মি_পার্ফেক্ট,১৩,১৪,১৫

0
1110

#মি_পার্ফেক্ট,১৩,১৪,১৫
আতাউর রহমান হৃদয়
পর্ব ১৩

বলেই ওনি আমার দিকে ওনার হাতে থাকা ব্যাগটা এগিয়ে দিলেন।
ব্যাগটা খুলে তো আমি খুশি তে আত্মহারা…
ওনি বুঝলেন কি করে…?
খুশির ঠ্যালায় ওনাকে জড়িয়ে ধরে কয়টা চুমু খেয়েছি আমি বলতে পারবো না….

— ফুচকা…
–হুম…(ওনি)
— ধ্যাংকু….
— হুম…(ওনি একটা মুচকি হাসি দিলেন)
— আচ্ছা আপনি বুঝলেন কি করে আমার ফুচকা খেতে ইচ্ছে করছে… (আমি)
— বুঝি আর কি…?(ওনি
— বলুনা…(আহ্লাদী হয়ে)
— পরে বলবো
..

ফুচকা খেয়ে নিলাম ওনাকেও দিলাম…বেচারা ঝাল খেয়ে সহ্য করতে পারে নি….

ওনার প্রতিদিনই কাজ থাকে। রাতে একটু সময় পাই ওনাকে কাছে পাওয়ার। সকালে ফজর পড়ে বেরিয়ে যান। বাসায় ফিরার কোন টাইম টেবিল নাই। এতটা পরিশ্রম লোকটা কেনো যে করে বুঝি না।

সকাল বেলা গোসল করে নামাজ পড়ে চুলের পানি গুলো গামছা দিয়ে নিচ্ছিলাম… তখন ওনি এসে পাশে দাড়ালেন…চুল গুলো ঝাড়া যখনি দিলাম ওনার মুখে গিয়ে বাড়ি লাগলো চুলের।

আমার দিকে তাকিয়ে আছেন ওনি…ওনার এই তাকিয়ে থাকাটা অর্থ বুঝাচ্ছেন…কি ছিলো এটা..?

আমি আর কি করবো এবার ইচ্ছে করেই ওনার মুখে চুল দিয়ে বাড়ি দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যাবো তখনি ওনি আমার হাতটা ধরে হেঁচকা টানে ওনার সাথে মিশিয়ে নিলেন।
ইশারায় জিজ্ঞেস করলাম “কিহ”

ওনিও ইশারায় জবাব দিলেন কিছুনা”

ওনার চোখের দিকে তাকিয়ে আছি…ওনার চোখের ভাষা আমি বিনা দ্বিধায় বুঝতে পারছি… ওনার চোখের গভীরতায় হারিয়ে যাচ্ছি আমি। মানুষ বলে চোখের ভাষা বুঝা বড় দ্বায়। আমি বলব মুখের ভাষা বুঝতে যদিও কখনো অসুবিধা হয় তবে চোখের ভাষা বুঝা সবচেয়ে সহজ। কিন্তু চোখের ভাষা বুঝতে হলে মনের সাথে মনের মিল থাকতে হবে।
মুখের ভাষা সবসময় সত্য হয় না তবে চোখের ভাষা সর্বক্ষণে সত্যতা প্রকাশ করে।

