#মায়াপ্রপঞ্চ,২২,২৩
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ২২]
________________
হাতে লম্বা ছাতা নিয়ে বাজারের উদ্দেশ্য বের হয়েছে জাবির মাতবর।বেশ কয়েকদিন পর ছেলেটা আজ বাড়ি ফিরছে।তার জন্য একটুখানি আয়োজন তো করাই যায়।তার সাথে বাড়িতে সুহাইলের মতো অতিথি আছে কী না!সুহাইল ছাদের কার্নিশে হেলান দিয়ে চায়ে চুমুক দিচ্ছিলো কাল রাত থেকে অনেক হিসেব নিকেশ কষেছে।কায়িমের শারিরীক অবস্থা খুব একটা ভালো না।যত দ্রুত চিকিৎসা করা যায় ততই ভালো।তাই এই সময়টাতে হাত গুটিয়ে বসে থাকা চলবে না।মেঘ কাটিয়ে আকাশটায় দারুন রৌদ্রের দেখা দিয়েছে;বৃষ্টি শেষে এমন একটা রোদ শরীর ও মনকে চাঙ্গা করতে যথেষ্ট।ছাদ থেকে রাস্তার দিকে দৃষ্টি রাখলে সুহাইল দেখতে পায় জাবির মাতবর ছাতা হাতে হেটে যাচ্ছে।এই সুযোগটাই কাজে লাগালো সে।ছাদ থেকে হাঁকডেকে বলে,
– আঙ্কেল কই যান?
জাবির ঘুরে তাকালো।ছাদের দিকে চোখ বুলিয়ে উচ্চস্বরে বলে,
– বাজারে যাই।
– আমিও যাবো।একটু দাঁড়ান।
জাবিরের সঙ্গে বাজারের উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়ে সুহাইল।দুজনে আজ মন মতো বাজার করছে, সুহাইলের পছন্দ মতো সব মাছ কিনেছেন জাবির।বিদেশের মাটিতে দেশীয় মাছ এমন তাজা পাওয়া ছেলেটার ভাগ্য জোটা দুষ্কর।
.
আরমিন গায়ে নতুন জামা জড়িয়ে মাথাটা ভালোভাবে বেঁধে নেয় হিজাব।গায়ে ওড়না ফেলে ঘর থেকে বের হতেই ডেকে উঠেন সালেহা।
– এত সেজে কই যাওয়া হচ্ছে?
– আমি সাজলাম কোথায়?একটু বাজারে যাবো।সেখান থেকে কিছু টুকটাক কাঁচা বাজার সেরে জুতো কিনবো।
– জুতা কিনবি কেন?গত মাসেই তো জুতা কিনে দিলাম।
– বিয়ে বাড়িতে জুতাটা নড়বড়ে হয়ে গেছে আম্মা।আর্জেন্ট জুতা লাগবে।
সালেহা জবাব দিলো না চোখ পাকিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।আরমিনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভর্ৎসনার স্বরে বলে,
– জুতা কেনার আগে জুতা দিয়া কপালে দুই চারটা বা-রি দিয়ে দেখিস।বলা তো যায় না দেখবি জুতাডা ছিড়া যাইবো।তোর কপালে তো আবার বেশিদিন কিছু সয় না।সব কিছুতেই খরা লাগে।
মায়ের কথা শুনে আরমিন দাঁত কেলিয়ে হাসে।
– আমি যাই তবে।
– হ্যা যান আপনার জন্য তো লোহার জুতা হইলে বেশ ভালো হয়।তাইলে আর আমারে মাসে মাসে জুতা কিনতে হইতো না।
.
সুহাইল জাবির সব কিছু কেনাকাটা শেষ করে বাজারের এক কোনায় দাঁড়ায়।এখানে অসংখ্যা রিক্সাওয়ালা দাঁড়িয়ে আছে।সবাই জাবির মাতবরকে দেখে হাত ইশারায় সালাম জানায়।কেউ কেউ ব্যাগপত্র টেনে রিক্সায় তুলে নিচ্ছে তাকে।বোঝাই যাচ্ছে লোকটাকে এই মফস্সলের মানুষগুলো কতটা সম্মান করে।রোদে ক্লান্ত সুহাইলের ফর্সা চামড়ার রঙ পালটে লাল রঙ ধারন করেছে।অতিরিক্ত রোদ গরম এই ছেলেটার সহ্য হয় না।হাতে থাকা পানির বোতলটায় চুমুক দিতেই পাশে ঘুরে দেখলো আরমিনকে মেয়েটা হাতে কিছু ব্যাগপত্র নিয়ে রিক্সার দিকেই এগিয়ে আসছে।
– আংকেল দেখুন আরমিন।
জাবির চকিতে তাকালো।আরমিনকে দেখে প্রফুল্লচিত্তে তাকে ডেকে উঠে আরমিনো এগিয়ে আসে তাদের দিকে।
– কিরে তোর আব্বা কেমন আছে?
