#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_০৭ শেষ
#Tanisha_Esu
আমি বাধা দেওয়া সত্ত্বেও তিনি কোলে করেই বাড়ির ভিতর নিয়ে গেলেন।আমি ফ্রেস হয়ে নিলাম নিজের রুমে গিয়ে।
কিছুক্ষণ পর,,
শশুড় এবং শাশুড়ী আমার কাছে এসে মাফ চায়লেন।আমি ভাবছি বিয়ের পর থেকে যারা আমার সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথাও বলিনি তারা আমার সাথে কথা বলছে আমার খুব আশ্চর্য লাগছে।
রাতে,,
আজ সকলের সাথে ডিনার করলাম।তিন মাসের বিয়ে আজই প্রথম পরিবারের সাথে রাতের খাবার খেলাম।আগের কথা মনে পরে গেলো একা একা চোখের পানি ফেলতাম আর হয়তো জীবন বাঁচানোর জন্য খাবার খেতাম মাঝে মাঝে তো নিজেকেই নিজে কষ্ট দেওয়ার জন্য খাওয়া বাদ দিতাম।
ডিনার করে রুমে চলে আসলাম। আজ মনে বড়ই শান্তি লাগলে,,অনেক দিন হলো নিজের যত্ন করিনি।সখের চুল ছিলো আমার বেশ বড়,,কতোই না যত্ন করেছি কিন্তু একটা ঝড় সব উলোট পালোট করে দিলো আমার জীবন,,সখ,ভালোবাসা
এই সব ভাবতে ভাবতে চুলগুলো সুন্দর করে আছড়াতে ছিলাম হঠাৎ কাব্য ভাইয়া আমার রুমে আসলো,,এসে একটা ব্যাগ হাতে ধরিয়ে বললো এইগুলো পড়ে আমার রুমে এসো।আর হ্যাঁ সুন্দর করে সাজবে। এই বলে চলে গেলেন আমাকে কিছু বলার সুযোগ ও দিলেননা।
আমি ব্যাগ খুলে দেখলাম একটা পিংক কালারের শাড়ি আর মেচিং জুয়েলারি রাখা।কি আর করার শাড়ি জুয়েলারি পরে,,চোখে কাজল,,চুল গুলো ছেড়ে দিলাম।আয়নায় অনেক দিন পর নিজেকে দেখে ভালো লাগছে।
আমি তার রুমে গিয়ে এবার একটু বড় শকড খেলাম।।পুরো বাসরঘরের মতো সাজানো।।পুরো বেডটা ফুলে সাজানো,,মোমবাতি মিটিমিটি আলোই জ্বলছে,,আকাশে চাঁদের আলোই ঘর যেন আলোকিত হয়ে গেছে।কিন্তু এতো কিছুর পরও তাকে রুমে দেখলাম না।
হঠাৎ পেছন থেকে তিনি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।তারওর তার দিকে ঘুরিয়ে আমাকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখে নিলো।কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর আমার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আমার সাথে লেপ্টে গেলো,,মনে এক অজানা ঝড় বইছে।কিন্তু আমার আগের কথা মনে পরে গেলো তার এতো রোম্যান্টিকতার সব মাটি করে দিলাম আমি।
তার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বেলকুনিতে চলে আসলাম।চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো।আমার এমন ব্যবহারে সেও অনেক কষ্ট পেলো,,তাও সে বাধা না মেনে আমার কাছে এসে চোখের পানি মুছে দিলো এবং বললো,,
কাব্যঃ প্রমিস করছি আজ থেকে আমি তোমার কাব্য হয়ে দেখাবো প্লিজ আমাকে দূরে সরিয়ে রেখো না।আমি বিষাক্ত অতীত ভুলে তোমার হতে চায় আমাকে আর বাধা দিন না তানিশা,,, আমি তোমাকে যে বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি,,মায়ায় জড়িয়ে পরেছি তোমায়
তারপর আমাকে পাজা কোলে নিয়ে বেডে শুইয়ে দিলো আলতো করে ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো সে।তার সম্পূর্ণ ভালোবাসা আমার উপর চালাতে লাগলো আমিও আর বাধা দিলাম না।
সকালে,,,
ঘুম ভেঙ্গে দেখি তিনি আমার বুকের উপর শুয়ে আছেন।আমার নড়াচড়ার কারণে তার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।তিনি চোখ কচলাতে কচলাতে উঠে বসলেন।
কাব্যঃ ওই কই যাচ্ছো রাতে আমি ভালো আদর করতে পারিনি এখন আদর করবো আবার
তানিশাঃ কি করছেন ভাইয়া ছাড়ু,,,,ঠাসসডস
আমি তার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি।। তিনি রাগে গজগজ করছেন
কাব্যঃ এই কে তোমার ভাইয়া হুম,,বিয়ের পর কোথায় জানু টানু বলবা তা না ভাইয়া আর একবার ভাইয়া বললে দেখো কি করি
তানিশাঃ তাই বললে মারতে হবে,,বুঝিয়েও তো বলতে পারতেন(অভিমানি সুরে)
কাব্যঃ হু তা অবশ্য বলতে পারতাম বাট এর পর ভাইয়া বলার আগে এই থাপ্পড় টা তোমাকে মনে করিয়ে দিবে যে ভাইয়া বলা নিষেধ।
আমি মুখ ফুলিয়ে বসে আছি তিনি এসে যেখানে মেরেছেন সেখানে কিস করতে লাগলেন।তার এমন পাগলামোতে রাগটা একদমই কমে গেলো।
৫ বছর পর,,
পাঁচটা বছর ধরে চেষ্টা করেছি বাট মা আর হতে পারলাম না।কার পবলেন জানিনা,, টেস্টের কাগজ যখন আসে কাব্য দেখে ছিড়ে ফেলে দেয়।এবং আমরা একটা অনাথ আশ্রম থেকে বাচ্চা এডপ্ট করি।হয়তো মা হতে পারলাম না কিন্তু ভালোবাসা অনেক পেয়েছি।
আমাকে কখনো খোটা শোনা লাগিনি কাব্যের জন্য,,কেই মুখ ফোসকে কিছু যদি বলে ফেলেছে কাব্য তার বেহাল অবস্হা বানিয়ে ফেলে।
আজ আমি অনেক সুখি,,বাচ্চা এডপ্ট করলেও আমি এখন মা।এই পাঁচটা বছরে আমি কাব্যের এতো ভালোবাসা কেয়ার পেয়েছি যা কখনো যোগ্য নয়।আগের কাব্যের কথা মনে পরলেই আমার হাসি লাগে,,আর ওকে যদি সেগুলো বলি হোপ ফুলিয়ে বসে থাকে
হয়তো সেদিন তাকে সুযোগ যদি দিতাম না আলাদা জীবন কাটাতাম কিন্তু তাও ভালোবাসার ক্ষোপটা আমার থেকেই যেতো। সেদিন মাফ করার জন্যই হয়তো আজ এতো এতো সুখ আমি ডিসার্ব করি।
সেই ক্রাসের সাথেই আমার বিয়ে হলো যাকে আমি অত্যান্ত ভালোবাসতাম।নিয়তও আসলে কোথায় নামিয়ে আনে মানুষকে তাই ভাবি এখন।আর আমার মেয়ের নাম নাতাশা কারণ তার জন্যই আমি শেষ মেষ কাব্যকে পেয়েছিলাম
”
”
”
”
সমাপ্ত…….