মাস্টার মাইন্ড,পর্ব-১,২

0
1953

মাস্টার মাইন্ড,পর্ব-১,২
নিলাঞ্জনা রহমান
পর্ব-১

আহহহহহহ!!!!!!!!!!!মরে গেলাম। আম্মু ওওওওওও বাচাওওওওওওওওওওওওও!!!!!!!!!!!আআআআআআআআআ
কি ভাবছেন কি হয়েছে? বলছি।।।।।

তিতির ফাইল নিয়ে অফিসে ঢুকছিলো এমন সময় কারো সাথে ধাক্কা খায় আর পরে যায় আর এই কাহিনী।
তিতিরঃঐ জলহস্তি, খচ্চর, বান্দর , ডাইনাসোর এর পঁচা ডিম, কালা কুমির চোখ কি পাশের বাসার মানুষরে দান কইরা আসছোস দেখস না???
লোকঃদেখুন আমার কোনো দোষ নেই আপনি ফাইল নিয়ে এতো ব্যসত ছিলেন যে আমাকে দেখেন নাই আর তাই ধাক্কা দিসেন আপনার দোষ তার উপর আপনি আমাকে চিল্লাচ্ছেন?
তিতিরঃকি!!!!আমার দোষ। আমার কাজের জায়গায় এসে আমাকে দাদাগিরি দেখাস!!!
তিতির পাশের টেবিল থেকে পানির গ্লাস নিয়ে পানি লোকটির উপর মেরে দিলো।
আর সেখান থেকে রেগে চলে গেলো।
তিতির যদি পিছনে তাকাতো তাহলে বুঝতো লোকটা রেগে ফায়ার হয়ে আছে।

পরিচয়ে আসা যাক।
তিতির রহমান আমাদের নায়িকা।
তিতির একজন CBI অফিসার। খুব সাহসী একজন মেয়ে।খুব সাহসিকতার সাথে লড়াই করে।বাবা মার একমাত্র মেয়ে। ঢাকায় থাকে এক বান্ধবীর সাথে। বান্ধবীর নাম প্রিয়া।সে ও তিতির এর সাথে কাজ করে।দুজনই CID অফিসার। তিতিরের বাবা মা চট্টগ্রামে থাকে।
তিতির চঞ্চল মেয়ে তবে কাজের প্রতি প্রচুর সিরিয়াস।

আফতাব চৌধূরী।CBI এর হেড।
আফতাব রুমে বসে কাজ করছিলো।
কিছু ফাইল চেক করার পর টেলিফোন নিয়ে পিয়নকে ডাকলো।
পিয়নঃআসতে পারি স্যার?
আফতাবঃহুমমম।আবদুল সবাইকে কনফারেন্স রুমে আসতে বলো।
ওকে স্যার।

১৫মিনিট পর…………..…………..

সবাই কনফারেন্স রুমে আসলো।
আফতাবও আসলো।
হ্যালো অফিসার্স। আপনাদের আজ এখানে ডাকা হয়েছে কিছু জরুরি কথা বলার জন্য।।
সবার প্রথমে আপনাদের পরিচয় করাতে চায় আপনাদের নতুন সিনিয়র অফিসার যিনি এখন আমাদের সাথে কাজ করবে। সো ওয়েলকাম সিনিয়র অফিসার তিতাস চৌধূরী।

তিতাস চৌধূরী আমাদের গল্পের হিরো।সিনিয়র অফিসার। এতোদিন চট্টগ্রামে পোস্ট ছিলো। কিন্তু তিতাস তার ফ্যামিলির সাথে থাকতে চেয়েছিলো তাই ঢাকায় এসে এখানে জয়েন্ট করেছে।তিতাস এর বাবা আফতাব চৌধূরী।
মা রাবেয়া চৌধূরী। তিতাস এর একটা বোন আছে মৌনতা।

