#মৃগতৃষ্ণা–৩৭
#লেখিকা-মেহরুমা নূর
(আসল রহস্য উদঘাটন) (ধামাকা পর্ব)
★পঙ্খির মস্তিষ্ক যেন শুন্য হয়ে গেল মুহুর্তেই। মনে হচ্ছে সে কোনো খারাপ স্বপ্ন দেখছে। এটা সত্যি হতে পারে না। কিছুতেই না। ওর ইন্ধন এমন করতে পারে না। পঙ্খি কম্পিত স্বরে বললো।
–ম মমজা করছেন আপনি তাইনা? দেখুন এমন বিচ্ছিরি মজা আমার একদম পছন্দ না। বন্ধ করুন এসব। আর সত্যি কথা বলুন।
ইন্ধন শান্ত সুরে বললো।
–তোমার মনে হয় আমি এমন একটা বিষয় নিয়ে মজা করবো? এটাই সত্যি। সবাইকে আমিই মেরেছি।
পঙ্খি এবার চিৎকার করে বলে উঠলো।
–না…..আমি মানি না। আপনি মিথ্যা বলছেন। আমি জানি আপনি মিথ্যা বলছেন। বলুন না কেন মিথ্যা বলছেন?
–তোমার মানা না মানায় সত্যি বদলাবে না। এটাই সত্যি পঙ্খি। এটাই মানতে হবে তোমাকে। আমিই সেই খু,নী।
–না না না,, সব মিথ্যা, সব মিথ্যা, সব মিথ্যা। মানি না এসব কিচ্ছু। আমি জানি আমার রাজকুমার এমন কাজ কখনো করতে পারে না। কখনো না,কখনো না,কখনো না।
–দেখ প্রমাণ তোমার সামনেই আছে। এরচেয়ে আর বড়ো প্রমাণ কী হতে পারে যে আমিই খু,নী? তাই সত্যি টা মেনে নাও। আর তুমি চাইলে আমাকে পুলিশেও দিতে পারো। আমি বাঁধা দিবোনা।
পঙ্খি দুই হাত নিজের দুই কানে চেপে ধরে উচ্চস্বরে বললো।
–চুপ করুন আপনি, চুপ করুন। আপনার পায়ে পড়ি আর এসব বলেন না। আমি সইতে পারছিনা।
পঙ্খি ইন্ধনের কাছে এসে দুই হাতে ইন্ধনের মুখটা ধরে আকুতি ভরা কন্ঠে বললো।
–প্লিজ এসব বলা বন্ধ করুন না। কেন মিথ্যে বলছেন? দেখুন আপনার পঙ্খির কষ্ট হচ্ছে। আপনি না আপনার পঙ্খির কষ্ট দেখতে পারেন না। তাহলে কেন এসব বলে কষ্ট দিচ্ছেন? কেন মিথ্যে বলছেন? প্লিজ সত্যি টা বলুন না? আপনি কী কাউকে বাঁচানোর জন্য এমন করছেন? বলুন না? কাকে বাঁচাতে চাইছেন আপনি? আই প্রমিজ আমি কাউকে বলবোনা তাঁর কথা। তবুও সত্যি টা বলুন।
ইন্ধন শক্ত মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে রইলো। পঙ্খির হাত দুটো নামিয়ে দিয়ে বললো।
–কাউকে বাঁচাতে চাইছিনা আমি। যা বলেছি ওটাই সত্যি। সত্যি টা যত তাড়াতাড়ি মেনে নিবে ততই তোমার জন্য ভালো হবে। কারণ সত্যি এটাই। এই ব্যাতিত আর কোনো সত্যি নেই।
পঙ্খি অশ্রুসিক্ত চোখে তাকিয়ে বললো।
–বুঝতে পেরেছি আপনি বলবেন না তাইতো? ঠিক আছে।
এতটুকু বলে পঙ্খি হঠাৎ ড্রয়ারের মাঝে থাকা চা,কু টা হাতে তুলে নিলো। তা দেখে চমকে গেল ইন্ধন। কিছু বলার আগেই পঙ্খি আচমকা চা,কু টা নিজের গলার কন্ঠনালী বরাবর তাক করলো। আৎকে উঠলো ইন্ধন। আতঙ্কিত কন্ঠে বললো।
–কী করছ পঙ্খি? ছেড়ে দাও ওটা। লেগে যাবে তোমার।
পঙ্খির কাছে এগিয়ে যেতে নিলেই পিছে সরে গেল পঙ্খি। চা,কু গলায় ধরে বললো।
–আমার কাছে আসবেন না। নাহলে কিন্তু আমি চা,কু চালিয়ে দিবো। আগে বলুন কী লুকাচ্ছেন আপনি? কেন মিথ্যে বলছেন? কাকে বাঁচাতে চাইছেন? সত্যি সত্যি বলুন নাহলে কিন্তু আমি নিজের গলায় চা,কু চালিয়ে দিবো।
ভয়ে অস্থির হয়ে গেল ইন্ধন। মিনুতির সুরে বললো।
–পঙ্খি, জান আমার, প্লিজ ফেলে দাও ওটা। তোমার লেগে যাবে তো।
–লাগুক। এরথেকেও বেশি লাগছে আপনার এই মিথ্যে কথাগুলো। তাই সত্যি কথা বলুন। কাকে বাঁচাতে চাইছেন আপনি? কাকে হ্যাঁ? নিশ্চয় আপনার আপনজন কেউ। কে বলুন? আপনার বাবা? নাকি আপনার চাচী? নাকি অন্য কেউ? বলুন কে সে?
