মি_পার্ফেক্ট ২,১৫,১৬,১৭

0
934

#মি_পার্ফেক্ট ২,১৫,১৬,১৭
আতাউর রহমান হৃদয়
১৫

— আগে নিজেকে ভালবাসতে শিখো…যে নিজেকে ভালবাসতে জানে না সে অন্য কে কি করে ভালবাসবে…? (ওনি)
— হুম…,কিন্ত আমার নামটা কি করে আসে…আপনার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার পিছনে..?(আমি)
— কারন….(এইটুকু বলেই ওনি থেমে গেলেন…)
— কারণ কি…?(আমি)
— ভয় পেলে নাকি গো…?(ওনি একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললেন…মেজাজ টাই পুরো বিগড়ে গেলো… হালায় কি কয় এডা…যারে নিজের জীবনের সবটুকু দিয়ে ভালবাসি তারে কিভাবে এতটা আঘাত করতে পারি….তার একটা লোমও ছিড়তে পারব না…থাকতো এমন করে কোন আঘাত)
— ভয় তো তখনই পেতাম যখন আমি অপরাধী হতাম…? (একটু রাগী ভাবেই বললাম)
— আরে বউ টা রাগও করেছে দেখি…আসলে হয়েছে কি..?(ওনি)
— কি হয়েছে?? (রাগ টা এখনো বিদ্যমান)
— তোমার রাগী মুখ খানা অনেক দিন হলো দেখা হয় না…তো তাই একটু রাগানোর চেস্টা করলাম… (খুব সুন্দর একটা হাসি দিলেন ওনি…আহ এমন হাসি দেখলে কেই-বা রাগ করে থাকতে পারে তার উপর…)
— হয়েছে দেখা এবার….(রাগী মুড নিয়ে ওনার দিকে নিজের মুখ টা এগিয়ে দিলাম)
— আহ শান্তি… (আমার গালে চুমু দিয়ে কথাটা বললেন)
— এটা কি হলো….(গালে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম)
— আমার বউকে আদর করলাম…?(ওনার মুখে হাসির রেশ টা আজ আছেই)
— কেনো..করবেন…?(আমি)
— ওমা আমি আমার বউকে আদর করবো না…?(ওনি অবাক হয়ে বললেন)
— এহ আসছে বউ বলতে…? কিছুক্ষণ আগেই তো নিজের বউকে অপরাধী বানিয়ে দিয়েছেন… আর কোন অপরাধী কখনো ভাল বউ হতে পারে না….সো আমি আপনার বউ না…(বলেই যে উঠতে যাবো ওনি হাতটা ধরে হেচকা টান দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন আমায়)
— আরে বউ আমি দুস্টুমি করছিলাম….এত রাগছো কেনো…?(ওনি)
— তো কি করব…? আপনি জানেন না আমি আপনাকে কতটা ভালবাসি…?(আমি)
— বলেছো কখনো….?(ওনি)
— বলার সুযোগটা পেয়েছি কখনো…?(আমি)
— গত তিনমাস ধরে কি করছো..?(ওনি…)
— গত দুমাসে তো বুঝতে পারি নি আপনাকে ভালবাসি কি না..? যখনই বুঝতে পারলাম আপনাকে ভালবাসি তখনই তো কত কিছু ঘটে গেলো…?(আম গাল টা ওপপ করে বললাম)
— ওওও…তবে কিছু কথা তুমি কি জানো…?(ওনি)
— কি কথা..?(আমি)
— তুমি কতটা সুন্দর…?(ওনি)
— যতই সুন্দর হইনা কেনো…?আপনার বান্ধবীদের থেকে তো কম(আমি)
— হাহ…ওরা সুন্দর তবে তোমার থেকে বেশি নয়…(ওনি)
— হুহ এসব আপনি আমাকে শান্তনা দেওয়ার জন্য বলতেছেন…আমি ভালো করেই জানি(আমি)
