মি_পার্ফেক্ট,২৮,২৯,৩০

0
1037

#মি_পার্ফেক্ট,২৮,২৯,৩০
আতাউর রহমান হৃদয়
২৮

— কি হলো চলে আসলেন যে…?(আমি)
— তো কি করবো….?(ওনি)
— থাকতেন… (আমি)
— হহ..আরো নাচতে হতে যে…????(ওনি)
— তো নাচতেন……(আমি)
— তাই না…
— হুহ তাই তো…ভালোই তো নাচতে জানেন দেখছি…(আমি)
— হুহ…
— আর কতজনের সাথে এমন করে কাপল ডান্স করেছেন….?(আমি)
— হাহ..(চোখ টা কেমন করে যেনো তাকালেন….মনে হলো এই বুঝি ওনি আমাকে চোখ দিয়ে গুলি করলেন।।।তবে ওনার এমন ভাবে তাকানোতে বুঝতে পারলাম ওনি কখনো এমন করে কাপল ডান্স করেন নি)
— এমন ভাবে তাকান কেনো….?আমার ভয় করে…(ভয়ার্তক কন্ঠে)
— ওহহ তাই বুঝি….?(ভ্রু কুচকে বললেন)
— হুহ তাই…তবে ভালোও লাগে…ক্রাস খাই…(আমি ঠং করে)
— ক্রাস সেটা আবার কি…আর খেতেও বা কেমন…?(ওনি…)
— সেটা এমন একটা খাবার যেটা মুখ দিয়ে নয় চোখ দিয়ে খেতে হয়…আর তা খেতে যে ভীষন রকমের টেস্ট।।এই টেস্ট টা জিহ্বায় নয় বুকে লাগে…(আমি)
— ওহ…কখনো খেতে পাইনি তো তাই জানিও না…তোমার কাছে এক্সট্রা কিছু থাকলে আমায় দিও আমি খাবো….(ওনি….এমন ভাবে বলতাছে যেনো এটা কেহু কাহারো কে আদা প্রদান করিতে পারে….)
— এটা কি আদান প্রদান করা যায়…? (আমি)
— সেটা তো তুমিই জানো….?(ওনি)

রাতে সবাই মেহেদী লাগাচ্ছে।।। আমি রুমে বসে আছি…ওনি ফোন নিয়া ব্যস্ত…

— ওই শুনুন না…(আমি)
— হা বলো…
— মেহেদী লাগাবো….?(আমি)
— তো লাগাও…(ওনি)
— আমার হাতে নয়…আপনার হাতে লাগাতে ইচ্ছে করছে….?(আমি)
— কিহ…আমার হাতে কেনো…?(ওনি একটু চমকে উঠলেন)
— হুহ…(আমি)
— নাহ…আমি মেহেদী নিজের হাতে লাগানো পছন্দ করি না…আর আমার এই হাতে মেহেদী লাগালে ভালো ঠেকবে না…(ওনি)
— হুহ…(মনটা খারাপ করে…)
— শোনো…(ওনি)
— হুহ
— তুমি লাগাও…আমি দেখবো তোমার মেহদী রাঙা হাত.. (ওনি অনেকটা আগ্রহ নিয়ে কথাটা বললেন….তাই আর না করতে পারলাম…)

ওনাকে টেনে সবার মাঝে নিয়ে বসে পড়লাম মেহেদী লাগাতে।।
আমার হাতে মেহেদী লাগানোর সুযোগটা হয়ে উঠছে সবাইকে লাগাতে লাগাতে আমার অবস্থা।।এদিকে ওনার দিকে চেয়ে দেখি ওনি ঝিমাচ্ছেন।।।

— আপনার কি ঘুম বেশি পাচ্ছে নাকি…?(আমি)
— হুহ…কিছুটা (ওনি)
— তাহলে যান ঘুমিয়ে পড়ুন….

