মেঘ_রোদ্দুর পর্ব_৬
#লেখিকা_তাজরিয়ান_সরকার
?
?
তিয়াশা পেছন ফেরে দেখে আয়াশ দাঁড়িয়ে আছে। আয়াশকে দেখো তিয়াশা বুঝতে পারে তিয়াশার কথা আয়াশ শুনেছে। তিয়াশা আয়াশকে আর কিছু বলেনি।
আয়াশ এসেছিলো তিয়াশাকে তার মায়ের ব্যাপারে কয়েকটি জিনিস জিজ্ঞেস করতে সেটা বলেই চলে গেছে।
তিয়াশা রাউন্ডে বের হয়। রাউন্ড শেষ করে সোজা বাসায় যাওয়ার জন্য বের হয়। বাসায় এসে দেখে নাহিনরা সবাই এসে পড়েছে। নাহিনরা সবাই বসে আছে ড্রয়িংরুমে। তিয়াশার মা আর চাচি মিলে টেবিলে খাবার দিচ্ছে।
তিয়াশা এসে মিফতাকে খুঁজে। মিফতা তখনও নিচে নামেনি। তিয়াশা সবার সাথে দেখা করে কিছুক্ষণ কথা বলে উপরে চলে যায় ফ্রেশ হতে।
তিয়াশা ফ্রেশ হয়ে হোয়াইট একটা কুর্তি আর জিন্স পড়ে সাথে স্কার্ফ গলায় পেচানো। চুলগুলো পনিটাইল করে বাধা। আর মিফতা হালকা পিঙ্ক কালারের থ্রি-পিস। চুলগুলো ছেড়ে রেখেছে। গলায় উড়না দেয়া।
তিয়াশা আর মিফতা একসাথে নিচে নামে। নাহিন মিফতাকে দেখে একটু বড়সড় শক খায়। সে কল্পনায়ও আশা করেনি তার স্বপ্নের সেই নারী তার সামনে। মিফতা তিয়াশার সাথে সিড়ি দিয়ে নামছে আর নাহিন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
তিয়াশার চারজন ফ্রেন্ড এসেছে আতিকা, নাতাশা, নাভিদ আর নাহিন। তারা সবসময় একসাথে থাকতো।
নাহিন যে মিফতার দিকে তাকিয়ে আছে তা কারো চোখে না পড়লেও তিয়াশার চোখ এড়িয়ে যায়নি। তিয়াশা এসে সবাইকে নিয়ে টেবিলে লাঞ্চ করতে বসে।
নাহিন আর মিফতা সামনাসামনি বসেছে। আতিকা আর নাভিদ সামনাসামনি নাতাশা আর অর্পণ। এক পাশে মেয়েরা আর তাদের অপরপাশে ছেলেরা। সবাইকে খাবার দেওয়া হয়। সবাই গলৃপ করতে করতে নিজেদের খাবার খাচ্ছে। নাহিন না খেয়ে মিফতার দিকে তাকিয়ে আছে ব্যাপারটা এবার মিফতার চোখেও পড়েছে। মিফতার খুব অস্বস্তি লাগছে নাহিনের এমন কাজে।
মিফতাঃ ব্যাটা লুচু! এভাবে কেউ তাকিয়ে থাকে! (বিড়বিড় করে)
পাশের থেকে তিয়াশা বলে উঠে,“ কি বিড়বিড় করছিস? ”
মিফতাঃ তোর বন্ধু এমনভাবে তাকিয়ে আছে দেখ!
তিয়াশাঃ উহুম উহুম!
মিফতাঃ তোর আবার কি হলো?
তিয়াশাঃ কিছু না খা। নাহিন খাবারে নজর দে ভাই!
নাহিনঃ আব..না মানে আসলে!
তিয়াশাঃ চুপচাপ খাও। আসল নকল দেখছি আমি।
তিয়াশারা সবাই লাঞ্চ শেষ করে তিয়াশার রুমে গিয়ে বিকাল অব্দি আড্ডা দেয়। তারপর তিয়াশা হসপিটালে চলে যায় আর নাহিনরা সবাই বাসায়।
_________________________
নাহিন বাসায় এসে নিজের রুমে চলে যায়। গিয়ে ফ্রেশ হয়। সে কিছুতেই মিফতাকে দেখার পর ভুলতে পারছে না তাকে।
কলেজ ফাংশনের ভালো ডিডিওতে দেখা সেই মেয়েটি ই মিফতা নাহিন ১০০% শিউর। নাহিন কিছুক্ষণ নিজের রুমে পায়চারি করে। তারপর তিয়াশাকে কল দেয়!
