মি_পার্ফেক্ট ২,পর্ব:০৬,০৭,০৮

0
902

#মি_পার্ফেক্ট ২,পর্ব:০৬,০৭,০৮
আতাউর রহমান হৃদয়

— এতটা সিওর কি করে…?(ওনি)
— ঐ যে বললাম বিশ্বাস ছিলো আছে..(আমি)
— এতটা বিশ্বাস..? (ওনি)
— হুম… বিশ্বাস আছে বলেই তো ভালবাসি…(আমি)
— কাকে..?(ওনি)
— কাকে আবার আমার বরকে…

কথা বলতেই ওনি আমাকে জড়িয়ে নিলেন নিজের সাথে।
মানুষটা অনেকটা শুকিয়ে গেছে। কি করে ছিলো ও এতদিন। আর কোথায় বা ছিলো???

— জানো প্রিয়জনদের ছেড়ে থাকার যে কতটা কস্ট তা খুব করে ঠের পেয়েছি আমি….প্রতিটা ক্ষণ একটু খানি কথা বলার জন্য কতটা ছটপট করেছি তার কেন ইয়ত্তা নেই। (ওনি খুব গভীরভাবে কথা টা বললেন)
— হুম।
— এতটা বিশ্বাস কি করে করো…?(ওনি)
— আপনি মানুষ টাই যে এমন…বিশ্বাস না করে যে থাকা সম্ভব নয়।।।(আমি)
— কি এমন দেখেছো যে এতটা বিশ্বাস করো..?(ওনি)
— জানিনা তবে এতটুকু বলতে পারি… আপনি আমার মি. পার্ফেক্ট… কখনোই যে এমন টা করবেন না আপনি যেটাতে আপনার পরিবার কস্ট পাবে…(আমি)
— আমার পরিবার..? তোমার নয় কি??(ওনি)
— হুহ..আমি তো আপনার মত এতটা পার্ফেক্ট নই যে প্রতিটা কথাটা আপনার মত গুছিয়ে বলতে পারবো…(আমি)
— মানুষ কি ভুল করে না..?(ওনি)
— করে তো…তবে আপনার মত যারা আছে…তারা ভুল করে প্রতারণা নয়…?(আমি)
— ভুল আর প্রতারণার মাঝে তপাত…?(ওনি)
— ভুল হচ্ছে নিজের অজান্তে কোন কিছু করে ফেলা আর প্রতারণা হচ্ছে নিজের ইচ্ছায় কাউকে ধোঁকা দেয়া (আমি)
— বাহ ভালোই তো মুখে খই ফুটেছে…?(ওনি)
— আপনার থেকে শিখা…(আমি)
— আমার থেকে শিখে আমাকে পার করে যাওয়ার ইচ্ছা বুঝি…?(ওনি)
— এটা কখনোই ছিলো না মনে সবসময় আপনার কাছে হেরে গিয়ে শিখতে চাই…আপনাকে ভালবাসতে চাই…(আমি)
— তাই বুঝি(ওনি)
— হুম তাই…চলুন ঘুমিয়ে পড়ি….অনেকদিন স্বস্তির ঘুম ঘুমানো হয় না….আপনিও তো অনেক ক্লান্ত..

ওনাকে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিলাম….

নিশ্চুপ হয়ে আছি। কোন কথা নেই দুজনের মাঝে।
অনেক দিন পর তার বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছি। মনে হচ্ছে আমার জীবন টা হারিয়ে আবারো ফিরে পেয়েছি। জানি না কি করে ছিলাম এতদিন। হয়ত ঘোরের মাঝে ছিলাম। অপেক্ষায় কেটেছিলো দিন।

সকালে ঘুম ভাঙতেই বুঝতে পারলাম আমার পাশে ওনি ঘুম গভীর-ভাবে ঘুমিয়ে আছেন…একটা হাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে আছেন।।।তার কপালে একটা চুমু দিয়ে উঠে আসলাম।।।

বাড়ীর সবাইকে খুব খুশি খুশি লাগছে আজ…লাগবেই তো। বাড়ির একমাত্র রাজকুমার হারিয়ে ফিরেছে। মা-নীলুর দুস্টুমি টা সবসময়ই ছিলো। নানী-নাতনী খুব ভালো জগড়া করে…