–কেন জিদ করছ পঙ্খি? আমি কাউকেই বাঁচাতে চাইছিনা। কেন মানছনা তুমি? তুমি ছু,রি টা আগে ফেলো। তোমার লেগে যাবে। প্লিজ ফেলে দাও। থ্রো ইট ড্যাম ইট।
–না ফেলবোনা। আগে আপনি সত্যি বলুন। বলুন কেন করেছেন এমন?
বলতে বলতে চা,কু,র হালকা ছোয়া লাগলো পঙ্খির গলায়। যার দরুন হালকা কেটে র,ক্তও বের হতে লাগলো। যা দেখে এবার পুরো পাগল হয়ে গেল ইন্ধন। ভয়ে হৃদপিণ্ড জমে গেল তার। মস্তিষ্ক কাজ করছে না। সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে তার। শুধু বারবার বলে যাচ্ছে।
–পঙ্খি দেখো লেগে যাচ্ছে তোমার। প্লিজ সোনা কথা মানো আমার। জিদ করোনা ফেলে দাও ওটা।
কিন্তু পঙ্খিও দৃঢ় কঠিন হয়ে আছে। সেও বারবার একই কথা বলে যাচ্ছে।
–বলুন কাকে বাঁচাতে চাইছেন আপনি? বলুন নাহলে আমি এবার সত্যি সত্যিই চা,কু চালিয়ে দিবো।
ইন্ধন আর কিছু ভাবতে পারছেনা। মস্তিষ্ক শূন্য হয়ে যাচ্ছে তার। এই মুহূর্তে পঙ্খি ছাড়া আর কোন খেয়াল আসছেনা তাঁর মাথায়। পঙ্খি শুধু একই কথা বলে যাচ্ছে।
–বলুন কাকে বাঁচাতে চাচ্ছেন আপনি? কাকে?
ইন্ধন আচমকা উচ্চস্বরে বলে উঠলো।
“”””””তোমাকে””””””‘
থমকে গেল পঙ্খি। সাথে থমকে গেল যেন সবকিছুই। আশেপাশের সবকিছু ধোঁয়াশা হয়ে গেল। কোনকিছুরই যেন আভাস পাচ্ছে না সে। কর্ণ গৃহে শুধু একটা কথাই বারি খেতে লাগলো, “” তোমাকে””। ইন্ধন কী বললো এটা? তোমাকে মানে কী? সেকি বলতে চাচ্ছে আমিই করেছি এসব? পঙ্খির মন মস্তিষ্ক যেন জমে বরফ হয়ে যাচ্ছে। বিস্মিত কন্ঠে কোনরকমে বলে উঠলো।
–তো তোমাকে মানে? কী বলতে চাচ্ছেন আপনি?
ইন্ধনের যেন হুঁশ ফিরলো। ঘাবড়ে গেল সে। যেটা সে বলতে চাচ্ছিলনা সেটাই মুখ ফস্কে বলে ফেললো। ইন্ধন কথা ঘুরানোর জন্য তড়িঘড়ি করে বললো।
–মা মানে আমি বলতে চাচ্ছিলাম তোমাকে এভাবে দেখে কষ্ট হচ্ছে আমার। প্লিজ চা,কুটা নামিয়ে রাখো।
ইন্ধনের কথায় পঙ্খি মোটেও আস্বস্ত হলো না।বরং তাঁর সন্দেহের মাত্রা আরও গাঢ় হলো। সে অনড় হয়ে বললো।
–কথা ঘোরাবেন না। আপনি আমার কথা বলেছিলেন। হ্যাঁ তাইতো, আপনার সবচাইতে প্রিয় ব্যাক্তি তো আমিই। তারমানে আপনি আমাকে বাঁচানোর জন্য মিথ্যে বলছিলেন? তবে কী আমিই সেই খু,নী? আমি মেরেছি সবাইকে? কিন্তু এটা কী করে সম্ভব? আ আমি কখন, কবে,কীভাবে…..
