মেঘদিঘির পাড়ে – ১২,১৩
মালিহা খান
পার্ট-১২
২৪.
মাসখানেক পরের কথা। আঙিনার নরম দূর্বাঘাসের উপর খালিপায়ে হাঁটছিলো ইভা। অনাসক্ত, বৈরাগী স্হিরনেত্রে চেয়ে ছিলো আকাশের গায়ে। সাদা মেঘে। দৃষ্টি ঘনিয়ে এলো। মাথার উপর যেনো বিশাল টলমলে মেঘদিঘি। চারিদিকে ভাসমান মেঘ। টলমলে ঠান্ডা জল! মেঘের জল!
ইভা চোখ বুজে ফেলে। লোকটার সাথে তার শেষ দেখা হয়েছিলো গুনে গুনে বাইশ দিন আগে। স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ ছিলো। বাতাস ছিলো। রাতের আঁধারে এসে সায়ন রাতের আঁধারেই চলে গিয়েছিলো। মাত্র কয়েকমূহুর্তের সাক্ষাৎ। যাবার আগে দরজা খুলেও আবার পেছনে ফিরে চোখে চোখ রেখে বলে গিয়েছে,
-“পরেরবার এলে আর এভাবে আসবোনা দিঘিকন্যা। তোমাকে দেখতেও পারিনা মনমতো। ভালোলাগেনা আমার।”
উওরে সে বলেছিলো,”ইয়া আল্লাহ! আপনি জলদি যান। দরজা খোলা, কেউ দেখবে। এই রাত বিরেতে আমার ঘুম হারাম করে কি মজা পান বলুনতো!”
সায়ন হেসে বলেছিলো,”সেই কবে থেকে আমার রাতদিনের সমস্ত ঘুম হারাম করে রেখে তুমি কি মজা পাচ্ছো বলোতো?”
সেই শেষ কথা। তারপর আর আসেনি সায়ন। ইভা চোখ খুলে। মেঘের উপর চোখ পড়ে। এতো এতো মেঘ। এতো এতো নিরবতার ঢল। তবু প্রশান্তি নেই। প্রণয়ের পীড়ায় মেঘের রাজ্য তছনছ করে দেবার অভিপ্রায়।
আজ রোদ উঠেনি। দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে তবু রোদ উঠেনি। দিনটা ভালো লাগছেনা। ইভা পাশে খুলে রাখা জুতোটা পায়ে পরে নেয়। ঘরে এসে মৌন হয়ে বসে থেকে বালিশে মাথা পেতে শুয়ে পড়ে। বিরবির করে বলে,”ভালোলাগেনা আমার।”
একটুপর বিভা আসে। সজাগ ইভা মুখ তুলে তাকায়। বিভা আমতাআমতা করে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকে তার দিকে। ইভা উঠে বসে। জিজ্ঞাসু গলায় বলে,”কিছু বলবে আপা?”
বিভা নিচু গলায় বলে,
-“কিছু শুনেছিস তুই?”
ইভা মাথা নাড়ায়,”কি?”
-“না কিছুনা।”
বিভা দু’হাতে মাথা ধরে তার কপালে চুমু খায়। তার বোনটা জমজ হলে কি হবে? স্বভাবে আকাশপাতাল তফাৎ। সে যেমন চন্চল, ইভা ততোই শান্ত, চাপা স্বভাবের।
২৫.
