মহব্বত❤️,পার্ট-6,7,8

0
1505

মহব্বত❤️,পার্ট-6,7,8
Writer-❤️ Israt_Jahan_Isu❤️
পার্ট 6

মাইশা ও ঘুমিয়ে পড়ে আর আকাশ যেন আজ শান্তিতে ঘুমাচ্ছে তার যে আজ সব চেয়ে খুশির দিন সে যে তার সব চেয়ে প্রিয় মানুষটিকে নিজের করে ফেলো,,

মাইশার ঘুম ভাঙ্গে আজানের সুরে,,,আজান শুনেই সে উঠে যায় নামাজ পড়ে কিছু ক্ষন কুরআন শরীফ পড়ে,,,সূর্য ও উঠে গেছে সে আর না শুয়ে রুমের বাহিরে যায় দেখে সবাই ঘুম একটু অবাক হলো কেউ কি উঠে না?আর তাদের ঘরে হলে সূর্য উঠার পর কেউ ঘুমিয়ে থাকতে পারতো না প্রচুর বকা দিতো মা,,

মাইশা কিচেনে যায় গিয়ে দেখে সেখানে কেউ নাই কিছু ক্ষন ভাবতে থাকে তার কি এই রান্না অহ আসা উচিত হয়েছে?

মাইশাঃ আচ্ছা যদি কেউ কিছু বলে আমায়?কিন্তু সকাল সকাল কি করবো আমি?

মাইশা একটু ভাবতে থাকে আবার ভেবে সে মনে করে সবার জন্য নাস্তা সে বানিয়ে ফেলুক যেহেতু সকালে উঠেছে,,,যে ভাবা সে কাজ সে আসতে আস্তে দেখে কই কি আছে রান্নার সবার জন্য নাস্তা বানাতে থাকে,,,

এইদিকে

আকাশের ঘুম ভাঙ্গে হাত দিয়ে বিছানায় খুঁজে দেখে মাইশা নেই,ঘাবড়ে যায় সে মাইশা গেছে কোথায়?

আকাশঃ মা,,হি মাহি কই তুমি মাহি

আকাশ ভাবে মাহি তাকে আবারও ছেড়ে চলে যায়,,,ভয়ে তার হাত কাঁপছে চোখ দুটো ভিজে গেছে বুকের ভিতর টা মুচড়ে ছিড়ে যাচ্ছে তার,,,প্রিয় মানুষটি চোখের আড়াল হতে দেখেই যেন বুকটা ছিড়ে যাচ্ছে আকাশের,,

আকাশঃ তুমি কথা দিয়েছিলে মাহি তুমি যাবে না তুমি আমাকে আবার একা করে চলে গেলে,,,

আকাশ অনেক কাঁদতে থাকে আকাশের চিৎকার শুনে সবাই উঠে যায় সবাই দৌড়ে আকাশের রুমে যায় সব জিনিস আকাশ ছুড়ে ভেঙ্গে ফেলেছে,,

শাহেদাঃ বাবা আমার কি হয়েছে?কেন করছো এমন?

আকাশঃ আমার মাহি কোথায়? আমার মাহিকে এনে দাও এখন

এইদিকে মাইশা ও দৌড়ে যায় রুমে গিয়ে দেখে সবাই তাদের রুমে,,,,

মাইশাঃ কি হয়েছে?

মাইশার আওয়াজ পেয়ে আকাশ তাকিয়ে দেখে মাইশা দৌড়ে এসে ঝাপটা মেরে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠে আর বলে উঠে

আকাশঃ কই গিয়েছিলে তুমি? আমাকে ছেড়ে কেন গেলে?

মাইশাঃ আমি কোথাও যাই নাই আমি আছি প্লিজ শান্ত হও

মাইশা বুজতে পারে আকাশ অনেক ভয় পেয়েছে৷ মাইশা আকাশকে বুজিয়ে শান্ত করে,,,,সবাইকে বলে

মাইশাঃ আই সত্যি দুঃখিত আমি আসলে বুঝতে পারিনি যে উনি আমাকে না দেখেই এইভাবে রিএক্ট করবে,,,

শাহেদাঃ তুমি গিয়েছিলে কই?এতো সকালে?

মাইশাঃ আসলে,,,,

শাহেদাঃ এক মিনিট সবাই সবার রুমে যাও আর ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে আসো আর রিমা আম্মাকে গিয়ে দেখে আসো উঠেছে কিনা,,

রিমা ঠিক বুজতে পারে তাকে ইচ্ছে করে রুম থেকে বের করে দিয়েছে,,,

সবাই যাওয়ার পর শাহেদা আর মিরাজ মাইশার সাথে কথা বলে

শাহেদাঃ এখন বলো কই গিয়েছিলে তুমি মাইশা.?

মাইশা অনেক অবাক তার নাম ধরে ডাকায়,মিরাজের দিকে তাকানোর পর বুজতে পারে হয়তো মিরাজ সব টুকু বলে দিয়েছে,,,

মাইশাঃ আসলে এতো বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকার অভ্যাস নেই,,,তাই ভাবলাম যেহেতু উঠে গেছি সবার জন্য নাস্তা বানিয়ে ফেলি তাই আমি,,,,

শাহেদাঃ এমন ভুল আর কখনো করবে না তুমি,,তোমাকে এইখানে আনা হয়েছে শুধু আকাশের জন্য ওর দিকে পুরো খেয়াল রাখো অর যত্ন নাও ওকে সুস্থ করো ব্যস ওর প্রতি পুরো নজর রাখো এই ছাড়া আর কোনো কাজ তোমাকে করতে হবে না,,

মিরাজঃ মাইশা এমন ভুল নেক্সট টাইম যেন আর না হয়,,,

মাইশাঃ মাফ করবেন স্যার সত্যি আর হবে না,,,

শাহেদাঃ হুম এখন শুনো কিছু ক্ষন পর সেলুন থেকে লোক আসবে আকাশের চুল দাড়ি কাটতে ব্যস তুমি ওকে মানিয়ে সব করে নিবে কেমন৷

মাইশা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানায়,,,

এইদিকে

সবাই নাস্তা করতে বসে আজ নাস্তা করতে বসে দেখে পরটা ভাজি এইসব,,,সবাই কিছু টা অবাক হয়

রিমাঃ নাজমা এইসব কেন বানালে জানো না এইসব কেউ খায় না?

নাজমাঃ ভাবি আসলে,,

শাহেদাঃ আমি বলেছিলাম ওকে আজ আমার খেতে ইচ্ছে করছে তাই,,,তোমরা বাকি গুলো খাও এইগুলা আমি আর মিরাজ খাবো,,,

শাহেদা কোনো ভাবে কথা ঘুরিয়ে নেয় কিন্তু রিমার সন্দেহ হচ্ছে শাহেদার এমন আচরণে,,

এইদিকে

অনেক ক্ষন পর সেলুন থেকে লোক আসে আকাশ কিছু তে চুল কাটাবে না,,

আকাশঃ আমি চুল কাটাবো না মানে কাটাবো না

মাইশাঃ অহ আচ্ছা তাহলে আমার কথা শুনবে বলে এখন শুনছো না?তাহলে কি আমি চলে যেতাম হুম?

