মৃত_কাঠগোলাপ – ২৬,২৭,২৮

0
716

#মৃত_কাঠগোলাপ – ২৬,২৭,২৮
#আভা_ইসলাম_রাত্রি
২৬

তখন বেলা প্রায় ১২টা। ধ্রুব লম্বা একটা ঘুম দিয়ে বেশ রয়েসয়ে জাগল। ঘন্টা ধরে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেতে নিচে এল। আয়েশী সোফার উপর বসে রয়েছে। ক্ষুধায় পেট চোঁ-চোঁ করছে। সকালে ৮ টায় ঘুম থেকে উঠেছে। এখন অব্দি পেটে একবিন্দুও দানাপানি পড়েনি। সার্ভেন্টকে বলবে, লজ্জায় পারছে না। নতুন বউ প্রথম দিন এসেই খাবার চাইছে। ইশ, ছিঃ ছিঃ! খাবার না পেয়ে আয়েশী শুধু পানি খাচ্ছে। ইতিমধ্যে দু বোতল পানি শেষ করা হয়েছে। এখন ফ্রিজ থেকে আরো একটা পানির বোতল নিয়ে বসেছে। ধ্রুব ঘুম থেকে উঠছে না কেন? ক্ষুধার জ্বালা আর সহ্য করা যাচ্ছে না।
‘ চলো, নাস্তা খাবে। ‘
ধ্রুব আয়েশীর কাছে এসে বলল। আয়েশী চোখ তুলে তাকাল। কালো প্যান্ট, সাদা শার্টের উপর কালো ব্লেজার পড়েছে। একদম তৈরি হয়ে এসেছে। কোথাও যাচ্ছে নাকি? খাবারের কথা শুনে আয়েশী চট করে সোফা ছেড়ে উঠে গেল। ধ্রুবর আগেই ধপাধপ খাবার টেবিলে দিকে হেঁটে গেল। পেছন পেছন ধ্রুব বুক টানটান করে হেঁটে এল। আয়েশী চেয়ারে বসে ধ্রুবর দিকে তাকাল। এই লোক হাঁটেও কি সুন্দর করে। মনে হয় যেন লাল বাগিচায় হাঁটছে। হাঁটার সময় দু হাত প্যান্টের পকেটে গুঁজে রাখবে, তারপর সোজা চেয়ে হাঁটবে। বুক দুটো সবসময় ফুলিয়ে রেখে কি বোঝাতে চায়? অহংকার? অহংকারে মাটিতে যেন পা’ই ফেলতে চায়না। সারাক্ষণ মুখ গোমড়া করে বসে থাকবে। শুধু আয়েশীর কাছে এলে তার যত বে’হায়া কাজ কারবার। বে’হায়া লোক! এই লোককে আয়েশীর একদম স’হ্য হয়না। তবে এখন আর সহ্য হওয়া না হওয়া দিয়ে কি কাজ? বিয়ে তো হয়েই গেছে। এখন মানিয়ে নিতে হবে। কিন্তু না, আয়েশী এই লোককে কখনোই মেনে নিবে না। বন্ধুর ভালোবাসাকে যে এত ছল চাতুরী করে বিয়ে করে, সে কারো ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না। সে ঘৃণার’ই যোগ্য।
সার্ভেন্ট খাবার বাড়ছে। পাশে দাঁড়িয়ে আছে ওসমান। ওসমানকে আয়েশী চেনে। ধ্রুবর পাশে সবসময় ছায়ার মত লেগে থাকে। সবাই নাস্তা করছে, পাশে ওসমান মাথা নত করে দাঁড়িয়ে আছে। দেখতে দৃষ্টিকটু লাগছে। তাই আয়েশী বলল,
‘ চাচা, আপনিও আমাদের সাথে খেয়ে নিন। ‘
ওসমান কিছু বলার আগে ধ্রুব গম্ভীর কণ্ঠে জানাল,
‘ না, ওসমানকে মাস শেষে টাকা দেওয়া হয়। সে নিজে কিনে খেতে পারবে। তুমি তোমারটা শেষ করো। ‘
আয়েশী ভ্রু কুঁচকে তাকাল। ওসমানের মুখটা অপমানে এটুকু হয়ে গেছে। আয়েশীর খুব মায়া হল। বাবার বয়সী লোকের সাথে এমন করে কেউ কথা বলে? কিন্তু ধ্রুব বলে। কারণ সে খা’রাপ। আয়েশী রাগ দেখাল,
‘ আপনি উনার সাথে এমন করে কথা বলছেন কেন? উনি আপনার বাবার বয়সী। ‘