– আলহামদুলিল্লাহ ভালো আংকেল।বাজার করা শেষ তোমার?
– হ্যা।হাটে যখন বের হয়েছি তখন সুহাইলকে এই জায়গা গুলো ঘুরে দেখাবো তুই এক কাজ কর আমি রিক্সা নিয়ে দিচ্ছি তুই রিক্সায় চড়ে বাজার গুলো দিয়ে আসবি।তোর কিছু করতে হবে না।রিক্সাওয়ালা সব নামিয়ে দিবে।
– আরে আমি পারবো।
আরমিন এক গাল হাসি দিয়ে কথাটি বললো।সুহাইল তখন তার দিকে চেয়েছিলো আনমনে।
_
জাবির মাতবর সুহাইলকে নিয়ে মাছের প্রজেক্ট দেখতে এসেছে।বিভিন্ন ধরনের বড় মাছ,ছোট মাছ চাষ করা হয় এখানে।সুহাইল পুরো পরিবেশটা ক্যামেরায় বন্দি করছে।আহা কি সুন্দর দৃশ্য!
– বারেক জানে তুমি এখানে?
– না আংকেল।আমি যে এখানে বাবাকে বলিয়েন না প্লিজ।বাবা জানে আমি মাফীর বিয়েতে আছি এখনো।
জাবির কিছুটা মিহিয়ে হাসলো।একজন ছেলে এসে দুটো চেয়ার পেতে দিলো তাদের সামনে।জাবির সুহাইলকে ইশারা করে বসতে।
– তা তোমার ব্যবসা কেমন চলছে বাবা?
– আলহামদুলিল্লাহ!আপনাদের দোয়ায় ব্যবসা ভালোই চলছে।
– এই দিক দিয়ে একটা বুদ্ধিমানের কাজ করেছো নিজের বাবার উপর নির্ভশীল না হয়ে নিজের কাজ নিজেই তৈরি করে নিয়েছো।একম আত্মনির্ভরশীল মানুষি আমার পছন্দের।
সুহাইল কোমল ভাবে হাসলো।জাবির কথার ভাজেই আবারো প্রশ্ন ছুড়ে,
– তা বিয়ে শাদী করবে কবে?মেয়ে কি পছন্দের আছে?
– পছন্দের একজন আছে।আমার মামাতো বোন।
– তোমার মামাতো বোন!সে কোথায় থাকে নিশ্চই কানাডায়।
– না কেশবপুরে।
– কেশবপুরে?তার বাবার নাম বলতো চিনতে পারি কী না দেখি।
সুহাইল এবার নড়ে চড়ে বসলো এই সুযোগে জাবিরকে সত্যটা জানানো জরুরি।প্রতিটা ধাপে ধাপে তিনি ছাড়া আর কেউ সাহায্য করতে পারবেন না।তাই দেদারছে ঘামছে ছেলেটা।কোথা থেকে কি শুরু করবে বুঝে উঠতে সময় লাগছে তার।শার্টের কলারটা ঝাকরে সাহস জুগিয়ে বলে,
– মেয়ের বাবার নাম কায়িম রহমান,মায়ের নাম সালেহা,মেয়ের নাম আরমিন মরিয়ম।চিনতে পেরছেন আংকেল?
জাবির ঠোঁটে লেগে থাকা হাসি লাহমায় উবে যায়।সরু কপালটার মাঝখানে দুটি ভাজ সাদৃশ্য হয়।
– তুমি কি আমার সাথে মজা করছো?
জাবির কন্ঠ গম্ভির।সুহাইল মাথা নাড়ালো তার মুখেও হাসি নেই।পরিস্থিতি যে বেগতিক দিবে যাবে না তার গ্যারান্টি কী!তাই সে শক্ত চোখ মুখে তাকিয়ে আছে জাবিরের দিকে।
– আংকেল অনেক কিছু আপনার অজানায় ছিলো এবং আছে।
– তুমি কি বলতে চাও?
– আমি আরমিনের ফুফাতো ভাই।আরমিন আমার মামাতো বোন।সম্পর্কটা ঘুরে ফিরে রক্তের।
– এসব কি বলছো তুমি?বারেক তো আমাকে কিছুই বলেনি।
– আমার বাবা বলবে কী করে?নিজের অপকর্মের কথা কেউ কি স্বীকার করে!