ওমা আমার বলা মাত্রই ব্যাটা উঠে গেলো।।।আর নিষেধ করলাম না।।। অনেক ঘুম পাগল মানুষ টা।।।মানুষ টা কে যেমন ইচ্ছে তেমন ভাবেই চালানো যায়।।।তবে ওনি ওনার এটিটিউড টা বজায় রেখে তবেই চলেন।।।

— কিরে অনু তুই কি দুলাভাইকে একটু বেশিই পরিশ্রম করাস…?(রিয়া)
— মানে…??(মেহেদী লাগানোর দিকেই চোখ)
— তুই ভাইয়া কে একটু বেশিই নিজের ঘনিষ্ঠ তায় রাখিস…?(রিয়া তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)
— দুর তুই যেটা মিন করচিস সেটা নয়….(আমি)
— তাহলে কি ওনার সাথে তোর কিছুই হয় না….(অবাক হয়ে ওরা জিগ্যেস করলো)
— স্বামী-স্ত্রী আমরা…হবে না কেনো…?(আমি)
— হয় তো তবে বোধয় একটু বেশিই হয় মনে হয় তাই তো ভাইয়ের ঘুমটা বেশি পায়….(জেসিকা)
— ওই ওতটাও হয় না বুঝলি…আর ওনি একটু বেশিই ঘুম পাগল।।।।

রাতে মেহেদী লাগিয়ে রুমে গিয়ে দেখি আমার মহারাজ ঘুমিয়ে পড়েছেন।।। ওনার কপালে একটা চুমু খেয়ে ওনাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লাম।।।

সকালে ঘুমটা ওনার আগেই ভাঙলো আমার তবে ওনাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকতে ভালোই লাগছে তাই আর উঠলাম না…চোখটা বন্ধ করেই আছি।।।

ওনিও বোধয় জেগে উঠেছেন।।।।আমার চুলের মাঝে ওনার নাক বুঝে আছেন।।হয়ত আমার চুলের স্মেল টা ওনার ভালো লাগছে….
হুট করেই ওনি আমার হাত গুলো তুলে দেখলেন।। নিজে নিজেই বলছেন।।।

— কেনো যে তুমি সবসময় হাতে মেহেদী লাগাও না জানি না।।।জানো কি তুমি কতটা সুন্দর দেখায় তোমার এই মেহেদী রাঙানো হাত।।।কতটা মন ছুয়ে যায় আমার।।সেই বিয়ের সময় মেহেদী পড়ছো হাতে তারপর কোনো খবরই নেই তোমার।।। তুমি কি জানো না মেয়েদের অন্তত সপ্তাহে একদিন হলেও মেহেদী পড়তে হয়।।।।হয়ত দোষটা আমারই তোমাকে মেহেদী কিনে দেওয়া হয় না।।।।((বাহ আমার মানুষ টার যে মেহেদী এতটা পছন্দ আমার জানা ছিলো না…তবে হয়ত এখন থেকে সপ্তাহে একদিন হলেও মেহেদী পড়বো।।।নিজের ইচ্ছে নাহলেও…))

কথা গুলো বলে ওনি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।।।ওনি আমাকে এতটা যত্নে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলেন মনে হচ্ছে ওনি যদি আমায় ছেড়ে দেন তাহলে আমি হারিয়ে যাবো দুরে কোথাও।।।এই শঙ্কায় আছেন ওনি।।।

দুপুরে বর পক্ষ আসবে।।।সবাই শাড়ী পড়বে তাই সকলে আমার পিছন পিছন ঘুরছে।।।ভাবলাম লোকটাও তো বাহিরে গেছে ঘুরতে এর ফাঁকে আমিও এদের মন টাকে শান্ত করি।।ছোট থেকে শাড়ী পড়তে এবং পড়াতে ভালোই জানি।।।।

তবে এখন একা শাড়ী পড়তে ভালো লাগে না….ওনার হাতেই পড়তে মন চায়।।।ভালো লাগে তাই তো ওনার হাতেই পড়ি।।।ওনি যদি জানতে পারে বিষয় টা কি ভাববে যে আমি শাড়ী পড়তে পারি তবুও একা পড়ি না।।।ওদের শাড়ী পড়াচ্ছি তখনই ওনি রুমে ডুকে একটু দাঁড়িয়ে রুমে চলে গেলেন।।।

রুমে যখনই আসলাম ওনি বলে উঠলেন….

চলবে…

#মি_পার্ফেক্ট
২৯
রুমে যখনই আসলাম ওনি বলে উঠলেন….

