মিথ্যে অভিনয় পর্বঃ ০৭
লেখকঃ আবির খান
তাহসান শাড়িটা হাতে নিয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। মাইরার দিকে লজ্জায় তাকাতে পারছে না। কারণ মাইরার ফরসা নরম স্পর্শকাতর কোমড়টা ওর দিকে তাকিয়ে আছে৷ যেন ওকেই ডাকছে। তাহসান যে কতবার ঢোক গিলেছে তার হিসাব নেই। বেচারার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে লজ্জায়। মাইরাকে শাড়ি পরাতে গেলে ওকে অবশ্যই স্পর্শ করতে হবে। কিন্তু ও কি পারবে? তাহসান কঠিন ভাবনায় পড়ে গিয়েছে। পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। মাইরা জোর গলায় বলে উঠে,
~ কি হলো তাড়াতাড়ি পরান। দেরী হচ্ছে তো।
– পরাচ্ছি পরাচ্ছি।
মাইরার ধমক খেয়ে তাহসান দ্রুত ওকে শাড়ি পরাতে শুরু করে। প্রথমেই ও সুন্দর করে শাড়িটা গুজে দিয়ে পরাতে থাকে। শাড়িটা পরাতে গিয়ে মাইরাকে বারবার স্পর্শ করতে হচ্ছে তাহসানের। মাইরা তাহসানের এভাবে স্পর্শ পেয়ে বারবার কেঁপে উঠছে। ওর হৃদস্পন্দন ক্রমশ বেড়েই চলছে। তাহসানে ওর স্পর্শকাতর জায়গায় গুলোতে স্পর্শ করছে। অন্যরকম একটা অনুভূতি হচ্ছে ওর। মাইরা জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। আর লজ্জায় ওর পুরো মুখ একদম গোলাপি হয়ে আছে। একসময় ও চোখ বন্ধই করে ফেলে, যখন তাহসান ওর শাড়ির কুচিটা ঠিক করতে থাকে। আর এদিকে তাহসান রোবটের মতো শাড়ি পরাচ্ছে মাইরাকে। সত্যি বলতে ওর অসম্ভব রকমের অস্বস্তি লাগছে। মাইরা ওর বিয়ে করা বউ। তাও এত তাড়াতাড়ি এতটা কাছে আসতে হবে তাহসান কল্পনাও করে নি। ও মাইরাকে শাড়ি পরাতে গিয়ে অনেকবার বেখেয়ালি হয়ে গিয়েছে মাইরার সৌন্দর্য্য দেখে৷ তবে ও আবার নিজেকে সামলে নিয়েছে। অনেক কষ্টে শাড়ি পরানো শেষ হলে তাহসান তাকিয়ে দেখে মাইরা চোখ বন্ধ করে আছে৷ ওর পুরো মুখ গোলাপি হয়ে আছে লজ্জায়। তাহসান আস্তে করে বলে উঠে,
– শেষ।
মাইরা দ্রুত চোখ মেলে তাকায়। সবার আগে আয়নার সামনে গিয়ে নিজেকে দেখে। তাহসান ওকে প্রফেশনালদের মতো ইন্ডিয়ান স্টাইলে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে৷ মাইরা পুরো হা করে তাকিয়ে আছে। ওর বিশ্বাসই হচ্ছে না তাহসান এত ভালো করে শাড়ি পড়াতে পারে। মাইরা আস্তে আস্তে তাহসানের কাছে এসে বলে,
~ ভালোই তো এতক্ষণ মন ভরে স্পর্শ করলেন। হুহ।
তাহসান চোখ বড়ো বড়ো করে মাইরার দিকে তাকায়। মাইরা ভয় পেয়ে বলে,
~ আচ্ছা আচ্ছা সরি। থ্যাঙ্কিউ ইউ এত সুন্দর করে শাড়ি পরিয়ে দেওয়ার জন্য।
– হয়েছে হয়েছে। এখন চলো তোমার বাসায় যাবে।
~ দাঁড়ান এক মিনিট।
তাহসান দাঁড়িয়ে আছে। মাইরা একটু টিস্যু এনে তাহসানের একদম কাছে এসে সুন্দর করে ওর কপালের ঘামগুলো মুছে দিতে থাকে। আর তাহসান মাইরার মায়াবী মুখখানা মুগ্ধ হয়ে দেখতে থাকে। একসময় ওদের চোখাচোখি হয়। মাইরা লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে বলে,
~ এভাবে কি দেখেন হুম?