বিকেলের দিকে ঘুমিয়ে পড়েছিলো ইভা। ঘুম ভাঙলো শোরগোলে। নিচ থেকে বেশ কথার শব্দ শোনা যাচ্ছে। গায়ে কোনরকমে ওড়নাটা পেঁচিয়ে ঘর থেকে বেরোয় ইভা। বের হয়ে একটু এগিয়ে বসার ঘরের দিকে চোখ পড়তেই মাথা ঘুরে যায়। উনি আর উনার ফুপি বসে আছে। বাবা, মা, চাচা, চাচী, এমনকি সরফরাজ ভাইজানও আছে। ইভার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠে। সায়ন হঠাৎই এদিক তাকায়। উশকোখুশকো বিনুনি নিয়ে অগোছালো বেশে দাড়িয়ে থাকা ইভাকে দেখে চোখ স্হির হয়ে যায়। টানা বাইশটা দিন সে মেয়েটাকে দেখেনি। একনজর দেখেনি। দৃষ্টি বলছে,”এত অপেক্ষা করানোর জন্য দু:খিত ইভারানী।” চোখ নামিয়ে নেয় সায়ন।
বিভা সিঁড়ি দিয়ে উঠছিলো। ইভাকে দেখে দ্রুত এগিয়ে এলো সে। হাত ধরে বললো,
-“তুই বেরিয়েছিস কেনো? ঘরে আয়। এরা যাক। তারপর বেরোস। ভাইজান রাগ করবে।”
বিভা তাকে টেনে ঘরে নিয়ে আসে। ইভা অস্হিরতায় কাবু হয়ে বলে,
-“আপা কি হয়েছে?”
বিভা মেকি হাসে। বলে,
-“আরকি! উনারা প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। আর ভাইজান মানা করছে। তোর চিন্তার কারণ নেই। বসে থাক। এরা যাক।”
-“মানা করছে?”
-“সবসময় তো তাই করে। নতুন কি!”
ইভা চুপ করে যায়। এমন পরিস্থিতি নতুন না। এর আগেও বেশ ক’বার এমন হয়েছে। গ্রামের কারা কারা যেনো কদিন পরপরই প্রস্তাব নিয়ে আসে। ওইযে মইদুল, মইদুলের পরিবারও তো এনেছিলো। সেসব ইভার কান পর্যন্তও আসেনা। তার আগেই সরফরাজ সাফ মানা করে দেয়। তার এক কথা, এত ছোট বয়সে সে বোনের বিয়ে দিবেনা। ইভা চিন্তায় কাঁচুমাচু হয়ে পড়ে। লোকটাকে কে বলেছিলো এমন পাগলামি করতে? কে বলেছিলো?
লিথিশা মৃদু হেসে বললেন,
-“দেখুন আপনাদের মেয়ে ছোট আমরা জানি। আমি বলছিনা এখনই বিয়ে হোক। মেয়েকে তুলে দেয়া লাগবেনা। বিয়েটা শুধু পড়িয়ে রাখা হোক। তুলে নেয়া নাহয় পরে হবে। যখন আপনারা ভালো মনে করেন।”
ইভার বাবা নেওয়াজ সাহেব উওর দিতে পারেননা। সরফরাজই বলে,
-“দেখুন চাচী, আপনি বুঝতে পারছেন না। আমার বোন খুবই ছোট। এবছর মাত্র আঠারোতে পড়লো। ওকে আমি কি বিয়ে দিবো? কেমনে বিয়ে দিবো? আপনিই বলুন।”
-“আমি তো বললাম বাবা। ওকে তোমার বিয়ে দেয়া লাগবেনা। শুধু কবুল বলিয়ে রাখো। ও শুধু আমার ভাতিজার হয়ে থাক। পড়াশোনা করছে করুক। আমাদের তো আপত্তি নেই।”
সরফরাজ দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
রাতের বেলা খাবার সময় সরফরাজের সাথে দেখা হলো ইভার। এমনি কথাবার্তা হলেও এই বিষয়ে কোনো কথা বললোনা সরফরাজ। ইভার গলা দিয়ে ভাত নামলোনা। কোনরকমে খেয়েই উঠে গেলো সে।
২৬.
সেদিন রাতে ইউসুফকে সজাগ পায় বিভা। সে ঢুকতেই হাত থেকে ফোন নামিয়ে তার দিকে তাকায় ইউসুফ।
বিভা মিহি স্বরে জিজ্ঞেস করে,
-“ঘুমাননি?”