জাবির ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠে দাঁড়ায় সবটাই তার কাছে ঘোলাটে লাগছে।খানিকটা পাইচারি করতেই মাথায় আসে সেদিনের কথা,যেদিন সালহা বারেককে দেখে মিষ্টির থালিটা হাত থেকে ফসকে যায়।তখন সালেহাকে দেখতে বেশ আতঙ্কগ্রস্ত লাগছিলো।জাবির সুহাইলের পাশে আবার বসলে ভনিতা ছাড়াই প্রশ্ন করেন,
– বাবা তুমি কী বলছো?আমাকে একটু বুঝিয়ে বলো।
সুহাইল ধীরে সুস্থে ঠান্ডা মাথায় সবটা বুঝিয়ে বলে জাবিরকে।সবটা মনোযোগ শুনছিলো জাবির শেষ মুহূর্তে তিনি কোন প্রতিক্রিয়া দেখান নি।কথায় আছে অল্প শোকে কাতর অধিক শোকে পাথর।জাবিরের সাথেও আজ যেন তেমনটাই হয়েছে।এমন সত্যর মুখোমুখি কোন দিন হতে হবে তা ধারনার বাইরে ছিল।
– আমার শেষ ভরসা আপনি আঙ্কেল।আমি আমার মামার চিকিৎসা করাতে চাই,মামির বাসস্থানের ভিত্তি মজবুত করতে চাই।যা হয়েছে তার জন্য আমরা দুভাই লজ্জিত,আমরা অনুশোচনায় ভুগছি।আমাদের বাবা-মা হয়তো বুঝতে পারছেন না।আশা করি একদিন ঠিকি বুঝবেন তবে সেদিন হয়তো কিছুই ঠিক করার মতো থাকবে না।
সুহাইলের কথা শুনে মাথা নাড়ায় জাবির।মানুষটার চোখের কোনে পানি চলে এসেছে, লোভ মানুষকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়,জেনে শুনে অন্যর হক মেরে কয় দিনি এই সমাজে সুখে থাকবে তারা।কথায় আছে নদীর একুল ভাঙে ওকুল গড়ে,বারেক সালেহার সংসারটা নিঃস্ব করে নিজে সুখের উদ্দেশ্য পাড়ি জমান দেশের বাইরে।অথচ দু’ছেলে যেন দুটো রত্ম।সঠিক-বেঠিক নির্বাচন করে তারা উদ্যোগ নিয়েছে।বিষয়টি ভাবতেই পুলকিত হয় জাবিরের মন।
– আঙ্কেল এই বিষয়ে কেউ যেন আর কিচ্ছু না জানে।কথাগুলো শুধু আপনি আর আমি জানি বুঝেছেন?
জাবির মাথা দুলালো।
– তা তুমি এখন কি করতে চাও?
– মামার অবস্থাতো খুব একটা ভালো নয় আমি তার চিকিৎসা করাবো ঢাকায় নিয়ে।
– কায়িমের চিকিৎসা লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যাপার তাও পুরোপুরি সুস্থ হবে কী না সেই গ্যারান্টিও দেয়নি ডাক্তার।আমার যতটুকু সামথ্য আমি করেছি।দুটি মেয়ে নিয়ে সালেহা কোথায় যাবে সেই ভেবে আমি ওদের দায়িত্ব নিয়েছি।
– আপনি শুধু বলবেন আপনি চান ঢাকায় নিয়ে মামার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে।এবং টাকাটাও আপনার, আমি যে এর অন্তরালে আছি এসব যেন কেউ না যানে।
– নিশ্চিন্তে থাকো কেউ জানবেনা।তবে আগামী সাত-আট দিন আমি অবসর পাবো না।আমার গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ আছে।
– সমস্যা নাই।আপনি যেদিন বলবেন আমি সেদিনি সব ব্যবস্থা করবো।
_
সন্ধ্যার আগেই পবন বাড়ি ফিরেছে তাকে ফিরে পেয়ে আগের মতো উৎসব যেন ফিরে এসেছে এই বাড়িতে।সবার জন্য আচার চকলেট যা যা এনেছে সব কিছু আমীনার হাতে তুলে দিয়ে নিজের রুমের দিকে যায় সে।পবন আসার পর থেকে আরমিন খেয়াল করেছে পবন তার সাথে একটু কথাও বলেনি কিন্তু রুমে যাওয়ার আগে আরমিনকে ইশারা করে রুমে আসতে বলে।আরমিনো ঠোঁট উলটে রুমের দিকে যায়।
– কিছু বলবে পবন ভাই?
– ডয়ার থেকে মলমটা দে ভীষণ মাথা ব্যথা করছে।
আরমিন মলম এগিয়ে দিলো পবন তাকে বসতে ইশারা করে।
– বিয়ে বাড়িতে কি কি করেছিস?
– বিয়ে বাড়িতে কি করে পবন ভাই তুমি জানো না?
– না জানি না।তুই বলে দে।
– একদল ছেলে একদল মেয়ের পিছনে ঘুরে আর মেয়েরাও ইচ্ছা মতো তাদের ঘুরায় ফ্লাটিং করে এই।
– তার মানে তুই এসব করেছিস?