– তোমাকে…না মানে কি না ঘড়ি দেখিইইই…দেরী হচ্ছে এবার… আমি যাই তুমি থাকো।
বলেই তাহসান ব্যাগ নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়ে। আর মাইরা হাসতে হাসতে নিজেকে আরো একবার আয়নায় দেখে রুম ত্যাগ করে৷ বাইরে আসতেই সবার সাথে দেখা হয়। ভাবী আর মাইরার শাশুড়ী মাইরাকে দেখে বলে উঠেন,
~ মাশাল্লাহ বউমা তোমাকে তো অনেক সুন্দরী লাগছে শাড়িতে।
~ হ্যাঁ মা। এত সুন্দর করে শাড়ি পরলে কিভাবে মাইরা? প্লিজ আমাকেও শিখিও।
মাইরা মুচকি হাসি দিয়ে আচ্ছা বলে তাহসানের দিকে তাকায়। তাহসান মাইরার তাকানি দেখে লজ্জায় অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে। রাহুল তাহসানের কাছে এসে আস্তে করে বলে,
– শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছিস মাইরাকে হাসিখুশী রাখিস। আমাদের মান সম্মান সব তোর হাতে।
– আচ্ছা।
– তুই অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিস ভাই। বাহ! অনেক ভালো লাগছে।
– ভাইয়া একটা কথা বলি?
– একশোটা বল ভাই।
– ভাইয়া আমার মনে হয়, আমার এবার মুভ অন করা উচিৎ। কারণ তমা আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আমার সাথে মিথ্যে অভিনয় করেছে। আমি চাইনা মাইরার সাথে তেমন কিছু হোক। তবে একটু সময় লাগবে ওর সাথে ফ্রী হতে।
– একদম ঠিক বলেছিস। ভাই আমি যে আজ কি খুশী তুই কল্পনাও করতে পারবিনা। বলেছিলাম না মাইরা তোকে পরিবর্তন করে দিবে৷ দেখ তুই কতটা পালটে গিয়েছিস।
– তা ঠিক। মেয়েটা জাদু জানে। আর সরি আমার জন্য তোমাদের অনেক চিন্তা হয়েছে।
– ধুর বোকা। শোন, মেয়ে মানুষদের যত বেশী আদর সোহাগ করবি তারা তত তোর প্রতি দুর্বল হবে৷ সো বুঝলি তো ওকে খুশী করার জন্য কি করতে হবে?
– আচ্ছা আচ্ছা হইছে। খাবার টেবিলেও লজ্জা দিসো আবার এখন। তুমিও না।
– এটাকে বলে এক্সপেরিয়েন্স। হাহা।
– আচ্ছা আসি তাহলে।
– আচ্ছা।
~ সাবধানে যাস তাহসান।
– আচ্ছা মা।
– বেয়াই আর বেয়াইন সাবকে আমাদের সালাম দিস।
– ঠিক আছে বাবা।
এরপর সবাইকে বিদায় দিয়ে মাইরা আর তাহসান গাড়ি নিয়ে রওনা হয় মাইরাদের বাসায়৷ তাহসান নিজেই ড্রাইভ করে যাচ্ছে।
১১.
মাইরাদের বাসায়,
– এই রান্নার কতদূর? ওরা কিন্তু এখনই চলে আসবে।
~ এইতো শেষ প্রায়।
~ ভাইয়া আর ১০ মিনিট লাগবে। (মাইরার ছোট মামি)
– আচ্ছা। সুমন কই?
~ কি যেন বললো আনতে গিয়েছে।
– ওহ! তবে ও চাইলে আমাকে বলতো। আমি এনে দিতাম। সুমন এমনি কত দৌড়াদৌড়ি করলো মেয়েটার বিয়েতে।
~ ভাইয়া সমস্যা নেই। একমাত্র মামা, এটুকু তো করবেই।
~ আচ্ছা তুমি চিন্তা করো না৷ সব ঠিক ঠাক হবে৷ তুমি ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসো।
– আচ্ছা।
কিছুক্ষণ পর মাইরার মামা চলে আসে। মাইরার বাবা বলেন,
– কিরে কোথায় গিয়েছিলি? আর হাতে এগুলা কি?