আকাশঃ এই না না আমি সব করবো যা বলবে,,,

আকাশ রাজি হয়ে যায় মাইশার কথায়,,,সেলুনের লোক সুন্দর করে চুল কেটে দেয়,,,হালকা মেশিন দিয়ে দাড়ি কাটে,,,,

মাইশা বসে আছে আর আকাশকে চুল কেটে দিচ্ছে বারান্দায়,,,,

মাইশার মন টা একটু খারাপ খুব ইচ্ছে করছে বাবা-মায়ের সাথে কথা বলতে কিন্তু কিভাবে বলবে সে আর কিবা বলবে, যদি তারা কিছু জিজ্ঞেস করে তখন?মিথ্যার বোজা নিয়ে হাঁটা সত্যি অনেক কষ্টদায়ক যা এই মুহূর্তে মাইশা বুজতে পারছে,,,

এইসব ভাবতে ভাবতে সেলুনের ছেলেটি এসে বলে

সেলুনের ছেলেটিঃ ম্যাডাম শেষ

মাইশাঃ জ্বি আচ্ছা,,

মাইশা বারান্দায় গিয়ে পুরো চমকে যায় আকাশকে দেখে,,,আকাশকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে,,,আকাশ হাসছে তার হাসিটা সত্যি অনেক মায়াবী যা মাইশার মন ছুয়ে যায়,,,,

আকাশঃ কে,,কেমন লাগছে?

মাইশাঃ মাশাল্লাহ অনেক কিউট আর হ্যান্ডসাম লাগছে,,,

আকাশ হেসে দেয়,,,সে এসে মাইশাকে বলে

আকাশঃ তুমি যা বলবে আমি সব করবো,,,তবুও আমাকে ছেড়ে যেও না কেমন

মাইশাঃ আচ্ছা এইবার লক্ষি ছেলের মতো ফ্রেশ হয়ে আমার সাথে নিচে যাবে আর সবার সাথে সুন্দর করে কথা বলবে তারপর আমরা দুইজন অনেক অনেক গল্প করবো কেমন?

আকাশঃ আচ্ছা

আকাশ খুশি হয়ে বাথরুমে যায় ফ্রেশ হতে,,মাইশা এই তো বুজতে পারে যে আকাশের মানসিক সমস্যা নেই কারণ সে পুরো নরমালি কথা বলে নরমালি সব করে শুধু একটু শকড লেগেছে যার কারনে তার এমন অবস্থা আর হয়তো এতো দিন নিজেকে রুমে বন্ধ করে রাখায় সবার সাথে এমন খারাপ ব্যবহার এই ছাড়া আকাশের তেমন কিছু হয় নাই,,,

মিরাজ রুমে আসে এসে দেখে মাইশা আকাশের শার্ট বের করে রাখছে,,,

মিরাজঃ মাইশা

মাইশাঃ জ্বি বলুন

মিরাজঃ আকাশ কি চুল কাটিয়েছে?

মাইশাঃ জ্বি

মিরাজঃ বাহা ভালোই ব্যস কাল বা পরশু ওকে আমাদের পরিচিত এক ডাক্তার আছে উনার কাছে নিয়ে যেতে পারলেই হবে,,ভালো ভাবে চিকিৎসা হলেই আকাশ আবার সুস্থ

মাইশাঃ কিন্তু উনার মানসিক বা অন্য কোনো সমস্যা তো নেই৷

মিরাজঃ মানে?

মাইশাঃ উনি সুস্থ আছে,,উনি এমন হওয়ার পিছনে শুধু কারণ হচ্ছে শকড আর বন্ধ করে এতো দিন থাকা,,,যদি উনি বাহিরে যেতো সবার সাথে নরমালি কথা বলতো তাহলে এমন হতো না,,,দেখুন উনাকে যদি মানসিক ডাক্তার দেখান তাহলে ভুল করবেন উনাকে এমন ডাক্তার দেখাতে হবে যা উনার জন্য আসলে দরকার

মিরাজ মাইশার কথা মন দিয়ে শুনে,,মাইশা যে এইভাবে আকাশের চিন্তা করবে সে ভাবতে ও পারে নাই,,,কিন্তু মাইশা হয়তো ঠিক বলেছে আকাশ তো সুস্থ শুধু অল বুজার কেউ ছিলো না,,

মিরাজঃ আকাশের জন্য যা ভালো হবে তাই করবে তুমি,,,আর হ্যাঁ শুনো ওকে নিয়ে বাহিরে কিছু দিন ঘুরে আসবে এতে হয়তো আকাশের ভালো লাগবে

মাইশাঃ স্যার আমার পরিবারের খবর আছে কি?

মিরাজঃ হ্যাঁ তারা ভালো আছে তাদের বলা হয়েছে তুমি যেখানে আছো সেখানে নেটওয়ার্ক নেই,,,তবে ভালো আছো

মাইশাঃ আমি কি প্লিজ কয়েক মিনিটের জন্য শুধু তাদের সাথে কথা বলতে পারি?

মিরাজঃ মাইশা এই মুহূর্তে তোমার জন্য শুধু আমার ছেলে ইম্পর্ট্যান্ট হওয়া চাই এর চেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট আর কিছু না,,,,

মিরাজ এই বলে চলে যায়,,মাইশার চোখ ভিজে যায় পরিবারের জন্য এতো কিছু করা আর তাদের সাথে কথা বলতে পারছে না এই ভেবেই যেন বুকটা কেঁদে উঠে,,,,

আকাশ শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে আসে,,তাওয়াল পিছিয়ে এসে দেখে মাইশা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে,,,মাইশার সামনে যায় খেয়াল করে মাইশার চোখে পানি,,আলতো করে মুছে দিয়ে বলে

আকাশঃ তোমার চোখে পানি কেন?

মাইশাঃ কই না তো কিছু পড়েছে হয়তো তাই,,,

আকাশঃ আমার কাছে কিছু লুকিয়ে লাভ নেই আমি জানি তুমি কান্না করছো,,তোমার মন খারাপ তাই না?

মাইশাঃ অহ আচ্ছা আমার মন খারাপ তো শুনি কেন আমার মন খারাপ?

আকাশঃ কারণ আমি তোমার কথা প্রথমে শুনি নাই তাই৷

মাইশা মুচকি হেসে বলে

মাইশাঃ তাহলে পরের বার থেকে শুনিও প্রথম বারেই,,

মাইশা অনেক ক্ষন পর খেয়াল করে আকাশ তাওয়াল পড়ানো মাইশা পিছনে ফিরে যায়

মাইশা শার্ট-প্যান্ট না পড়ে কেন আসলে?

