মাস্টার_মাইন্ড,পর্ব-৭,৮ম

0
1122

মাস্টার_মাইন্ড,পর্ব-৭,৮ম
নিলাঞ্জনা রহমান
পর্ব-৭

তিতির এর গাড়ি থামলো একটা বাড়ির সামনে। পুরানো বাড়ি। ঝোপঝাড়ে ঘেরা।এক প্রকার রাজবাড়ির মতো।তিতির ধীরে ধীরে বাড়ির দরজার সামনে আসলো।দরজার সামনে ৩জন লোক ছিলো।তিতির লোকদের বললো “রহস্যে ভরা পৃথিবী, কেউ নয় আপন,সবাই হলো পর।” বলার সাথে সাথে লোক গুলো দরজা খুললো। তিতির ভিতরে ঢুকলো।
তিতির হাটতে লাগলো তিতির এর সামনে একটা বড় ঘর।সেখানে অনেক লোক। সবার হাতে বন্দুক।
তিতির ধীরে ধীরে হাটছে। তিতির দেখতে পেলো একটা চেয়ার যাতে একজন বসে আছে।মুখ অন্যদিকে ফেরানো।
তিতিরঃকাজ হয়ে গেছে। আমি আপনার কথামতো কাজ করেছি।সবাইকে মেরে ফেলেছি।আর ব্লু প্রিন্ট ও এনেছি।
চেয়ারে বসা লোকটি এতক্ষন চুপ ছিলো।এবার উঠে দাড়ালো।
এরপর তিতির এর দিকে তাকালো।
আর জোড়ে জোড়ে হাসি দিলো।
তিতিরও হাসলো।
তিতিরঃস্যার আপনি তো ফাটিয়ে দিলেন। কেউ বুঝতেও পারবে না যে বাংলাদেশের সনামধন্য মিনিস্টার বাবুল আহমেদ। দেশের বন্ধু,জনগণের নেতাই হলো মাস্টার মাইন্ড।