তিতাসকে দেখে সবাই হাত তালি দিলেও তিতির ভয়ে ঢোক গিলছে। তিতির এর পাশে বসা প্রিয় বললো কিরে কি হয়েছে এমন কেনো করতাসস?কি হয়সে তোর?
তিতিরঃবইন আমি আজ সকালে এক লোকের লগে হেব্বি ঝগড়া করছি এমন কি পানিও মারসি আর সে লোক হইলো আমগো সিনিয়র অফিসার???????
প্রিয়াঃকি!!!!!!মাইরি আর কাউরে পাস নায় ঝগড়া করার?.
তিতিরঃবইন এখন আমার কি হইবো?আমি শেষ।এই ব্যাটা যদি বলে দে আমি তারে পানিতে গোসল করাইসি স্যার আমারে লাথি দিয়া বের কইরা দিবো ????
প্রিয়াঃহয়সে আর কান্দিস না। মিটিং শেষ হলে তুই মাফ চেয়ে নিস।
তিতিরঃহুমমম তাই করুম।
আফতাবঃআমাদের একটা নতুন কেস এসেছে আর আমি এই কেস এর জন্য একটা নিউ টিম বানাবো আর সেই টিম এর হেড হবে অফিসার তিতাস।
তিতাসঃওকে স্যার।
আফতাবঃতাহলে আমি যাদের নাম বলবো তারা এই টিম এর সদস্য।
অফিসার আকাশ,অফিসার শুভ,অফিসার তিতির,অফিসার নীল,অফিসার প্রিয়া।
সবাই একে একে দাড়ালো।
তিতিরকে দেখে তিতাস এক রহস্যময় হাসি দিলো।
আফতাবঃকাল আপনারা ৬জন আমার সাথে কনফারেন্স রুমে দেখা করবেন ১১টায়।ইজ দ্যাট ক্লিয়ার?
সবাই বলে উঠলো ইয়েস স্যার।
আফতাব চলে গেলো সবাই চলে যেতে লাগলো।তিতাস তখনও দাড়িয়ে ছিলো।
তিতিরঃ ইউ ক্যান ডু ইট তিতির। ফুুুু। জাস্ট সরি বলবি তারপর চলে আসবি কি এতো বড় কাজ।
তিতির ভয়ে ভয়ে তিতাস এর সামনে গেলো।
কিছু মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না।
তিতাস ফাইল দেখছিলো।
তিতিরঃস্যা..স্যা..স্যার!!
তিতাস তিতির এর দিকে তাকালো।
তিতাসঃওহহ আপনি! তো মিস ঃতিতির আপনি যেনো কি বলছিলেন আপনার কাজের জায়গা, দাদাগিরি সামথিং…..
তিতিরঃসরি স্যার মাফ করে দেন আমি জানতাম না আপনি অফিসার আসলে টানা ২ ঘণ্টা কাজ করার পর ফাইল ঠিক করে আসছিলাম আপনার সাথে ধাক্কা লেগে সব পড়ে গিয়েছিলো তাই মাথা গরম হয়েগিয়েছিলো আম সরি????।
তিতির এর ফেস দেখে তিতাস এর খুব হাসি পাচ্ছিলো।
তিতাসঃসরি মিস আপনাকে তো মাফ করা সম্ভব না আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হই আমার গায়ে পানি ফেললেন এখন আবার ক্ষমা করতে বলছেন।শুনেন আমি তো আপনাকে মাফ করছিনা।১মিনিট আমি তোমাকে আপনি কেনো বলছি তুমি তো বয়স আর পোস্ট দুটোতেই আমার ছোট তাই তুমি বলেই ডাকি। শুনো তোমাকেতো আমি মাফ করছিনা।এখন তুমি আমার টিম মেম্বার। এখন তুমি বুঝবে তিতাস কে!সো বি কেয়ারফুল বেশি নড়চড় করলে তোমার চাকরি শেষ!ওকে,সো গো নাও!
তিতিরঃস্যার!!(করুণ কণ্ঠে)
তিতাসঃ নো মিনস নো আপনি এখন আসতে পারেন।
তিতির আর কি করবে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বের হয়ে গেলো আর মনে মনে তিতাসকে অনেক গালি দিলো।

তিতাস ঃআমার গায়ে পানি ফেলা তুমি এখন বুঝবা মিস তিতির।
তিতাস তার কাজে মনোযোগ দিলো।

পরেরদিন……..
টিমের সবাই কনফারেন্স রুমে উপস্থিত। সবাই টুকটাক কথা বলছিলো।
এমন সময় আফতাব রুমে এলো।সবাই তাকে দেখে দাড়িয়ে গেলো।
আফতাবঃবসো সবাই। আমি স্ক্রিনে কিছু কন্টেন্ট দেখাবো সবাই আগে দেখে নাও তারপর কথা।