আকাশঃ তুমি কথা বলতেছো তাই

মাইশাঃ হুম বুজছি এইবার তাড়াতাড়ি পড়ে নাও

আকাশ শার্ট-প্যান্ট পড়ে নেই,,,শার্টের বুতাম লাগাচ্ছে আর বলছে

আকাশঃ তোমার লজ্জা মাখা মুখ অনেক কিউট,,,,এই প্রথম তোমায় লজ্জা পেতে দেখেছি

মাইশাঃ (এই ছেলে পুরো স্বাভাবিক তবুও আমাকে আনা হয়েছে)

আকাশঃ মাহি

মাইশা নিজের মধ্যে চিন্তায় ডুবে যায়,,,

আকাশ গিয়ে মাইশাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলে

আকাশঃ মাহি

মাইশাঃ হ্যাঁ বলো

আকাশঃ কি ভাবছো?

মাইশাঃ কই কিছু না তো

আকাশঃ নিচে যাবে না?

মাইশাঃ হুম চলুন

মাইশা আকাশের সাথে নিচে যায়,সবাই সোফায় বসে কথা বলছে,,,আকাশ আর মাইশা তাদের সামনে এসে দাঁড়ায় সবার চোখ তো কপালে যেন,আকাশের এমন পরিবর্তন এমন রুপ দেখে সবাই অনেক খুশি,,,শাহেদা খুশিতে কেঁদে দেয়,,,

চলবে,,,,

❤️ #মহব্বত❤️

Writer-❤️ #Israt_Jahan_Isu❤️

Part-7

মাইশা আকাশের সাথে নিচে যায়,সবাই সোফায় বসে কথা বলছে,,,আকাশ আর মাইশা তাদের সামনে এসে দাঁড়ায় সবার চোখ তো কপালে যেন,আকাশের এমন পরিবর্তন এমন রুপ দেখে সবাই অনেক খুশি,,,শাহেদা খুশিতে কেঁদে দেয়,,,

শাহেদাঃ আজ দুইটা বছর পর আমার ছেলেকে এই রুপে দেখলাম,,,এইভাবে দেখার জন্য যে আমার মনটা কত চটপট করেছে যা বলে বুজাতে পারবো না,,,

আকাশঃ মাম্মা আমাকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে তাই না?

শাহেদাঃ অনেক বেশি হ্যান্ডসাম লাগছে,,,আমার ছেলে বলে কথা হ্যান্ডসাম তো লাগবেই,,

দাদিমাঃ আমার নাতি সব সময় হিরো ছিলো আর হিরোই থাকবে,,,

মাইশা শুধু তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে আকাশ কতটা নরমাল ভাবে কথা বলছে,,পরিবারের সবার সাথে কত সুন্দর করে কথা বলছে,,কত হাসাহাসি কত মজা,,,

মুহূর্তে চোখের কোণায় পানি এসে জমে যায় হুট করে মনে পড়ে যায় তার নিজের পরিবারের কথা সেও তো তার পরিবারের সাথে এইভাবে কত হাসাহাসি করতো,,বিকাল টাইমে সবাই এক সাথে বসে কত না গল্প করতো যেন মুহূর্তে গুলো চোখের সামনে ভাসছে৷

আকাশ খেয়াল করে মাইশা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে কি যেন ভাবছে মাইশার কাছে এসে হাত ধরে বলে

আকাশঃ কি ভাবছো?

মাইশাঃ কই কিছু না তো,,,,

আকাশঃ তাহলে চুপচাপ যে?তুমি এতো চুপচাপ তো ছিলে না তাহলে আজ এতো চুপচাপ কেন?

মাইশাঃ এমনি দেখছিলাম৷

মাইশা আর কিছু বলে না,,আকাশ মাইশাকে নিয়ে যায় সবার মাঝে সবাই গল্পে ব্যস্ত,,,

চার মাস পর,,,

এই চার মাসে আকাশ আগে থেকে অনেক টা বেশি পরিবারের সাথে সময় কাটাচ্ছে যা পরিবারের সবার ভালো লাগছে,,,মাইশা ও চেস্টা করছে নিজের সব টুকু দিয়ে আকাশকে পুরো স্বাভাবিক করার,,কিন্তু এই মাস গুলো তে যেন তার পরিবারের সাথে একটু কথা বলতে পারে নাই এতে তার বুকটা ফেটে যাচ্ছে আসলে এইটা সব চেয়ে বেশি কষ্টের যখন আমরা আমাদের প্রিয় মানুষদের সাথে কথা বলতে পারি না,,,

এইদিকে

আজ সবাই বাসায় ছোট একটা আয়োজন করা হয়,,,,তাও আইভির অনেক জোর করায়

আইভিঃ ব্যস আজ আমার কথা সবাই কে শুনতেই হবে,,আজ তো মাহি আন্টিও আছে

রিমাঃ আইভি মাহি আন্টি নয় ছোট মাম্মা হবে,,,

আইভিঃ সরি সরি৷

আইভি গিয়ে মাইশাকে জড়িয়ে ধরে বলে

আইভিঃ ছোট মাম্মা আজ তো তুমিও আছো আজ আমার কথা প্লিজ শুনো,,,

মাইশাঃ আচ্ছা কি বলো

আইভিঃ আজ আমরা সবাই ছাদে গিয়ে ছোট একটা পার্টি করবো কি বলো?

মাইশাঃ কিন্তু আয়োজন তো হচ্ছে তাহলে আবার ছাদে?

রিমাঃ আরে মাহি ছাদে করলে ভালো হবে কারণ তুমি তো জানোই আমাদের ছাদ কেমন

মাইশা চুপসে যায় সে কিভাবে জানবে ছাদ আসলে কেমন শুধু মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে

আইভিঃ ছোট মাম্মা তুমি চাচ্চুকে আনবে তো?

মাইশাঃ ওকে মামনি৷ তুমি যেটায় হেপ্পি হবে সেটাই করবো কেমন

আইভি অনেক খুশি হয়ে যায়,,,,,মাইশা বেশ ভালোই সময় কাটায় আইভির সাথে যা কারো নজরে না পড়লেই রিমার নজরে পড়ে,,রিমা মাইশাকে হুট করে একটা প্রশ্ন করে

রিমাঃ আচ্ছা মাহি তুমি কি বাচ্চাদের অনেক বেশি পছন্দ করো???

মাইশাঃ বাচ্চাদের পছন্দ কে না করে ভাবি,,তাদের সাথে সময় কাটাতে বেশ ভালো লাগে মন খারাপ থাকলেও মুহূর্তে ভালো হয়ে যায়,

রিমাঃ কিন্তু তুমি তো আগে বাচ্চাদের পছন্দ করতে না,,,এমনকি সহ্য পর্যন্ত করতে পারতে না বাচ্চাদের,,,

মাইশা চুপ থাকে সে কি বলবে ভাবছে,,,

অই সময় শাহেদা এসে বলে উঠে

শাহেদাঃ সব সময় মানুষ এক থাকবে এমন তো নয় রিমা তাই না?আগে পছন্দ করতো না হয়তো এতো সময় কাটায় নাই এখন করছে কারণ অনেক দিন হলো আইভির সাথে সময় কাটাচ্ছে তাই হয়তো আসতে আসতে ভালো লাগা কাজ করে তাই না মাইশা?