সার্ভেন্ট আরো এক চামচ সবজি ধ্রুবর প্লেটে দিল। ধ্রুব খেতে খেতে বলল,
‘ বাবার বয়সী, বাবা তো না। আর বাবা হলেও ধ্রুবর সাথে খাবার খাবার জন্যে বিশেষ কেউ হতে হয়। ওসমান কোনো বিশেষ লোক না। অযথা তর্ক না করে খাও। নাহলে খাবার ছেড়ে উঠে পড়ো। ‘
আয়েশী অবাক হল। ধ্রুব কি নির্দয়। ধ্রুবর এ কথায় আয়েশী আজ নিশ্চয়ই খাবার ছেড়ে উঠে পড়ত। কিন্তু পেটে এখনো অনকে ক্ষুধা। এখনি কিছু খেতে না পেলে আজ সে ম’রেই যাবে। তাই আয়েশী চুপচাপ খেতে লাগল।
খাবার পর্ব শেষ হলে সার্ভেন্ট ধ্রুবর দিকে টিস্যু এগিয়ে দেয়। ধ্রুব টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে আয়েশীকে বলল,
‘ আমি বাইরে যাচ্ছি। ফিরতে বিকেল হবে। একা একা খারাপ লাগলে, বাড়ি ঘুরে দেখবে। ভালো লাগবে। আসছি আমি। ‘
আয়েশী হ্যাঁ-না কিছুই বলল না। ধ্রুব এগিয়ে এসে আয়েশীর কপালে চুমু খেল। আয়েশী রাগ হল। ধ্রুবর বুকে হাত রেখে ধাক্কা দিল। ধ্রুব সরল না। চুমু খেয়ে তৃষ্ণা নিবারণ হলে তারপরই সরে এল। ঠোঁট কামড়ে কৌতুক করে বলল,
‘ শরীরে চার আমার মাংস নেই, আর আমাকে শক্তি দেখাও।’
আয়েশী ক্ষেপে গেল। চেঁচিয়ে কিছু বলার আগে দেখা গেল ধ্রুব বড়বড় পা ফেলে বেরিয়ে যাচ্ছে। পেছনে আয়েশী ওড়না দিয়ে কপাল মুছতে মুছতে চেঁচাল,
‘ বে’হায়া লোক। সারাক্ষণ শুধু গা ঘেঁষার ধান্দা। ‘
_________________________________
অলস বিকেলে একা একা বসে থাকতে আয়েশীর একটুও ভালো লাগছে না। আয়েশী যখন একা থাকে তখন খুব করে মৃদুলের কথা মনে পড়ে। মৃদুলের কথা মনে হলে আয়েশীর কান্না আসে। ম’রে যেতে ইচ্ছে হয়। আত্মহত্যা যদি মহাপাপ না হত, তবে আয়েশী নির্ঘাত এতদিনে মৃদুলের বা পাশের কবরে শুয়ে থাকত। মৃদুলের সাথে গল্প করত। অনেক ভালোবাসা-বাসি করত। ইশ! কত ভালো দিন কাটত তাদের। কিন্তু এখন যেন আয়েশীর দিন কাটতেই চায়না। সারাক্ষণ মন খারাপ করে। কিছু খেতে ভালো লাগে না, ঘুমাতে ভালো লাগে না, হাসতে ভালো লাগে না, কিচ্ছুটি ভালো লাগে না। তবুও খেতে হয়, ঘুমাতে হয়, হাসতে হয়। কারণ আমাদের মনুষ্য জীবন এমন করেই প্রক্রিয়া করা। উপরওয়ালা আমাদের ভেতরের ইঞ্জিন এমন করেই তৈরি করেছেন। তারপর একটা চাবি লাগিয়ে ব্যাটারি চালু করে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাই আমরা আমাদের মনমত আমাদের জীবনকে চালাতে পারি না। উপরওয়ালার উর্ধ্বে কারো যাওয়ার ক্ষমতা নেই। তেমনি আয়েশীরও নেই।

