যদি_দেখা_না_হতো Season_02,#পর্ব_০৮,০৯

0
198

#যদি_দেখা_না_হতো Season_02,#পর্ব_০৮,০৯
#Writer_Tanisha_Esu
#পর্ব_০৮

শুভ্রঃ তানিশা

তানিশাঃ হুম বলো

শুভ্রঃ আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি

তানিশাঃ আমিও তো তোমাকে ভালোবাসি

শুভ্রঃ কিন্তু একসাথে থাকতে চায়না

তানিশাঃ মানে,,কি বলছো এগুলো(অবাকের দৃষ্টিতে তাকিয়ে)

শুভ্রঃ এখন কোন কিছুই বলতে পারবোনা।দুপুরে তোমার আম্মু,আব্বু আসবে তোমাকে নিতে,,আমাকে যদি ভালোবেসে থাকো তাহলে তুমি চলে যাবে

শুভ্র যেতে লাগলো এমন সময় তানিশা শুভ্রের পেছন থেকে শক্ত করে চেপে ধরে বলতে লাগলো,,,

তানিশাঃ আমার অন্যায় কি শুভ্র,,কি দোষে তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে চাচ্ছো

শুভ্রঃ আমি বলতে পারবোনা

নিজের থেকে তানিশাকে ছেড়ে রুমে চলে গেলো,,,তানিশা ফ্লোরে বসে কান্না করতে লাগলো,,,,কি এমন অপরাধের জন্য শুভ্র এমন করছে তার সাথে,,কান্নায় ভেঙ্গে পরলো।

দুপুরে,,,

তানিশার আব্বু আম্মু আসলো তানিশাকে নিতে। তানিশা শুধু শুভ্রের দিকে তাকিয়ে আছে,,”এই বলে উঠবে এগুলো মজা ছিলো কিন্তু তা আর হলো না লাগেজ নিয়ে গাড়িতে উঠলাম কোন কথাও বললো না আমার সাথে।

জানলার পাশে বসে বাইরে তাকিয়ে আছি চুলগুলো আপন ইচ্ছায় উড়ছে,,মনে হাজারো প্রশ্নের তোলপাড়,,, এই না আমাদের সম্পর্ক ঠিক হয়ে গেলো তারপর আবার এগুলো কি হচ্ছে।

বাড়িতে পৌছে এক মিনিট ও না দাড়িয়ে নিজের রুমে এসে রুম লক করে দিলাম,,,দরজার পাশে থাকা লাঠি দিয়ে ভাঙচুর করতে থাকলাম।আজ কষ্ট,, আবেগ,ভালোবাসা,জেদকে শান্ত করার উপায় রাগ কমানো,, যা আর ঠান্ডা হবেনা।

আম্মু আর আব্বু দরজা ধাক্কিয়েই যাচ্ছে,, কিন্তু আমি আর আমার ধ্যান এ নেই,,,ছোটবেলা থেকেই যেমন জেদ ছিলো সেইরকম রাগ ও ছিলো,,কিন্তু রাগটা কন্ট্রোল করতাম প্রিয়জন হারানোর ভয়ে। কিন্তু যাকে এতো ভালোবাসলাম সেই চলে গেলো।

সন্ধ্যায় রুম থেকে বের হলাম আম্মু আব্বু রুমের সামনে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে,,আমাকে দেখতেই ছুটে আসলো।

তানিশা আম্মুঃ তানিশা তুই কি পাগল হয়ে গেছিস,,,ওগো ডাক্তারকে ডাকো ওর মাথা থেকে রক্ত পরছে(দু-বাহু ধরে)

আব্বুও তারাতারি ডাক্তারকে ফোন দিলো,,তারা জানে আমার রুম নাজে-হাল অবস্থা তাই আমাকে নিয়েই বিজি হয়ে পরলো।ডাক্তার এসে বেন্ডেজ করে দিয়ে গেলেন আম্মু জোর করে খাবার খাইয়ে তার কোলে মাথা রেখে ঘুম পারিয়ে দিলো।

এরই মাঝে বেশ কিছুদিন চলে গেলো অনেক ফোন করেছি কিন্তু শুভ্র ধরেনি আর ফোন করা তো দূরের কথা।এমনি একদিন পলাশ ভাইয়া আসলো আমাদের বাসায়,, পলাশ আমার ফুপির বড় ছেলে,

আমি জানলার পাশে হেলান দিয়ে বসে বসে কি যে ভাবছি নিজেও জানিনা।হঠাৎ,,

পলাশঃ আসবো তানিশা

তানিশাঃ হুম আসো

পলাশঃ কেমন আছিস তুই

তানিশাঃ আমার কথা বাদ দাও তোমার কি অবস্থা

পলাশঃ ভালোই,,,শুনলাম শুভ্রের সামনে বিয়ে

তানিশাঃ মানে??

