#রক্তিম_চন্দ্র
#পর্ব_৯
#তুষার_আব্দুল্লাহ_রিজভী
রিপ কাঠের ফলকে উপর খোদাই করা লেখা গুলো পড়া শেষ করে সামনে থাকা বিশাল দরজার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল কিছু সময়। ও নিজেও জানে না কাঠের ফলকের উপর সেই সাংকেতিক লেখাগুলো কিভাবে পড়তে পেরেছে।
কী অপরূপ! বিশাল দরজায় অনেক ধরনের খোদাই করে নকশা করা আছে। দেখলেই বোঝা যায় এগুলো কোনো সাধারণ মানুষের কাজ হতেই পারে না। কারণ সাধারণ মানুষ এগুলো কখনো করতে পারবেই না। এটা দেখে রিপের এখন মনে হচ্ছে এটা “ভ্যাম্পায়ার রাজ্য”। কিছুক্ষণের জন্য ভুলে গিয়েছিল সে কোথায় আছে?
রিপ আবার বিশাল দরজা ধাক্কাতে শুরু করলো কিন্তু খুললো না। রিপের ধাক্কায় এত বড় দরজা খোলা সম্ভব না। অলৌকিক কোনো শক্তি ছাড়া খোলা তো অসম্ভব। সেটাই বুঝতে পারল ও। রিপের মনে এখন একটাই কথা ঘুরপাক খাচ্ছে ভিতরে তাকে ঢুকতেই হবে। কিন্তু কীভাবে তা সে জানে না!
ভ্যাম্পায়ারদের হয়তো দরজা খোলার প্রয়োজন নেই বললেই চলে। তারা দরজার এপার থেকে ওপার চোখের পলকেই যেতে পারে। তবে কেনো এই দরজা লাগাতে হলো। তাদের তো আর ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কেউ তাদের সাথে যুদ্ধ করতে আসবে না। সেই ক্ষমতা মানুষের নেই। কেউ চাইবে না তার নিশ্চিত মৃত্যু জেনে এসে যুদ্ধে নামতে। সামনের বিশাল দেয়ালটা পুরো রাজ্যকে ঘিরে রেখেছে।
রিপ এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছে। বৃথা চেষ্টা করছে বারবার। একের পর এক চেষ্টা করে যাচ্ছে। তার এইটুকু শরীরে শক্তির ধাক্কায় এটা খোলা সম্ভব না সে জানে। তবুও সে চেষ্টা করছে। হয়তো একটু খুলে যাবে যার মাধ্যমে সে ভিতরে যেতে পারবে, কিন্তু না খুলছে না। কোনো ভাবেই খুলছে না।
রিপ ক্লান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। তার শক্তি একদমই কমে এসেছে মনে হচ্ছে তার কাছে। হঠাৎ সে খেয়াল করল তার প্যান্টের পকেটে থাকা নীল ডায়মন্ডটা গরম হচ্ছে ধীরে ধীরে। সে দ্রুত পকেটে হাত দিয়ে ডায়মন্ডটাকে বের করে নিল। ব্যাগ থেকে ডায়মন্ডটা বের নিয়ে হাতে রাখল। কিন্তু এটা তো বিস্ময়! এবার হাতে নেওয়াতে নীল ডায়মন্ডটা ঠান্ডা হয়ে গেল। নীল ডায়মন্ডটার কর্মকান্ড দেখে রিপ বিস্মিত হলো। নীল ডায়মন্ডটা জ্বলজ্বল করছে আর চারদিকে নীল আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। লাল বর্ণের ভিতরে নীল বর্ণের আলোটাকে মানিয়ে কিছুটা। দেখতে ভালোই লাগছে।
রিপ রীতিমত হিমশিম খেতে লাগলো। কারণ রিপ এমন জ্বলজ্বল করা ডায়মন্ড এর আগে কখনো দেখেনি। রিপের মনে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিলো, “এটা এমন সময় কেনো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে? এটার সাথে এই রাজ্যের কী সম্পর্ক? এর পিছনে রহস্য কী?”