মাইশাঃ জ্বি

রিমাঃ কিন্তু ছোট মা

শাহেদাঃ কোনো কিন্তু নয় এখন সবাই যাও ছাদে সব আয়োজন হয়ে গেছে

রিমাঃ আইভি তাহলে আগে বলে রেখেছে?

শাহেদাঃ হ্যাঁ, আর হ্যাঁ রুপা ও কাল এসে যাবে,,, রুপা জেনেছে যে মাহি ফিরে এসেছে তাই সে অপেক্ষা করতে পারছে না,,,

রিমাঃ বাহা তাহলে তো ভালোই,,,

মাইশা কিছু না বলে উঠে যায় গিয়ে দেখে আকাশ আলমারিতে কি যেন রাখছে

মাইশাঃ কিছু কি লাগবে?

হুট করে আয়েশার আওয়াজ পেয়ে ঘাবড়ে যায় আকাশ,,,

আকাশঃ না কিছু না তো,,,,

মাইশাঃ না মানে আলমারি তে এইভাবে খুজতেছো কিছু তাই ভাবলাম,,,

আকাশঃ আরে দূর এমন কিছু না,,আচ্ছা শুনো আমি ভাবতেছি আমার বউকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাবো কি বলো,,

মাইশাঃ সব জায়গায় যাওয়া হবে তবে কাল ডাক্তারের কাছে যে যেতে হবে তা কি মনে আছে?আমাকে কথা দিয়েছিলে যে কাল যাবে তো বাহানা একদম চলবে না

আকাশঃ মাহি তুমি জানো তোমার কোনো কথা আমি মানা করি না যা বলবে তাই হবে,,,

মাইশাঃ এখন কি ছাদে যাবে?আইভি অনেক জিদ ধরেছে সেখানে কিছু টা আয়োজন করা হয়েছে এক সাথে সবাই সময় কাটাবে তাই,,,

আকাশঃ আচ্ছা তুমি যাও আমি আসছি,,

মাইশাঃ(কিন্তু ছাদের সিড়ি কোন দিকে তা তো জানি না?এতো বড় বাড়ি আর তেমন কোথাও যাওয়া ও বারণ তাহলে কিভাবে যাবো?)

আকাশঃ কি হলো যাও আমি আসছি

মাইশাঃ তোমায় ছাড়া যাবো না,,,এখন যাবে আমার সাথে কেমন

আকাশঃ ওকে

আকাশ মাইশাকে নিয়ে ছাদে যায়,,,মাইশা পুরো ছাদ দেখে হতবাক হবে না কেন এতো সুন্দর ছাদ যে,,

ছাদটা যেন পুরো বাগান ফুল দিয়ে কি সুন্দর করে সাজানো,, দোলনা ও আছে ঘাস দিয়ে পুরো ঘেরা ছাদের ফ্লোর,, সুন্দর করে আয়োজন ও হয়েছে সাদা বেড দিয়ে বসার জায়গা করা হয়েছে নানা রকম নাস্তা কফি সব কিছুও রাখা হয়েছে,,,

মাইশাঃ মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর ছাদ৷

আকাশ মাইশার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে,,,

মাইশাঃ কি হলো?

আকাশঃ তুমি এমন ভাবে বললে মনে হচ্ছে প্রথম আসলে এইখানে?

মাইশাঃ না মানে দুই বছর পর আসলাম তাই,, আর সুন্দর লাগছে তাই

আকাশঃ মাশাল্লাহ বললে?

মাইশাঃ কেন সুন্দর লেগেছে তাই বলেছি,,,

আকাশঃ কখনো এইভাবে বলো নাই সুন্দর লাগলে বলতে ওয়াও বিউটিফুল ব্লা ব্লা

মাইশাঃ সব সময় মানুষ কি এক থাকে?

আকাশঃ না

মাইশাঃ আচ্ছা এতো প্রশ্ন না করে যাবে,,

মাইশার মনে এইবার সন্দেহ ঢুকে আকাশকে নিয়ে,,একজন স্বাভাবিক মানুষের মত সব প্রশ্ন করছে,,মনে হচ্ছে আকাশ সুস্থ ব্যস সব কিছু দেখাচ্ছে সে সুস্থ নয়,,,

আকাশ মাইশা এরা ও বসে সবার সাথে,,সবাই গান ছেড়ে দিয়ে বালিশ দিয়ে খেলছে,,,

আইভিঃ ছোট মাম্মা তুমি একটা গান শুনাও

মাইশাঃ আমি??

আইভিঃ হ্যাঁ প্লিজ প্লিজ

আকাশ চুপ করে তাকিয়ে আছে মাইশার দিকে দেখে মাইশা কি গান গায় কিনা,,,

মাইশাঃ কিন্তু

রিমাঃ কোনো কিন্তু নয় ব্যস গাইবে

মাইশা সবার দিকে দেখছে ভাবছে হয়তো মাহিও গান পাড়তো তাই সে গেয়ে দেয়

?ছিলে আমার স্বপ্নে তুমি
আজ কেন বহুদূর
অনুভবে ভেসে আসে,
সেই চেনা প্রিয়ও সুর
কাছে যেতেও সংশয়,
দূরে থাকতেও লাগে ভয়,
এলোমেলো লাগে সবই
অপূর্ণ রয়ে যায় ভালোবাসা
থেকে যায় কিছু কথোপকথন.
অপূর্ণ রয়ে যায় ভালোবাসা
থেকে যায় কিছু কথোপকথন
রাত্রি গুলো দীর্ঘ হয়
বিষণ্ণ ভাবনাতে,
চাঁদটা যেন লুকিয়ে রয়,
বিবর্ণ জোছনাতে
কাছে যেতেও সংশয়,
দূরে থাকতেও লাগে ভয়,
এলোমেলো হয়ে আমি
অপূর্ণ রয়ে যায় ভালোবাসা
থেকে যায় কিছু কথোপকথন?

মাইশার গান শুনে সবাই মুগ্ধ,,,মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে মাইশার দিকে দীর্ঘ এক শ্বাস ফেলে সবার দিকে তাকায়,,,

মাইশাঃ ভালো হয় নাই তাই না?আসলে আমার সুর তেমন ভালো না,,,

দাদিমাঃ তুমি এতো সুন্দর করে গান জানো আগে কখনও জানতাম না,,এতো সুন্দর সুর আর কি না মিষ্টি সুরে গেয়ে শুনালে,,,

রিমাঃ হ্যাঁ মাহি তুমি সত্যি অনেক সুন্দর গাইলে,,তোমার এতো সুন্দর মিষ্টি সুর আগে সত্যি জানতাম না,,

মাইশা মুচকি হেসে দেয়,,সবাই তার তারিফ করছে আকাশ চুপচাপ,,,

মাইশাঃ সুন্দর লাগে নাই আকাশ?