— আচ্ছা মামী বলো তো এখানে কি…?(নীলু হাত মুট করে এসে আমাকে প্রশ্নটা করলো…)
— উমমম বলতে পারছি না…(চিন্তা করে দেখলাম কিছুই মাথায় এলো না)
— বলতেও পারবে না…(নীলু)
— কেনো..?(আমি)
— কারণ এটা তুমি কখনোই বুঝতে পারবে না…(নীলু.)
— কিন্তু কেনো..?(আমি)
— কারণ এখানে কিছুই নেই….(বলেই নীলু হাসতে লাগলো….পুচকি টা কত সুন্দর করে হাসে…যেনো মুক্তা ঝরে তার হাসি তে…)
— ঐ তুই এখান থেকে যাবি নাকি আমি তোকে মাইর দেবো…?( নীলু পরোটার আঠা নিয়ে দুস্টুমি করছিলো বলে আপু নীলুকে ধমক দিয়ে কথাটা বললো)
— যাওয়ার হলে তুমি যাও আমাকে আমার কাজ করতে দাও…(গরমের উপরেও গরম আছে ব্যাপার টা বুঝলাম)
— তুই আবার কি কাজ করছিস…?(আপু অবাক হয়ে কথাটা বললেন….
আমি তো অবাক হয়ে তাদের কথা শুনছি)
— দেখতে পাচ্চো না….আমি আঠা কে ময়দা করছি….?(নীলু)
— কিহ…আঠা কে ময়দা কিভাবে করে…?(আমি… ওর কথা শুনে তো ভাবী ননদী দুজনেই হা করে আছি…)
— ওওও আম্মু তোমার নাতনী কে নিবা নাকি আমি বেলুনী দিয়ে ওরে পিঠামু….(আপু তিক্ত হয়ে আম্মুকে বললেন)
— তুমি শুধু গায়ে হাত দিয়ে দেখো না…?(নীলু গরম হয়ে বললো)
— হাত দিলে কি করবি…?(আপু)
— কি করব মানে…এটা নিয়ে দৌড় দিবো….(বলেই এক মুস্টি আঠা নিয়ে দৌড় দিলো)
— আপু নীলু তো ভারী দুষ্টু হয়েছে….?(আমি)
— আরে এ আর দেখছো কি ভাবি…(আপু)
— কি…?(আমি)
— সব দোষ তো ভাইয়ের…?(আপু)
— ওনার আবার কি দোষ…?(আমি)
— আরে নীলু তো ওর মামার চার ভাগের এক ভাগ দুস্টুমিও করে না…(আপু)
— তার মানে আপনার ভাই এরচেয়ও চারগুন বেশি দুস্টু ছিলো…. (আমি অনেকটাই অবাক হয়ে বললাম।।।।ওনাকে এখন কেউ দেখলে বলবে যে ছোটবেলায় এতটা দুস্টু ছিলেন)
— হুম…এর জন্যই তো সবসময় আম্মুর হাতে গনধোলানি খাইতো….(আপু)
— কীভাবে মারতো…?(আমি)
— মারতে মারতে টেবিলের নীচে ডুকিয়ে ফেলতো….(আপু)
— একমাত্র ছেলেকে এভাবে মারতো…?(আমি)
— কি করবে বলো…ওর দুস্টুমির কোন লিমিট ছিলো না….

নাস্তা বানানো শেষে। ওনাকে ডাকতে গিয়ে তো আমি হতঅবাক হয়ে রুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছি।

চলবে…

#আতাউর_রহমান_হৃদয়

#মি_পার্ফেক্ট২

আতাউর রহমান হৃদয়

নাস্তা বানানো শেষে। ওনাকে ডাকতে গিয়ে তো আমি হতঅবাক হয়ে রুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছি।

নীলু তার মামাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। ওনিও নীলুকে একহাত দিয়ে জড়ি ঘুমিয়ে আছেন।।।যেমন তেমনই তার ভাগনী।। এরা দুজন একসাথে থাকলে আর কাহারো প্রয়োজন পড়ে আছে বলে আমার মনে হয় না।