লাইট অফ হয়ে গেলো। সবার সামনে কিছু ছবি ভাসতে লাগলো।
আফতাবঃ১৭টা মার্ডার,ড্রাগ ডিল,হিউম্যান ট্র্যাফিকিং এর মতো জঘন্য কাজ আমাদের এখানে বেরেই চলেছে।অনেক চেষ্টার পরও তাদের ধরা কষ্টকর হচ্ছে। এতোগুলো আইনবিরোধী কাজের পিছনে রয়েছে একজন মাস্টার মাইন্ড ডেভিল।যে এসব এর পিছনে।
তিতাসঃএই ডেভিলটা কে?
আফতাবঃআমরাও জানি না। তাকে আজ পর্যন্ত কেউ দেখেনি।অনেক চেষ্টার পরও তাকে ধরা যাচ্ছে না।আর এজন্যই তোমাদের এই টিম আমি তৈরী করেছি।আমি চাই আমার এই স্পেশিয়াল টিম যাতে ওকে ধরতে পারে।কারন তোমাদের প্রত্যেকের মধ্যে আমি এক অনন্য প্রতিভা দেখি যার কারণে তোমরা টিম 6 এ আছো।
আই হোপ তোমরা আমাকে নিরাশ করবানা।
সবাই বলে উঠলো ইয়েস স্যার।!!!

আফতাবঃওকে তোমাদের এই টিম এর ফাস্ট মিশন হলো মিনিস্টার এর র‍্যালি।আমার গোপন সূত্রে জানা গেছে ডেভিল এর টিম ওখানে হামলা করতে পারে। আর মিনিস্টার কে মারার সম্ভাবনা রয়েছে।তাই আমি চাই আমার টিম যাতে ওখানে থাকে আর মিনিস্টার কে বাঁচাতে পারে।সো মাই টিম আর ইউ অল রেডি।
ইয়েস স্যার!!!!!
গুড। দ্যা মিটিং ইজ ডিসমিস ফর নাও।কাল তোমরা ওখানে যাবা।
আফতাব চলে গেলো।
প্রিয়া ঃকিরে স্যার তোকে মাফ করলো?
তিতিরঃনা!!ঐ হনুমান করে নাই। আমাকে এটিটিউড দেখাচ্ছে। কি ভাবে নিজেকে কালো কুমির।
,ধলা বান্দর, খচ্চর , ফাটা বাঁশ
প্রিয়াঃবইন চুপ কর আর বলিস না????
তিতিরঃকেনো বলবো না আমি ভয় পাই নাকি?
না ভয় পাবেন কেনো আপনি তো ঝাসি কি রাণী।পিছন থেকে তিতাস বললো।
তিতিরঃঐ কে রে?স্যার আপনি????
তিতাস রাগে তিতির এর দিকে তাকিয়ে আছে।
তিতিরঃস্যার আপনি!!
তিতাসঃজি আমি আপনি যেনো কি বলছিলেন মিস তিতির।
তিতিরঃকিছু না স্যার। আসলে ঠান্ডা পড়ছে তো তাই আপনি বেশি শুনতাসেন।
হিহিহি ????
তিতাসঃ?????
তিতির ভেবে পারছেনা কি করবে তাই কি আর করা তিতির একবার তিতাসকে দেখলো একবার দরজা আবার তিতাস আবার দরজা।
তিতিরঃস্যার ঐ দেখেন তিতাস ঐ দিকে তাকাতেই তিতিরকে আর পাই কে দিলো এক দৌড়।
তিতাস অবাক এটা কি হলো।
প্রিয়া কি করবে না বুঝে সেও দিলো দৌড় এদিকে তিতাস অবাক কি হলো এসব.।।
চলবে…………….