পলাশঃ কেন তুই জানিস না,,বাড়ি সাজাচ্ছে,, নতুন বউ আসবে বলে

তানিশাঃ নিশ্চুপ

ভাইয়াকে আম্মু ডাকলো তাই বেশি কথা বলতে পারলো না,,,আমার বুকে তোড়পাড়ের ঝড় উঠে গেছে কি শুনলাম আমি,,না ওর সামনা-সামনি হতেই হবে আমাকে,,বিয়ে করবে মানে তাহলে আমি কে?

বিকেলে,,

আম্মুকে ভুলভাল বুঝিয়ে শশুড় বাড়িতে চলে আসি,, ভাইয়ার কথাটা সত্যি খুব সুন্দর করে সাজানো হয়ে গেছে বাড়িটা,,,আমি সোজা গিয়ে দরজায় নক করলাম শুভ্র এসে দরজা খুলে দিলো

শুভ্রঃ তুমি এখানে কেনো??

তানিশাঃ তুমি বিয়ে করছো

শুভ্রঃ হুম,,আমি আমার জীবন নতুন করে শুরু করতে চায়

তানিশাঃ ওও তাই নাকি তাহলে আমি কে??

শুভ্রঃ তুমি আমার পাস্ট,,ওই বিয়েটা Just an accident

তানিশাঃ মানে এতো কিছুর পরও এগুলো বলছো তুমি? কেন শুভ্র এগুলো করছো(কলার ধরে) কেনো বলো?? কি এমন অন্যায় করেছি আমি

শুভ্র এক ঝটকায় নিজের থেকে আমাকে ছাড়িয়ে বলতে লাগলো,,,

শুভ্রঃ আমি তোমাকে ভালোবাসিনা বুঝলা,,আমাকে বাঁচতে দাও শান্তিতে,,আর আমার বিয়ের দিনে আমার আশেপাশেও যেন তোমাকে না দেখি

এই বলে শুভ্র আমার হাত ধরে দরজার বাইরে বের করে দরজা অফ করে দিলো,,,,,,

তানিশাঃ শুভ্র,,প্লিজ শুভ্র গেট খোল।আমি কোন অন্যায় করবো না প্রমিজ, প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেওনা( কাঁদতে কাঁদতে)

সন্ধ্যার আজান দিয়ে দিলো তবুও ওও গেট খুললো না।আমি চলে আসলাম বাড়িতে,, ভাবছিলাম সুইসাইড করবো কিন্তু আম্মু আমার কাছ থেকে নড়তেই চায়না।যখন আম্মুর কাজ থাকে তখন আব্বু আমার কাছে থাকে।নিজেকে দিন দিন শেষ করে ফেলছি আমি।

এমনি একদিন শুনলাম শুভ্র বিয়ে করে নিয়েছে,,নিজের মৃত্যু যেন নিজেই দেখতে পারছি,,শুধু সময়ের অপেক্ষা।শুভ্র এখন সংসার নিয়ে বিজি এটাই বলেছিলো শেষ কলে।

শুক্রবারে,,

সবাই ফ্যামিলি পিকনিক এ আসে,,আমাকেও জোর করে নিয়ে যায়।ফ্যামিলি পিকনিক বললেও বাড়িটা ছিলো বিয়ের।একজন লোক এসে বললো,,

লোকটিঃ আরে পাএী চলে এসেছে,,আপনারা তারাতারি ওনাকে সাজানোর ব্যবস্তা করেন

তানিশাঃ আচ্ছা এটা তো বিয়ে বাড়ি,,আমরা এখানে কেনো??

বড় আম্মুঃ আজ তোর বিয়ে তাই

তানিশাঃ মানে,,আমার বিয়ে এসব কি বলছো??

