মেঘদিঘির পাড়ে – ৬,৭

0
479

মেঘদিঘির পাড়ে – ৬,৭
মালিহা খান
পার্ট-৬
১৩.
সে নিশীথে ঘুম হলোনা সায়নের। আঁখিপল্লব এক করা গেলোনা শতচেষ্টার পরও। মধ্যরজনীর নিষ্প্রহরে চোখের পাতায় বারংবার ভেসে উঠলো ভীত সেই চোখ, বুকে লেপ্টে থাকা নরম দেহ, আধভেজা পিঠ ছড়ানো চুলে; আসমানি শাড়িতে মোড়ানো এক তুলতুলে মেঘরমণীর স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি। ঘুটঘুটে অন্ধকারে, আধনিভন্ত চোখে, সেই নিভৃত প্রতিচ্ছবিতেই রাত কাটলো সায়নের।
মেঘের রং হাল্কা হলো। কৃষ্ণ সরে শুভ্রে ভরলো। নীলাভ প্রত্যুষের প্রভায় শেষমেষ ঘুমিয়েই পড়লো ইভা।
সাতটার দিকে লিথিশার ঘুম ভাঙলো। পাশ ফিরে ইভাকে গভীর ঘুমে দেখে মৃদু হাসলেন তিনি। সারারাত ঘুমায়নি মেয়েটা। নিরবে জেগে ছিলো। নতুন জায়গা, অচেনা ঘরে হয়তো অস্বস্তি লাগছিলো। সে যতবার বলেছে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়তে। ততবার মিনমিন করে উওর দিয়েছে,”জি ঘুমাচ্ছি।” কিন্তু আদোতে ঘুমাতে পারেনি।
লিথিশা আবার হাসলেন। এক পশলা মমতা নিয়ে হাসলো তার চোখদুটোও।