ওনার চোখে আমি গভীর ভালবাসার সন্ধান আমি পাচ্ছি। ইচ্ছে করছে এভাবেই তাকিয়ে থাকি ওনার চোখের পানে।
< আমার কপালে একটা চুমু খেয়ে বললেন... -- দুপুরে রেডি থেকো..?(ওনি) -- কেনো??(আমি) -- বাহিরে খাবো আজ দুপুরে..?(ওনি) -- আপনি আসবেন দুপুরে..? (আমি) -- হুম.. -- আচ্ছা.. ওনি বেড়িয়ে পড়লেন। দুপুরে তৈরি হচ্ছিলাম তখনই আমার বরের আগমন ঘটলো... ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে আমি... ওনি এসেই আমার ঘায়ে একটা চুমু খেলেন... ওনার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ক্লান্ত তিনি তবুও আমাকে খুশি করার আপ্রাণ চেষ্টা টুকু ওনি করলেন। ওনি যদি এসে আমার পাশে নাও দাড়াতেন তবুও বমার কোন আক্ষেপ থাকতো না...তবে ওনার এই একটা চুমু আমার মনে ওনার হাজার টা অনুভুতি কাড়া নাড়িয়ে দিলো। আমার বর বুঝেন কি করে বউকে খুশি করা যায়। তিনি হুট করে আমার গলা জড়িয়ে ধরলেন। পকেট থেকে একটা চেন বের করে আমার ঘাড়ে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে চেইন টা খুব যতনে আমায় পড়িয়ে দিলেন। এতটা দামী নয় তবে আবার এতটা সস্তাও নয়। তবে চেইন টা আমার কাছে অমূল্য কারণ ওনার দেওয়া আবার নিজ হাতে পড়িয়ে দিলেন। টেবিলের উপর রাখা ঝুমকো গুলো হাতে নিয়ে সেগুলোও আমাকে পড়িয়ে দিলেন। বিছানার উপর রাখা আমার ওড়না টা নিয়ে আমার গায়ে জড়িয়ে দিলেন... আমার কাদ জড়িয়ে ধরে আমাকে আয়নায় ইশারায় করে বললেন...অনেক সুন্দর লাগছে তোমায়... ইস দুজন কে মানিয়েছে বেশ। একদম পার্ফেক্ট জুটি। আসলে এতটা পার্ফেক্ট আমাদের মানানোর কারণ টাই তো ওনি আমার মি.ইফতি। কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলেন আমার হৃৎস্পন্দন যেনো বেড়েই চলছে। ওনার প্রতিটি ছোঁয়াই আমার কাছে নতুন লাগে। বাহিরে গেছি খেতে। কোনো রেস্টুরেন্টে নয় ওনার খালার বাড়িতেই গেছি...আমি ওনি শাশুড়ী আর আপু... পুচকি নীলুও ছিলো সাথে। এই পুচকি টা না পারে বটে সবাইকে হাসাতে। মাতিয়ে তুলতে। ওরা মামা-ভাগনী খুব দুস্টুমি করে। যেগুলো দেখে সবাই হাসে। তবুও তারা থেমে থাকে না। দিনকাল চলছে ভালো। কেয়ারিং বর। সুন্দর একটা পরিবার। আমার আর কিছুই চাই না। মাঝে মাঝে সারাদিন ওনি বাসায় থাকেন না। তখন খুব বোরিং লাগে। মোবাইল চালানোর ভুতটাও আজকাল ভালোই ধরেছে৷ ফেসবুকে নতুন সংসার জমেছে। ওনাকে ঠিকভাবে সময় দেওয়া হয়না যতক্ষণ ওনি বাসায় থাকেন। পুরুষ মানুষ বাসায় তো আর বসে থাকে না। বাহিরে কাজ কর্ম করতে হয় নাহয় সংসারের খরচ তো চলবে না। আজকাল ওনি রাতে আমাকে বুকে নিয়ে ঘুমাতে চান কেনো জানি আমার ইচ্ছে জাগে না ওনার বুকে ঘুমানোর। আমার ওনিচ্ছা দেখলে ওনিও আর জোর করেন না...ঘুমিয়ে পড়েন ওনি। ওনি তো ঘুমিয়ে পড়েন তবে আমার ঘুম আসে না। ফেসবুকিং করতে মন চায়। তাই করি। ওনার কাছেও যেতে ইচ্ছে করে না। আজ একমাসেরও বেশি সময় ওনার ছোয়া পাই না। পাই না বলতে ওনার ছোঁয়া গুলো ভালো লাগে। তবুও আমার প্রতি ওনার কেয়ারিংয়ে কোনো কমতি নেই... শুক্রবার ওনি বাসায়ই আছেন।।। সকাল থেকে রুম থেকেও বেরুন নি। মন খারাপ মনে হচ্ছে। হয়তো ব্যবসায়িক কোনো ঝামেলা ওনার মন খারাপ। তাই আমিও এটা আর কিছু জিজ্ঞেস করি নি... -- ওই শুনছো...?(ওনি শুয়ে ছিলেন আমি পাশেই বসে মোবাইল চালাচ্ছি) -- হুম বলুন....? -- কয়েকদিন তোমাদের বাড়িতে থেকে আসো.. -- কেনো..?(আমি) -- তোমার আম্মু কল দিছিলো..তোমাকে কয়দিন তার কাছেই রাখতে চায়...?(ওনি) -- ওও আচ্চা।। কখন যাচ্ছি..? (আমি) -- বিকেলে অনিক আসবে... তোমায় নিতে.. -- ওকে... < অনিক আসার পর তার সাথে বাবার বাড়ি আসলাম... আসার সময় ওনাকে কেনো জানি এই বাড়ি আসতে বলার প্রয়োজন বোধ মনে করি। তাই কিঋু বলিও নি... প্রতিদিন অন্তুত ওনি ১০-১২ বার ফোন দিবে। দিয়ে জিজ্ঞেস করেন। কিছু খেয়েছি কি না। কেমন আছি। ভালো লাগছে কিনা।
আমার কাছে কেনো জানি ওনার এই ফোন করে এই গুলো জিজ্ঞেস করা টা বিরক্তিকর লাগছে।

