#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_১৭ (#Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu
★
তানিশাঃ আপনি তো তখন খান নি,, খাবার দিবো
শুভ্রঃ খিদা নাই (মন খারাপ করে)
তানিশাঃ কি হলো মন খারাপ লাগছে(মনে মনে) কি হয়ছে আপনার
শুভ্রঃ জানতাম এটাই জিজ্ঞেস করবে,,এবার আমিও একটু ঢং করবো(মনে মনে) কিছুনা
তানিশাঃ কি হলো বলো
শুভ্রঃ তুমি কি আমাকে ক্ষমা করেছো।
তানিশাঃ সম্পর্ক আগাতে হলে অবশ্যয় ক্ষমা করতেই হবে
শুভ্রঃ খাবার দাও
তানিশাঃ আজব লোক তো(মনে মনে) আপনি বললেন খাবেননা
শুভ্রঃ ওপপস ভুলেই গেছি খাবো না যাও
তানিশাঃ আজব লোকতো আপনি
শুভ্রঃঃ আমাকে আজব বললে কেন??
তানিশাঃ ওইসব বাদ দেন খাবেন কি না বলেন??
শুভ্রঃ আমাকে খাইয়ে দিলে খাবো
তানিশাঃ আমাকে আগে বললেই তো হয় এতো নেকামোর কি দরকার ছিলো
শুভ্রঃ হি হি (সইতানি হেসে)
তানিশা প্লেটে খাবার মাখিয়ে শুভ্রের মুখে এক লোকমা তুলে দিলো,,শুভ্র খাবার খেতে খেতে হঠাৎ তানিশার হাতে কামড় বসিয়ে দিলো
তানিশাঃ আহহ,,কি করলেন কামড় দিলেন কেনো?
শুভ্র তানিশার রিয়েকশন দেখে হাসতে লাগলো,,,
তানিশাঃ বুঝেছি
শুভ্রঃ কি??
তানিশাঃ আপনারা বাপ বেটা মিলে আমাকে অনেক জ্বালাতন করবেন
শুভ্রঃ হুম অবশ্যয়(চোখ টিপ দিয়ে)
তানিশা রাগে রাগে শুভ্রকে খাইয়ে দিয়ে রুমে চলে আসলো।শুভ্রও পিছু পিছু চলে আসলো।তানিশা মুখে মেকাআপ তুলে চুল বানতে লাগলো আর শুভ্র পায়ের উপর পা তুলে মোবাইল টিপছে।হঠাৎ শুভ্র তানিশাকে টেনে বেডে বসিয়ে দিলো
তানিশাঃ কি করছেন কি??
শুভ্রঃ হিসসস,কোন কথা বলবা না( তানিশার ঠোঁটে হাত দিয়ে)
শুভ্র তানিশার পেটে কান দিয়ে কিছু শোনার চেষ্টা করছে,,হঠাৎ বেবি কিক মারে
শুভ্রঃ বেবি আমাকে কিক মারলো
তানিশাঃ কি??
শুভ্র এই দেখ,,আবার কান দিলো,, বেবি পূণরায় কিক মারলো,, এবার তানিশাও দেখে অবাক হলো,,,শুভ্র এতো খুশি হয়ছে যে খুশিতে পাগলামো করতে লাগলো,,তা দেখে তানিশার মন ভালো হয়ে গেলো
তানিশাঃ তুই ও তোর পাপা কে মিস করেছিলি তাইনা,,দেখ তোর পাপা কি খুশি হয়ছে (মনে মনে)
শুভ্রঃ এই এতো রাত হয়ে গেছে এখন ঘুমাবা চলো
তানিশাকে জোর করে বেডে শুইয়ে দিলো,,আর শুভ্র তানিশার মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছে,,, তানিশাও একটা শান্তি ফিল করছে যা হয়তো মুখে প্রকাশ করা যাবেনা,, তানিশা একসময় ঘুমিয়ে পরে।সাবরিনার এতো ফোন আসছে দেখে শুভ্র ব্লক করে দিছে,,কারণ সাবরিনাকে আর দুজনের মাঝে আনতে চায়না।
”
”
”
”
”
এইভাবেই আদি আর আয়ুশির বিয়ে এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলো,,,আয়ুশি একটা দিনও মিস নেই তানিশার সাথে কথা বলেনি।এদিকে আদি,,শুভ্র ও আরিয়ানের ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছে,,,,শুভ্র তানিশাকে এতো টেক কেয়ার করে যে,,, এমন হাজবেন্ড পাওয়া ভাগ্যের বিষয়।এমনি রান্না ও পারতো না ইউটিউব থেকে শিখেছে শুধু তানিশাকে কিছু করতে দিবেনা।
আরিয়ান,, শুভ্র আর আদি ঠিক করলো পিকনিক করবে কাছেই একটা প্লেসে,,,আদি সব এরেন্জমেন্ট করে রেখেছে।তানিশা আদি,,শুভ্র আয়ুশি পৌছে গেলেও আরিয়ান আর মেহেন্তা এখনো পৌছাইনি।।
তানিশাঃ কি হলো ওরা এখনো পৌছালো না কেন??
