#মায়ারণ্যে,পর্ব-১২
#লেখিকা-মেহরুমা নূর
ভোর ৬ টা,
চুপিচুপি পা টিপে দরজা খুলে সাহিলের রুমে ঢুকলো সারা। ওর মনে হচ্ছে ও কোন বাঘের গুহায় পা রাখছে। তবে সে ভয়কে জয় করার যথেষ্ট চেষ্টা করছে। ভয় পেলে চলবে না সারা। বি অ্যা ম্যান, থুক্কু বি অ্যা ওম্যান। ইউ ক্যান ডু ইট। তোকে তোর একাউন্ট হত্যার বদলা তো নিতেই হবে। নাহলে আমার একাউন্টের আত্মা শান্তি পাবে না। ওই নির্দয় খুনিটা আমার একাউন্ট কে শেষ দেখাটাও দেখার সুযোগ দেইনি। এসব ভেবে প্রতিশোধের প্রবল মনোবল নিয়ে সাহিলের বেডের কাছে এসে দাঁড়াল সারা।
সাহিল উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। পরনে শুধু একটা থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। সাহিলকে খালি গায়ে দেখে একটা পৈশাচিক হাসি দিল সারা। এতে যেন ওর মনের আশা আরও সহজে পুরণ হবে। চেহারায় ভিলেনি ভাব এনে মনে মনে বললো, আব তেরা কেয়া হোগা সাহিল বাবু, মুহ হা হা?। সারা ওর হাতে গ্লাবস পড়ে নিল। তারপর ধীরে ধীরে ওর হাতে থাকা ইচিং পাউডারের প্যাকেট টা খুলে সাহিলের পিঠের ওপর আস্তে আস্তে ছিটিয়ে দিল। ছিটানো শেষে আবারও একটা পৈচাশিক হাসি দিয়ে মনে মনে বললো, প্রিয় একাউন্ট আমি তোর খুনের প্রতিশোধ নিয়ে নিয়েছি। এখন তোর আত্মা শান্তি পাবে। নিজের কর্ম সাধন করে সারা আবারও পা টিপে টিপে দরজা খুলে বেড়িয়ে গেল সে।
নিজের রুমে এসে বেডের ওপর হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়লো। ঠোঁটে তার বিশ্বজয়ের হাসি। এখন শুধু অপেক্ষা। ওই রাক্ষস ক্ষোক্কসের বেহাল অবস্থা দেখার জন্য। ওই খুনিকে পাগলের মতো যখন চুলকাতে দেখবে তখন ওর একাউন্টের অতৃপ্ত আত্মা তৃপ্তি পাবে।
সকালের আলো ঘরে উঁকি দিতেই ঘুম ভেঙে গেল মায়ার। চোখ খুলে তাকালো মায়া । কেন যেন আজকের সকাল টা অনেক মিষ্টি লাগছে ওর কাছে। চোখের সামনে ভেসে উঠলো কাল রাতে অরণ্যের সাথে কাটানো সেই মুহূর্ত গুলো। আর আনমনেই মায়ার ঠোঁটে ভেসে উঠলো মিষ্টি হাসির রেখা। কাল কখন যে ও ঘুমিয়ে পড়েছিল তা মনে নেই ওর। অরণ্যের ডাকে ঘুম ভাঙে ওর।তারপর ও রুমে এসে শুয়ে পড়ে। কিন্তু তখন থেকেই বারবার শুধু অরণ্যের সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলোই চোখে ভাসছে। মনের মাঝে কেমন সুখানুভূতি হচ্ছে। এমন টা তো আগে কখনো হয়নি। মনটা আজকাল বড়ো অবাধ্য হয়ে যাচ্ছে। আমার কথা একটুও মানছে না। সে তার মর্জি অনুযায়ীই চলছে।
মায়া ভাবনার মাঝেই ব্যালকনিতে চলে এলো। রোজকার মতো সকালের শীতল হাওয়ায় নিজেকে মেলে ধরলো। পাশে ফিরে তাকিয়ে দেখলো অরণ্য আজও ব্যালকনিতে ঘুমিয়ে আছে। মায়া আজ একটু বেশিই অবাক হলো। ও এবাড়িতে আসার পর থেকেই ও অরন্যকে এই ব্যালকনিতেই ঘুমাতে দেখছে। তাহলে কি উনি রোজই ব্যাকনিতেই ঘুমায়? কিন্তু কেন? রিয়ার সাথে কি উনার কোন সমস্যা হয়েছে? কিন্তু উনিতো নিজেই রিয়াকে পছন্দ করে বিয়ে করেছে। তাহলে কি এমন হয়েছে? মায়ার কেমন যেন ব্যাপার টা সন্দেহজনক মনে হলো। তবে এই নিয়ে তো আর ওদের সরাসরি কিছু জিজ্ঞেসও করা যাচ্ছে না। ওদের পার্সোনাল ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করাটা অনধিকার চর্চা হবে। এমনিতেও ওদের ব্যাপারে না পরায় ভালো। কথাগুলো ভেবে মায়া আবারও একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভেতরে চলে গেল।