একহাতে তোয়ালে ঘষে মাথা মুছতে মুছতে বিছানার বালিশগুলো এলোমেলো করে ফেললো সায়ন। প্রচন্ড অধৈর্য স্বভাব তার। ছোট্ট কুশন দু’টো তো মেঝেতেই ফেলে দিলো। ফোনটা পাচ্ছেনা অনেকক্ষণ। বিছানায় নেই তো কোথায় রেখেছিলো? রাতে ফুপির ঘর থেকে এসে ফোন দেখা হয়নি আর। বালিশের পাশে নিয়েই তো ঘুমায় সবসময়। তাহলে কি ফুপির ঘরে রেখে এসেছে? মুখ বিকৃতি করে এবার চরম বিরক্তিকর ভঙ্গি করলো সায়ন। একটা নিত্তান্ত তুচ্ছ ছেলেমানুষি কারণে সারারাত ঘুম হয়নি, মেজাজ এমনিই থেতিয়ে আছে। তোয়ালেটা এককাঁধে ঝুলিয়ে হনহন করে বেরিয়ে গেলো সে। উদ্দেশ্য ফুপির ঘর।
দু’তিনবার আঙুলের টোঁকা দিয়েও যখন সাড়া পাওয়া গেলোনা তখন আস্তে করে দরজার নব ঘুরালো সায়ন। ফুপি ঘরে নেই। ইভা সোজা হয়ে ঘুমাচ্ছে। মাথাটা হেলে রয়েছে ডানদিকে। থুতনি যেয়ে ঠেকেছে গলার হাড়ে। সায়ন নিশব্দে ঢুকলো। দুই বালিশের মাঝখানের জা’গাটায় তার ফোনটা। ইভার একহাত পেটের উপর আরেকহাত ঠি ক তার ফোনটার উপর। সায়ন দীর্ঘশ্বাস ফেললো। কাছে যেয়ে সামান্য ঝুঁকে যেইনা ইভার হাতটা সরানোর জন্য মাত্র একটু ধরেছে বিপত্তিটা বাঁধলো তখনই। ঘুমন্ত ইভা ঘুমে ডুবেই প্রচন্ড জোরে তার হাতটা মুঠোয় চেপে ধরলো। শুধু ধরলোইনা বরং ঝুপ করে পাশ ফিরে অত্যন্ত আদুরে গোছে গালের নিচে টেনে নিলো। পাতলা ঠোঁটদুটো লেপ্টে গেলো সায়নের কব্জিতে। সায়নকে ঝুঁকে যেতে হলো। ভারসাম্য বজায় রাখতে অন্যহাতটা যেয়ে পরলো বালিশের উপর, বিছিয়ে থাকা চুলে। ফলস্বরুপ চুলের গোড়ায় মারাত্বক টান খেয়ে “আহ্” বলে চাপা স্বরে গুঙ্গিয়ে উঠে চোখ কুঁচকে তাকাল ইভা। তার তাকাতে দেরি হল কিন্তু মুখের উপর সায়নের ভেজা টাওয়ালটা পড়তে দেরি হলোনা। সদ্য ঘুম ভাঙা ইভা লজ্জায়, হতভম্বতায়, আড়ষ্টতায়, চুলের ব্যাথায় মিলেমিশে কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে গেলো। টাওয়ালের নিচেই চোখমুখ খিঁচে বুজে ফেললো। নিজের অজান্তেই মুঠোয় ধরা শক্ত হাতটা খামছে ধরলো দ্বিগুন জোরে।
সায়ন খানিকক্ষণ নিশ্চুপ চেয়ে রইলো। অত:পর চাপা গলায় বলল,”হাত ছাড়ুন ইভা।”
ইভা একমূহুর্ত থমকালো। সায়নের হাত ধরে রেখেছে বুঝতেই বিদ্যুতের গতিতে ছেড়ে দিয়ে নিজের হাতটা গলার কাছে গুটিয়ে নিলো সে।
হাত ছাড়া পেয়ে মুখের উপর থেকে টাওয়ালটা সরিয়ে দিলো সায়ন। ইভা পিটপিট করলো। সায়ন তার চোখের দিকেই চেয়ে রয়েছে। স্পষ্ট, কাঁটা চাহনী। ইভা ভড়কে গেলো। চুল ছাড়ানোর জন্য হাতটা একটু উঠাতেই নিজের বিশাল হাতের থাবায় ইভার ছোট্ট হাতটা ইভার থুতনির সাথেই চেপে ধরলো সায়ন। তর্জনীটা ঠোঁট বরাবর রেখে হিমশীতল কন্ঠে বললো,

-“আমাকে আপনি টান দিয়েছেন। অযথা ধাক্কা দিবেন না।”

বলতে বলতেই বালিশে রাখা হাতটায় অপ্রকাশিত রাগের বহি:প্রকাশ স্বরুপ আরো চাপ দিলো সে।

নিরুপায় ইভা অসহ্য ব্যাথায় কুঁকরিয়ে গেলো। ঠোঁটের উপর আঙ্গুল নিয়েই চোখমুখ খিঁচে বলল,”আল্লাহ আমার চুল…”

মাথায় দপদপ করে জ্বলা রাগটা হঠাৎই নিভে গেলো। ঝট করে বালিশের উপর থেকে হাতটা সরিয়ে, চেপে রাখা হাতটাও ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে দাড়ালো সায়ন। বললো,

-“ব্যাথা পাচ্ছেন আগে বলবেন না! দেখি ফোনটা দিন।”

ইভা তাড়াতাড়ি উঠে বসলো। একহাতে ঢিলে হওয়া আচঁল টেনে আরেকহাতে সায়নের বাড়িয়ে রাখা হাতে ফোনটা দিলো।
লিথিশা ঢুকলেন হাল্কা শব্দে দরজা খুলে। ইভা চমকে উঠলো। লিথিশা প্রশ্নাত্বক চোখে একবার সায়নের দিকে তাকালেন। সায়ন নিজ থেকেই বলল,

-“ফোনটা রাতে রেখে গিয়েছিলাম ফুপি।”

লিথিশা ভ্রু কুঁচকালেন,

-“ফোন নিতে এসেছিস ভালো কথা। ওকে উঠালি কেনো?”