পবনের কন্ঠ গম্ভীর ছেলেটা যেন মুহূর্তেই রেগে গেছে।
– এ..একটু একটু করেছি।আচ্ছা আমার কথা বাদ তোমার কথা বলো তুমি কি করেছো?
আরমিনের কথায় ঠোঁট বাকালো পবন।ঘাড়ে হাত মালিশ করতে করতে নির্লিপ্ত ভাবে বলে,
– পাহাড়ি অঞ্চলে ছিলাম,প্রচ্চুর সাপ,জোঁক।
– পাহাড়ে ঘুরতে গেলে মানুষ জোঁক থেকে বাঁচার জন্য লবণ নেয় তুমি নাওনি?
– তোর পবন ভাই কি জোঁক টোক ভয় পায় নাকি।উলটো কয়েকটি সাপ নিয়ে এসেছি ব্যাগে করে তুই দেখবি?
আরমিন ঘাবড়ে গেলো সন্দিহান চোখে চেয়ে রইলো পবনের দিকে।
– তুমি মিথ্যা বলছো তাই না?সাপ ধরার মতো সাহস তোমার নেই
– তোর মাথা।সেখানে গেলে সাপ,ব্যাঙ,কেঁচো সব ধরার সাহস এমনি এমনি সঞ্চয় হয়।
আরমিন কথাটাকে সত্যি ভেবে নিলো।মেয়েটা ঘাবড়ে বলে,
– তুমি সাপ কেন এনেছো পবন ভাই?
– তোর জন্য এনেছি কারন আমি জানি তুই সাপ ভয় পাস।যেদিনি তোর কথা আমার পছন্দ হবে না সেদিনি আমি তোর গায়ে সাপ ছুড়ে মারবো।
পবন কথাটা বলেই ব্যাগে হাত ঢোকায়।রাবারের একটা সাপ নিয়ে ছুড়ে মা-রে আরমিনের গায়ে।বেচারি সত্যি সাপ ভেবে ভয়ে এক চিৎকারে দরজার দিকে ছুটে যায়।সুহাইল চিৎকার শুনে পবনের রুমে ডুকছিলো এমন সময় বিপরীত পাশে থাকা মেয়েটির সাথে অসাবধানতার কারনে বেশ জোরেই ধাক্কা লাগে।আরমিন ছিটকে যেতে নিলে সুহাইল তার বাহু টেনে আগলে নেয়।দরজার সামনে এমন অবস্থা দেখে পবন ঝটকায় নেমে যায় বিছানা থেকে।এই সিন তার কিছুতেই সহ্য হলো না।
– কি হচ্ছে এখানে?এত জোরে কেউ চিৎকার করে?
সুহাইলের কথায় আরমিন দেয়ালের সাথে ঠেসে দাঁড়ায়।বুকের ভেতরটায় হৃদযন্ত্রটা বেসামাল ভাবে ধুকপুক করছে।চুল গুলো পেছনে ঠেলে দাঁত কিড়মিড়িয়ে তাকায় পবনের দিকে।
– পবন ভাই আমার গায়ে সাপ ছুড়ে মেরেছে।
সুহাইল মেঝেতে তাকালো একটা প্লাস্টিকের সাপ পড়ে আছে হলুদ এবং সবুজ রঙের সেটা হাতে তুলে ভ্রু কুচকায় সুহাইল,
– সিরিয়াসলি তুমি এই সাপ ভয় পেয়েছো!তোমাকে একদিন বাস্তব সাপের স্যুপ করে খাওয়াবো।দেখবে এর পর থেকে তোমার ভয় ডর সব উবে যাবে।
ঘৃণায় গা গুলিয়ে উঠলো আরমিনের মুখে হাত দিতে অশ্রাব্য ভাষায় সুহাইল আর পবনকে বকতে বকতে বেরিয়ে যায় রুম থেকে।তার কান্ডে হেসে উঠে পবন এবং সুহাইল।
#চলবে
#মায়াপ্রপঞ্চ
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ২৩]
_______________
রান্না ঘর পরিষ্কার কাজে ব্যস্ত সালেহা।সূর্যের রোদের দাপটে ঘেমে একাকার তিনি।রিহানা আজ স্কুলে গেলো না।তাই বাড়ির কাজে ব্যস্ত সে।হাড়িপাতিল গুলো মাজতে নিয়ে যায় পুকুর ঘাটে।আরমিন কায়িমের জামা কাপড় পরিষ্কার করে রোদে শুকতে দড়িতে মেলছিলো এমন সময় বাড়িতে আসে সুহাইল।তাকে দেখে সালেহার উজ্জ্বল মুখখানায় আষাঢ়ের মেঘের সঞ্চার হয়।লাহমায় নিজের কাজে ব্যস্ত করেন তিনি। আশেপাশে সুহাইল নামে যে কোন ব্যাক্তি আছে সেটা যেন তিনি জানেনি না।আরমিন নিশ্চুপ তাকালো ছেলেটার দিকে।পড়নে টি-শার্টের সাথে টাউজার,চুল গুলো ভেজা নিশ্চই গোসল সেরে এই বাড়িতে এসেছে।
আরমিনের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে খানিকটা হাসে এই মেয়েটাকে দেখলেই চিরচেনা জগৎটা যেন পালটে যায়।
– কেমন আছো মামি?মামা কেমন আছে?আমাকে দেখেই এমন প্যাঁচার মতো মুখ করে আছো কেন?