হুমমমমম ঠিক ই ধরেছেন মাস্টার মাইন্ড আর কেউ না মিনিস্টার।
মিনিস্টার ঃ হাহাহা।সবই রহস্য।মিনিস্টার এর পেশা তো সামনের ঢাল আর এটা হলো আমার আসল কাজ। জানো তিতির তোমার টিমের মধ্যে তুমিই হলে বুদ্ধিমতী।
তিতির একটা শয়তানি হাসি দিলো।
….জানো তিতির ছোট থেকেই আমি খুব কষ্টের সাথে মানুষ হয়েছি।আমার মা অনেক কষ্টে মানুষ করেছিলো।আমি তখন খালি বড়লোকদের দেখতাম আর ভাবতাম।একদিন আমি ঠিক করে ফেললাম আমিও বড়লোক হবো অনেক টাকা কামাবো।সব টাকা আমার হাতের মুঠোয় থাকবে।আমার মাথায় ছিলো আমাকে যেভাবে হোক বড়লোক হতে হবে। তাই পড়ালেখা করলাম
তারপর অনেক সাধনার পর মিনিস্টার হলাম।
কিন্ত আমার মাথায় আরো টাকা কামানোর কথা আসলো।
তাই আমি মানুষদের জমির দখল নিতে লাগলাম। তখন ঐটায় করতাম। হটাৎ একদিন এক জমির মালিক জমির দখল দিতে চাইলো।আমি আমার ভাড়াটে লোক দিয়ে ভয় দেখালাম তবুও মানলো না।আমার মাথা গরম হয়ে গেলো দিলাম দাঁ দিয়ে তার মাথায় এক কোপ আর মাথা আলাদা হয়ে গেলো।
সেটায় ছিলো আমার প্রথম খুন।এরপর আমার খুন করতে আনন্দ লাগতে শুরু করলো।তাই করতে লাগলাম আমার পথে যে আসে তাকে শেষ করে দিতাম আর হয়ে উঠলাম ডেভিল। মার্ডার, হিউমান ট্রাফিকিং,কিডন্যাপ সব করতে লাগলাম।খুব ভালোই চলছিলো।আমি টাকা পাচ্ছিলাম।কিন্তু আফতাব চৌধূরী টিম 6 তৈরী করলো আর সে টিম আমার উপর ভারী হতে লাগলো। তাই তো তোমাকে দিয়ে এই কাজ করলাম।হাহাহা
তিতিরঃস্যার আসলেই আপনাকে মানতে হবে আপনি আসলে মাস্টার মাইন্ড। তবে আমার একটা প্রশ্ন ছিলো।
….বলো কি বলবে আজ তোমার সব প্রশ্নের উত্তর দিবো।
তিতিরঃআপনি যদি ডেভিল হন তাহলে আপনি কেনো নিজের র‍্যালিতে হামলা করালেন?
…..????আরে ঐটা? ওটাতো আমার প্লান ছিলো আর আমার লোক ছিলো।
তিতিরঃপ্লান?বুঝলাম না।
…আসলে এবার ইলেকশনে বিপরীত পার্টির প্রার্থী প্রচুর ভালো ছিলো। আমার জিতার সম্ভাবনা কম ছিলো।আমি বুঝতে পারছিলাম না কি করবো।তাই ভাবলাম নিজের দিকে মানুষকে আকর্ষন করতে হবে তাই এসব করলাম।
তিতিরঃবাহ স্যার,আপনার কি প্লান।নিন স্যার আপনার জিনিস। এবার আমার টাকা দিন।
…..(ব্লু প্রিন্ট নিয়ে) হুমমম তা তো দিব।তুমি ছাড়া তো আমার কাজ হতোই না তবে কি তিতির আমি না সবসময় পাকা কাজ করি। যার কারনে আজ পর্যন্ত কেউ ধরতে পারেনি।আমি জানি তুমি আমার প্লানে অনেক সাহায্য করেছো কিন্তু কি করবো বলো আমি যদি তোমাকে আজ যেতে দি তুমি আমার জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারো।তাই সরি তিতির আমি কোনো ঝামেলা চাই না তাই তোমাকে মারতেই হবে।
তিতিরঃআপনি আমাকে মারবেন (অবাক হয়ে)
না আপনি এমন করতে পারেন না।
…আমি সব পারি তিতির।সো সরি আজ তুমি মরবে সাথে আমার রহস্যও ????
তিতিরঃনা
…মিনিস্টার গুলি হাতে নিলো আর তার সামনে তিতির।। তিতিরঃনা;আমাকে ছেড়ে দিন, না!!!!!!!
মিনিস্টার গুলি মারতে লাগবে এমন সময় কোথা থেকে গুলি এসে তার হাতে লাগলো আর তার হাত থেকে বন্দুক পড়ে গেলো।
মিনিস্টার ঃআহহ!!!!!! তার হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে।
মিনিস্টার গুলির আসার উৎসের দিকে তাকালো আর যা দেখলো তাতে ওর পায়ের তলা থেকে জমিন সরে যাওয়ার অবস্থা। কারন তার সামনে দাড়িয়ে আছে তিতাস,আকাশ,নীল,প্রিয়া,শুভ।
মিনিস্টার ঃএই কি করে সম্ভব ওরা তো মারা গেছে। ওরা কিভাবে এখানে?
তিতিরঃহাহাহাহা
মিনিস্টার তিতির এর দিকে তাকালো সে হাসছে।
তিতাসঃকেমন আছেন স্যার?
আকাশঃগুড ইভিনিং স্যার।
নীলঃআজ দিনটা সুন্দর তাই না স্যার!!
প্রিয়াঃ নীল দিনটা তো সুন্দর কিন্ত স্যার এর মুখটা পেঁচার মতো কেনো হয়ে আছে?
শুভঃ আমার মনে হয়,স্যার শক খাইসে তাই না স্যার?
তিতিরঃঠিক বলেছো শুভ, স্যার মনে হয় শক খাইসে।স্যার পানি খাবেন?চিলড ওয়াটার। ???
মিনিস্টার ঃকি হচ্ছে এসব?

তিতাসঃসব বলছি স্যার তার আগে আপনার এই চাংকু পাংকু গুলাকে জেলে পাঠায়।
অফিসার্স!!!!
বলার সাথে সাথে ১দল অফিসার আসলো আর সব গুলো লোককে ধরে ফেললো।
মিনিস্টার ঃকি হচ্ছে এসব!!!!!!!!!!!! আর তোমরা কিভাবে?????

