#মি_পার্ফেক্ট,৩১,৩২,৩৩
আতাউর রহমান হৃদয়
৩১
— হুম প্রতিদিন নতুন ভোরে নতুন ভাবে আপনাকে ভালবাসবো…আপনিও আমাকে নতুন করে নতুন ভাবে ভালবাসবেন ঠিক আছে…?(আমি)
— আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু আমার অবস্থা তো খারাপ…(ওনি খুব বড় করে নিশ্বাস নিতে নিতে বললেন)
— কেনো কি হয়েছে আপনার…(আমি)
— আরে সেই কখন থেকে তুমি আমার বুকের উপর শুয়ে আছো….(ওনি)
— তো কি হয়েছে আমি তো সারাক্ষণই এমন ভাবে থাকব….(মুখ বাঁকা করে বললাম)
— এহহ আসছে যেন তার বাপের সম্পত্তি…. (ওনি ঠাট্টা করে)
— বাপের না হোক তবে আমার বাপের মেয়ের অর্থাৎ আমার সম্পত্তি… (আমি খুবই জোর গলায়)
— আসছে মামার বাড়ির আবদার নাকি…যে তার সম্পত্তি..
— মামার বাড়ির না হোক শুশুর বাড়ির আবদার এটা…আর আমি যদি আমার সম্পদের ভাগ সঠিক ভাবে না পাই তাহলে আমি মানবাধিকার হরণের মামলা করব… (নাকটাকে একটা ঘষা দিয়ে বললাম,, ভাব নিলাম আর কি))
— আরে ভাই যা করার কইরো এখন সরো….আর পারছি না….(ওনি)
— এহহ কেমন পুরুষ আপনি বলেন তো…নিজের বউয়ের ভারটা পর্যন্ত নিতে পারেন না…(আমি উঠে বসলাম….)
— ঐ পুরুষত্ব নিয়ে কথা বলবা না বলে দিলাম….(ওনি একটা বড় নিশ্বাস নিতে নিতে বললেন…)
— বললে কি করবেন শুনি….?
— কি করতে পারি জানো না বুঝি…?(ওনি)
— হুম জানা আছে আমার যে লোক আজ কতদিন বউকে একটা চুমু পর্যন্ত দেয় নি তার কেমন পুরুষত্ব আমার বুঝা হয়ে… (আমি একটু চেতানোর চেস্টা করলাম ওনাকে যদি কিছুটা হলেও নিজের কাছে টানতে পারি না ওনাকে)
ওমা এই লোক দেখি কিছু না বলেই উঠে চলে গেলো।।।।
গোসল করে বেরুলাম।।।ওনি আগেই গোসল করে নিয়েছেন….একটা নীল শাড়ী নিলাম পড়ার জন্য।।। এখানে তিনদিন তিনটা শাড়ী পড়ব।।তাই বাবাকে বলে শাড়ী গুলো আনিয়ে রেখেছি।। সাথে তিনটা ম্যাচিং করা পাঞ্জাবিও বটে।।।বাবার চয়েস ভালো আগে থেকেই জানি তাই তো ওনাকেই বললাম।।।।বাবা সবসময় সাধারণ কিছুই পছন্দ করেন। শাড়ী গুলো সাধারণ কারু কাজের নিয়েছেন। তবে শাড়ী গুলো দেখতে অনেক সুন্দর আর কাপড় গুলোও ভালো।।। বাবা আগে থেকেই জানেন আমি যে কোন অনুষ্টানে গেলে কেমন ড্রেস পছন্দ করি।।।তবে এবারের টা।।। যদিও এর আগে জামা পড়েছি।।তবে এবার শাড়ীই।।।
ওনি তৈরি না হয়েই বিছানায় বসে মোবাইল ঘাটছেন।। আমি শাড়ীটা পড়তেছি।।।ওনি একটু হেল্পও করছেন না কেমনটা লাগে।।।
— ওই শুনুন…(আমি)
— হুম কি…?(ওনি)
— শাড়ী টা একটু৷৷. (আহ্লাদী হয়ে বললাম)
— হুম শাড়ী টা কি…?(বুঝেও না বুঝার ভান ধরতেছে.)