— জানো তোমার ঠোঁট গুলো অসম্ভব রকমের সুন্দর যেগুলো আমাকে প্রতিনিয়ত কাছে টানে…তোমার চোখ গুলো এতটা গভীর মায়াবী… ইচ্ছে করে তার গভীরতা সব সময় ডুবে রই…তোমার চুল গুলো এতটাই সিল্কি যে ইচ্ছে করে সবসময় তোমার চুল গুলো হাতাই…তোমার চুলের সুভাসে আমি হই প্রতিনিয়ত আসক্ত। হই আমি নেশাক্ত। যদিও মেয়েদের চুলের নিজস্ব কোন চুলের সুভাস নেই…সব শ্যাম্পুর… তবুও ভালো লাগে তোমার চুলে নাক গুছে ঐ চুলের সুভাসের নেশায় নেশাক্ত হতে….জানো বিশেষ করে তোমার হাত এবং হাতের আঙুলের প্রেমে আমি বেশি পড়েছি.. ইচ্ছে করে করে সারাক্ষণ তোমার হাত ধরে রাখি…তোমায় ভালবাসি… অনেক বেশি ভালবাসি…যা আমার পক্ষে বলে বুঝানো দায়….জানো খুব মনে পড়ছিলো তোমায় যখন মৃত্যু কে সামনে থেকে দেখছিলাম…একটা ক্ষনিকের জন্য মনে হচ্ছিলো তোমাকে নিয়ে দেখা স্বপ্ন গুলো হয়তো তোমাকে সাথে করে পূরণ করা হলো না…স্বপ্ন গুলো কল্পনাতেই রয়েই গেলো…(খুব আবেগী হয়ে কথাগুলো বললেন ওনি)
— আমি আপনাকে খুব ভালবাসি আপনার বুকে মাথা রেখে আমি আমার সব দুঃখ ভুলে যাওয়ার বিশ্বাসটুকু পাই…(অশ্রুমাখা চোখে ওনার বুকে মাথা রেখে বললাম)
— এই দাঁড়াও…?(হুট করে ওনার কন্ঠে সন্দেহের আভা ভেসে উঠলো..)
— নাহ দাঁড়াতে পারব না….আপনি এভাবৈই বলুন(আমি)
— তোমার এত কস্ট কোথা থেকে আসলো….? চ্যাকা ট্যাকা খাইছো নাকি…?(ওনি)
— চ্যাকা তো আমি প্রতিদিনই খাই…আহ যে জ্বলা টা না জ্বলে হাত চ্যাকা খাইলে….চ্যাকা খাওয়ার পর মনে হয় পৃথিবীতে চ্যাকা খাওয়ার মত কস্ট আর দুটো নেই….তবে চ্যাকা খাইলে আম্মু টুথপেষ্ট লাগিয়ে দিলে আস্তে জ্বলা বন্ধ হয়ে যায়…(দুস্টুমির হাসি দিয়ে বললাম)
— উপস আমি এই আগুনের চ্যাকা খাওয়ার কথা বলি নি….(ওনি বিরক্তি হয়ে বললেন)
— তাহলে কোন চ্যাকার কথা বলেচেন…(আমি নিষ্পাপ মানুষের মত জিজ্ঞেস করলাম)
— প্রেমে ব্যর্থ হওয়ার পর যে চ্যাকা খায় সেই চ্যাকার কথা বলেছি…(ওনি)
— ওও..তবে আমি চ্যাকা তো এখনো খাইনি…কারণ জীবনে প্রথম যার প্রেমে পড়েছি তার বুকে মাথা রেখেই এই মুহুর্তে তার সঙ্গে প্রেমালাপ করছি… সো সে যদি চ্যাকা দেয় তো চ্যাক খাবো নাহয়…জীবনে আর চ্যাক খাওয়া আর হবে না…(আমি)
— পাগলী বউ আমার…(বলেই ওনি আমাকে খুব যতন করে তার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরলেন। যদিও আমি এতক্ষণ ওনার বুকে মাথায় রেখে কথা বলছিলাম তবে ওনার হাত জড়িয়ে ধরে নি আমায়…)
— হুম(আমি)
— তোমার এক্সের কি খবর..?(ওনি)
— আমার এক্স পাইলেন কই…?(আম অবাক হয়ে বললাম)
— কেনো যার সাথে তুমি সারাক্ষণ চ্যাটিং করো…?(ওনি)
— দেখুন….ওই পোলার লগে এমনিই চ্যাট করতাম কেনো রিলেশন ছিলো না আমার…(অনেকটা রাগ নিয়েই বললাম…ব্যাটারে কতবার বলছি ওই আমার একমাত্র ভালবাসা তবুও এত প্যাচায় কেনো)
— যদি কোন রিলেশন নাই থেকে থাকে তবে সেদিন কেনো..? (এটুকু বলেই ওনি থেমে গেলেন…কেমন টা কও তো দেহি…এই ব্যাটার এ স্বভাব টা আমার একদমই পছন্দ না…শালায় কোন কথা পুরো টা একবারে বলবে না…একটুক বলেই তার মুখে তালা লেগে যায়)
— বলুন সেদিন কি…?(আমি)