তাই ওনি ফোন দেওয়া মাত্রই বলে উঠলাম..
— ওই কি সমস্যা আপনার এত বার কাল দেন কেমো দিনে একবার কল দিলেই তো হয়??

ওনি বলে উঠলেন…

চলবে

#মি_পার্ফেক্ট
পর্ব ১৪

তাই ওনি ফোন দেওয়া মাত্রই বলে উঠলাম..
— ওই কি সমস্যা আপনার এত বার কাল দেন কেমো দিনে একবার কল দিলেই তো হয়??
— মনটা মানে তো..?
— মন না মানলে মন রে মানান..আমারে জ্বালান কেনো?? (আমি)
— ওহ কাকে জ্বালাবো…?(ওনি অতি নরম স্বরে)
— আমি কেমনে জানি যানি৷. আপনার যাকে ইচ্ছে জ্বালান…আমাকে প্লিজ বিরক্ত করবেন না…(আমি অনেকটাই বিরক্তিকর ভাবে.)
— আমার ফোন দেওয়াতে বিরক্ত হচ্ছো…?(ভাঙা কন্ঠ)
— হুহ…(আমি)
— তাহলে কি আর করার।। আমাতে তুমি বিরক্ত। (এই বোধহয় শক্ত মানুষ টা কেঁদে দিলো..)
— হুম…

কল টা কেটে দিলো…

ওনার কাছে কেমন লাগছে আমার এ অশালীন আচরনে। একটুও ভাবাচ্ছে না বিষয়টা। কি হয়েছে আমার জানিনা। তবে ওনার এই বারবার কল দিয়ে খোঁজ নেওয়াটা আমার কাছে পুরো বিরক্তিই লাগছে।

আজ তিনদিন ফোন দেন না। আমার কোনো বিদ্রুপ নেই এতে।

আজ আমার কলেজের ফ্রেন্ড রা কল দিয়ে বললো ওরা হ্যাংআউট করবে। আমিও নিষেধ করি নি।

কলেজের সামনে থাকা আমানিয়া রেস্তোরাঁতে বসে আড্ডা দিচ্ছি। আমার পাশে বসা আমার কলেজের বন্ধু আরিফ যে আমাকে কলেজে পড়াকালীন সময়ে অনেক বার প্রপোজ করেছে। কিন্তু আমি তার প্রপোজালে কোনো সাড়া দিই নি। আজকাল তার সাথে অনেক মেসেজিং। অনেক টা গভীরভাবেই হচ্ছে।

তার সাথে অনেকটা হেসে কথা বলছি। তখন দেখলাম কয়েকজন লোক ঢুকলো রেস্তোরাঁ তে। আমার পাশের কেবিন টায় বসলো।

তাদের সাথে দেখি ইফতিও আছে। ওনারা কিসব কাগজ পত্র নিয়ে বেস তরকাতরকি করছে৷ ওনার চেহারায় রাগের চাপ দেখা যাচ্ছে। অনেক টা শুকিয়েও গেছেন। হয়তো কাজের চাপটাও একটু বেশি তাই খাওয়া দাওয়া করছেন না। কিন্তু শাশুড়ীর মুখে তো শুনলাম ওনি যতই কাজের চাপে থাকেন না কেনো খাওয়া দাওয়া টা ঠিক ভাবেই করেন।