আর ভাবতে পারলোনা পঙ্খি। শরীরের সব শক্তি যেন হঠাৎ শুন্যের কোটায় পৌঁছে গেল। হাত থেকে ঠাস করে ছু,রি টা পড়ে গেল। নিস্তব্ধ হয়ে মেঝেতে ধপ করে বসে পড়লো পঙ্খি। মন মস্তিষ্ক সব যেন শূন্য খালি হয়ে গেছে। চক্ষু যুগলে অশ্রুপাত ঘটলো। পঙ্খিকে এভাবে দেখে হৃদয়ে অগ্নি জ্বলে উঠলো ইন্ধনের। দাউদাউ করে জ্বলে উঠলো সারা বক্ষপিঞ্জর। যেই ভয়টা তাড়া করছিলো ওঁকে সেটাই আজ প্রতীয়মান হয়ে গেল। এতো চেষ্টা করেও ঠেকাতে পারলোনা সে। ইন্ধন ছুটে গেল তার প্রিয়তমার কাছে। দুই হাতে পঙ্খির মুখটা আগলে ধরে মায়া ভরা কন্ঠে বললো।
–পঙ্খি শোন আমার কথা। কিচ্ছু করোনি তুমি। তোমার কোনো দোষ নেই। তুমি ইচ্ছে কিছু করোনি। তুমি সজ্ঞানে কিছুই করোনি।
পঙ্খি এবার চকিত চোখে তাকিয়ে বললো।
–তা তারমানে সত্যিই কিছু করেছি আমি। কী করেছি বলুন না? প্লিজ আমি জানতে চাই সবকিছু। সব খুলে বলুন।
–আচ্ছা বলছি। আগে তুমি একটু শান্ত হও।
ইন্ধন পঙ্খির চোখের পানি মুছে দিয়ে পঙ্খিকে পাঁজা কোলে তুলে নিয়ে ওকে বিছানায় বসিয়ে দিলো। তারপর হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নরম সুরে বললো।
–পঙ্খি নিজেকে একটু শান্ত রাখো। শান্ত হয়ে শুনবে আমার কথা। একদম হাইপার হবে না। আমি বলছি সবকিছু।
পঙ্খি মাথা ঝাকিয়ে সায় জানালো। ইন্ধন এবার বলতে শুরু করলো।
–আমি কিছুদিন হলো খেয়াল করছিলাম তুমি মাঝে মধ্যে কেমন যেন বেখেয়ালি হয়ে যাও। আবার মাঝে মাঝে তুমি কিছু সময়ের কথা ভুলে যাও। আমি সেগুলো নিয়ে তেমন মাথা ঘামায়নি। ভেবেছিলাম হয়তো আমার মনের ভুল। তবে আমার প্রথম সন্দেহ হয় রাবেয়া মজুমদারের মৃ,ত্যু,র দিন। সেদিন সকালে তোমার কাপড়ের সাথে আমি একটু র,ক্তের দাগ দেখতে পাই। তোমার মনে আছে আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এটা কীসের দাগ? তখন তুমি বললে কি জানি রান্নার সময় কিছু লেগেছে হয়তো।
পঙ্খির মনে পড়লো সেই কথা। সেদিন ইন্ধন ওঁকে এই কথা জিজ্ঞেস করেছিল। কিন্তু কেন যেন ও মনে করতে পারছিলো কীভাবে এই দাগ লেগেছে। তাই ওই কথা বলেছিল। ইন্ধন বলতে লাগলো।
–সেদিনও আমি বিষয় টা অতো ঘাটাই না। মনে করেছিলাম তোমার কথাই হয়তো ঠিক। এমনিতেও রাবেয়া মজুমদারের কথা শোনার পর থেকে আমার মাথায় তখন অন্য কোনো কিছু ঢুকছিল না। শুধু ওই কথাগুলোই কুঁড়ে খাচ্ছিল আমাকে।তাই আর অন্য কোন খেয়াল ছিলোনা। তারপর আসে সামছুল মজুমদারের মৃ,ত্যু,র দিন। সেদিন রাতে আমার খুব মাথাব্যথা হচ্ছিল। আমি একটা পেইন কিলার খাওয়ার জন্য ঔষধের বক্স টা খুলি। তখন হঠাৎ আমার চোখ পড়ে ঘুমের ঔষধের পাতার ওপর। আমার জানামতে আমি ওই পাতা থেকে মাত্র একটা ঔষধ খেয়েছিলাম। সেদিন রাবেয়ার কথা শোনার পর ওই একটা বড়ি খেয়েছিলাম আমি। কিন্তু পাতায় অনেক গুলো বড়িই খালি ছিলো। বিষয় টা আমার কাছে কেমন খটকা লাগলো। তখন তোমাকে আবারও ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করি বড়ি এতো খালি কেন? কেউ কী খেয়েছে নাকি? তুমি তখন কি জানি আমি জানি না।
পঙ্খির আবারও মনে পড়লো সেদিনের কথা। হ্যাঁ ইন্ধন সেদিন ওঁকে জিজ্ঞেস করেছিল। কিন্তু সেদিনও ও জানতো না বড়িগুলো আসলে কী হয়েছে? তাই সেদিন ও বলেছিল ও জানে না। ইন্ধন আরও বলতে লাগলো।