আব্বুঃ ছেলে অনেক ভালো মা,,তোর মানসিক অবস্থা ভালো না তাই তোকে কিছু বলিনি,, আমরা চায় তুই ভালো থাক তাই তোকে না বলেই বিয়ে ঠিক করে ফেলেছি

তানিশাঃ আমাকে একবারের জন্য বলার প্রয়োজন করলেনা,,,আমি বিয়ের জন্য প্রস্তুত কি না,,আর আমি এ বিয়ে করবোনা

আম্মু এসে আমার হাত তার মাথায় রেখে বলতে লাগলেন,,

আম্মুঃ তুই যদি এই বিয়ে না করিস আমার মরা মুখ দেখবি

তানিশাঃ আম্মুওওও

আম্মুঃ ঠিকি বলেছি,,আমার মরা মুখ দেখবি নাকি বিয়ে করবে বল

আমি বাধ্য হয়েই রাজি হয়ে গেলাম,,,আমাকে কতো সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে,, আগের বিয়েটা আবার এই বিয়েটায় ও আমার মতামত ছিলোনা কি আশ্চর্য বিষয়,,আচ্ছা শুভ্র যদি বিয়ে করে সুখে থাকতে পারে তাহলে আমি কেন পারবোনা??

বরের পাশে বসানো হলো আমাকে,,চারিদিকে শুধু ক্যামেরা,,সবাই এসে গিপ্ট দিচ্ছে আর পিক তুলে নিয়ে যাচ্ছে এসবের ভিরে নিজেকে পুতুল পুতুল লাগছে।

কিন্তু নিজের খুশিটায় হারিয়ে ফেলেছি,,,কবুল বলানো হলো সাথে রেজিস্ট্রি করে বিয়েও হলো,,শুধু পেলামনা মনের মতো মানুষ,,খুব ক্লান্ত লাগছে।

খাবারের সময় একটু একলা ছিলাম কারণ আমি মানসিক ভাবে সুস্থ ছিলাম না,,তাই আর বর বউ একে অপরে খাওয়াই দেয় এটা হলোনা।

বিদায়ের সময় সবাই আমাকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো কিন্তু আমার চোখ থেকে একফোঁটাও পানি পরছে না।সব জল হয়তো শুকিয়ে গেছে আর নাহলে আমি নিজেই জীবন্ত লাশ হয়ে গেছি।

গাড়িতে উঠে নতুন গতিতে যাচ্ছি,,,নতুন পরিবেশ,,নতুন সংসার কিন্তু আমি শুভ্রের জায়গাটা কিভাবে অন্য কাউকে দেব এসব ভাবছিলাম। আসলেই “যে যাবে সে যাবেই, চাইলেও তাকে আটকানো যাবেনা।আর যে আসবে সে সকল বাধা বিপত্তি আছে যেনেও আসবে” ইসসস #যদি_দেখা_না_হতো আমাদের তাহলে দুজনের জীবনটা আজ আলাদা থাকতো,,নিজের লাইফকে নিজের মন মতো সাজানো যেত।

শশুর বাড়িতে এসে সব ছোট ছোট ছেলে মেয়ে এসে সেলফি উঠছে,,সবাই অপরিচিত আজ।

তানিশাঃ আসলে কোন ব্যক্তি আমার সম্পর্কে এতোকিছু জেনেও আমাকে বিয়ে করলো??(মনে মনে)

আমার বয়সী কিছু আপু এসে আমাকে একটা ফুলে দিয়ে সাজানো বেডে বসিয়ে দিলো,,চারিদিকে ফুল দিয়ে সাজানো,,,অনেক সুন্দর। আমার প্রথম বিয়ের ক্ষেত্রে অবশ্য এসব কিছুই হয়েছিলো না…..

ঠিক রাত ১২ঃ২০ এ গেট নাড়ার শব্দ পেলাম,,



চলবে……

#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_০৯ (#Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu ?


ঠিক রাত ১২ঃ২০ গেট নাড়ার শব্দ পেলাম,,ভয়ে গায়ের লোম উঠে যাচ্ছে।কি করে আরেজনকে নিজের করে নিব,,

শুভ্রঃ কি হলো সালাম করবে না নাকি,,আজব মেয়ে তো

গলার ভয়েজ শুনে আমি মুখের দিকে তাকিয়ে শকড এতো শুভ্র,,,বর বেশে কি সুন্দর করে দাড়িয়ে আছে।

শুভ্রঃ তো সারপ্রাইজ কেমন লাগলো জানু

আমি বেড থেকে উঠে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরলাম,,,আর অবাধ্য চোখের জল পরতে লাগলো,,,

