মহব্বত❤️,পার্ট 9,10,11

0
1396

মহব্বত❤️,পার্ট 9,10,11
Writer-❤️ Israt_Jahan_Isu❤️
পার্ট 9

মাইশা আকাশের ঘাড়ে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে রাখে,,এই মুহূর্ত গুলো তার জন্য অনেক বেশি স্পেশাল,,,আকাশের সাথে এখন সময় কাটাতে তার ভেশ ভালোই লাগে,,,,আকাশ ও আগের মতো সব সময় মাহি মাহি করে না হয় প্রিয়তমা না হয় বউ বলে ডাকে,,,,মাহি বলে অনেক কম ডাকে যা মাইশার কাছে বেশ ভালোই লাগে,,,মাঝে মাঝে মাইশা ভুলেও যায় সে মাহি সেজে নয় সে মাইশা হয়ে আছে,,,

মাইশা চুপ করে আছে আকাশ তার হাতটি ধরে চুমু দিয়ে বলে

আকাশঃ তুমি আর আমি কাল এক জায়গায় যাবো

মাইশাঃ কোথায়?

আকাশঃ এমন জায়গায় যেখানে গেলে তোমার মন অনেক ভালো হয়ে যাবে,,,আমি চাই আমার বউয়ের সাথে ঘুরাঘুরি করতে তার মুখের এই মিষ্টি হাসিটা সব সময় দেখতে,,,

মাইশাঃ অনেক ভালোবাসো তাই না?তুমি অনেক ভালোবাসো তোমার মাহিকে??

আকাশঃ না,,,

মাইশা এই শুনে মাথা তুলে আকাশের দিকে তাকায়,,,,

আকাশঃ ঠিক শুনেছো আমি আমার মাহিকে ভালোবাসি না আমি আমার এই মিষ্টি বউটাকে ভালোবাসি অনেক বেশি যা প্রকাশ করা অসম্ভব,,,

মাইশাঃ মানে?

আকাশঃ দূর পাগলি তুমি তো মাহি আর তুমি তো আমার বউ তোমাকে ভালো না বাসলে বাসবো টা কাকে?

মাইশাঃহুম

মাইশা ভেবে নেয় আজও আকাশ মাহিকে বুজিয়েছে,,,মনটা আবারও মলিন হয়ে যায় এইটা স্বাভাবিক কোনো মেয়ে কখনও চাইবে না তার স্বামী অন্য কাউকে ভালোবাসুক,,,সে তার জীবনে যত ইম্পর্ট্যান্ট হোক না কেন,,কোথাও না কোথাও এখন মাইশার মনে আকাশের জন্য জায়গা তৈরি হয় যা মাইশা নিজেও জানে না,,,

আকাশ দোলনা থেকে উঠে মাইশার জন্য আদা দিয়ে চা রাখাটা হাতে তুলে দেয়,,,

আকাশঃ তোমার অনেক পছন্দ তাই না?

মাইশাঃ তুমি কি করে,,,(মাইশা বলতে গিয়ে থমকে যায়)

আকাশ নিজের জন্য কফি নেয়,,,কফি নিয়ে উঠে দাঁড়ায় একটু সামনে যায় কফিতে এক চুমুক দিয়ে মনের অজান্তেই বলে উঠে

আকাশঃ সব কিছু যেমন আসলে তেমনটা নয়,,,জানো প্রিয়তমা জীবনে এমন এমন মুহূর্ত আসে যা আমরা চাইলেও ভুলতে পারি না,,,কিছু বাস্তবতা আমাদের জীবনে আটকে থাকে আর কিছু ভয়ংকর অতীত যদি কারো জীবনে থাকে তাহলে বর্তমান ভবিষ্যৎ যেন অন্ধকারে থাকে কিন্তু এমন কেউ যদি আবার জীবনে থাকে যা অতীত টুকু মুছে দিতে সাহায্য করে তাহলে অতীত টা ভুলা অনেক সহজ হয়ে পড়ে,,

দীর্ঘ শ্বাস ফেলে পিছনে তাকিয়ে দেখে মাইশা দোলনায় বসা নাই,,,

আকাশঃ প্রিয়তমা???? কই গেলে তুমি?

আকাশ একটু সামনে যায় গিয়ে দেখে ছাদের দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাইশা,,,আকাশের দিকে তাকিয়ে আনমনে কি যেন ভাবছে,,,কফি কাফটা রেখে মাইশাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে,,,,

আকাশঃ কি দেখছো আকাশে?আর ভাবছোটা কি?

মাইশাঃ আকাশটা খুব মেঘলা তাই না?মনে হচ্ছে হুট করে বৃষ্টি পড়বে,,,,

আকাশঃ হুম তা বটে কিন্তু কি ভাবা হচ্ছে শুনি?

মাইশাঃ যদি মুহূর্তটা এইখানে থমকে যেতো,,যদি সব কিছু এইখানে থেমে যেতো যদি বাকি দিন গুলো আর না আসতো,,,,

আকাশঃ মানে?কি বলছো বুজছি না,,,

হুট করে মাইশার মনে হলে সে কি বলে ফেলেছে মনের অজান্তেই,,,

মাইশাঃ না মানে তুমি এতো সুন্দর করে সাজালে এতো সুন্দর মুহূর্ত তাই ভাবছি যে এইখানে থেমে গেলে অনেক ভালোই হতো তাই না,,,,

আকাশঃ মুহূর্ত গুলো এইভাবে সব সময় সুন্দর করে তুলে রাখবো আমি বুজলে,,,আর হ্যাঁ তুমি আমার কাছে আজীবন থাকবে তাই থমকে থাকার কথা এতো ভাবতে হবে না,,,

মাইশা মুচকি হাসে কারণ সে তো জানে ব্যস আর কয়েক মাস তারপর তাকে চলে যেতে হবে,,,,

আকাশঃ একটা প্রশ্ন করি?

মাইশাঃ হ্যাঁ

আকাশঃ ভালোবাসো আমায়?

আকাশের এমন প্রশ্ন শুনে মাইশা কি উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না,,,

আকাশঃ কি হলো বলো

মাইশাঃ আকাশ অনেক রাত হয়েছে চলো আমরা রুমে যাই,,,,

মাইশা এড়িয়ে যায় যা আকাশ ঠিক বুজতে পারে সেও আর প্রশ্ন করে না,,,

আকাশ আর মাইশা রুমে আসে ঠিক তখন রুপা ও আসে

রুপাঃ মাহি

মাইশাঃ জ্বি

রুপাঃ তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো আর কিছু জিনিস ও আছে তোমায় দেওয়ার আমার সাথে আমার রুমে আসতে পারবে?

মাইশাঃ জ্বি আচ্ছা,,,,

আকাশ কিছু বলে না সে ফ্রেশ হতে চলে যায়,,মাইশা রুপার সাথে তার রুমে যায়,,,রুপা মাইশাকে নিজের পাশে বসায় হাতে হাত রেখে বলে

রুপাঃ কি বলে ধন্যবাদ দিবো আমি জানি না তোমায়,,,তবে আমার পরিবার আর আমার ভাইয়ের জন্য যা তুমি করছো সত্যি তার ঋণ আমরা কখনও ভুলতে পারবো না,,,

মাইশা এখন বুজতে পারে যে রুপাও জানে সে মাইশা,,,

মাইশাঃ ছি ছি আপু এইভাবে আমাকে বলে লজ্জা দিবেন না,,,যা কিছু করছি তার পিছনে আমার ও সার্থ আছে,,,

রুপাঃ মানে?

মাইশাঃ এতো ভালোবাসা যে সবাই দিচ্ছে তা কি ধন্যবাদ দিয়ে আর এইভাবে ঋণী আছেন বলে শেষ করে দিতে চান?

রুপাঃ তুমি সত্যি অনেক ভালো,,,মাহির মত দেখতে ঠিক কিন্তু তুমি মাহির বিপরীত,,,

মাইশাঃ মানে?