ছেলেটার ঠোঁট কাটা কথায় লজ্জায় পড়ে যায় সালেহা।প্রস্তুত ভঙ্গিতে হেসে দায় সারা ভাব নিয়ে ঘরের দিকে চলে যায়।
– আরে মামি কোথায় যাচ্ছো?আজ দুপুরে কিন্তু এখানেই খাবো।
সালেহার মুখটা পাংশুটে হয়ে গেছে।আরমিন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার মায়ের কান্ড দেখছে।সব দিক দিয়েই তাকে হ্যারেস করা হবে কিছুক্ষণ পর।নিশ্চই সুহাইল এগিয়ে এসে বলবে, “আমাকে কেন পাত্তা দাও না আরমিন।” সালেহা এসে ধারালো গলায় বললবেন,”তোর কইলজাডা ছি/ড়া দেখতে মন চায় আমার।কত্ত বড় সাহস সুহাইলের সাথে ভাব জমাস।”
অজ্ঞাত মেয়েটা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।রিহানা হাত ভর্তি হাড়ি-পাতিল নিয়ে এগিয়ে এলো সুহাইলের কাছে।হাসি হাসি মুখের আভা ধরে রেখে বলে,
– লাউ দিয়ে কুচোচিংড়ি,লাউ শাক ভাজি।আর শুটকির ভর্তা।আপনি এগুলো খেতে পারবেন সুহাইল ভাই?
রিহানার কথায় চোখ পাকিয়ে তাকালো আরমিন।তাতে পাত্তা দিলো না সে।সুহাইলকে তোড়জোড় করে দ্রুত ঘরে ডেকে নিয়ে যায়।সালেহার মুখোমুখি হতে সুহাইল মিহি হাসে,
– এমন করো কেন মামি?আমাকে এক বেলা খাওয়ালে কি তোমার ঘরের অন্ন ধ্বংস হবে?আমি কিন্তু জামাই আদর পেতে আসিনি।তবে আসবো ভবিষ্যতে।
শেষ কথাটা ফিসফিসিয়ে বললো সুহাইল।
পিট পিট চোখে চেয়ে আছেন কায়িম রহমান।শরীরটা এখন একটু ভালোই লাগছে তার।পাশে সুহাইলকে দেখে তিনি চিনতে পেরেছেন কী না কে জানে!মুখটা একদিকে বাকিয়ে আছে।দু’চোখ পানি মানুষটা যে কতটা কষ্ট পাচ্ছে তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
– মামা তুমি কি কাঁদছো?কেঁদো না।তুমি আগের মতো ঠিক হয়ে যাবে।মনে আছে ছোট বেলায় তোমার আঙুল ধরে কত যে দোকানে যেতাম আর আইস্ক্রিম কিনে বাড়ি ফিরতাম।তখন মা তোমায় বকতো।কেন সুহাইলকে আইস্ক্রিম কিনি দিলি ছেলেটার ঠান্ডা লেগে যাবে হেন তেন।সেসব দিন বড্ড মিস করি মামা।তুমি ইনশাআল্লাহ সুস্থ হবে!তোমার ঘরে যে একটা পুতুলের মতো মেয়ে আছে তাকে বিয়ে দিতে হবে তো!তুমি বলতে না আমার পুতুল মেয়ের জন্য পুতুল বর খুঁজে আনবো যে বর তার সবটুকু দিয়ে আমার পুতুলকে আগলে রাখবে।তোমার পুতুল মেয়ের,পুতুল বর যদি আমি হই ক্ষতি হবে কী?আমরা আবার হেসে খেলে বাঁচবো মামা।শুধু একটু দৈর্য্য ধরো।
কায়িম চোখটা বন্ধ করে নেয়।তার গালের দু’পাশটায় পানি গড়িয়ে পড়ছে।জীবিত থেকেও এই জীবনে পারিপার্শ্বিক সুখ,সখ্যতা,আনন্দ থেকে বঞ্চিত সে।
.
আমীনা দুপুরে মনিরাকে ঘুম পাড়িয়ে ঘরের টুক টাক কাজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।সারাটা রুম এলোমেলো হয়ে আছে খেলনায় সবটা গোছগাছ করে গোসলে যাবে সে।
– চাচি আসবো?