শুভ্রঃ এই পাগলি কাঁদছো কেন হু,,তোমার কি মনে হয় আমি অন্যজনকে বিয়ে করতে পারি

তানিশাঃ কেন করলে এমন

শুভ্রঃ প্রথম বিয়েতে কোন কিছু নিয়ম মেনে করা হয়েছিলো না,,তাই এবার নিয়ম মেনে বিয়েটা করলাম।বাট আপনি যে একবারও আমার মুখের দিকে তাকালেন না তাহলে এতো কষ্ট হতো না।

তানিশাঃ আমাকে কেন কষ্ট দিলে??

শুভ্রঃ তোমাকে একটু কষ্ট দিলাম যাতে তুমি আমাকে ছেড়ে না যাও।এবার কান্না থামাও তো(চোখ মুছে দিয়ে) আহহ কি মিষ্টি লাগছে,,, লেপ্টে থাকা কাজলে দুচোখ আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,,নিজেকে কি আর কন্ট্রোল করা যায়

শুভ্রের কথা শুনে তানিশা অনেক লজ্জা পেলো এবং মাথা নিচু করে ফেললো,,,,,,,,,,,,,,

শুভ্রঃ লজ্জা মুখে আরও বেশি সুন্দর লাগছে তোমাকে,,, এই পাগলি তুই কি আমার হবি রে??

তানিশাঃ হুম(মাথা নিচু করে) আচ্ছা আমি এখন ঘুমাবো

শুভ্রঃ এই এই(কোমড় চেপে ধরে) ঘুমাবা মানে,, আজ তোমার জন্য ঘুম হারাম বুঝলা।আজ না আমাদের বাসররাত,,কতো স্বপ্ন থাকে যানো,,,ঘুম নাই বুঝলা,,ভালোবাসি অনেক ভালোবাসি

এই বলে তানিশাকে শক্ত করে চেপে ধরে পেটে স্লাইড করতে লাগলো,,,তানিশা শুভ্রের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছে।তারপর তানিশার ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে নিলো আজ আর তানিশা কোন বাধা দিলো না।একসময় দুজন ভেসে গেলো ভালোবাসার চাদরে……

সকালে,,,

দুটি চোখ তানিশার দিকে তাকিয়ে আছে অনেকক্ষণ থেকে,,তানিশার কেমন জানি অস্বস্তি হতে লাগলো তাই ঘুম থেকে উঠে দেখলো শুভ্র তাকিয়ে আছে,,

শুভ্রঃ শুভ সকাল,, মহা রানী

তানিশাঃ শুভ সকাল

শুভ্রঃ তো ঘুম কেমন হলো??

তানিশা চোখ ছোট ছোট করে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে আছে,,

শুভ্রঃ কি হলো বউ আমার দিকে এমন করে তাকিয়ে আছো কেন??

তানিশাঃ ঘুমাতে দিছেন আমাকে আপনি??

শুভ্রঃ ???

তানিশাঃ ছাড়ুন আমি উঠবো

শুভ্রঃ আরেকটু পর

তানিশাঃ নাহহ উঠবো ছাড়ুন তো

শুভ্রঃ আচ্ছা বুঝিনা,, এবার তুমি একবার আপনি,, যে কেনো একটা বলা যায়না

তানিশাঃ হি হি,,আপনিই বলুন কোনটা বলবো

শুভ্রঃ তুমি করে বলবা বুঝলা

তানিশাঃ আচ্ছা,, এবার ছাড়ো

শুভ্রঃ ওয়েট

শুভ্র তানিশার মুখ হাত দিয়ে কপালে একটা ভালোবাসার পরশ এঁকে দেয়।

শুভ্রঃ এবার যাও (মুচকি হেসে)

তানিশা শুভ্রের গালে একটা কিস করে উঠে পরে,,শুভ্র হয়তো এটা আশা করেনি।তানিশা ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।

শাওয়ার করে বেরিয়ে এসে দেখে শুভ্র এখনো ঘুমিয়ে আছে।তানিশা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শুভ্রের কাছে গিয়ে ডাকতে থাকে,,আর শুভ্র এক ঝটকায় নিজের উপর ফেলে দেয়,,এবং তানিশার মুখ দেয়