আকাশঃ না অসম্ভব সুন্দর হয়েছে আসলে,,,

সবাই একে একে সবাই গান করে আকাশ ছাড়া,,আকাশকে অনেক জোর করে কিন্তু আকাশ গায় না,,,,অনেক ক্ষন পর সবাই নিজেদের মধ্যে ব্যস আকাশ মাইশাকে এক পাশে নিয়ে যায় সন্ধ্যা ও হয়ে আসছে চারপাশ টা আরো বেশি ভালো লাগছে,,

আকাশঃ অনেক সুন্দর তাই না?

মাইশাঃ হ্যাঁ আসলেই অপরুপ সৌন্দর্য দিয়ে ঘেরা এই সুন্দর পৃথিবী,,,প্রাকৃতিকের চেয়ে আরো কিছু যেন সুন্দর নয়,,,

আকাশঃ আচ্ছা মাহি প্রশ্ন করি একটা?

মাইশা ঘাবড়ে যায় কি না কি প্রশ্ন করবে কে জানে?

মাইশাঃ হুম

আকাশঃ তোমার কাছে প্রেম বেশি ইম্পর্ট্যান্ট নাকি ভালোবাসা?

মাইশাঃ প্রেম দুদিনের,,যে কেউ কারো প্রেমে খুব সহজে পড়তে পারে তবে ভালোবাসা হচ্ছে সব চেয়ে বেশি মুল্যবান,,ভালোবাসা সবাই কে যায় না,,,ভালোবাসার আরেক নাম ত্যাগ,,ভালোবাসার মানুষ গুলোর জন্য হাসি মুখে সব ত্যাগ যেন শিকার করতে ও রাজি হয়ে যাই আমরা,, আমরা যাদের ভালোবাসি তাদের একটু খানি হাসির জন্য আমরা সব কিছু করতে পারি,,,

আকাশঃ প্রেমিক প্রেমিকার জন্য এতো কিছু করবে?

মাইশাঃ ভালো কি শুধু প্রেমিক প্রেমিকারা বাসতে পারে?ভালোবাসা সবার জন্য মা-বাবাকে বাসা যায় ভাই বোন,,স্বামী স্ত্রীর জন্য,,ধরতে গেলে আপন মানুষ গুলোকে ভালোবাসা যায় মনের গভীর থেকে,,,,

আকাশঃ তুমি সত্যি অনেক টা চেঞ্চ

মাইশাঃ মা,,,নে?

আকাশঃ যে মাহিকে আমি জানি সে মাহি এতো সুন্দর করে কখনও কথা বলতেই পারতো না,,সে মাহির কাছে ভালোবাসার মুল্য কম ছিলো যদি মুল্য থাকতো তাহলে আজ,,,,,,

আকায়াহ বলতে গিয়ে থেমে যায়,,মাইশা ও একটু অবাক হয় আকাশের কথা গুলো তে,,আকাশ কথা ঘুরিয়ে নেয় মাইশার গালে হাত রেখে গালে হুট করে চুমু বসিয়ে দেয়,,হঠাৎ এইভাবে স্পর্শ করায় মাইশা কেঁপে উঠে হাত পা যেন মুহূর্তে ঠান্ডা হয়ে যায়,,,অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে,,,

আকাশঃ ভালোবাসি প্রিয়তমা তোমায়,,,,

আকাশ এই বলে চলে যায় সবার মাঝে আবার,,,মাইশা পুরো বরফের মতো শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,এইভাবে হুট করে এমন কিছু হবে সে কল্পনা ও করতে পারে নাই,,,

আকাশের প্রথম স্পর্শ ভালোবাসার সে পেয়েছে এইভাবে তাও আবার মিথ্যা এক পরিচয়ের সাথে থেকে,,,হুম আকাশ তার স্বামী তবে আকাশ জানে মাইশা তার পুরাতন প্রেমিকা মাহি হয়তো সে ভেবে দিয়েছে এই ভালোবাসার পরশ এই ভেবে নেয় মাইশা,,,

রাতে,,,

আকাশ ঘুম মাইশা আকাশের দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে,,,আকাশের মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবছে আকাশ কতটা ভালোবাসে মাহিকে,,,

মাইশাঃ কেউ কাউকে এতো টাও ভালোবাসতে পারে?এতো ভালোবাসা যায় কি কাউকে? একটা মেয়ের জীবনে এতো ভালোবাসার মানুষ থাকলে আর কি লাগে জীবনে,,,সব চেয়ে বড় সুখ তো একটাই মানুষের জীবনে তা হচ্ছে অনেক ভালোবাসার মানুষ থাকা জীবনে,,সত্যি মাহি তুমি অনেক ভাগ্যবতী এমন একজনকে পেয়ে,,,

মাইশা উঠে যায় উঠে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়,,,

মাইশাঃ সত্যিকারের ভালোবাসা কয়জন বা পায়,,,আর যারা পায় তারা সত্যি অনেক ভাগ্যবান,,,জীবনে আর কি প্রয়োজন সত্যিকারের ভালোবাসা হলে, (দীর্ঘ শ্বাস ফেলে আবার বলে)আমার জীবনে ও কি এমন কেউ কখনও আসবে যে আমাকে এতো ভালোবাসে,,,

মাইশা আনমনে এইসব ভাবতে থাকে হুট করে সে নিজের মাথায় থাপ্পাড় দিয়ে বলে উঠে

মাইশাঃ ছি ছি কিসব ভাবছি আমি? এমন ভাবা ও পাপ আমার জন্য,,আমি শুধু এইখানে এসেছি আমার পরিবারের সুখের জন্য,,,ব্যস একবার এই ডিল শেষ হবে তাদের জীবন থেকে বহু দূরে চলে যাবো আমি,,,তারপর জানি না জীবনটা কেমন হবে তবে পরিবারের সুখের জন্য সব করবো আমি,,,

মাইশা এইসব ভাবতে থাকে ভাবতে ভাবতে চোখ বন্ধ করে হুট করে কারো হাতের স্পর্শ পায় তার পেটে,,চমকে উঠে তাড়াতাড়ি সরে যায়,,দেখে আকাশ

মাইশাঃ তুমি?

আকাশঃ হ্যাঁ আমি কিন্তু এইভাবে চমকে গেলে যে?মনে হচ্ছে এই প্রথম তোমায় এইভাবে জড়িয়ে ধরেছি?