ধ্রুবর কথামত, আয়েশী বাড়ি ঘুরতে বের হল। দু তলা রাজকীয় বাড়ি। বাড়ি দেখে যে কারো চোখ জুড়াতে বাধ্য। হয়তো ধ্রুব টাকা রাখার জায়গা পাচ্ছে না। তাই বাড়ির পেছনেই টাকার শ্রাদ্ধ করেছে। অথচ আয়েশী জানলো না, ধ্রুবর এই টাকার সমুদ্র সব কালো ধান্দা থেকে আগত। সৎ পথে নয়, বরং অসৎ পথে তৈরি ধ্রুবর এই রাজকীয় সাম্রাজ্য। কত গরীবের পেটে লাথি দিয়েছে, কত অনাথের হক মেরেছে, কত মানুষকে হ’ত্যা করেছে, তা ধ্রুব স্বয়ং বলতে পারবে না। হিসেব নেই এসবের। তাই তো তার এত-এত টাকা।
আয়েশী ভাবছে, ধ্রুব কি টাকার উপর ঘুমায় নাকি? হতেও পারে। ধ্রুবর দ্বারা সব সম্ভব।
আয়েশী বাড়ি ঘুরে বাগানে এল। একজন সার্ভেন্ট আয়েশীকে বাগান ঘুরিয়ে দেখাচ্ছে। এটা গোলাপের চারা, এটা হচ্ছে সূর্যমুখি, এটা আম গাছ, এটাতে লেবু হয়, এটা কৃষ্ণচূড়া গাছ, সার্ভেন্ট সব হাতে ধরে আয়েশীকে বুঝিয়ে দিচ্ছে। বাগানের এত সুন্দর সাজসজ্জা দেখে আয়েশীর চোখ কপালে। মনেমনে ভাবছে, ইশ, কি সুন্দর বাগান। মন চায়, সারাক্ষণ এই বাগানেই পড়ে থাকতে। দিনদুপুরে বাগানের মধ্যিখানে চুলা বসিয়ে রান্না করতে, তারপর মাদুর পেতে আকাশের নিচে খাবার খেতে, গোলাপের চারার সাথে গল্প করে ধোঁয়া উড়া চায়ের কাপে চুমুক দিতে, আর রাতে ঘাসের উপর মাথা রেখে তারা গুনতে গুনতে ঘুমিয়ে পড়তে। এসব ইচ্ছে ধ্রুবকে সাথে নিয়ে পূরণ করতে চায়না আয়েশী। মৃদুল হলে আয়েশী সব ইচ্ছে পুঙ্খানুপঙ্খভাবে পূরণ করত। মৃদুল নেই, তাই আয়েশীর ইচ্ছেগুলো বুকের ভেতর ডানা ঝাপটে বুকেই ম’রে গেছে।
আয়েশী বাগান ঘুরছে, হঠাৎ করে বাগানের পূর্ব দিক হতে একটা বিকট চিৎকার ভেসে এল। আয়েশী যেন কেঁপে উঠল। সার্ভেন্টকে জিজ্ঞেস করল,
‘ কি হয়েছে ওখানে? আমি যাব। ‘
সার্ভেন্ট ভয় নিয়ে বলল,
‘ ম্যাম ঘরে চলুন। ওদিকে যাওয়ার আদেশ নেই। ‘
‘ কেন নেই? কি আছে ওদিকে? ‘
আয়েশীর অস্থির প্রশ্ন। সার্ভেন্ট তটস্থ কণ্ঠে জানাল,
‘ আমি জানি না ম্যাম। এখানের কেউই বাগানের পূর্ব দিকে যায়না। ওই জায়গা ধ্রুব স্যার রেড সিগন্যাল এঁকে দিয়েছেন। ওখানে যাওয়া নিষেধ। ‘
‘ আমি যেতে চাই। ‘
আয়েশী স্পষ্ট উত্তর। ধ্রুবর নিষেধ শুনতে ইচ্ছে হলো না আয়েশীর। আয়েশী সার্ভেন্টকে এড়িয়ে হেঁটে চলল পূর্ব দিকে। সার্ভেন্ট অনেকবার বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করল। তবে বিফল হল। আয়েশী ততক্ষণে রেড সিগন্যাল মার্ক করা জায়গা পেরিয়ে গেছে। চোখের সামনে একটি কালো কক্ষ ভেসে উঠেছে। কক্ষের দরজায় তালা ঝুলিয়ে রাখা। এখন চাবি কোথায় পাবে? কে আছে ওখানে? আয়েশী স্পষ্ট শুনেছে কেউ এই কক্ষের ভেতরে করুন সুরে কাদঁছে। কে কাঁদছে? কে আছে এই কক্ষের ভেতর? আয়েশী জানতে চায়। কিন্তু কক্ষের চাবি কোথায় পাবে? ধ্রুবর কাছে আছে? হতে পারে। ভাবনার মধ্যে আবারও ভেতর থেকে কান্নার শব্দ এল। আয়েশী অস্থির হয়ে গেল। এত করুন সুরে কাদঁছে কেন? কিসের দুঃখ তার? কে সে?

