মি_পার্ফেক্ট ২,১৮,১৯,২০

0
825

#মি_পার্ফেক্ট ২,১৮,১৯,২০
আতাউর রহমান হৃদয়
১৮

— তুমি না জানতে চেয়েছিলে কি এমন ঘটেছিলো আমার সাথে সেদিন টায় যার জন্য আমার এমন পরিস্থিতি। (ওনার কথাটা শুনে অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে রইলাম। যে লোকটাকে এত শতবার অনুরোধ করার পরেও একটা শব্দ বলে নি তার সাথে কি এমন ঘটেছে? কিন্তু আজ সেই লোকটাই নিজের ইচ্ছায় বলতে চাচ্ছে বাহ বিষয় টা তো খুবই জটিল..)
— হুহ….(আমি)

— সেদিন বন্ধুর ফোন পেয়ে তার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম….সেখানেই সে জব করে….৯টার দিকে তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে…হোটেলে ফিরছিলাম তখন ৫ কি ৬ জন লোক এসে ঘিরে ধরলো…দেখলেই বুঝা যায় সারাক্ষণ নেশায় আসক্ত থাকে তারা। বুঝতে পেরে তাদের কে সাইড কেটে আসতে ছেয়েছিলাম…তবে আর পারলাম না…হাতে একটা ফোন ছিলো আরেকটা পকেটে….তারা হাতের ফোনটা কেঁড়ে নিয়ে নিলো…মানিব্যাগটা নিতে গিয়ে পকেটে থাকা ফোনটাও নিয়ে নিলো…বুঝতে পারলাম তাদের কাছ থেকে জীবন নিয়ে ফিরা টাই বড় পাওয়া হবে…তবে ফোন দুটো তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু ডকুমেন্টস ছিলো…যে গুলো প্রতিনিয়ত প্রয়োজন পড়ে…ঐ ফোনটার জন্য তাদের সাথে দস্তাদস্তি শুরু হয়ে যায়…তাদের কাছে চাকু ছিলো কিন্তু চাকুর আঘাত করার সুযোগ পায় নি…মোটামুটি ফিল্মি একটা ফাইটও তাদের সাথে হয়েছে… আমি তো আর কোন মুভির নায়ক নই যে ভিলেনদের মেরে একরশা করে দিতে পারবো….তবুও নিজের সবটা দিয়ে চেয়েছি…পারি নি।। ওরা আঘাত পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে গেলো…একা মানুষ তো আর ৬ জনের সাথে পেরে উঠতে পারি না….একটা পর্যায়ে ওদের মাইর খেয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ি…ছয়জন মিলে তুলে নিলো আমায়….একটা জঙ্গলের ভিতর নিয়ে প্রচন্ড মেরেছে….সবচেয়ে কস্টকর আঘাত ছিলো পায়ে….পায়ে যখন একটা শক্ত লাঠি দিয়ে আঘাত করেছিলো না তখন মনে হচ্ছিলো কেউ আমার কলিজাটা ছিঁড়ে ফেলতেছিলো….ভাগ্য ভালো কোন অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে নি..তাহলে হয়ত জীবন নিয়ে ফিরে আসাটা অসম্ভব হয়ে যেতো….তাদের ক্ষোভ টা মিটিয়ে চলে গেলো….শরীরে তাদের করা আঘাতের যন্ত্রনায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলি….যখন হুশ ফিরে নিজেকে জঙ্গলের মাঝেই আবিষ্কার করি….চারদিকে হাহাকার…এদিক ওদিক অনেক ঘুরি কোন হুদিশ পাইনা….তখন শরীরের আঘাত গুলোর চেয়ে ক্ষুধার যন্ত্রণা টা বেশি ছিলো… কতক্ষণ বা কতদিন জঙ্গলে অনাহারে ঘুরেছি তার কোন ইয়াত্তা আমি বুঝে উঠতে পারি নি…সবশেষে একটা রাস্তার হুদিশ পেয়ে বেরিয়ে আসি জনবহুলে….মানিব্যাগে যে প্রয়োজনের বাহিরে অর্থ রাখি না এটা তখন মাথায় আসলো।।।।প্যান্টের পকেটে হাত দিলাম কোন টাকা পয়সা পেলাম না…তখন মনে পড়লো…ভিতরে জার্সি প্যান্টের পকেটে কিছু টাকা থাকার কথা….পেলামও তবে কিছুনা…অনেক টাকাই ছিলো…ওইযে তোমাকে নিয়ে ঘুরবো ফিরব বলে যে টাকা গুলো নিয়েছিলাম ওগুলো তো রয়েই গেলো…ঐ টাকা গুলো বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে….এরপর আর কি লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জায়গার নাম জানলাম….কক্সবাজারেই ছিলাম….ছোটমামার নাম্বার টাই শুধু মুখস্থ জানা ছিলো…ওনার সাথে যোগাযোগ করে তার কাছে গেলাম বাকিটা বোধয় তোমার জানারই কথা….
(কথা গুলো উনি খুবই নরম গলায় বললেন…)