রুপাঃ মাহি এইভাবে কখনও কথা বলে না,,তুমি কত শান্ত ভাবে কথা বললে আর তোমার আওয়াজ ও মাহির থেকে অনেক অমিল,,,,মাহির আওয়াজ আর একটু মোটা আর সে অনেক টা উঁচু ভাবে বলে কথা,,আর অভ্যাস তো আছেই হাত নাড়িয়ে কথা বলার,,,

রুপা এই বলে নিজে নিজে হাসে,,,মাইশা অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে এইসব শুনে,,,

রুপাঃ তোমাদের চেহারা মিল ঠিক তবে তোমাদের সব কিছু অমিল,,মাহি কখনও শাড়ি পড়তো না এমন কি ওর সব চেয়ে অপছন্দ ছিলো শাড়ি,,,

মাইশাঃ (তাহলে আকাশ যে অইদিন আমাকে একটা লাল শাড়ি এনে বললো মাহির নাকি এই কালারের শাড়ি অনেক পছন্দ তা?)

রুপাঃ মাইশা কি ভাবছো?

মাইশাঃ যদি কিছু মনে না করেন আমি কি প্রশ্ন করতে পারি কয়েকটা.?

রুপাঃ হ্যাঁ অবশ্যই

মাইশাঃ মাহির প্রিয় রঙ কি?

রুপাঃ মাহি কালো পছন্দ করতো অনেক,,,তাকে সে ছোট থেকে আমি জানি,,,

মাইশাঃলাল পছন্দ না?

রুপাঃ একদম না লাল তার নাকি সব চেয়ে বিরক্তিকর কালার,,,

মাইশার মনে এইভাবে সন্দেহ ঢুকে একটু,,,

মাইশাঃ মাহি রান্না জানতো কোনো যেমন বিরিয়ানি বা অন্য কিছু?

রুপাঃ মাহি রান্নাঘরে পর্যন্ত যেতো না আসছে রান্না পাড়া,,,,আর হ্যাঁ বিরিয়ানি মাহি পছন্দ করতো না খেলে নাকি মোটা হয়ে যানে তাই সে কখনও বিরিয়ানি খেতোই না রান্না দূরে থাক,,,

রুপাকে মাইশা অনেক প্রশ্ন করে মাহিকে নিয়ে যা রুপা উত্তর দেয় কিন্তু আকাশ যেমন বলতো তেমন একটুও যেন মিলে না,,,

রুপাঃ এতো প্রশ্ন কেন মাইশা?

মাইশাঃ না আপু এমনি৷,,আচ্ছা আপু মাহি আর আকাশের রিলেশন কিভাবে হলো তাদের সম্পর্কে কি বলা যাবে?

রুপার ফোনে কল আসে

রুপাঃ মাইশা অন্য একদিন সব বলবো এখন তোমার ভাইয়ার সাথে কথা বলে নেই আসার পর বলি নাই,,,

মাইশা মুচকি হেসে চলে যায় রুম থেকে,,,হাটতে হাটতে ভাবছে আকাশ তাকে যা যা করতে বলতো তা তার পছন্দ মাহির অপছন্দ উল্টো,,,তার প্রিয় কাজ গুলো আকাশ তাকে দিয়ে করিয়ে নিতো সব সময় তার পছন্দের মত সব হতো আর সে ভাবতো মাহিরও হয়তো এইসব পছন্দ ছিলো,,,,,

এইদিকে

আকাশ একজনকে কল দেয়

আকাশঃ কেউ যেন কোনো জানতে না পারে সত্তিটা,তাকে তত দিন পর্যন্ত সেখানে রাখবে যত দিন পর্যন্ত আমি ছাড়তে না বলবো,,,,তাকে এতো কষ্ট দাও এতো যন্ত্রণা দাও যে মৃত্যুটা তার কাছে অনেক সহজ লাগবে,,,

অইপাশ থেকে একজন লোক বলে উঠে

একজন লোকঃ স্যার তার অবস্থা অলরেডি অনেক খারাপ,,,আপনার কথা মত তার চিকিৎসা করিয়েছি আবার কি তাকে শাস্তি দিবো???

আকাশঃ দিতে থাকো,,,যখন দেখবে মারা যাওয়ার অবস্থা তার চিকিৎসা করাও আবার তাকে অই ভাবে কষ্ট দাও যা তাকে বুজিয়ে দেয় সে কার সাথে বেইমানি করেছে,,,

আকাশ এই বলে কল কেটে দেয়,,মাইশা রুমে এসে দেখে আকাশ দাঁড়িয়ে আছে তার যেন একটুও সাহস হচ্ছে না এই জিজ্ঞেস করার যে সে মাহির এই পছন্দ সেই পছন্দ বলে কেন তার পছন্দের কাজ গুলো তাকিয়ে দিয়ে করাতো,,,

আকাশঃ এতো কথা বললে যে এই আসার সময় হলো হুম?

মাইশাঃ না মানে অনেক দিন পর কথা তাই,,,

আকাশঃ হুম বুজেছি আচ্ছা আসো আমার পাশে বসো কিছু দেখানোর আছে,,,,

মাইশাঃ কি?

আকাশঃ আমরা কাল সন্ধ্যার ফ্লাইটে লন্ডন যাচ্ছি,,,,

মাইশাঃ মানে?

আকাশঃ বললাম না যে আমরা কাল ঘুরতে যাবো

মাইশাঃ কিন্তু লন্ডন কেন?

আকাশঃ কেন তুমি বুজি তোমার জন্মস্থানে যেতে চাও না?আমাদের সুন্দর মুহূর্ত গুলো আবার মনে করতে চাও না সেখানে গিয়ে?

মাইশাঃ এমন নয় কিন্তু আপ্পি তো আজ আসলো আর আমরা কাল লন্ডন যাবো?

আকাশঃ হ্যাঁ কাল যাবো,,,সেখানে গেলে অনেক কিছু পাল্টে যাবে,,,

মাইশাঃ মানে?

আকাশঃ মানে আমার বউ বিয়ের পর প্রথম লন্ডন যাচ্ছে তার৷ পরিবারের সাথে দেখা করতে ব্যস এই,,,

আকাশ এই বলে মাইশার কপালে চুমু দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়,,মাইশা ঘাবড়ে যায় লন্ডন সে কি করে যাবে,,,আর কিছু না ভেবে সে মিরাজের রুমে যায়,,,

মাইশাঃ আসবো???

মিরাজঃ এতো রাতে তুমি এইখানে?

মাইশাঃ আসলে আপনাকে কিছু কথা বলার ছিলো তাই,,

মিরাজঃ হ্যাঁ অবশ্যই বলো

মাইশা কিছু বলতে যাবে অইসময় দরজায় নক পড়ে দেখে আকাশ,,

আকাশঃ আরে তুমি এখানে যাক ভালোই হয়েছে

মাইশা ঘাবড়ে যায় আকাশ এইখানে কিভাবে সে এখন কিভাবে বলবে লন্ডন যাওয়ার কথা,,,

মিরাজঃ কি হলো আকাশ কিছু কি বলবে?

আকাশঃ হ্যাঁ পাপ্পা আমি আর মাহি কাল সন্ধ্যার ফ্লাইটে লন্ডন যাচ্ছি

এইশুনে শাহেদা আর মিরাজ একে অপরের মুখের দিকে তাকায়,,,মিরাজ এখন বুজতে পারে যে মাইশা এইজন্য তাহলে এসেছে

মিরাজঃ আকাশ কিন্তু কাল?