আমি সে দিকে নজর না দিয়ে গল্প করাতে মনো নিবেশ করলাম।

রাত প্রায় দেড়টা ফেসবুক চালাচ্ছি। ফেসবুক নয় মেসেঞ্জারেই আছি।

হুট করে একটা আইডি থেকে মেসেজ আসলো। নাম রহমান হৃদয়। প্রোপাইলে মাক্স পড়া একটা ছবি। এত কিছু বিদ্রুপ না করে মেসেজ টা ওপেন করলাম।

— হাই মিস…✋(মেসেজদাতা)
— হুম…(আমি)
— আপনার সাথে কি মেসেজিং করতে পারি…(মেসেজদাতা)
— হ্যাঁ অবশ্যই… (মেসেজ দাতা)

এভাবে অনেকক্ষন মেসেজ করলাম। লোকটার বাড়ি আমাদের এলাকাই। বিবাহিত। বউ নাকি নাইওর গেছে। অনেক গভীরভাবেই চ্যাটিং হলো তার সাথে। যেসকল কথা গুলো কখনোই আমার বরের সাথেও হয় নি। চিনি নাই এখনো তাকে।

পরের দিন আম্মু বললো।আমাকে নাকি যেতে বলেছেন শাশুড়ী মা।

বিকেল বেলায় ওনি এসে আমাকে নিয়ে আসলেন।

— সব ঠিকঠাক…(ওনি হুট করেই কথাটা বললেন)
— হুহ..
— ওহ তাহলে ভালো…(ওনি বলেই রুম থেকে বেরিয়ে পড়লেন)

সকালে নাস্তা করতেছি সবাই আছে। শুক্রবার ওনার আজ কোনো কাজ নেই। তাই একটু লেটেই নাস্তা তৈরি করলাম। ননদীও আছে।…শাশুড়ী তার রুমে।

— কিরে ভাইয়া তোর আবার কি হলো…?(ননদী)
— কই আমার কি হবে..?(ওনি)
— কিছু হয় নি না…এরে ভাই তুই অন্তত আমার কাছ থেকে কিছু লুকাস না…(ননদী)
— কই তোর কাছ থেকে আবার কি লুকাইলাম..?(ওনি)
— লুকাস নি তো কি…আগে দেখলাম দিনে ২ টা কি ৩ টা সিগারেট খাইতি আর এখন কয়টা খাস কে জানে..বিশ্রি গন্ধ আসে তোর থেকে…এই ভাবি তুমি ঘুমাও কেমনে ওর লগে…(ননদী)
— হুহ ওনার ঘুম…তুই চিন্তা করিস না..কাল থেকে আর বেশি খামু না…(ওনি)
— তবুও চেয়ে দিবি বলবি না…?(ননদী)

একটা হাসি দিয়ে ওনি উঠে চলে গেলেন।

রাতে বসে বসে মোবাইল টিপছি তখন ওনি এসে বললেন

— আপনার কি চ্যাটিং করা শেষ হয়েছে… তাহলে ঘুমাতাম।।(ওনি)
— আপনি ঘুমান আমি কিছুক্ষণ পর ঘুমাবো…

ওনি আর কিছু বললেন না উঠে চলে গেলেন।। টেবিলে বসে কি যেন লিখতেছেন। আমি আর সেদিকে খেয়াল করে মোবাইলে মনোযোগ দিলাম।

— ঐ ঘুমাবে না…?(ওনি)
— হুম..(আমি)
— তো ঘুমাও..(ওনি)
— একটু দেরি হবে…
— অনুরীমা শোনো আমি এতটাও অবুঝ নই বুঝছো। তুমি কি করছো না করছো সবই আমি বুঝতে পারি…(ওনি)
— বুঝছেন তো ভাল হয়েছে এখন আপনি একটু ঘুমান আমারে শান্তি মত থাকতে দেন….(আমি)
— ওহ আমি তোমায় বিরক্ত করছি… সরি..
— হুম
— তবে হ্যাঁ মনে রেখো একটু বস্তু কে যতটা আঘাত তুমি করবে ঠিক ততটা আঘাত বিপরীতে তোমাকে ফেরত দিবে…?(ওনি)
— হুম জানি.. (আমি)
— আজ কয়দিন কি হয়েছে তোমার.. বলো আমাকে আমি কি কোনো ভুল করছি৷. ভুল করে থাকলে আমি ক্ষমা প্রার্থী। তবুও প্লিজ এমন করো না..আমি নিতে পারছি না আর… ( কন্ঠ টা থেমে আসছে ওনার একদম ছোট বাচ্চাদের মত করছেন ওনি)
— নাহ আপনি কোনো ভুল করেন নি… আর আমি কিছুই করছি না আপনার সাথে.. (আমি)

সকালে ওনি বেড়িয়ে পড়েছেন…

টেবিলের উপর দেখি একটা ডায়েরি রাখা রাতে বোধয় এটা দিয়ে ওনি কিছু একটা করছিলেন।

ডায়েরির প্রথম পৃষ্ঠা টা উল্টালাম….