— হুম বুঝলাম…তবে আপনি যে বললেন…যদি এই ঘটনা টাকে বিশ্লেষণ করতে গেলে সবার আগে আমার ভেসে আসে…তা কিভাবে…?(আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকে বললাম)
— আরে পাগলী বউ আমার আমি কথাটা মজা করে বলেছিলাম…তখনি তো বলেছি তোমাকে…(উনি আমাকে তার বাহুতে জড়িয়ে নিয়ে বললেন….)
— বলবেন কেনো…? জানেন আপনার ঐ কথায় কি প্রমান করে…?(আমি)
— কি প্রমান করে….(রোমাঞ্চকর স্বরে বললে)
— আমি আপনাকে ভালবাসি কম ক্ষতি করি বেশি…আমি আপনার খারাপ টাই চাই বেশি…(মন খারাপ লাগছে আমার)
— আহা রে…তুমি যদি আমার খারাপ বা ক্ষতি কিছু করো সেটাকে আমি ভালবাসা ভেবে সাধরে গ্রহণ করে নিবো…শুধু দিনশেষে তোমাকে বুকে নিয়ে ঘুমানোর সুযোগটা থাকলেই আমার হবে….(ওনি আমার কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে বললেন…আহ এমন করে আলতো করে ভালবাসার পরশ যখন ভালবাসার মানুষটি বর হয়ে কপালে এঁকে দেয় তখন কার অনুভুতি একটা মেয়ে কখনোই প্রকাশ করতে পারবে না…যতই প্রকাশ করব ততই কম পড়ে যাবে…)
— হহ উল্টা পাল্টা সব কথা কইয়া উনি আসছেন বুকে নিয়ে ঘুমাবেন।।।।(উনাকে হাল্কা থাক্কা দিয়ে উনার বাহু হতে ছুটে চলে আসতে চাইলাম তবে পারলাম আর কই… একটা পা ভাঙ্গা তবে তার হাত তো ঠিকই আছে…এক হেঁচকা টান দিয়ে বিছানা শুইয়ে দিলেন আমায়…..)
— আহা ম্যাম কই যান….? আমার থেকে পালানোর চেষ্টা।।। না….. যতটা দুরে চাইলে না এখন তার থেকেও বহুগুন কাছে আমি টেনে নিবো তোমায়…?(উনি নেশাক্ত নয়নে আমার আমার আখিতে চোখ ঠেলে কথা বলছেন…এমন আঁখিতে চোখ রাখিয়া কথায় যে ভালবাসা বাড়ে ভালবাসা প্রকাশ পায় তা আবারো প্রমানিত)
— এ্যাহ কাছে টানবেন উনি…গত কয়েকদিন একবারো কি মনে হয় নি বউয়ের সাথে গভীর সময় ব্যয় করা উচিত….এতদিন যেহেতু কিছু হয় নি এখনও হওয়ার দরকার নাই…?(আমি)
— তুমি বললেই কি আর হবে….আমি তো (উনি)
— আপনি তো…কি…আমি না চাইলে কি কাছে আসতে পারবেন…?(আমি)
— তুমি না চাইলে কি আর হবে…আমি জোর করে কাছে আসবো…?(উনি)
— এ্যাহ জোর করে আসার মানে জানেন…(আমি)
— কি..?(উনি)
— রেপ করা হবে…?(আমি)
— তো রেপ করবো…?(উনি)
— ইই আপনি আপনি মানুষ ভালা না একটা অবলা নারীকে একা একটা রুমে পেয়ে এভাবে তার ইজ্জত কেড়ো নিবেন… এটা আপনার থেকে আশা ছিলো…(আমি)
— আমার থেকে কি আর…(বলেই উনি আমাকে…