-“হুম? না তো।”
বিভা জানলায় যেয়ে দাড়ায়। হঠাৎ পিছনে উষ্ণতার অনুভব হতেই ঘাড় ফিরিয়ে তাকায়। একহাত দুরত্বে ইউসুফকে দেখে বিমূঢ় হয়ে বলে,
-“কি হয়েছে?”
ইউসুফ জানলার শিকে একহাত রাখে। দুরত্ব ঘুঁচে যায় অনেকটা। বিভার প্রশ্নেভরা বেগতিক চোখ। ইউসুফ ধীরকন্ঠে বলে,
-“আমি চাইলেই তোমাকে এই মূহুর্তে ভীষনভাবে চাইতে পারি, পারিনা?”
-“পারেন।”
-“তুমি বাঁধা দিবেনা, তুমি বাঁধা দিতে পারবেনা। আমার স্পর্শ এড়িয়ে যাবার ক্ষমতা তোমার নেই। আছে?”
-“নেই।”
“তবু তুমি এত নিশ্চিত হয়ে দাড়িয়ে আছ। কেনো জানো? কারণ…”
ইউসুফের মুখের কথা কেড়ে নেয় বিভা। চোখভর্তি টলমলে পানি নিয়ে শক্ত গলায় বলে,
“কারণ আপনি আমাকে চাইবেনইনা।” বিভা আরো কিছু বলতে চাচ্ছিলো। হাউমাউ কান্নাটা আটকাতে গিয়ে তা আর বলা হলোনা। চুপ করে গেলো সে। চোখের সামনে ইউসুফের চওড়া বুক। সে একটু ছুঁয়ে দেখতে পারছেনা, একটু মাথা রাখতে পারছেনা। এতো নিষেধ কেনো? এতো বারণে এতো অনুভতি কেনো?
ইউসুফ নিজেও চুপ করে থাকে। বুঁদ হয়ে দেখে বিভার চেষ্টা। টুপটুপ করে গড়িয়ে পড়া পানি, চোখের কার্নিশ গড়ালেই হাতের পিঠে মুছে ফেলা। বিভা ঢোঁক গিলে। নিজেকে সামলায়। মনে মনে দৃঢ় পণ করে আর কোনোদিন এই নির্দয়, পাষাণ, নিকৃষ্ট পুরুষের কাছে সে আসবেনা। কস্মিককালেও না। বলে,
-“সরে দাড়ান, যেতে দিন।”
-“যদি না দেই?”
বিভা চমকে তাকাল। ইউসুফ ইচ্ছে করেই কাছে আসে। বিভা চোখমুখ খিঁচে বলে,
-“দয়া করে আর অপমান করেননা, আমি আর আসবোনা, কসম! সরুন।”
ইউসুফ সরে যায়। বিভা যাবার আগে একবারও তাকায় না তার চোখের দিকে। ক্লান্ত ইউসুফ দরজা আটকে দেয়। সারারাত এখন যুদ্ধ চলবে। নিরবতার যুদ্ধ! নির্বাকতার যুদ্ধ!
বিছানায় শুতেই মাথায় আসে,”বিভা কি সত্যিই আর আসবেনা?” উওরটাও পাওয়া যায়,”না, না আসার ই তো কথা। বিভা কখনোই আসবেনা।”
ইউসুফ চোখ বুজে বিরবির করে,”তুমি জানোনা বিভা। তুমি জানবেনা বিভা। তোমার থেকে বেশি আজ আমি পুঁড়বো। বুকটা চিঁড়ে দেখতে? কেমন রক্তাত্ব হয়ে আছে।”
চলবে
মেঘদিঘির পাড়ে – ১৩
মালিহা খান
২৭.
অরুণের ছটা নিভন্ত। জগতে অন্ধকারারম্ভ। পশ্চিমের কোল ঘেঁষে ডুবন্ত সুর্যের পিছু ফেলে যাওয়া লালচে মেঘগুলোর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো সায়ন। কিছুসময় সেদিকেই চেয়ে রইলো নিমেষহীন, অনড়চোখে। অত:পর তার ঠি ক মুখোমুখি বসে থাকা ব্যক্তির দিকে খানিক ঝুঁকে চোখা গলায় বললো,
-” আপনি তাহলে বিয়ে দিবেন না?”
