#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_১১ (#Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu
★
রান্না করে এখন শুভ্রের জন্য কফি নিয়ে যাচ্ছি,,রাতে ও বলেছিলো আমাকে সারপ্রাইজ দিবে কি জানি কি দিবে??
তানিশাঃ এই উঠো আর কতো ঘুমাবা,,অফিসে যাবা না
শুভ্রঃ আরেকটু ঘুমাই প্লিজ(ঘুমের ঘোরে)
তানিশাঃ ১০ টা বাজতে ২০ মিনিট বাকি আছে,,এবার বলো উঠবা কি উঠবানা
শুভ্রঃ কিহহহ(তড়িঘড়ি করে উঠে) এতো বেজে গেছে তুমি এখন ডাকছো??
তানিশাঃ হি হি কেবল সাড়ে আটটা বাজে
শুভ্রঃ উফফ তুমিও না আম্মুর….
তানিশাঃ কি আম্মু??
শুভ্রঃ কিছুনা,,
তানিশাঃ এই নাও কফি,,আর শাওয়ার নিয়ে আসো আমি ব্রেকফাস্ট দিচ্ছি
শুভ্রঃ আমার পাওনা বাকি আছে?
তানিশাঃ কিসের পাওনা
কপালে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলো তানিশাকে,,তানিশা মুচকি হেসে শুভ্রের কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিলো,,এবার শুভ্র ঠোঁটে আঙ্গুল দিলো,,,
তানিশাঃ যাহহ দুষ্ট বর
এই বলে তানিশা নিচে এসে টেবিলে ব্রেকফাস্ট গুছাতে লাগলো,,
তানিশাঃ থ্যাংকস আল্লাহ শুভ্রের মতো হাজবেন্ড আমার কপালে লিখার জন্য,,, ও না থাকলে ভালোবাসার আসল মানেই আমি বুঝতাম না (মনে মনে)
শুভ্রঃ কি ভাবছো
তানিশাঃ আল্লাহ ধন্যবাদ দিচ্ছি
শুভ্রঃ কেনো??
তানিশাঃ তোমার মতো আমাকে একটা হাজবেন্ড দেওয়ার জন্য
শুভ্র মুচকি হেসে টেবিলে বসলো,,দুজনে মিলে ব্রেকফাস্ট করে নিলো,,,
শুভ্রঃ তোমার কি কোন কিছু দরকার?? বাহহ কিছু খাইতে মন বলছে
তানিশাঃ নাহহ তো
শুভ্রঃ এইটা রাখো(টাকা দিয়ে)
তানিশাঃ টাকা কি করবো
শুভ্রঃ কিছু লাগলে কিনে নিও,,এবার আসি
তানিশা শুধু মুচকি হাসলো,,,শুভ্র যাওয়ার আগে তানিশার কপালে একটা কিস দিলো,,,
শুভ্রঃ I love U,,,আল্লাহ হাফেজ
তানিশাঃ Love u 2,,, সাবধানে যেও আল্লাহ হাফেজ
শুভ্র চলে গেলো,,আমিও গেট অফ করে বাকি কাজ করতে থাকলাম,,আজ নাকি ওর আসতে দেরি হবে কি করবো সেটাই ভাবছি,,,,,
সব কাজ করতে করতে ১টা বেজে গেলো,, আজান দেওয়ার পর নামাজ পরে ওকে ফোন দিলাম,,,
তানিশাঃ আসসালামু আলাইকুম
শুভ্রঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম
তানিশাঃ লান্চ করছো তুমি??
শুভ্রঃ হুম তুমি
তানিশাঃ নাহহ এখন খাবো,,
শুভ্রঃ এখনো খাওনি তারাতারি খেয়ে নাও ওকে
তানিশাঃ আচ্ছা
এই বলে ফোন কেটে দিলাম,, তারপর আমিও লান্চ করে নিলাম।
বিকালে,,
আম্মু সাথে কথা বলে ছাদে আসলাম,, চারিপাশের পরিবেশটা আজ একটু ছমছম,,মেঘলা আকাশ,এখনি হয়তো বৃষ্টি হবে হবে ভাব।দোলনায় বসে দুলছি আর এমন পরিবেশে দু-কলি গান করতে ছিলাম,,,
“আমার একলা আকাশ থমকে গেছে
রাতের স্রোতে ভেশে
শুধু তোমাই ভালোবেসে?
আমার দিনগুলো সব রং চিনেছে
তোমার কাছে এসে
শুধু তোমাই ভালোবেসে ?
হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠলো,,
তানিশাঃ এই সময় কে আসলো??
নিচে এসে দরজা খুলে দেখলাম শুভ্র এসেছে,,কি আশ্চর্য সে আসার সাথে সাথে বৃষ্টি নামলো,,
তানিশাঃ ভাগ্যিস তুমি তারাতারি এসেছো নাহলে আজ ভিজে যেতে
শুভ্রঃ কি করবো বলো মিটিং কেন্সেল করে দিছি
তানিশাঃ কেনো?