#চলবে ( ১১০০+ )

#মৃত_কাঠগোলাপ – ২৭
#আভা_ইসলাম_রাত্রি
_____________________________
আয়েশীর বাগানের পূর্ব দিকে যাওয়ার দৃশ্য যখন ধ্রুব ল্যাপটপে দেখল, তার র’ক্ত ছলকে উঠল। আয়েশীর গা আগুনে পু’ড়িয়ে দিতে ইচ্ছে হল। তার বাঁ’ধা দেওয়া সত্ত্বেও আয়েশী কেন পূর্ব দিকে গেল? কেন বাগানের রেড সিগন্যাল দেওয়া অঞ্চল পেরিয়ে যাবার সাহস করল? তার কি রহস্য আবিষ্কার করার খুব শখ? আজ তার সকল শখ মেটানো হবে। ধ্রুব ওসমানকে ডেকে রে’গেমেগে অস্থির হয়ে বলল,
‘ গাড়ি বের কর। আমি বাড়ি যাব। ‘
ধ্রুবর রাগ দেখে ওসমান থরথর করে কাঁপছে। সহসা ল্যাপটপের দিকে চোখ গেল সে ভ’য়ে আঁ’তকে উঠল। আয়েশী ম্যাম বাগানের পূর্ব দিকে কি করছেন? আজ তো ধ্রুব স্যারের হিং’স্রতা থেকে তাকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। ইশ, অবুঝ মেয়ে! সে জানেই না, কোথায় পা রেখেছে? এখন ধ্রুব তাকে ভয়া’নকভাবে নি’র্যাতন করবে। ওসমান আয়েশীকে বাঁচাতে শেষ চেষ্টা করে বলল,
‘ স্যার, ম্যাম অবুঝ। তিনি বুঝে…..’
ওসমানের কথা শেষ হওয়ার আগে ধ্রুব আ’গুন চোখে ওসমানের দিকে চায়। দাত খি’চে বলে,
‘ ম’রতে না চাইলে বেশি কথা না বলে গাড়ি বের কর, ডাফার। ‘
ওসমান ভয়ে ভয়ে গাড়ি বের করার জন্যে ধ্রুবর কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়। ধ্রুব লেদারের চেয়ারে হেলান দিয়ে ভ্রু কুচকে চেয়ে রইল ল্যাপটপের দিকে। সেখানে স্পষ্ট দেখাচ্ছে, আয়েশী ধ্রুবর ঘর উত্তাল-পাত্তাল করছে চাবির জন্যে। ধ্রুব তার প্যান্টের পকেট থেকে চাবি বের করে টেবিলে রাখল। খোঁচা দাড়িতে আঙ্গুল বুলিয়ে বিড়বিড় করল,
‘ পিপীলিকার পাখা গজে মরিবার তরে। তেমন দশা তোমারও হয়েছে রক্তজবা। আমার বাধ্য করো না, তোমার প্রাণ কেড়ে নিতে। আমি নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টায় আছি। ‘
______________________
আয়েশী ধ্রুবর ঘর তন্নতন্ন করে খুঁজেও চাবি পেল না। হাল ছেড়ে মাথায় হাত দিয়ে বিছানায় ধাম করে বসে পড়ল। ধ্রুব কোথায় রেখেছে চাবি? বাগানের সেই কক্ষে কে আছে? কেন ধ্রুব সেই কক্ষের সামনে রেড সিগন্যাল এঁকে রেখেছে? কি আছে সেখানে?
এত এত প্রশ্ন? অথচ একটার উত্তর মিলছে না। আলমারি, আলমারি খুঁজে দেখা হয়নি। আয়েশী চট করে আলমারি খুঁজতে লেগে গেল। ধ্রুবর কাপড় চোপড় সব উল্টে পাল্টে ফেলছে। অথচ চাবি মিলছে না?
হঠাৎ আয়েশীর পেটে কেউ নখ দিয়ে খামচে ধরল। নখ যেন আয়েশী জামা ভেদ করে ত্বকে ফুটল। আয়েশী ব্যথায় চিৎকার করে উঠল। সঙ্গেসঙ্গে কেউ আয়েশীর ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে হুইস্কি কণ্ঠে বলল, ‘ হুশশশ….’
আয়েশী চুপ করে চোখ বড়বড় করে তাকায়। কণ্ঠ শুনে বুঝতে একটুও বিলম্ব হলো না, তাকে জড়িয়ে ধরে থাকা মানুষটা কে? চোরের চুরি ধরা পড়ে যাওয়ায়, আয়েশী বিড়াল ছানার ন্যায় গুটিয়ে গেল। সমস্ত সাহস ধাম করে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এল। আয়েশী বুক ধড়াস ধড়াস করছে। ধ্রুবের আঙ্গুল আয়েশীর ঠোঁট ছেড়ে কানের কাছে স্পর্শ দিতে শুরু করেছে। ধ্রুব কানের লতিতে ঝুঁলে থাকা ঝুমকো টোকা দিয়ে নেড়ে দিল। আয়েশী ভয়ে ঠোঁট কেপে উঠল। ধ্রুব আবার হুইষ্কি কণ্ঠে বলল, ‘ কি খুঁজছিলে? ‘
আয়েশী তাৎক্ষণিক মাথা নাড়ায়। জিহ্বা দিয়ে শুষ্ক ঠোঁট ভিজিয়ে বলে, ‘ কি-ছু ন-না। ‘
‘ তাই? তাহলে আলমারির কাপড় এলোমেলো করলে কেন?’