বেলা ১০ টা
মানুষের হৈ চৈ এ সারার ঘুম ভেঙে গেল। মেজাজ টাই খারাপ হয়ে গেল সারার। কতো শান্তিতে ঘুমাচ্ছিল বেচারি। কিন্তু এতো হৈচৈ হচ্ছে কিসের সেটাই বুঝতে পারছে না সারা। সারা ভ্রু কুঁচকে উঠে দাঁড়িয়ে ধীরে ধীরে বাইরে বেরিয়ে এলো ঘটনার উদঘাটন করতে। বাইরে আসতেই চোখ চড়কগাছ হয়ে গেল সারার। সবাই কেমন দৌড়াদৌড়ি করছে। যেন কোন ইমার্জেন্সি এসে গেছে। সাহিলের রুমের সামনে সবাই ভীড় জমিয়েছে। মনে হচ্ছে ওখানে বিশ্ব কাপ ম্যাচের লাইভ টেলিকাস্ট চলছে। সারাও কৌতুহলী হয়ে ধীরে ধীরে ভীড়ের কাছে এসে দাঁড়াল। কিন্তু ভিতরে কি হচ্ছে তা দেখা যাচ্ছে না। সারা একটু ফাঁকফুকুর দিয়ে নিজেকে ঢুকানোর চেষ্টা করলো। অতঃপর অনেক কষ্টে ভেতরে ঢুকতে সক্ষম হলো সারা। ভেতরে ঢুকতে পেরে নিজেকে যেন বিশ্বজয়ী মনে হচ্ছে। তবে সামনে তাকাতেই সারার সব খুশী গায়েব হয়ে গেল। ভেতরে এমন কিছু দেখতে হবে তা সারা কল্পনাও করেনি।
বেডের ওপর সাহিল শুয়ে আছে। তার শরীরের অবস্থা খুবই শোচনীয়। সারা শরীরে লাল লাল র্যাশে ভরে উঠেছে। অতিরিক্ত চুলকানোর কারণে অনেক জায়গায় রক্ত বের হয়ে জমাট বেঁধে রয়েছে। সাহিলের মা ওর পাশে বসে নিঃশব্দে কাঁদছে।ইরিন গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে ধীরে ধীরে সাহিলের শরীর মুছে দিচ্ছে। মুছে দেওয়ার সময় সাহিলের চেহারায় যন্ত্রণার ছাপ ঠিকই ভেসে উঠছে। অরণ্য ডাক্তার কে ফোন করে জলদি আসতে বলছে। এসব দেখে সারার বুকটা কেঁপে উঠল। তার ছোট্ট কাজটা যে এতো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে তা স্বপ্নেও ভাবেনি সারা। সাহিলকে শাস্তি দিতে চাইলেও এখন ওর এমন করুন অবস্থা দেখে প্রচুর খারাপ লাগছে সারার। কেন যেন খুব কান্না পাচ্ছে। আবার ভয়ও করছে। সবাই যদি জানতে পারে এই মহৎ কাজটা ও করেছে। তাহলে কি অবস্থা করবে ওর। ভাবতেই গলা শুঁকিয়ে আসছে সারার।
তখনই মায়া হাতে একটা ছোট্ট বোল নিয়ে ভেতরে ঢুকলো। ইরিনের দিকে বোলটা এগিয়ে দিয়ে বললো।
–আপু এটা একটা আয়ুর্বেদিক প্রলেপ বানিয়েছি আমি। সাহিল ভাইয়ার গায়ে মাখিয়ে দেন। আশা করি উনি আরাম পাবেন।
ইরিন মাথা ঝাকিয়ে বোলটা হাতে নিয়ে আস্তে করে প্রলেপ টা সাহিলের শরীরে লাগিয়ে দিল। প্রথমে একটু জ্বলে উঠলেও ধীরে ধীরে অনেক টা আরাম লাগলো সাহিলের। জ্বলনটাও অনেক কমে গেল। সাহিলের মা মায়ার দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতার সুরে বললো।
–ধন্যবাদ মায়া। তোমার ঔষধে ছেলেটা একটু আরাম পেয়েছে।
ইরিনও বললো।
–হ্যাঁ সত্যিই। তোমার প্রলেপ অনেক কাজে দিয়েছে। কিন্তু তুমি এসব কিভাবে জানো?