সেথায় লিখা….

অনুরীমা তাকে আজ….

চলবে…

#মি_পার্ফেক্ট
পর্ব ১৫

ডায়েরির প্রথম পৃষ্ঠা টা উল্টালাম….

সেথায় লিখা….

আজ একটা মেয়েকে দেখলাম। খুব মনে ধরেছে। ইসস মেয়েটার চোখে অসম্ভব মায়া। কলেজে গিয়েছিলাম স্যারের সাথে দেখা করতে। লাইব্রেরির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় চোখটা আটকে গেলো এক জোড়া চোখের পানে চেয়ে। কে এই নাম না জানা মেয়ে। জানিনা কেমন তার রূপ। শুধু দেখেছি তার চোখ। ব্যবসায়ীক কাজে এতটাই ব্যস্ত হয়ে গেছি আজকাল মন থেকে প্রেম টাই উধাও হয়ে গেছে। আজ একে দেখে মনের মাঝে প্রেম টা জেগে উঠলো। মনে হলো আজো আমি সেই কলেজের ছাত্র যেথায় কাটায়েছি আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দুটো বর্ষ। এখনো মনে পড়ে কলেজের কোনো মেয়েকে বাদ দিই নি। প্রেমের প্রস্তাবের। তবে কারো সাথে প্রেম করা হয় নি৷ হবে কি করে কেউ তো এক্সেপ্টই করে নি। আবার যারা করতে চেয়েছে। আমি মজা করেছি বলে সরে গিয়েছি। আসলে প্রেম করার কোনো ইচ্ছেই আমার মাঝে ছিলো না। সবাইকে প্রপোজ করেই মজা পেতাম তাই ভাল লাগতো।
বহুদিন পর সেই স্মৃতি গুলো মনে পড়ে গেলো। ইস বন্ধু গুলো আজ থাকতো সাথে নির্ঘাত আমি মেয়েটাকে প্রপোজ করে চলে আসতাম।
এখন আর আগের মত চঞ্চলতা নেই। আছে দায়িত্ববোধ।

দ্বিতীয় পৃষ্ঠা

অনেকদিন হলো ডায়েরটায় গাত দিই না। দেওশার প্রয়োজনও পড়ে নি। এটা তো আর প্রথম ডায়েরী না। এই নিয়ে চারটা ডায়েরি চলছে। আগের তিনটের একটারও পাতা নেই আর।
আজ আবার কলেজের সামনে দিয়ে বাইক নিয়ে আসার সময় সেদিন কার মেয়ে টাকে দেখলাম। আজ নতুন ভাবে এসেছে। মনে হয় খুব বড়লোক ঘরের মেয়ে। তার চলা ফেরা দেখেই বুঝা যায়।

তৃতীয় পৃষ্ঠা

ইসস মেয়েটাকে আজ আবারও দেখলাম। মনে হচ্ছে প্রেমে পড়ে যাবো তার চোখের অসম্ভব মায়ার মায়াবিনী সে। চোখ গুলো আড় চোখে যখন তার পাশের মেয়েটার দিকে তাকালো না… ইসস মনে হচ্ছিলো তার ঐ তাকানো টা আমার বুকে ধনুকের তীরের মত আঘাত করছে। মেয়েদের দিকে তাকানো হয় না। তাকাই না কলেজ জীবনের পর থেকে। তবুও কেনো যেনো তাকানো হয়ে গেলো তার দিকে।

আরেকটা পেজ উল্টাবো তখনই শাশুড়ী মায়ের ডাক পড়লো। ডায়েরিটা জায়গা মত রেখে চলে আসলাম।

— জ্বি আম্মু বলেন…?(আমি)
— এই শিং মাছ টা রান্না করো তো..(শাশুড়ী)
— আম্মু আমি… (আমি)
— হুম করো আমি তোমার সাথেই আছি।।