আকাশঃ অলরেডি টিকেট কাটা সব কিছু করা শেষ পাপ্পা আমি মাহিকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু ভাবলাম ওকে না বলে নেওয়া উচিত না তাই বলে দিলাম আজকেই,,,

মিরাজঃ আকাশ তুমি অসুস্থ প্লাস মাহির ও একটু সময় লাগবে সংসার করছে নতুন

আকাশঃ পাপ্পা আমি পুরো সুস্থ আর হ্যাঁ বিয়ের পরে আমি আর মাহি কোথাও যাই নাই,,এইটা আমাদের প্রথম ঘুরতে যাওয়া ধরতে গেলে হানিমুন,,যাই হোক পাপ্পা আমি আর মাহি কাল যাচ্ছি ফাইনাল তুমি চিন্তা করিও না সব কিছু ঠিক হবে যেমন টা ভেবে রেখেছি

কেউ আর কিছু বলে না,,কারণ শাহেদা আর মিরাজ জানে আকাশকে কিছু বলা বেকার সে কিছু শুনবে না নিজের মন মত করে,,,

আকাশ আর মাইশা নিজের রুমে এসে যায়,,মাইশা শুয়ে পড়ে আকাশকে মাইশাকে টেনে বুকে নেয়

আকাশঃ আজ টেনে নিতে হলো কেন হুম?

মাইশাঃ না এমনি

আকাশঃ কি না?কি ভাবছো কালকের কথা?

মাইশাঃকই না ঘুম পাচ্ছে অনেক

আকাশ মাইশার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে আর মনে মনে ভাবে

আকাশঃ (কিছু রহস্য থেকে পর্দা তুলার সময় এসে গেছে,,,এইবার যা হবে সব কিছু ঠিক হবে আর নয় রহস্যময় জীবন)

আকাশ মাইশার কপালে চুমু দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে যায়,,,,

পরের দিন বিকালে

মাইশা আর আকাশ বের হয় এয়ারপোর্টের জন্য বাড়ি থেকে কিছু ক্ষনের মধ্যে তাদের ফ্লাইট,,,মাইশা চুপচাপ বসে আছে সেখানে গিয়ে কি করবে কাকে বা সে চিনে কি ভাবে সব সামলাবে এইসব ভাবতে থাকে আর আকাশ সে এসে মাইশার হাতে ঠান্ডা কফি ধরিয়ে দিয়ে পাশে বসে,,,,

চলবে,,,

❤️ #মহব্বত❤️

Writer-❤️ #Israt_Jahan_Isu❤️

Part-10

মাইশা আর আকাশ বের হয় এয়ারপোর্টের জন্য বাড়ি থেকে কিছু ক্ষনের মধ্যে তাদের ফ্লাইট,,,মাইশা চুপচাপ বসে আছে সেখানে গিয়ে কি করবে কাকে বা সে চিনে কি ভাবে সব সামলাবে এইসব ভাবতে থাকে আর আকাশ সে এসে মাইশার হাতে ঠান্ডা কফি ধরিয়ে দিয়ে পাশে বসে,,,,

কিছু ক্ষনে তারা ফ্লাইটে উঠে যায়,,,

৯ ঘন্টা পর তারা লন্ডনের মাটিতে পা রাখে,,,

মাইশা তার মনের কথা প্রকাশ যেন করতেই পারছে না জীবনে প্রথম সে দেশের বাহিরে এসেছে কিন্তু অন্য নামে,,,মাহির পাসপোর্ট মাহির ভিসা দিয়ে আজ মাইশা লন্ডনে,,,,,

এয়ারপোর্ট থেকে দুইজন একটা বিশাল বড় বাড়িতে যায়,,,যেটা আকাশের নামে মাইশা লন্ডনের পরিবেশ টা দেখে মুগ্ধ বাংলাদেশের মতো এতো ভিড় এতো ট্রাফিক জ্যাম যেন নয়,,,রাস্তা গুলো কত সুন্দর

মাইশা আর আকাশ বাড়িতে উঠার পর মাইশা ড্রইংরুমে দাঁড়িয়ে আছে কোন রুমে যাবে সে ভাবছে,,,,

আকাশঃ কি ব্যাপার এইখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?

মাইশাঃ না মানে ভাবছিলাম যে আমি আ,,সলে

মাইশা কি বলবে সে ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না যেন,,,

আকাশঃ সিড়ি দিয়ে উঠে ডান পাশের যে রুম সেটায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও কিছু ক্ষনের মধ্যে খাবার এসে যাবে এক সাথে খাবার খাবো কেমন,,,

মাইশাঃ জ্বি আচ্ছা

মাইশা সিড়ি দিয়ে উঠছে আর ভাবছে আকাশ কি করে জানলো যে সে রুমে যাবে আর রুম কোনটা চিনছে না,,মাহি তো সব রুম চিনার কথা তাহলে আকাশ তা জেনেও কেন বা তাকে দেখিয়ে দিলো এইসব ভাবতে ভাবতে উপরে চলে যায়,,

এইদিকে

আকাশ তার লন্ডনের সিম ফোনে ঢুকিয়ে কল দেয় একজনকে,,,

আকাশঃ আমি লন্ডনে এসে গেছি,,কি করতে হবে আমি নিজেই গিয়ে বলবো ব্যস তার খেয়াল রাখবে তার যেন বিন্দু মাত্র আঘাত না লাগে,,,

আকাশ এই বলে কল কেটে দেয়,,,

রুমে একটা ড্রেস রাখা আছে অলরেডি মাইশা ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে দেখে বিছানায় একটা ড্রেস কালো রঙের কিন্তু জামাটা অনেক শর্ট এমন ড্রেস সে কখনো পড়ে না,,,জামাটা নিয়ে আয়নার সামনে যায়

মাইশাঃ ইয়া আল্লাহ এতো ছোট জামা কেউ কিভাবে পড়ে?পুরো পা শরীর সব দেখা যাবে আর এই টাইপের জামা আমি কিভাবে পড়বো উফফ কি বিপদে পড়লাম রে বাবা,,,

মাইশা বিরক্তি ভাব নিয়ে এইসব বলছে অমন সময় আকাশ রুমে ঢুকে,,

আকাশঃ কি ব্যাপার ড্রেসটা পছন্দ হয় নাই?

মাইশাঃ না মানে সুন্দর কিন্তু

আকাশঃ কিন্তু কি?আজ সন্ধ্যায় এইটা পড়বে আমরা বের হবো,,,

মাইশাঃ আমরা তো আসছি মাত্র রেস্ট করবো তারপর না হয় যাবো,,,,

আকাশঃ হ্যাঁ তাই তো বললাম আচ্ছা যাও রাতে,,,

মাইশাঃ এইখানে বুজি রাতে সব কিছু ওপেন থাকে?

আকাশঃ এমন ভাবে বলছো মনে হচ্ছে জীবনে এই প্রথম লন্ডন আসলে??

আকাশের এমন প্রশ্ন শুনেই মাইশা ঘাবড়ে যায় সে কি বলে ফেললো,,,

মাইশাঃ না মানে আসলে,,,

আকাশঃ যাই হোক এই ড্রেস পড়ে নিও রাতে আমরা বের হবো আর হ্যাঁ আমি একটু বাহিরে যাচ্ছি

মাইশাঃ নায়ায়া

আকাশঃ কি হলো?

মাইশাঃ না মানে আসলে একা এই বাড়িতে আমি কিভাবে থাকবো?

আকাশঃ তুমি তো একা থাকতে পছন্দ করতে বেশ,,আজ হঠাৎ কি হলো?

মাইশাঃ আ,,সলে আমার এখন ভয় করে তাই,,,

আকাশঃ হুম বুজছি আচ্ছা তুমি কিছু খেয়ে নিবে আসো নিচে খাবার ও এসে গেছে

মাইশাঃ আচ্ছা

মাইশা নিচে যায় গিয়ে দেখে পিজ্জা আর কোল্ড কফি আনিয়েছে আকাশ যা মাইশার অপছন্দ খাবার,,

আকাশঃ নাও খেয়ে নাও

মাইশাঃ এইসব খেতে হবে এখন?