চলবে…

#আতাউর_রহমান_হৃদয়

#মি_পার্ফেক্ট২
১৬
আতাউর রহমান হৃদয়

— বলুন সেদিন কি…?(আমি)
— সেদিন কেনো তোমাকে দেখেছিলাম তার সাথে রেস্টুরেন্টে বসে হেসে দুলে কথা বলতে….?(ওনি)
— শুনুন ও আমার বন্ধু ছিলো….সাথে আমার অনেক বন্ধুরাও ছিলো দেখেন নি আপনি….নাকি শুধু আমাকেই দেখতে পেয়েছেন….?(আমি)
— সবাই-কেই দেখতে পেয়েছি….তবে তোমার মত সবাইকে হাসতে দেখি নি….(ওনি)
— এখন কি আমি হাসতেও পারব না নাকি…?(আমি)
— তুমি হাসতে পারবে না এমনটা আমি বলি নি….তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো আমি চাই-ই তুমি সবসময় হাসো….তবে সেই হাসি যে আমি ব্যতীত অন্য কেউ দেখিতে নাহি পায়…তুমি আমার একান্তই আমার….তোমায় সকল সৌন্দর্য শুধু আমিই অনুভব করব…. এর বাহিরে যদি কেউ তোমার সৌন্দর্য দেখতে পায় বা তুমি দেখাও তবে এর পরিহিত খুবই ভয়ংকর হবে….(কিছুক্ষণ আগে ওনার কথা গুলো খুবই রাগাচ্ছিলো আমায় তবে এখন কার গুলো মন ছুঁয়ে গেলো….মানুষটা খুবই অদ্ভুত।।এতটা ভালবাসে তবে তার বহিঃপ্রকাশ এতটা কম কি করে..? খুবই অবাক লাগে মাঝে মাঝে ওনার কথা গুলো শুনলে….জানি এটা যে একজন মানুষ কখনোই তার আপন মানুষটার ভাগ দিতে পারে না…ভাগ তো দুরে থাক কারো পাশে এক পলক দেখা টাও সহ্য করতে পারে না)
— (নিশ্চুপ হয়ে বসে আছি। ওনার কথা গুলোর প্রতিউত্তরের ভাষা আমার নেই। তবে নীরবে অনুভব করার আছে)

বর্ণীল আকাশে মেঘের আনা ঘোনা। হালকা মৃদু ঠান্ডা বাতাস বইছে। বারান্দায় থাকা ফুলের টবে নতুন করে গোলাপের কলি এসেছে। হয়ত ওনার ফিরে আসায় নতুন কিছুর আনোগোনা বইছে আশেপাশের প্রকৃতিতে।