— বাহ খুব সুন্দর করেই তো শাড়ী পড়াতে জানো দেখছি…(ওনি)
— হুহ..
— পড়তেও তো জানার কথা…(ওনি)
— পড়তে তো জানি না….তবে পড়াতে জানি….আপনি পড়বেন।।। খুব সুন্দর করে পড়িয়ে দিবো আপনাকে।।।ওদের থেকেও সুন্দর করে… (উজ্জাসীত হয়েই কথা টা বললাম)
— আমাকে শাড়ী পড়াবে….?(ওনি)
— হুহ….(আমি)
— তুমি আসলেই বড় হয়েছো….?নাকি শুধু বয়সই গুনিয়েছো…(ওনি সংকোচিত হয়ে)
— বয়স এবং বুদ্ধি সব দিক থেকে বড় হয়েছি তাই তো এতটা ভালো শাড়ী পড়াতে জানি….(আমি গর্বিত হয়ে)
— হুহ তা তো দেখতেই পাচ্ছি… এতটা বুদ্ধি তোমার হয়েছে যে নিজের বরকে শাড়ী পড়িয়ে ঘুরাইতে চাচ্ছি….এ কেমন বুদ্ধি রে শালার…?(ওনি আপোচোস করে)
— কোন ধরনের শাড়ী পড়বেন আপনি…?(আমি)
— ওই চুপ….ছেলেরা কি শাড়ী পড়ে…?(ধমক দিয়ে বললেন)
— হুহ…(ওনার ধমক শুনে আমি স্টিলের মত সোজা….এর আগে কখনো ধমক শুনি নি ওনার কাছ হতে)
— কি হুহ….কোথায়ও দেখেছো ছেলেদের শাড়ী পড়তে…?(ওনি)
— হুহ দেখেছি তো…?(আমি উৎফুল্ল হয়ে)
— কোথায়…?(ওনি..অবাক হয়ে
— ঐ আরফান নিশো …যে নাটক টায় বুকে চিন চিন করছে হায়,,, মন তোমায় কাছে চায়….গানটা গেয়েছিলো না তখন ওনি শাড়ী পড়েছিলেন…(আমি)
— ঐ চুপ করো…যতসব ফাউল কথা….(ওনি রেগে গেলেন নাকি..)
— হুহ…(আমি মুখ টা ওপপ করে নিলাম)
— শাড়ী পড়তে জেনেও পড়ো না কেনো…?(ওনি)
— আপনি পড়িয়ে দিবেন তাই পড়ি না….(আমি)
— আমি পড়িয়ে দিলে যা আর তুমি পড়লেও তো তাই… (ওনি)
— নাহ…আপনি পড়িয়ে দিলে ভালো লাগে…(আমি)
— কেমন ভালো লাগে…?(ওনি)
— নিজেকে খুব সুখী মানুষ মনে হয়…(আমি)
— তাই নাকি…(মুচকি একটা হাসি দিলেন ওনি)
— হুম…আমি চাই আপনি সবসময় আমাকে শাড়ী পড়িয়ে দেন….(আমি)
— যাক তাহলে তোমার হাত আর ভাঙ্গা লাগবে না আমার….(ওনি)
— হাত কেনো ভাঙবেন…?(অবাক হলাম আমি)
— যাতে তোমাকে শাড়ী পড়িয়ে দিতে পারি….এখন তো তুমি নিজেই চাও আমি পড়িয়ে দিই।।। তাহলে এখন আর হাত ভাঙা লাগলো না…(ওনি)
— ওও…আপনার এমন ইচ্ছে কখন থেকে…?(আমি)
— অনেক আগ থেকেই….আমার ইচ্ছে আমার বউকে আমি নিজ হাতে সাজাবো…নিজে শাড়ি পড়িয়ে দিবো।। তাই তো শাড়ী পড়ানো টা শিখলাম….(ওনি)
— ওওও..(বাব্বাহ ব্যাটার তো দেখি মনে অনেক ইচ্ছা..অনেক রোমান্টিক আমার বর টা বলতে হবে)
— হুম(ওনি)
— তবে সমস্যা তো নেই শাড়ী পড়তে আপনার হাতে।।।তবে আপনি শুধু শাড়ী পড়ান না…(আমি)