শুভ্রঃ আরিয়ান মেহেন্তাকে আনবে তারপর আসবে বুঝলা
আয়ুশিঃ ওরা কি জানেনা আজ একটা স্পেশাল দিন??
আদিঃ হুম চলে আসবে আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা
আরিয়ানঃ চলে এসেছি আর চিন্তা নেই
সবাই আরিয়ান আর মেহেন্তার দিকে তাকালো,,মেহেন্তা গিয়ে তানিশাকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো,,
তানিশাঃ আপু তুমি কাঁদছো কেনো??
মেহেন্তাঃ আমি আরিয়ানের কাছে সব শুনেছি,,কতো চিন্তায় ছিলাম জানিস আমাদের কাউকে তো ফোন করতে পারতিস
তানিশাঃ কিছু সময় দূরে যাওয়া লাভজনক,, সম্পর্কের আসল মূল্যটা বোঝার জন্য,,আর চোখ মুছো একদম কান্না করবা না
আয়ুশিঃ হুম আর কান্না করো না তো,,আমরা আয়োজন শুরু করি তাহলে
তানিশাঃ হুম অবশ্যয়,,চলো সবাই
সবাই একসাথেঃ নাহহহ
তানিশা যেনো বোকা বোনে গেলো এমন চিৎকারে,,,
আয়ুশিঃ তুই কোনো রকম কাজ করবিনা
মেহেন্তাঃ তুই কি ভুলে গেছিস,,তুই প্রেগনেন্ট একটা দূর্ঘটনা সারাজীবনের আফসোস বুঝলি
তানিশাঃ তাহলে কি আমি আরামে বসে থাকবো
শুভ্রঃ হুম,,তোমার কাজগুলো আমি করে দিবো
আদিঃ হুম,, শুভ্র ভাইয়া তো নতুন রান্না শিখেছে আমরাও চাই ভাইয়ার রান্না খেতে
আরিয়ানঃ মুখে দেওয়া যাবেতো খাবার
শুভ্রঃ কি বললি তুই (রেগে)
সবাই হাসাহাসি শুরু করে দিলো,,, শুভ্র এবার জেদ করে বললো,,,
শুভ্রঃ আমি রান্না করবো আর বাকিরা রান্না করার জিনিস জোগাড় করবে
আয়ুশিঃ ওকে বাট আইটেম কি তা তানিশা বলবে
তানিশাঃ আমি কেনো??