মাইশাঃ না মানে হুট করে ধরলে তো ভয় পেলাম ব্যস

আকাশ বুজতে পারে মাইশা চমকে গেছে,,আকাশ মাইশাকে টেনে বুকে নেয়,,,

আকাশঃ অনেক মিস করতেছি তোমায়

মাইশার খুব অস্তির লাগছে তার একটুও ভালো লাগছে না এইভাবে আকাশের বাহুতে থাকতে,,কিন্তু যদি সে কিছু বলে তাহলে যদি আকাশ বুজে যায় সে মাহি নয় অন্য কেউ,,

আকাশ মাইশাকে ঘুরিয়ে পেটে হাত রাখে,, ঘাড়ে থুতনি রেখে নরম সুরে বলে

আকাশঃ এতো সুন্দর করে গান কবে শিখলে?

মাইশাঃ কেন?

আকাশঃ তুমি তো গান পারো না,আর যাও একটু আকটু গাইতে সব ইংলিশ তাও এত সুন্দর সুর কখনও ছিলো না,,,

মাইশা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না,,,

আকাশঃ কি হলো উত্তর দাও?

মাইশাঃযেখানে ছিলাম সেখানে গানের স্কুল ছিলো সেখানে একটু একটু শিখতাম আর কি,,,আর সব সময় ইংলিশ গান যে গাইতে হবে এমন নয় তাই না?

আকাশঃ হুম,,,আচ্ছা কাল কে আসছে জানো?

মাইশাঃ কে আসতেছে?

আকাশঃ কেন তুমি জানো না বুজি?

মাইশাঃ না মানে তুমি না বললে কিভাবে বুজবো?

আকাশঃ রুপা,,,

মাইশাঃ অহ আচ্ছা

আকাশঃ কি হলো তুমি খুশি নয়?

মাইশাঃ আমি কেন খুশি হবো না,,অবশ্যই খুশি এতো বছর পর দেখা,,,

আকাশঃ তোমার সব চেয়ে আপন ছিলো সে তাই না?

মাইশাঃ হুম।

মাইশা কি উত্তর দিবে সে জানে না,,সে ভাবে রুপা হয়তো তার ফ্রেন্ড হবে এমন,,,

মাইশাঃ আমার ঘুম পাচ্ছে চলো

আকাশ মাইশাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে কপালে চুমু দিয়ে যেতে বলে মাইশা লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে ভিতরে যায়,,,

পকেটে হাত রেখে আকাশ বলে উঠে

আকাশঃ আমরা যা দেখি তা সঠিক না ও হতে পারে,,যা দেখানো হয় অনেক সময় তা মিথ্যা থাকে,তবে কিছু মিথ্যা সত্যি ভালো হয়,,,কারণ মিথ্যার আড়ালে থাকে কিছু সত্যি যা অনেক সময় তিতা ও হতে পারে যা অনেকের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ানোর অনেক সম্ভাবনা থাকে,,,

আকাশ আনমনে এইসব ভেবে রুমে যায়,,মাইশাকে বুকে টেনে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে,,এই কয়েক মাসে আকাশ মাইশাকে বুকে নিয়েই ঘুমায়,,মাইশা না চাইতে ও ঘুমাতে হয়,,,কিন্তু ধীরে ধীরে যেন তারও অভ্যাস হয়ে যায় আকাশের বুকে ঘুমানোর,,,

সকালে,

চলবে,,,

❤️ #মহব্বত❤️

Writer-❤️ #Israt_Jahan_Isu❤️

Part-8

আকাশ আনমনে এইসব ভেবে রুমে যায়,,মাইশাকে বুকে টেনে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে,,এই কয়েক মাসে আকাশ মাইশাকে বুকে নিয়েই ঘুমায়,,মাইশা না চাইতে ও ঘুমাতে হয়,,,কিন্তু ধীরে ধীরে যেন তারও অভ্যাস হয়ে যায় আকাশের বুকে ঘুমানোর,,,

সকালে,,,,

প্রতি দিনের মতো আজও মাইশা ফজরের সময় উঠে নামাজ পড়ছে,,আকাশের ঘুম ভাঙ্গে যখন মাইশা তার বুক থেকে মাথা তুলে,,,মাইশা নামাজ পড়ে কুরআন পড়তে থাকে আস্তে আস্তেই পড়ছে যাতে আকাশ টের না পায়,,,কিন্তু আস্তে পড়লেও মাইশার পড়ার সুর আকাশের কানে আসে মুগ্ধ হয়ে আকাশ শুনছে,,অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে মাইশার দিকে,,, মাইশার মনে হচ্ছে তার দিকে আকাশ তাকিয়ে আছে,,, আকাশের দিকে তাকাতেই দেখে আকাশ ঘুম,,

মাইশাঃ হয়তো আমার ভুল সে তো ঘুমাচ্ছে,,,কিভাবে তাকাবে,,কেন জানি মনে হচ্ছে প্রতি দিনের মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু প্রতি বারের মতো এইবার ও ভুল আমি,,,

মাইশা আর কিছু না ভেবে উঠে যায়,,উঠে আকাশের কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে ফুঁ দেয়,,,কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে বারান্দায় চলে যায়,,

মাইশার কেন জানি প্রতি দিন সকালে আকাশের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে চুমু দিতে বড্ড বেশি মন চায়,,,,সে ভাবে আকাশ কিছু টের পাবে না,,,

মাইশা রুম থেকে বের হতেই আকাশ চোখ খুলে তাকিয়ে আছে বারান্দার দিকে,,,সে প্রতি দিন এইভাবে মাইশার দিকে তাকিয়ে থাকে,মাইশার ঠোঁটের স্পর্শ যখন তার কপালে পড়ে সে মনের শান্তিতে তা অনুভব করে,,,সে মাইশাকে বুজতে দেয় না যে সে সব বলতে পারে জেনেও অজানা আজ সেও

আকাশ মুচকি হেসে বুকের বাম পাশে হাত রেখে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে উঠে,,,

আকাশঃ সত্যি অনেক ভালোবাসি প্রিয়তমা তোমায়,,

এইদিকে

অনেক বেলা হয়ে যায় বাড়িতে আজ অনেক আয়োজন হচ্ছে আজ যে রুপা আসছে,,,মাইশা কিছু টা অবাক এই ভেবে যে কে এই রুপা যার জন্য এতো আয়োজন হচ্ছে বাড়িতে,,সে গিয়ে শাহেদার পাশে বসে আর আসতে করে বলে

মাইশাঃ রুপা কে?মানে আজ কে আসছে?

শাহেদাঃ সে কি তুমি জানো না?বলা হয় নাই?

মাইশাঃ না আসলে আমি জানি না কে উনি?

শাহেদাঃ উফফ আমিও কত বড় ভুল করলাম তোমায় আমিও বলি নাই,,রুপা আকাশের বড় বোন,,লন্ডন থাকে তার স্বামী ও বাচ্চাদের সাথে,,,,মাহির সাথে ওর ভালো সম্পর্ক কারণ রুপার বেস্ট ফ্রেন্ডের বোন ছিলো মাহি,,,আসা যাওয়া অনেক করতো মাহি তার বাসায়,,,তুমি ওকে রুপা আপু নয় রুপা আপ্পি বলবে,,,

মাইশাঃ জ্বি আচ্ছা,,,

আকাশ উপর থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে,,,মুখের কোণে এক মুচকি হাসি,,,হয়তো সে সব শুনেছে তাই হাসছে আর না হয় অন্য কিছু কে জানে কারণ কি?