আকাশঃ হুম,,,,

মাইশা না চাইতে ও এইসব খেতে থাকে আকাশ ঠিক বুজতে পারে মাইশা খেতে পারছে না,,

আকাশঃ থাক জোর করে আমাকে দেখিয়ে খেতে হবে না,,যা পছন্দ নয় তা সরাসরি বলা শিখো,,,

মাইশা চুপ থাকে,,,

আকাশঃ যাও উপর থেকে জ্যাকেট নিয়ে আসো তোমার আমরা বাহিরে যাবো,,,

মাইশা গিয়ে তাড়াতাড়ি তার জ্যাকেট নিয়ে আসে,,আকাশ তার ফোন থেকে কাকে যেন মেসেজ করছে ওমন সময় মাইশা এসে গাড়িতে বসে,,

মাইশাঃ চলো

আকাশঃ হুম

আকাশ তার ফোন রেখে ড্রাইভ করা শুরু করে,,লন্ডনের জনপ্রিয় একটা রেস্টুরেন্টে যায় তারা সেখানে বেশ সুন্দর করে যেন সব কিছু সাজানো,,,বেশির ভাগ মানুষ হালকা খাবার অর্ডার করছে তবে প্রতি টেবিলে ড্রিংক রাখা আছে,,,

আকাশ আর মাইশা গিয়ে একটা টেবিলে বসে,,ওয়েটার এসে তাদের খাবার অর্ডার নিয়ে যায়,,কিছু ক্ষনের মধ্যে খাবার আনা হয় মাইশা শুধু তাকিয়ে আছে খাবার গুলোর দিকে

মাইশাঃ(এর চেয়ে তো ভালো ছিলো বাসার পিজ্জা আর কফিটা,,,এই ঘাস লতা থেকে)

আকাশঃ কি হলো কি ভাবছো?

মাইশাঃ না মানে এইসব?মানে এইখানে কি বাঙ্গালী খাবার পাওয়া যায় না?

আকাশঃ তোমার সব চেয়ে প্রিয় রেস্টুরেন্টে আসলে প্রিয় খাবার গুলো ও সামনে তবুও তুমি বাঙ্গালী খাবার চাও?যা তুমি অপছন্দ করো?

মাইশাঃ না মানে এমনি দেশে তা খেতে খেতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে তো তাই,,,

আকাশঃ হুম আচ্ছা শুরু করো

আকাশ আর মাইশা খেতে থেকে,, আকাশের ফোনে শুধু মেসেজ এর টুন আসছে আকাশ ও ফোনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে,,,মাইশা তার পাশের টেবিলের একজন কাপেলের দিকে তাকিয়ে আছে,,,একটি ছেলে রিং দিয়ে একটা মেয়েকে প্রোপজ করে,,মেয়েটি তার হাত বারিয়ে দেয় ছেলেটি খুশিতে রিংটি পড়িয়ে দেয় মেয়েটির আঙ্গুলে,,,

মাইশা মুগ্ধ হয়ে শুধু তাকিয়ে আছে তাদের দিকে,,আকাশের নজর যায় মাইশার হাসি মাখা মুখের দিকে,,,

মাইশার চোখ দুটো পুরো বড় বড় হয়ে যায় যখন দেখে ছেলেটি পাবলিক জায়গার মধ্যে মেয়েটিকে লিপ কিস করে,,,লজ্জায় মুখ পুরো লাল হয়ে যায় মাইশার তাড়াতাড়ি অন্য দিকে তাকায়,,,

আকাশঃ এইসব এইখানে নরমাল,,,,

মাইশাঃ কি?

আকাশঃ এইভাবে পাবলিক জায়গায় লিপ কিস করা এইখানে নরমাল তা বললাম,,,

মাইশাঃ হুম

মাইশা হুম বলে অন্য দিকে তাকায় আকাশের দিকে তাকানোর পর্যন্ত তার সাহস হয় নাই,,মনে মনে ভাবতে থাকে

মাইশাঃ(কি বেশরম রে বাবা এরা,,পাবলিক জায়গায় এইভাবে কেউ কাউকে ছি ছি কই এসে পড়লাম আমি,)

মাইশা এইসব ভাবছে আর আকাশ মাইশার মুখের রিএক্ট দেখে বুজে মাইশা কিছু ভাবছে,,,আকাশ উঠে মাইশার সামনে যায়

মাইশাঃ(হায় আল্লাহ এই আকাশ ও কি আমাকে এখন এদের সামনে ছি ছি)

আকাশ মাইশাকে উঠতে বলে

মাইশাঃ দেখো আমাকে প্লিজ এইভাবে পাবলিক জায়গায় কিস টিস করতে আসবে না,,,

মাইশার কথা শুনে আকাশ হেসে দেয়,,,

আকাশঃ তোমাকে কিস করতে আসি নাই পাগলি হাত বারিয়ে দিচ্ছি কারণ অইযে দেখছো ডান্স ফ্লোর সেখানে কাপেল ডান্স করছে আমরা ও করবো তাই,,,

মাইশা এই শুনে কি উত্তর আর দিবে খুঁজেই পাচ্ছে না,,,

আকাশ মাইশাকে নিয়ে যায় ডান্স ফ্লোরে,,মাইশার কোমড়ে হাত রেখে নিজের দিকে টেনে এনে ডান্স শুরু করছে,,,কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে

আকাশঃতোমাকে তো এইভাবে পাবলিক জায়গায় যদি লিপ কিস করা না হতো খুব রেগে যেতে আগে তাহলে এখন এইভাবে রিএক্ট??

আকাশের এমন কথা শুনে মাইশা অনেক টা ঘাবড়ে যায় এই আকাশ কি বুজাতে চাচ্ছে এই যেন তার মাথায় ঢুকছেই না,,,

আকাশঃ(আমি জানি তুমি কি ভাবছো কিন্তু তোমার এই মুহূর্তে মুখ এইভাবে বানিয়ে ফেলা কেন জানি বেশ ভালোই লাগে আমার,,,)

আকাশ মাইশার কানের কাছে মুখ আবার নেয়,,মাইশা ভাবে আবার যেন কি বলে উঠে কিন্তু না আকাশ আস্তে করে মাইশার গালে চুমু বসিয়ে দেয়,,চোখ দুটো বড় বড় করে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে,,,

আকাশঃ অনেক দেরি হয়ে গেছে চলো আমরা যাই,,

মাইশা এখনো থমকে দাঁড়িয়ে আছে,,,আকাশ মাইশার হাত ধরে হাঁটা শুরু করে মাইশা পুরো চুপ,,,

মুচকি হেসে সামনের দিকে যাচ্ছে আকাশ ভাবছে মাইশা কত মাসুম তার সব কিছু পুরো বাচ্চাদের মত,,,

মাইশাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে পুরো রাস্তায় মাইশা পুরো চুপ ছিলো,,আকাশ ও যেন একটা শব্দ করে নাই কি বলবে মাইশা যে উত্তর দেওয়ার মত নাই তার জানা আছে,,,

বাসায় ফিরার পর মাইশা রুমে যায় গিয়ে চুপচাপ বসে আছে কি হয়েছে অই সময় তা যেন তার মাথায় ঢুকছেই না গালে হাত দিয়ে চুপচাপ বসেই আছে,,,

এইদিকে আকাশ রুমে ঢুকে দেখে মাইশা গালে হাত দিয়ে বসে আছে হুট করে মাইশার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে

আকাশঃ তুমি অদ্ভুত

মাইশা এই শুনে আকাশের দিকে তাকায়

মাইশাঃ মা,,নে?

আকাশঃ এই যে তোমায় যখনই আমি কিস করি তুমি চোখ দুটো ইয়া বড় বড় করে ফেলো,,,,আর আগে তোমায় কিস করলে কখনও এমন করতে না,,,

মাইশাঃহু,,,

এই কথাটা যেন মাইশার একদম ভালো লাগে নাই আগে কিস শব্দ টা,,মাইশা তাহলে কি জেলাস করছে?হয়তোবা করতেই পারে স্বাভাবিক ব্যাপার তাই না???