একটা মিথ্যা কথা লুকানোর জন্যে হাজারটা মিথ্যা বলতে হচ্ছে। আল্লাহ কখনো মাফ করবেন না। আয়েশী ভাবে, এত মিথ্যা বলে কি লাভ? আয়েশী তো চুরি করছে না। শুধু একটা রহস্য আবিষ্কার করতে চেয়েছিল। তবে পারেনি। এই রহস্য ধ্রুব সৃষ্টি করেছে, তাই ধ্রুব’ই আয়েশীকে রহস্য ভেদ করতে সাহায্য করতে পারবে।
‘ কি ভাবছ? ‘ ধ্রুব আয়েশীর কানের ঝুমকো পুনরায় নেড়ে বলে উঠল। ধ্রুবর স্পর্শে আয়েশীর গা রি-রি করতে লাগল। আয়েশী ধ্রুবকে ধাক্কা দিয়ে সরে গেল খানিক দূর। ধ্রুব পেছনে পড়ে যেতে যেতে সামলালো। ভ্রুরু কুচকে চাইল আয়েশীর দিকে। আয়েশী চেঁচিয়ে বলল, ‘ সবসময় এমন গায়ের উপর পড়ে যান কেন? বুঝেন না, আমার এসব অসহ্য লাগে? ‘
ধ্রুব কিছুক্ষণ ভ্রুর কুচকে রইল। দু ভ্রুয়ের মধ্যখানে সূক্ষ্ম একটা ভাঁজ লক্ষ্য করা গেল। ক্রমশ সে ভাঁজ গভীর হচ্ছে। আয়েশী তখনো রেগে। ধ্রুব ক্ষুদ্র নিঃশ্বাস ছাড়ল। হাতের ঘড়ি খুলে বিছানার দিকে যেতে যেতে বলল,
‘ অসহ্য লাগলেও কিছু করার নেই। কারণ তুমি আমার স্ত্রী। তোমাকে স্পর্শ করার অধিকার আছে আমার। আর এমনিতেও,বিয়ের পরও তুমি যে এখনো ভার্জিন ঘুরে বেড়াচ্ছ, তার জন্যে আমায় তোমার ধন্যবাদ বলা উচিৎ। ‘

ধ্রুবর কথা শুনে আয়েশীর মুখ একদম হা হয়ে গেল। কান ধপধপ করতে লাগল। ছিঃ, কি অ’শ্লীল কথা! এমন কথা ধ্রুবর বলতে মুখে বাঁধলো না? আয়েশী লজ্জা, রাগ সবমিলিয়ে করুন অবস্থা! রাগে আয়েশীর গা জ্ব’লছে। এত খা’রাপ লোক এসে জন্মেও দেখেনি। ছিঃ!
ধ্রুব হাত ঘড়ি খুলে টেবিলে রাখল। আলমারির সামনে থেকে হতবম্ব আয়েশীকে সরিয়ে আলমারি থেকে সাদা টিশার্ট আর হাঁটু অব্দি এক হাফ প্যান্ট নিল।
বাথরুমে চলে যেতে উদ্যত হলে, পেছন থেকে আয়েশী দ্রুত ধ্রুবর কলার টেনে ধরল। ধ্রুব আয়েশীর আচমকা আক্রমণ সামলাতে না পেরে খানিক পিছিয়ে আয়েশীর গায়ের উপর পড়ে গেল। আয়েশী বোকা বনে গেল। ধ্রুবর গা আয়েশীর গায়ের সাথে লেপ্টে। আয়েশী দেরি না করে ধ্রুবকে সরিয়ে দিল। ধ্রুব ঠিকঠাক দাড়াতে দাড়াতে বলল, ‘ সুন্দর করে কথা বলতে পারো না? টানাটানি করো কেন? ‘
‘ আমার এত শখ জাগে নি আপনাকে নিয়ে টানাটানি করার। একটা কথা জিজ্ঞেস করার জন্যে টেনেছি। ‘
‘ কি কথা? ‘
আয়েশী নিজে মনকে শক্ত করল। অতঃপর স্পষ্ট কণ্ঠে প্রশ্ন করল, ‘ বাগানের পূর্ব দিকের কালো কক্ষের চাবি কোথায়? ‘
ধ্রুব মনেমনে হাসল। সে জানত, আয়েশী এমনই একটা প্রশ্ন করবে তাকে। অবশ্য সে আগে থেকেই প্রস্তুত হয়ে ছিল। ধ্রুব কোনোরূপ ভনিতা না করে উত্তর দিল, ‘ আমার কাছে। ‘
‘ চাবিটা আমাকে দিন। আমি ওই কালো কক্ষ এর ভেতরে ঢুকবো। ‘
ধ্রুব সুন্দর করে তার প্যান্টের পকেট থেকে চাবি বের করে আয়েশীর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল, ‘ এই নাও। ‘
আয়েশী প্রচন্ড বিস্মিত হল। এতটা সহজ উপায়ে চাবি পেয়ে যাবে তা আয়েশী কল্পনাও করেনি। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, ধ্রুব এত সহজ আছে কেমন করে? তার কি একটুও ভয় হচ্ছে না। নাকি আয়েশী অযথাই চিন্তা করছে। কালো কক্ষে রহস্য বলতে কিছুই নেই।
আয়েশী সন্দেহ নিয়ে ধ্রুবর হাত থেকে চাবি নিল। চাবিটার দিকে কিছুক্ষণ শকুনি দৃষ্টিতে চেয়ে তারপর বলল,
‘ আমি কালো কক্ষে যাচ্ছি। ‘
‘ আচ্ছা, যাও। ‘
আয়েশী বোধহয় আজ শুধু অবাক হওয়ার দিন। একটার পর একটা অবাক হয়েই যাচ্ছে। ধ্রুবর এমন ভাবলেশহীন প্রতিক্রিয়া আয়েশীর হজম হচ্ছে না। আয়েশী ভেবেছিল, ধ্রুব একটু উশখুশ করবে। দু একটা মিথ্যা কথা বলে সত্য ঢাকার চেষ্টা করবে। অথচ সে এমন কিছুই করছে না। অদ্ভুত!