নীলুর বয়সটা তেমন নয়। কতই বা হবে ছয় নয়ত সাত। এই অবুঝ মেয়েটার মুখে গত পনেরো দিনে একবারো হাসির রেখা দেখতে পাই নি। মামার নিখোঁজে একদম নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিলো। এত দুস্টুমি করা মেয়েটা নিশ্চুপ হয়ে থাকাটা যে বড্ড মেনান লাগছিলো।

কিন্তু আজ দেখো তার আভাস। তার দুষ্টুমি আর হাসি কিছুতেই থামছে না। সকাল থেকে পুচকি টার দুষ্টুমিতে সবাই তিক্ত হয়ে গিয়েছে। মামার ফিরে আসা টা যে তার কাছেই সবচেয়ে আনন্দ দায়ক। কি সুন্দর করে মামা-ভাগনী শুয়ে আছে।

— এই-যে তোমরা কি নাস্তা করবে না…?(আমি কথাটা বলতে নীলু আমার দিকে এমনভাবে তাকালো মনে হলো এই বুঝি আমি কাহোরে খুন করিয়া তার সামনে আসিয়া হাজির হইয়াছি।)
— হুসস…দেখছো না আমার ছেলে ঘুমিয়ে আছে… (ফিসফিসিয়ে কথাটা বললো)
— ওওও তাই নাকি….তো তোমার ছেলের কি খাওয়ার খেতে হবে না…?(আমিও ফিসফিস করে বললাম)
— হুম খাবে তুমি যাও আমরা আসছি….(ওনি চোখ গুলো আলতো করে খুলে কথাটা বললো)
— ওহ তার মানে আপনি ঘুমাচ্ছিলেন না….?(আমি অবাক হয়ে কথাটা বললাম)
— কেউ যদি কানের কাছে এসে কাউয়ার মত কা কা করে তাহলে কি আর ঘুমিয়ে থাকা যায়….(ওনি)
— কিহহ…??আমি কাকের মত চিল্লাই…?(অগ্নিরূপে বললাম আমি)
— আমি কি তোমাকে বলছি নাকি….আমি তো বাহিরে থাকা ঐ কাক টাকে বলছি তাই না রে নীলু…?(ওনি)
— হুহ একদমই তাই…(নীলু)

মুডটা অপ করে চলে আসলাম….

নাস্তা শেষে ওনার ম্যানেজার আসছে। তার সাথে কথা বলছেন ওনি। গত কিছু ওনার অনুপস্থিতে সেই ব্যবসা টা সামলিয়েছেন। লোকটা যথেষ্টই ভাল। ওনার অতি বিশ্বস্ত একজন মানুষ। হয়ত ম্যানেজার ভাল মানুষ বলেই ওনার ম্যানেজার হতে পেরেছেন। নাহয় ব্যবসায়ের এত হিসাব আর টাকা তো কেউ এমনি যাকে তাকে দিয়ে দেন না।।।