# মাস্টার মাইন্ড
২য় পর্ব
নিলাঞ্জনা রহমান

রাতে…..
তিতাস এর বাসায়……….
আফতাব সাহেব তার স্টাডি রুমে বসে কাজ করছে ফাইল নিয়ে।
তিতাসঃআসতে পারি?
আফতাবঃচলে আয়।এটা তোর বাসা অফিস না তাই পারমিশন নেওয়ার কিছু নাই।বুঝলি?
তিতাস চেয়ারে বসতে বসতে বললো তা তো বুঝলাম। বাবা আমার তোমার সাথে কিছু কথা আছে।
আফতাবঃবল।
তিতাসঃবাবা তুমি যে টিম 6 তৈরী করছো তাতে আমার কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু তিতির?ঐ মেয়ে কেনো? একটা বাচাল মেয়ে।
আফতাবঃকেনো তিতির কি করেছে?
তিতাসঃকি করেনি বলো?এরপর তিতাস সব বললো। সব শোনার পর আফতাব হাসতে লাগলো ????
তিতাসঃবাবা তুমি হাসছো?.??
আফতাবঃ ওকে হাসলাম না।আসলে তিতির এমনই।মেয়েটার বাচ্চামি আছে।দুষ্টামি করে।কথায় কথায় মজা করে তবে ও কাজের প্রতি অনেক সিরিয়াস,প্রত্যেকটা কেস খুবই বিচক্ষনতার সাথে সলভ করেছে।কখনো কাজে হ্যালাফ্যালা করেনি। শুন আমরা ওকে CBI তে এমনে এমনে রাখিনি।ওর যোগ্যতা অনুযায়ী রেখেছি।আমরা যে প্রফেশনে আছি তা একটা কঠোর পেশা আর তিতির সে পেশাকে আপন করেছে আর আনন্দের সাথে তা করছে। আর এজন্যই আমি ওকে টিমে রেখেছি।আর একজন সিবিআাই হেড হিসেবে আমি ভেবে চিন্তে ডিসিশন নিয়েছি।আর তুমি যেহেতু ওর সিনিয়র তোমার দায়িত্ব সব মানিয়ে গুছিয়ে চলা।আশা করি তুমি বুঝতে পারছো।
তিতাসঃজি বাবা।

তিতাস চলে গেলো……

পরেরদিন…….সবাই অফিসে এসেছে আর এখান থেকেই মিনিস্টার এর র‍্যালির ভেনু তে যাবে।
সবাই তাদের রিভলভার, বুলেট সব রেডি করছে,সবাই লকার রুমে তাদের নিজেদের সব জিনিস নিচ্ছে।
এমন সময় তিতাস রুমে আসলো………

ওকে গাইস তোমরা সবাই রেডি?
সবাই বলে উঠলো ইয়েস স্যার।
তিতাসঃতাহলে চলো।
সবাই নিচে নেমে গেলো। গাড়িতে উঠলো….
তিতাস গাড়ি চালাচ্ছে। পাশে তিতির বসলো আর মাঝের সিটে নীল আর প্রিয়া আর শেষ সিটে আকাশ আর শুভ।

কতক্ষন পর তারা ভেনু তে পৌছালো।

সবাই গাড়ি থেকে নেমে সামনে গেলো।

তিতাসঃহ্যালো স্যার!!
মিনিস্টার ঃহ্যালো আপনারা?
তিতাসঃআমরা সিবিআই থেকে এসেছি। স্যার আপনাকে বলেছে হয়তো?
মিনিস্টার ঃওহহহজ হ্যা। অফিসার আফতাব বলেছে আমাকে তো আপনাদের পরিচয়?
তিতাসঃআমি সিনিয়র অফিসার তিতাস,ইনি অফিসার নীল,অফিসার আকাশ,অফিসার শুভ,অফিসার প্রিয়া আর অফিসার তিতির।
তিতিরঃআমার নামটা সবার লাস্টে বললো তাও পেঁচার মতো মুখ করে শেওড়া গাছের ১৫ নম্বর পেতনির ২০ নম্বর বফ।????
তিতাসঃমিস তিতির কিছু বললেন??
তিতিরঃনা না স্যার আমি কি বলবো হিহিহি?????
তিতাসঃ????
মিনিস্টার ঃতো আমি আসি আপনারা থাকেন আমি আসলে একটু কাজ করছি।
তিতাসঃওকে স্যার।
মিনিস্টার চলে গেলো।

তিতাসঃওকে গাইস তোমরা আ্যলার্ট হয়ে যাও। চারপাশে নজর রাখো।কোনো সন্দেহজনক কাউকে দেখলে জানানো হোক। তোমাদের সবার ইয়ার ফোন কাজ করছে তো?
ইয়েস স্যার!!!
আচ্ছা তিতির, নীল আর আমি স্টেজ এর চারদিকে থাকবো। শুভ আর আকাশ এনট্রি গেট এ থাকো আর প্রিয়া তুমি সবার দিকে খেয়াল রাখো।
ওকে স্যার।
সবাই যার যার কাজে চলে গেলো।
অনুষ্ঠান শুরু হলো।