তানিশাঃ এই এই তোমার জন্য বারেবার শাওয়ার নিতে পারবোনা এই শীতে

তানিশার কথা শুনে এবার শুভ্র হাসতে থাকে আর তানিশা মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে

তানিশাঃ যাও শাওয়ার নিয়ে আসো,,আমি নিচে গেলাম।

শুভ্রঃ আচ্ছা

আমি নিচে গেলাম আমার শাশুড়ী আমার দিকে তাকিয়েই আছেন,,,,

শাশুড়িঃ মাশাল্লাহ আমার বৌমাকে অনেক সুন্দর লাগছে

তার কথায় আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকলাম

তানিশাঃ মা আপনি কি এখানেই থাকবেন

শাশুড়িঃ যদি শুভ্র রাজি তাকে তাহলে থাকবো,,,তা শুভ্র কোথায়

তানিশাঃ ও শাওয়ার নিতে গেছে,, এখনি চলে আসবে

শাশুড়িঃ আচ্ছা,, ও আসলে ব্রেকফাস্ট করে নিও,,আমি তনয়ার(শুভ্রের বোন) বাড়িতে যাচ্ছি

তানিশাঃ আজকেই

শাশুড়িঃ হুম মা,,আসি

এই বলে তিনি চলে গেলেন,, কারণ শুভ্র তার মাকে দেখলেই রেগে যায়।

তানিশাঃ নাহহ,, এদের পরিবারকে যে করেই হোক ঠিক করতে হবে,, সব যেন এলোমেলো

শুভ্রঃ তানিশা কি ভাবছো

পাশে তাকিয়ে দেখে একদফা ক্রাস খাইলাম নীল কালারের পাঞ্জাবী,ব্লক পেন্ট,,কালারটা তার গায়ের রঙয়ের সাথে খুব সুন্দর মানিয়েছে,,কালো কালারের ওয়াচ পুরাই হিরো,,,আহহ আমার বরকে আমিই নজর দিচ্ছি কেন,, কিছু হলে

শুভ্রঃ কি ভাবছো এতো(আমাকে একটু ঝাকিয়ে)

তানিশাঃ আপনি কি কোথাও যাবেন??

শুভ্রঃ নাহহ,,আজ সারাদিন তোমার সাথে চিপায় থাকবো(চোখ মেরে)

আমি আর কোন কথা বললাম না তার হাত ধরে ডাইনিং টেবিলে বসে কাবার বেড়ে দিলাম,,

শুভ্রঃ এতো খাবার কেন আর তুমি খাবা না

তানিশাঃ কে বলেছে আমি খাব না,,তুমি খাইয়ে দিবে আমাকে

শুভ্রঃ আচ্ছা,, হা করো

তিনি এক লোকমা আমার মুখে তুলে দিলো,, এইভাবেই দুজনে খেয়ে রুমে আসলাম।তিনি মোবাইল ঘাটতে লাগলেন আর আমি কখন থেকে তার দিকে তাকিয়েই আছি,,,

শুভ্রঃ আচ্ছা আমাকে কি বেশি সুন্দর লাগছে??

তানিশাঃ নাহহ তো একদম বান্দরের মতো লাগছে

শুভ্রঃ তাহলে ওইরকম রসগোল্লার মতো করে তাকিয়ে আছো কেনো??

এবার একটু বেশিই লজ্জা পেলাম,,, ইসস দেখলো কেমনে,,শুভ্র ফোন রেখে আমার দিকে এগিয়ে আসছে,, আমি কয়েকটা ঢোক গিললাম।

তানিশাঃ এই তুমি এগিয়ে আসছো কেন

শুভ্রঃ আমি এখন রোম্যান্টিক মুডে আছে

তানিশাঃ ওই দেখ আম্মু

শুভ্র যেই দরজার পানে তাকিয়েছে আমি এক দৌড়ে ছাদে চলে আসলাম…

বিকেলে,,

আমার আর ভালো লাগছে না বোরিং ফিল হচ্ছে তাই নিচে গিয়ে বরকে একটু জ্বালাবো এই পরিকল্পনা করেই রুমে গেলাম।রুমে গিয়ে দেখি সে হোপ ফুলে আছে আমাকে দেখেও না দেখার ভান করছে

শুভ্রঃ লাইফ অফ করে দিয়ে যাও

বুঝলাম মুড ভালো নাই ঘুমাবে,,,বেডের কাছে সুইচ যেই বন্ধ করতে গেলাম তিনি এক টানে নিজের উপর ফেলে দিলো

