#যদি_প্রেম_দিলে_না_প্রাণে,পর্ব ২
রিয়া সেন দত্ত
বিয়ের পর প্রথম রাতেই অপর্ণা বুঝেছিলো এ বিয়ে একতরফা হয়েছে | শুভদৃষ্টির সময় মৈনাকের দিকে এক ঝলক দেখতেই সে বুঝতে পেরেছিল তার বাবা তাকে তার থেকে বয়সে অনেক বড় ছেলের সাথে বিয়ে দিচ্ছে…
…মা হারা মেয়েটা বুকে অনেক কষ্ট নিয়ে সেদিন বাপের বাড়ি ছেড়েছিলো | এই ছিল তার অদৃষ্টে…! পথে যাওয়ার সময় একবারের জন্যেও অপর্ণা – মৈনাক একে অপরকে দেখেনি |
মৈনাকের গাড়িটা যখন তাদের বাড়ির গেট পেরিয়ে ঢুকছে তখন অপর্ণার চোখ ক্ষনিকের জন্যে আটকে গেছিলো বাড়ির দিকে তাকিয়ে | এতো বড়ো বাড়ির বৌ সে..!
…অপর্ণা কল্পনাও করতে পারেনি | বাড়ির চারপাশে বিশাল বাগান, ফুলে সুসজ্জিত | তার মাঝখান দিয়েই পিচের রাস্তা চলে গেছে বাড়ির সামনে পর্যন্ত | একটা ঝুল বারান্দার নিচে গাড়িটা এসে দাঁড়ালো |
মৈনাক আগেই গাড়ি থেকে নেমে ভেতর ঢুকতে গেলে, রাস্তা আটকে গম্ভীরভাবে তার দিদি ইন্দ্রানী বললো , “আগে বরণ হোক তারপর ঢুকবি |” দিদির মুখের ওপর মৈনাক আর কিছু বলতে পারলো না |
❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤
অপর্ণার বাবা সেই যে দুদিন বাড়ির বাইরে কাটালো তখনি খোঁজখবর নিয়ে মেয়ের বিয়ে পাকা করেই ফিরলো | বাড়ি এসে মেয়েকে পর্যন্ত বিয়ের কথা জানায়নি , পাছে মেয়ে পালিয়ে যায় | হবু স্বামীকে দেখা তো দুরস্ত বিয়ের ঠিক দুদিন আগে পাড়ার লোক মারফত অপর্ণা জানতে পারে তার বিয়ে ঠিক হয়েছে |
আশ্চর্য হবার তখনো বাকি ছিল | যখন বিয়ের আসরে কানাঘুষো শুনলো যে তার স্বামী দোজবরে | অপর্ণা ভাবতেও পারেনি তার বাবা তার জন্যে এমন পাত্র আনবে….!
নমো নমো করে গ্রামের কয়েকজনকে ডেকে বিয়ে সারা হল | বরযাত্রী হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া কেউ ছিল না এই বিয়েতে | পঞ্চানন ঘাড় থেকে মেয়ে নামের বোঝা নামিয়ে বেজায় খুশি | দ্বিরাগমনেও আমন্ত্রণ জানালো না মেয়ে জামাই কে |
ওদিকে নেহাত মা-কে কথা দিয়েছিলো মৈনাক | নাহলে এ বিয়ে তার কাছে গলার ফাঁস ছাড়া আর কিছুই না |
❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤
বসু ভিলায় আসার পর থেকেই অপর্ণা কেমন যেন আরষ্ঠ হয়ে গেছে | এতো বড়ো বাড়ির নিয়ম, আদপ-কায়দা সবইতো নতুন তার কাছে | সে গ্রামের সাধারণ ঘরের মেয়ে | এসবই অভিনব তার কাছে | শাশুড়িমা মনপ্রভা দেবী তাকে বরণ করে ঘরে তুলেছেন | শাশুড়িমা-র চেহারা ভেঙে গেলেও, অভিজাত্য বিদ্যমান | স্বামীর মৃত্যুর পর তিনিই সংসারের সর্বেসর্বা |
তিনিই ঘটক লাগিয়েছিলেন ছেলের বিয়ের জন্যে |
….আসলে প্রথম স্ত্রী মল্লিকা মারা যাবার পর মৈনাকের বাউন্ডুলে ভাব ঘোচাতেই বিয়ে দেবার জন্যে উঠেপড়ে লেগেছিলেন তিনি | তাই অপর্ণার মতো একটি গ্রাম্য সরল মেয়ের খোঁজ পেতেই আর দেরি করেননি |
❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤
এরই মধ্যে বড়ো ননদ ইন্দ্রানী এসে বেশ কয়েকবার অপর্ণাকে দেখে গেছে | অপর্ণার যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেজন্যে দুজন কাজের লোককে অপর্ণার দেখাশোনা করতে বলে গেছে | প্রথম থেকেই সে অপর্ণাকে কাছের করে নিয়েছে |
অপর্ণাকে বলেছে “ভাই আমার থেকে ৬ বছরের ছোট আর তুমি ভাই এর থেকে প্রায় ২০ বছরের ছোট, তাই তুমি না বলে তু্ই বলতে পারি? আজ আমার মেয়ে থাকলে হয়তো তোমার বয়সী হত |” অপর্ণা একবার তার সদাহাস্যমুখী বড় ননদের মুখের দিকে দেখে মাথা নেড়ে সম্মতি দিয়েছিলো |