— পড়িয়ে দিন না….(আমি)
— তুমি তো নিজেই পড়তে জানো তাহলে আমি কেনো…?(ওনি)
— আমি নিজে পড়া আর আপনি পড়িয়ে দেওয়াটা কি এক হলো…(আমি)
— কেনো তুমি নিজে পড়লে কি শাড়ী টা কি লুঙ্গি হয়ে যাবে….?(ওনি)
— আরে দুর…বুঝেও বা বোঝার ভান কেনো করছেন….?(বিরক্তি লাগছে ওনার এসব আচরনে।।।মনটা চায় কিছুক্ষন ধরে কিলাই)
— হুম বুঝতেই যখন পেরেছো তাহলে এত কথা কেনো বলছো…(ওনি)
— দুর আমি শাড়ীই পড়বো না…আজ আমি এই রুম থেকেই বেরোবো না…(বলেই বিছানায় বসে পড়লাম)
— তোমার ইচ্ছে…(বলেই ওনি মোবাইলের দিকে মনোযোগ দিলেন।।।।
কিছুক্ষণ দু’জনেই চুপ।।।
— জানেন প্রতিটা মেয়েরই স্বপ্ন থাকে তার বর অনেক কেয়ারিং হবে।।তাকে রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে আলতো করে জড়িয়ে ধরে কপালে একটা চুমু খাবে…মাঝ রাতে দুজনে বসে এক সাথে চাঁদ দেখবে…মাঝে মাঝে রাতে হাটতে বেরোবে… বর তাকে শাড়ি পড়িয়ে দিবে…আর আপনি কি করছেন??? (ভাঙ্গা গলায় বলছি কথা গুলো।।।অনেক কস্টে চোখের জল গুলো আটকে রেখেছি।।।ওনার এমন আচরণ আর নিতে পারছি না))
— হুম তবে সব মেয়েরাই কি তার স্বামীর এসক কেয়ারিং গুলোর পরেও মেসেঞ্জারে সংসার করে…? (ওনি)
— আপনি এখনো একটা বিষয় নিয়ে পড়ে আছেন….?(ওও বুঝলাম ওনার এমন আচরণের কাহিনী।।।।আমার বরটাতো এমন না।।।তাহলে ওনি এমন টা ইচ্ছে করেই করছেন।।।)
— আপনি এখনো একটা বিষয় নিয়েই পড়ে আছেন…?(আমি)
— নাহ।।।এখানে একটা বিষয় না….তুমি যে বললে প্রতিটা মেয়েই চায় তার বর অনেক কেয়ারিং হবে তার প্রতি…কেনো আমি কি তোমার কেয়ার করি নি বা করছি না…?(ওনি)
— হুম করছেন তো…তবে এই কেয়ার গুলে আপনি বাধ্য হয়ে করছেন যাতে আপনাকে কোনো দোষে দোষারোপ করতে না পারি।।।(আমি)
— বাধ্য হয়ে ছাড়াও আমি কি ভালবেসে তোমার কেয়ার করি নি।।।(ওনি)
— হুম করছেন….(আমি)
— তখন তুমি কি বললে…আমার কেয়ার গুলো তো কাছে বিরক্তিকর ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না…(ওনি)
— কিন্তু আমার যে এখন ঐ কেয়ার গুলোই চাই…(আমি)
— চাইলেই কি সবকিছু খুব সহজে পাওয়া যায়…(ওনি)
— হুম পাওয়া যায় না…তবে জানেন কি…? মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে আপনার ভালবাসার সাগরের অতলে হারিয়ে যাই…?(আমি)
— সেই সাগরে যে এখন অধীর ঢেউ বয়ে বেড়াচ্ছে যদি তুমি একবার সেখানে হারিয়ে যাও তাহলে তো তোমায় খুজে পাওয়া সম্ভব না…(ওনি)
— আপনার মাঝে হারিয়ে আমি নিজেকে আমি খুজে পেতে চাই না…আপনার মাঝেই আমি থাকতে চাই….(আমি)
— হুম সবুর ধরো…সবুরে মেওয়া ফলে.(..ওনি)