তিতিরঃবলছি স্যার বলছি স্যার।

চলবে…………………..

#মাস্টার_মাইন্ড
৮ম পর্ব
নিলাঞ্জনা রহমান

তিতিরঃকি হলো স্যার আপনার মাথা ঘুরছে??
ওয়েট আপনার সব সন্দেহ ক্লিয়ার করছি।
“সেদিন পার্টিতে আমি শাড়ি ঠিক করার জন্য আমি আপনার রুমে যায়।হটাৎ একটা ফোন আসে।

অতীত……..
কিরে কার ফোন বাজছে?

এটা কার ফোন(মোবাইল হাতে নিয়ে)
ওহহ মনে পড়েছে এটা তো মিনিস্টার স্যার এর ফোন। এক কাজ করি কলটা ধরে দেখি।।
তিতির কল টা ধরলো কিন্ত কিছু বলার আগে অপরপাশ থেকে বলতে শুরু করলো-
” স্যার ঐ লোক তো মারা গেছে। তার ভাই আসছে, বলছে টাকা না দিলে সবাইকে বলে দিবে আপনি টাকা দিয়ে নকল হামলা প্লান করেছেন।আর আপনি যে ডেভিল তাও বলে দিবে কি করবো এখন?স্যার!স্যার!
তিতির ফোনটা রেখে দিলো।
তিতিরঃতার মানে মিনিস্টারই ডেভিল।আমাকে সবাইকে বলতে হবে।
তিতির বাইরে গেলো কিন্তু কাউকে বলতে পারছেনা।

এরপর মিনিস্টার যখন বললো কার৷ কি ইচ্ছা তা শুনে তিতির বললো
“উনি এটা কেনো জানতে চাইছে?এটায় ডেভিল এর কোনো প্লান নেই তো?
নাকি উনি আমাদের ইচ্ছা জেনে কাউকে লোভ দেখাবেন।না না আমাকে কিছু করতে হবে।
তাই আমি ইচ্ছা করে তখন বললাম আমার টাকা দরকার।

এরপর আমি পার্টি থেকে বাইরে এসে সবাইকে জানাবো ভাবলাম কিন্তু সবাই যার যার কাজে চলে গেলো।তাই ভাবলাম সবাইকে একসাথে জানাবো। এই জন্য আমি বাসায় গিয়ে সবাইকে কনফারেন্স কল দিলাম।
সবাই আসলো কলে…
আকাশঃকি হয়েছে তিতির সব ঠিক আছে
তিতাসঃআর ইউ অলরাইট তিতির? এতো রাতে?
তিতিরঃস্যার আমি জানতে পেরেছি ডেভিল কে?
নীলঃওয়াট!!!!
তিতিরঃহুমমম।এরপর তিতির সব বললো।
শুভঃ তাহলে আজই আমরা মিনিস্টার কে গ্রেফতার করবো।
তিতাসঃওয়েট ওয়েট এখন না।।
প্রিয়াঃমানে??
তিতাসঃহুমম উনি একজন বড় মন্ত্রি। উনাকে একইউজ করতে আমাদের প্রৃমান লাগবে?আর যা আমাদের কাছে নেই।
নীলঃতাহলে?
তিতাসঃআমাদের একটা ট্র্যাপ করতে হবে।তিতির এর কথা অনুযায়ী মিনিস্টার ওকে লোভ দেখানোর ট্রাই করতে পারে আর আমরাও তাই করবো।মিনিস্টার ভাববে তিতির ওর পেয়াদা কিন্তু তিতির আমাদের কাজ করবে।
তিতিরঃএকদম ঠিক স্যার। এটাই হবে।

বর্তমান……..
তিতিরঃএরপর কিছুদিন পরই আপনি আমাকে অফার দেন। আমিও প্লান অনুযায়ী মেনে যায়।
এরপর যা হয় সব প্লান অনুযায়ী।