–সেদিন আর আমি আনদেখা করলাম না বিষয় টা। তোমার কথায় কেন যেন সন্দেহ হলো আমার। তাই আমি নজর রাখতে লাগলাম তোমার ওপর। রাতে রোজ খাবার পর তুমি আমার জন্য কফি আনো। সেদিনও তুমি কফি বানাতে গেলে।কফি নিয়ে যখন রুমে আসলে তখন আমি ওয়াশরুমের দরজা হালকা খুলতেই দেখলাম তুমি ঔষধের পাতা থেকে ঘুমের বড়ি বের করছ। তারপর সেটা কফিতে মিশিয়ে দিলে। এসব দেখে আমি ভীষণ অবাক হয়ে গেলাম।
এবারে পঙ্খিও চমকে গেল। এসব কী বলছে ইন্ধন? আমি কখন এই কাজ করলাম? আমার মনে নেই কেন? ইন্ধন বলতে থাকলো।
— তুমি আমাকে কেন ঘুমের ঔষধ দিলে সেটা জানাট জন্য আমি কৌশল করে কফিটা না খেয়ে ফেলে দিলাম। তারপর ঘুমের ভান করে শুয়ে পড়লাম। তারপর যা হলো তা কল্পনারও বাইরে ছিলো।
পঙ্খি ভয়ার্ত কন্ঠে বললো।
–কি হয়েছিল?
–বলছি শোন। কিন্তু তুমি শান্ত থেক।
(ফ্ল্যাশব্যাক)
রাত তখন মধ্যরাত প্রায়। ইন্ধন ঘুমের ভান ধরে শুয়ে আছে। হঠাৎ বুঝতে পারলো ওর পাশ থেকে পঙ্খি উঠে গেল। ইন্ধন হালকা করে চোখ খুলে দেখলো পঙ্খি সটান হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে আলমারির দিকে গেল। তাঁর চোখ মুখের ভাবভঙ্গি কেমন কঠোর শক্ত হয়ে আছে।পঙ্খির এমন মুখভঙ্গি সে আগে কখনো দেখেনি। কেমন অচেনা লাগছে তাঁকে। পঙ্খি আলমারি খুলে ড্রয়ার থেকে গ্লাভস বের করে হাতে পরে নিলো। তারপর ধারালো একটা চা,কু বের করলো। চা,কু টা সাবধানে জামার ভিতর লুকিয়ে ফেললো। তারপর আস্তে আস্তে দরজা খুলে বাইরে গেল। এসব দেখে হতভম্ব হয়ে গেল ইন্ধন। পঙ্খি কী করতে চাইছে সেটা দেখার জন্য সেও উঠে ধীরে ধীরে দরজা খুলে দূর থেকে পঙ্খির ওপর নজর রাখলো। পঙ্খি ধীরে ধীরে সামছুল মজুমদারের রুমের সামনে গেল। সামছুল মজুমদার একাই এক রুমে থাকতেন। পঙ্খি সেই রুমের দরজায় আস্তে আস্তে নক করলো। কিছুক্ষণ পর সামছুল মজুমদার বেড়িয়ে এলো। পঙ্খি কিছু একটা বললো তাঁকে। তারপর দুজন একসাথে বাড়ির বাইরে যেতে লাগলো। ইন্ধনও তাদের পেছনে গেল। ওরা দুজন বাড়ির পাশের আম বাগানে এলো। ইন্ধন দূরে গাছের পিছনে লুকিয়ে দেখতে লাগলো ওদের। ওদের মাঝে কিছু কথা হচ্ছে দূরে থাকায় ইন্ধন ভালো করে শুনতে পারলো। অন্ধকারে তাদের চেহারাও ভালো করে বোঝা যাচ্ছে না। শুধু আফসা আফসা দেখা যাচ্ছে। তারপর যা ঘটলো তা ছিলো ইন্ধনের জন্য বিস্ফোরক। কোনকিছু বুঝে ওঠার আগেই পঙ্খি সেই চা,কু টা বের করে সামছুল মজুমদারের পেটে গেঁথে দিলো। ইন্ধনের ওপর যেন বাজ পড়লো তখন। ঘটনার আকস্মিকতায় স্তব্ধ হয়ে গেল সে। পঙ্খি একের পর চা,কুর আঘাত করে যাচ্ছে আর উচ্চস্বরে বলছে।
–আমার ইন্ধন কে কেঁড়ে নিতে চাস? কী বলেছিলি তুই আমার ইন্ধন কে মারবি? তোর এতবড় সাহস? এখন দেখ কেমন লাগে। আমার ইন্ধন কে যে কেঁড়ে নিতে চাইবে তাদের সবারই এই হাল হবে। আমার ইন্ধনের দিকে যে কু নজর দিবে তাঁকে আমি এই দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিবো। আমার ইন্ধন কে কেউ কেঁড়ে নিতে পারবেনা। কেউ না।