চলবে

#আতাউর_রহমান_হৃদয়

#মি_পার্ফেক্ট ২
১৯
আতাউর রহমান হৃদয়

— ইই আপনি মানুষ ভালা না একটা অবলা নারীকে একা একটা রুমে পেয়ে এভাবে তার ইজ্জত কেঁড়ে নিবেন… এটা আপনার থেকে আশা ছিলো…(আমি)
— আমার থেকে কি আর ভালো কিছু কি আশা করা যায়?(উনি)
— আচ্ছা শুনুন না…?(অনেক আহ্লাদী হয়ে বললাম)
— হুহ বলে গো…(অনেকটা মধুরী হয়ে বললেন উনি)
— অনেকদিন হলো বাবার বাড়ি যাই না…(মনটা খারাপ করে বললাম)
— তো….?(উনি তাচ্ছিল্যের সাথে বললেন)
— বুঝেন না আপনি তো কি…?(আমি)
— কি বুঝার আছে…?(উনি)
— বাবা মায়ের কথা খুব করে মনে পড়ছে….(আমি)
— উনাদের আসতে বলো…?(উনি)
— বাড়িটা কে মিস করছি….(উনি কি আমার কথা গুলি বলার উদ্দেশ্য বুঝতে পারছেন না। নাকি বুঝেও বুঝতে চাচ্ছেন না…)
— গ্যালারি তে থাকা পিকচার গুলি দেখো…(উনি)
— এতে আরো কস্ট বাড়বে….(আমি)
— তাহলে আর কি করার আছে….(উনি)
— আপনার কি কিছুই করার নেই….(আমি)
— আম্মুকে গিয়ে বলো যে তোমার বাবার বাড়ি যেতে ইচ্ছে করছে…. (উনি)
— আপনি বলুন না…(আমি)
— এটা সোভা পায় না….যাও শুনে আসো আম্মু কি বলেন…(উনি)

শাশুড়ী মায়ের রুমে গিয়ে দেখি উনি বই পড়ছেন….খুব মনোযোগ সহকারে।।

— আম্মু….(আমি)
— হ্যাঁ মা বল….(ইশশ এমন করে যখন শাশুড়ী মা জবাব দেন তখন মনে হয় শাশুড়ী নন তিনি আমার মা-ই হন। বাবাকে যখন ডাক দিতাম তখন বাবাও ঠিক এমন করে জবাব দিতেন। আমার মত ক”জন পুত্রবধু আছেন যে এমন একটা মা পেয়েছেন।)
— আমার না বাবা-মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে….(উনি বইয়ের থেকে চোখ সরিয়ে আমার দিকে এমন ভাবে তাকালেন মনে হচ্ছে আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি যে ভুলের কোন ক্ষমা নেই)
— শোন মা, আমার ছেলেটা অসুস্থ দেখতেই পাচ্ছিস….এখন ওর সেবা করার জন্য একটা মানুষের প্রয়োজন। আর ওর মা আমি চাইলে তো সব সেবা আমি করতে পারি না। তাই তুই থাকাটাই জরুরি… আমি বুঝতে পারছি অনেকদিন হলো তুই নাইয়র যাস না। ইফতি কিছুটা হলেও সুস্থ হোক তখন তোরা দুজন গিয়েই ঘুরে আসিস। ঠিক আছে…(আম্মুর যেতে বারণ করাটা যদিও খারাপ লাগছে তবে তার কথাগুলো শুনে মনটা হালকা হলো। আসলেই তো আমার এখন যাওয়া টা একটা নিঘাত বোকামি। উনি কতটা অসুস্থ। উনাকে এ অবস্থায় রেখে আমি কি করে বাবার বাড়ি যাই। আমার মাথায় এমন ভাবনা আসলো কি করে।। উনার এই দুঃসময়ে যদি আমি তার পাশেই না থাকি তাহলে কেমন আমি স্ত্রী আমি?)

— আচ্ছা ঠিক আছে….(বাধ্য মেয়ের মত শাশুড়ির কথা মেনে নিলাম)
— এই তো আমার লক্ষী মেয়ে।।আমার ফোনটা দে তো….(টেবিলের উপর রাখা মায়ের ফোনটা উনাকে দিলাম)

শাশুড়ী বোধয় আমার বাবাকে কল দিলেন।

আমার বাবাকে আসতে বললেন তাও কাল সকাল ৮টার মধ্যে। এমনভাবে বললেন যেন এ বাড়িতে আমাকে নিয়ে কোন হট্টগোল বেঁধেছে। বাবা কে একা আসতে বলেন নি সাথে অনিক এবং মাকেও।

— খুশি তো…(ফোনটা রেখে আমার উদ্দেশ্যে কথাটা বললেন শাশুড়ী মা)
— অনেক খুশি আম্মু (বলেই শাশুড়ী মাকে জড়িয়ে ধরলাম….)
— আরে পাগলী করচিস টা কি….(শাশুড়ী)
— আচ্ছা তোমরা এমন কেনো..? (আমি)
— কেমন আমরা…?(শাশুড়ী মা)
— প্রতিটা কাজ কেই কেমন পার্ফেক্ট ভাবেই করে নেও….(আমি)
— সবসময় সবকিছু কে নেগেটিভ ভাবে না নিয়ে একটু ভেবে দেখবি তখন দেখবি সবকিছুই সোজা এবং সঠিক লাগছে….(শাশুড়ী)