আয়ুশিঃ তোর যা খেতে ইচ্ছে করবে তাই হবে,,কারণ মুখে রুচি না হলে তোর কিছু খেতে ভালো লাগবেনা
আদিঃ এবার বলো কি কি খাবে তুমি
তানিশাঃ গরুর মাংস ভোনা,,পোলাও,,স্যালেট,,ডাল ঘন করে রান্না,,টক জাতীয় কোন কিছু
শুভ্রঃ তুমি কি রেষ্টুরেন্ট পাইছো
তানিশাঃ আমি তো এখনো বলাই শুরু করিনি
শুভ্র কিছুটা অবাক হলো,,এতোগুলো আইটেমের নাম বলেও বলে বলা শুরু করেনি
আদিঃ ভাইয়া তোমার বউয়ের জন্য এগুলো রান্না করতে পারবেনা,,,আর সবগুলোই হেব্বি টেষ্ট জাতীয় খাবার
শুভ্রঃ ওকে আমি রান্না করবো নো পবলেম
সব রান্না কাজ শুরু করা হয়,,,আয়ুশি আর মেহেন্তা বাটনা বাটা আর কাটাকাটি করে। অন্যদিকে আদি,, আরিয়ান যেখানে রান্না করবে সেটার ব্যবস্তা করে।তানিশা এক বয়ম আচার নিয়ে খেতে লাগছে,,,
শুভ্রঃ এই তুমি এতোগুলো আচার নিয়ে বসেছো এগুলো খেলে খাবার খাবে কেমনে
তানিশাঃ তুমি যা রান্না করবে ভালো না হলে তখন এগুলোই খেয়ে পেট ভরাতে হবে
শুভ্রঃ এইভাবে অপমান আমি ভালো রান্না করে দেখিয়ে দিব,,,
শুভ্র রাগে ফুসতে ফুসতে কাজে চলে যায় আর তানিশা শুভ্রের কান্ড দেখে হাসতে থাকে,,,,
অন্যদিকে,,,,
সাবরিনা নিজের বাড়ির সব জিনিস পএ ভাঙতে থাকে,,কেউ ঠেকাতে পারছেনা।এমন সময় সাবরিনার বাবা চলে আসে,,
সাবরিনার বাবাঃ কি করছিস সাবু,, কুল কি হয়ছে (শক্ত করে হাত ধরে)
সাবরিনাঃ ছাড়ো আমাকে,,,আমার রাগ প্রচন্ড হয়ে আছে
সাবরিনার বাবাঃ আচ্ছা আগে বল কি হয়েছে
সাবরিনাঃ ওই শুভ্র আমাকে ব্লক করে দিছে ওর এতো বড় সাহস হয় কি করে,,,আমাকে তুমি যেতেও দিচ্ছো না।
সাবরিনার বাবাঃ কি ওই শুভ্র তোকে ব্লক করে দিছে,,,আচ্ছা মা যা তুই তবুও একটু শান্ত হ।কালকেই রওনা দে
সাবরিনাঃ কালকে মানে আজকেই যাব,,ব্যবস্তা করো তুমি আমি কিছু শুনতে চায়না
এই বলে গট গট করে সাবরিনা চলে গেলো রুম থেকে,,,
সাবরিনার বাবাঃ তুই হয়তো জানিস না মা একটা ভালোবাসার বন্ধন এতোটাই অটুট থাকে,, তুই হাজার বার জন্ম নিলেও ভাঙতে পারবিনা।এবার হয়তো তোকে আমি হারাবো,,,আমার কোনো কথা তুই শুনিস না।আজ তোর মা বেঁচে থাকলে হয়তো তুই একটু শাসনে থাকতিস আমি তোকে মানুষ করতে পারিনি(মনে মনে)
”
”
”
”
”
——————-
শুভ্র সেই একের পর এক আইটেম রান্না করে যাচ্ছে,, কারোর সাথে কথা বলছে না সম্পূর্ণ ফোকাস রান্নার দিকে,,,
আয়ুশিঃ আহহ গন্ধ কি সুন্দর বের হয়ছে
আরিয়ানঃ হুম তাই তো,,ভাবি শুভ্র তো তোমাকে হারিয়ে দিবে
তানিশাঃ জানি তো,,রান্না যাতে তারাতারি হয় শুভ্র অলসতা না করে তাই খেপালাম
সবাই হো হো করে হাসতে থাকে,,,হাসির শব্দ পেয়ে শুভ্র আরও রেগে যায়,,
মেহেন্তাঃ তুই পারিস ও বটে,,শুভ্রকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাচ্ছিস
তানিশাঃ এতো কেবল শুরু বুড়ি হয়েও ওর ঘাড়ে চেপে বসে থাকবো হুহহ
আয়ুশিঃ শুধু তুই কেনো নেক্সট টাইম তো আদিকে রান্না করতে হবে
আদিঃ তুমি আবার আমার পিছে পরলে কেনো??