— শুধু শাড়ী পড়াই না মানে…?(ওনি)
— আপনি যে শাড়ী পড়ানোর নামে দুস্টুমিও করেন সেটাই তো সমস্যা…(আমি)
— ওও তাহলে পড়াবো না….(ওনি)
— নাহ নাহ…পড়াবেন আর দুস্টুমিটাও করবেন…বউটাতো আপনারই।।। আপনার বউয়ের সাথে আপনি দুস্টুমি করবেন না তো কে করবে বলুন…?(আমি)
— হুহ…তবে বউ তো অন্য কেউ করুক সেটাও চায়…(ওনি….ব্যাটায় কথাটা কোন দিকে নিলো।।।শালা দেখাচ্ছি মজা)
— অন্য কেউ করুক মানে…?(বলেই ওনাকে এক ধাক্কায় বিছানায় ফেলে দিলাম)
— চায় তো।।। এই জন্যই তো…(আর কিছু বলতে দিলাম না ওনার মুখে হাত দিয়ে ফেললাম।।আমি বুঝতে পারছি ওনি কোন কথাটা বলবেন।।।আর এখন আমি চাই না ওসব শুনতে।।।এই মুহুর্তে ওনি আর আমি ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে কথা হোক এটাও চাই না।।।।)
— শুনুন আপনিই আমার সব।।।আমার সব চাওয়াই আপনি…তবুও বার বার ওসব বলেন…?(আমি…)
ওমা ওনি দেখি আমার চুমু খেয়ে যাচ্ছেন….বুঝতে পেরে হাত সরিয়ে ফেললাম।।।
— তাই নাকি….মনে তো হয় না…(ওনি)
— মনে হবে…একদিন যেদিন আমি থাকবো না….(আমি ইমোশনাল হয়ে)
— কোথায় যাবে…? তোমার সেই….(এবারও বলতে দিলাম না…একেবারে বুকে মারতে শুরু করলাম….সাথে কান্নাও করছি…আমাকে বার বার কেনে এতটা হার্ট করছেন ওনি আমি বুঝতে পারছি না।।।ওনাকে আর কতবার বলতে হবে ওটা আমার কালো রাতের ভুল ছিলো যেটা আমি নিজের অজান্তেই করে ফেলেছি।।।বুঝতে পারি নি এতটা গভীর ভাবে হয়ে যাবে বিষয় টা।।।)
— ওই মারছো আমাকে আর তুমি নিজেই কাঁদছো কেনো…?(ওনি…এমন ভাবে বলতেছেন ওনি…যেন আমি ওনাকে ব্যাথা পাওয়ার জন্য মারছি।।।।আমি যে ভালবেসে মেরেছি…ওনি কি বুঝতে পারেন নি।।।নাকি বুঝেও না বুঝার ভান ধরছেন)
— তো কি করবো….?আচ্ছা আপনার কাছে আর কতবার কত ভাবে ভালবাসা প্রকাশ করলে আপনি আমাকে সম্পূর্ণ ভালবাসায় সিক্ত করে তুলবেন….(আমি)
— জানিনা…(ওনি)
— বলুন না…..আপনার এসব আচরণ আমি আর সহ্য করতে পারছি না।।।।পারছি না আর নিতে….সব কিছুই তো পাচ্ছি…আপনার কেয়ার… আপনার বুকে ঘুমানো…শুধু এসব কিছুর মাঝে ভালবাসা টা পাচ্ছি না…জানেন প্রতিনিয়ত কতটা কস্টে কান্না আসে আমার।।।। পারি না আমি সহ্য করতে আপনার এমন আচরণ গুলো…খুব কস্ট হয়…জানিনা কি করলে আপনি আমাকে আপনার ভালবাসার সেই মুহুর্ত গুলো অনুভব এবং উপভোগ করতে দিবেন….(কান্না করতে করতে)