বলেই উঠে ওনি আমাকে টেনে তুলে দাড় করালেন।।।শাড়ী টাও পড়িয়ে দিলেন।।। ওনাকে নীল পাঞ্জাবি তে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।।আমাকে লাগছে জানি না।।।সবার কাছে কেমন লাগছে আমাকে।।আমি জানতে চাই না।।শুধু এতটুকু জানতে চাই ওনার চোখে আমাকে লাগছে।।।বাদর টা এতটাই অভিমান করে আছে যে একটু হাসি পর্যন্ত দেয় না আমার দিকে তাকিয়ে।।।বুঝতে পারছি যা করার আমাকেই করতে হবে।।।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কানের দুল গুলো লাগানোর ব্যর্থ চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে পারছি না।।বিষয় টা ওনার চোখ এড়ালো না….ওনি আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে আলতো করে আমার কানের কাছে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দিলেন…খুব রোমান্টিক মুডে আছেন মনে হয়।।।আলতো ছোঁয়ায় আমায় কানের দুল গুলো পড়িয়ে কানের কাছে তার মুখটা এনে মৃদু সূরে বলে উঠলেন।।
— আমার রানী টা কে অসম্ভব মায়াবী লাগছে।।।আমার মায়াবীনি।।।।(ইসস এমন ছোট বাক্যে এত বড় বিশাল মনোভাব প্রকাশের কথা শুনলে সত্যিই মনের ভিতর শিহরণ বয়ে যায়।।।)
ওনি চলে যাচ্ছেন দেখে ওনার হাতটা ধরে টান দিয়ে আমার পাশে দাড় করলাম।।।ওনার কাদের উপর হাত দিয়ে কিছু কাপল পিক তুললাম আয়নার সামনে দাড়িয়ে।।।যাকে মিরোর পিকচার বলা হয়।।
বাহিরে এসে এক কোনায় ওনহ দাড়িয়ে আছেন আমি আমার কাজিন সিস্টারদের দাড়িয়ে কথা বলছি তখনই আমার এক দুর সম্পর্কের কাজিন ব্রাদার এসে আমার সাথে খুব খুব হেসে কথা বলছে।।সম্পর্কের খাতিরে আমিও এক আধটু তার কথা জবাব দিলাম।।। হুট করে ওনার দিকে চোখ যেতেই আমার রাগ তো চরম পর্যায়ে।।ওনি এসব কি শুরু করলেন…?
চলবে।।।।
#মি_পার্ফেক্ট
৩২,৩৩
বাহিরে এসে এক কোনায় ওনহ দাড়িয়ে আছেন আমি আমার কাজিন সিস্টারদের দাড়িয়ে কথা বলছি তখনই আমার এক দুর সম্পর্কের কাজিন ব্রাদার এসে আমার সাথে খুব খুব হেসে কথা বলছে।।সম্পর্কের খাতিরে আমিও এক আধটু তার কথা জবাব দিলাম।।। হুট করে ওনার দিকে চোখ যেতেই আমার রাগ তো চরম পর্যায়ে।।ওনি এসব কি শুরু করলেন…?
কেমন টা লাগে?? বর পক্ষ থেকে আসা কতগুলো মেয়ের সাথে ওনি দাড়িয়ে কথা বলছেন তাও কতটা হেসে হেসে। যেনো ওনার সাথে তাদের কতটা গভীর সম্পর্ক।। এরে তো আজ আমি….?
খাওয়া শেষে এখন বর বউকে মিস্টি খাওয়াবে।।। ওনও একটা চেয়ারে বসে ফোনের দিকেই মনোস্থির করে আছেন।।। আমি গিয়ে দাড়ালাম ঐ মেয়ে গুলোর পাশে।। মেয়ে গুলো বলছে।।।
— দেখেচিস ছেলেটা কতটা হেন্ডসাম…একদম প্রিন্সের মত…(চোখ দিয়ে গিলে খাবে এমন অবস্থা)
— হা রে মন চায় এখনো কাজি অফিসে নিয়ে যাই…(অন্য একজন)
— আরে দুর কাজী তো এখানেই আছে।। ( আরেকজন)
— হহহ রে…চুল গুলো দেখেছিস কতটা সুন্দর এক দিক থেকে ঝুলে আছে…কতটা সিল্কি…আহ স্বপ্নের পুরুষ যেনো…(আক্ষেপ যেনো)
— আচ্ছা শোন না…একে যদি প্রপোজ করি কেমন হবে…?(অন্য একটা)
— ভাললই হবে… তবে একটা কথা..?
— কি কথা রে…?