আকাশ রুমে যায়,আলমারি খুলে একটা ফাইল বের করে ফাইল টা খুলে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে,,,

আকাশঃ অতীত সব সময় অতীত থাকবে তা কখনও বর্তমানে আসতে পারবে না আর আমি অনন্ত দিবো না তা বর্তমানে আসতে,,,সব কিছু তেমন চলবে যেমন সবাই চায় কিন্তু কিছু জিনিস আর কিছু চাওয়া আমার ইচ্ছেতে হবে যা কেউ টের ও পাবে না,,

আকাশ ফাইলটা বন্ধ করে বিছানার সব কিছু তুলে ফেলে,,খাটের নিচে একটা দরজা যা লক করা কেউ কখনও টের ও পাবে না এই খাটের মধ্যে একটা দরজা ও আছে যা লক করা,আকাশ তা খুলে ফাইলটা সেখানে রেখে আবার লক করে বিছানা ঠিক করে রাখে৷

মাইশা উপরে আসে এসে দেখে আকাশ বিছানার চাদর ঠিক করছে

মাইশাঃ তুমি কেন বিছানা ঠিক করছো?

হুট করে মাইশার আওয়াজ পেয়ে ঘাবড়ে যায়,,,

আকাশঃ ক,,কই না তো,,,এমনি ময়লা লাগছে তাই

মাইশাঃ হুম বুজেছি আচ্ছা নিচে আসো সবাই এক সাথে খাবে,,,

আকাশঃ খেতে পারি যদি তুমি তোমার হাতের স্পেশাল বিরিয়ানি রান্না করো তাহলে,,,

মাইশাঃ বিরিয়ানি???

আকাশঃ হ্যাঁ ঝাল ঝাল যা তুমি আগে করে আমাকে খাওয়াতে তা,,,

মাইশাঃ আচ্ছা

আকাশঃ আমি সাহায্য করবো কেমন

মাইশা মুচকি হাসে,,মাইশা মনে করে মাহি হয়তো কিছু না পারলেও বিরিয়ানি পারতো আর আকাশের চেয়ে মাহিকে কে বা জানবে,,,রি চার মাসে আকাশ এমন এমন কথা বলতো মাইশাকে যা মাইশা একটু অবাক হলেও পরে ভাবতো হয়তো মাহিও এইসব করে,,,

আকাশ আর মাইশা কিচেনে,,আকাশ মাইশাকে সাহায্য করতে গিয়ে পেঁয়াজ কাটা শুরু করে কিন্তু চোখ থেকে পানি পড়া শুরু করে,,,নাক মুখ লাল হয়ে গেছে,,,,

মাইশাঃ ব্যস ব্যস অনেক হইছে সাহায্য করা, আমার টা আমি পারবো,,,

আকাশঃ কিন্তু আমি সাহায্য করবো

মাইশাঃ সাহায্য করবে ওকে তুমি এইখানে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবে আমি যা যা বলবো আমাকে দিবে এই আমার জন্য অনেক সাহায্য

আকাশ হেসে দেয়,,মাইশা নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আকাশ শুধু তাকিয়ে আছে মাইশার দিকে

মাইশাঃ এইভাবে না তাকিয়ে আমাকে অই পাশ থেকে পানি টা দাও

আকাশঃ রান্না করতে এসে যে ঘেমে গেলে তা দেখে বেশ ভালোই লাগছে,,,কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম মুখ পুরো লাল,,,মুখের কোণায় মিষ্টি হাসি সত্যি বড্ড বেশি ভালোবাসি এই হাসিটাকে,,,,

আকাশের এমন কথায় মাইশা হেসে দেয়,,,

আকাশঃ হাসির কিছু কি বলেছি?

মাইশাঃ এইখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এইভাবে বললে হাসবো না তো কি করবো হ্যাঁ?

আকাশঃ হায় আমার বউয়ের এই লুক উফফ ফিদা আমি,,,

মাইশা আকাশের কান্ড গুলো দেখে হাসছে,,আকাশ ও মাইশার সাথে বেশ ভালোই সময় কাটাচ্ছে,,,

দূর থেকে সব শাহেদা দেখছে,,মনটা যেন তার আনন্দে ভরে যায় এই দেখে যে আকাশ কত টা ভালো আছে মাইশার সাথে,,আকাশ আগে থেকে পুরো স্বাভাবিক লাগছে,তার হাসি তার কথা যেন সে পুরানো আকাশ,,,,

মিরাজ পিছন থেকে এসে শাহেদাকে বলে উঠে

মিরাজঃ এইখানে এইভাবে দাঁড়িয়ে হাসছো কেন?

শাহেদাঃ অই দেখো আমাদের ছেলে কত ভালো আছে তার মুখে কত হাসি,,

মিরাজ তাকিয়ে দেখে সত্যি আকাশ অনেক হাসছে আর তার এই হাসির কারন মাইশা,,,

মিরাজঃ হুম আচ্ছা আমি রুপাকে নিয়ে আসি সময় হয়ে গেছে তুমি এইদিক সামলিয়ে নিও,,,

শাহেদাঃ কিন্তু রুপা যদি মাইশাকে মাহি ভেবে এমন প্রশ্ন করে যা মাইশা জানে না তখন?

মিরাজঃ তা নিয়ে তুমি ভাবিও না আমি সামলে নিবো,,,,ব্যস আকাশ যেন কিছু জানতে না পারে,,

মিরাজ চলে যায় রুপাকে আনতে,,,

এইদিকে

মাইশা আর আকাশ দুইজনে অনেক হাসাহাসি করে দুইজন যেন ভালো সময় কাটায় এক মুহূর্তে মাইশা পুরো ভুলে যায় সে মাহি সেজে এসেছে এইখানে মনে হচ্ছে এইটা তার সংসার তার স্বামী তার সব কিছু,,,,

আকাশঃ হে বিউটিফুল

মাইশাঃ কি?

আকাশঃ এইভাবে সব সময় হাসবে,,,তোমার এই মিষ্টি হাসি তোমার এই মায়াবী চেহারার যে বেশ মানায়,,,যদি কখনও দেখি এই মুখের হাসি গায়েব তাহলে অইদিন কি করবো জানো?

মাইশা কোমড়ে হাত দিয়ে ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে

মাইশাঃ কি করবেন শুনি?