আমার বাবা আম্মু আর অনিক এসেছে।

— কিরে আপু কি খবর তোর….?(রান্না ঘরে কাজ করছিলাম তখনই অনিক একটা শশা খেতে খেতে এসে কথাটা বললো)
— কি খবর আর…ভালোই..(আমি)
— ভাল তো থাকবিই…জামাই আসছে..(অনিক)
— হুহ…
— আচ্ছা আপু ভাইয়া কোথায় ছিলো এতদিন…তোকে কিছু বলছে নাকি…?(অনিক)
— নাহ তো…(আমি)
— ওও জিজ্ঞেস করিস নি…?(অনিক)
— নাহ…এমনিতে অনেকটা অসুস্থ ওনি আবার এসব জিজ্ঞেস করে ওনাকে হতাশ করতে চাই না(আমি)
— ওও…তবে এতটা দিন এমন নিখোঁজ হয়ে কোথায় ছিলো… নাকি অন্য কোথায়ও আবার বিয়ে সাদী করে আসছে নাকি…(অনিল তাচ্ছিল্যের সাথে কথা টা বললো)
— কিসব আজে বাজে বকচিস বল তো…?(আমি)
— আবার এমন টাও তো হতে পারে তোর ওনি নিজের ইচ্ছায়ই উদাও হয়ে গিয়েছিলো…?(অনিক)
— তুই কি চুপ করবি নাকি এখন মরিচ গুড়া মাখাবো তোর গায়ে…?(আমি রেগে গিয়ে বললাম)
— চেতস ক্যা…হাচা কথা কইলে হক্কলেরই গায়ে লাগে…বুঝচস…?(অনিক)
— শোন ওনাকে আমার ভালো করে চেনা আছে…? আমার সাথে যাই করুক কখনো ওনার মা-বোনকে কস্ট দিতে পারেন না ওনি…?আমার থেকেও হাজার গুম বেশি ওনি তাদের কে ভালবাসেন…আর এমন দুর্ঘটনায় আমি একা নয় ওনারাও কস্ট পেয়েছেন… আর এমন টা তো ওনি কখনো ইচ্ছে করে করতে পারেন না…?(আমি)
— তার মানে দুলাভাইকে তোকে ভালবাসে না…(অনিক)
— অন্তত তোর থেকে একটু হলেও বেশি ভালবাসে….?(আমি)
— তাহলে ব্যাটা বেঁচে গেলো…?(অনিক)
— কেনো…?(আমি)
— কারণ তুই যেহেতু এটা উপলব্ধি করেছিস তোর ওনি তোকে আমার থেকে বেশি ভালবাসে… তাহলে তার ভালবাসা টা পিওর আছে….(অনিক)
— কি ব্যাপার ভাই-বোন মিলে কিসের কথা হচ্ছে…?(আপু রান্না ঘরে ডুকেই কথাটা বললো)
— বলছিলাম কি..আপনার এত তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে গেলো কেন..?(অনিক)
— বুঝলাম…না…?(আপু)
— না মানে…আপনার বিয়ে না হলে আমি সুন্দর একটা অবিবাহিত বিয়াইন পেতাম আর চান্জ মারতাম…?(কথাটা বলেই অনিক হাসি দিলো সাথে আপুও হাসলো তাই আমিও না হেসে পারলাম না)
— আহারে…তা এখন কি চান্জ নেওয়া যায় না….?(আপু)
— যায় তো….আপনার মত এমন একটা সুন্দরী বিয়াইন থাকতে কে-ই বা চান্জ না নিয়ে থাকতে পারে…?(অনিক….আমি তারে কথোপকথন অবাক হয়ে শুনছি)
— হুম নিতে পারিস..সাথে সাত বছরে একটা পোডাক্ট ফ্রীও পাবি….?(আমি)
— না-না আমার ফ্রীর দরকার নেই শুধু অরিজিনাল টা হলেই হবে…(অনিক)
— ঐ বুইড়া ব্যাটা তুই আমার শশায় হাত দিলি কেনো…আহারে কি করছে আমি আর আমার মামা খাবো বলে কত কস্ট করে এটারে ফ্রীজে রাখছিলাম… (নীলু এসেই অনিকের হাতের শশা টা দেখে কথাটা বললো)
— ছিহ…নীলু এসব কি বলছিস…ও তোর মামা হয়…?(আপু)
— কিসের মামা…?আমার তো একটাই মামা…?(নীলু)
— ওও তোর আরো একটা মামা..আর তোর শশা ফ্রিজেই আছে এটা আমি দিছি ওরে..(আপু)

নীলু আর কিছু না বলে চলে গেলো। হয়ত ফ্রিজ ছেক করবে।।

অনিকের একটা কথা আমার মাথায় ডুকলো মাত্র…যখন আমি বললাম ওনি আমাকে অনিকের ছেড়েও বেশি ভালবাসে..তখন অনিক একটু স্বস্তি পেলো…কারণ অনিকও যে আমাকে তেমনই ভালবাসে যেমনটা ওনি ওনার বোন কে ভালবাসেন…আর বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালবাসাটা সবচেয়ে বেশি নিখুত হয়। আর তখনই একটা ভাই স্বস্তি পায় যখন সে তার বোনের মুখে শুনে তার বোনকে তার ছেড়েও কেউ বেশি ভালবাসে।

দুপুরে খেতে বসেছি..তখন অনিকের একটা কথায় সবার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো….