মেঘের আড়ালে চাঁদ আজ লুকোচুরি খেলছে। যদিও তার প্রহরীরা আজ হারিয়েছে মেঘ নামক শত্রুর আড়ালে। চাঁদ মামা নিজেও আজ মেঘ আড়াল কে চেদ করে তার জোৎসনা দিতে চাইছে আমাদের। তবে বারে বারে ব্যর্থ সে।

গভীর রাতে প্রিয় মানুষের বুকে মাথা রেখে এমন প্রকৃতি অনুভব আর উপভোগ করার ভাগ্য কয়জনেরই বা রয়েছে।

এমনও তো অনেক দম্পতি রয়েছে যাদের মনে হাজারো সংশয়। দুজন একই রুমে একই বিছানায় শুয়ে দুদিকে মুখ করে শুয়ে আছে। তাদের মনে রয়েছে অভিমান নামক হাজারো অভিযোগ তবে ওই অভিমানের আড়ালে যে চাঁদ মামার হারিয়ে বসে আছে তাদের নিসংষ ভালবাসা।

যদি তারা পারতো একবার অভিমান কে চেদ করে কথা বলার সাহস। তবে তারাও তো পেতো এমন শীতল পরিবেশের এক মুহুর্ত। যাহার দেখা মিলে বছরের গোটা কয়েক বার।

ইস আজ যদি ওনি সেই আগের মত সুস্থ থাকতেন। ওনার হাত ধরে বাহিরে হাঁটতে পারতাম। কতটাই না ভালো লাগতো।

মিলেছে আজ এক নতুন ভোরের দেখা হয়ত নতুন কিছুর আভা পাচ্ছি মনে।

তবে সবসময় কি আর মনের আশঙ্কা সত্যি হয়। হয় না। আবার হয়ও।

কতটা বিভোর হয়ে ঘুমোচ্ছেন ওনি। মনে হচ্ছে কতকাল স্বস্তির নিদ্রায় নিদ্রিত হন না ওনি। হবে কি করে?

গত কিছুদিন হয়ত ঘুমানই নি তাই।

সকাল বেলায় নাস্তা করে ওনি কয়েকটা ফাইল হাতে বেরুতো ধরলেন তখনই শাশুড়ী মা জিজ্ঞেস করে বসলেন..

— কই যাস..?(শাশুড়ী আম্মু শাসিত স্বরেই বললেন)
— আম্মু একটু ফার্মে যামু….গত সিজনের হিসাব টা গড়মিল লাগছে….(ইস আমার বর টা দেখি মায়ের শাসিত স্বরে একেবারে ভেজা বেড়াল হয়ে গেলেন। কতটা নরম স্বরে কথা বলছেন ওনি। এই বুঝি কোন ভুল করে বসলেন।)
— এই অবস্থায় বাহিরে যাওয়া লাগবে না….যা কাজ করার এখানে বসে কর….(আম্মুর একদম কড়া কথা)
— আমার তো স্পটে গিয়ে দেখা দরকার ফাইল অনুযায়ী সবকিছু ঠিক আছে কি না…(ওনি)
— আগে কিছুটা সুস্থ তো হবি….(আম্মু)
— এমনিতেই অনেক লোকসান গুনতে হচ্ছে আবার যদি সবকিছু পরে করব বলে ফেলে রাখি তাহলে পরে অনেক হিমসিম খেতে হবে…(ওনি)
— বাপরে তুই ভালো বুঝিস…তবে কিছু অস্বাভাবিক হয়েছে তো দেখবি কি করি…?(আম্মু তার ছেলের যুক্তির কাছে হার মেনে নিলেন)

ওনার যুক্তির কথাগুলো শুনে আমার একটা ক্ষনিকের জন্য মনে হলো ওনি হিসাববিজ্ঞানের ছাত্র কম যুক্তিবিদ্যার ছাত্রই বেশি।

রান্না ঘরে কাজ করছি সাথে শাশুড়ী ননদী দুজনই বিদ্যমান তখন নীলু এসে বললো….