আকাশঃ আচ্ছা একটা কথা বলবে?

মাইশাঃ কি?

আকাশঃ তোমার কি খারাপ লাগে আমার স্পর্শ এখন???

মাইশাঃ কে,,,ন?

আকাশঃ এই যে চোখ গুলো ঘোড়ার ডিমের মতো করে ফেলো সব সময়???

মাইশাঃ আমি কখন করি?

আকাশঃ আচ্ছা তাই বুজি

মাইশাঃ হুম

আকাশ মাইশার ঘাড় ধরে নিজের দিকে টেনে এনে আবার গালে কিস করে মাইশা এইবার ও চোখ বড় করে ফেলে আকাশ হেসে দেয়

আকাশঃ হাহা দেখলে এইবার ও করলে তুমি,,,

মাইশা উঠে যেতে লাগে আকাশ টেনে নিজের বুকে এনে চুল গুলো সরিয়ে বলে

আকাশঃ সত্যি বলতে তোমার এই লাজুক মুখ,,এই মুচকি হাসি আর তোমার এই চোখ যা আমি খুব সহজে পড়তে পারি সত্যি বলতে এইসব গুলোকে বড্ড বেশি ভালোবেসে ফেলেছি,,

মাইশা শুধু তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে,,,

আকাশঃ তুমি অনেক মায়াবী,,তোমার মাসুম চেহারা আর সরলতায় যে আমার মন কেড়ে নিয়েছে যা আমি নিজেও জানি না কবে শুধু জানি এখন আমি তোমায় এতো ভালোবাসি যে তোমায় ছাড়া এক মুহূর্ত বেঁচে থাকা আমার পক্ষে অসম্ভব,,,,

এই প্রথম মাইশা আকাশের চোখের কোণায় পানি দেখে,,,আকাশ যে মিথ্যা বলছে না তা মাইশা ঠিক বুজতে পারে,,,মাইশা আকাশের চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে

মাইশাঃ আমিও

আকাশঃ তুমি ও কি?

মাইশা হুট করে উঠে বসে সে কি বলতে চাইছিলো সে নিজে তো জানে না?

আকাশঃ তুমি ও কি?

মাইশাঃ না মানে কিছু না ঘুম পাচ্ছে অনেক

আকাশঃ হুম আচ্ছা ঘুমিয়ে যাও

মাইশাঃ তুমি?

আকাশঃ আমার ছোট একটা কাজ আছে ব্যস এসে যাবো তাড়াতাড়ি

মাইশাঃ কিন্ত আমি?

আকাশঃ চিন্তা কারন নেই আমি বাহির থেকে লক করে যাবো তুমি ঘুম থেকে উঠে আমাকে পাবে বুজলে,,,,

আকাশ মাইশার কপালে চুমু দিয়ে চলে যায়,,মাইশা বসে বসে ভাবছে আকাশ যদি সত্যি থাকে ভালোবাসতো?কিন্তু আকাশ তো ভাবছে সে মাহি আর আকাশের সব ভালোবাসা মাহির জন্য তার জন্য নয়,,,,

মাইশাঃ সে আমাকে নয় মাহিকে ভালোবাসে কেন আমি বারবার ভুলে যাই,,সে আমার স্বামী ঠিক তবে সে জানে আমি অন্য কেউ আর আমিও তার কেমন স্ত্রী বা হলাম?এক বছরের স্ত্রী শুধু তারপর আমাকে চলে যেতে হবে কিন্তু কিভাবে যাবো আমি?

মাইশা উঠে জানালার কাছে যায় জানালা থেকে সমুদ্র পাড় অনেক কাছে লাগছে বেশ ভালোই লাগছে সমুদ্রের ঢেউ দেখতে জানালা দিয়ে,,মাইশা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে

মাইশাঃ আচ্ছা যদি এমন হতো আকাশ জানতো যে আমি মাহি নয় মাইশা আর সে আমাকে ভালোবাসতো তাহলে কত না ভালো হতো,,,,ছি ছি কি সব ভাবছি আমি কিভাবে এইয়াব ভাবতে পারি,,,আমি তো এইখানে এসেছি কারণ আমাকে আনা হয়েছে আর আমি কিনা নিজের জায়গা ভুলে গেলাম উফফফ কিভাবে আমি এমন ভাবছি

মাইশা নিজেকে নিজে বকছে সে কি করছে এইসব ভাবছে,,,

কিছু ক্ষন পর মাইশা ব্যাগ গুলো থেকে কাপড় বের করে আলমারিতে রাখা শুরু করে,,কাপড় রাখতে রাখতে একটা সাদা প্যাকেট পড়ে যায়,,

মাইশাঃ এইট কি আবার?

মাইশা প্যাকেট টা তুলে নেয়,,ভিতরে কি আছে ভাবছে

মাইশাঃ দেখবো কি এইটা?কিন্তু এইটা এইখানে কেন?এইখানে তো কেউ আসে নাই অনেক বছর তাহলে এই প্যাকেট

মাইশা আর কিছু না ভেবে প্যাকেট টা খুলে যা দেখে সে তা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলো না,,,

মাহির ছবি যা খুব বাজে তাও আবার একটা ছেলের সাথে,,,,ছেলেকে জড়িয়ে ধরা,,বেড রুমে এক সাথে এমন অনেক ছবি,,,,মাইশা এইসব দেখে পুরো থমকে যায় এইসব মাহির ছবি তা-ও এতো বাজে বাজে অন্য ছেলের সাথে,,,,

মাইশাঃ হায় আল্লাহ এইসব কি?এইসব এইখানে কেন?আর আকাশ যদি এইসব দেখে তাহলে কি হবে?

মাইশা ঘাবড়ে যায় এইসব দেখে,,তাদের দুইজনের চেহারা মিল হলেও তারা পুরো ভিন্ন চরিত্রের দুইজন মানুষ,,,,আকাশ যদি এইসব দেখে তাহলে আকাশ তো তাকে খারাপ ভাববে এই ভেবে মাইশা পুরো ভয় পেয়ে যায়,,

এইদিকে

আকাশ
একটা পুরানো বাড়িতে আসে,,অন্ধকার পুরো রুম তাকে দেখে একজন লোক এগিয়ে এসে বলে

লোকটিঃ স্যার যেভাবে বলেছেন সেভাবে করেছি,,,

আকাশঃ হুম যাও এখন আমি কিছু ক্ষন একা থাকবো তার সাথে

লোকটি চলে যায় আকাশ গিয়ে সামনে বসে,,পায়ের উপরে পা তুলে বসে মুচকি হেসে বলে

আকাশঃ দয়া লাগছে তোকে এমন দেখে,,,,কি না হাল হয়েছে ইশশ,,,কি থেকে কি হয়ে গেলি বেচারা

আকাশের মুখে এক হাসি যা খুবই ভয়ানক লাগছে এই মুহূর্তে,,আকাশের সামনে একটা ছেলে বসা যার হাত পা নুখ সব বাঁধা,,,,তার মুখের অবস্থা এতো খারাপ যে দেখেই বুজা যাচ্ছে অনেক অত্যাচার করা হয়েছে তার উপরে,,,,

আকাশঃ আমার সাথে যদি বেইমানি না করতি তাহলে আজ এমন হাল হতো না এতো খারাপ অবস্থায় পড়তে হতো না,,,সবাই জানে তুই মরে গেছিস তুই বেঁচে নেই কিন্তু দেখ তুই আমার সামনে রিয়াদ,, উফফ রিয়াদ সত্যি আমার খারাপ লাগছে এই ভাবতে যে তোকে আমি কেন এখনো এতো ভালো রেখেছি,,,,