— এই হ্যান্ডসাম ছেলের যে কোনো প্রেয়সী নেই তার কি কোনো গ্যারান্টি আছে…
— হুম সেটাও কথা…
— তবে নীল পাঞ্জাবি তে অস্থির লাগছে।।। ছেলেটার চুজ আছে বলতে হয়…
— হুম…
— পাঞ্জাবি টা সুন্দর।। তবে তার পড়োনে আরো সুন্দর লাগছে…
— হ্যারে…
— আচ্ছা এতই যখন সুন্দর লাগছে যান না ওকে নিয়ে যান সাথে করে…(আমিও তাদের সাথে তাল মিলালাম)
— ইচ্ছে তো করছে তাই করি… কিন্তু হিরো টা কি বলে বসে…(তাদের মধ্যে থাকা একটা মেয়ে)
— আরে কিছু বলবে না…তখন না আপনাদের সাথে কথা বললো…(আমি)
— আরে কি ভাব তার.. আমরা এতগুলো সুন্দরী মেয়ে তার সাথে আগ বাড়িয়ে কথা বলতে গেলাম…সে তো হু হাহ আর হাসি টা ছাড়া আর কিছুই বললো না…(কস্টের সূরে আর অনেক আক্ষেপের সূরেই কথা গুলে বললো)
— তাই নাকি…?(আমি অবাক হলাম…ওনি হু হাহ ছাড়া কোনো কথা বললেন তবে এমন হাসি কেনো দিলেন তাদের সাথে)
— তবে যাই বলেন আপু…তার মত এতটা স্মার্ট একটা ছেলের এটিটিউড থাকতেই পারে।।।আর তার এমন এটিটিউড টা তার স্মার্টনেসও আরো হাজারগুন বাড়িলে দিলো….(অন্য একটা মেয়ে)
— তবে তোরা যাই বলিস তার হাসি টা জোস।।এমন হাসি দেখে যে কেউ হাজার জনম কাটিয়ে দিতে পারবে…(অন্য একজন)
— আরে হাজার জনম কেনো…?এই জনমে হলেই নিজেকে অনেক ধন্য মনে করতাম রে….(আহারে তাদের আক্ষেপ রে)
— তাই নাকি আপু…(ওনাকে একটা মেসেজ দিয়ে বললাম সোজা রুমে চলে যেতে)
— আয় হায় হিরো টা দেখি উঠে চলে গেলো।।।(আহ হা তার বউই তো তারে রুমে পাঠালো)
— ইসস।।।তবে এই ছেলে কে যে বর হিসেবে পাবে সে অনেক ভাগ্য বতী হবে রে…(তাদের মাঝে থাকা একটা মেয়ে বললো)
এদের সাথে আর কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে তাদের কথা গুলো শুনলে আমি যা তা করে ফেলতে পারি।।।এতক্ষণ নিজেকে অনেক কস্টে সামলে রেখেছি।।।।এরা আজ মেহমান বলে নাহয় কয়েক তরফা ঝগড়া কিংবা মারামারিও হয়ে যেতো আমার সঙ্গে।।। আমার নিজের একটা লিপস্টিকের ভাগ আমি কাউকে দিই না আর এরা তো আমার কলিজা নিয়ে টানাটানি শুরু করে দিয়েছে।।।। এদের মধ্যে থাকা একজন বললো না যে,, ওনার বউ যে হবে সে অনেক ভাগ্যবতী।।।।আসলেই আমি অনেক ভাগ্যবতী।।।যে ছেলেকে বিয়ের পরও এতগুলো মেয়ে তাকে দেখে ফিদা হয়ে যেতে পারে বিয়ের আগে না কত মেয়ের ত্রাস ছিলো সে।।।যাইহোজ তার হাজারটা চয়েসের মাঝে যে আমি তার একমাত্র চয়েজ হতে পেরেছি এর চেয়ে খুশির আিষয় আর কিছু কি হতে পারে।।।
— কি হলো হুট করে এমন ভাবে রুমে আসতে বললে যে….?(আমি রুমে আসতেই ওনি বলে উঠলেন)
— তো কি করব…?? আপনি তখন ঐ মেয়েগুলোর সাথে এত গভীর হাসি দিয়ে কি এমন কথা বলছিলেন…?(আমি)
— বললে কি হয়েছে..?(ওনি)
— জানেন না আপনি কি হয়েছে…? (আমি)
— নাহ তো…?(ওনি)
— জানেন আপনার দিকে কেউ তাকালে আমি সহ্য করতে পারি না… (আমি)
— তা কেনো..?(ওনি)