পবনের ডাকে কিঞ্চিৎ কেঁপে উঠে আমীনা।পবন এত আবদার কখনো রুমে আসে না।খুব বেশি প্রয়োজন হলে ডেকে পাঠায় কিন্তু হঠাৎ এই ছেলে আজ তার রুমে।ঘুরে তাকিয়ে অমায়িক হাসলেন তিনি।আদুরে সুরে বলে,
– আয় বাবা।
– মনিরা ঘুমিয়ে গেছে?
– হ্যা।তুই কিছু বলবি?
– আসলে কী করে যে তোমায় কথাটা বলবো!
মাথাটা চুলকে ঘাড় নামিয়ে নেয় পবন।জড়তা কাটিয়ে উঠতে একটুখানি সময় লাগছে তার।লজ্জায় মিহিয়ে যাচ্ছে।অবশ্য তার থেকেও বেশি ভয় পাচ্ছে,আমীনার রিয়েকশন কি হবে?কী বলবে সে?নাকি আজ না বলে চলে যাবে।কিন্তু আজ না বললে যে এমন সুযোগ নাও আসতে পারে।শুভ কাজে দেরি করতে নেই।যত দ্রুত সম্ভব বলা ভালো।
– পবন কি ভাবছিস?
– চাচি আমি…..
– তুই?কি হয়েছে বল আমায়।কিছু খেতে ইচ্ছে করছে?রান্না করে দিবো।
– আরে না না।আসলে উফফ আমার মুখ থেকে কথাই বের হতে চাইছে না।
তার কান্ড দেখে মিহি হাসলেন আমীনা।পবনের ঝাকরা চুলে হাত বুলিয়ে তার পাশে পা দুলিয়ে বসেন।ছেলেটা দিনে দিনে বড় হয়ে গেছে।এই তো সেদিনের কথা বিয়ের দিন রাতে আমার নতুন চাচি মনি,আমার নতুন চাচি মনি বলে সারা বাড়ি মাথায় তুলেছিলো।দোকান থেকে আচার চকলেট যখন যা পেরেছে এনে চাচি মনির হাতে দিয়ে একগাল হাসতো।আর এখন সেই ছেলেটা কত বড় হয়ে গেছে।দু’দিন পর সাংসারিক দায়িত্বে বাঁধা পড়বে।
– পবন আমি যা সন্দেহ করছি তুই কি সেটাই বলতে এসেছিস?
– তুমি কি সন্দেহ করছো?
– তুই প্রেম করছিস?
চকিতে চমকে তাকালো পবন।সরু হাসিটাকে অট্টোহাসিতে রূপান্তর করলো।আমীনার হাত ধরে ভনিতা ছাড়া বলে,
– তুমি ঠিক বলেছো।
– তবে মেয়েটা কে?
– তোমাদেরি পছন্দের একজন,আরমিন!আমি আরমিনের কথা বলছি।
নিকষ কালো আঁধারে ডুবে গেলো আমীনার মুখখানি।ঠোঁটের হাসিটা যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।পবনের দিক থেকে চোখ সরিয়ে তাকালো মেঝের দিকে।আমীনা গভীর চিন্তায় ডুবে গেছে।অজানা আশংকায় বুকের ভেতরটা উথাল-পাথাল করছে।কিছু ছেলে যতই শান্তশিষ্ট হোক,প্রেম ঘটিতো সংক্রান্তে তাদের শান্তশিষ্ট স্বভাবটা উবে যায়।প্রণয়িনীকে কাছে পেতে বাঁধা দিলে সেই শান্ত ছেলেটাই তখন ভক্তদের বিপক্ষে যেতে দু’মিনিটো ভাবেনা।পবনের ক্ষেত্রে আবার তেমনটা হবে না তো?আরমিনের বিষয়ে সে যতটা ব্যগ্র,তাদের সম্পর্ক পারিবারিক ভাবে নাকচ করলে এই ছেলেটি উগ্র হতে সময় লাগবে না।সবটা ভেবে চিনতে পবনের দিকে তাকালো আমীনা।এই মুহূর্তে কি বলবে বুঝে উঠলো না সে।
– তুমি কী ভাবছো চাচি?
– ইয়ে..পবন বাবা শোন।আমি আমার দিক থেকে তোকে ফুল সাপোর্ট দেবো।তুই যে আরমিনকে এই বাড়ির বউ করতে চাস এটাতেও আমি ভীষণ খুশি।কিন্তু তোর আসল অভিভাবক যে মানবে না।
– কে মানবে না?