রিপ খেয়াল করলো নীল ডায়মন্ডটা তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে বিশাল সেই দরজার দিকে। রিপ বাঁধা দিলো না। ও এগিয়ে গেল। এবার ডায়মন্ডটা তার হাত উপরের দিকে যেতে চাইল। রিপ বিষয়টার কিছু একটা আঁচ করতে পারল। ডায়মন্ডটাকে ধরে দরজার সামনে গিয়ে তার ডান হাতের আঙুলগুলোর মাথায় রেখে উপরের দিকে তুলে ধরল।
ঠিক তখনি বিশাল দরজাটা বিকট একটা শব্দ করতে করতে আপনা-আপনি খুলে গেল।
রিপ দেখে রিতীমত অবাক! এখানে আসার পর থেকে সবকিছুই ওকে অবাক করে দিচ্ছে রিতীমত। কিন্তু ডায়মন্ডের এমন আচরণ দেখে ভাবনায় পড়ে গেল। রিপ ভাবনার দুনিয়ায় না ঘুরে এক পা বাড়িয়ে দিলো বিশাল রাজ্যের প্রবেশের জন্য।
প্রবেশ করলো সেই বিশাল ভ্যাম্পায়ারদের রাজ্যে। রিপ আর যাইহোক না কেনো? এমন পরিস্থিতিতে ভয় না পেয়ে উপায় নেয়। কারণ রিপের চারপাশে সকলেই ভ্যাম্পায়ার। রিপ প্রবেশ করা মাত্রই বিশাল দরজা বন্ধ হয়ে গেলো। বন্ধ হওয়া মাত্রই তার ভিতরে ভয়ের মাত্রা বেড়ে গেলো। চারপাশে ভালো ভাবে দেখছে কিন্তু কী করবে বুঝতে পারছে না ভেবে দাঁড়িয়ে রইলো।
রিপ খেয়াল করল তার শরীরের গঠন পরিবর্তন হয়েছে। সে সামনে থাকা ভ্যাম্পায়ারদের আকার ধারণ করেছে। কিন্তু তার দাঁত গুলো ঠিকই আছে। সামনের দু’দাত বড় হয়নি। সে খেয়াল করে একটু হাসলো। এতক্ষণ এতো আতঙ্কে থাকার পরও একটু হাসি পেল তার।
রিপ প্রবেশ করার পরও কেউ দেখেনি তাকে। কেউ খেয়াল করেও নি কোনো মানুষ তাদের রাজ্যে প্রবেশ করেছে। মানুষের রক্তের গন্ধ পেয়ে রক্ত খেতে আসেনি। কারো কোনো খেয়াল নেই এদিকে। রিপ ভেবেছিল, ঢোকার পরই ওর উপর আক্রমণ করবে ভ্যাম্পায়াররা অথচ তার সামনেই অসংখ্য ভ্যাম্পায়ার হেটে চলেছে এদিক ওদিক।
রিপ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। ওকে কেউ দেখেনি হয়তো দেখলেও কিছু করবে না। এতক্ষণ যেহেতু কিছু করেনি পরেও হয়তো কিছু করবে না। এসব ভাবতে ভাবতে রিপ কয়েক পা এগিয়ে গেল সেদিকে।
হঠাৎ কে যেনো রিপকে ডাক দিলো পিছন দিক থেকে, “রিপ, রিপ” বলে। রিপ ভয় পেয়ে আতঙ্কে ভরে উঠলো ওর বুক। কয়েকটা প্রশ্ন তার ভাবনায় আসতে লাগল, “ভ্যাম্পায়াররাও তাকে চেনে নাকি? এটা কী করে সম্ভব? সে তো এখানে কখনো আসে নি? নাকি সে ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে দেখছে?” এখানো রিপ বুঝতে পারছে না কিছুই৷
রিপ তবুও ঘুরে পিছনে তাকালো। রিপ নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না। কারণ যে তাকে ডেকে ছিল সে আর কেউ নয় রিপ নিজেই!