চা,কু,র আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেল সামছুল মজুমদারের শরীর। র,ক্তা,ক্ত শরীর মাটিতে পড়ে রইলো। এই দৃশ্য দেখে ইন্ধনের হৃদপিণ্ড জমে বরফ হয়ে গেল যেন। পঙ্খির এই ভয়ংকর রুপ ওর বুক কাঁপিয়ে দিল। এই পঙ্খি কে? একেতো সে চিনে না। এটা ইন্ধনের পঙ্খি না। ইন্ধনের পঙ্খি এমন হতেই পারে না। ওর পঙ্খিতো সহজসরল একটা মেয়ে।তার এমন ভয়ংকর রুপ কি করে হতে পারে? হতবুদ্ধি হয়ে যায় ইন্ধন। হঠাৎ করে এমন হবে ইন্ধন ভাবতেই পারেনি।কোন কিছু ঠাওর করতে করতেই এটা ঘটে গেল। এসব হবে আগে বুঝতে পারলে অন্তত সামছুল মজুমদারকে বাঁচানোর চেষ্টা করতো সে। কিন্তু এখন তো অনেক দেরি হয়ে গেছে। পঙ্খি ততক্ষণে সামছুল মজুমদারকে পরপারে পাঠিয়ে দিয়েছে। নিজের কার্য শেষ করে পঙ্খি আবার ফিরে আসতে নিলো। এতক্ষণ আড়ালে থাকলেও এবার ইন্ধন বেড়িয়ে এসে পঙ্খির সামনে এসে দাঁড়াল। ইন্ধন কে পঙ্খি আৎকে উঠলো। মুহুর্তেই যেন র,ক্তশূণ্য হয়ে গেল সে। ভয়ে জমে গেল সে। ইন্ধন অবিশ্বাস্য কন্ঠে বললো।
–পঙ্খি, কী করছিলে এসব? তারমানে তুমিই সবাইকে মারছ? কিন্তু কেন?
পঙ্খি কিছু বলতে পারলোনা। হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়লো সে। ঘাবড়ে গেল ইন্ধন। পঙ্খিকে পাঁজা কোলে তুলে বাড়িতে নিয়ে এলো সে। রুমে এসে পঙ্খিকে বিছানায় শুইয়ে দিলো। পঙ্খির হাতের গ্লাভস খুলে আর চা,কু টা নিয়ে ইন্ধন আলমারির ড্রয়ারে রেখে দিলো। বিছানায় এসে পঙ্খির মুখের দিকে মায়া ভরা চোখে তাকিয়ে রইলো সে। ও বুঝতে পারছে না, ওর কোমল হৃদয়ের পঙ্খি এমন কীভাবে হয়ে গেল? কেন করছে সে এসব? ভাবতে ভাবতেই একসময় ঘুমিয়ে যায় ইন্ধন। সকালে সবার হইচই শুনে ওরা দুজনেই জেগে ওঠে। ইন্ধন বুঝতে পারে এতক্ষনে নিশ্চই সবাই লা,শ দেখে ফেলেছে। পঙ্খি তখন ভয়ার্ত কন্ঠে ইন্ধন কে বললো।
–কী হয়েছে? এভাবে সবাই হৈচৈ করছে কেন? আবারও কী কারও মৃ,ত্যু হলো নাকি? এসব হচ্ছে কী? আমিতো কিছুই বুঝতে পারছিনা। কে এই খু,নী, যে রোজ রোজ সবাইকে মারছে??
পঙ্খির কথা শুনে হতবাক হয়ে গেল ইন্ধন। ও বুঝতে পারছে না পঙ্খি এমন করে কেন বলছে যেন ও কিছু জানেই না? ও কি ইচ্ছে করে নাটক করছে? নাকি সত্যিই কিছু মনে নেই ওর? পঙ্খির কী মানসিক কোন সমস্যা হয়েছে? ইন্ধনের এই সন্দেহ আরও গাঢ় হলো যখন সামছুল মজুমদারের লা,শ দেখে পঙ্খি জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। ইন্ধন নিশ্চিত হয়ে গেল পঙ্খির নিশ্চয় কোনো সমস্যা হয়েছে। নাহলে যাকে নিজেই মারলো তাঁকে দেখেই আবার অজ্ঞান কীভাবে হয়ে গেল? তাই ইন্ধন আর একমুহূর্তও দেরী করে না। পঙ্খিকে নিয়ে ও শহরের একটা নামকরা প্রাইভেট হসপিটালে নিয়ে আসে। যেখানে ইন্ধনের এক ডাক্তার বন্ধু আছে। সে একজন সাইকোথেরাপিস্ট (মনোবিজ্ঞানী)। ইন্ধন পঙ্খিকে তার কাছে নিয়ে যায়।
সেখানে গিয়ে ইন্ধন ওর ডাক্তার বন্ধুকে সব খুলে বলে। ওর বন্ধু পঙ্খিকে চেকআপ করে। এম.আর.আই সহ আরও কিছু টেস্ট করে। পঙ্খি যাতে বুঝতে না পারে তাই ওকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দেয়। চেকআপ শেষে পঙ্খির রিপোর্ট গুলো দেখে ইন্ধনকে কেবিনে ডাকে ওর বন্ধু। ইন্ধন কেবিনে এসে ডাক্তারের সামনে বসে ভয়ার্ত কন্ঠে বলে।
–রায়ান, আমার পঙ্খির কী হয়েছে বলনা? ও এমন কেন করছে? আমার খুব ভয় করছে। ওর মারাত্মক কিছু হয়নি তো? বলনা রায়ান? ওর কিছু হবে নাতো?