– ভাবী মানবে না।তোর বাবা এর আগেও তোর মাকে বলেছিলো আরমিনের কথা।কিন্তু ভাবী সম্মোতি দেয় নি।
পবন নিশ্চুপ হয়ে তাকিয়ে রইলো আমীনার দিকে।আমীনার হঠাৎ ঘাবড়ে যাওয়া মুখটায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তিনি চিন্তায় পড়েছেন।শুধু চিন্তায় বললে বেমানান হবে গভীর চিন্তা বলা যেতে পারে।জানলা দিয়ে সূর্যটাও যেন ফিকে হাসছে।হাসির উল্লাসে রোদ এসে ঠুকে গেছে পবনের গায়ে।রোদের ঝলমলে বিরক্ত হয়ে চোখ ঘুরিয়ে নেয় সে।
– আরমিনকে না মানার কারন কী চাচি?মেয়েটা কোন দিক দিয়ে খারাপ?
– দেখ তুই এই মাতবর বাড়ির বড় ছেলে।তোর জন্য সম্বন্ধ করা হবে ঠিক তোর বাবার মতো উচ্চ বংশীয় কোন মেয়ের সাথে।তবেই সমান সমান খাপ খাবে।
– তাতে কী ভালোবাসা খাপ খাবে?
পবনের ব্যগ্র কন্ঠ।আমীনা উত্তর দিতে পারলো না।সে শুধু ছেলেটার পিঠে আলতো হাতে বুলিয়ে দেয়।পবন তাচ্ছিল্য হেসে বেরিয়ে যায় রুম থেকে।সামনে তার জন্য বড় কোন ফাঁড়া আসতে চলেছে খুব ভালো করেই ইংগিত পাচ্ছে।তবে সব কিছুর আগে আরমিনকে মানাতে হবে।যদি তুমি আমি ঠিক থাকি বাকিদের সেখানে দখলদারী করা সাজবে না।কথাটা ভেবে খানিকটা শ্বাস ছাড়লো সে।
_
সময়টা পেরিয়ে যাচ্ছে দারুন ভাবে।সুহাইল অপেক্ষায় আছে কখন জাবির মাতবর অবসর হবেন এবং কায়িমের চিকিৎসার কথা সালেহার সাথে আলোচনা করে ঢাকায় নেবে।এর মাঝে আরমিনের সাথে অবশ্য সুহাইলের বেশ খানিকটা সংখ্যতা গড়েছে।এখন আর সুহাইলকে দেখলে খুব একট অপমান করে না।তবে এড়িয়ে চলে খুব বেশি।তার কারন যে সালেহা সেটাও বুঝে সুহাইল।ল্যাপটপে বসে অফিসের কাজ গুলো চেক করছিলো সে সিয়ামের কল পেয়ে উবু হয়ে উঠে বসে।
– সিয়াম কেমন আছিস?
– কান্ড ঘটে গেছে ব্রো তোমার মাম্মি তো রেগে আছেন।
সিয়ামের কথার ভঙ্গিমার পরিবর্তনে ভ্রু কুচকালো সুহাইল।সন্দিহান গলায় প্রশ্ন ছুড়ে,
– কী হয়েছে?খোলাখুলি বল।
– আম্মু টিকেট কেটে ফেলেছে বাংলাদেশ যাবে।কাল দুপুরে ফ্লাইট।
– হঠাৎ!আম্মু কেন আসবে?
– বাবা যে বাড়িটা কিনেছিলো ভিডিও কলে বাড়িটা ঘুরে দেখালো আম্মুকে।এখন তার নাকি পছন্দ হয়নি।বাড়ির দামো বেশি তাই আম্মু রেগে গেছে।তার উপর তোমাকে নাকি বেশ কয়েকবার ফোন করেছে তুমি ফোন ধরোনি।তোমাদের বাপ বেটার পি-ন্ডি চটকাবে দেশে গেলে।
– উফফ শীট।আম্মু দেশে আসলে আমার সমস্ত প্লান ভেস্তে যাবে তুই জানিস না?তাহলে কেন আসতে দিলি।মামার চিকিৎসায় বাঁধা হবে।
সিয়াম উত্তর দিলো না।দুজনেই নিশ্চুপ হয়তো কিছু একটা ভাবছে তারা।
– ভাইয়া তুই যত দ্রুত সম্ভব ঢাকায় ব্যাক কর।এখনো তোর হাতে পাঁচ দিনের মতো আছে।জাবির আংকেল তো ব্যস্ত তোর কাছে সময় চেয়েছে।তার মধ্যে তুই আম্মুকে বাবার সাথে ঢাকার বাইরে ঘুরতে পাঠিয়ে দিবি আর এদিকে মামুকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করাবি।একবার সব সেটিং করা হয়ে গেলে ঝামেলা কমে যাবে আর তোর ফ্লাট তো পড়েই আছে।
– গুড আইডিয়া।আমি কাল ভোরেই বেরিয়ে পড়বো।গুড নাইট।
– গুড নাইট।
_
সুহাইল ভোরেই ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয় যাওয়ার আগে অবশ্য আরমিনের সাথে দেখা করে গেছে।তবে সুহাইল যাওয়ায় কেন যে আরমিনের মন খারাপ বিষয়টা আরমিন নিজেই বুঝে উঠতে পারছেনা।নিজের কান্ডে নিজেই বিরক্ত সে।সকাল থেকে তুমুল বর্ষনে মাড়িয়ে দিয়েছে রাস্তা ঘাট।দুপুরের পরে আরমিন ছাতা মাথায় চলছে টিউশনির উদ্দ্যেশ।ঝিরিঝিরি বৃষ্টি এখনো চলমান।কাঁদা রাস্তা পেরিয়ে কিছুতেই আজ পড়াতে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না তার।কিন্তু কী করবে,সে যে নিরুপায়।আরমিনকে অনেকক্ষণ যাবৎ ফলো করছিলো পবন।মেয়েটা বেহুদা বকবক করেই যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে।
– এই আরমিন কই যাস?
