌঁড় দিলাম নদীর দিকে।নদীর পাড়ে একটা নৌকা দেখতে পেলাম।নৌকা করে আমি চলতে লাগলাম যত দূর যাওয়া যায়।নদীর প্রায় মাঝখানে গিয়ে আর মাত্র ২সেকেন্ড বাকি আছে।

বমটা ফেটে গেল।নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকা বাচ্চা আর বয়স্ক লোক গুলো কান্নায় ভেঙে পড়লো।চিরতরে হারিয়ে গেল পাষাণ দিলের আঃরব টা।মুছে গেল তার জীবন।

————————————-
১০ বছর পর,

একটা ছোট বাচ্চা ছেলে রাস্তায় একা কান্না করছে ক্ষুধার যন্ত্রণাই।একটা মধ্য বয়স্ক ছেলে এসে বাচ্চা টা কে কোলে তুলে নিল।
ছেলেটাকে দেখতে আঃরব এর মতোই অনেকটা।তাহলে এটাই কি সেই পাষাণ দিলের মানুষটি?

(শেষ)

গল্পটা কেমন ছিল কমেন্টে জানাবেন। আর হ্যা আবারও আমি সেই আঃরব(আব্দুর রব)আর জান্নাতের যেন বিয়ে হয় খুব তাড়াতাড়ি সেই দোয়া আল্লাহর কাছে করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। প্লিজ প্লিজ প্লিজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here