মিনিস্টার ঃতাহলে তুমি যে আমাকে প্রত্নতাত্তিক জিনিসগুলার তথ্য দিলা তা কি ছিলো?
তিতাসঃহাহাহা ডেভিল তোমার এখনো মনে হচ্ছে ঐসব জিনিস আসল ছিলো
মিনিস্টার ঃমানে?
আকাশঃআমি বলছি তিতির তোমাকে সব ঠিক বলেছে।আমরা দুটো ট্রাক নিয়েছিলাম।একটা আসল আরেকটি নকল শুধু তোমাকে আমরা এক্সচেঞ্জ করে বলেছি যে ট্রাকে তোমরা হামলা করেছিলে ঐটা নকল।আসল ট্রাক প্রিয়ারা নিয়েছিলো।
তিতাসঃআমরা ইচ্ছা করে করেছি।যাতে তোমরা নকল জিনিসে নজর দিতে দিতে আসল আসল জিনিস নিরাপদে চলে যাক।

মিনিস্টার ঃ?????
প্রিয়াঃএরপর এর কাহিনী আমি বলি।
আমরা যখন জানলাম শামীম স্যার এর উপর হামলা করতে পারেন তখনই আমরা প্লান করি এবার আপনাকে হাতেনাতে ধরবো আর তাই এসব করলাম।আপনার সাথে তিতির প্লান করে আমাদের সবাইকে মারার।আমাদের এই প্লান সবাই জানতো আপনি বাদে।তিতির যখন আমাদের গুলি করে তখন আমরা সবাই বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পড়েছিলাম যার কারনে আমাদের কিছু হয়নি।
মিনিস্টার ঃ কিন্তু তোমাদের উপর তো আ…আমার লোকের নজর ছিলো তাহলে……
তিতাসঃআসলে স্যার আপনি ভুলে যাচ্ছেন আমরা সিবিআই অফিসার। আমরা জানি দুশমনদের কিভাবে হেনস্তা করতে হয়।

শুভঃ তো স্যার কেমন দিলাম
??????
মিনিস্টার ঃতোমরা ভালো করনি এর শাস্তি তোমরা পাবে।
তিতাসঃতা পরে দেখা যাবে আপনি জেলে যান তার আগে।
অফিসার্স এই লোককে নিয়ে যাও। একে তো এমন শাস্তি দেওয়া হবে।

অফিসাররা মিনিস্টারকে নিয়ে্ যাচ্ছিলো।
তিতাসঃতিতির আই মাস্ট সে তুমি অনেক ভালো কাজ করেছো।আর আমাদের মারার নাটকটাও খুব ভালো করেছো।এক সময় তো আমার মনে হলো সত্যি সত্যি তুমি ভিলেন হয়ে গেলে।
তিতিরঃস্যার!!কি বলেন।আপনারা জানেন আমার কি কষ্ট হয়েছে৷ আপনাদের মারতে গিয়ে আমি খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম । তিতির এখন কান্না করে দিবে এমন মনে হচ্ছে।
প্রিয়াঃওলে ওলে আমার বেসটু।
তিতিরঃপ্রিয়া সর!!!
আহহহহহহহ

সবাই চমকিত কি হলো।
সবাই খেয়াল করলো তিতির এর বুক থেকে রক্ত ঝরছে।।

আসলে মিনিস্টার কে নিয়ে যাওয়ার সময় ও অফিসার এর গুলি নিয়ে স্যুট করে আর তিতির এর গুলি লাগে।
অফিসার মিনিস্টার কে মেরে গুলি ছিনিয়ে নেয় আর ওকে ধরে নিয়ে যায়।
তিতির মাটিতে পড়ে যেতে লাগলে তিতাস ধরে ফেলে।
তিতাসঃতিতির!!!তিতির!!
তিতিরঃআহহহহ(ব্যাথায় কাতরাচ্ছে)
তিতাসঃ প্লিজ স্টে৷ উইথ মি তিতির চোখ খোলা রাখো তিতির।
সবাই কান্না করছে।
তিতিরঃস্যার আমি…..
তিতাসঃতিতির তুমি আমাকে ছাড়তে পারো না। আমি তোমাকে যেতে দিবো না।তুমি আমার সাথে থাকবা।
তিতিরঃ????
তিতাসঃআই লাভ ইউ তিতির প্লিজ ডোন্ট লিভ মি।
তিতাস তিতিরকে কোলে তুলে নিলো।
তিতাস দৌড়াচছে।সবাই ওর পিছনে।

চলবে…………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here