চলবে,,,

❤️ #মহব্বত❤️

Writer-❤️ #Israt_Jahan_Isu❤️

Part-11

আকাশঃ আমার সাথে যদি বেইমানি না করতি তাহলে আজ এমন হাল হতো না এতো খারাপ অবস্থায় পড়তে হতো না,,,সবাই জানে তুই মরে গেছিস তুই বেঁচে নেই কিন্তু দেখ তুই আমার সামনে রিয়াদ,, উফফ রিয়াদ সত্যি আমার খারাপ লাগছে এই ভাবতে যে তোকে আমি কেন এখনো এতো ভালো রেখেছি,,,,

আকাশ রিয়াদের মুখ থেকে টেপ টা খুব জোরে টান দিয়ে খুলে,,

আকাশঃ দেখ আজ আবার জিজ্ঞেস করছি ব্যস সুন্দর করে আমাকে আজ উত্তর দিবি,,এতো দিন আমার লোক জিজ্ঞেস করেছে বলিসনি,,কিন্তু আজ আমি যা যা জিজ্ঞেস করবো সব বলবি যদি না বলিস সত্যি বলছি তোকে এত কষ্ট দিয়ে মারবো যে তোর আত্না ও কেঁপে উঠবে,,,

রিয়াদঃ হাহা আকাশ তুই কি ভেবেছিস তুই আমাকে ভালো রেখেছিস এই দুই বছরে যে কষ্টের ভয়ে সব বলে দিবো,,,,

আকাশঃ হুম তাই তো৷,,, সত্যি তাহলে বলবি না

রিয়াদঃ সত্যি তুই কখনো জানবি না,,,

আকাশঃ তোর বউ কই আছে এখন জানিস?আর তোর বাচ্চা????

রিয়াদ চমকে উঠে

আকাশঃ কি হলো অবাক হচ্ছিস আমি কি করে জানলাম যে তোর বউ আছে আর তোর একটা ফুটফুটে তিন বছরের বাচ্চা ও,,,

আকাশ অট্টহাসি দিয়ে আকাশের ঘাড়ে হাত রেখে বলে

আকাশঃ তোর বউ আজও তোকে ভালোবাসে সে যদি তোর সম্পর্কে সব জানে তাহলে কি করবে জানিস?নিজের গলায় নিজে দড়ি দিবে এক মিনিট সে কে জানতে হচ্ছে আমি মিডিয়ায় যদি প্রকাশ করি তাহলে তাদের জীবন কত জঘন্য হবে জানিস?তোর ছেলে কিভাবে সমাজে বড় হবে?আর তোর বাবা-মা??

রিয়াদঃ তুই এমন করতে পারিস না আমি জানি

আকাশঃ অহ তাই?আমার দিকে ভালো করে দেখ তো আমি পারবো কিনা সত্যি তা নিজেই টের পাবি?দেখ আমার দিকে আমি আসলে কি দেখ?

রিয়াদ ভয় পেয়ে যায়,,,,

আকাশঃ তুই যদি আজ এইখানে মরেও যাস তাহলে তোর পরিবারের জীবন শেষ হবে তারা আজীবন তোকে ঘৃণা করবে আজীবন তাদের জীবন নষ্ট হওয়ার জন্য দায়ী তোকে করবে,,,ভেবে দেখ কি হবে তাদের? যদি তাদের বিন্দু মাত্র ভালোবেসে থাকিস রিয়াদ তাহলে আজ আমাকে সম্পন্ন সত্যি বল আমি শুধু তোর কারনে লন্ডন এসেছি,,,

রিয়াদঃ ঠিক আছে আমি সব বলবো তবে আমার পরিবারের সাথে কিছু করবি না তাদের বিন্দু মাত্র জানতে দিবি না আমার অতীত আমার সম্পর্কে,,,

আকাশঃ ওকে ব্যস আমার প্রশ্নের উত্তর গুলো সোজা দিবি,,,

রিয়াদঃ কি জানতে চাস?

আকাশঃ মাহি কোথায়????

রিয়াদ চমকে উঠে,,,

রিয়াদঃ মাহি তো মরে গেছে,,,

আকাশঃ দেখ রিয়াদ তুই যেমন ভালো জানিস ঠিক আমিও জানি যে মাহি বেঁচে আছে যে মেয়েটাকে আমরা দাফন করেছিলাম সে মাহি ছিলো না কারণ তার পুরো ফেস নষ্ট হয়েছে যার কারনে সে মাহি কিনা সিউর,,,ব্যস ওর ড্রেস ওর গাড়ি দেখে ওকে মাহি ভেবেছি এই

রিয়াদঃ আ,,সলে

আকাশঃ মাহি কই উত্তর দে,,,

রিয়াদঃ জাপানে,,,

আকাশঃ সেখানে কি করছে সে?

রিয়াদঃ মাহি তোর সাথে কখনও থাকতে চায় নাই,,,ব্যস অই সুযোগ নিয়েছি আমি,,ওকে বুজিয়ে শুনিয়ে এইসব প্লেন করি তারপর এই ঘটনার পর মাহি জাপানে চলে যায় রাসেলের সাথে,,,

আকাশঃ রাসেল???

রিয়াদঃ রাসেল আর আমি এক সাথে এই কাজ করি,,,আমাদের শুধু একটাই কাজ সুন্দরী মেয়েদের নিজেদের ফাঁদে ফেলে তাদের পাচার করা তারপর তাদের ভিন্ন দেশে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া,,,

আকাশ উঠে দাঁড়ায়,,,

আকাশঃ মানে তোরা মাহিকেও???

রিয়াদঃ হ্যাঁ,,,আমি প্রথম থেকেই বুজতে পারি যে মাহি একটু লোভী ওর মধ্যে ওর স্বাধীনতা অনেক বেশি ইম্পর্ট্যান্ট তা বুজতে পেরেছি ব্যস ওকে অইভাবে আমরা নিজেদের ফাঁদে ফেলি,,,।

আকাশ আর সেখানে দাঁড়ায় না চোখ দুটো ভিজে গেলো,,,সে রুম থেকে বের হয়ে লোকদের ইশারা করে যেন রিয়াদের দিকে খেয়াল রাখে,,,

আকাশ সমুদ্রের পাড়ে এসে বসে আছে,,,সমুদ্রের ঢেউ গুলো দেখছে আর ভাবছে মাহি নিজের হাতে নিজের সুন্দর জীবন টা নষ্ট করে কি না সুন্দর ছিলো জীবন গুলো তাহলে কেন সে এমন করলো বুকটা যেন তার আবার ক্ষত হয় এই ভেবে যে মাহির অবস্থা ভেবেই,,,

আকাশ চোখের পানি মুছে পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে অনেক গুলো মিস কল,, সেভ করা আছে প্রিয়তমা দিয়ে নাম্বার টা,,,নাম্বারে কল দেয়

আকাশঃ একটা ঠিকানা মেসেজ করে দিয়েছি একটা টেক্সি নিয়ে আর সে ঠিকানা বলে আসো

মাইশা কিছু বলে না সে তাড়াতাড়ি কোর্ট নিয়ে বের হয়ে যায়,,আকাশের বলা ঠিকানায় আসে এসে দেখে আকাশ বসে আছে

মাইশাঃ কি হলো এইখানে আসতে বললে যে?

আকাশ উঠে মাইশাকে ঝাপ্টে জড়িয়ে ধরে,,,

আকাশঃ আজ খুব প্রয়োজন তোমার

মাইশাঃ মন খারাপ?

আকাশ মাইশাকে ছেড়ে গালে হাত দিয়ে বলে

আকাশঃ তুমি যেমন আমাকে বুজো তেমন কেউ বুজে না,,,

মাইশাঃ কি হয়েছে বলবে?

আকাশঃ মাইশা আমি আজ ভেঙ্গে গেছি আরো একবার,,,(আনমনে বলে উঠে)

আকাশের মুখে তার আসল নাম শুনে সে থমকে যায়,,,

মাইশাঃ মা,,মাইশা???