— আপনি আমার।।। আপনার দিকে তাকানোর একমাত্র অধিকার শুধু আমার।।।আমি ছাড়া কেউ তাকাতে পারবে না…(আমি খুবই নরম স্বরে)
— তাই নাকি…? আমার দিকে কেউ তাকাতে পারবে না…বুঝলাম কিন্তু তোমার দিকে তাকানো তো বাদ দিলাম তবে…আপনি যে আপনার কাজিনের সাথে এত ঘনিষ্ঠ হয়ে কথা বলেন আমার কি কস্ট লাগে না..?(ওনি)
— হুম বুঝছি…আমি কি করবো ওরাই তো আগ বাড়িয়ে কথা বলতে আসে…?(আমি)
— আসলে কি হয়েছে…? তুমি এড়িয়ে যেতে পারো না…? (ওনি)
— হুম এবার থেকে যাবো…(বলেই ওনার বুকে মাথা টা রাখলাম…)
— হুম মনে থাকে যেন…আমি কারো সাথে কথা বললে তোমার যেমন কস্ট হয় তেমনি আমারও হয়….(ওনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললে)
— হুম।।জানেন আপনি ওই মেয়েগুলো কতটা বাজে নজরে আপনাকে দেখতেছিলো…(আমি)
— তাই নাকি….(ওনি)
— হুম তাই….কিন্তু আমি কি করছি জানেন…?(আমি)
— কি…
চলবে
#মি_পার্ফেক্ট
৩৩
— হুম মনে থাকে যেন…আমি কারো সাথে কথা বললে তোমার যেমন কস্ট হয় তেমনি আমারও হয়….(ওনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললে)
— হুম।।জানেন আপনি? ওই মেয়েগুলো কতটা বাজে নজরে আপনাকে দেখতেছিলো…(আমি)
— তাই নাকি….(ওনি)
— হুম তাই….কিন্তু আমি কি করছি জানেন…?(আমি)
— কি…??
— ওই মাইয়াগুলোর সাথে তাল মিলিয়েছি….(দুনিয়া স্বাধীন করে ফেলছি এমন একটা ভাব নিয়ে)
— তাই নাকি।।তো কি বলেছো তাদের…? (অবাক হয়ে বললেন ওনি)
— বলছি এতই যখন তাদের আপনাকে ভালো লাগে আপনাকে যেনো ওরা নিয়ে যায়…(ওনার বুক মাথা তুলে ওনার মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম)
— তাই নাকি…?কিন্তু…(ওনি)
— কিন্তু কি…?(আমি)
— ওরা যদি তোমার কথার উপর ভিত্তি করে নিয়ে যায়…(ওনি…ঠোঁটের কোণে হালকা মৃদু হাসি)
— খুন করে ফেলব..?(চোখ গরম করে)
— কাকে..?(ওনি চোখ বড় করে)
— ওদের…(আমি)
— ওও আমি তো ভাবছি…?(ওনি)
— কি ভাবছেন…?(আমি)
— আমাকে কোনে মেরে ফেলো নাকি….(ওনি)
— আপনাকে মারলে আমি বাঁচবো কি করে…(আমি)
— তোমার তো বেঁচে থাকার জন্য অনেক রিজনই আছে….(ওনি)
— নাহ নেই।।আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হচ্ছেন আপনি আপনাকে ছাড়া আমি কিছুই ভাবতে পারি না…(আমি ওনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম।। এমন ভাবে তাকে ধরেছি যেনো ছেড়ে দিলে তিনি হারিয়ে যাবে বহুদুর)
— আমারও নেই…তোমাকে হারানোর কথা ভাবলেও না দম বন্ধ হয়ে আসে….জীবনের প্রতিটা প্রশ্বাসে তোমাকে আমার অস্তিত্বে অনুভব করি…
তুমি বিহীন আমি নিঃশ্ব।।।
তুমি আমার এমনি একজন,,,
যারে একজনমে ভালোবেসে ভরবে এই মন।।।
একজনমে ভালবাসা,,,
একজনমে কাছে আসা
একটু পলক পড়তে লাগে যতক্ষন
তুমি আমার এমনি একজন
যারে একজনমে ভালোবেসে ভরবে না এ মন।।।
ভালবাসা সাগর তুমি।।।
বুকে অথৈ জল
তবুও বিপাসাতে আখি হয় ছলছল।।
তুমি আমার এমনি একজন।
যারে এজনমে ভালবেসে ভরবে না এ মন।।