— আচ্ছা মামণি একটা কথা বলো তো…(নীলু আহ্লাদী হয়ে বললো)
— কি কথা গো বুড়ী…?(আমি)
— ধরো আমি তোমার পুত্রবধূ হলাম…তখন তুমি আমার সাথে কেমন ব্যবহার করবে….?(নীলু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো…আমি তো তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়েই আছি মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না)
— কেমন ব্যবহার আবার একজন শাশুড়ী তার পুত্রবধূর সাথে যেমন ব্যবহার করে… (এরচেয়ে ভালো জবাব আর আমার কাছে নেই)
— তার মানে তুমিও নানীর মত আমাকে কাজ করাবে যেমন নানী তোমাকে দিয়ে করাচ্ছে..? (নীলু অবাক দৃষ্টিতে কথা টা বললো)
— এগুলো মেয়েদের করতে হয় মামনী….এটা তো মেয়েদেরই কাজ…(আমি)
— আহ তার মানে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে পায়ের উপর ঠ্যাং তুলে মেকাপ আর রূপচর্চা করা হবে না…তুমিও সেই নানীর মত হতে গেলে যাও তোমাদের কারোর সাথেই কথা নেই আমার…

নীলু কথা গুলো বলেই মুখটা কে বাংলা পাঁচের মত করে কোমর দুলিয়ে হেটে চলে গেলো…

আমরা তিন জন অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। এই পুচকি বুড়িটা কিসব বলে গেলো। এর মাথায় এসব কথা আসে কোথা থেকে…
নির্ঘাত মোবাইলে ভিডিও দেখে এসব শিখেছে…

মা বলে উঠলেন…
— বউমা…? (আম্মু)
— জ্বি আম্মু… (আমি)
— আমি কি সত্যিই তোমাকে খুব জ্বালাই…(মা,খুব নরম গলায় বলে উঠলেন… ওনার এমন প্রশ্নে আমি খুবই লজ্জা পেলাম। খুব অপরাধী বলে মনে হচ্ছে নিজেকে। হয়ত আমার কোন দুর্বলতা আছে যার জন্য মায়ের মনে এমন প্রশ্ন জেগেছে)
— আম্মু… (মুখ দিয়ে কোন কথা বেরোলো না.. অশ্রুসিক্ত নয়নে মায়ের মুখের দিকে নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম)
— আরে বউমা তুমি এতটা সিরিয়াসলি কেনো কথাটা নিয়েছো…আমি তো হোনার(নীলুর) কথার পরিপেক্ষিতে বললাম….???(আমার চেহারার অবস্থা দেখে মাও বোধয় অবাক হয়ে গেলেন)
— (কোন কথা নেই নিশ্চুপ হয়ে আছি)
মা এসে আমাকে জড়িয়ে নিলেন।
— পাগলী মেয়ে আমি তো কখনো তোকে ছেলের বউ ভাবিই নি। সবসময় নিজের মেয়েই ভাবি…আমার জন্ম দেয়া মেয়েটা আমার জন্য যতটুকু তুইও ঠিক আমার জন্য ততটুকুই….আমি নাহয় বুড়ো মানুষ হোনার কথা গুলো শুনে আচমকা তোকে একটা কথা বলে বসলাম আর তুইও সেই কথাটা নিয়ে এভাবে মন করে ফেললি।।।

ভাগ্য করে ওনার মত একটা শাশুড়ী কম মা পেয়েছি। যিনি বকেনও নিজে আবার মনটা ভালোও করেন তিনি। আমার বরকে দেখলে বুঝা যায় তার মা কতটা আদর্শবান। কারণ একজন আদর্শ মায়ের সন্তান আদর্শ মানুষ হয়। তবে মাঝে মাঝে অশ্লীল পরিবার থেকেও আদর্শ মানুষের জন্ম হয়। ঠিক গোবরে পদ্ম ফুল ফোঁটার মত।

দুপুরে খেতে বসেছি…কিন্তু…


চলবে..