– মাইরার না আইসক্রিম পছন্দ তাই ওর পছন্দের আইসক্রিম নিয়ে আসলাম।
– তুই ও না। যা ফ্রেশ হয়ে আয়। ওরা হয়তো আর একটু পরই চলে আসবে৷ মাইরা কল দিয়ে জানালো মাত্র।
– আচ্ছা।
রান্নাবান্না শেষ করে সবাই রেডি হয়ে মাইরা আর তাহসানের জন্য অপেক্ষা করছে। সময়টা এখন প্রায় ১ টা পাড় হয়েছে। দেখতে দেখতে হঠাৎই বেল বেজে ওঠে। মাইরার মা দরজা খুলে দ্রুত। দরজা খুলতেই মাইরা আর তাহসানকে দেখতে পায় সবাই। ওরা দুইজন সবাইকে সালাম দেয়। মাইরা ওর মাকে জড়িয়ে ধরে। দুজনেই ইমোশনাল হয়ে পড়ে।
~ কেমন আছিস মা? সব ভালো? (মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল)
~ অনেক ভালো আছি মা। সব ভালো। (প্রাণবন্ত হাসি দিয়ে)
মাইরার মা অনেক খুশী হন মেয়েকে এত খুশী দেখে৷ তিনি তাহসানের কাছে গিয়ে বলেন,
~ বাবা আসতে কোন সমস্যা হয়নি তো?
– না মা কোন সমস্যা হয় নি। আপনি ভালো আছেন?
~ হ্যাঁ বাবা। মেয়েটাকে এত হাসিখুশী দেখে খুব ভালো আছি।
– আরে মাইরা তো হাসিখুশী থাকবেই, এত হ্যান্ডসাম একটা বর যে পেয়েছে। হাহা। (মামা)
মাইরার মামার কথা শুনে সবাই একসাথে হেসে ওঠে. তাহসান লজ্জা পায় সাথে মাইরাও। মাইরার বাবা বলে উঠেন,
– মাইরা, তাহসানকে তোর রুমে নিয়ে যা। তোরা ফ্রেশ হয়ে একবারে খেতে আয়।
~ ঠিক আছে আব্বু।
– বাবা ফ্রেশ হয়ে আসো তাহলে।
– জি।
আসার আগে মাইরাদের জন্য আনা ফল, মিষ্টি, কেক, আরো কি কি যেন সেগুলো দিয়ে তারপর তাহসান মাইরার সাথে ওর রুমে আসে। ও প্রথম মাইরার রুমে এসেছে। বেশ বড়োই মাইরার রুমটা। রুমটা দেখলেই বুঝা যায় এটা একটা মেয়ের রুম। তাহসান বেডে বসতে বসতে বলে,
– তোমার রুমটাতো ভালোই সাজিয়েছো। তা কে সাজিয়ে দিয়েছে?
মাইরা তাহসানের পাশে এসে বসে বলে,
~ আপনি বলেন কে সাজাতে পারে?
– তুমি তাই না?
~ জানলে আবার জিজ্ঞেস করেন কেন? (ভ্রুকুচকে)
– না সিউর হলাম আরকি। তুমি যে পাকনা এসব কাজ তোমাকে দিয়ে হয় কিনা সিউর হলাম। (মজা করে বলল)
~ কিইইই! আমি পাকনা মেয়ে? (রেগে গিয়ে)
– হ্যাঁ। পাকনা মেয়ে না পাকনা বুড়ী। হাহা। (হাসি দিয়ে)
মাইরা উঠে তাহসানকে মারতে গেলে ওর শাড়িতে পা চাপা পড়ে তাহসানের উপর পড়ে যায়। তাহসানও মাইরার ভার সামলাতে না পেরে দুজন বেডের উপর শুয়ে পড়ে। তাহসানের উপর এখন মাইরা। বেচারা অবাক হয়ে গিয়েছে এ অবস্থা দেখে৷ মাইরা লজ্জাসিক্ত নয়নে তাহসানের দিকে তাকিয়ে আছে। তাহসান কি করবে বুঝতে পারছে না। মাইরা অভিমানী স্বরে বলে,
~ এখন বলেন আমি পাকনা বুড়ী? এবার এই পাকনা বুড়ী আপনার নাক কামড়াবে হিহি। কোথায় পালাবেন?