***
রিপ নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। তার সামনে কী আয়না! নাকি অন্য কিছু।
রিপ কয়েক পা পিছিয়ে গেল। বুকে আতঙ্ক কাজ করছে। কী করবে বুঝতে পারছে না। তার শরীরে কাঁপুনি উঠে গেছে। সে চাইছে শক্ত হতে কিন্তু ভিতরে থাকা আতঙ্ক ভয় পেতে বাধ্য করছে তাকে।
“ক…কে আপনি?” কাপা গলায় রিপ জিজ্ঞেস করল।
“আমি! হা হা হা,” হাসি যেনো থামার নয় তার।
রিপ জানে ভ্যাম্পায়ারদের সম্পর্কে কিছুটা। তাদের মধ্যে অনেক ভ্যাম্পায়ার মানুষের রুপ ধারণ করতে পারে। যদিও মুভি আর বই থেকে যা দেখেছে পড়েছে। সে এতদিন ভাবতো তারা কেবলই কাল্পনিক চরিত্র মাত্র। কিন্তু আজ নিজ চোখে দেখছে তাদের।
“কে আপনি? বহুরুপী!” আবারও জিজ্ঞেস করল রিপ।
এবার হাসি থামাল সামনে থাকা বহুরূপী। বলল, “রিপ। আমি রিপ,” জোরে জোরে হাসতে লাগল। হুবহু রিপের কন্ঠ।
“আমি জানি আপনি আমার রুপ ধরেছেন। আপনার আসল চেহারা দেখান সাহস থাকলে,” জোর গলায় বলল রিপ। ভয়ে ওর কপালে ঘামের পরিমাণ বেরে গিয়ে গাল বেয়ে পড়তে লাগল নিচের দিকে।
হাসি থামিয়ে দিয়ে সেই বহুরুপী চোখ বন্ধ করে ঠোঁট নাড়াতে শুরু করল। হয়তো কোনো মন্ত্র পড়ছে। মুহুর্তের মধ্যে তার চেহারা বদলে যেতে লাগল।
রিপের চেহারার পিছনে লুকিয়ে ছিল এক সুন্দরী রমণী। লাল বর্ণের আলোতে দেখেও অনেক সুন্দর লাগছিল তাকে। চেহারার গঠন এতটাই মুগ্ধকর যে রিপ প্রথম দেখেই প্রেমে পড়ে গেছে৷ দেখতে সব দিক দিয়ে এতটাই নিঁখুত যে মনে হবে ঈশ্বর নিজ হাতে বানিয়েছে তাকে। তার মনে একটা বিস্ময়, ভ্যাম্পায়ারদের নারীরা এতো সুন্দর হয়। অকল্পনীয়! সবচেয়ে বড়ো আকর্ষণ করল রিপকে যা তা হলো মেয়েটার বা গালে ছোট্ট একটা তিল। তিলটার প্রেমে পড়ে গেছে সে ইতি মধ্যে। তিলটাই হয়তো রমনীকে পরিপূর্ণতা দান করেছে।
রিপ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আর ভাবতে লাগল, “সে এতদিন ধরে এত সুন্দরী এক রমণীর দেখা পায়নি পৃথিবীর কোথাও। এই নারী হয়তো তার জন্যই সৃষ্টি। কিন্তু ভ্যাম্পায়ার আর মানুষের প্রেম সম্পর্ক সম্ভব না। গল্পে হলেও বাস্তবে না।”
বহুরূপী তার রুপ বদলে আসল রুপে এসে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। রিপ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে দেখে লজ্জা পেয়েছে কিছুটা। বহুরুপী রিপকে ডাকল আবার, “রিপ,রিপ, আপনি কী শুনছেন।”
রিপ তার ভাবনার দুনিয়া থেকে বেরিয়ে এল। “হ্যা, জি বলুন!”
“কী ভাবছিলেন এতো?” জিজ্ঞেস করল সেই বহুরুপি।
“না কিছু না।” বিরবিরিয়ে বলল রিপ, “আপনি অনেক সুন্দরী।”
“কিছু বললেন?” পরের কথাটা শুনতে পায়নি বহুরূপী।
“নাহ্,” একটু থেমে রিপ জিজ্ঞেস করল, “আপনার নাম কী জানতে পারি?”