#আতাউর_রহমান_হৃদয়

#মি_পার্ফেক্ট২
১৭
আতাউর রহমান হৃদয়

ভাগ্য করে ওনার মত একটা শাশুড়ী কম মা পেয়েছি। যিনি বকেনও নিজে আবার মনটা ভালোও করেন তিনি। আমার বরকে দেখলে বুঝা যায় তার মা কতটা আদর্শবান। কারণ একজন আদর্শ মায়ের সন্তান আদর্শ মানুষ হয়। তবে মাঝে মাঝে অশ্লীল পরিবার থেকেও আদর্শ মানুষের জন্ম হয়। ঠিক গোবরে পদ্ম ফুল ফোঁটার মত।

দুপুরে খেতে বসেছি..
ওনি এখনো বাসায় আসেন নি।

এই অসুস্থ শরীর নিয়েও তার কাজ করতে হবে।। ওনার এই কাজ গুলো একদমই পছন্দ নয় আমার। অসুস্থ তিনি। কোথায় বাসায় একটু বিশ্রাম নিবেন নাহ তার তার তো কাজ করাই লাগবে।

বিকেল বেলায় তিনি বাসায় ফিরলেন। চেহারায় যেমন টা ক্লান্তি তার চেয়েও বেশি রাগের চাপ। আমি কোন কথাই বললাম না ওনার সাথে। কিন্তু বাড়ির কেউ-ই দেখি ওনার সাথে কথা বলছেন না। বিষয়টা কেমন যেন ঠেকলো আমার ধারে।

ওনাকে দেখলাম অনেক কস্ট করে নিজে একাই হেটে রুমে গেলেন। যদিও বাড়ির উঠোন পর্যন্ত রিক্সায় এসেচেন।

— আচ্ছা আপু একটা কথা বলুন তো…?(বিস্ময়সূচক দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম আপু কে)
— কি কথা ভাবি…?(আপু)
— আপনার ভাই বাসায় ফিরলে আম্মুর সাথে কথা বলে তারপর রুমে যান…ওনি যদি কখনো কথা না বলেন আম্মু ডাক দিয়ে এই সেই কথা জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু আজ কি হলো। ওনিও কিছগ বললেন না আম্মুও কিছু জিজ্ঞেস করলেন না? কি হয়েছে ব্যাপার টা বলুন তো…?(আমি)
— হাহাহা ভাবি আজও বুঝতে পারলে…ভাই রেগে আছে দেখে আম্মু কথা বলার সাহস পায় নি…(আপু একটু হেসে কথাটা বললেন)
— মায়ের আবার সাহস থাকা লাগে নাকি সন্তান কে কোন কিছু করতে..?(আমি)
— নাহ লাগে না…তবে ভাইয়ের রাগ যখন উঠে তো তখন প্রচন্ড ভয়ে থাকি আমরা…কারণ ভাই সহজে রাগে না আর যদি রেগে যায় একবার তখন কারো পরোয়া করে না….(আপু)
— ওও তাই নাকি….?(আমি অবাক হয়ে বললাম। আজ পর্যন্ত বিষয় টা আমার জানা ছিলো না। জানব কি করে ওনাকে তো কখনো আমার স্বচোক্ষে রাগতে দেখি নি)
— হুহ তাই…শোনো ভাবি ভুল করেও ভাইয়ের কাছে গিয়ে বেশি কিছু বলার বা জিজ্ঞেস চেস্টা করবা না…যখন দেখবা ভাইয়ের মন ভালো হয়েছে তখন জিজ্ঞেস করবা কি হয়েছে…. (আপু আমাকে হুশিয়ারি কন্ঠে কথাটা বললো)
— আচ্ছা…(বাধ্য মেয়ের মত তার কথায় সম্মতি পোষন করলাম)
— ভাইয়ের মন ভালো হলে ও নিজেই এসে দেখবা সবার সাথে কথা বলছে….(আপু)