আয়েশী কিছুক্ষণ ধ্রুবর দিকে চেয়ে বেরিয়ে গেল।
আয়েশী সেই কালো কক্ষে দরজা খুলল। ভেতর থেকে ভ্যাপসা দুর্গন্ধময় ধোঁয়া নাকে মুখে ঝড়ের ন্যায় প্রবেশ করল। আয়েশী খুকখুক করে কেশে উঠল। তারপর হাত দিয়ে ধোঁয়া কাটানোর চেষ্টা করে সামনে এগিয়ে গেল।
আশ্চর্য্য, কেউ এই কক্ষে নেই। তাহলে কাদছিল কে? আয়েশী তন্নতন্ন করে কক্ষ খুঁজল। না, কেউ নেই। কেউ ছিল, কিন্তু পালিয়েছে? নাকি কেউ ছিলোই না এখানে?
‘ তৃপ্তি মিটেছে? ‘
পেছন থেকে ধ্রুবর কণ্ঠ শুনে আয়েশী তাকাল। তার চোখে এখনো সন্দেহ। আয়েশী স্পষ্ট শুনেছে, কেউ এই কক্ষের ভেতর থেকে শব্দ করে কাদছে। কিন্তু এখন কেউ নেই। ধ্রুব বুকে আড়াআড়ি হাত ভাঁজ করে আয়েশীর দিকে চেয়ে আছে। আয়েশীর দৃষ্টিতে সন্দেহের পসরা!

#চলবে ( শব্দসংখ্যা- ১০০০)

#মৃত_কাঠগোলাপ – ২৮
#আভা_ইসলাম_রাত্রি

দেখা গেল ধ্রুব ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে আয়েশীর দিকে। পা মেপে মেপে মাটিতে ফেলছে। বরাবরের মত দুহাত প্যান্টের পকেটে গুঁজে রাখা। সদ্য গোসল করে আসায় চুল ভেজা, কপালের উপর লেপ্টে আছে। শরীর থেকে তীব্র ম্যান পারফিউমের গন্ধ! পরিবেশটা কেমন যেন ঘোর ঘোর, মাতাল মাতাল!