“জেনি,” কিছুটা লজ্জাবোধ করে বলল বহুরূপী।
“নামটাও বেশ।” রিপের ভিতর থেকে কখন যে ভয় বা আতঙ্ক চলে গেছে কখন ও সেটা জানে না নিজেও।
“আপনার কাছের ডায়েরি আর নীল হীরেটা কোথায়?” জেনি জিজ্ঞেস করল।
“মানে!” রিপ বিস্মিত কন্ঠে বলে উঠলো।
“ওগুলা কোথায় আগে বলুন।”
“আমার কাছেই আছে।” রিপ জিজ্ঞেস করলো, “এগুলা দিয়ে কী হবে? আর আমি এখানে কেন? আপনি জানলেন কীভাবে আমার কাছে এগুলা আছে?” রিপ এসব কিছু মেলাতে পারছে না। কেমন যেন সব এলোমেলো লাগতে শুরু করেছে।
“আপনি এতগুলো প্রশ্ন একসাথে করলে আমি কীভাবে উত্তর দেবো?” জেনি তাকিয়ে রইল রিপের দিকে। “আপনার সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি আমি অপেক্ষা করুন।”
জেনি সকল ভ্যাম্পায়ারদের ডাকল এখানে। সকলে এসে হৈ-হুল্লোড় শুরু করে দিল। এতক্ষণের নীরবতা এক মুহুর্তে কেটে গেল। পরিণত হলো কোলাহলপূর্ণ একটা স্থানে।
রিপ খেয়াল করল সব ভ্যাম্পায়ার রিপকে দেখে অনেক খুশি হয়েছে। জেনি আবারও ইশারা করল। সকল ভ্যাম্পায়ার চুপ হয়ে গেল। আবারও নীরব হয়ে গেল পরিবেশ। নিস্তব্ধতা বিরাজমান।
“আপনার হাতে আমাদের অভিশাপ মুক্তি,” আস্তে করে বলল জেনি। যেন বিষণ্ণতা নেমে এসেছে।
“বুঝতে পারছি না কী বলছেন?” আতঙ্কিত কন্ঠে বলল রিপ।
“শুনন তাহলে,” বলতে শুরু করল। “আপনি এখানে নিজে থেকে আসেননি। আমরা আপনাকে নিয়ে এসেছি। আপনাকে সবসময় নজরদারিতে রাখা হতো আমাদের। আপনি কি করছেন, কোথায় যাচ্ছেন। আপনাকে এখানে আনাও হয়েছে আমাদের জন্যই। আসলে আপনি সমুদ্র পথে যখন ছিলেন তখন ওই মেঘটাকে আমরাই পাঠিয়েছিলাম। ওটা আসলে মেঘ না। ওটা হলো মেঘ রুপি একটা বাহন। যার মাধ্যমে এখানে আনা হয়েছে।”
মনোযোগ দিয়ে সব শুনছিল রিপ। হঠাৎ বলে উঠল, “এখানে আসার পর যে বিশাল ওই দরজার ওপাশে মানুষের মাথার খুলি আর হাড়গোড়?”
“ওগুলো তেমন কিছু না। বহু মানুষ এখানে আসার চেষ্টা করেছে যুগে যুগে এসেছে কোনো মাধ্যমে কিন্তু দরজার এপাশে আসতে পারিনি আর যাওয়ার পথও তখন পায়নি। আসার পর পথ বন্ধ হয়ে যায়। এখানে থাকতে থাকতে একসময় খাদ্যের অভাবে মারা গেছে। তাদেরই হাড়গোড় ওগুলো।”
“কিন্তু আমার জাহাজের বাকিদের কী অবস্থা?” আমরা জাহাজ এনেছি এখানে তখন শুধু আপনি ছিলেন আর বাকিরা সমুদ্রে নেমে গিয়েছিল।”
কিছুক্ষণ ভাবলো রিপ। বলল, “আচ্ছা। আমাকে এখানে আনার উদ্দেশ্য কী?”