আকাশঃ বাথরুমের বাথটবে নিয়ে গিয়ে ফেলে দিবো,,,

মাইশা এই শুনে আকাশকে ধরতে যায় আকাশ দৌড়ে কিচেন থেকে বের হয়ে যায়,,,,,

মাইশা হাসতে থাকে আকাশের এমন যাওয়া দেখে,,,,

অনেক ক্ষন পর,,,

মিরাজ রুপাকে নিয়ে আসে,,, সাথে দুইটা ছেলে মেয়ে ছোট ছোট,,,,

রুপা এসে সবার সাথে দেখা করে,,,এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে মাইশা,,,রুপার যখন নজর যায় মাইশার দিকে সে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে,,,হালকা গোলাপি শাড়ি পড়ে দাঁড়িয়ে আছে মাইশা,,সামনে গিয়ে শুধু দেখছে,,,

মাইশাঃ কেমন আছো আপ্পি?

রুপা হুট করে মাইশাকে জড়িয়ে ধরে,,,মাইশা ভাবে সে মাহি ভেবে তাকে জড়িয়ে ধরেছে,,

রুপাঃ আমি কল্পনা ও করতে পারছি না যে তুই আবার আমার সামনে,,,,তোকে দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগছে,,,

শাহেদাঃ রুপা এখন রেস্ট কর পরে না হয় সব কথা হবে,,,

রুপাঃ মাম্মা সত্যি আমি আজ অনেক হেপ্পি,,,আমি যখনই ওর কথা শুনেছি তখন থেকে শুধু চটপট করে যাচ্ছি ওর সাথে দেখা করার জন্য,,

রিমাঃ আমরা ও এমন অবাক হয়েছিলাম যখন মাহিকে আমরা দেখি আপু,,,

রুপাঃ আল্লাহ যা করে সত্যি ভালো এর জন্য করে,,,আকাশ কই মাম্মা?

শাহেদাঃ হয়তো রুমে,,, আমি ডেকে আনছি

রুপাঃ না মাম্মা আমি যাচ্ছি,,,,

রুপা আকাশের কাছে যায়,,গিয়ে দেখে আকাশ বসে আছে ফোন নিয়ে,,,,

রুপাঃ বোন এসেছে জেনেও রুমে বসে থাকাটা কি খুব জরুরি ছিলো??

আকাশ তবুও চুপ করে থাকে নিজের ফোনে ব্যস্ত হয়ে,,,,

রুপাঃ কি ব্যাপার আকাশ এখনো চুপ?

আকাশঃ ভালো লাগলো তোমায় দেখে আপ্পি,,,,

রুপাঃ অহ আচ্ছা তা কত লাগলো দেখতে পারছি,,,

রুপা গিয়ে আকাশের পাশে বসে,,,,

রুপাঃ আকাশ সব কিছু সত্যি কি পালটে গেলো?

আকাশঃ হয়তোবা

রুপাঃ আমার সাথে কি কথা বলা যায় না স্বাভাবিক ভাবে?

আকাশ চুপ করে থাকে,,,

রুপাঃ পুরানো দিন গুলো কি ভুলা যায় না?

আকাশঃ কিছু সৃতি ভুলা যায় না,,কিছু পুরাতন সৃতি আজীবন মনে গেঁথে থাকে যদি তা কষ্টদায়ক হয়,,

রুপাঃ সব কিছু কি মনে করা আবার খুব বেশি জরুরি?

আকাশঃ আপ্পি প্লিজ যাও এখন কিছু বলতে আর মনে করতে চাই না,,,আমার কাছে এখন আমার মাহি আছে আমার মাহি আমার জন্য এখন সব,,,

রুপাঃ(অই মেয়ে যে মাহি নয় তা আকাশ কেন বুজতে পারছে না?যদি এই মেয়েকে মাহি ভাবে তাহলে সে কি অই রাত অই সব কিছু ভুলে গেছে?হয়তোবা তা মনে নেই,,,তুই সুখে থাকলে হবে ব্যস এই চাওয়া আমার ভাই)

রুপা রুম থেকে চলে যায়,,,,

এইদিকে

আকাশ চুপ করে থাকে আকাশ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে

আকাশঃ সবার নজরে তেমন থাকবো যেমনটা সবাই চায় কিন্ত,,,,,,,,,,,

এইদিকে

মাইশা শাহেদার সাথে খাবার টেবিলে খাবার দিচ্ছে সবাই আসে এসে খেতে বসে,,,,,

রুপাঃ বাহা বিরিয়ানি বেশ মজা হয়েছে কে রান্না করলো?

শাহেদাঃ মাহি,,,মাহি আর আকাশ মিলে করেছে,,,

রুপাঃ বাহা মাহি বেশ মজাদার হয়েছে,,,,

মাইশা মুচকি হাসি দেয়,,

রাতে,

সবাই এক সাথে গল্প করছে কিন্তু আকাশ নেই,,মাইশা উপরে যায় গিয়ে দেখে আকাশ রুমে নাই,,,

মাইশাঃ কই গেলো এই সময়?

মাইশা বারান্দায় যায় গিয়ে দেখে সেখানে ও নেই আকাশ,,এইবার মাইশার মনে একটু ভয় কাজ করে কাজ করে কারণ আকাশ তাকে না জানিয়ে কোথাও যায় না,,,,

মাইশা সব জায়গায় খুঁজতে থাকে কোথাও যেন আকাশ নেই,,,,খুঁজতে খুঁজতে ছাদের দরজার দিকে যায় দরজা খোলা দেখে উপরে উঠে দেখে আকাশ ছাদে বসে বসে ছোট ছোট মোম জ্বালাচ্ছে কি সুন্দর করে ছাদ টা সাজিয়ে তুলে,,দোলনা টা লাটিং দিয়ে অনেক সুন্দর করে তুলে,,,

আকাশঃ আমি জানতাম তুমি আসবে,,,

মাইশাঃ এইসব কিছু?

আকাশঃ আমার বউয়ের জন্য করেছি এই ছোট আয়োজন,,,

আকাশ উঠে গিয়ে মাইশার হাত ধরে টেনে আনে,,দোলনায় বসিয়ে কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে পাশে বসে,,,হাতটা শক্ত করে ধরে বলে

আকাশঃ আমার হাত কখনও ছেড়ে দিও না,,,যত কিছু হোক না কেন প্রিয়তমা কথা দিচ্ছি যে তোমায় আমার থেকে দূরে কখনো যেতে দিবো না,,,সব সময় আমার বুকে আগলে রাখবো,,,,

মাইশা আকাশের ঘাড়ে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে রাখে,,এই মুহূর্ত গুলো তার জন্য অনেক বেশি স্পেশাল,,,আকাশের সাথে এখন সময় কাটাতে তার ভেশ ভালোই লাগে,,,,আকাশ ও আগের মতো সব সময় মাহি মাহি করে না হয় প্রিয়তমা না হয় বউ বলে ডাকে,,,,মাহি বলে অনেক কম ডাকে যা মাইশার কাছে বেশ ভালোই লাগে,,,মাঝে মাঝে মাইশা ভুলেও যায় সে মাহি সেজে নয় সে মাইশা হয়ে আছে,,,

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here