–রিলাক্স ইন্ধন, শান্ত হ। আমি সব বলছি। তার আগে তুই বল, তুই পঙ্খিকে কতদিন হলো জানিস? আই মিন কতবছর হলো তোদের সম্পর্কের? আমাকে একদম প্রথম থেকে সব খুলে বল।পঙ্খির ব্যাপারে তুই যতটুকু জানিস তাঁর এক এক ডিটেইলস আমাকে সব খুলে বল। আর পঙ্খির আগের জীবন কেমন ছিলো সেগুলোও সব খুলে বল আমাকে।
ইন্ধন এক এক করে সব খুলে বলল রায়ানকে। পঙ্খির ব্যাপারে সব খুলে বলল ও। সব শুনে রায়ান কিছুক্ষণ ভাবলো। তারপর গম্ভীর সুরে বলল।
–হুমম,তারমানে আমি যা সন্দেহ করেছি সেটাই হয়েছে।
–মানে,কী হয়েছে? বলনা রায়ান, আমার ভীষণ ভয় করছে। কী হয়েছে আমার পঙ্খির?
–পঙ্খির “স্প্লিট পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার” হয়েছে। মানে পঙ্খির মাঝে অন্য আরেকটা সত্তার জন্ম হয়েছে। যেটার কথা পঙ্খি নিজেও জানে না।
ইন্ধনের পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে গেল। মন, মস্তিষ্ক,শরীর সব কাঁপতে লাগলো। বিস্মিত কন্ঠে সে বলল।
–কী বলছিস এসব? কীভাবে সম্ভব এটা?
–শান্ত হ ইন্ধন। অসম্ভব কিছুই না। তোর কথা অনুযায়ী বুঝতে পারলাম পঙ্খি খুব কল্পনাপ্রবণ মেয়ে। যেমনটা তুই বললি পঙ্খি তোকে রাজকুমার ভাবতো আর নিজেকে রাজকুমারী। দাদীর বলা রুপকথার কাহিনির জায়গায় নিজেকে কল্পনা করতো। তোর কথায় বোঝা গেল পঙ্খি অন্তর্মুখী স্বভাবের মেয়ে। তাই নিজের দুঃখ কষ্ট সবসময় নিজের মাঝে চেপে রাখে। যেমনটা তুই বললি, পঙ্খি ছোট থেকে অনেক দুঃখ কষ্ট পেয়ে বড় হয়েছে। জন্মের পর মাকে হারিয়েছে, তারপর তোকে পেল,দাদীর কাহিনি অনুযায়ী নিজেকে সেই দুঃখী রাজকুমারী আর তোকে নিজের রাজকুমার ভাবতো, কিন্তু তুইও একদিন ওর জীবন থেকে চলে গেলি। তারপর দাদীকেও হারালো, বাবা থেকেও না থাকার মতো, ভাই ভাবিরাও ওকে ভালো চোখে দেখতো না। আবার ওর পড়ালেখাও স্বপ্নও নষ্ট হয়ে গেল। জোর করে বিয়ে দিলো নাঈমের সাথে। আবার এবাড়িতেও এসেও ওকে অনেক ভোগান্তি পেতে হয়েছে। তো ছোট থেকে এসব কষ্ট ধীরে ধীরে ওর মনে জমতে থাকে। যখন কেউ তাঁর মনে অনেক বেশি কষ্ট,দুঃখ বা ভয় জমা করে রাখে, তখন এই অনুভূতি গুলো জমতে জমতে একটা প্রগাঢ় আকার ধারণ করে। এবং একসময় এটা এতটাই গাঢ় আর শক্তিশালী হয়ে যায় যে,নিজের অজান্তেই মস্তিষ্ক নিজের মাঝে একটা আলাদা সত্তা গড়ে তোলে। আর সেই সত্তা ব্যাক্তির নিজস্ব সত্তার থেকে পুরো ভিন্ন থাকে। ভিন্ন সত্তাটি অনেক বেশি ভয়ংকর আর চতুর হয়ে থাকে। পঙ্খির সাথেও এমনটাই হয়েছে। পঙ্খিও ছোটবেলা থেকেই অনেক কষ্ট পেয়েছে, একের পর এক সবাইকে হারিয়েছে। তাই ওর মনে একটা ভয় গেঁথে গিয়েছে।