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে মিনিস্টারকে ফুল দিয়ে সম্মান জানানোর জন্য লোক উঠলো। এদিকে তিতাস আর বাকি সবাই সব কিছু দেখছে আর নজর রাখছে।হঠাৎ তিতাস এর নজর মিনিস্টার এর কোর্ট এর উপর পড়া লাল ডট এর উপর পড়লো।সঙে সঙে তিতাস লাল ডটের উৎস খুজলো আর তার চোখ ভেনুর ঠিক পাশের বিল্ডিংয়ে গেলো। আর দেখলো একজন লোক রাইফেল হাতে মিনিস্টারকে শুট করার ট্রাই করছে।
তিতাস একবার মিনিস্টার এর দিকে তাকালো একবার শ্যুটার এর দিকে।
তিতাস দৌড় দিলো স্টেজ এর দিকে। ঐ দিকে লোকটিও শ্যুট করে দিলো তিতাস দৌড়ে গিয়ে মিনিস্টার কে ধাক্কা মারলো। আর দুজনে পড়ে গেলো।
সবাই গুলির শব্দে ভয় পেয়ে গেলো আর অনুষ্ঠানে হইচই শুরু হয়ে গেলো।সবাই দৌড়াদৌড়ি করছে।
তিতাসঃস্যার আপনি ঠিক আছেন তো?
মিনিস্টার ঃ হুমম আমি ঠিক আছি।তিতাস উঠে দাড়ালো আর বিল্ডিংয়ের দিকে তাকালো শ্যুটারটা তখনো দাড়িয়ে ছিলো।তিতাস এর দিকে নজর পড়তেই দৌড় দিলো।
তিতাসও দৌড় দিলো।তিতাস এর পিছনে তিতির আর নীলও দৌড় দিলো।
আর বাকিরা জনতাদের হইচই সামলাতে লাগলো।
তিতাস দৌড়াতে দৌড়াতে এক পর্যায়ে লোকটিকে দেখতে পেলো।তিতাস আরো জোড়ে দৌড়াতে লাগলো।এদিকে তিতির আর নীলও দৌড়াচ্ছে।
দৌড়াতে দৌড়াতে লোকটি একটা গলিতে ঢুকে গেলো। তিতাসও ঢুকে পড়লো।নীলও তাই করলো।তিতির কি মনে করে গলিতে না ঢুকে সাইড দিয়ে চলে গেলো অন্য গলিতে।।

লোকটি দৌড়াচ্ছে আর বার বার পিছনে তাকাচ্ছে। দৌড়াতে দৌড়াতে পিছনে তাকানোর কারনে হটাৎ করে কেউ তাকে লাথি মারলো আর ও খেয়াল করতে না পেরে মাটিতে পড়ে গেলো।
লোকটি সামনে তাকিয়ে দেখলো একটা মেয়ে।

তিতির সামনে দাড়িয়ে আছে।তিতির শর্টকাট দিয়ে জলদি চলে এসেছে।
লোকটি উঠে তিতির কে মারতে লাগলে তিতিরও মারতে লাগলো হটাৎ মারতে মারতে লোকটা তিতিরকে রাস্তার পাশে থাকা কাঁচের ভাঙা টুকরা দিয়ে মারতে লাগলে তিতির হাত দিয়ে তা ধরে ফেলে।
তিতির এর হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে।তবুও তিতির প্রাণপন চেষ্টা করছে নিজেকে ঠিক বাঁচানোর। হুট করে কে এসে লোকটিকে লাথি মারে।। লোকটি ছিটকে পড়ে যায়।তিতির সামনে তাকাতেই দেখে তিতাস দাড়িয়ে আছে।
তার পিছনে নীল। তিতাস এসে লোকটিকে মারতে শুরু করলো আর নীল তিতির এর কাছে এসে তার হাতে রুমাল বেধে দিলো।
তিতাস লোকটিকে মারতে মারতে লোকটির কলার ধরে বসালো।
তিতাসঃবল!!!কে বলেছে তোকে এসব করতে বল!!!আমি জানি ডেভিল বলেছে৷ বল ডেভিলকে?বল!
লোকটি জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে।
তিতাস আবার বললো-বল কে ডেভিল।
লোকঃআমি জানি না।
তিতাসঃশুন ভালোই ভালোই বলছি বল। নাহলে আমরা এতো নির্দয় হতে পারি তুই বুঝতেও পারবিনা।থার্ড ডিগ্রি টর্চার করবো।
লোকটি খুব জোড়ে হাসতে লাগলো
তোমরা কখনো ডেভিল এর খোজ পাবেনা। কেউ বলবেনা ডেভিল কে?
আমিও না হাহাহা!!বলে হুট করে নিজের গলার লকেটে খুলে মুখে পুড়ে নিলো।
তিতাসঃএই!!!!তিতাস চেষ্টা করেও লকেটটা মুখ থেকে সরাতে পারেনি। আর লোকটার নিথর দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।