কিছুক্ষণ পর রুমে এসে দেখি।

মামু ভাগনী ফোনের মধ্যে কি যেন করছে খুব মনোযোগ দিয়ে। আমিও একটু উঁকি মেরে দেখি।

ওয়ারে বাহ!!!
মামু-ভাগনী লুডু খেলতাছে…

— আমাকে নেওয়া যাবে..?(তাদের খেলা দেখে আমারও খেলতে ইচ্ছে করতাছে)
— কে তুমি..?(নীলুর মনোযোগ খেলার দিকে। আমার দিকে না তাকিয়েই কথাটা বললো নীলু)
— আমাকে চিনো নাহ…বাহ…?(খুবই আপসোসী ভাষায় কথাটা বললাম আমি)
— ওরে আমার শ্বাশুড়ি…. বসো বসো…(নীলু আমার চেহারার দিকে তাকিয়ে একটু সরে বসে কথাটা বললো)
— ফোনটা কার..?(ওরা যে ফোনটায় খেলছে এই ফোন টা দেখছি নতুন ফোন কিন্তু কার..?)
— মামার ফোন এটা..? (নীলু)
— দুটো ফোন থাকা সত্ত্বেও আরো একটা ফোন নেওয়ার কারণ কি…?(আমি)
— আমার হাতে আগের দুটো ফোন কি একবারো দেখেছো গত কয়েকদিনে..? (ওনি)
— খেয়াল নেই…তবে কাল রাতেও তো আপনার ফোন দিয়ে আপনার বান্ধুপির সাথে কথা বললাম…(আমি)
— এই ফোন দিয়েই কথা বলেছো… (ওনি)
— তাহলে ওই দু-টা কই…?(আমি)
— ইয়েয়য়য় আমি জিতে গেছি….মামা হেরে গেছে মামা হেরে গেছে… (বাহ ওনি এই টুকু বাচ্চার সাথে হেরে গেলেন…নাহ ওনি বোধয় ইচ্ছে করেই হেরেছেন। কারণ মাঝে মাঝে হেরেও জিতা যায়। নীলু যদি হেরে যেতো তাহলে ওর মন খারাপ হতো এজন্য ওনি নিজেই হেরে গেলেন। নীলু যাতে খুশি থাকেন। বাহ কি টেকনিক।।।নীলু তো জিতার খুশি তে লাফালাফি করতে করতে বেরিয়ে গেলো।)
— চিনতাইকারীরা নিয়ে গেছে…?(ওনি)
— কোনদিন..? (আমি)
— যেদিন তোমাকে হোটেল রুমে একা রেখে হারিয়ে গিয়েছিলাম….?(ওনার কথাটা মাথায় বাজলো… তবে তার কথার কোন রহস্য ভেদ আমি করতে পারলাম না।।।আসলে ওনি কি বুঝাতে চাচ্ছেন।)
— বুঝলাম না…?(আমি)
— তুমি না জানতে চেয়েছিলে কি এমন ঘটেছিলো আমার সাথে সেদিন টায় যার জন্য আমার এমন পরিস্থিতি। (ওনার কথাটা শুনে অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে রইলাম। যে লোকটাকে এত শতবার অনুরোধ করার পরেও একটা শব্দ বলে নি তার সাথে কি এমন ঘটেছে? কিন্তু আজ সেই লোকটাই নিজের ইচ্ছায় বলতে চাচ্ছে বাহ বিষয় টা তো খুবই জটিল..)

চলবে।

#আতাউর_রহমান_হৃদয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here