আয়েশী স্থির পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। ধ্রুবর এমন আগানো দেখে আয়েশীর বুক ধুকপুক ধুকপুক করছে। আয়েশী বহু কসরত করে তর্জনী উঁচু করে বলল, ‘ এগুবেন না বলছি। ‘
ধ্রুব কেমন করে যেন হাসল। সে এগুচ্ছে। আয়েশীর বারণ শুনে নি। ধ্রুব আয়েশীর খুব কাছে এসে দাঁড়াল। প্রেয়সীর কাছে খানিক ঘনিষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে বলল মাদক কণ্ঠে আবদার করল, ‘ এখন আমি তোমায় একটু ছুঁতে চাই। ছুঁই? ‘
আয়েশী হতভম্ব হয়ে পড়ল। কেউ তাকে ছুঁতে চাওয়ার জন্যে অনুমতি চাইছে। অথচ সে মানুষটা সারাক্ষণ আয়েশীর সাথে লেপ্টে থাকে। আয়েশী রাগ দেখাতে চাইল। পারল না। তার পূর্বেই ধ্রুব আয়েশীর কোমড় খামচে ধরে আয়েশীকে নিজের সাথে মিশিয়ে ফেলল। আয়েশীর টাল সামলাতে না পেরে ধ্রুবর বুকের উপর। আয়েশীর অবাধ্য হাত ধ্রুবর বুকের দু পাশে ঠেসে। ধ্রুব কিছুটা রা’গান্বিত কণ্ঠে বলল, ‘ ভালোবাসতে পারো না, মেনে নিয়েছি। ঘৃনা করতে চাও, হজম করেছি। কিন্তু সন্দেহ করতে চাইছ, প্রাণে মে’রে ফেলব। ভালোবাসা, ঘৃনা সবকিছু অ্যালাউড। কিন্তু সন্দেহ, নেভার। বুঝেছ? ‘
আয়েশী অপরাধবোধে ভুগতে লাগল। সে কি সত্যিই অযথা সন্দেহ করছিল ধ্রুবকে। এতদিন অব্দি যে বিষয়ের জন্যে আয়েশী ধ্রুবকে সন্দেহ করেছে, সবই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তবুও আয়েশী বারবার সুযোগ খুঁজে, ধ্রুবর খুঁত ধরার। প্রথমে কাপড় বদলানো, এখন আবার চাবি নিয়ে। আয়েশী কেন এসব করছে? ধ্রুবকে ঘৃনা করে বলেই কি আয়েশী অযথা তাকে হেনস্থা করতে চাইছে? ছিঃ, এটা ঠিক না। কিন্তু আয়েশী নিজের দোষ স্বীকার করল না। ধ্রুবর থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্যে দুহাত দিয়ে ধ্রুবর বুকে ধাক্কা দিয়ে বলল, ‘ ছাড়ুন। ‘
ধ্রুব ছেড়ে দিল না। বরং আয়েশীর দুই ভ্রুয়ের মধ্যিখানে গভীর এক চুমু খেয়ে বলল, ‘ কখনো আমাকে সন্দেহ করবে না, আমার বুকে কষ্ট হয়। সুখ পাওয়ার জন্যে আমি তোমায় ভালোবেসেছি, কষ্ট পাওয়ার জন্যে নয়। তুমি কি আমার সকল সুখের কারণ হবে, রক্তজবা? ‘
আয়েশী কিছুই বলল না। বরং ধ্রুবকে আবার ধাক্কা দিয়ে বলল, ‘ ছাড়ুন, আমার অস্বস্থি লাগছে। ‘
ধ্রুব দীর্ঘশ্বাস ফেলল। মেয়েটা কেন ধ্রুবকে ভালোবাসে না? মানছে, সে খারাপ। খারাপ লোককে কি ভালো বাসা যায়না? সে তো আয়েশীর জন্যে খারাপ হয়েছে। আয়েশীর ভালোবাসা পাওয়ার জন্যে ধ্রুব আরো খা’রাপ হতে রাজি। অথচ যার জন্যে করি চুরি, সেই বলে চোর। আয়েশীর একটুখানি ভালোবাসা পাওয়ার জন্যে খারাপ হল, অথচ সে ব্যর্থ আয়েশী তাকে ভালোবাসে না!
ধ্রুব আয়েশীকে ছেড়ে দিল। আয়েশী গটগট পায়ে কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে গেল।
ধ্রুব হাত দিয়ে কপালের চুল উপরে ঠেলে দিল। বাঁকানো হাসি দিয়ে কক্ষের পশ্চিম দিয়ে এসে দাঁড়াল। একটু পর ওসমান কক্ষে এল। হন্তদন্ত হয়ে বলল, ‘ স্যার, আয়েশী ম্যাম এঘরে এসেছেন? সেই পাগলকে কি দেখে ফেলেছেন? ‘
ধ্রুব হেসে তার পকেট থেকে একটা ইলেকট্রিক ডিভাইস বের করল। ডিভাইসে একটা সুইচ ছিল। ধ্রুব পেছন ফেরে ওসমানের উদ্দেশ্যে বলল, ‘ জাদু দেখবে, ওসমান? ‘
ওসমান বোকার মত চেয়ে রইল। ধ্রুব কি করতে চাইছে বুঝতে পারছে না। ধ্রুব ওসমানকে শুনিয়ে সামনে চেয়ে বলল, ‘ খুল যা ছিমছিম ‘