তিতাসঃসিট!!!!ড্যাম ইট।ডেভিল এর সম্পর্কে আজ ও জানতে পারলাম না ড্যাম ইট।মাটিতে জোড়ে পাঞ্চ দিলো।

তিতাসরা এম্বুল্যান্স কল করে লোকটিকে পোস্ট মর্টাম এর জন্য পাঠালো আর ওরা ভেনুতে গেলো।
মিনিস্টার ঃধন্যবাদ আপনাদের সবাইকে আজ আপনারা না থাকলে আমি তো……
তিতাসঃনো স্যার এটা আমাদের ডিউটি। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি।
মিনিস্টার ঃনো নো তোমরা যা করেছো তা প্রশংসার উপযোগী।আমি তোমাদের এই কাজের জন্য একটা পুরুষ্কার দিতে চাই।
তিতিরঃনা স্যার আমাদের কোনো পুরুষ্কার লাগবেনা।
মিনিস্টার আচ্ছা কোনো পুরুষ্কার দিলাম না তবে সামনের শুক্রবার আমার বাড়িতে একটা গেট টুগিদার রাখা হয়েছে আমি চাই তোমরা ওখানে আসবে আমি না শুনবোনা।
তিতাসঃওকে স্যার আমরা আসবো।

মিনিস্টার ঃ??????

ওরা সবাই হেড কোয়াটারে আসলো।
তিতির তার ডেস্কে বসে তার হাতে ব্যান্ড্যাজ করছিলো।
তিতাস পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো এমন সময় দেখলো তিতির এক হাত দিয়ে ব্যান্ডেজ করার ট্রাই করছে কিন্ত পারছেনা।
তিতাসঃআমি কি সাহায্য করতে পারি?
তিতিরঃওহহহ স্যার আপনি। না আসলে ব্যান্ডেজ করার ট্রাই করছিলাম।লাগবে না স্যার আমি পারবো।
তিতাসঃমিস তিতির আপনি বেশি কথা বলেন।বলে তিতাস তিতির এর সামনের চেয়ারে বসে পড়লো আর তিতির এর হাত নিজের হাতে নিয়ে ব্যান্ডেজ করতে লাগলো।
তিতাসঃআপনি তখন কাঁচটা ছেড়ে দিতেন তাহলে এতো ব্যাথা পেতেন না।
তিতিরঃস্যার আর যদি ছেড়ে দিতাম তাহলে লোকটা পালিয়ে যেতো আর আমি তা কিভাবে হতে দি।
তিতাসঃতাই বলে নিজের ক্ষতি করে? এই নাও ব্যান্ডেজ শেষ।
তিতিরঃস্যার যেদিন প্রথম এই জবে জয়েন্ট করেছি সেদিন ই নিজের জীবনকে বলে দিয়েছি আমি তোর কেউ না।যদি কখনো এমন কোনো সময় আসে নিজের দেশের জন্য নিজের জীবন বাজি দিতে হয় তাহলে আমি পিছ পা হবো না।দেশের সামনে কেউ না নিজের জীবনও না।
স্যার আমি আসি!
তিতির চলে গেলো।
তিতাস তখনো বসে আছে।আজ তিতির এর নতুন রূপ দেখলো।
তিতাসঃবাবা ঠিকই বলেছিলো। তিতির আসলেই এই কাজের যোগ্য।
তিতাস একটা টেডি স্মাইল দিলো।কারন আজ তিতিরকে দেখে তিতাস এর ভালো লাগলো।
কেনো জানি অন্য রকম ফিল হলো।

চলবে……….

[কেমন লাগলো জানাবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here