আকাশের হুঁশ আসে সে কি বলে ডেকে দিয়েছে,,,দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে

আকাশঃ আর এই মিথ্যা গুলো সহ্য করতে পারছি না আর না পারছি নিজের ঘাড়ে এই বোজা টানতে,,,

আকাশ মাইশাকে টেনে বসায়,,,

দুইজনে বসে আছে বালুর উপরে,,সমুদ্রের ঢেউ ভয়ে যাচ্ছে সব কিছু খুব শান্ত হয়ে আছে,,মাইশা শুধু তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে,,,,

আকাশঃ আমি প্রথম থেকেই জানতাম যে তুই মাহি নয়৷,,,,কিন্তু প্রথম যখন তোমায় দেখি আমি অনেক বেশি শকড হয়েছি এই সত্যি কিন্তু যখন তোমার হাত ধরি আর হাতে সে কাটা দাগ দেখতে না পারি তা দেখে পুরো সিউর হলাম তুমি মাহি নও,,প্রশ্ন ছিলো একটা যদি মাহি না হও তাহলে কে তুমি???

আকাশের কথা শুনে মাইশা পুরো অবাক সে ভাবত আকাশ কিছু জানে না এখন দেখে আকাশ সব জানে,,,

মাইশাঃ আপনি কেন বলেন নাই যে আপনি জানেন সব???

আকাশঃ বলি নাই কারণ আমি জানতে চেয়েছিলাম তুমি কে,,তুমি বউ সাজে ছিলে যা মাহি কখনও হতো না কারণ তার এমন বউ সাজ কখনও পছন্দ ছিলো না,,,আসতে আসতে তোমায় জানি তুমি পুরো ভিন্ন মাহি থেকে তোমার পোশাক,তোমার ব্যবহার,তোমার আচরন,,সব কিছু মাহি থেকে ভিন্ন,,,চেহারা মিল তবে সব কিছু অমিল ছিল,,,,তোমার সম্পর্কে পুরো ডিটেইলস জানতে আমার এক লোক কে বলি সে আমাকে তোমার পুরো ডিটেইলস দেয় একটা ফাইল করে যা দেখে পুরো সিউর হলাম তুমি মাহি নয় মাইশা,,সাধারণ পরিবারের মেয়ে

মাইশাঃ আপনি সব কিছু জেনেও কেন আমাকে রেখেছেন?কেন বা আমাকে কিছু বুজতে দেন নাই যে আমি মাহি না সেটা আপনি জানেন,,,

আকাশঃ কারন তোমাকে আমি হারাতে চাই না তাই,,,

আকাশের কথা শুনে মাইশা পুরো থমকে যায়,,

মাইশাঃ এখন আমাকে কেন বললেন সত্তিটা?

আকাশঃ কারন এখন কষ্ট গুলো আর পারছি না বুকে,,,মাইশা তোমায় আজ সব টা বলবো আমি,,,আমার আর মাহির সম্পর্কে

মাইশাঃ মাহি আর আপনি একে অপরকে ভালোবাসতেন এই আমি জানি

আকাশঃ তুমি আমাকে তুমি করে বলিও যেমনটা আগে বলতে এইভাবে আপনি করে বলিও না প্লিজ

মাইশাঃ হুম

আকাশঃ মাহির সাথে দেখা হয় আমার পাঁচ বছর আগে আপ্পির বাসায়,,,আপ্পির বেস্ট ফ্রেন্ড এর বোন ছিলো সে,,,তার সাথে আমার প্রথমে বন্ধুত্ব হয়,,, তার সাথে বেশ ভালোই সম্পর্ক যেতে থাকে আস্তে আস্তে তাকে ভালো লাগা শুরু করে,,সেও জানতো আমি তাকে ভালোবাসি বা পছন্দ করি,,একদিন তাকে প্রোপজ করি সে ও একসেপ্ট করে নেয় সে থেকে শুরু আমাদের সম্পর্ক,,,

মাইশাঃ তাহলে কি হয়েছে এমন যে মাহি নেই?

আকাশঃ আমার আর মাহির সম্পর্ক অন্য রকম,,দামী গিফট দামী জিনিস এইসব তার পছন্দ ছিলো তার খুশিমতই সব দিয়েছি,,,তার ইচ্ছে তে সব হতো,,আমি চেয়েছি ওকে বিয়ে করতে তাই পরিবারের সবাই কে জানাই বেশ সবাই ওকে পছন্দ ও করে যখন ওর ছবি দেই,,ওকে দেশে নিয়ে যাই তারপর দেশে আমাদের এনগেজমেন্ট হয়,,,,কিন্তু সে বিয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলো না কয়েক মাস সময় চায় আমিও দেই কারণ আমি জানি সে আমায় ভালোবাসে,,,

আকাশ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে মাইশার হাত শক্ত করে ধরে বলে

আকাশঃ ভুল ছিলাম আমি,,,সে কখনও আমাকে ভালোবাসে নাই,না সে আমাকে চেয়েছে সে শুধু আমার অর্থ আমার নাম স্টাটাস ব্যস এইসবে ভালোবেসেছে,,

মাইশাঃ মানে?তুমি তো বললে যে অনেক খুশিতে এনগেজমেন্ট হয়

আকাশঃ হুম কিন্তু এর পর মাইশা লন্ডন এসে যায়,,আমি কয়েক দিন পরে আসি,,এসে ওর আচরন গুলো স্বাভাবিক ছিলো না সে ড্রিংক করতো তা আমি জানি কিন্তু প্রতি দিন নাইট ক্লাবে যাওয়া টা আমার কাছে স্বাভাবিক লাগে নাই কারণ সে প্রতি রাতে যেতো আর আসতো সকালে,,তাকে জিজ্ঞেস করলে ক্ষেপে যেতো তাই আর তেমন জিজ্ঞেস করতাম না,,,তবে বিশ্বাস ছিলো যাই করুক না কেন সে আমাকে কখনও ধোকা দিবে না,,,কিন্তু

মাইশাঃ কিন্তু কি?

আকাশঃ আমি একদিন ওকে ফলো করি,,নাইট ক্লাবে গিয়ে দেখতে চেয়েছিলাম আসলে সে কি করে,,ড্রিংক করা ডান্স করা এইসব প্রায় ৩-৪ ঘন্টা ধরে হচ্ছে কিন্তু সে একটা রুমে যায় পিছনে পিছনে গিয়ে দেখি একটা ছেলের সাথে,,,খুব বাজে অবস্থায় ছিলো সে,,নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করাতেই পারলাম না যে আমার মাহি এমন করতে পারে,,বিশ্বাস করবে না মাইশা চোখের পানি অইদিন ধরে রাখতে পারি নাই

আকাশের চোখ পুরো ভিজে গেছে,,মাইশা চোখের পানি মুছে দেয়,,

আকাশঃ কিন্তু জানো মাহিকে একজনের সাথে দেখেছি যত কষ্ট হয়েছে তার চেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছে অই মানুষ টাকে দেখে যার সাথে সে ছিলো

মাইশাঃ পরিচিত কেউ????

আকাশঃ হ্যাঁ জানো সে কে ছিলো?

মাইশাঃ কে?