মায়া বলে উঠলো।
— আসলে আমি সময় পেলেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসা সম্পর্কিত বইগুলো পড়ি। সেখান থেকেই কিছু কিছু জিনিস শিখেছি। আমি নিজেও অসুস্থ হলে সবসময় আয়ুর্বেদিক উপায়ই ব্যবহার করি।
মায়ার কথায় অরণ্য সহ বাকি সবাই আরও একবার মুগ্ধ হলো। মেয়েটা সত্যি সর্বগুণ সম্পূর্ণা।
সারা আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না। দ্রুত ওখান থেকে সরে নিজের রুমে চলে এলো। ভয়ে ওর হাত পা কাঁপছে। কেন যেন খুব কান্না পাচ্ছে ওর। বুকের ভেতর কেমন ব্যাথার অনুভব হচ্ছে। কিন্তু এমন কেন হচ্ছে ওর? ওতো সাহিলকে শাস্তিই দিতে চেয়েছিল।তাহলে এখন শাস্তি পেতে দেখে এতো খারাপ লাগছে কেন?
ডাক্তার এসে সাহিলকে দেখে গেছে। কিছু ঔষধ আর এন্টিসেপ্টিক ক্রিম দিয়ে গেছে। সেগুলো দেওয়ার পর সাহিলের এখন অনেক টা ভালো লাগছে। আরাম পেয়ে সাহিল একটু ঘুমিয়েছিল। তাই আপাতত ওর রুমে কেউ নেই।
হঠাৎ কারোর ধীমি কান্নার শব্দে সাহিলের ঘুম ভেঙে এলো। সাহিল চোখ খুলে তাকিয়ে দেখলো সারা ওর বেডের পাশে বসে নাক টেনে টেনে কাঁদছে। কান্নার কারণে ওর পিচ্চি পরিটার নাক মুখ লাল হয়ে গেছে। ইশশ পিচ্চিটাকে কি পরিমাণ কিউট লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবে না সাহিল। সাহিল মুচকি হেসে বললো।
–কিরে এমন মরা কান্না করছিস কেন? তোর তো খুশিতে নাচ গান করা উচিত। তুই যা চেয়েছিলি তাইতো হচ্ছে তাহলে কাঁদছিস কেন? যা এখান থেকে আমাকে ঘুমাতে দে।
সারা অবাক চোখে তাকিয়ে বললো।
–আ আপনি জানতেন এগুলো আমিই করেছি?
সাহিল শুধু স্মিথ হাসলো। তার পিচ্চিটা জানেই না, সে দশ হাত দূর থেকেও ওর পিচ্চি পরিটাকে অনুভব করতে পারে। তার পদচারণ আর তার শরীরের ঘ্রাণ মনকে জানিয়ে দেয় যে সে এসেছে। আজ সকালেও সে বুঝতে পেরেছিল। সারা যখন তার কার্য সাধন করছিল তখনও সাহিল জেগেই ছিল। কিন্তু সে কিছু বলেনি। সে দেখতে চাচ্ছিল সারা কি করে। সে যদি সাহিলকে কষ্ট দিয়ে সুখি হয়, তাহলে তাই হোক। ওর পরিটার খুশিতেই তো ওর খুশী। ওর খুশীর জন্য তো হাসিমুখে হৃদপিণ্ড টাও বের করে দিতে পারবে। আর এটা তো অনেক ছোট ব্যাপার।
সাহিলের ভাবনার মাঝেই সারা আবারও বলে উঠলো।
–কি হলো বলুন? আপনি জানতেন?