– কে আছো বাঁচাও বাঁচাও। সাকচুন্নি ধরেছে আমাকে। বাঁচাও।
মাইরা তাহসানের কথা শুনে আর কান্ড দেখে হাসতে হাসতে ওর বুকের সাথে মিশে যায়। তাহসানও হাসছে মন খুলে। মাইরা মাথা তুলে বলে,
~ আচ্ছা কোন সাকচুন্নি নাক কামড়ায় বলেন তো?
– কেন মাইরা সাকচুন্নি।
মাইরা তাহসানের কথা শুনে আবার অট্টো হাসিতে ভেঙে পড়ে সাথে তাহসানও। দুজনে মন খুলে হাসছে। মাইরার মুক্তঝরা হাসি দেখে তাহসান মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। মাইরার হাসি দেখলে তাহসান মনে অনেক শান্তি পায়৷ মাইরা হাসতে বলে,
~ আসেন তাহলে কামড় দি আপনার নাকে। হিহি।
– এই না না।
~ উহুম, আপনি আমাকে সাকচুন্নি আর পাকনা বুড়ী বলছেন। কামড় তো আজকে আমি দিবোই দিবো।
– আচ্ছা সরি সরি।
~ আচ্ছা যান এবার ছেড়ে দিলাম। নেক্সট টাইম খবর আছে।
– আচ্ছা আচ্ছা। শোনো, তোমার পরিবারটা খুব ভালো। আমার খুব ভালো লেগেছে সবাইকে।
~ সত্যি? অনেক খুশী হলাম। (লজ্জাসিক্ত কণ্ঠে)
– ম্যাম এখন ছাড়েন৷ সবাই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি যেতে হবে।
মাইরা লজ্জা পায়। কারণ ও ভুলেই গিয়েছিলো যে ও সম্পূর্ণ তাহসানের উপর ছিলো। ও দ্রুত নেমে পড়ে। তাহসান উঠে বসে বলে,
– সুযোগ পেলেই খালি আমাকে জড়িয়ে ধরা, আমার কাছে আসা তাই না? দুষ্টু মেয়ে একটা।
মাইরা লজ্জায় হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে। তাহসান হাসি দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়। এরপর ও বের হলে মাইরাও যায়। তারপর দুজন খেতে আসে।
১২.
তাহসান মাইরার বাবা আর মামার সাথে গল্প করছে। আর মাইরা রান্না ঘরে এসেছে। এসেই ওর মাকে জড়িয়ে ধরে। ওর মা ঘুরে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,
~ খুব সুন্দর লাগছে মা তোকে। তুই এত সুন্দর করে শাড়ি পরা শিখলি কই?
~ উনি পরিয়ে দিয়েছেন।(লজ্জা নিয়ে বলল)
~ বাহ! তাহলে মামলা অনেক দূর গিয়েছে। হাহা। (মামি)
~ উম মামিইই তুমিও না। (লজ্জা পাচ্ছে খুব মাইরা)
~ হাহা। খুব ভালো। জানিস, জীবনে প্রথম তুই আমাদের কাছ থেকে এত দূরে ছিলি। খুব চিন্তা হচ্ছিলো। কিন্তু এখন তোর মুখে হাসি আর আনন্দ দেখে আমাদের সবার চিন্তা শেয়।
~ মা উনি অনেক ভালো। আমার অনেক খেয়াল রাখেন।
~ হুম তোমার হাসিই তা বলে দিচ্ছে।
মাইরা লজ্জা পায়। ওর মা বলে,
~ দোয়া করি মা অনেক অনেক সুখী হ। আর তাড়াতাড়ি নাতি নাতনির মুখ দেখতে চাই।
~ মা আবার তুমিও?