বাড়িতে কাজের লোকের অভাব নেই | বিশাল দলদালান বাড়ি | মৈনাকের ঠাকুরদা এবাড়ি তৈরী করেছিলেন | তাই বাড়িতে প্রচুর পুরোনোদিনের দামি আসবাব ভর্তি | এসব দেখে অপর্ণার চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছিলো |
❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤
বসু ভিলায় সেদিন সাজো সাজো রব | দুপুরে ভাত কাপড়ের অনুষ্ঠানে মৈনাক তখনো আসেনি | সকাল থেকে চেম্বারে মক্কেল সামলাতেই ব্যস্ত সে | অনেক ডাকাডাকির পর এসে যাহোক করে নিয়ম সেরে আবার নিজের কাজে বেরিয়ে গেছে | বাড়ির সকলে বারণ করা সত্ত্বেও, কাজের দোহাই দিয়ে বেরিয়ে গেলো | এসব থেকে পালতে পারলে যেন সে বাঁচে…স্বামীর এমন ব্যবহার অপর্ণাকে অবাক করেছে |
সন্ধ্যেবেলা কয়েকজন পারিবারিক বন্ধুদের ডেকে বধূবরণের যাবতীয় অনুষ্ঠান শেষ হলো | শাশুড়িমা নিজের গয়না দিয়ে অপর্ণাকে সাজিয়েছিলেন সেদিন | সাক্ষাৎ রাজরানীর মতো দেখাচ্ছিল অপর্ণাকে | তার বাবা যদিও এ অনুষ্ঠানে আসেনি | মৈনাক এসেছিল কিন্তু ফিরেও তাকায়নি অপর্ণার দিকে | মাঝে এসে একবার অতিথিদের সামনে নিয়মরক্ষার খাতিরে দর্শন দিয়েছে |
ফুলসজ্জার রাতে অপর্ণা মনে মনে এক অজানা ভয় নিয়ে
রয়েছে, ঠান্ডা ঘরে দাঁড়িয়েও সে ঘামছে | হঠাৎ দরজায় আওয়াজ হতে পেছন ঘুরে দেখলো মৈনাক এসেছে | সেই প্রথম অপর্ণা ভালো করে নিজের স্বামীকে দেখলো |
– লম্বা, ফর্সা, চোখে মোটা কালো ফ্রেমের চশমা আর কাঁচা পাকা একটা মোটা গোঁফ যেন তার গম্ভীর্য আরো বাড়িয়ে তুলেছে | অপর্ণার গোঁফটা দেখে মনে হলো কেউ মোটামুটি দুটো শুয়োপোকা ছেড়ে রেখেছে মুখের ওপর | ছেলেমানুষের মত মনে মনে হেসে ফেললো | অপর্ণার এরকম অযাচিত হাসিমুখ দেখে মৈনাক যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো
…”তুমি কি সবকিছু জেনে আমাকে বিয়ে করেছ?” মৈনাকের প্রশ্নে অপর্ণার ঘোর কাটলো | সে মাথা নেড়ে উত্তর দিলো,, “না মানে হ্যাঁ…”
…মৈনাক অপর্ণার মুখের দিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে বিদ্রুপের সুরে বললো, ”তোমার বাবা তোমাকে টাকার বিনিময়ে বিয়ে দিয়েছে, কত টাকা জানো? পাঁচ লক্ষ টাকা ” অপর্ণা অবাক হয়ে তাকায়, “তুমি সত্যিই জানতে না, নাকি ইচ্ছে করে মিথ্যে বলছো,,,” মৈনাক আবার জিজ্ঞেস করে…
… অপর্ণা কি বলবে ভেবে পায় না | চুপ করে শুনতে থাকে মৈনাকের কথা | মৈনাক বলে চলে, “তোমাকে বিয়ে করার আমার কোনও ইচ্ছে ছিল না, শুধু মা এর কথা ভেবে বাধ্য হয়েছি এ বিয়ে করতে | আমার অনিচ্ছাসত্ত্বেও আমাকে আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছে, আমার পক্ষে তোমাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করা সম্ভব নয় |”
-অপর্ণার চোখে জল চলে এসেছে | বাবা তো এর চেয়ে হাত পা বেঁধে জলে ফেলে দিতে পারতো তাকে|
মৈনাক বললো “তোমার মতো একটা মেয়ে কিভাবে আমার যোগ্য হতে পারে সেটাই বুঝতে পারলাম না |”
অপর্ণা যেন অপমানে আরো জড়োসড়ো হয়ে যাচ্ছিলো |
মৈনাক তীব্র শ্লেষে বললো, “বিয়ে দেওয়ার নামে মা তো দেখছি ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিলো আমাকে ! মা এর ওপর আমার বিশ্বাস ছিল কিন্তু…!”