সরফরাজ টেবিলের রাখা চায়ের কাপটা তুলে নিলো। ছোট্ট চুমুক দিয়ে নামিয়েও রাখলো। এরপর মৃদু কেঁশে সায়নের অগ্নিশোধিত চোখদুটোয় চেয়ে অত্যন্ত নির্বিকার কন্ঠে উওর দিলো,
-“না।”
সায়ন নিশ্চুপ। সরফরাজ অপরিবর্তিত কন্ঠে বলে,”আর কিছু বলবে? আমার যেতে হবে।”
সায়ন নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলে। এই লোকের হেলাফেলা তার সহ্য হচ্ছেনা। ইভা যে কেনো একে এতো ভক্তি করে। বা’হাতে টেবিলের উপর বাড়ি দিয়ে তীব্র ক্রোধানলে সে বলে,
-“আমি কিন্তু আপনার বোনকে তুলে নিয়ে যেতে পারি। আমি করছিনা কারণ আপনাকে, আপনাদের পরিবারকে এবং আপনার বোনকে আমি যথেষ্ট সম্মান করি। ওকে তুলে নিলে সেটা নিশ্চয়ই খুব সম্মানজনক কিছু হবেনা?”
-“আমার বোনকে কেও তুলে নিতে পারেনা।”
-“আমি পারি। একশবার পারি।”
সরফরাজ মৃদু হাসে। বিন্দু বিন্দু জলীয়বাষ্পে বাহির ভিজে ওঠা ঠান্ডা পানির গ্লাসটা পাশ থেকে টেনে সায়নের সামনে দিয়ে বলে,
-“মাথা ঠান্ডা করো। পানি খাও। অহেতুক উত্তেজিত হয়ে পড়ছো।”
সায়ন গ্লাস ছোঁয়না। চোখ নামিয়ে নিচু গলায় বলে,”আপনি উওর দিন।”
-“ওকে তুলে কি করবে তুমি? জোর করে বিয়ে করবে? তুমি বোধহয় জানোনা মেয়ের অভিভাবকের অমতে বিয়ে করলে সেই বিয়ে বাতিল। বাবা- মা, নাহলে বড়ভাইয়ের বা পরিবারের বড় কারোর অনুমতি লাগবে।”
-“ওর বাবা- মা অনুমতি দিবে।”
-“আব্বা আম্মা আমার মত ছাড়া একপাও আগাবে না।”
সায়ন সিটের পিছে পিঠ এলিয়ে দেয়। কালো রঙ ধরা মেঘের পানে চেয়ে বলে,
-“তবে আর কি? তুলেই নিবো। তুলে নিয়ে বিয়ে করে এলে আপনারা এমনেই বাধ্য হবেন আবার বিয়ে দিতে।”
সরফরাজ স্হিরচিত্তে বলে,”তোমার সাহস আছে। ভাইয়ের সামনে বসে বোনকে তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছো।”
-“আমি হুমকি দিচ্ছিনা, আপনাকে জানাচ্ছি কেবল।”
সরফরাজ চুপ করে রইলো। তারপর ধীরগলায় বললো,
-“আমি জানি তুমি ওর সাথে এমন কিছুই করবেনা সায়ন। ইভার সম্মানহানি হবে এমন কিছুই তুমি করবেনা। আমি লিখে দিতে পারি।”
-“জানেনই যখন তখন রাজি হচ্ছেন না কেন?”
সরফরাজ উঠে পড়লো। পান্জাবির পকেটে হাত ঢুকিয়ে ফোনটা বের করে দেখে আবার পকেটে ঢোকালো।
সায়ন দাড়িয়ে গম্ভীর গলায় ডাকলো,
-“আপনি তবে দেখতে চান আমি কি পারি না পারি?”