শুভ্রঃ এখানেই বলবো নাকি
তানিশাঃ ওপস,,আসো আসো
তানিশা দরজা অফ করে দিলো,,,
তানিশাঃ যাও ফ্রেস হয়ে এসো
শুভ্রঃ আচ্ছা
শুভ্র ফ্রেস হয়ে এসে দেখে তানিশা ডিনারের জন্য খাবার রাখলো টেবিলে,,
তানিশাঃ তুমি এসে গেছো
শুভ্রঃ আচ্ছা তোমাকে রান্না কে শিখিয়েছে গো(টেবিলে বসে)
তানিশাঃ আব্বু কেন ভালো হয়না রান্না
শুভ্রঃ খুব টেষ্ট কিন্তু আব্বু(অবাক হয়ে)
তানিশাঃ আসলে আমার আব্বু আম্মু পালিয়ে বিয়ে করেছিলো আম্মু রান্না করতে পারতো না,,তাই আব্বুই রান্না শিখছিলো
শুভ্রঃ তাহলে তো শশুড় আব্বুর হাতের রান্না টেস্ট করতে হবে
তানিশাঃ ওকে যাবোনে তখন খেও,,,
শুভ্র আর আমি খাওয়া শেষ করলাম।শুভ্র একটা মুচকি হেসে বললো,,
শুভ্রঃ আচ্ছা,, চলো রুমে
তানিশাঃ তুমি যাও আমি এগুলো কিচেনে রেখে আসছি
শুভ্র চলে গেলো,,,আমিও সব গুছাতে লাগলাম,,হঠাৎ সেই প্রথম দিনের শুভ্রকে মনে পরে গেলো,,কতো আসমান-জমিন তফাত।
রুমে গিয়ে দেখি সে পায়ের উপর পা তুলে লেপটপে কাজ করছে।আমিও ড্রেসিন টেবিলের সামনে গিয়ে চুলগুলো খোপা করলাম। সে উঠে এসে আমার খোঁপায় বেলি ফুলের মালা দিলো।আমি বেশ অবাক হলাম।
শুভ্রঃ দেখছো,,,কি সুন্দর লাগছে আমার বউটাকে(পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে)
আমি বেশ লজ্জা পেলাম তার কথায়,,,
শুভ্রঃ এখনো লজ্জা পাও তুমি
আমি কনুই দিয়ে একটা গুতা দিলাম,, তিনি কিছুটা সরে গেলো
তানিশাঃ এবার ঘুমান তো
শুভ্রঃ ঘুমাবো তো ঠিক আছে তার আগে তোমাকে সারপ্রাইজ তো দিব নাহহ
তানিশাঃ ওওহহ আমি তো ভুলেই গেছি,কি সারপ্রাইজ
শুভ্রঃ ব্যাগ গুছাও আজই
তানিশাঃ কেনো?? কই যাব?
শুভ্রঃ হানিমুনে
তানিশাঃ হানিমুন(অবাক) কোথায় যাব আমরা
শুভ্রঃ সাজেক
তানিশাঃ সত্যি
শুভ্রঃ হুম সত্যি
তানিশাঃ জানো এতোদিন শুধু বিয়ের পরে যাব কল্পনা করেছি কিন্তু প্রথমে তুমি এমন ছিলে দেখলেই ভয় লাগতো কিছু বলবো তা তো দূরে থাক
শুভ্রঃ আর এখন ভয় লাগেনা
তানিশাঃ নাহহ,, হি হি
শুভ্রঃ দেখছি আমার আগের ফ্রমে আসতে হবে
তানিশাঃ এই না নাহহ,,,আমি ভয় করে
শুভ্রঃ আচ্ছা আচ্ছা চলো ব্যাগ গুছিয়ে নি
দুজনে মিলে ব্যাগ গুছিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম
সকালে,,,
অনেক সকালে ঘুম থেকে উঠে কোন রকম ব্রেকফাস্ট করে,, রওনা হয়ছি।আজ খুব ভালো লাগছে দুজনে মিলে কোন এক দূরে যাচ্ছি
শুভ্রঃ তোমার কি ঘুম লাগছে
তানিশাঃ হুম(নিরীহ ভাবে তাকিয়ে)
শুভ্রঃ ঘুমাও(তার ঘাড়ে হেলান দেওয়ালো)
আমিও তার হাত শক্ত করে চেপে ধরে ঘুমিয়ে পরলাম।
দুপুরের দিকে,,
তিনি আমাকে ডাকতে লাগলেন,,,,
শুভ্রঃ তুমি যে এতো ঘুমাতে পার আগে জানতাম না
তানিশাঃ ডাকলে কেনো??
শুভ্রঃ লান্চ করতে হবে না নাকি।
তানিশাঃ আমি খাবো না
শুভ্রঃ হোপ(রাগ দেখিয়ে) হা করো
তিনি আমাকে খাইয়ে দিয়ে নিজে খেয়ে নিলেন
”
”
”
”
”
”
”
”
”
”
”
চলবে….