ধ্রুব সুইচে চাপ দিল। সঙ্গেসঙ্গে কক্ষের মধ্যে একটা সাইরেন বাজল। কক্ষের পশ্চিম দিক থেকে একটা কালো দরজা খুলে গেল। বিস্ময়ে ওসমানের মুখ হা হয়ে গেল। চোয়াল যেন এবার ঝুলে পড়বে। একটু আগে এখানে কোনো দরজা ছিল না। মূলত সম্পূর্ন কক্ষ কালো রঙের বলেই এই কালো দরজা চোখে পড়েনি। পশ্চিমের দেয়াল সম্পূর্ন সমতল ছিল। কিন্তু ধ্রুব সুইচে চাপ দেয়ার পরপরই পশ্চিমে একটা কালো দরজা উদয় হয়। তারপর খ্যাকখ্যাক শব্দ করে দরজা খুলে ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে একটা লুকানো কক্ষ। যার পুরোটা কক্ষ সাদা রঙের। দেয়াল সাদা, আসবাব পত্র সাদা, সেখানে বসে থাকা সেই পাগলের গায়ে সাদা কাফনের কাপড়। ওসমান চোখ বড়বড় হয়ে গেল। এই কক্ষ সম্বন্ধে ওসমান একটুও অবগত ছিল না। ধ্রুবও কখনো এই কক্ষের ব্যাপারে জিকির করে নি। এতবার ধ্রুবর সঙ্গে এই কালো কক্ষে এলে,অথচ এই দরজা তার চোখেই পড়ল না। অদ্ভুত! ওসমান ধ্রুবকে প্রশ্ন করে বসল, ‘ স্যার, এই কক্ষ লুকানো ছিল? ‘
ধ্রুব হাসল। সাদা কক্ষের ভেতর প্রবেশ করতে করতে বলল,
‘ এ বাড়িতে এমন অনেক কিছুই লুকানো, ওসমান। এটা তো সামান্য একটা কক্ষ। ‘
ওসমান ধ্রুবর পেছন পেছন সাদা কক্ষে প্রবেশ করল। সেই পাগল তখন ঘুমাচ্ছে। ধ্রুব পাগলটার শিয়রে বসে তার ময়লা চুলে হাত বুলিয়ে দিল। পাগলটা ধ্রুবর আদর পেয়ে তার পায়ে মাথা ঘষলো। ধ্রুব তৃপ্তি হেসে বিড়বিড় করল,
‘আমার কুকুরটা! ‘
___________________________
আজকাল অনেকদিন ধরে আয়েশী একটা বিষয় লক্ষ্য করছে। আয়েশী যেখানে যায়, কেউ যেন তাকে অনুসরণ করে। তার প্রতিটা পায়ের ছাপে ছাপ ফেলে। আয়েশী যা করে, সব নিজের নখদর্পণে রাখে। আয়েশী ভয় পায়। কে তাকে অনুসরন করছে? ধ্রুবকে সন্দেহ হচ্ছে। কিন্তু আবারও অকারণে আয়েশী ধ্রুবকে সন্দেহ করতে চায়না। আয়েশী ভাবছে, এবার একটা উপায় বের করতে হবে। অনুসরণকারীকে এবার হাতেনাতে ধরতে হবে।
আয়েশী তখন বাগান ঘুরছিল। সাথে সার্ভেন্ট। হঠাৎ বাগানের বাউন্ডারির বাইরে কেউ একজন উকি দিল। একটা মেয়ে! ধ্রুব না। তবে আয়েশী মেয়েটাকে দেখে চিনতে পারল না। তবে তাকে ধরতে পারলে আয়েশী সব সমস্যার উদঘাটন কিরির পারবে। আয়েশী তার পাশে থাকা সার্ভেন্টযে ফিসফিসিয়ে বলে, ‘ হিয়া, ঐদিকে তাকাও। একটা মেয়ে দেখতে পারছ? ‘
সার্ভেন্ট সেদিকে তাকাল। হ্যাঁ, দেখতে পারছে সে। সার্ভেন্ট মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল। আয়েশী বলল,
‘ তুমি বাইরের গার্ডকে খবর দাও, মেয়েটাকে আটক করতে। আমি মেয়েটার সাথে কথা বলতে চাই। ‘
সার্ভেন্ট কিছুক্ষণ আয়েশীর দিকে তাকাল। তারপর হাতে থাকা ফোন নিয়ে গার্ডকে খবর দিল। একটু পর গার্ড সেই মেয়েকে ধরে আয়েশীর কাছে পায়ের কাছে এনে ফেলল। আয়েশী গার্ডকে রাগ দেখাল। বলল, ‘ এমন করে কেউ একটা মেয়ের সাথে ব্যবহার করে? ওকে হাত ধরে উঠাও। ‘
গার্ড ক্ষমা চাইল। মেয়েটাকে হাত ধরে উপরে উঠাল। মেয়েটা মাথা নত করে আছে। দেখতে সহজ সরল মেয়ে লাগছে। গায়ে সাধারণ ত্রিপিস। চেহারা ভারি মিষ্টি। আয়েশী মেয়েটার কাছে এল। সুন্দর করে জিজ্ঞেস করল,’ কে তুমি? আমাকে ফলো করছিলে কেন? ‘
মেয়েটা থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে বলল, ‘ আমি মৃদুলের বিবাহিত স্ত্রী। ‘

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here