উনি তো আজকাল বিছানা ছেড়ে উঠেনই না।।।আগের থেকে সুস্থ বটে।। নিজে নিজে চলতে পারেন। তবে খুব ধীরে হাঁটেন।

উনার জন্য রুমেই খাবার আনতে হয়। প্রতিদিন নিজ হাতেই খান। অনেক সময় আমি খাইয়ে দিতে চাইলেও উনি নিজে হাতেই খান।।
আজকে আর উনাকে খাইয়ে দেওয়ার কথা বললাম না।
— নিন হাত টা ধুয়ে নিন…(উনার দিকে পানি আর পাত্র এগিয়ে দিয়ে বললাম)
— আমি কেনো হাত ধুইবো…?(অবাক দৃষ্টিতে দেখছেন উনি)
— কেনো ভাত খাবেন না…?(আমি)
— খাবো তো….(উনি)
— তাহলে হাত ধুয়ে নিন…(আমি)
— উপস বুঝে না কিছু…. তুমি খাইয়ে দাও….(উনি বিরক্ত হয়ে বললেন)
— খুলে বলতে হবে তো… এত ঘুরানো পেছানোর কি দরকার….

উনাকে খাইয়ে দিচ্ছি। খাইয়ে দেওয়া পর্যন্ত ঠিক আছে তবে ব্যাটায় আঙুল গুলো কামড়ে দিচ্ছে…যদিও এতটা জোরে দিচ্ছে না যে আমি ব্যাথা পাচ্ছি।

— শুধু কি আমাকে খাইয়ে দিলে চলবে…নিজে খেতে হবে না…(উনি)
— আমি পরে খেয়ে নিবো।..(আমি)
— তা হলে কি আর চলে বলো….খাও তো….

দুজনায় এক প্লেটে। আহ হা।।এটাই যে এই মুহুর্তে একটা চাওয়া ছিলো। ইসসস বরকে নিয়ে পূরণ করার যত ইচ্ছে আছে সবই উনি পূরণ করছেন। বাকি থাকলে কি? মনে পড়ছে না আর এখন।

খাওয়ার মাঝে উনি হঠাৎ করে…

চলবে

#আতাউর_রহমান_হৃদয়

#মি_পার্ফেক্ট২
২০
আতাউর রহমান হৃদয়

দুজনায় এক প্লেটে। আহ হা।।এটাই যে এই মুহুর্তে একটা চাওয়া ছিলো। ইসসস বরকে নিয়ে পূরণ করার যত ইচ্ছে আছে সবই উনি পূরণ করছেন। বাকি থাকলে কি? মনে পড়ছে না আর এখন।

এক অনন্য সুখের মহিমায় জীবনকে উপলব্ধি করছি। সকল চাওয়ার এক অপরিসমাপ্তি এক অনন্য ভান্ডার তিনি। যার কাছে জমা রাখা যায় নিজের সকল ইচ্ছের পান্ডুলিপি গুলো। সস্তি পাওয়া যায় এই ভেবে। আমার ইচ্ছে গুলো যদি থাকে তার ধারে…নাহি কভু যাবে সে গুলো ভেস্তে।

পূর্ণতা পাবে সেগুলো অনন্য অনন্তের দিক চেয়ে।

খুজে ফিরি তাকে বারে বারে। যদি না পাই তাকে আবারো আমার শহরে সুস্থ সহশরীরে। এই তো সেদিনও তিনি আমায় পাজো কোলে করে ঘুরেছেন বাগান টায়। আহা কতটা সুখ বিচরন টাই না করেছিলো আমার মনের মাঝে। ইসস সেই মুহুর্ত টুকু যদি ফিরে পেতাম আবারো লাজুকতা থাকিতো না বোধয় আমার মাঝে।

লাজুকতা টাই হয়ত সেদিন এনে দিয়েছিলো অল্প সুখ। এখন যদি লাজুকলতা নাহি থাকে তবে বোধয় মুহুর্ত আবারো ফিরে পেলে তার ফলাফল নাহয় শুন্যতায় থেকে যাবে।

তাই তো ভাবি আর নাহি আসুক। আমি নাহয় স্মৃতিচারনে সুখটা বারে বারে খুঁজে নিবো।

আমি খুশি আজ অনেকটাই খুশি। বাবা-মাকে পড়ছিলো মনে। শাশুড়ী মা শুনে।তাদের আনিয়েছেন ধমকিয়ে। আমার আবদার পূরণ করিতে।