সায়ন বেরোতে বেরোতে বলল,
-“আমি উঠাইনি ফুপি। নিজেই উঠে গিয়েছেন। টেবিলে নাস্তা দিয়েছো? ক্ষুধা লেগেছে।”

ইভা হাতের তালুতে মাথা ডলছে। এতো জোরে কেও চুলে টান দেয়? লিথিশা খেয়াল করতেই আবার ব্যস্ত হয়ে পড়লেন,

-“মাথা ঘঁষছো কেনো মা? ব্যাথা করছে?”

বাড়ি ফেরার পর তেমন কোনো প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে হলোনা ইভাকে। ঘন্টাখানেক তাকে ধরে কান্নাকাটি, আদর- আহ্লাদ করে বাড়ির পরিবেশ শান্ত হলো। শুধু সরফরাজ ফেরার পথে একবার জিজ্ঞেস করেছিলো,

-“ইভা? ছেলেটা সত্যি বলেছে তো?”

ইভা উওর দিয়েছিলো,”জি ভাইজান।”

সেদিন বিকেলে আবার দিঘির পথ দিয়েই ফিরতে হলো সায়নের। দিঘির কাছাকাছি আসলে গাড়ি থামিয়ে কিছুক্ষণ নিরবে চেয়ে রইলো সে।
সময় গড়ালে গাড়ি ছুটে গেলেও মন থেমে রইলো সেই সম্মোহনী দিঘির পাড়ে, আকাশ হওয়া সচ্ছ জলে, শেষসিঁড়িতে পা ডুবিয়ে বসে থাকা ভীতু নারীতে।

চলবে

মেঘদিঘির পাড়ে – ৭
মালিহা খান

১৪.
ছাদে রাক্ষুসে রোদ্দুর। মধ্যদুপুর খাঁ খা করছে। ইটের মেঝেতে আগুন ধরেছে। দাউদাউ আগুন। পা রাখা দায়। সূর্যের মেজাজ সপ্তমে। সূর্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বিভার মেজাজও আকাশছুঁই। ঝলসানো মেঝেতে, মাথার উপর খাঁড়া রোদ নিয়ে দু’পা আড়াআড়ি ভাঁজ করে বসে আছে সে। আশেপাশে ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে আছে শুকনো মাটি। শখের ফুলে ভরা জবা গাছটা টব থেকে উপরে ফেলেছে। পাশে লাল গোলাপের ছোট্ট চারাগাছ। দু’দিন আগে লাগানো চারাটাও টব থেকে তুলে ফেলেছে সে।
বর্তমানে ভীষণ মনোযোগ দিয়ে জবাটা লাগাচ্ছে গোলাপের টবে আর গোলাপের টায় জবা। ইভা মিনমিন করে ডাকলো,

-“আপা? উঠোনা। দেখো কেমন ঘেমে গেছো। নিচে চলো।”

বিভা চাপা গলায় গর্জে উঠে,
-“বলেছিনা আমি যাবোনা। এক কথা বারবার বলবিনা ইভা। যা এখান থেকে।”

ইভা ফের আগের মতো চুপসিয়ে যায়। ধমকের চোটে বাদবাকি কথা মুখেই আটকে যায় তার। রোদে নিজেরই মাথা ঘোরাচ্ছে।
কতক্ষণ যাবত সাহস জমায় ইভা। অত:পর খানিকটা জোর দিয়ে বলে,

-“আমি কিন্তু আম্মাকে ডাকবো আপা। তুমি চলো।”

বিভার ব্যস্ত হাত থেমে যায়। তাদের আব্বা- আম্মা ফিরে এসেছে গত সপ্তাহেই। আম্মা অসুস্থ ছিলো। ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিলো। এখন মোটামোটি সুস্থ।
বিভা থমথমে কন্ঠে উওর দেয়,

-“যা ডাক আম্মাকে।”

ইভা দ্বিতীয়বারের মতোন চুপসে যায়। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে উল্টোদিকে পা বাড়ায়।