আকাশঃ রুপা আপ্পির হাজবেন্ড,,,,

আকাশ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে এই কথা বলে,,মাইশা এই শুনে তো পুরো অবাক,,,

মাইশাঃ কিন্তু উনি তো জানতো যে আপনি মানে তুমি আর মাহি একে অপরকে ভালোবাসো তাহলে

আকাশঃ মাহি আমাকে ভালোবাসে নাই কখনও,,মাহির সম্পর্ক ছিলো তারেক ভাইয়া মানে রুপা আপ্পির হাজবেন্ডের সাথে অনেক বছর ধরে যা আমরা কেউ জানতাম না,,,তারেকের ইচ্ছে তে মাহি আমার সাথে এই মিথ্যা অভিনয় করে এনগেজমেন্ট পর্যন্ত করে,,তারা ভেবেছে বিয়ের পরে তাদের সম্পর্ক চালিয়ে যেতে পারবে ব্যস সেজন্য মাহি আমার সাথে রিলেশন করে,,,

মাইশা কি বলবে সে নিজেও জানে না,,,

আকাশঃ তারেকের শুধু মাহির সাথে সম্পর্ক নয় আরো অনেক মেয়ের সাথে ছিলো যা আমি রুপা আপ্পিকে বলেছিলাম সে আমার কথা শুনে নাই তার হাজবেন্ড যা বলেছে তাই সে শুনেছে সেদিন থেকে আপ্পির আর আমার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়,,

মাইশাঃ মাহিকে বলো নাই তুমি সব জানো?

আকাশঃ না কিছু বলি নাই,,অইদিন রাতে প্রচুর কেঁদেছিলাম,,এইভাবে প্রায় সপ্তাহ চলে যায় কিন্তু মাহি একটা কল ও দেয় নাই আর না জিজ্ঞেস করেছে কেমন আছি,,,সিদ্ধান্ত নিলাম এইভাবে হবে না আপুর সংসার বাঁচানোর জন্য আপু আমার কাছে হাত জোর করে বলেছে ওর হাজবেন্ডের কথা যেন আমি কাউকে না বলি তার হাজবেন্ড নাকি তার কাছে মাফ চেয়েছে এই সেই হাবিজাবি অনেক

মাইশাঃ রুপা আপু জানতো যে মাহির সাথে???

আকাশঃ না,,এইছাড়া অন্য মেয়েদের সাথে আছে জানতো,,, কিন্তু মাহির সাথে তারেকের কি নিয়ে বারাবাড়ি হয় তাদের সম্পর্ক এক পর্যায়ে ভাঙ্গার মত তারপর রিয়াদের সাথে মাহির পরিচয়

মাইশাঃ রিয়াদ??

আকাশঃ রিয়াদ মাহির কেমন ফ্রেন্ড নাকি,,ওর সাথে ব্যস দুই তিনবার দেখা হয়,,তারপর মাহির সাথে এক এক বার একেক জনকে দেখতাম,,আমার হায়ার করা এক লোক মাহির কিছু ছবি তুলে আমাকে দেয়,,,যা প্রমাণ হিসেবে মাহিকে দেখাবো ভেবেছিলাম,,মাহিকে ঘৃণা করতে লাগলাম তুমি জানো টানা চার মাস আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারি নাই শুধু এইসবের জন্য,,,

মাইশাঃ মাহি জানতো না যে আপনি সব জানেন?মানে তুমি সব জানো?

আকাশঃ কিছু টা টের পেয়েছে যেন আমি আর কিছু জানতে না পারি সেজন্য সে মিথ্যা এএক্সিডেন্ট সাজায়,,,।।

মাইশাঃ মানে?

আকাশঃ মাহির ড্রেস একটা মেয়েকে দেয় পড়তে তাকে নিয়ে নিজের সব জিনিস দেয়,,মেয়েটা এতো টা নেশায় ছিলো যে সে মাহির দেওয়া সব জিনিস ও নেয়,,,গাড়ির ব্রেক ফেল আগে থেকেই করে রাখে,,এক্সিডেন হয় গাড়ির অই মেয়ে মারা যায় তবে চেহারা পুরো নষ্ট করে দেয় মাহি আর তার সাথে যারা এই প্লেনে ছিলো,,,আমাকে বলা হয় মাহির এক্সিডেন হয়েছে পাপ্পাও লন্ডন আসে সেদিন,,আমি এতো গিলটি ফিল করেছিলাম যে আমার কারনে মাহির মৃত্যু হয়েছে এই ভেবে,,,,

মাইশাঃ কিন্তু তোমার তো দোষ ছিলো না,,,

আকাশঃ প্রথমে ভেবেছিলাম আমার কারনে,,,অইদিন পাগলের মতো হয়ে গেলাম,,মাহি যেমনেই থাকুক না কেন ওকে ভালোবাসতাম আমি,,,ওর মৃত্যু মেনে নিতে পারি নাই,,,দাফনের আগে শেষ বার ওর হাত শক্ত করে ধরে রাখতে চেয়েছিলাম ওকে বলতে চেয়েছিলাম ক্ষমা করে দিয়েছি সে আমার সাথে যা করলো কিন্তু হাত ধরতে গিয়ে দেখি হাতে সে কাটা দাগ নেই যা মাহির একবার লেগেছে বলতে সে হাত কেটেছিল,,,সন্দেহ লাগে দাফন করি বেশ কিছু দিন এই নিয়ে ভাবি খোঁজ নিয়ে জানতে সে মাহি নয় অন্য কেউ,,,

মাইশাঃ কিন্তু তুমি তো এইখানে এসে গেলে?

আকাশঃ আমার অবস্থা খুব খারাপ ছিলো,, অই চারমাসে আমাকে যা বানিয়েছে যে দেখবে সে ভয় পাবে,,আমি চাই নাই মাহিকে কেউ খারাপ ভাবুক সে যেমনই থাকুক না কেন আমার পরিবার ওকে ভালো জানতো আমি চাই নাই ওকে কেউ বিন্দু মাত্র খারাপ ভাবুক তার সত্যি আমি তাই কাউকে বলি নাই,,দেশে নিয়ে যায় পাপ্পা কিন্তু আমি অই অন্ধকার রুমে নিজে আটকিয়ে ফেলি,,,,সবাই জানতো অই রুমে আমি আছি কিন্তু মাঝে মাঝে আমি লন্ডন আসতাম মাহিকে খুঁজতে,,,

মাইশাঃ পেয়েছেন?

আকাশঃ না কিন্তু এমন একজন কে পেয়েছিলাম যে সব জানতো কিন্তু সত্যি বলতো না আজ বললো মাহি কই আছে

মাইশাঃ কই?

আকাশঃ জাপানে,,,নিজের ইচ্ছে তে নিজের এই জীবন বেঁচে নিয়েছে,,আজ আমি মুক্ত আমার এই বোজা থেকে

আকাশ তার চোখের পানি মুছে মাইশার দিকে তাকায়,,

আকাশঃ মাইশা আমি জানি আমার সম্পর্কে আজ এইসব জেনে থাকতে চাইবে না কিন্তু বিশ্বাস করো আমি কাউকে ঠকাতে চাই না,,তোমায় দিয়ে এইসেই করাতাম কারণ আমার ভালো লাগতো আর তুমি ও পছন্দ করতে তা,,,

মাইশাঃ আমাকে বুকে নিয়ে ঘুমাতেন ইচ্ছে করে?

আকাশঃ হ্যাঁ কারণ তুমি সব থেকে আলাদা ছিলে,প্রতি দিন যখন ফজরের নামাজ পড়ে আমার মাথায় ফুঁ দিতে বিশ্বাস করো এই অনুভূতি আমি কেমন তা প্রকাশ করতে পারবো না,,তোমার সাথে এই যত মাস কাটিয়েছি আমার জীবনের বেস্ট দিন গুলো ছিলো অতীতের কষ্ট গুলো ভুলে গেছিলাম আমি,,

মাইশা আজ এই তো জানতে পেরেছে যে আকাশ তাকে ভালোবাসি যে বলতো মাইশা ভেবেই বলতো,,,তাকে তাহলে আকাশ ভালোবাসে খুশিতে যেন আজ মন ভরে যায়,,এতো কিছু শুনে তার খারাপ লাগলো এই ভেবে যে একটা মেয়ের জীবনেসত্যিকারের ভালোবাসা হলে আর কি লাগে তবুও যে ধরে রাখতে পারে না সে কত টা হতভাগী,,,,

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here