সাহিল বলে উঠলো।
–সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। তুই যা এখন। আর হ্যাঁ তুই ভয় পাস না আমি কাউকে কিছু বলবোনা। এটা বলতেই নিশ্চয় এসেছিস? তাই নিশ্চিন্তে যা।
সাহিলের কথাগুলো কেমন তীরের মতো বিঁধছে সারার বুকে। সারা এবার একটু শব্দ করেই কেঁদে দিল। সাহিল এবার একটু ধমকের সুরে বললো।
–কি হলো আবারও কাঁদছিস কেন? বললাম তো কাউকে কিছু বলবোনা। কান্না বন্ধ কর এখন।
সারা থামার বদলে আরও বেশি করে কাঁদতে লাগলো। সাহিলের এবার আর ভালো লাগছে না। পিচ্চিটার কান্না আর সহ্য হচ্ছে না ওর। ও বারবার থামতে বলছে কিন্তু সারা কেঁদেই যাচ্ছে। কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো।
–আ আমার কান্না আসছে তো আমি কি করবো? আমি কি ই ইচ্ছে করে কাদছি নাকি? আর আমি মোটেও আমার কথা কাউকে না বলার জন্য আসিনি।
সাহিল মুচকি হেসে বললো।
— তাহলে কেন এসেছিস? আর কাঁদছিডই বা কেন? তোরতো এখন খুশি থাকার কথা।
সারা ওর বুকের বাম পাশে আঙুল দিয়ে ইশারা করে দেখিয়ে বললো।
–জানিনা কেন, আমার এখানে অনেক ব্যাথা হচ্ছে।তাই কাঁদছি। আপনাকে এভাবে দেখে আমার খুশি হওয়ার কথা থাকলেও আমি খুশি হতে পারছিনা। কেন এমন হচ্ছে তাও জানিনা।
সাহিল ঠোঁট কামড়ে নিঃশব্দে হাসলো। তার পিচ্চিটা যে তারজন্য কাঁদছে এটা ভেবে কেমন ভালো লাগছে ওর। পিচ্চিটার মনে যে তার জন্য কিছু আছে সেটা সারা না বুঝলেও সাহিল ঠিকই বুঝতে পারছে।
সারা হঠাৎ দুই কান ধরে কাঁদো কাঁদো গলায় বললো।
–স সরি সাহিল ভাইয়া। অনেক গুলো সরি। প্লিজ মাফ করে দাও। সত্যিই বলছি আর কখনো এমন করবো না।
সাহিল মায়া ভরা চোখে সারার দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর ডান হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে সারাকে নিজের কাছে ডাকলো।সারাও বিনাবাক্যে সাহিলের পাশে গিয়ে বসলো। সাহিল সারার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো।
–এভাবে কাঁদছিস কেন পাগলী? আরে এটাতো কিছুই না। দেখবি কিছুক্ষণ পর সব ঠিক হয়ে যাবে।
সারা নাক টেনে নিয়ে বললো।
–মিথ্যে কেন বলছেন? আমি জানি আপনার অনেক কষ্ট হচ্ছে। আপনার এতো কষ্ট দেখে আমার একটুও ভালো লাগছে না। বলুন না কি করলে আপনার কষ্ট কমবে?