সরফরাজ নিরবে হাসলো। হাত বাড়িয়ে সায়নের কাঁধে কয়েকবার চাপড় মেরে বললো,
-“টগবগে যুবক। অল্পতেই রক্ত গরম হয়ে যায়। মাথা ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করতে হবে। ফুপিকে নিয়ে বাড়িতে এসো। বাকি আমি দেখছি। এখন আমার সত্যি যেতে হবে। কাজ আছে।”
২৮.
আধখাওয়া ঝলসানো চাঁদের নরম আলোটা ভালোভাবেই রাজত্ব করছে বিভার কৃষ্ণমুখে। চাঁদের পিঠে অসংখ্য দাগ। সূর্যের দিকে চেয়ে থাকা যায়না, চাঁদের দিকে যায়। মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকা যায়। সে চাঁদের মতোন সুন্দর হলে ইউসুফও বোধহয় তার দিকে মুগ্ধ হয়ে চেয়ে রইতো। ঘরের পর্দা উড়ছে। বাইরে ক্ষুরধার বাতাস। গা শিরশির করে উঠে। বিভা গায়ের কাঁথাটা আরো একটু টেনেটুনে নিলো। মনে মনে বললো,
-“আপনি একটু ভালোবাসলেই হয়তো আমার ছোট্ট জীবনে আর কোনো দীর্ঘশ্বাস থাকতোনা।”
কথাটা বলেই একটা এলোমেলো দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো সে। প্রায় সপ্তাহ কেটেছে ইউসুফের ঘরে যাওয়া তো দূর, মুখদর্শনও করেনি। ভালোবাসে বলে যা ইচ্ছে তাই ব্যবহার করবে? সবসময়?
ঘরের আঁধার ছাঁপিয়ে লম্বাটে একটা কৃত্রিম আলো পড়ে। দরজার ফাঁক প্রসারিত হতে হতেও আলোও বাড়ে। ইভা উঁকি দিয়ে বলে,
-“এই আপা? ঘুমাচ্ছো নাকি?”
বিভা ঘাড় ফিরায়। ম্যাজম্যাজে ধরে আসা গলা ঝেড়ে বলে,
-“না আয়। ঘুমাচ্ছিনা।”
ইভা ঢুকেনা। উঁকি দেয়া মাথাটা একটু সামনে এগিয়ে নেয়,
-“খেতে আসো। সাড়ে দশটা বাজে।”
বিভা ভ্রু কুচকে বলে,”উনি টেবিলে নেই? খেতে আসেননি?” তার কন্ঠে সেই দুশ্চিন্তা। না চাইলেও ঠেসেঠুসে এসে পড়ে। কি যন্ত্রনা!
ইভা মিনমিন করে উওর দেয়,
-“এসেছে তো।”
উওরটা কানে যেতেই আগের মতো ফিরে শুয়ে পড়ে বিভা। ইভা হনহন করে ঘরে ঢুকে যায়। বিভার হাত ধরে মৃদু ধমকে বলে,
-“আপা তুমি সাতদিন ধরে আমাদের সাথে খাচ্ছোনা। চলো।”
বিভার উওর পাওয়া যায়না। সে নিরবে হাত ছাড়িয়ে নেয়। ইভা কিছুক্ষণ হাঁসফাঁস করে উপায়ন্তর না পেয়ে অসন্তুষ্ট স্বরে বলে,
-“আচ্ছা আমি নিয়ে আসছি একটুপর। ঘুমিয়ে পড়ো না।”
ইভা চোখমুখ কালো করে ফিরে যায়। আরাম করে খেতে থাকা ইউসুফের উপর তার ভীষণ রাগ হয়।
ইচ্ছে করে তার মুখের থেকে খাবারটা নিয়ে নেয়। তাকেও না খাইয়ে রাখে। পারেনা। বয়সে বড় তো।
তাকে ওমন করে চেয়ে থাকতে দেখে ইউসুফ বাঁকা গলায় বলে,
-“কি হয়েছে? তাকিয়ে আছিস কেনো?”
ইভা চোখ নামিয়ে গমগম করে উওর দেয়,
-“কিছু হয়নি।”
চলবে