তানিশাঃ কি করছেন ছাড়ুন

শুভ্রঃ আমি ঘুমাবো এখন তার সাথে তুমিও ঘুমাবে বুঝলা

পরের দিন,,,

আজ বৌভাত,,বাড়িটা আরও পরিপাটি করা হয়ছে,,আজ আমার ফ্যামিলি+ বন্ধু-বান্ধব এসেছে শুধু মেহেন্তা আপু বাদে।শাশুড়ী ননদবাদে সবাই এসেছে,,,

শুভ্র সবার সাথে পরিচয় করে দিলো,,,, ক্যামের ফ্লাস লাইট,,সবার সাথে পরিচয়,,পিক তোলা বেশ ক্লান্ত হয়ে গেছি আমি।

সন্ধ্যায়,,

সবাই একে একে করে চলে গেছে,,,আমার পরিবারও চলে গেছে থেকে গেলো শুভ্রের ছোট মামি আর আর মামাতো বোন। ছোটবেলা থেকে নাকি মামিই শুভ্রকে বড় করেছে,,তাই শুভ্র আর মামিকে যেতে দিলোনা।

ডিনারের শেষে শুভ্র একটু বাইরে গেলো আমার মাথা খুব ব্যাথা করছিলো।

মিসেস সোফিয়াঃ আয় মা তোর মাথায় তেল ম্যাসাজ করে দি ভালো লাগবে

আমিও আর না করলাম না,,আসলেই খুব খারাপ লাগছিলো,,তিনি তেল নিয়ে চুলগুলো বিলি কেটে কেটে দিচ্ছে,,

তানিশাঃ আচ্ছা আমি আপনাকে কি বলে ডাকবো

মিসেস সোফিয়াঃ শুভ্র তো ছোট মা বলে তুই ও বলিস

তানিশাঃ আচ্ছা চোট মা একটা কথা জিজ্ঞেস করবো

মিসেস সোফিয়াঃ হুম বল পারমিশন নিতে হবেনা

তানিশাঃ আচ্ছা শুভ্রের সাথে শুভ্রের মায়ের সম্পর্ক ভালো না কেন?

মিসেস সোফিয়াঃ তোর শাশুড়ী ছেলেসহ বাদ দিয়ে অন্য এক লোককে বিয়ে করে যার পক্ষে তোর ননদ।শুভ্র খুব কষ্ট পায়ছিলো,,,তার কিছুদিন পর শুভ্রের আব্বু মারা যায় তারপর থেকে আমি শুভ্রকে নিয়ে নিছি কারণ,, আমার কোন সন্তান ছিলো না,,তখন শুভ্রের বয়স মাএ আট বছর

তানিশা কথাগুলো শুনে খুব কষ্ট পেলো এতো ছোট বয়সে এতো বড় আঘাত পেয়েছে ও,,,এই জন্য ওর মাকে সহ্য করতে পারেনা

মিসেস সোফিয়াঃ হুম রে মা ওর খেয়াল রাখিস

আমি ছোট মাকে জড়িয়ে ধরি,, তিনিও বেশ অবাক হয়,,হয়তো তিনি এটা আশা করেনি…

মিসেস সোফিয়াঃ আমি কখনো ভাবিনি আমার এতো ভালো বৌমা থুক্কু মেয়ে হবে

তানিশাঃ আচ্ছা ছোট মা আপনার কথা বার্তাতে মনে হচ্ছে অনেক শিক্ষিত

মিসেস সোফিয়াঃ হুম রে মা,,,মাস্টার্স পাস।তখন তোর ছোট আব্বু বেকার ছিলো আমাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিতে ছিলো কিন্তু আমি পালিয়ে আসি কারণ আমি তাকে হারাতে চায়ছিলাম না।পরে মেনে নেয় আমার পরিবার কিন্তু যখন বাচ্চা আর হলো না তখন শুভ্রকে পেলাম বুঝলি

শুভ্রঃ ছোট মা ওকে একা একাই আদর করছো আমি পর হয়ে গেলাম

মিসেস সোফিয়াঃ দেখছিস কি হিংসা করছে

তানিশাঃ হুম দেখছি তো,,আচ্ছা তুমি এখানেই থাকো

শুভ্রঃ হুম তানিশা তো ঠিকি বলেছে

মিসেস সোফিয়াঃ আচ্ছা








চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here