“ঐই যে অভিশাপ মুক্তি,” তাকিয়ে রইল রিপের দিকে।
“আপনারা ভ্যাম্পায়ার আপনাদের কে অভিশাপ দিয়েছে আর কেনই বা দিয়েছো? আর আমিই কেন আপনাদের অভিশাপ মুক্ত করতে পারবো আর কেউ না কেন? আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না একদম।”
“দেখছি আপনার জানার আগ্রহ অনেক,” বলল জেনি।
মুচকি হাসলো রিপ।
জেনি আবার বলল, “আপনি আপনার সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন। ধৈর্য ধরুন।”
“আচ্ছা। আমাকে একটা কথা বলুন আগে, আপনাদের বাঁচিয়ে আমার লাভ কী? আপনারা তো পৃথিবীতে গিয়ে মানুষের রক্ত খাবেন আর যারটা খাবেন তাকে তো শেষ করে দিবেন, তাই না? এতে মানুষ জাতির ক্ষতি।”
“না, আপনার ধারণা ভুল,” জেনি বলল। “আমরা মানুষের রক্ত খাই ঠিক আছে, সেই সাথে অন্য প্রাণীর রক্তও খাই। কিন্তু আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ খাই। মানুষ বুঝতেও পারে না। আমরা সবাই তো আর ভালো না। ভালো খারাপ দু’টোই আছে। খারাপগুলো একজন মানুষের রক্ত পুরোপুরি খেয়ে পুরোপুরি শেষ করে। আতঙ্ক সৃষ্টি করে মানুষের মনে। আমাদের অস্তিত্ব প্রমাণ দেয়। আপনারা, আমরা সব ঈশ্বরের সৃষ্টি। মানুষের উপর আমাদের বেশি নির্ভর করতে হয়।”
যখনি জেনি কথা বলে রিপ মনোযোগ দিয়ে সব শুনে যেতে থাকে।
রিপ দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছে জেনির দিকে। জেনির কথা সব শুনে ভাবছে, আসলেই তো ভালো মন্দ সব আছে সবজায়গাতে। মন্দের জন্য ভালোর এতো মূল্য।
জেনি বলল, “আপনাকে আমাদের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে আনা হয়েছে। এখন আপনার মত জানতে চাই আপনি কী করবেন?”
রিপ আশেপাশে সকল ভ্যাম্পায়ারের দিকে তাকাল। সকলের দৃষ্টিতে একটাই বিষয় লক্ষ্য করলো। আশা!
এখানে যখন এসে পড়েছে উপায়ও নেই রিপের কাছে। সকলের এতো আশা জন্মেছে তা দেখে রিপ বলল, “হ্যা, আমি চেষ্টা করে দেখতে পারি। যত যাই হোক আমি সম্পূর্ণ চেষ্টা করবো আপনাদের অভিশাপ মুক্ত করার। কিন্তু আমি তো জানি না উপায় আর কিসের অভিশাপ! পুরোপুরি পারবো কিনা তাও জানি না।”
রিপ কেন রাজি হলো না ভেবেই ও জানে না। ও সরাসরি রাজি হয়ে গেল। যেন ওকে অন্য কেউ নিয়ন্ত্রণ করছে রিপকে।
ভ্যাম্পায়ারদের মাঝে একটা হৈ হুল্লোড় পড়ে গেল সাথে সাথে। একটা খুশির হুল্লোড়। সকলে অনেক খুশি হয়েছে রিপের মতামতে। আশা তাদের আরো বেড়ে গেছে অনেক।
জেনি হাসি মুখে বলল, “এবার চলুন আমার সাথে প্রাসাদে। সেখানে গেলেই সব বুঝতে পারবেন।”
“আচ্ছা চলুন,” রিপ বলল।
জেনি ইশারা করল সবাইকে সরে যেতে। সকলে একত্রিত হওয়ায় আশেপাশে যাওয়ার মতো পথ ছিল না। জেনির ইশারায় সব সরে গেল। দু’জনে প্রাসাদের উদেশ্য রওনা দিল।
চলবে?…
(সবাই মন্তব্য করবেন আশা করি)