চলবে…

#আতাউর_রহমাম_হৃদয়

#মি_পার্ফেক্ট২

আতাউর রহমান হৃদয়

দুপুরে খেতে বসেছি..তখন অনিকের একটা কথায় সবার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো….

— তো দুলাভাই আপনার ভ্রমণ কেমন কাটলো…?(অনিক)
— বুঝি নি…?(ওনি)
— গত পনেরো দিন যে ঘুরে বেড়ালেন…ঘুরাঘুরি কেমন কাটলো…?(অনিক)
— অনিক কিসব বলছিস…?[(আমি….) অনিক ওনাকে তুচ্ছ করে কথা বলছে…বিষয়টা ওনার কাছে একদমই ভালো লাগছে না…যা আমি ওনার মুখ দেখেই বুঝতে পারছি]
— অনেক ভালো….তোমাকে সাথে নেওয়া উচিত ছিলো….তাহলে তুমিও ভ্রমণ টা উপভোগ করতে পারতে….(ওনি দিব্বি হাসি মুখে অনিকের কথা গুলো উত্তর দিলেন… এই মুহর্তে ওনার ফেস দেখে কেউ বুঝতে পারবে না…যে অনিক ওনাকে হেয়ো করে কথা বলছেন)
— দেখো তালতো ভাই….তুমি কথা গুলো যেদিক থেকে বলছো কথাগুলো সেদিক থেকে সঠিক তবে যে ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলছো ব্যক্তি টা সঠিক নয়…(আপুও মুখে খুব হাসি রেখে জবাব দিলেন। ওনার পরিবার টাও একদম ছন্দে ভরা রাগী বিষয়গুলোকে কি সুন্দর করে হাসি মুখে উড়িয়ে দেয়)

রাতে খাবার শেষে রুমে এসে দেখি ওনি নেই…বারান্দায়ও নেই….ওনি আবার গেলো টা।।।আবার কোথায়ও উদাও হয়ে গেলো নাতো… এভাবে অসুস্থ শরীরে এই নিঝুম রাতে গেলো টা কোথায় লোকটা…? আজকাল ওনি এক পলকের জন্য কোথায়ও গেলেও মনের মাঝে এক ধরনের ভয় সৃষ্টি হয়ে যায়। এই বুঝি আবারো ওনাকে পেয়েও হারালাম।

কথা গুলো ভাবতে ভাবতে ছাদে চলে এলাম।।।ছাদের এক কোনো হাটু গুছে আকাশের দিকে তাকিয়ে বসে আছেন ওনি।