আয়ুশিঃ তুমি চুপ থাকো,,আমার হাসবেন্ড হয়ছো কতো কিছু করতে হবে
আদিঃ আচ্ছা আচ্ছা বাদ দাও।বাই দি ওয়ে তানিশা আমরা গ্রাম থেকে ঘুরে আসলে কেমন হয়
তানিশাঃ আমিও চাই,, ডেলিভারি হওয়ার আগে পরিবারের কাছে যেতে চাই,, যদি কিছু হয়ে যায় তখন কি হবে
মেহেন্তাঃ একদম চুপ এক থাপ্পড় মারবো বেয়াদব মেয়ে,,শুধু আজে বাজে চিন্তা
আয়ুশিঃ তুই আসলেই এক পিচ,,আনন্দে সব মাটি করিয়ে দিবি বুঝেছি
তানিশাঃ ওকে সরি,,,,আর একজনকে কষিয়ে থাপ্পড় মারবো
আরিয়ানঃ কাকে ভাবি
তানিশাঃ আকাশকে
আয়ুশিঃ যা ইচ্ছে,, আই ডোন্ট কেয়ার
আদিঃ আকাশের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি,,ও যদি আয়ুশিকে ধোকা না দিতো তাহলে আমি আয়ুশিকে পেতাম না
মেহেন্তাঃ আকাশের তো দ্বিতীয় বিয়েও টিকলো না,,,বাচ্চা সহ বাদ দিয়ে দিছে,,আবার মাদকে ধরা পরেছে
তানিশাঃ আরও কতো কিছু হবে, অন্যের ক্ষতি করে কখনো কেউ ভালো থাকেনা।বাদ দাও,,,এই দেখ তো রান্না কতো দূর আমার খুব খিদে লাগছে
শুভ্রঃ রান্না সব রেডি,,তোমরা পরিবেশন করো
আরিয়ানঃ এতো ফাস্ট
শুভ্রঃ হুম
সবাই গোল করে বসলে আর মাঝখানে খাবার গুলো রাখলো,,সবাই এক লোকমা খাওয়ার পর,,
আয়ুশিঃ ভাইয়া আপনি এতো ভালো রান্না করতে পারেন আগে জানতাম না
আরিয়ানঃ আমি তো মনে করেছিলাম খাবার মুখেই দেওয়া যাবেনা,,
মেহেন্তাঃ সত্যিই অনেক টেষ্ট
শুভ্রঃ বলেছিলাম না আমি রান্না খুব ভালো পারি (ভাব নিয়ে)
তানিশা একটা ভেংচি দিয়ে খেতে থাকে,,
খাবার শেষে সবাই রেষ্ট করতে থাকে,,,,,, ,,,,,
আদিঃ আসলেই জায়গাটা অনেক সুন্দর
আরিয়ানঃ আমি এখানের আইডিয়া দিছিলাম
মেহেন্তাঃ হুম তো
আরিয়ানঃ কিছুনা (চোখ ছোট ছোট করে)
সাবরিনাঃ বাহহহ,,সবাই দেখছি আনন্দ মুডেই আছো,,আর শুভ্র তানিশাকে পেয়ে আমার কন্ট্রাক পেপারের কথাগুলো ভুলে গেছো
সবাই সাবরিনাকে দেখে অবাক,,কেউই আশা করিনি সাবরিনাকে,,,
শুভ্রঃ আপনি এখানে
সাবরিনাঃ কেনো আনন্দ কে মাটি করে দিলাম,,আরে তানিশা তুমি প্রেগনেন্ট তো এ বাচ্চার বাবা কে
শুভ্রঃ সাবরিনা আপনি কিন্তু লিমিট ক্রস করছেন
সাবরিনাঃ আমি লিমিট ক্রস করছি ওয়েট
এই বলে সাবরিনা ব্যাগ থেকে বন্ধুক বের করে তানিশার দিকে তাক করলো
আয়ুশিঃ সাবরিনা এটা কিন্তু ভালো হচ্ছে না
শুভ্রঃ তানিশার কিছু হলে তুমিও কিন্তু বাঁচতে পারবেনা
সাবরিনাঃ অনেক হয়ছে নাটক,, এই তানিশাকে শেষ করে আমি আজ দম নিবো।।।
হঠাৎ বন্ধুক থেকে একটা গুলি বের হয়ে লাগে মাথায়
”
”
চলবে…