(খুবই মৃদু স্বরে গানটা গেয়ে বুঝিয়ে দিলেন আমাকে কতটা ভালবাসেন তিনি।।সত্যিই আজ আমি অনন্য তার এমন ভালবাসা পেয়ে)
— যদি রূপ চান তাহলে আমি শূন্য,,,
তবে যদি ভালবাসা চান তাহলে আমি অনন্য।।। (আমি ওনার চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম)
— তুমি আমার মনের রানী তুমিই আমার রূপের রানী।।।তুমি আমার রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সুন্দর।।।সুন্দর লাগতে রূপ নয় মনে ভালবাসা থাকা চাই।।।ভালোবাসার চোখে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিকৃত রূপের মানুষটাকেও সুন্দর লাগে…তুমি তো হয়ে আছো আমার মনের রাজ্যের রাজরানী এখন চাই তোমার ভালবাসার অনন্যায় অনন্য হয়ে থাকতে।।।(তার চোখের গভীরতায় আমি হারিয়ে গেছি।।।শুনেছি মানুষ যদিও মুখ দিয়ে মিথ্যা বলে তবে তার চোখ সত্যের কথা বলে…আজ আমি ওনার চোখে সত্যের প্রভাব দেখতে পাচ্ছি।।।সত্যিই যে ওনার চোখে যেমন ভালবাসা দেখতে পাচ্ছি তেমনি তার চোখের মায়ায় আমি মায়াবদ্ধ হচ্ছি।।।তার চোখে যে এত মায়া আছে আমার জানা ছিলো।।।)
— আপনার মত হয়ত ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ আমি করতে পারি না বা করতে পারব না তবে নিজের মত করে ভালবাসতে আমি পারবো।।।নিজের সবটুকু বিলিয়ে ভালবাসতে আমি কখনো ভাসি নি কাউকে।।তবে এখন প্রতিটা পলকে মনে হয় কাউকে যে সবটুকু বিলিয়ে ভালবাসা যায় তা আমি আপনাকে ভাসি।।।(ওনার পাঞ্জাবির বুকের বোতাম খুলে তার বুকের মধ্য খানে আলতো করে আমার ঠোঁটের ছোঁয়া দিলাম)
— আজ নিজেকে ধন্য বলে মনে হচ্ছে… এর চেয়ে বেশি কিছু চাই না যে আমার…(তার চোখে মুখে খুশির আভাস…যে তিনি বিশ্ব টা জয় করে নিয়েছেন)
— এতটা খুশি আপনি…যেনো বিশ্বটা জয় করে নিয়েছেন…? (আমি)
— তুমিই তো আমার দুনিয়ার এক অংশ তোমাকে নিয়েই আজ আমি নিজের দুনিয়া টা জয় করে নিয়েছি…..(ওনি)
— তাই বুঝি…তো বাকী দুনিয়া কবে জয় করে নিয়েছেন…? (আমি)
— যেদিন আমি আমার কর্ম আর মায়ের মনের মত হতে পেরেছি.. (ওনি)
— হুম…(আলতো করে আমার থুতনীতে হাত দিয়ে তার ঠোঁট জোড়া আমার দিকে এগিয়ে আনছেন….তার এমন করা টাকে আমি আজ নতুন ভাবে উপলব্ধি করছি।।মনে হচ্ছে যেনো এই প্রথম উনি উনার ঠোঁটের উষ্ণতা আমাকে দিতে চলেছেন।।।আমার ঠোঁট জোড়া অনবরত কেঁপেই চলেছে।।।এতটা গভীর অনুভুতি আমি চোখ খোলা রেখে অনুভব করতে পারবো না…তাই তো আঁখি জোড়া বন্ধ করে নিলাম।।।হৃৎস্পন্দন কয়েক গুন বেড়ে চলেছে….অনেক কাছে টেনে নিয়েছেন তিনি আমায়….বহুকাল পরে যেনো কোনো সঙ্গিবিহীন একাকিনী থাকা মানুষ নিজের সঙ্গী কে তার কুলে ফিরে পেয়েছে এমন অনুভুতি উপলব্ধি করছি আমি।।। তার ঠোঁটের আলতো মনে হয় ২ সেকেন্ডের বেশি পেয়েছি তখনই পাশ থেকে কারো কাশির শব্দ শুনতে পেলাম…. দরজার দিকে নজর দিতেই মেজাজ টা সম্পূর্ণ খারাপ হয়ে গেলো এর বুঝি আসার আর সময় হলো না…
চলবে…