আরমিন ঘুরে তাকালো পবনকে দেখে বিরক্তে কুচকে নিলো মুখ।এই ছেলের সাথে দেখা হলেই আরমিন ওটা করো না।আরমিন এটা করো না।আরমিন এখানে কেন যাও।আরমিন ওখানে কেন যাও।সারাক্ষণ লেকচার দেওয়ার কাজে ওস্তাদ এই ছেলে।
– টিউশনিতে যাই।
– এই বৃষ্টির মধ্যে কেন যাচ্ছিস?আজ ঠান্ডা পড়ছে একদিন না পড়ালে কিছু হবে না অন্যদিন এক্সট্রা পড়িয়ে নিস।চল বাসায় যাবি।
আরমিন এগিয়ে গেলো ছাতা মাথায়।তার পিছু পিছু চললো পবন,
– এখন যাকে পড়াতে যাই ক্লাস এইটের ছেলে।ছেলেটার মা ব-দ-মাইশ মহিলা একদিন না গেছে বেতন থেকে পঞ্চাশ টাকা কেটে নিয়ে যায়।তার সাথে তো এক্সট্রা কথা শুনিয়ে দেবেই।তাই আমাকে যেতেই হবে।
– আরে রাখ তোর টাকা পয়সার হিসেব নিকেশ।চল তুই এখন বাড়ি যাবি।
– আমি যাবো না পবন ভাই ফিরে যাও তুমি।
পবন এবার বিরক্ত হলো মেয়েটা এত জোরে জোরে হাটছে তার সাথে হেটেও কুল পাচ্ছেনা সে।কখন জানি স্লিপ কেটে খালে গিয়ে পড়ে।
– আরমিন সামনের রাস্তা একদম কাঁদায় মাখামাখি এক হাটু সমান কাঁদা।তুই যাইস না।আগামীকাল যাবি তাও আমি দিয়ে আসবো তোকে উত্তর বাজারের উপর দিয়ে যাওয়া যাবে।
– আজ এসেছি যখন ফিরবো কেন?
কথাটা বলে মোড়ে ঘুতে নিলে চক্ষুচড়ক গাছ মেয়েটার।পুরো রাস্তাটায় কাঁদা মাখামাখি।একটু বৃষ্টি হলেই খাল থেকে এখানে পানি উঠে যায়।তাই এমন বিশ্রী অবস্থার সৃষ্টি।আরমিন পবনের দিকে একবার তাকালো।সাহস দেখিয়ে কাঁদার রাস্তায় পা তুলে হাটতে লাগলো।পবন ছুটে এসে তার হাতটা ধরতেই দুজনে স্লিপ কেটে ধপ শব্দ কাঁদায় পড়ে।আঠালো কাঁদায় তারা নিজেদের ছাড়িয়ে তুলতে পারছেনা কিছুতেই।আরমিন সর্বো শক্তি দিয়ে পা টেনে তুলতেই তার নতুন জুতার তলাটা মাটিতে থেকে, উপরের অংশ পায়ের সাথে চলে আসে। পবন আরমিনের পায়ের দিকে তাকিয়ে মাটিতে গড়িয়েই হেসে উঠে।অতি চালাকের ভবিষ্যত যে ভালো হয় না তার জ্বলজ্যান্ত প্রমান এই মেয়ে।পবনের হাসি দেখে আরমিন সত্যি সত্যি কেঁদে দিলো,
– পবন ভাই আম্মা আজ আমায় বাড়ি থেকে বের করে দিবে।এটা নতুন জুতা একদিন আগে কিনেছি।
পবনের হাসি আরো বেড়ে গেলো।বেচারি যেদিকে দু’চোখ মেলে যেদিকেই বিপদেরা হানা দেয়।
#চলবে…..