পঙ্খির মনে হয় ও যাকেই ভালোবাসে সেই ওর জীবন থেকে হারিয়ে যায়। তাই ও ভাবে তোকেও হয়তো ও হারিয়ে ফেলবে। আর এই ভয়টাই ওর ভেতরে অন্য সত্তার জন্ম দিয়েছে। যখন পঙ্খির মনে হয় কেউ তোকে ওর কাছ থেকে কেঁড়ে নিতে চাচ্ছে তখনই ওর মাঝের সেই সত্তা জেগে ওঠে। এবং সেই তাঁদের খু,ন করে। পঙ্খির সেই সত্তার সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তবে সেই সত্তা টা পঙ্খির সম্পর্কে সব জানে। এবং সে পঙ্খির সাহায্য করতে চায়। আর এই সত্তা টা খুবই চালাক এবং ভয়ংকর। সে ভালো করেই জানে কীভাবে কী করতে হবে? আর পঙ্খিকে যাতে কেউ সন্দেহ না করে সেটারও খেয়াল রাখে সে। তাইতো সে এমন ভাবে সব খু,ন গুলো করেছে যাতে কেউ পঙ্খির ওপর সন্দেহ না করে।ওই সত্তা সবসময় থাকে না। যখন কেউ তোকে নিয়ে কিছু বলে বা তোর কোন ক্ষতি করতে চায় তখনই ও হাজির হয়। আর কাজ শেষ হলেই সে চলে যায়। আর থাকেনা। তাই পঙ্খির আর ওসব কিছু মনে থাকে না। হয়তো আমার কথা তোর বিশ্বাস হচ্ছে না। চল আমি তোকে নিজের চোখেই সব দেখাচ্ছি।
রায়ান ইন্ধন কে সাথে নিয়ে একটা কেবিনে এলো। যেখানে পঙ্খি শুয়ে আছে। আর ওর মাথায় অনেক গুলো তার লাগানো আছে। রায়ান ইন্ধন কে নিয়ে পঙ্খির সামনে এসে বসলো। রায়ান তাঁর হিপনোটিজম পদ্ধতি অবলম্বন করে পঙ্খির ভেতরের সেই সত্তাকে ধীরে ধীরে ডাকলো। এবং একসময় হিপনোটাইজ হয়ে চোখ বন্ধ করা অবস্থায়ই পঙ্খি জবাব দিলো।
–আমাকে কেন ডেকেছ?
রায়ান তখন বলল।
–আগে বলো তোমার নাম কী?
–আমার নাম রণয়ী।
–পঙ্খিকে চেন তুমি?
–হ্যাঁ চিনি,ও একটা ভীতু নির্বোধ মেয়ে। ও শুধু কাঁদা ছাড়া কিছুই করতে পারে না। তাইতো আমি এসেছি। ও যা করতে পারে না সেটা আমি করি।
–কী করো তুমি? আর কেন করো? কেন মারো সবাইকে?
–কেন মারবোনা! সবাই শুধু আমার ইন্ধন কে কেঁড়ে নিতে চায় আমার কাছ থেকে। আমি তা হতে দিবোনা। এতদিন পর আমি আমার ইন্ধন কে পেয়েছি। ওঁকে আমি হারাতে দিবো না। কেউ কেঁড়ে নিতে পারবেনা ওকে আমার কাছ থেকে। যে কেঁড়ে নিতে আসবে তাঁকেই ম,র,তে হবে। যেমন ওদের ম,র,তে হয়েছে। প্রথমে ওই নাঈম। ওর আসাতেই ইন্ধন আমার কাছ থেকে দূরে চলে যাচ্ছিল।আমাকে ভুল বুঝে দূরে ঠেলে দিচ্ছিল। আমার ওপর রাগ করে ইন্ধন নিজেকে আঘাত করেছিল। তাইতো আমি সেদিন প্রথম আসি। রাতে যখন ইন্ধন গভীর ঘুমে ছিলো তখন আমি হাতে গ্লাভস পড়ে নেই। গ্লাভস গুলো ইন্ধন বিদেশ থেকে সবার জন্য এনেছিল। ছায়া আমাকেউ একজোড়া দিয়েছিল। কিন্তু আমি কখনো পড়িনি। তবে সেদিন পড়ি সেটা তারপর রান্না ঘর থেকে ছু,রি আর নিয়ে ওর ঘরে গিয়ে ওঁকে ডাক দিয়ে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাই তারপর মে,রে ফেলি ওঁকে। তারপর আসে ওই তুশি। ওর কত্তো বড়ো সাহস! ও বলে কিনা আমার ইন্ধন কে ও নিজের করে নিবে। কেঁড়ে নিবে আমার কাছ থেকে। তাই আমি আবার আসি। ইন্ধনের কফিতে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে ওঁকে খাইয়ে দেই। তারপর ইন্ধনের ফোন থেকে তুশিকে মেসেজ পাঠাই পাশের আমবাগানে দেখা করতে। তারপর মেসেজ ডিলিট করে দেই। তারপর গ্লাভস পড়ে ছু,রি নিয়ে আমি সেখানে যাই। আর তুশিও নাচতে নাচতে চলে আসে ওখানে। ভাবে ইন্ধন ওকে ডেকেছে। কিন্তু ওর জন্য তো মওত অপেক্ষা করছিল। ও আমার ইন্ধনের ওপর নজর দিয়েছিল তাই ওর চোখ দুটোই উপড়ে ফেলি আমি।