শাশুড়ী দেখিয়ে দিলেন আমি রান্না করলাম…
রান্না শেষে…
— ইফতিকে দেখবে প্রায়ই দেশি শিং মাছ নিয়ে আসবে…সেগুলো ঠিক আজকের নত রান্না করবা।।।।(শাশুড়ী)
— জ্বি আম্মু…এভাবে ঝোল করে রান্না করা মাছ খেতে পছন্দ করেন ওনি…?(আমি)
— হুম।।

সন্ধ্যায় রুমে বসে মোবাইল নামক যন্ত্র টা চালাচ্ছি।
তখন শাশুড়ী মা রুমে আসলেন….

— বউমা..?(শাশুড়ী )
— হুম আম্মু বলুন…
— আমার ছেলে টা অনেক দুস্টু ছিলো। ও যখন স্কুলে পড়তো না তখন তাকে দিনের বেলায় খুজেই পেতাম না৷ অনেক টেনশন হতো আমার তাকে নিয়ে কিন্তু দেখো যখনই বুঝতে শিখেছে আমার একমাত্র অবলম্বন সে তখন থেকেই সব কিছু চেয়ে দিয়ে সংসার টা ঘুছিয়ে নিয়েছে। শুন্য থেকে আজ এই অবস্থায় এসেছে আমার ছেলেটা। জানো ওকে না কখনো আমরা রাগাই না। ওও যদি একবার রেগে যায় না তখন তাকে হুশে ফিরানোর ক্ষমতা আমার নেই। তাই বলছি কি ওকে কখনো রাগাতে যেও না। তাহলে নিজেই তার মাসুল দিতে হবে…আমার মনে হলো তোমাকে কথা গুলো জানানোর দরকার জানিয়েছি।

বলেই ওনি চলে গেলেন।

শাশুড়ী মা কথা গুলো কেনো বললেন জানিনা তবে তার এই বৈশিষ্ট্য গুলো শুনে আমার মনে একটু তাগাদা সৃষ্টি হয় নি।

আমি আমার কাজে মন দিলাম। একটা ছেলের সাথে ভালোই জমেছে। অনেক কিউট ভাবে কথা বলে সে। ভালোই লাগছে তার সাথে চ্যাটিং করতে।
কখন যে রাত ১২ টা ফেরুয়ে ১ বেজে গেছে আমার খেয়াল নেই।
আম্মু এসে বলে উঠলেন…

— কি গো খাবে না..?(শাশুড়ী)
— হুম খাবো তো…?(আমি)
— কয়টা বাজে তাহলে এখনো কোনো খবর নেই..?(শাশুড়ী)
— আপনার ছেলে তো এখনো আসলো না…?(আমি)
— ওও আসবে না আজ হয়তো…?(শাশুড়ী)
— কেনো ওনি কোথায় গেছে..?(আমি)
— বললো না.. কেনো তোমাকে ফোন দেয় নি…?(শাশুড়ী)
— নাহ…
— ওহ আমাকে দিয়েছিলো।

রাতে খেয়ে শুয়ে আছি হাতে ফোনটা এখনো বিদ্যমান। হুট করে ঘরের দরজায় টোকা পড়লো। দরজা টা খুলে দিতেই ওনি ঘরে ডুকলেন। হুট করেই একটা গন্ধ নাকে ভেসে উঠলো…

— আপনি সিগারেট খেয়ে আসছেন…?(আমি)
— নতুন কিছু না…?(ওনি)
— আগে তো কখনো গন্ধ পাইনি…?(আমি)
— হুম তো…
— এটা খাওয়া কি এতটা জরুরি…?(আমি)
— তোমার জন্য ফোনটা যেমন জরুরি আমার জন্যও সেম…(ওনি)
— ওওও

ওনার বলা শেষের কথা টা আমার কাছে অদ্ভুত লেগেছে… বিষয়টা বুঝতে পেরেছি..
ওনার ডায়েরি তে লেখা মেয়ে টার কথা ওনাকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু করলাম না

সকালে ওনি ওনার কাজে বেরিয়ে পড়লেন।

ওনার ডায়রি টা আবারে হাতে নিলাম।
চতুর্থ পৃষ্ঠা

মেয়েটার নাম জানতে পেরেছি।।অসম্ভব সুন্দর নাম তার..
নামটা তার….

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here