— কি ব্যাপার এমন হুট করে উদাও হয়ে গেলেন কেনো…?(আমার কন্ঠ শুনতেই ওনি চমকে উঠলেন…যেন আমাকে নয় ভুত দেখেছেন। হয়ত অন্যমনস্ক হয়ে কোন গভীর ভাবনায় হারিয়ে ছিলেন)
— কই..?(ওনি)
— এই যে,, এসময় রুমে থাকার কথা…তা না হয়ে আপনি একা একা ছাদে বসে আছেন…?(ওনার পাশে বসে কথা টা বললাম)
— এমনিই…?(ওনি)
— অনিকের কথায় মন খারাপ করেছেন…?(আমি)
— ওর কথায় আর মন করার কি আছে…?যা সত্য তাই সে বলছে….(ওনি আকাশের দিকে দিব্যি তাকিয়ে আছেন…)
— কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যে আমি তে জানি…?(আমি)
— কি জানো তুমি…?(ওনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন… হালকা চাঁদের আলোয় ওনার শ্যাম বর্ণের মুখ টি দেখতে পাচ্ছি।।।ওনার মুখে হতাশার চাপ। ওনার জীবনে যে বড় কিছু একটা ঘটেছে তা দিব্যি বুঝতে পারছি ওনার ওমন চেহারা দেখে)
— এই যে আপনি কখনো নিজের স্বজ্ঞানে আপনার পরিবারকে হাতাশা আর কস্ট দিতে পারেন না…(আমি)
— কেউ কাউকে কস্ট কখনো ইচ্ছে করে দেয় না…(ওনি)
— এটা আপনার ভুল ধারনা….(ওনাকে হারাতে পারলাম শেষে…বিজয়ের হাসি দিলাম)
— যেমন..?(ওনি)
— কিছু মানুষ নিজের স্বার্থের কারণে তার জীবনের সাথে প্রতিনিয়ত জড়িয়ে থাকা মানুষ গুলো কে ঠকাতে বিন্দুমাত্র সংকোচবোধ করে না…(আমি)
— আমি যে তাদের দলের অন্তর্ভুক্ত নই এটাও কিন্তু নয়…?(ওনি)
— এটা সঠিক নয়…কারণ আমি জানি…যে মানুষটা তার আপন জনদের জন্য নিজের সখ বিলাসিতা রেখে তার প্রিয়জনদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দিনরাত চেস্টা করতে থাকে সেই মানুষটা আর যাই করুক মানুষকে ঠকাতে পারে না…(আমি)
— হয়ত পরিবারের জন্য তবে বাহিরের মানুষদের কাছে বেস্ট তো আমি…?(ওনি)
— গত কিছু দিনে যতটা ধারনা পেয়েছি আপনিই বেস্ট… (আমি)
— ওও.. জানো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিলো কি… (ওনি)
— আমাকে বিয়ে করা….?(আমি)
— ওটা সবচেয়ে বেস্ট… (ওনি মুচকি একটা হাসি দিলেন…আহ কত দিন পর তার মুখে এমন হাসি দেখতে পেলাম… এই মুহুর্তে অর্ধ জোৎসনা থাকা চাঁদের সৌন্দর্য আমার কাছে তুচ্ছ মনপ হচ্ছে ওনার এমন হাসির কাছে।।।আমার কাছে ওনার এমন মুচকি পূর্ণ জোৎসনায় ভরা চাঁদের হাসির চেয়েও বেস্ট)
–তাহলে…?(আমি)
— কাজের ব্যস্ততায় কখনো কারো ফোন নাম্বার না দেখে রিসিভ করা…. (ওনি)
— তো এতে ভুলের কি আছে….?(আমি)
— যদি কখনো তোমার নামটা ছাড়া একবারো তোমার ফোন নাম্বার টা লক্ষ করে তোমার নাম্বার ডায়াল করতাম…তাহলে অন্তত তোমার নাম্বারটা মুখস্ত থাকতো….?(ওনি খুব আক্ষেপের সাথে কথা গুলে বললেন)
— এখানে নাম্বার মুখস্ত রাখার সাথে ভুলের সাথে কি সম্পর্ক…?(আমি অবুঝ হয়ে গেলাম…ওনার কোন কথাই আমার পাল্লে পড়লো না…)
— অনেক কিছু…(ওনি)
— অনেক কিছু কি….খুলে বলুন….?(আমি)
— কোন একসময় বলব…আজ নাহয় থাকুক…(ওনি)
— নাহ আজই…(আমি)
— দেখো চাঁদ টা কে আজ অর্ধ জোৎসনায় অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে…?(ওনি)
— হুম তা ঠিক..তবে আপনার মুখের হাসির কাছে আজকের চাঁদের সৌন্দর্য তুচ্ছ…(আমি)
— সেটা তোমার কাছে হতে পারে….?(ওনি?)
— হুহ…(আমি)
— তবে আমার মনে হয় কি জানো….?(ওনি)
— কিহ…?(আমি)
— তুমি এখানে আসার আগ পর্যন্ত চাঁদ টার সৌন্দর্য অপূর্ণ ছিলো যখনই তুমি আমার পাশে এসে বসেছো তখনই চাঁদ তার পূর্ণ সৌন্দর্য ফিরে পেয়েছে….চাঁদ যেমন তোমায় পেয়ে পূর্ণতা পেয়েছে ঠিক আমিও তোমায় আমার জীবন সঙ্গী করে পেয়ে আমার জীবন পরিপূর্ণ।।। (ওনি)
— তাই বুঝি….(আমি লজ্জা লজ্জিত)
— হুম গো তাই…

কথাটা বলেই ওনি আমাকে পাজো কোলে করে হাঁটা দিলেন..

তবে আমায় কোলে নিয়ে ওনি একটু যেতেই….

চলবে…

#আতাউর_রহমান_হৃদয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here