— জানিনা কি করতে হবে….তবে মনে রেখো ভালবাসা হলো একটা কাঁচের গ্লাসের মত…এটাকে পরম যত্নে রাখতে হয়…ভুল করেও যদি এটা একবার ভেঙ্গে যায়..তুমি সেই ভাঙ্গা গ্লাসের টুকরো গুলো কে কস্ট করে জোড়া ঠিক লাগাতে তো পারবে তবে সেই জোড়া লাগানোতে দাগটা ঠিক রয়ে যাবে।।।যা তুমি হাজার চেস্টা করেও মুছে ফেলতে পারবে না…ভালবাসাটাও ঠিক একই রকম..যেখানে তুমি অতি পরিমানে ভালবেসে যদি একবার অন্য দিকে মোড় তখন ভালবাসা টা আর আগের মত থাকে না।। শত চেস্টা করে ভালবাসা টা পাবে তবুও ঐ ভাঙ্গা গ্লাসের মত ঠিকই একটা দাগ থেকে যাবে….(ওনি)
— তাই বলে এতটা কস্ট দিবেন…আচ্ছা বলুন তো…যাকে কেউ ভালবাসে তাকে কি সে কস্ট দিতে পারে…?(আমি)
— জানিনা তবে…মানুষ যখন কস্ট পায় তখন সে পরে রিকোভার হতে পারে…কিন্তু সেই মানুষ টা নিজের সবটা দিয়ে যাকে ভালবাসে তার থেকে কস্ট পায় আবার অনেক বেশিই কস্ট পায় তখন সেই মানুষটার মন টা পাথর হয়ে যায়….(ওনি)
— একটা শুনেছেন…আমি পাথরে ফুল ফুটাবো ভালবাসা দিয়ে…প্রয়োজনে ঐ গানের মত করে আপনার পাথর হয়ে যাওয়া মন টায় ভালবাসার ফুল ফুটাবো….(আমি কথাটা বলে উনার বুক উপর থেকে উঠে যাবো তখনই ওনি আমাকে টেনে শুইয়ে দিলেন..)
— কি করেছে দেখেছো….মুখটার কি নাজেহাল করে ফেলছে….ঐ শোনো..আমি অন্য কারো প্রেমে পড়ি নি…তাই এতটা অস্থির হইয়ো না…তবে আমি তোমায় নিয়ে সংকোচে থাকি…তোমার কথা তো বলা যায় না…(ওনি)
— চুপ…. আপনাকে ভালবাসি আমি…অন্য আমার দিকে তাকালেও ঘেন্না হয় আমার..(ওনাকে আলতো একটা চড় দিলাম…সাথে একটা চুমুও দিলাম)
— হুম তা তো দেখছিই…(আমার মুখে এসে পড়া চুল গুলো কানের পাশে ঘুছে দিলেন…)
— কি দেখছেন..? (আমি)
— আমার বউকে…(ওনি)
— আর কখনো দেখেন নি বুঝি(আমি)
— যতই দেখি ততই যে নতুন লাগে…?(ওনি)
— তাই নাকি…(আমি)
— হুম…ভালবাসার সজ্ঞা টাই যে এমন…(ওনি)
— কেমন…?(আমি)
— তুমি যদি কাউকে ভালবাসো তখন তোমার ঐ মানুষটার প্রতি প্রথম দিন যেমন ভালবাসা তোমার মনে থাকবে ঠিক তার এক বছর পর এর চেয়েও হাজার গুন বেশি থাকবে।।।আবার দশ পর এর থেকেও বহু গুন বেশি থাকবে।।।আর ভালবাসা কখনো পুরোনো হয় না.. নাহয় ভালবাসা নাহয় মানুষটা।।।ভালবাসার মানুষটা কে যতই দেখবে ততই নতুন লাগবে… (ওনি)
— তাই নাকি…তাই তো বলি আপনাকে কেনো আমার প্রতিদিন নতুন নতুন কেনো লাগে….(আমি)
— কারণ….