~ হাহা। আচ্ছা চল সবাইকে খাবার দি। মাইরা সবাইকে ডেকে নিয়ে আয়।
~ আচ্ছা মা।
মাইরা সবাইকে ডাক দিয়ে খাবার টেবিলে নিয়ে আসে। মাইরার বাবা তাহসানকে বলে,
– বাবা তুমি এখানে বসো। তুমি হলে আমাদের আজকের সবচেয়ে স্পেশাল গেইস্ট।
– বাবা একদমই না৷ আপনি আমাদের সবার বড়ো। তাই আপনি এখানে বসেন। আমি পাশেই বসছি। গুরুজনদের সবসময় সবার মাঝে বসতে হয়। তাই আপনিই বসুন।
তাহসানের কথা শুনে সবাই অনেক খুশী আর অবাক হয়। ও যে মন থেকে একটা ভালো ছেলে তা সবাই বুঝে গেল। তাহসানের প্রতি মাইরার সম্মান আরো অনেক বেড়ে যায়। স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি সবচেয়ে বেশী খুশী হয় যখন স্বামী তার স্ত্রীর পরিবারকে ভালবাসে, তাদের অনেক সম্মান করে, তাদের খেয়াল রাখে। যেমন তাহসান মাইরার বাবাকে সবার মাঝে বসিয়েছে। চাইলে ও বসতে পারতো। কিন্তু ও তা করেনি। যার জন্য মাইরা সহ সবাই অনেক খুশী হয়েছে। এই ছোট্ট ছোট্ট বিষয়গুলো স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে অনেক গভীর আর মজবুত করে দেয়। তাই স্বামীদের উচিৎ সবসময় তার স্ত্রীর পরিবারকে ভালবাসা এবং তাদের সম্মান করা। এতে করে স্ত্রীর মন মানসিকতা সবসময় ভালো থাকে আর স্ত্রী তার স্বামীকে বিশ্বাস করে। যেমন মাইরা তাহসানকে। মাইরা বাবা হাসি দিয়ে বলে,
– আচ্ছা বাবা যাও আমি এখানেই বসলাম কিন্তু তুমি আমার পাশেই বসো।
– জি বাবা অবশ্যই।
– এই জামাইকে খাবার দেও তাড়াতাড়ি।
~ দিচ্ছি দিচ্ছি। (মাইরার মা)
– তাহসান আজকে শুধু পেট না মন ভরেও খেতে হবে কিন্তু। (মামা)
~ হ্যাঁ একদম ঠিক। (মামি)
এরপর শুরু হয় জামাই ভোজ। ২০ পদের খাবার রান্না করেছে মাইরার মা। তাহসান তো পুরো অবাক হয়ে গিয়েছে একের পর এক খাবার দেখে। বেচারা সবার সম্মান রাখতে গলা পর্যন্ত খেয়েছে৷ মাইরা শুধু হা করে তাকিয়ে ছিলো। তাহসান শুধু খাচ্ছে আর প্রশংসা করছে৷ মাইরার বাবা মা অনেক অনেক বেশী খুশী হয়েছেন। খাওয়া দাওয়া শেষ হলে তাহসান আস্তে আস্তে করে মাইরার রুমে এসে বেডে বসে৷ মাইরাও সাথে সাথে চলে আসে। বেচারা একটুও নড়াচড়া করতে পারছে না৷ মনে হচ্ছে পেট ফেটে যাবে এখনই। মাইরা এসে বলে,
~ আপনি এভাবে এতকিছু খেলেন কিভাবে? আপনার এখন খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না? (অসহায় ভাবে বলল)
তাহসান মাইরার দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে মাইরাকে টান দিয়ে ওর পাশে বসিয়ে বলে,
– তোমার আম্মু আর মামি এত কষ্ট আমার জন্য রান্না করেছে। আমি যদি তা না খেতাম তারা খুব কষ্ট পেতেন। তাই শত কষ্ট হলেও খেয়েছি। দেখো নি তারা কত খুশী হয়েছেন। বিশেষ করে তোমার আম্মু। মা’রা হাসলে আমার খুব ভালো লাগে।
~ একটা কথা জানেন?
– কি?
~ আপনি সত্যিই অনেক ভালো। আপনার স্ত্রী হতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি। সবসময় আমাকে কাছে রাখবেন তো?
– একটা শর্তে।
~ কি শর্ত! (অবাক হয়ে)
– আমার নাকে কামড় দিতে পারবা না। হাহা।
তাহসান আর মাইরা একসাথে হেসে দেয়৷ দুইজন দুজনের দিকে তাকিয়ে হাসছে। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত এটা। এদিকে তাহসান মনে মনে ভাবছে আজ রাতে মাইরা আবার কি করবে ওর সাথে কে জানে। কারণ ওরা এখন অনেকটা ফ্রী।
চলবে..?
সবার ভালো সাড়া চাই। আর কেমন লেগেছে জানাবেন কিন্তু। সাথে থাকবেন সবসময়।
আগের এবং পরবর্তী পর্বের লিংক কমেন্টে দেওয়া হবে৷