মেঘ_রোদ্দুর পর্বঃ১০

0
2431

মেঘ_রোদ্দুর পর্বঃ১০
#লেখিকা_তাজরিয়ান_সরকার

?
?

তিয়াশা বেশ সকালে হসপিটালে যায়। গিয়ে নিজের কেবিনে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে রাউন্ডে বের হয়। রাউন্ড শেষ করে আয়াশের মায়ের কাছে যায়। সেখানে গিয়ে দেখে আয়াশ, প্রিয়া, প্রাপ্তি আর প্রাপ্তির হাসবেন্ড সবাই বসে আলোচনা করছে।

তিয়াশা তাদের দিকে তাকিয়ে এক চিলতে হাসি দিয়ে আয়াশের মাকে চেক করে। উনার চেক-আপ শেষ করে তিয়াশা সবার দিকে ফিরে তাকায়।

তিয়াশাঃ আপনারা চিন্তা করবেন না। জানি একটু চিন্তা হচ্ছে সেটা উনার সামনে প্রকাশ করবেন না। উনি ঘুমচ্ছে ঘুমাক। ডাক দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সৃষ্টিকর্তাকে ডাকুন তার কাছে দোয়া করুন। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব সবকিছু ভালো ভাবে করার জন্য। মানসিকভাবে শক্ত হোন। আর মি.আয়াশ ব্লাডের কথা বলা হয়েছিল আপনাকে?

আয়াশঃ হ্যাঁ। আমি ব্লাড এরেঞ্জ করেছি।

তিয়াশাঃ ওকে। আপনার প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। দুপুর তিনটায় ওনাকে অটিতে ঢুকানো হবে। আর প্লিজ পেশেন্ট যেন মানসিক ভাবে দূর্বল না হয়। এমন কোনো কথা বলবেন না। আর চেষ্টা করবেন উনার সামনে হাসিখুশি থাকতে। আশা করি আমার কথা বুঝতে পেরেছেন।

তিয়াশা কথাগুলো বলে সোজা কেবিন থেকে বেরিয়ে সোজা নিজের কেবিনে চলে যায়। নিজের কেবিনে তিয়াশা ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতে বসে।

দুপুর ২ টা,,

তিয়াশা লাঞ্চ করছে। এমন সময় আয়াশ তার কেবিনে ঢুকে। তিয়াশা আয়াশকে বসতে বলে।আয়াশ চেয়ারে বসে। তিয়াশা খাওয়া শেষ করে ফ্রেশ হয়ে এসে নেহাকে ডেকে পাঠায়।

নেহাঃ ম্যাম কিছু বলবেন?

তিয়াশাঃ অটি রেডি করছো?

নেহাঃ হ্যাঁ ম্যাম।

তিয়াশাঃ ওকে যাও। বলুন মি.আয়াশ! কি বলবেন?

আয়াশঃ কিছু না এমনি এসেছি।

তিয়াশাঃ ওহ আচ্ছা। এখন আপনি যেতে পারেন। গিয়ে আপনার মাকে সময় দিন।

তিয়াশা একটু রিসিপশনে যায়। সেখানে গিয়ে দরকারি কাজ শেষ করে উপরে এসে পড়ে। আয়াশের মাকে অটিতে নেওয়া হয়েছে। তিয়াশাও ঢুকবে। অটির সামনে আয়াশরা দাঁড়িয়ে আছে। তিয়াশা যাওয়ার ওদের সবার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে চলে যায়।

সন্ধ্যা ৭টা,,

তিয়াশা অটিতে থেকে বের হয়। সবাই বাহিরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তিয়াশা
অটি থেকে বের হয়ে সবার সামনে দাঁড়িয়ে একটা মিষ্টি হাসি দেয় আর নেহা পেছন থেকে এসে বলে অপারেশন সাকসেসফুল। কয়েকঘন্টার মধ্যেই কেবিনে দেওয়া হবে।

আয়াশ খুশিতে গিয়ে প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরে তারপর তিয়াশাকে জড়িয়ে ধরতে গিয়ে থেমে যায়। আয়াশের এমন কাজে তিয়াশা হতবাক হয়ে যায়। তিয়াশা বেশি কিছু না বলে সোজা চলে যায় নিজের কেবিনে।

আয়াশ নিজেও অস্বস্তিতে পরে যায়। সে কোনোরকমে সবাইকে ম্যানেজ করে তারপর নিয়ে চে চলে যায়।

তিয়াশা আয়াশের মাকে চেক করে বাসায় চলে আসে। বাসায় এসে সবার সাথে বসে ডিনার করে। তখন তিয়াশ খেয়াল করে মিফতার মুড অফ। খাবার খাওয়ার সময় তিয়াশা কারো সাথে একটা কথাও বলেনি কেউ জিজ্ঞেস করলে তার উত্তর ও দেয়নি।

তারা সবাই খাওয়া শেষ করে যার যার রুমে চলে যায়। মিফতা রুমে গিয়ে বেলকনিতে গিয়ে বসে। তিয়াশা কিছু একটা ভেবে তার ফোনটা হাতে নিয়ে বেলকনিতে গিয়ে মিফতার পাশে বসে।

তিয়াশা বেশ কিছুক্ষণ মিফতার পাশে বসে বসে মোবাইল টিপছে। ও ইচ্ছে করেই মিফতাকে কিছু বলেনি। মিফতাকে দেখে বুঝা যাচ্ছে ও খুব ডিপ্রেসড। মনটা বেশ খারাপ ওর।

তিয়াশা জানে মিফতা নরমাল হলে একটু রিলেক্স হলে এমনেই বলবে। তাই তিয়াশা কিছু না বলে চুপ করে আছে।

রাত ১ টা,,

তারা দুইজন এখনও বেলকনিতেই বসে আছে। তিয়াশা কিছুক্ষণ বসে থেকে ভাবে একটা গান গাইবে। আবার ভাবে এত রাতে গান গাইলে কেমন হবে।

তিয়াশা মিফতাকে বলে,

তিয়াশাঃ গান শুনবি?

মিফতাঃ হ্যাঁ শোনাতে পারিস।

তিয়াশাঃ আচ্ছা।

? Tadpaye mujhe teri sabhi baatein
Ek baar aye dewani
Jhutha hi sahi pyar to kar
Main bhula nahin haseen mulakatein
Bechain karke mujhko
Mujhe se yun na phir nazar
Sardi ki raton mein
Hum soye rahen hi chador mein
Hum dono tana hon
Na koi bhi rahe ghar mein
Zara zara mehekta hai
Behekta hai
Aaj to mera..

এতটুকু গেয়ে ই তিয়াশা থেমে যায়। মিফতা হঠাৎ করে বলে উঠে সে এই বিয়েটা করতে পারবে না। তা শুনে তিয়াশা হতবাক হয়ে যায়। সে বুঝতে পারে না সে কি বলবে।

মিফতা এতটুকু বলেই উঠে গিয়ে বেডে শুয়ে পরে। তিয়াশা মিফতার পেছন পেছন গিয়ে জিজ্ঞেস করে,”কেন?”

মিফতাঃ কাল বলব।

তিয়াশাঃ আচ্ছা।

তিয়াশা ওকে আর কিছু না বলে শুয়ে পড়ে। অজানা কারণে তিয়াশার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।

চলবে….!!

[ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে। ছোট করে দেওয়ার জন্য দুঃখিত]

নবম পর্বের লিংকঃ
https://www.facebook.com/groups/2401232686772136/permalink/2901990096696390/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here