তিয়াশাকে বেশ কয়েকবার কল দেওয়ার পরও তিয়াশা কল রিসিভ করে না। নাহিন ভাবে তিয়াশা হয়তো কোনো কাজে আছে তাই কল রিসিভ করছে না।
ভালোলাগা অনেকের প্রতি তৈরি হয় কিন্তু ভালোবাসা নামক জিনিসটি সবার প্রতি তৈরি হয় না। ভালোবাসি বললেই ভালোবাসা হয় না। ভালোবাসা নামক বস্তুতে মিশে থাকে দুটো মানুষের হাজারো স্বপ্ন, অব্যক্ত অনুভূতি।
ভালোবাসতে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়। সেইসব ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া যায় অনেক কিছু। ভালোবাসা কখনো শেষ হয়ে যায় না। ভালোবাসলেই পেতে হয় না। দূর থেকেও সবসময় ভালোবাসা যায়।
_________________________
তিয়াশা রাউন্ড শেষে এসে দেখে নাহিন ১৩ টা মিসড কল দিয়েছে। তিয়াশার মুড অফ আর তিয়াশা টায়ার্ড ও তাই সে কল ব্যাক করে না। ভেবে নেয় পরে সময় পেলে কল ব্যাক করবে।
তখনই নেহা তিয়াশার কেবিনে প্রবেশ করে। নেহা কিছু কাগজপত্র দিয়ে চলে যায়। তিয়াশা কাগজপত্র গুলো দেখা শুরু করে তখন দরজায় কেউ নক করে।
তিয়াশা ভেতরে আসতে বলে। তিয়াশা কাগজগুলো থেকে মাথা উঠিয়ে দেখে প্রিয়া এসেছ। তিয়াশাকে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি তাকে বসতে বলে।
প্রিয়াঃ আপু একটা প্রশ্ন করি?
তিয়াশাঃ হুম বলো!
প্রিয়াঃ তুমি খুব ভালো।
তিয়াশাঃ তাই?
প্রিয়াঃ হুম। আমার আম্মুকে অনেকটা সুস্থ করে তুলেছো। পুরোপুরি সুস্থ করে তোলার জন্য কতকিছু করছো!
তিয়াশাঃ শোনো, এটা আমার কাজ। এটা আমার দায়িত্ব আমার কর্তব্য। আমিতো ডাক্তার হয়েছি এজন্য ই।
প্রিয়াঃ তোমাকে একটা কিস করি?
তিয়াশাঃ হাহা। আচ্ছা এসো।
প্রিয়া উঠে গিয়ে তিয়াশার গালে একটা কিস করে। তারপর আরো কিছুক্ষণ গল্প করে তার মায়ের কাছে যায়।
রাত ১০ টা,,
তিয়াশা হসপিটাল থেকে বাসায় এসে দেখে সবাই শুয়ে পড়েছে। ও নিজের রুমে চলে যায়। রুমে গিয়ে দেখে মিফতা বেডে বসে ল্যাপটপে কি যেন করছে।
তিয়াশা সোজা ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখে মিফতা তিয়াশার জন্য খাবার নিয়ে বসে আছে।
তিয়াশাঃ কিরে!
মিফতাঃ আমি ই বড়মাকে বলেছি গিয়ে ঘুমতে। তুই খেয়ে নে।
তিয়াশাঃ তুই?
মিফতাঃ আমি খেয়েছি বনু।
তিয়াশাঃ আচ্ছা।
তিয়াশা খাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ বেলকনিতে গিয়ে বসে থাকে। তারপর রুমে এসে শুয়ে পড়ে। মিফতার খুব মাথা ব্যাথা করছে তাই মিফতা মেডিসিন খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
তিয়াশা শুয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে। তার দুচোখ দিয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে। চোখদুটো লাল হয়ে গেছে।
তিয়াশা একটু তার অতীতে ডুব দেয়….
চলবে….!!
[ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে ]
পঞ্চম পর্বের লিংকঃ
https://www.facebook.com/groups/2401232686772136/permalink/2892604794301587/