চলবে…

#মি_পার্ফেক্ট
৩০

— তাই নাকি…তাই তো বলি আপনাকে কেনো আমার প্রতিদিন নতুন নতুন কেনো লাগে….(আমি)
— কারণটা তুমিই জানো….? (ওনি)
— আপনার কথাগুলো অনুযায়ী তো আমি আপনাকে ভালবাসি।।।(ওনার বুকের উপর ঝুকে ওনার মুখের কাছাকাছি আমার মুখটা।।।আমার অবাধ্য চুলগুলো ওনার চোখে মুখে এসে পড়ছে।।।জানিনা আমার বলা ভালবাসার কথা আর এমন একটা পরিস্থিতি ওনার কাছে কেমন ঠেকছে।।।যতটুকু ওনার অবস্থা দেখে বুঝতে পারছি ওনি খুবই ইন্জয় করছেন।।।)
— তা হয়ত এখন তোমার মনে হচ্ছে।।। এই ভালবাসা যে তোমার মনে সবসময় থাকবে তা কিন্তু বুঝা মুশকীল।।।(ওনি)
— কেনো থাকবে না….যেখানে প্রথমদিনই আপনাকে আমি ভালবাসতে শুরু করেছি সেখানে কেনো ভালবাসা টা সবসময় থাকবে না…?(আমি খুবই অস্থির হয়ে)
— প্রথম দিন থেকেই যদি আমায় ভালবাসতে শুরু করতে তাহলে আর তুমি কখনোই অন্য কারো মিস্টি কথায় আসক্ত হতে না।।।আবার কার মিস্টি কথায় আসক্ত হলে তুমি, যে কি না তোমাকে পছন্দ করে, সেই স্কুল জীবন থেকেই।।।এখন আবার সে তোমায় কেমন করে আশ্বাস দেয়,,, তোমার তো শুধু বিয়ে টাই হয়েছে,,বাচ্চা তো হয় নি।।।বাচ্চা হলেও সে তোমায় বিয়ে করবে।।।।ছোট্ট একটা ভালবাসার কুড়ে ঘরে সংসারও করবে।।।কত মিস্টি কথাই তো বললো তোমায় আর তুমি সেই মিস্টি কথার প্রেমে পড়ে গেলে।।।ওর মিস্টি কথা শুনতে এতটা আসক্ত হয়ে পড়লে যে,,, আমার কেয়ারিং গুলো তখন তোমার কাছে বিষের মত লাগতে শুরু করলো।।।আমাকে তখন কি বললে তুমি,,,, আমার কল দিয়ে তোমার খোঁজ নেওয়াটা তোমার কাছে জাস্ট ডিজগাস্টিং লাগে।।।।এটা তো বুঝলে না তোমার সাথে কথা বলা,,হাসি ঠাট্টা করা টা যে আমার কতটা ভালো লাগে…সবশেষে কি করলে কলেজে যাওয়ার অজুহাতে তার সাথে রেস্টুরেন্টে বসে আড্ডা দিলে।।।এটাকে আড্ডা বলে না ডেটিং বলে।।।।ঐ ডেটিং অবস্থায় আমি যখন একই রেস্টুরেন্টে গিয়ে পৌঁছালাম দেখেও না দেখার ভান ধরলে।।।তুমি কি জানো ঐদিন আমি যে কারণে বা কাজে ঐখানে গিয়েছিলাম।।।ঐ কাজ টা আমার ১০দিন পরে করার কথা ছিলো যখন জানতে পারলাম তুমি কলেজে এসেছো তখনই মিটিং টা ফিক্সড করে ফেললাম ঐখানে।।এই আশায় যে তোমায় একটু হলেও দেখতে পাবো।। মনে অন্তত একটু শান্তি আসবে।।তোমাকে দেখার জন্য মনে যে হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে ওটা অন্তত কিছুটা কমবে।।।কিন্তু তোমাকে যে অবস্থায় দেখলাম হাহাকার টা আরো বেড়ে গেলো।।।দেখার হাহাকার চেয়ে তোমাকে হারানোর ভয় টা মনের ভিতর অনেক বেশি বেড়ে গেলো।।।(কথা গুলো বলার সময় ওনার গলা টা ভারী হয়ে আসছে।।।।ভালবাসার মানুষটাকে হারানোর ভয় যে মানুষ কে এতটা ভেঙ্গে দেয় জানতাম না।।।এখন কিছুটা হলেও আচ করতে পারছি।।।এতটা স্ট্রং একটা মানুষ যে কি না সংসার। ব্যবসা এত কিছু একা হাতে খুব নিখুত ভাবে সামলাতে জানে সেই মানুষ টা ভালবাসার জন্য এতটা ভেঙে পড়ে।।।)
— শুনুন আপনাকে আর কতবার বলতে হবে ওটা আমার মিসটেক ছিলো….আপনাকে কতভাবে বুঝাতে হবে আপনাকে কতটা ভালবাসি…. যাই হোক আপনি যেহেতু আমাকে হারানোর ভয় পাচ্ছেন তাহলে একটা বেবি কনসিভ করি।।।তাহলে তো আর হারানোর ভয় টা আর কাজ করবে না আপনার মাঝে…(আমি ওনার অতি সংনিকটে।।।।)