ইউসুফ ঘড়ি পরছিলো। গায়ে ধবধবে আয়রন করা শার্ট। চুল গোছানো। দরজার একপাল্লা খোলা। বাইরে থেকে সহজেই দেখা যাচ্ছে তাকে। দুপুরের খাওয়ার পর এসময়টায় বাড়ি নিশ্চুপ থাকে। তন্দ্রা ভাবী ঘুমাচ্ছে, চাচিমা- আম্মা নিজের ঘরে, সরফরাজ বাসায় নেই, আব্বাও নেই, চাচাও নেই। সবমিলিয়ে এসময়টা অবসরের।
ইভা কিয়ৎক্ষণ জড়তা নিয়ে দাড়িয়ে রয়। তারপর আঙ্গুলের টোকায় দরজায় মৃদু শব্দ তুলে বলে,

-“ইউসুফ ভাই?”

ইউসুফ একঝলক ফিরে তাকায়। মূহুর্তেই মুখে হাসি টেনে বলে,

-“আয় আয়।”

ইভা ধীরপায়ে ঢোকে। ইউসুফ আয়নায় চেয়ে গোছানো চুলেই আরেকবার চিরুনি চালায়। টেবিল থেকে নিয়ে পকেটে ফোন ঢোকায়। একবার ড্রয়ের খুলে কি যেনো হাতরিয়ে আবার লাগিয়ে দেয়। তার তাড়াহুড়ো দেখে ইভা মৃদু স্বরে শুধালো,

-“কই যাচ্ছেন?”

ইউসুফ ব্যস্ত কন্ঠেই উওর দেয়,

-“সে যাচ্ছি এক জায়গায়, কেনো?”

-“এখনি চলে যাবেন?”

এবার কিন্চিৎ মনোযোগ দিয়ে ফিরে তাকায় ইউসুফ। ইভার ভারি ফর্সা মুখখানা চিন্তায় অস্থির। ঘেমে একাকার। চোখদুটো ক্লান্ত। কপালে সহসাই ভাঁজ পরে ইউসুফের। এগিয়ে এসে ডানহাতটা বাড়িয়ে ইভার গালে রাখে। পুরুষালী ভরাট কন্ঠ খাদে নামিয়ে বলে,

-“কিছু বলবি? এমন লাল হয়ে আছিস কেনো? কই ছিলি?”

ইভা চুপ করে থাকে। বলতে তার লজ্জা লাগে। এই আপা… এই আপার জন্য তার সবসময় লজ্জায় পড়া লাগে। দুপুরে খাবার টেবিলে ইউসুফ তরকারি চাচ্ছিলো। বিভা তখন নিজ থেকে বেড়ে দিতে গিয়েছিল। আর
ইউসুফ কি করলো। গম্ভীর গলায় বললো,”আম্মা দাও।”
ব্যস! বিভার আর খাওয়া হলোনা। সেই যে রাগ!
ইভার নিরবতা দেখে কপালের ভাঁজ গাঢ় হয় ইউসুফের। আরেকগালে হাত রেখে হাঁটুগেড়ে একটু নিচে ঝুঁকে। মুখ বরাবর চেয়ে আদুরে গলায় বলে,

-“কি হয়েছে?”

ইভা আরো মিঁইয়ে যায়। মাথা নামিয়ে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের দিকে তাকিয়ে লজ্জায় জর্জরিত অত্যন্ত নিচু স্বরে শুধায়,

-“আপা এই রোদের মধ্যে ছাদে বসে আছে ইউসুফ ভাই।”

বলে আর একবারো ইউসুফের দিকে তাকায় না সে। ইউসুফ প্রতিক্রিয়া দেখায় না। ইভার কথার মানে তার বুঝতে অসুবিধা হয়নি। ঘাড় ফিরিয়ে জানলা দিয়ে বাইরের কাঠফাঁটা রোদ্দুরে চোখ বুলিয়ে সোজা হয় দাড়ায়। ইভা মুখ তুলে তাকায়। প্রায় কাঁদো কাঁদো কন্ঠে ডাকে,

-“ইউসুফ ভাই?”