বাবা তার জামাইয়ের সাথে ব্যস্ত। নানান কথা বলে চলেছেন। সাথে অনিকও সাথে রয়েছে।

শাশুড়ী মা আর আম্মু গল্প করছেন। দেখলে বুঝা যায় না। এরা বেয়াইন লাগেন। তাদের এমন হাসি ভরা দৃশ্য দেখলে যে কেউ নিঃসন্দেহে বলে দিবে এরা দুই বোন বসেছেন শৈশবের স্মৃতিচারণে আসরে। আহা কি সুন্দর দৃশ্য দুজন মহীয়সী নারীর এমন হাস্য উজ্জল দৃশ্য কারই বা ভাল না লাগে।

রান্নায় আজ বিরাট আয়োজন। আপু আর আমি রান্না ঘরটা সামলাচ্ছি। যদিও কিছু সময় পর মা আর শাশুড়ী এসেছেন রান্না ঘরে। তারা গল্পের পাশাপাশি আমাদের রান্না কাজটাও দেখিয়ে দিচ্ছেন।

সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম শেষে। দুপুরে খাওয়ার পর সবাই আমার রুমে এসে হাজির। একটা খাটে উনি, অনিক,আম্মু, শাশুড়ী, আমি, আপু আর নীলু। বাবা চেয়ারে বসে আছেন।
এমন দৃশ্য দেখে মন টা ভরেই গেলো। জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষগুলো একটি কক্ষে বিদ্যমান। আহ এত ভাল লাগা আমি আজ কই রাখি।
শাশুড়ী মা জড়িয়ে ধরে বললাম…
— ধন্যবাদ মা….(তার মাঝেই যেনো হারিয়ে রই। বাবার বাড়ি গেলে হয়ত বাবার বাড়ির মানুষগুলো কেই দেখতে পেতাম। তবে ভালবাসার মানুষগুলোকে একসাথে এমন করে যে দেখা হতো না।)
— দুর পাগলী।।।মায়েদের কখনো ধন্যবাদ দিতে হয় না…(আমার মুখটা আলতো ছুঁয়ে বললেন)
— আন্টি শোনেন…(অনিক)
— হুম বলো…(শাশুড়ী)
— ভুল করলেই ওরে লাঠি পিঠা করবেন….আপনি না পারলে আমারে খবর দিবেন….(অনিক)
— ওকে কেনো মারবো… ও তো আমার লক্ষী মেয়ে… (শাশুড়ী)
— লক্ষী না ছাই…আস্ত একটা পেত্নী….(অনিকের কথা শুনে উনি অনিকের দিকে তাকালো….গুরুজন রা থাকায় উনি কিছু বলতে পারছেন না..)
— ওই পোলা তোমার এত সাহস আসে কোথায় থেকে…(নীলু একেবারে অনিক কে ধমক দিয়ে বললো….নীলুর কথা শুনে সকলে হাসি তে হট্টগোলে পড়লো)
— স্বপ্নীল উনি তোমার মামা হয়… সুন্দর করে কথা বলো…(আপু নীলুকে সাবধান করলো)
— তুমি চুপ করো…আমার মামীকে এমন করে বলবে কেনো….?(নীলু তো রেগে আগুন)
— যেমন করেই বলবে তুমি এমন করে বলতে পারো না…(আপু)
— রাখো তোমার এমন করে বলা…আমার মামা কত সুন্দর করে মামীর সাথে কথা বলে আর এ কোথা থেকে এসে আমার মামী কে পেত্নী বলে…(নীলু)
— হোনা বড়দের সাথে সুন্দর করে কথা বলতে হয়…(শাশুড়ী)
— বড়রাও সুন্দর করে বলতে হয়…(আরে বাপরে কাকে কি শিখাবে ও তো সবার থেকে পাকনা)
— আম্মু থাক…ওরা ভাই-বোন বলতেই পারে… (যাক সবশেষে উনার মুখ খুললো)

সবাই অনেকরাত পর্যন্ত বসে গল্প গুজব করলো।।।আম্মুরা সকালে চলে যাবেন।

আয়নার সামনে দাড়িয়ে গুন গুন করে গান গাইছি আর চুল আঁচড়াচ্ছি।
— ম্যাডাম দেখি আজ খুশি খুশি…(উনি)
— তা ব-ই কি…সবাইকে এমন একসাথে দেখে মনটা আজ ভরে গেলো…(আমি)
— তাই নাকি…আমি তো ভাবছি…(বলেই থেমে গেলেন…..

চলবে…

#আতাউর_রহমান_হৃদয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here