— আরে তোমার প্রেমে সরি তোমার রূপের প্রেমে এমন অনেক মানুষ আছে যারা তোমাকে তিন বাচ্চার মা হওয়ার পরেও গ্রহণ করতে রাজী….(ওনি অতি তাচ্ছিল্যের সাথে বললেন)
— আপনাকে ভালবাসি আমি।। ওদের কে না।।।।ওরা যতই চায় না কেনো আমায়…আপনার মত কেউই আমায় ভালবাসতে পারবে না…ওরা হয়ত যেকোনো ভাবে আমার রূপ দেখেছে তাই আমার রূপের প্রেমেই পড়েছে।।।।কিন্তু যে কিনা আপনি আমার চঞ্চলতা আর আমার চোখের প্রেমেই পড়েছেন।।।।যা দেখেই আমাকে বিয়ে করেছেন।।।।বিয়ের আগ পর্যন্ত সরি বাসর ঘরের আসার আগ পর্যন্ত আমার চেহারা টাই দেখেন নি।।।শুধুমাত্র চোখ দেখেই আমাকে ভালবেসেছেন।।।এমনটাও চিন্তা করেন নি,, আমার মুখোশের আড়ালে দাতগুলো উঁচা বা চেহারাটা বিশ্রি হতে পারে।।।সেই মানুষটাকে কিভাবে না ভালোবেসে থাকতি পারি বলেন।।।আপনাকে কতটা ভালবাসি জানি না তবে আপনাকে ছাড়া আমার একটা মুহুর্তও চলবে না….(কান্না টা ধরে রাখতে পারলাম না চোখের পানি গুলো ওনার মুখের উপরই পড়ছে।।।)
— আরে কাঁদছো কেনো…? (ওনি আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললেন)
— তো কি করব…?আপনি কতটা দিন ভালবেসে একটা চুমুও খান নি….অন্য সব তো বাদই দিলাম…..(আমি)
— ওও এবার বুঝছি….(চিন্তিত হয়ে)
— কি বুঝছেন…?(আমি নাক টেনে)
— তোমার সহ** লাগবে তাই এতটা উতলা হয়ে আছো…?(ওনি)
— দুর ছাই….আচ্ছা লাগবে না ওটা আমার….শুধু ভালবাসা দিবেন….এতেই চলবে…(আমি)
— ওও তাই নাকি….আচ্ছা দেখা যাবে….(ওনি)
— এখন ভালবাসি বলেন….(আমি মুখ গোমরা করে)
— নাহ তুমিই বলো…(ওনি)
— ভালবাসি আপনাকে আমার বরকে…আমার বুড়ে বয়সের হিরো কে….(আমি)
— আমিও… (ওনি…ব্যাটা কি বলে…এত সুন্দর করে আমি বললাম আর ওনি এক কথা সেরে ফেললো।।।কেমন ঠেহায় কও তো দেহি)
— আমিও…কী…?(চোখ গরম করে)
— ভালবাসি আমার নাতনির নানীকে…(ওনি)
— সিওর তো…ওই আপনার নাতনীর নানী কে…? আমি ছাড়া অন্য কেউ হলে তো খবর আছে…?(আমি)
— তোমাকে এতটা ভালবাসার পর অন্য কাউকে ভালবাসবো প্রশ্নই আসে না।।।যদিও প্রশ্ন আসে তাহলে উত্তর টা ভেবে দেখবো।।যদি কখনো সুযোগ হয়…(ওনি দুস্টুমির হাসি দিয়ে)
— কিহ…সুযোগ আসে মানে…?(কান্নার মোড এখন রাগী মুডে রূপান্তর হলো)
— না মানে কেউ যদি সুযোগ দেয়…(ওনি একটু স্লো ভাবেই বললেন)
— কেউ যদি…?(মেজাজ টা পুরো হার্ড হয়ে গেলো…)
— না কেউ না…তুমি যদি আবার নতুন করে দাও আরকি…?(ওনি বোধয় আমার রাগ টা কে ভয় পেয়েছেন হিহি হি কি মজা আমার বর আমার রাগ কে ভয় পায়)
— হুম প্রতিদিন নতুন ভোরে নতুন ভাবে আপনাকে ভালবাসবো…আপনিও আমাকে নতুন করে নতুন ভাবে ভালবাসবেন ঠিক আছে…?(আমি)
— আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু আমার অবস্থা তো খারাপ…(ওনি খুব বড় করে নিশ্বাস নিতে নিতে বললেন)
— কেনো কি হয়েছে আপনার…(আমি)
— আরে…….———
— কিহ..?

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here