…যে রাতে প্রথম স্বামী তার স্ত্রীকে কাছের করে নেয় সেই রাতে স্বামীর কাছ থেকে তীব্র প্রত্যাখ্যান পেয়ে সদ্য বিবাহিতা অপর্ণা যেন কিংকর্তব্যবিমূঢ় | অবাক হয়ে দেখছে আর ভাবছে তার ভুলটা ঠিক কোথায়…!
…কথাগুলো বলে মৈনাক ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো দরজা খুলে | সারারাত চেম্বারেই কাটাবে সে |
ভোর হতেই বড়ো ননদ অপর্ণার ঘরের দরজায় টোকা দিতেই দরজা খুলে গেলো | জানলার সামনে অপর্ণা দাঁড়িয়ে | অপর্ণার নিদ্রাহীন চোখ দুটো দূরের লাল সূর্যের দিকে | চোখের তলায় কালি বলছে বিনিদ্র রজনী কেটেছে, তবে অবহেলায় |
বড়ো ননদ ইন্দ্রানী কাছে যেতেই অপর্ণা দুহাতে তাকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকলো | ইন্দ্রানী বুঝলো তার ভাই এর ব্যবহারের জন্যে অপর্ণা এভাবে কাঁদছে |
মাথায় হাত বুলিয়ে শুধু বললো “আমার ভাইটা খুব কষ্ট পাচ্ছে ওকে ভুল বুঝিস না, ও এমন ছেলেই নয়, তু্ই কিছু মনে করিস না, সব ঠিক হয়ে যাবে দেখিস | ”
বিয়ের পর থেকে মৈনাক যেন নিজেকে আরো বেশি কাজে ব্যস্ত রাখে | আগে কোর্ট থেকে ফিরে একবার হলেও মা এর সাথে দেখা করতো কিন্তু এখন সেটাও বন্ধ করেছে | মা এর ওপর তার অগাধ অভিমান | মা কি করে পারলো !
মেয়েটাই বা কি? টাকার গন্ধে গন্ধে বিয়ে করে নিলো! এসব মেয়েরা এমনই হয় |
❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤
রাতে সবাই শুয়ে পড়লে মৈনাক খেতে আসে যাতে কারোর মুখোমুখি না হতে হয় | বিশেষ করে অপর্ণার | খাবার ঢাকা রাখা থাকে | নিজের মতো খেয়ে নেয় |
নিজের শোওয়ার ঘর লাগোয়া স্টাডি রুমে বিছানার ব্যবস্থা করে নিয়েছে মৈনাক | রাতে যখন সে খেতে বসে অপর্ণা লুকিয়ে জেগে থাকে | সে শাশুড়িমার কথা শুনে আগে খেয়ে নিলেও আড়াল থেকে লুকিয়ে দেখে মৈনাকের খাওয়া | নিজের স্বামীকে সারাদিনে এই একবারই দেখতে পায় |
…লোকটা গম্ভীর, রাগী, বয়সে অনেক বড়ো তবু অপর্ণার ভালো লাগে | কিন্তু যখনই অপমানের কথা মনের পরে মনটা কষ্টে ভরে যায় | মৈনাক কি কখনোই অপর্ণার হবে না? আর তার লেখাপড়ারই বা কি হবে? মা যে কত বলতো লেখাপড়া করতে | মৈনাক কি কখনোই পড়াশোনা করতে দেবে না? এসব ভেবে তার মন আরো জট পাকিয়ে যায় |
এদিকে মনপ্রভা দেবী নিজেও বুঝতে পারছেন না তিনি ছেলের ভালোর জন্যে যা করলেন তা ঠিক না ভুল! মনের মধ্যে সন্দেহের উদ্রেক হয় “এ মেয়ে কি তার ওই এঁড়ে ছেলেকে বাগে আনতে পারবে?”
❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤
মৈনাক সে রাতে নিজের স্টাডি রুমে ঘুমোনোর সময় ঠান্ডায় কুঁকড়ে যাচ্ছে | অপর্ণা ঘুম না আসায় তখন ঘর লাগোয়া বারান্দায় যাচ্ছিলো | সেখান থেকে ঘুমন্ত মৈনাককে সে দেখতে পায় |
মৈনাককে ঠান্ডায় কুঁকড়ে যেতে দেখে ঘর থেকে তাড়াতাড়ি একটা চাদর এনে স্টাডি রুমে ঢোকে | সচরাচর এ ঘরে ঢোকা তার বারণ | মৈনাক বারণ করেছে |
ঘরের দেওয়ালে বড়ো করে একজন মহিলার ছবি আছে | মহিলা অপূর্ব সুন্দরী | অপর্ণার মনে হলো ইনিই হয়তো মৈনাক এর আগের স্ত্রী | নিজেই মনে মনে হেসে বললো কোথায় চাঁদ আর কোথায় চাঁদা মাছ!
এই ভেবে ইতস্তত করতে করতে মৈনাকের গায়ে চাদরটা দিতেই মৈনাক অপর্ণার হাতটা চেপে ধরে | ঘটনার আকস্মিকতায় অপর্ণা ভয় পেয়ে যায় |
হাতটা চেপে ধরে মৈনাক সন্দেহের চোখে জিজ্ঞেস করে “কি করছিলে এখানে? বলো কি করছিলে? – আমি তোমাকে আসতে বলেছি এ ঘরে?”, অপর্ণার হাতটা লাল হয়ে গেছে সে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো সাথে সাথে চিৎকার করে বললো “চলে যাও ঘর থেকে, বেরিয়ে যাও আর কোনোদিনও এ ঘরে ঢুকবে না – তোমার মতো মেয়েরা টাকার লোভে শুধু সুযোগ খোঁজে কখন স্বামীকে হাত করবে, আমায় ওসব চেষ্টাও করো না, তুমি কোনোদিক থেকেই আমার যোগ্য নও, কথাটা মাথায় ঢুকছে? ”
মৈনাকের ওরকম ভয়ঙ্কর রূপ দেখে অপর্ণা হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে হাত ছাড়িয়ে দৌড়ে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে |
মৈনাক বারান্দায় এসে দাঁড়ায়, তার জীবনে মল্লিকা ছাড়া আর অন্য কোন মেয়ে স্ত্রী হিসেবে থাকতেই পারে না ! তার মলি আজও হৃদয় জুড়ে রয়েছে |
এতক্ষনের চিৎকারে বাড়ির সকলে জেগে গেছে | বাড়ির কাজের লোকেরা পর্যন্ত চলে এসেছে | মনপ্রভা দেবী নিজেও হতবম্ভ হয়ে গেছেন | কি বলবেন ছেলেকে বুঝে পাচ্ছিলেন না |
চুপচাপ বাইরের ঘরে এসে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন | এ কি করলেন তিনি! একটা এতোটুকু মেয়ের জীবন এভাবে নষ্ট করলেন তার নিজের ছেলের সুখের জন্যে!
ভোর হতেই মেয়ে ইন্দ্রানীকে ফোন করে সমস্ত ঘটনা জানালেন | দুদিন পর ইন্দ্রানী এলো সাথে ইন্দ্রানীর স্বামী সুপ্রতীক | বিয়েতে সুপ্রতীক আসতে পারেনি | সুপ্রতীক নিজেও উকিল | একমাত্র সুপ্রতীক এর কথা মৈনাক একটু – আধটু শোনে | সুপ্রতীক আসায় মনপ্রভা একটু আশ্বস্ত হলেন |
কিন্তু সেদিন রাতে ওই ঘটনার পর সকাল থেকেই অপর্ণা জ্বরে বেহুঁশ | ডাক্তার এসে দেখে ওষুধ দিয়ে গেছেন | কিন্তু জ্বর নামছে না |
❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤
(চলবে )