সাহিল দুষ্টু হেসে বললো।
–হুমম একটা উপায় তো আছে। তবে অনেক কঠিন বুঝলি। তোর দ্বারা হবে না।
সারা অতি কনফিডেন্সের সাথে বললো।
–আরে আপনি বলুন না আমি অবশ্যই পারবো। প্লিজ বলুন না।
–ঠিক আছে। আমাকে তাহলে চুম্বন মেডিসিন দে। তাহলে আমি ঠিক হয়ে যাবো।
সারা ভ্রু কুঁচকে বললো।
–চুম্বন মেডিসিন? সেটা আবার কি? এমন ওষুধের নামতো আমি কখনোই শুনিনি।
–কেন তুই মেহরুমা আপুর লেখা #মরুর বুকে বৃষ্টি গল্পটা পরিস নি? সেখানে দেখিস না নূর কতসুন্দর আদিত্যেকে চুমু দেয় আর আদিত্য একদম ঠিক হয়ে যায়। আমি ওই ট্রিটমেন্টের কথা বলছিলাম। পারবি দিতে। তাহলে আমি একদম ঠিক হয়ে যাবো।
সারা বেচারি দ্বিধায় পড়ে গেল। ওটা কিভাবে করবে ও। না মানে লজ্জার তো ব্যাপার স্যাপার আছে। কিন্তু ট্রিটমেন্ট টাও তো করা জরুরি। এখন কি করি?
সারার এমন কনফিউজড চেহারা দেখে সাহিলের ভীষণ হাসি পাচ্ছে। সারাকে আরেকটু বাজানোর জন্য সাহিল বলে উঠলো।
–দেখছিস তো আমি বললাম না তুই পারবি না। তোর দ্বারা এসব হবে না। তুই বরং যা। আমি আমার মতো যন্ত্রণায় ছটফট করি। আর কি করার।
সারা বোকার মতো বলে উঠলো।
–আচ্ছা একটা দিলেই হবে? নাকি অনেক গুলো দিতে হবে?
সাহিল বেচারা অনেক কষ্টে নিজের হাসি আটকে রেখেছে। ওর পরিটা আর বড় হলোনা। সাহিল অসহায় কন্ঠে বললো।
— অনেক গুলো দিলেই ভালো হয়। তবে আপাতত একটাতেই কাজ চালিয়ে নেব নাহয়।
সারা চুমু দেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছে। কিন্তু কেন জানি প্রচুর লজ্জা লজ্জা লাগছে ওর।সারা সাহিলের দিকে তাকিয়ে বললো।
–আ আপনি প্লিজ চোখ বন্ধ করুন না।
সাহিল মুচকি হেসে চোখ বন্ধ করে নিল। সারা মাথাটা ঝুকিয়ে সাহিলের কপালে একটা চুমু একে দিল। তারপরে সাহিলের দুই গালে চুমু দিল। সাহিল ভাসছে সুখের জোয়ারে। সত্যি করেই যেন শরীরের সব যন্ত্রণা মুহুর্তেই গায়েব হয়ে গেল। যেন কখনো কিছু হয়ইনি ওর। চুমু খেতে খেতে হঠাৎ সারার নজর পড়লো সাহিলের ঠোঁটের দিকে। কি সুন্দর মেয়েদের মতো গোলাপি ঠোঁট সাহিল ভাইয়ার। সাহিল ভাইয়া দেখতেও কতো সুন্দর। একদম চকলেটের চেয়েও বেশি সুন্দর। আশ্চর্য! আগে তো কখনো খেয়াল করিনি। সারা কেমন ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সাহিলের ঠোঁটের দিকে । শরীর টা কেমন যেন কাটা দিয়ে উঠছে ওর। বুকের ভেতর কে যেন গুতাগুতি করছে। অনেকক্ষন ধরে সারার গরম নিঃশ্বাসের আভাস পাচ্ছে সাহিল। তাই সাহিল এবার চোখ মেলে তাকালো। তাকাতেই সারার নেশা লাগানো চোখে ওর চোখ আটকে গেল। সারা আর থাকতে পারলো না। হঠাৎই যেন লজ্জা নামক প্রাণী টা মোটা চাদরে ঢেকে নিল ওকে। সারা সাহিলের কাছ থেকে উঠে এক দৌড়ে পালিয়ে গেল ওখান থেকে। আর সাহিল ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে হাসলো। ওর এখন গায়ের যন্ত্রণা টাও মধুর লাগছে। এইটুকু যন্ত্রণার জন্যই তো ও এতো সুখের মুহূর্ত পেল।
চলবে….