আর ওর মোবাইল ভেঙে গুড়ো করে পাশের নর্দমায় ফেলে দেই।যাতে ওর ফোনে ইন্ধনের ম্যাসেজ কেউ দেখতে না পায়। তারপর আসে ওই জা,নো,য়া,র জুবায়েদের পালা। ওই জা,নো,য়া,র টা আমাকে ভোগ করতে চেয়েছিলো।যখন হালকা হালকা জ্ঞান ফিরছিলো পঙ্খির তখন ওই জুবায়েদের কু বাসনার কথা শুনতে পাই। আর তখনই হাজির হই আমি। ওই জা,নো,য়া,র কে শেষ করা তো সবচেয়ে বেশি জরুরি ছিলো। কিন্তু সেদিন আমার কাছে হাতিয়ার ছিলোনা। তাই প্রথমে ওর অ,ন্ড,কোষে লাথি মেরে দূর্বল করি ওকে। তারপর ওড়না মুখে পেঁচিয়ে ওর শ্বাসরুদ্ধ করে মারি ওঁকে। কিন্তু তখনই কনিকা ভাবিকে ওদিকে আসতে দেখি। তাই আমি চলে যাই। আর পঙ্খি অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে ওখানে। তারপর ওই রাবেয়া। ওতো আমার ইন্ধন কেই জানে মারতে চেয়েছিলো। তাই ওকেও একই ভাবে মেরে ফেলি। আর ওই সামছুল মজুমদারকেউ। সেও আমার ইন্ধনকে মারার হুমকি দিয়েছিল। তাই ওকেও শেষ করে দেই। যেদিন কাউকে মারতে যাই সেদিন ইন্ধনের কফির সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে দেই আমি। আমার ইন্ধন কে যেই কেড়ে নিতে চাইবে তাঁর হাল এমনই হবে।
রায়ান এবার ওর হিপনোটিজম সেশন বন্ধ করে।এতক্ষণ ধরে এসব শুনে ইন্ধন স্তম্ভিত হয়ে যায়। পুরো পৃথিবী টা যেন ওর চোখের সামনে গোল গোল ঘুরছে। ওর পঙ্খির সাথে এতকিছু ঘটে যাচ্ছে আর ও কিনা বুঝতেই পারেনি। কেমন স্বামী ও? ইন্ধন ভয়ার্ত কন্ঠে রায়ানকে বললো।
–রায়ান পঙ্খির এই রোগের কী কোনো চিকিৎসা নেই? আমার পঙ্খি কী ভালো হবেনা কখনো? বলনা রায়ান?
–দেখ ইন্ধন চিকিৎসা আছে। তবে হান্ড্রেড পার্সেন্ট কার্যকারী হওয়ার সম্ভাবনা কেউই দিতে পারবেনা। দেখ যতক্ষণ পঙ্খির এই সত্তা সবার থেকে লুকিয়ে আছে ততক্ষণ তবুও বেশি ভয় নেই। তবে যখন এই সত্তা সকলের সামনে এসে পড়বে তখন পঙ্খিকে নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হয়ে যাবে।আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে যাবে ও। তখন যেকোনো দূর্ঘটনা হয়ে যেতে পারে। তাই সবার আগে পঙ্খিকে এখান দূরে কোথাও নিয়ে যেতে হবে। যাতে পঙ্খির ওপর কোনরকম স্ট্রেস না থাকে। তারপর পঙ্খির থেরাপি সেশন শুরু করতে হবে।
–হ্যাঁ ঠিক আছে তাই করবো আমি। আমার পঙ্খিকে এসবের থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাবো। ওকে ভালো করে তুলবো আমি।
বর্তমান,
এতক্ষণ ইন্ধনের কাছে সব কথা শুনছিলো পঙ্খি। সব শুনে যেন অনুভূতি শূন্য হয়ে গেল পঙ্খি। পুরো পৃথিবী থমকে গেল যেন। ওর হাতে এতগুলো মৃ,ত্যু হয়েছে ভাবতেই অন্তর আত্মা কেঁপে উঠল পঙ্খির।
চলবে……