১৫.
উত্তপ্ত রোদে পেছন থেকে চিরচেনা আকৃতির লম্বাটে ছায়া দেখতে পেয়েও কাঠ হয়ে বসে থাকে বিভা। ইউসুফ কাছাকাছি এসে দাড়ায়। শান্তস্বরে একবার ডাকে,

-“বিভা?”

বিভা উওর দেয়না। যেন শুনতেই পায়নি এমন ভঙ্গি করে পড়ে থাকা জবা গাছটা তুলে টবের মাটিতে বসায়। ইউসুফ দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। মেয়েটার এই এক স্বভাব। রাগ হলে সবসময় নিজের উপর অত্যাচার করে। এইযে ঝলসানো রোদে বসে রাগ ঝাড়ছে। কি লাভ হচ্ছে? শেষে নিজে অসুস্থ হওয়া ছাড়া আর কিছু কি?
পাশে পড়ে থাকা কাঁটায়ভর্তি গোলাপগাছটার দিকে তাকিয়ে আবারো দীর্ঘশ্বাস ফেলে ইউসুফ। নিচু হয়ে বিভার ডানহাতের কঁনুইয়ের নিচটায় আলতো করে চেপে ধরে। অত:পর পূর্বের ন্যায় ঠান্ডাস্বরেই বলে,

-“এসো।”

বিভা ঘাড় বাঁকিয়ে তাকায় একবার। দৃষ্টি বিনিময় হয়। চোখে চোখ পড়ে। মুখ ফিরিয়ে বিভা গমগমে কন্ঠে বলে,

-“ছাড়ুন।”

ইউসুফ ছাড়েনা, বরং হাতের চাপ শক্ত করে। বিভার রাগ পাহাড় ছোঁয়। হাত ঝাঁড়া দিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করে, লাভ হয়না। ইউসুফ নিরবে হেসে বলে,

-“আমার সাথে পারবে তুমি?”

সেই হাসিতে মন পুঁড়ে ড়ে যায় বিভার। রাগে, দু:খে চোখ ফেটে জল আসে। কিন্তু চোখ শুকনো। ঠোঁট কেঁপে উঠে। দু’ তিনবার প্রানপনে চেষ্টা করেও ছাড়াতে না পেরে অসহ্য অভিমানে হাঁপিয়ে উঠে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

-“জোর দেখাচ্ছেন?”

ইউসুফ এতক্ষনের শক্ত করে চেপে রাখা আঙুলগুলো ঢিলে করে দেয়,

-“নিজেই ব্যাথা পাবে। জেদ করছো কেনো? উঠতে বলেছি। উঠো। আমার দেরি হচ্ছে।”

আবেগী বিভা রাগে চিৎকার করে উঠে,

-“আপনি যান এখান থেকে। আপনাকে কেও আসতে বলেনি। ছাড়ুন বলছি। ছাড়ুন আমার হাত।”

তার চিৎকারে নির্লিপ্ত ইউসুফের সামান্য পরিবর্তনও দেখা যায়না। বরং প্রচন্ড স্বাভাবিক গলায় সে প্রশ্ন করে,

-“রোদে বসে কি হবে?”

-“দেখছেন না কাজ করছি?”

-“তোমার করা লাগবেনা, মালী আছে।”

-“আমি নষ্ট করেছি, আমিই ঠি ক করবো।”

-“আচ্ছা, আমি লাগিয়ে দেই, দাও।”

বলতে বলতেই গোলাপের ছোট্ট গাছটার দিকে হাত বাড়ায় ইউসুফ। বিভা আবার চিৎকার করে উঠে,

-“খবরদার আপনি আমার গাছ ধরবেননা! একদম ধরবেননা।”বলেই ঝট করে ডানহাতের তালু দিয়ে গাছের ডাল মুষ্টিবদ্ধ করে ধরে বিভা। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে পড়ে ইউসুফ। চোখের পলকে বিভার হাতের উপর চেপে ধরে ছাড়ানোর চেষ্টা করে সজোরে ধমকে উঠে বলে,”পাগল হয়েছো? ছাড়ো!…বিভা পাগলামি করোনা।”

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here